মা'আরিফুল হাদীস

معارف الحديث

রিকাক অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ১০০ টি

হাদীস নং: ৪১
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ সম্পদ বৃদ্ধি করার লোভ কখনো মেটে না
৪১. হযরত আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন নবী ﷺ বলেছেন: আদম সন্তানের কাছে যদি সম্পদের দুটো উপত্যকা থাকে তাহলেও সে তৃতীয়টা চাইবে। মাটি ছাড়া অন্য কিছু বনী আদমের পেট ভরতে পারে না। যে তওবা করে, আল্লাহ তার তওবা কবুল করেন। (বুখারী ও মুসলিম)
کتاب الرقاق
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : « لَوْ كَانَ لِابْنِ آدَمَ وَادِيَانِ مِنْ مَالٍ لاَبْتَغَى ثَالِثًا ، وَلاَ يَمْلَأُ جَوْفَ ابْنِ آدَمَ إِلَّا التُّرَابُ ، وَيَتُوبُ اللَّهُ عَلَى مَنْ تَابَ » (رواه البخارى ومسلم)
হাদীস নং: ৪২
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহ দুনিয়া তলবকারীর অবস্থা ব্যাকুল করে দেন এবং আখিরাতপ্রার্থীর কলবে প্রশান্তি দান করেন
৪২. হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী ﷺ বলেছেন: আখিরাতের অন্বেষণ যার নিয়াতে রয়েছে, আল্লাহ তার কলবে প্রশান্তি দান করেন, তার অন্তরের ব্যাকুলতা দূর করে দেন এবং দুনিয়া অবনত হয়ে তার কাছে আসে। আর যার নিয়্যতে রয়েছে দুনিয়া লাভ করা, আল্লাহ তার চেহারায় অভাব-অনটনের ভাব সৃষ্টি করেন। তার অবস্থা ব্যাকুল ও অশান্ত করে দেন এবং তকদীরে নির্ধারিতের চেয়ে অধিক দুনিয়া (ধন-সম্পদ) সে লাভ করতে পারে না। (তিরমিযী, মুসনাদে আহমদ ও দারেমী)
کتاب الرقاق
عَنْ أَنَسِ اَنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : مَنْ كَانَتْ نِيَّتُهُ طَلَبُ الآخِرَةِ جَعَلَ اللَّهُ غِنَاهُ فِي قَلْبِهِ وَجَمَعَ لَهُ شَمْلَهُ ، وَأَتَتْهُ الدُّنْيَا وَهِيَ رَاغِمَةٌ ، وَمَنْ كَانَتِ نِيَّتُهُ طَلَبُ الدُّنْيَا جَعَلَ اللَّهُ الفَقْرَ بَيْنَ عَيْنَيْهِ ، وَشَتَّتْ عَلَيْهِ اَمْرَهُ ، وَلَا يَأْتِيْهِ مِنَهَا إِلاَّ مَا كُتِبَ لَهُ . (رواه الترمذى وراه احمد والدارمى)
হাদীস নং: ৪৩
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ মানুষের প্রকৃত সম্পদ কি কি: যা সে খেয়েছে, পরিধান করেছে ও দান করেছে
৪৩. হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: বান্দা বলে, আমার সম্পদ, আমার সম্পদ। প্রকৃতপক্ষে তার অংশ হ'ল তিনটি; যা সে খেয়ে খতম করেছে; যা সে পরিধান করে পুরনো করেছে কিংবা যা দান করে সে (আখিরাতের জন্য) সঞ্চয় করেছে। এছাড়া সব কিছু মানুষের জন্য তাকে ছাড়তে হবে এবং তার নিজেকেও (দুনিয়া ছেড়ে) চলে যেতে হবে। (মুসলিম)
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : " يَقُولُ الْعَبْدُ : مَالِي ، مَالِي ، إِنَّمَا لَهُ مِنْ مَالِهِ ثَلَاثٌ : مَا أَكَلَ فَأَفْنَى ، أَوْ لَبِسَ فَأَبْلَى ، أَوْ أَعْطَى فَاقْتَنَى ، وَمَا سِوَى ذَلِكَ فَهُوَ ذَاهِبٌ ، وَتَارِكُهُ لِلنَّاسِ " (رواه مسلم)
হাদীস নং: ৪৪
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ উত্তরাধিকারীর সম্পদ কার কাছে বেশি প্রিয়
৪৪. হযরত আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: তোমাদের মধ্যে এমন কে আছে যার কাছে নিজের সম্পদের চেয়ে তার উত্তরাধিকারীর সম্পদ অধিক প্রিয়? তারা (আসহাবে রাসূল) জবাব দিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মধ্যে এমন কোন ব্যক্তি নেই যার কাছে তার নিজের সম্পদের চেয়ে তার উত্তরাধিকারীর সম্পদ অধিক প্রিয়। রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন: তার (মানুষের) সম্পদ হল যা সে অগ্রে পাঠিয়ে দিয়েছে। আর যা সে রেখে দিয়েছে, তা তার উত্তরাধিকারীর সম্পদ। (বুখারী)
کتاب الرقاق
عَنِ عَبْدِاللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « أَيُّكُمْ مَالُ وَارِثِهِ أَحَبُّ إِلَيْهِ مِنْ مَالِهِ؟ » قَالُوا : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، مَا مِنَّا أَحَدٌ إِلَّا مَالُهُ أَحَبُّ إِلَيْهِ ، قَالَ : « فَإِنَّ مَالَهُ مَا قَدَّمَ ، وَمَالُ وَارِثِهِ مَا أَخَّرَ » (رواه البخارى)
হাদীস নং: ৪৫
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ মৃত ব্যক্তিকে ফেরেশতা এবং মানুষ যা জিজ্ঞেস করেন
৪৫. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বর্ণনা করেন, নবী ﷺ বলেছেন: ব্যক্তির মৃত্যুর পর ফেরেশতারা জিজ্ঞেস করেন, সে কি পাঠিয়েছে এবং মানুষ জিজ্ঞেস করে সে কি রেখে গেছে। (বায়হাকীঃ শুয়াবুল ঈমান)
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ , يَبْلُغُ بِهِ , قَالَ : " إِذَا مَاتَ الْمَيِّتُ قَالَتِ الْمَلَائِكَةُ : مَا قَدَّمَ . وَقَالَ بَنُو آدَمَ : مَا خَلَّفَ؟ " (رواه البيهقى)
হাদীস নং: ৪৬
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ দীনার ও দিরহামের দাসকে আল্লাহর রাসূল ﷺ অভিসম্পাত দিয়েছেন
৪৬. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: দীনারের দাস অভিশপ্ত এবং দিরহামের দাস অভিশপ্ত। (তিরমিযী)
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : لُعِنَ عَبْدُ الدِّينَارِ ، وَلُعِنَ عَبْدُ الدِّرْهَمِ . (رواه الترمذى)
হাদীস নং: ৪৭
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ হুযুর (ﷺ)-এর বাণী: আমাকে ব্যবসা ও অর্থ সঞ্চয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়নি
৪৭. হযরত জুবাইর ইবনে নুফাইর (রহঃ) থেকে মুরসাল পদ্ধতিতে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: আমাকে ওহীর মাধ্যমে এ নির্দেশ দেওয়া হয়নি যে, আমি যেন অর্থ-সম্পদ জমা করি এবং ব্যবসায়ীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকি; বরং আমাকে আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আমি যেন আমার প্রতিপালকের সপ্রশংস তসবীহ পাঠ করি ও সেজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকি এবং আমৃত্যু তাঁর এবাদত করে যাই। শরহুস সুন্নাহ
کتاب الرقاق
عَنِ جُبَيْرِ بْنِ نُفَيْرٍ مرسلاً قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « مَا أَوْحَى اللهُ إِلَيَّ أَنْ أَجْمَعَ الْمَالَ وَأَكُونَ مِنَ التَّاجِرِينَ وَلَكِنْ أَوْحَى إِلَيَّ أَنْ سَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَكُنْ مِنَ السَّاجِدِينَ وَاعْبُدْ رَبَّكَ حَتَّى يَأْتِيَكَ الْيَقِينُ » (رواه فى شرح السنة)
হাদীস নং: ৪৮
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে সম্পদ ও প্রাচুর্যের প্রস্তাব সত্ত্বেও হুযূর (ﷺ) দারিদ্র্যকেই বরণ করে নিলেন
৪৮. হযরত আবূ উমামা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: আল্লাহ্ তা'আলা আমার কাছে এ প্রস্তাব রাখলেন যে, তিনি আমার জন্য মক্কার প্রান্তরকে সোনা বানিয়ে দেবেন। (অর্থাৎ, তুমি যদি সম্পদশালী হতে চাও, তাহলে আমি মক্কার প্রান্তরকে সোনা দিয়ে ভরে দেব।) আমি বললাম, হে আমার রব! আমি এটা চাই না; বরং আমি এক দিন পেট ভরে আহার করব, আর এক দিন উপোস করব। যখন আমার ক্ষুধা লাগবে, তখন আপনাকে স্মরণ করব এবং কান্নাকাটি করব, আর যখন পেট ভরে খাব, তখন আপনার প্রশংসা ও শুকরিয়া আদায় করব। -মুসনাদে আহমাদ, তিরমিযী
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي أُمَامَةَ قَالَ قَالَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، عَرَضَ عَلَيَّ رَبِّي لِيَجْعَلَ لِي بَطْحَاءَ مَكَّةَ ذَهَبًا ، قُلْتُ : لاَ يَا رَبِّ وَلَكِنْ أَشْبَعُ يَوْمًا وَأَجُوعُ يَوْمًا ، فَإِذَا جُعْتُ تَضَرَّعْتُ إِلَيْكَ وَذَكَرْتُكَ ، وَإِذَا شَبِعْتُ حَمِدْتُكَ وَشَكَرْتُكَ . (رواه احمد والترمذى)
হাদীস নং: ৪৯
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর রাসূল ﷺ-এর দৃষ্টিতে সবচেয়ে ঈর্ষা যোগ্য ব্যক্তি
৪৯. হযরত আবূ উমামা (রা) নবী ﷺ থেকে বর্ণনা করেন, নবী ﷺ বলেছেন: আমার কাছে আমার বন্ধুদের মধ্যে সবচেয়ে ঈর্ষার যোগ্য হ'ল ঐ মু'মিন যার পার্থিব বস্তু সামান্য, নামাযে যার বিরাট অংশ, খুব সুন্দরভাবে যে তার রব্বের ইবাদত করে, খুব গোপনে আল্লাহর আনুগত্য করে, যে মানুষের দৃষ্টির অন্তরালে, কেউ (তার এসব কাজের জন্য) যার দিকে আঙ্গুল দিয়েও ইশারা করে না, যার রিযক সামান্য, কিন্তু সে তাতে সবর করে। অতঃপর নবী ﷺ হাতের আঙ্গুল দিয়ে শব্দ করে বললেনঃ যার শীঘ্র মৃত্যু হল, যার জন্য কাঁদল অল্প সংখ্যক এবং যার পরিত্যক্ত সম্পদ খুবই অল্প। (মুসনাদে আহমদ, তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ)
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي أُمَامَةَ ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : « إِنَّ أَغْبَطَ أَوْلِيَائِي عِنْدِي لَمُؤْمِنٌ خَفِيفُ الْحَاذِ ذُو حَظٍّ مِنَ الصَّلَاةِ ، أَحْسَنَ عِبَادَةَ رَبِّهِ وَأَطَاعَهُ فِي السِّرِّ ، وَكَانَ غَامِضًا فِي النَّاسِ لَا يُشَارُ إِلَيْهِ بِالْأَصَابِعِ ، وَكَانَ رِزْقُهُ كَفَافًا فَصَبَرَ عَلَى ذَلِكَ » ، ثُمَّ نَقَرَ بِإِصْبَعَيْهِ فَقَالَ : « عُجِّلَتْ مَنِيَّتُهُ قَلَّتْ بَوَاكِيهِ قَلَّ تُرَاثُهُ » (رواه احمد والترمذى وابن ماجه)
হাদীস নং: ৫০
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ সম্পদাকাঙ্ক্ষী স্ত্রীকে আবুদ্দারদা রাযি. যে উত্তর দিয়েছিলেন
৫০. হযরত উম্মে দারদা (রা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি আবু দারদাকে বললাম, তোমার কি হল! অমুক ব্যক্তি যেভাবে (ধন-দৌলত) তালাশ করে, তুমি সেভাবে কর না? তিনি (আবু দারদা) বললেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে বলতে শুনেছি, (তিনি বলেছেন:) তোমাদের সামনে এক বিরাট দুর্গম গিরিপথ রয়েছে। ভারী বোঝা বহনকারিগণ তা সহজে অতিক্রম করতে পারবে না। তাই আমি সে গিরিপথ অতিক্রমের জন্য নিজেকে হালকা রাখতে পসন্দ করি। (বায়হাকী : শুয়াবুল ঈমান)
کتاب الرقاق
عَنْ أُمِّ الدَّرْدَاءِ قَالَتْ : قُلْتُ لِأَبِي الدَّرْدَاءِ : أَلَا تَبْتَغِي لِأَضْيَافَكَ مَا يَبْتَغِي الرِّجَالُ لِأَضْيَافِهِمْ؟ فَقَالَ : إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ : " إِنَّ أَمَامَكُمْ عَقَبَةً كَئُودًا , لَا يُجَاوِزُهَا الْمُثْقِلُونَ , فَأُحِبُّ أَنْ أَتَخَفَّفَ لِتِلْكَ الْعَقَبَةِ " (رواه البيهقى فى شعب الايمان)
হাদীস নং: ৫১
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আদম সন্তানের অপসন্দনীয় দুটো জিনিস মু'মিনের জন্য উত্তম
৫১. হযরত মাহমুদ ইবন লবীদ (রা) থেকে বর্ণিত, নবী ﷺ বলেছেনঃ আদম সন্তান দুটো জিনিস অপসন্দ করে। সে মৃত্যুকে অপসন্দ করে, অথচ মু'মিনের জন্য মৃত্যু ফিতনা থেকে উত্তম। সে সম্পদের স্বল্পতাকে অপসন্দ করে, অথচ সম্পদের স্বল্পতা আখিরাতের হিসাব সংক্ষিপ্ত করবে। (মুসনাদে আহমদ)
کتاب الرقاق
عَنْ مَحْمُودِ بْنِ لَبِيدٍ ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : " اثْنَتَانِ يَكْرَهُهُمَا ابْنُ آدَمَ : الْمَوْتُ ، وَالْمَوْتُ خَيْرٌ لِلْمُؤْمِنِ مِنَ الْفِتْنَةِ ، وَيَكْرَهُ قِلَّةَ الْمَالِ ، وَقِلَّةُ الْمَالِ أَقَلُّ لِلْحِسَابِ " (رواه احمد)
হাদীস নং: ৫২
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর পসন্দনীয় পরিবার
৫২. হযরত ইমরান ইবন হুসায়ন (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল ﷺ বলেছেন: আল্লাহ এমন মুমিন বান্দাকে মহব্বত করেন, যে গরীব, পরিবার-পরিজনওয়ালা এবং সৎ চরিত্রের অধিকারী। (ইবনে মাজাহ)
کتاب الرقاق
عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ عَبْدَهُ الْمُؤْمِنَ ، الْفَقِيرَ ، الْمُتَعَفِّفَ ، أَبَا الْعِيَالِ » (رواه ابن ماجه)
হাদীস নং: ৫৩
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অভাব গোপনকারীর জন্য সুসংবাদ: এক বছরের হালাল রিযক প্রদান করা হয়
৫৩. হযরত আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: যে উপোস করল বা কোনরূপ প্রয়োজন অনুভব করল, অথচ তা মানুষের কাছে গোপন রাখল, সে ব্যক্তিকে এক বছরের হালাল রিযক প্রদান করা মহান ইয্যত ও জালালের অধিকারী আল্লাহর যিম্মাদারী। (বায়হাকী: শুয়াবুল ঈমান)
کتاب الرقاق
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ , قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " مَنْ جَاعَ أَوِ احْتَاجَ فَكَتَمَهُ النَّاسَ كَانَ حَقًّا عَلَى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ أَنْ يَرْزُقَهُ رِزْقَ سَنَةٍ مِنْ حَلَالٍ " . (رواه البيهقى فى شعب الايمان)
হাদীস নং: ৫৪
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহ ও মানুষের মহব্বত লাভের পথ: আখিরাতের মহব্বতে দুনিয়ার আরাম ত্যাগ করা
৫৪. হযরত সাহল ইবন সা'দ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী ﷺ-এর নিকট হাযির হয়ে বলল: ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে এমন আমল বাতলে দিন যে আমল করলে আল্লাহ এবং মানুষ আমাকে মহব্বত করবে। নবী ﷺ বললেন: আখিরাতের মহব্বতে দুনিয়ার আরাম-আয়েশ ত্যাগ কর। আল্লাহ তোমাকে মহব্বত করবেন এবং মানুষের কাছে যা আছে তার প্রতি নির্লিপ্ত হও, মানুষ তোমাকে ভালবাসবে। (তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ)
کتاب الرقاق
عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ ، قَالَ : جَاءَ رَجُلٌ فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ دُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ إِذَا أَنَا عَمِلْتُهُ أَحَبَّنِي اللَّهُ وَأَحَبَّنِي النَّاسُ؟ قَالَ « ازْهَدْ فِي الدُّنْيَا يُحِبَّكَ اللَّهُ ، وَازْهَدْ فِيمَا فِي أَيْدِي النَّاسِ يُحِبُّكَ النَّاسُ » (رواه الترمذى وابن ماجه)
হাদীস নং: ৫৫
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ যুহদ এবং এর ফলাফল ও বরকত: যাহিদ ব্যক্তির সান্নিধ্য লাভের উপদেশ
৫৫. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) ও আবু খাল্লাদ (রা) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল ﷺ বলেছেন, যখন তোমরা দেখবে কোন বান্দাকে 'যুহদ'-ফিদ-দুনিয়া বা আখিরাতের মহব্বতে দুনিয়ার আরাম-আয়েশ ত্যাগ করা ও সংক্ষিপ্ত কথন দান করা হয়েছে, তখন তার সান্নিধ্য লাভ কর। কেননা তাকে হিকমত দান করা হয়েছে। (বায়হাকী, শুয়াবুল ঈমান)
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَاَبِىْ خَلَّادٍ ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : " إِذَا رَأَيْتُمُ الْعَبْدَ يُعْطَى زُهْدًا فِي الدُّنْيَا وَقِلَّةَ مَنْطِقٍ ، فَاقْتَرِبُوا مِنْهُ ، فَإِنَّهُ يُلْقِي الْحِكْمَةَ " (رواه البيهقى فى شعب الايمان)
হাদীস নং: ৫৬
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ যুহদকারীর তামাম কাজকর্ম হিকমতে ভরপুর
৫৬. হযরত আবু যর গিফারী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে বান্দা দুনিয়াতে যুহদ করবে, আল্লাহ তার কলবে হিকমত পয়দা করবেন। তার জিহ্বা দিয়েও হিকমতের কথা বলাবেন। তার চোখের মধ্যে ধরিয়ে দেবেন দুনিয়ার দোষ-ত্রুটি, তার রোগ-ব্যাধি ও তার চিকিৎসা এবং দুনিয়া থেকে তাকে নিরাপদে বের করে নিয়ে যাবেন দারুস সালাম-শান্তির গৃহে। (বায়হাকী: শুয়াবুল ঈমান)
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي ذَرٍّ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " مَا زَهِدَ عَبْدٌ فِي الدُّنْيَا إِلَّا أَثْبَتَ اللهُ الْحِكْمَةَ فِي قَلْبِهِ ، وَأَنْطَقَ لَهَا لِسَانَهُ وَبَصَّرَهُ عَيْبَ الدُّنْيَا وَدَاءَهَا وَدَوَاءَهَا " . " وَأَخْرَجَهُ مِنْهَا سَالِمًا إِلَى دَارِ السَّلَامِ " (رواه البيهقى فى شعب الايمان)
হাদীস নং: ৫৭
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ প্রাচুর্যের যিন্দেগী পরিহার করার নসীহত
৫৭. হযরত মু'আয ইবন জাবাল (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁকে ইয়েমেনে পাঠানোর সময় বললেন: প্রাচুর্যের যিন্দেগী সম্পর্কে সাবধান; অবশ্যই আল্লাহর বান্দাগণ আরাম-আয়েশের জীবন যাপনকারীদের অন্তর্গত নন। (মুসনাদে আহমদ)
کتاب الرقاق
عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ : أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا بَعَثَ بِهِ إِلَى الْيَمَنِ قَالَ : " إِيَّاكَ وَالتَّنَعُّمَ؛ فَإِنَّ عِبَادَ اللهِ لَيْسُوا بِالْمُتَنَعِّمِينَ " (رواه احمد)
হাদীস নং: ৫৮
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ যাকে হিদায়াত দান করা হয় ইসলামের জন্য তার বুক খুলে দেয়া হয়
৫৮. হযরত আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ তিলাওয়াত করলেন:
فَمَنْ يُرِدِ اللَّهُ أَنْ يَهْدِيَهُ يَشْرَحْ صَدْرَهُ لِلْإِسْلَامِ
"আল্লাহ যাকে হিদায়াত দিতে চান তার বুক ইসলামের জন্য খুলে দেন।"
অতঃপর বললেনঃ নূর বুকে প্রবেশ করলে তা প্রশস্ত হয়ে যায়। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তার কি কোন আলামত রয়েছে, যার দ্বারা তার পরিচয় লাভ করা যায়? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ! অস্থায়ী দুনিয়ার প্রবঞ্চনার গৃহের প্রতি বিমুখতা, আখিরাতের চিরস্থায়ী গৃহের প্রতি আসক্তি এবং মৃত্যুর পূর্বে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা। (বায়হাকী: শুয়াবুল ঈমান)
کتاب الرقاق
عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ ، قَالَ : تَلَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : {فَمَنْ يُرِدِ اللهُ أَنْ يَهْدِيَهُ يَشْرَحْ صَدْرَهُ لِلْإِسْلَامِ} ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " إِنَّ النُّورَ إِذَا دَخَلَ الصَّدْرَ انْفَسَحَ فَقِيلَ : يَا رَسُولَ اللهِ ، هَلْ لِذَلِكَ مِنْ عِلْمٍ يُعْرَفُ؟ قَالَ : " نَعَمْ ، التَّجَافِي عَنْ دَارِ الْغُرُورِ ، وَالْإِنَابَةِ إِلَى دَارِ الْخُلُودِ ، وَالِاسْتِعْدَادُ لِلْمَوْتِ قَبْلَ نُزُولِهِ " (رواه البيهقى فى شعب الايمان)
হাদীস নং: ৫৯
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ মুসলিম উম্মতের পহেলা কল্যাণ এবং পহেলা ফাসাদ
৫৯. হযরত আমর ইবন শু'আয়ব তাঁর পিতা থেকে এবং তিনি তাঁর দাদা (রা) থেকে বর্ণনা করেন, নবী ﷺ বলেছেন: এ উম্মতের পহেলা সওয়াব ও কল্যাণ হল, ইয়াকীন ও যুহদ এবং এ উম্মতের পহেলা ফাসাদ হল, কৃপণতা ও আকাঙ্ক্ষা। (বায়হাকী: শুয়াবুল ঈমান)
کتاب الرقاق
عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ جَدِّهِ : أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : " أَوَّلُ صَلَاحِ هَذِهِ الْأُمَّةِ بِالْيَقِينِ وَالزُّهْدِ ، وَأَوَّلُ فَسَادِهَا بِالْبُخْلِ وَالْأَمَلِ " (رواه البيهقى فى شعب الايمان)
হাদীস নং: ৬০
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ হালালকে হারাম এবং সম্পদ বরবাদ করার নাম যুহদ নয়
৬০. হযরত আবু যর গিফারী (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: হালালকে হারাম এবং সম্পদ বরবাদ করার নাম যুহদ নয়, বরং দুনিয়াতে যুহদ করার অর্থ হল, তোমার হাতে যা আছে তার চেয়ে বেশি ভরসা কর যা আল্লাহর হাতে আছে তার উপর এবং তোমার উপর মুসীবত পতিত হলে তা তোমার উপর পতিত না হওয়ার আকাঙ্ক্ষা করার চেয়ে সওয়াবের আকাঙ্ক্ষা বেশি কর। (তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ)
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي ذَرٍّ ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : الزَّهَادَةُ فِي الدُّنْيَا لَيْسَتْ بِتَحْرِيمِ الحَلاَلِ وَلاَ إِضَاعَةِ الْمَالِ وَلَكِنَّ الزَّهَادَةَ فِي الدُّنْيَا أَنْ لاَ تَكُونَ بِمَا فِي يَدَيْكَ أَوْثَقَ مِمَّا فِي يَدِ اللهِ وَأَنْ تَكُونَ فِي ثَوَابِ الْمُصِيبَةِ إِذَا أَنْتَ أُصِبْتَ بِهَا أَرْغَبَ فِيهَا لَوْ أَنَّهَا أُبْقِيَتْ لَكَ . (رواه الترمذى وابن ماجه)