দু‘আ-১৭৫

اَللّٰهُمَّ إِنِّيْۤ اَسْأَلُكَ بِمُحَمَّدٍ نَّبِيِّكَ، وَإِبْرَاهِيْمَ خَلِيْلِكَ، وَمُوْسٰى نَجِيِّكَ، وَعِيْسٰى رُوْحِكَ وَكَلِمَتِكَ، وَبِكَـلَامِ مُوْسٰى، وَإِنْجِيْلِ عِيْسٰى، وَزَبُوْرِ دَاوٗدَ، وَفُرْقَانِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. وَبِكُلِّ وَحْيٍ أَوْحَيْتَهٗ، أَوْ قَضَآءٍ قَضَيْتَهٗ، أَوْ سَآئِلٍ أَعْطَيْتَهٗ، أَوْ فَقِيْرٍ أَغْنَيْتَهٗ، أَوْ غَنِىٍّ أَفْقَرْتَهٗ، أَوْ ضَآلٍّ هَدَيْتَهٗ، وَأَسْأَلُكَ بِاسْمِكَ الَّذِيْ وَضَعْتَهٗ عَلَى الْأَرْضِ فَاسْتَقَرَّتْ، وَعَلَى السَّمٰوٰتِ فَاسْتَقَلَّتْ، وَعَلَى الْجِبَالِ فَرَسَتْ، وَاَسْأَلُكَ بِاسْمِكَ الَّذِيْ اسْتَقَرَّ بِه عَرْشُكَ، وَاَسْأَلُكَ بِاسْمِكَ الطَّاهِرِ الْمُطَهَّرِ الْمُنَزَّلِ فِيْ كِتَابِكَ مِنْ لَّدُنْكَ، وَبِاسْمِكَ الَّذِيْ وَضَعْتَهٗ عَلَى النَّهَارِ فَاسْتَنَارَ، وَعَلَى اللَّيْلِ فَأَظْلَمَ، وَبِعَظَمَتِكَ وَكِبْرِيَآئِكَ وَبِنُوْرِ وَجْهِكَ أَنْ تَرْزُقَنِيَ الْقُرْاٰنَ الْعَظِيْمَ، وَتُخَلِّطَهٗ بِلَحْمِيْ وَدَمِيْ وَسَمْعِيْ وَبَصَرِيْ، وَتَسْتَعْمِلَ بِه جَسَدِيْ بِحَوْلِكَ وَقُوَّتِكَ، فَإِنَّهٗ لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِكَ. اَللّٰهُمَّ لَاتُـؤْمِنَّا مَكْرَكَ، وَلَا تُنْسِنَا ذِكْرَكَ، وَلَا تَهْتِكْ عَنَّا سِتْرَكَ، وَلَا تَجْعَلْنَا مِنَ الْغَافِلِيْنَ.
অর্থঃ ইয়া আল্লাহ! আপনার কাছে প্রার্থনা করছি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অসিলায়, যিনি আপনার নবী; ইবরাহীম আ.-এর অসিলায়, যিনি আপনার খলীল; মূসা আ.-এর অসিলায়, যিনি আপনার ‘কালীম’ (কথোপকথনকারী); ঈসা আ.-এর অসিলায়, যিনি আপনার ‘কালিমা’ ও ‘রূহ’ এবং মূসা আ.-এর কালামের (তাওরাত) অসিলায়, ঈসা আ.-এর ইনজীলের অসিলায়, দাউদ আ.-এর যাবুরের অসিলায়, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কুরআনের অসিলায়। আপনার অহীর অসিলায়, যা আপনি প্রেরণ করেছেন, আপনার প্রত্যেক (জাগতিক) বিধানের অসিলায়, যা আপনি জারি করেছেন; প্রত্যেক প্রার্থনাকারীর অসিলায়, যাকে আপনি দান করেছেন; প্রত্যেক দরিদ্রের অসিলায়, যাকে আপনি ধনী করেছেন; প্রত্যেক ধনীর অসিলায়, যাকে আপনি ফকীর বানিয়েছেন; প্রত্যেক গোমরাহ ব্যক্তির অসিলায়, যাকে আপনি হেদায়েত দিয়েছেন। আপনার কাছে প্রার্থনা করছি আপনার ঐ গুণের অসিলায়, যা আপনি ভূমিতে স্থাপন করেছেন; ফলে ভূমি স্থির হয়েছে; আসমানে স্থাপন করেছেন; যাতে আসমান স্থিতি লাভ করেছে, পাহাড়-পর্বতে স্থাপন করেছেন; ফলে তা সুদৃঢ় হয়েছে; প্রার্থনা করছি আপনার ঐ নামের অসিলায়, যার দ্বারা আপনার আরশ স্থির হয়েছে।১৮১ প্রার্থনা করছি আপনার কাছে আপনার ঐ গুণের অসিলায়, যা পবিত্র ও শুচি-শুভ্র এবং আপনার পক্ষ হতে আপনার কিতাবে নাযিলকৃত; এবং আপনার গুণের অসিলায়, যা আপনি দিবসের উপর স্থাপন করেছেন; ফলে তা উজ্জ্বল হয়েছে এবং রাতের উপর রেখেছেন; ফলে তা অন্ধকার হয়েছে।১৮২ এবং আপনার বড়ত্ব ও মহত্ত্বের অসিলায় এবং আপনার সত্তার জ্যোতির অসিলায় (প্রার্থনা করছি যে) আপনি আমাকে কুরআনে আযীম দান করুন এবং তা আমার রক্ত-মাংসে, শ্রবণ ও দৃষ্টিতে মিশিয়ে দিন আর সে অনুযায়ী আমার দেহকে পরিচালিত করুন আপনার শক্তি ও ক্ষমতায়।১৮৩ নিশ্চয়ই সম্ভব নয় (গুনাহ থেকে) বাঁচা আর না (নেক আমলের) সামর্থ্য আপনার সাহায্য ছাড়া।১৮৪ ইয়া আল্লাহ! আমাদেরকে আপনার গোপন কৌশল সম্পর্কে শঙ্কাহীন কোরেন না, আপনার স্মরণ থেকে আমাদের গাফেল কোরেন না, আমাদের উপর থেকে আপনার পর্দা সরিয়ে নিয়েন না, আর আমাদের গাফিলদের অন্তর্ভুক্ত কোরেন না।১৮৫
উৎসঃ -জামউল ফাওয়ায়েদ
উপকারিতাঃ
اسم
১৮১. এখানে (ইসম) অর্থ গুণ। কারণ, ইতিপূর্বে বলা হয়েছে, আরবীতে ইসম শব্দটি গুণ অর্থেও ব্যবহৃত হয়। আর জগত-মহাজগতের এই নিপুণ ব্যবস্থা তো আল্লাহর গুণাবলীরই প্রকাশ। এরই ফলে আকাশ ও আরশ, জমি ও পর্বত নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত। ১৮২. ঐ গুণাবলীরই কারিশমা, যা দিনকে দিন ও রাতকে রাত বানিয়েছে। ১৮৩. অর্থাৎ কুরআনের শিক্ষা ও মাহাত্ম্য যেন আমার দেহ-আত্মার অণুতে-পরমাণুতে মিশে যায়। আমি যেন কুরআনের নজরেই দেখি, কুরআনের কানেই শুনি, কুরআনের মস্তিষ্কের দ্বারাই চিন্তা করি আর কোনো কাজ করলে কুরআনের শক্তিতেই যেন করি, সর্বপ্রকার ও সর্বদিক থেকে কুরআনই যেন আমার জীবনে ছায়া বিস্তার করে। ১৮৪. অর্থাৎ আপনি চাইলেই আমাদের গুনাহ থেকে রক্ষা করতে পারেন। আপনি চাইলেই আমাদের নেক আমলে মশগুল করতে পারেন। ভালো ও মন্দ, গুনাহ বর্জন ও নেক আমল সম্পাদনের সকল শক্তি একমাত্র আপনারই হাতে। ১৮৫. অর্থাৎ আপনার পাকড়াও সম্পর্কে যা অতি সূক্ষ্ম হয়ে থাকে, আমাদের মনে যেন বেপরোয়া ভাব সৃষ্টি না হয়। সর্বাবস্থায় ঐ বিষয়ে আমাদের ভীত ও সন্ত্রস্ত রাখুন। আমরা যেন আপনাকে ভুলে না যাই। সর্বাবস্থায় আমাদের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখুন এবং আমাদের গাফলতের শিকার হওয়া থেকে রক্ষা করুন।