সূরা আল-ইখলাস
কুল হুওয়াল্লা-হু আহাদ। আল্লা-হুসসামাদ। লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইঊলাদ। ওয়া লাম ইয়াকুল্লাহূকুফুওয়ান আহাদ।
১. হযরত আবূ দারদা (রাযি) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, তোমাদের কেউ কি এই বিষয়ে অক্ষম যে, এক রাত্রে কুরআনের এক তৃতীয়াংশ পড়ে নিবে? সাহাবা (রাযি) আরয করলেন, কেউ এক রাত্রে কুরআনের এক তৃতীয়াংশ কি ভাবে পড়তে পারে? নবী কারীম (ﷺ) ইরশাদ করলেন, قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান। ২. হযরত আনাস (রাযি) থেকে বর্ণিত আছে, জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-র কাছে এসে আরয করলঃ আমি এই সূরাটি খুব ভালবাসি। তিনি বললেন, এর ভালবাসা তোমাকে জান্নাতে দাখিল করবে। ৩. হযরত আবূ হুরায়রা (রাযি) বর্ণনা করেন, একবার রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তোমরা সবাই একত্রিত হয়ে যাও। আমি তোমাদেরকে কুরআনের এক-তৃতীয়াংশ শুনাব। অতঃপর যাদের পক্ষে সম্ভব ছিল, তারা একত্রিত হয়ে গেলে তিনি আগমন করলেন এবং সূরা ইখলাস পাঠ করে শুনালেন। তিনি আরও বললেন, এই সূরাটি কুরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান।-(মুসলিম, তিরমিযী) আবূ দাউদ, তিরমিযী ও নাসায়ীর এক দীর্ঘ বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, যে ব্যক্তি সকাল-বিকাল সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করে তা তাকে বালা-মুসীবত থেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যথেষ্ট হয়। ৪. ওকবা ইবনে আমের (রাযি)-এর বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, আমি তোমাদেরকে এমন তিনটি সূরা বলছি, যা তাওরাত, ইঞ্জীল, যবুর, কুরআন সব কিতাবেই নাযিল হয়েছে। রাত্রিতে তোমরা ততক্ষণ নিদ্রা যেয়ো না, যতক্ষণ সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস না পাঠ কর। ওকবা (রাযি) বলেন, সেদিন থেকে আমি কখনও এই আমল ছাড়িনি। ৫. সূরা ইখলাসে তাওহীদ শিরকের পূর্ণ বিরোধিতা আছে, দুনিয়াতে তাওহীদ অস্বীকারকারী মুশরিকদের বিভিন্ন প্রকার বিদ্যমান আছে। সূরা ইখলাস সর্বপ্রকার মুশরিক সুলভ ধারণা খণ্ডন করে পূর্ণ তাওহীদের সবক দিয়েছে। তাওহীদ বিরোধীদের এক স্বয়ং আল্লাহর অস্তিত্বই স্বীকার করে না, কেউ অস্তিত্ব স্বীকার করে, কিন্তু তাকে চিরন্তন মানে না এবং কেউ উভয় বিষয় মানে, কিন্তু গুণাবলীর পূর্ণতা অস্বীকার করে। কেউ কেউ সবই মানে, কিন্তু ইবাদতে অন্যকে শরীক করে। اَللهُ اَحَدُٗ বাক্যে সব ভ্রান্ত ধারণার খণ্ডন হয়ে গেছে। কতক লোক ইবাদতেও শরীক করে না, কিন্তু অন্যকে অভাব পূরণকারী ও কার্যনির্বাহী মনে করে। صَمَد শব্দে এই ধারণা বাতিল করা হয়েছে। যারা আল্লাহর সন্তান আছে বলে বিশ্বাস করে, তাদেরকে لَمْ يَلِدْ বলে জওয়াব দেওয়া হয়েছে। ৬. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, এই সূরা পাঠকারীর জন্য জান্নাত অবধারিত হয়ে যায়।
সহীহ মুসলিম, হাদীস নং: ৮১১-১ তাফসীরে ইবনে কাসীর তাফসীরে ইবনে কাসীর তাফসীরে ইবনে কাসীর তাফসীরে মারেফুল কুরআন। তাফসীরে কাশশাফ।
দু'আর বিষয়সমূহ
38টি বিষয় পাওয়া গেছে