মা'আরিফুল হাদীস

রিকাক অধ্যায়

হাদীস নং: ৪৩
রিকাক অধ্যায়
মানুষের প্রকৃত সম্পদ কি কি: যা সে খেয়েছে, পরিধান করেছে ও দান করেছে
৪৩. হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: বান্দা বলে, আমার সম্পদ, আমার সম্পদ। প্রকৃতপক্ষে তার অংশ হ'ল তিনটি; যা সে খেয়ে খতম করেছে; যা সে পরিধান করে পুরনো করেছে কিংবা যা দান করে সে (আখিরাতের জন্য) সঞ্চয় করেছে। এছাড়া সব কিছু মানুষের জন্য তাকে ছাড়তে হবে এবং তার নিজেকেও (দুনিয়া ছেড়ে) চলে যেতে হবে। (মুসলিম)
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : " يَقُولُ الْعَبْدُ : مَالِي ، مَالِي ، إِنَّمَا لَهُ مِنْ مَالِهِ ثَلَاثٌ : مَا أَكَلَ فَأَفْنَى ، أَوْ لَبِسَ فَأَبْلَى ، أَوْ أَعْطَى فَاقْتَنَى ، وَمَا سِوَى ذَلِكَ فَهُوَ ذَاهِبٌ ، وَتَارِكُهُ لِلنَّاسِ " (رواه مسلم)

হাদীসের ব্যাখ্যা:

সম্পত্তির নেশা মানুষের এক মারাত্মক ব্যাধি। প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ সঞ্চয় করে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ মনে করা হয়। আমাদের বস্তুতান্ত্রিক যুগে সম্পদ সঞ্চয়কারী বা বিরাট ব্যাংক-ব্যাল্যান্সের অধিকারীকে সম্মান ও সমীহের চোখে দেখা হয়। যে যত বেশি ব্যাংক-ব্যাল্যান্সের অধিকারী, সে নিজেকে তত বেশি গৌরবের অধিকারী মনে করে। যদি সে সুস্থভাবে একটু চিন্তা করে, তাহলে তার এই ভ্রান্তি নিজের চোখে ধরা পড়বে। সে বুঝতে পারবে, যে সম্পদের জন্য নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করে বা নিজেকে সে সম্পদের মালিক হিসেবে কল্পনা করে, মৃত্যুর পর তা তার কোন উপকারে আসবে না; বরং দিনকে রাত বা রাতকে দিন করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যে সম্পদ সে উপার্জন করেছে, তা অন্যের ভোগ-দখলে চলে যাবে বস্তুত সম্পদের ব্যবহারের মধ্যে সম্পদের সঠিক মূল্য নিহিত। তাই মানুষ নিজের প্রয়োজন পূরণ করার জন্য যা দুনিয়াতে ব্যয় করেছে, তা তার সম্পদ হিসেবে গণ্য অনুরূপভাবে যদি কেউ আল্লাহর রাস্তায় বা দুঃস্থ মানবতার সেবায় ব্যয় করে থাকে তাহলে তার প্রতিফল সে আখিরাতে লাভ করবে। দুনিয়ার জীবনে যতটুকু তার কাজে লেগেছে বা আখিরাতে যতটুকু কাজে লাগবে, শুধু ততটুকুই তার সম্পত্তি। অবশিষ্টেয় মালিক সে নয়, বরং অন্য লোক। মৃত্যুর পূর্বে আখিরাত ও দুনিয়ার কল্যাণে সম্পদ ব্যয় করার মধ্যে সফলতা রয়েছে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান