দু'আ

আয়াতুল কুরসী

সকল দু'আ একত্রে দেখুন

আয়াতুল কুরসী

share dua

۞ اَللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الۡحَـىُّ الۡقَيُّوۡمُ لَا تَأْخُذُهٗ سِنَةٌ وَّلَا نَوۡمٌ‌ؕ لَهٗ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَمَا فِى الۡاَرۡضِ‌ؕ مَنۡ ذَا الَّذِىۡ يَشۡفَعُ عِنۡدَهٗۤ اِلَّا بِاِذۡنِهٖ‌ؕ يَعۡلَمُ مَا بَيۡنَ اَيۡدِيۡهِمۡ وَمَا خَلۡفَهُمۡ‌ۚ وَلَا يُحِيۡطُوۡنَ بِشَىۡءٍ مِّنۡ عِلۡمِهٖۤ اِلَّا بِمَا شَآءَ ۚ وَسِعَ كُرۡسِيُّهُ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضَ‌‌ۚ وَلَا يَـــُٔوۡدُهٗ حِفۡظُهُمَا ‌ۚ وَ هُوَ الۡعَلِىُّ الۡعَظِيۡمُ‏

উচ্চারণঃ আল্লা-হু লাইলা-হা ইল্লা-হুওয়া আল হাইয়ুল কাইয়ূমু লা-তা’খুযুহূ ছিনাতুওঁ ওয়ালা-নাওমুন লাহূ মা-ফিছ ছামা-ওয়া-তি ওয়ামা-ফিল আরদি মান যাল্লাযী ইয়াশফা‘উ ‘ইনদাহূইল্লা-বিইযনিহী ইয়া‘লামুমা-বাইনা আইদীহিম ওয়ামা-খালফাহুম ওয়ালা-ইউহীতূনা বিশাইইম মিন ‘ইলমিহীইল্লা-বিমা-শাআ ওয়াছি‘আ কুরছিইয়ুহুছ ছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদা ওয়ালা-ইয়াঊদুহু হিফজু হুমা-ওয়া হুওয়াল ‘আলিইয়ূল ‘আজীম।

অর্থঃ আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই, তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়। আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর। কে আছে এমন, যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোনো কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।

উৎসঃ সূরা বাকারা, আয়াত: ২৫৫

উপকারিতাঃ

اَللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الۡحَـىُّ الۡقَيُّوۡمُ اَللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الۡحَـىُّ الۡقَيُّوۡمُ

১. হযরত আবূ হুরায়রা (রাযি) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল আমাকে রমযানে প্রাপ্ত যাকাতের মাল হেফাযতের দায়িত্ব দিলেন। সময় জনৈক ব্যক্তি এসে খাদ্য–দ্রব্য উঠিয়ে নিতে উদ্যত হল। আমি তাকে ধরে ফেললাম এবং বললাম, আমি তোমাকে আল্লাহর নবী এর কাছে নিয়ে যাব।.....তখন লোকটি বলল, যখন আপনি ঘুমাতে যাবেন, তখন আয়াতুল কুরসী পাঠ করবেন। এর ফলে আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন পাহারাদার নিযুক্ত করা হবে এবং ভোর পর্যন্ত শয়তান আপনার কাছে আসতে পারবে না। রাসূল (এ ঘটনা শুনে) বললেন, (যে তোমার কাছে এসেছিল) সে সত্য কথা বলেছে, যদিও সে বড় মিথ্যাবাদী শয়তান। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং: ৫০০৮ -৫০১০) ২. হযরত আলী (রাযি) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে এই মিম্বরের কাঠের উপর বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয সালাতের পর আয়াতুল কুরসী নিয়মিত পড়ে, তার জান্নাতে প্রবেশে কেবল মৃত্যুই অন্তরায় হয়ে আছে। যে ব্যক্তি আয়াতটি বিছানায় শয়নের সময় পড়বে আল্লাহ তার ঘরে, প্রতিবেশির ঘরে এবং আশপাশের আরো অন্যান্য ঘরসহ নিরাপত্তা দান করবেন। (মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদীস নং: ৯৭৪) ৩. হযরত আলী (রাযি) বলেছেন, আমি মনে করিনা যে, এমন কোন ব্যক্তি যে জন্মগতভাবে মুসলমান হয়েছে বা সাবালক হওয়ার পর মুসলমান হয়েছে আর সে এই আয়াত পাঠ না করে রাত্র অতিবাহিত করতে পারে? হায়, যদি তোমরা জানতে, এই আয়াতের মর্তবা কি! তোমরাদের নবীকে এই আয়াত আরশের নিচে অবস্থিত খাজানা বা ভান্ডার থেকে দান করা হয়েছে এবং তোমাদের নবীর পূর্বে অন্য কোন নবীকে তা দেওয়া হয়নি। আমি এই আয়াত প্রতি রাত্রে তিনবার পাঠ করে শয়ন করি। এশার পরে দুই রাকাতে বিতরের নামাযেও তা পাঠ করি এবং বিছানায় শয়নের সময়েও তা পাঠ করি (কানয) ৪. হযরত উবাই বিন কা’ব (রাযি) বর্ণনা করেন, রাসূল আমাকে ইরশাদ করেছেন, হে আবূল মুনজির! এটি হযরত উবাই বিন কাব (রাযি) এর উপনাম। তোমার জানা আছে কি, তোমার নিকট কিতাবুল্লার সর্বাপেক্ষা মর্যাদাসম্পন্ন আয়াত কোনটি? আমি আরয করলাম আল্লাহ্‌ তার রাসূল-ই সর্বাপেক্ষা বেশি জানেন। নবী কারীম দ্বিতীয়বার জিজ্ঞাসা করলেন, আবূল মুনজির! তোমার জানা আছে কি, কিতাবুল্লাহর সর্বাপেক্ষা মর্যাদাসম্পন্ন আয়াত তোমার নিকট কোনটি? আমি আরয করলাম, [আয়াতুল কুরসী]। তিনি আমার সিনার উপর হাত মারলেন (যেন এইরূপ উত্তরের কারণে সাবাশ দিলেন) এবং ইরশাদ করলেন, হে আবূল মুনযির! তোমার জন্য ইলম মোবারক হউক। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং: ৮১০) এক বর্ণনায় আয়াতুল কুরসী সম্পর্কে ইরশাদ করেছেন, সেই পাক জাতের কসম, যার হাতে আমার প্রান, এই আয়াতের একটি জিহ্বা দুইটি ঠোট রয়েছে, এটি আরশের পায়ার নিকট আল্লাহ্‌ তা‘আলার পবিত্রতা বয়ান করে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং: ২০৩২২) ৫. শয়তানের প্রভাব থেকে বাঁচার আয়াত: হযরত আবূ হুরায়রা (রাযি) থেকে বর্ণিত, রাসূল বলেছেন, সূরা বাকারায় একটি শ্রেষ্ঠ আয়াত রয়েছে, যে ঘরে আয়াতুল কুরসী পাঠ করা হবে সেখান থেকে শয়তান পালাতে থাকে। (আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব, হাদীস নং: ২২৫৬ ৬. হযরত আবূ উমামা (রাযি) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি ফরয নামায শেষে আয়াতুল কুরসী পড়ে, তার জান্নাতে প্রবেশ করতে মৃত্যু ছাড়া কোনো কিছু বাধা হবে না। (আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব, হাদীস নং: ২৪৭৭) ৭. হযরত আবূ যর জুনদুব ইবনে জুনাদাহ (রাযি) রাসূল (ﷺ)-কে জিজ্ঞেস করেছিলেন, হে আল্লাহর রাসূল আপনার প্রতি সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন কোন আয়াতটি নাযিল হয়েছে? রাসূল বলেছিলেন, আয়াতুল কুরসী। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং: ৮১০) ৮. হযরত আবূ হুরায়রা (রাযি) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ইরশাদ করেছেন, প্রত্যেক জিনিসের একটি চূড়া হয় (যা সবার উপরে সর্বোচ্চ থাকে)। কুরআনে কারীমের চূড়া হল সূরা বাকারা। তাতে একটি আয়াত এমন আছে যা কুরআন শরীফের সমস্ত আয়াতের সর্দার, আর তা আয়াতুল কুরসী। (সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং: ২৮৭৮) ৯. হযরত মাকিল ইবনে ইয়াসার (রাযি) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ইরশাদ করেছেন, কুরআনে কারীমের চূড়া অর্থাৎ সর্বোচ্চ অংশ হল সূরা বাকারা। তার প্রত্যেকের সহিত আশিজন ফেরেশতা অবতরন করেছেন এবং আয়াতুল কুরসী আরশের নিচ থেকে বের করা হয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহ্‌ তা‘আলার বিশেষ খাজানা থেকে নাযিল হয়েছে। অতঃপর তাকে সূরা বাকারার সাথে মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে--অর্থাৎ তার মধ্যে শামিল করা হয়েছে। সূরা ইয়াসীন কুরআনে কারীমের দিল। যে ব্যক্তি এটিকে আল্লাহ্‌ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জন এবং আখিরাতের নিয়তে পড়বে অবশ্যই তার মাগফিরাত করে দেওয়া হবে। অতএব এই সূরা নিজেদের মরণাপন্ন লোকদের নিকট পাঠ কর (যেন রূহ বের হতে সহজ হয়)। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং: ১৯৪১৯; আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব, হাদীস নং: ২২৫৩) ফায়দাঃ হাদীস শরীফে সূরা বাকারাকে কুরআন কারীমের চূড়া সম্ভবত এইজন্য বলা হয়েছে যে, ইসলামের বুনিয়াদী উসূল, আকীদাসমূহ শরীয়তের হুকুমসমূহের বিস্তারিত বর্ণনা যেরূপ সূরা বাকারা থেকে করা হয়েছে এই পরিমান এরূপ কুরআনে কারীমের আর কোন সূরায় করা হয়নি। (মাআরিফুল হাদীস)

উৎসঃ null