মা'আরিফুল হাদীস
معارف الحديث
রিকাক অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১০০ টি
হাদীস নং: ৮১
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ যাদেরকে আল্লাহ শোকরগুযার বান্দা হিসেবে লিখবেন
৮১. হযরত আমর ইবন শু'আয়ব থেকে বর্ণিত, তিনি তাঁর পিতা থেকে এবং পিতা তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যার মধ্যে দুটো স্বভাব রয়েছে, আল্লাহ তাকে শোকরগুযার ও সবরকারী হিসেবে লিখবেন। যে দীনের ব্যাপারে তার চেয়ে অধিক মর্যাদার অধিকারীর দিকে নজর করে ও তাকে অনুসরণ করে: আর দুনিয়ার ব্যাপারে তার চেয়ে নিম্ন মর্যাদার অধিকারীর দিকে নজর করে এবং আল্লাহ তাকে যে নিয়ামত দান করেছেন তার জন্য প্রশংসা করে, তাকে আল্লাহ শোকরগুযার ও সবরকারী হিসেবে লিখবেন। যে দীনের ব্যাপারে তার নিম্ন মর্যাদার অধিকারীর দিকে নজর করে এবং দুনিয়ার ব্যাপারে তার চেয়ে উচ্চ মর্যাদার অধিকারীর দিকে নজর করে এবং যা তাকে দান করা হয়নি তার জন্য আফসোস করে, আল্লাহ তার নাম, শোকরগুযার ও সবরকারী হিসেবে লিখবেন না। (তিরমিযী)
کتاب الرقاق
عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ ، عَنْ جَدِّهِ عَنْ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : « خَصْلَتَانِ مَنْ كَانَتَا فِيهِ كَتَبَهُ اللَّهُ شَاكِرًا صَابِرًا ، وَمَنْ لَمْ تَكُونَا فِيهِ لَمْ يَكْتُبْهُ اللَّهُ شَاكِرًا وَلَا صَابِرًا ، مَنْ نَظَرَ فِي دِينِهِ إِلَى مَنْ هُوَ فَوْقَهُ فَاقْتَدَى بِهِ ، وَنَظَرَ فِي دُنْيَاهُ إِلَى مَنْ هُوَ دُونَهُ فَحَمِدَ اللَّهَ عَلَى مَا فَضَّلَهُ اللهُ عَلَيْهِ كَتَبَهُ اللَّهُ شَاكِرًا وَصَابِرًا ، وَمَنْ نَظَرَ فِي دِينِهِ إِلَى مَنْ هُوَ دُونَهُ ، وَنَظَرَ فِي دُنْيَاهُ إِلَى مَنْ هُوَ فَوْقَهُ فَأَسِفَ عَلَى مَا فَاتَهُ مِنْهُ لَمْ يَكْتُبْهُ اللَّهُ شَاكِرًا وَلَا صَابِرًا » (رواه الترمذى)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৮২
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বনিকৃষ্ট ব্যক্তির পরিচয়
৮২. আবু বাকরা (র) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল! শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি কে? তিনি বললেন: যার জীবন দীর্ঘ এবং আমল সুন্দর। সে জিজ্ঞেস করল, নিকৃষ্ট মানুষ কে? তিনি বললেন: যার জীবন দীর্ঘ এবং আমল মন্দ। (আহমদ)
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي بَكَرَةَ اَنَّ رَجُلًا قَالَ يَا رَسُولَ اللهِ ، أَيُّ النَّاسِ خَيْرٌ؟ قَالَ : " مَنْ طَالَ عُمْرُهُ ، وَحَسُنَ عَمَلُهُ " ، قَالَ : فَأَيُّ النَّاسِ شَرٌّ؟ قَالَ : " مَنْ طَالَ عُمْرُهُ ، وَسَاءَ عَمَلُهُ " (رواه احمد)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৮৩
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধিক আমলের মর্যাদা
৮৩. হযরত উবায়দ ইবন খালিদ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল ﷺ দুই ব্যক্তির মধ্যে ভ্রাতৃত্ব স্থাপন করেছিলেন। তাদের এক ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় শাহাদাত বরণ করেন। অপর ব্যক্তি এক সপ্তাহ বা তার নিকটবর্তী সময়ে মৃত্যুবরণ করেন। সাহাবাগণ তার জানাযা পড়লেন। রাসুলুল্লাহ ﷺ তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন: তোমরা (তার সম্পর্কে) কি বল? তারা বললেন: আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছি তাকে মাফ করার, দয়া প্রদর্শন এবং তার শহীদ সাথীর সাথে তাকে মিলিত করার জন্য। অতঃপর নবী ﷺ বললেনঃ শহীদ ব্যক্তির মৃত্যুর পর সে যে সালাত এবং আমল করেছে তা কোথায় গেল? বা তিনি বলেছিলেন। তার রোযার পর সে যে রোযা করল তা কোথায় গেল? তাদের উভয়ের মাঝের দূরত্ব আসমান যমীনের চেয়েও বেশি।
(আবূ দাউদ ও নাসাঈ)
(আবূ দাউদ ও নাসাঈ)
کتاب الرقاق
عَنْ عُبَيْدِ بْنِ خَالِدٍ اَنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ آخَى بَيْنَ رَجُلَيْنِ ، فَقُتِلَ أَحَدُهُمَا ، فِىْ سَبِيْلِ اللهِ ثُمَّ مَاتَ الْآخَرُ بَعْدَهُ بِجُمُعَةٍ ، أَوْ نَحْوِهَا ، فَصَلُّوْا عَلَيْهِ ، فَقَالَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « مَا قُلْتُمْ؟ » فَقُلْنَا : دَعَوْنَا الله ، اَنْ يَّغْفِرَ لَهُ وَيَرْحَمَهُ وَيَلْحِقَهُ بِصَاحِبِهِ ، فَقَالَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « فَأَيْنَ صَلَاتُهُ وَعَمَلُهُ بَعْدَ عَمَلِهِ اَوْ قَالَ صِيَامُهُ بَعْدَ صِيَامِهِ لَمَا بَيْنَهُمَا اَبْعَدُ مِمَّا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْاَرْضِ . (رواه ابو داؤد والنسائى)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৮৪
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ দীর্ঘ জীবন ইসলামী যিন্দেগীর উপর থাকার ফযীলত
৮৪. হযরত আবদুল্লাহ ইবন শাদ্দাদ (রা) থেকে বর্ণিত, বনু উযরা গোত্রের তিন ব্যক্তি আল্লাহর নবীর কাছে আসলেন এবং ইসলাম কবুল করলেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ সাহাবীদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, কে তাদের যিম্মাদারী নেবে? তালহা বললেন, আমি। অতঃপর তাঁরা তাঁর সাথে অবস্থান করলেন। অতঃপর নবী ﷺ একদল মুজাহিদ (কোন স্থানে) প্রেরণ করলেন। তাদের একজন মুজাহিদ দলের সাথে বেরিয়ে শাহাদাত বরণ করলেন। অতঃপর নবী ﷺ আরও একদল মুজাহিদ পাঠালেন। দ্বিতীয় ব্যক্তি এই দলের সাথে বের হলেন এবং শাহাদাত বরণ করলেন। অতঃপর তৃতীয় ব্যক্তি বিছানায় মৃত্যুবরণ করলেন। বর্ণনাকারী বলেন, তালহা (রা) বলেছেন, আমি ঐ তিন ব্যক্তিকে জান্নাতের মধ্যে দেখতে পেলাম। শয্যায় মৃত্যুবরণকারীকে তাদের অগ্রে দেখলাম, শেষে শাহাদাত বরণকারী তার নিকটে রয়েছে এবং তাদের মধ্যে যিনি প্রথম শহীদ হয়েছিলেন। তিনিও তার নিকট রয়েছেন। এটা আমার মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি করল। আমি নবী ﷺ-কে বললাম। তিনি বললেন: তাতে তুমি কি জিনিস ইনকার কর (সঠিক নয় মনে কর)? আল্লাহর কাছে সেই মুমিনের চেয়ে কেউ শ্রেষ্ঠ নয়, যে দীর্ঘ জীবন ইসলামের মধ্যে তাসবীহ, তাকবীর ও তাহলীল করে অতিবাহিত করে।
کتاب الرقاق
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَدَّادٍ ، أَنَّ نَفَرًا مِنْ بَنِي عُذْرَةَ ثََلَاثَةً ، أَتَوْا النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَسْلَمُوا ، قَالَ : فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « مَنْ يَكْفِينِِيهِمْ؟ » قَالَ طَلْحَةُ : أَنَا . قَالَ : فَكَانُوا عِنْدَ طَلْحَةَ ، فَبَعَثَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْثًا فَخَرَجَ فيه أَحَدُهُمْ فَاسْتُشْهِدَ ، ثُمَّ بَعَثَ بَعْثًا فَخَرَجَ فِيهِ الْآخَرُ فَاسْتُشْهِدَ ، ثُمَّ مَاتَ الثَّالِثُ عَلَى فِرَاشِهِ ، قَالَ قَالَ طَلْحَةُ : فَرَأَيْتُ هَؤُلاءِ الثَّلاثَةَ فِي الْجَنَّةِ ، وَرَأَيْتُ الْمَيِّتَ عَلَى فِرَاشِهِ أَمَامَهُمْ ، وَالَّذِي اسْتُشْهِدَ اٰخَراً يَلِيهِ ، وَأَوَّلُهُمْ يَلِيْهِ فَدَخَلَنِي مِنْ ذَلِكَ ، فَذَكَرْتُ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَلِكَ فَقَالَ : « وَمَا أَنْكَرْتَ مِنْ ذَلِكَ لَيْسَ أَحَدٌ أَفْضَلَ عِنْدَ اللَّهِ مِنْ مُؤْمِنٍ يُعَمَّرُ فِي الْإِسْلامِ لِتَسْبِيحِهِ وَتَكْبِيرِهِ وَتَهْلِيلِهِ » (رواه احمد)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৮৫
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ভাল কাজ মন্দ কাজকে মুছে ফেলে
৮৫. হযরত আবু যর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল ﷺ আমাকে বলেছেন: তুমি যেখানে থাক না কেন, আল্লাহকে ভয় কর, মন্দ কাজের পর ভাল কাজ কর, ভাল কাজ মন্দ কাজকে মুছে ফেলবে এবং মানুষের সাথে উত্তম আচরণ কর। (আহমদ, তিরমিযী ও দারিমী)
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ : قَالَ لِي رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : اتَّقِ اللهِ حَيْثُمَا كُنْتَ ، وَأَتْبِعِ السَّيِّئَةَ الحَسَنَةَ تَمْحُهَا ، وَخَالِقِ النَّاسَ بِخُلُقٍ حَسَنٍ . (رواه احمد والترمذى والدارمى)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৮৬
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ এক ব্যক্তির প্রতি নবী ﷺ-এর তিনটি মূল্যবান উপদেশ
৮৬. হযরত আবু আইয়ুব আনসারী (রা) বলেন, এক ব্যক্তি নবী ﷺ-এর নিকট এসে বলল: আমাকে উপদেশ দিন এবং তা খুব সংক্ষিপ্তভাবে। তিনি বললেন: যখন তুমি নামাযে দাঁড়াবে, তখন তা বিদায়ী ব্যক্তির ন্যায় পড়বে। এমন কোন কথা বলবে না যার জন্য আগামীকাল তোমাকে জবাবদিহি করতে হবে এবং মানুষের কাছে যা আছে তার ব্যাপারে নিজেকে সম্পূর্ণ নিরাশ করে ফেল।
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي أَيُّوبَ ، قَالَ : جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ عَلِّمْنِي ، وَأَوْجِزْ ، فَقَالَ : « إِذَا قُمْتَ فِي صَلَاتِكَ فَصَلِّ صَلَاةَ مُوَدِّعٍ ، وَلَا تَكَلَّمْ بِكَلَامٍ تَعْتَذِرُ مِنْهُ ، وَأَجْمِعِ الْيَأْسَ عَمَّا فِي أَيْدِي النَّاسِ » (رواه احمد)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৮৭
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ তিনটি নাজাতদানকারী ও তিনটি হালাককারী জিনিস
৮৭. হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল ﷺ বলেছেন : তিনটি জিনিস নাজাত দানকারী এবং তিনটি জিনিস হালাককারী। নাজাত দানকারী তিনটি জিনিস হল: প্রকাশ্যে ও গোপনে আল্লাহকে ভয় করা, খুশি এবং রাগের অবস্থায় হক কথা বলা এবং দারিদ্র্য ও প্রাচুর্য অবস্থায় মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা। হালাককারী জিনিস হল, নফসের খাহেশের অনুসরণ করা, কৃপণতার তাঁবেদারী করা এবং নিজের সম্পর্কে উচ্চ ধারণা পোষণ করা, এটা সবচেয়ে নিকৃষ্ট। (বায়হাকী: শুয়াবুল ঈমান)
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : " ثَلَاثٌ مُنْجِيَاتٌ ، وَثَلَاثٌ مُهْلِكَاتٌ ، فَأَمَّا الْمُنْجِيَاتُ : فَتَقْوَى اللهِ فِي السِّرِّ وَالْعَلَانِيَةِ ، وَالْقَوْلُ بِالْحَقِّ فِي الرِّضَا وَالسُّخْطِ ، وَالْقَصْدُ فِي الْغِنَى وَالْفَقْرِ ، وَأَمَّا الْمُهْلِكَاتِ : فَهَوًى مُتَّبِعٌ ، وَشُحٌّ مُطَاعٌ ، وَإِعْجَابُ الْمَرْءِ بِنَفْسِهِ ، وَهِيَ أَشَدُّهُنَّ " (رواه البيهقى فى شعب الايمان)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৮৮
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ দুশ্চিন্তাহীন জীবন: আমানতের হিফাযত, সত্যবাদিতা, সুন্দর আখলাক ও হালাল খাদ্য
৮৮. হযরত আবদুল্লাহ ইবন আমর (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন : সারা দুনিয়া তোমার (হাতের মুঠোর) কাছে না আসুক তাতেও তোমার কোন চিন্তা নেই যদি চারটা জিনিস তোমার মধ্যে থাকে। আমানতের হিফাযত, কথাবার্তায় সত্যবাদিতা, সুন্দর আখলাক এবং খাদ্যের পবিত্রতা। (আহমদ ও বায়হাকীঃ শুয়াবুল ঈমান)
کتاب الرقاق
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ : " أَرْبَعٌ إِذَا كُنَّ فِيكَ فَلَا عَلَيْكَ مَا فَاتَكَ مِنَ الدُّنْيَا : حِفْظُ أَمَانَةٍ ، وَصِدْقُ الْحَدِيثِ ، وَحُسْنُ الْخَلِيقَةِ ، وَعِفَّةٌ فِي طُعْمَةٍ " (رواه البيهقى فى شعب الايمان)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৮৯
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ সফলকাম ব্যক্তি: যার হৃদয়কে আল্লাহ ইসলামের জন্য খালেস করেছেন
৮৯. হযরত আবু যর গিফারী (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: সে সফল হয়েছে যার কলবকে আল্লাহ ইসলামের জন্য খালেস করেছেন, যার কলবকে সহীহ সালেম, যার জিহ্বাকে সত্য, নফসকে তৃপ্ত ও সন্তুষ্ট, যার আখলাককে সুদৃঢ়, যার কানকে শ্রবণকারী এবং চোখকে দর্শনকারী করেছেন। যা দিলের মধ্যে সোপর্দ করা হয় তা কান বহন করে এবং চোখ স্থায়িত্ব দান করে। অবশ্যই সে কামিয়াব, যে তার দিলকে সতর্ক ও সদা জাগ্রত রাখে। (মুসনাদে আহমদ ও বায়হাকীঃ শুয়াবুল ঈমান)
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي ذَرٍّ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : " قَدْ أَفْلَحَ مَنْ أَخْلَصَ اللهُ قَلْبَهُ لِلْإِيمَانِ ، وَجَعَلَ قَلْبَهُ سَلِيمًا ، وَلِسَانَهُ صَادِقًا ، وَنَفْسَهُ مُطْمَئِنَّةً ، وَخَلِيقَتَهُ مُسْتَقِيمَةً ، وَجَعَلَ أُذُنَهُ مُسْتَمِعَةً ، وَعَيْنَهُ نَاظِرَةً فَأَمَّا الْأُذُنُ فَقِمْعٌ ، وَأَمَّا الْعَيْنُ فَمُقِرَّةٌ لِمَا يُوعِي الْقَلْبُ ، وَقَدْ أَفْلَحَ مَنْ جَعَلَ اللهُ قَلْبَهُ وَاعِيًا " (رواه احمد البيهقى فى شعب الايمان)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৯০
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ বার্ধক্যের পূর্বে যৌবন, অসুস্থতার পূর্বে সুস্থতা, অভাবের পূর্বে প্রাচুর্য, ব্যস্ততার পূর্ব অবসর এবং মৃত্যুর পূর্বে জীবনের সদ্ব্যবহার কর
৯০. হযরত আমর ইবন মায়মুন আওদী (রা) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল ﷺ এক ব্যক্তিকে নসীহত করার সময় বলেছেন: পাঁচটি জিনিসের পূর্বে পাঁচটি জিনিসের সদ্ব্যবহার কর। তোমার বার্ধক্যের পূর্বে তোমার যৌবনের, তোমার অসুস্থতার পূর্বে তোমার সুস্থতার, তোমার অভাবের পূর্বে তোমার প্রাচুর্যের, তোমার কর্মব্যস্ততার পূর্বে তোমার অবসরের এবং তোমার মৃত্যুর পূর্বে তোমার জীবনের। (তিরমিযী)
کتاب الرقاق
عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُونٍ الْأَوْدِيِّ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِرَجُلٍ وَهُوَ يَعِظُهُ : " اغْتَنِمْ خَمْسًا قَبْلَ خَمْسٍ , شَبَابَكَ قَبْلَ هَرَمِكَ , وَصِحَّتَكَ قَبْلَ سَقَمِكَ , وَغِنَاكَ قَبْلَ فَقْرِكَ , وَفَرَاغَكَ قَبْلَ شُغُلِكَ , وَحَيَاتَكَ قَبْلَ مَوْتِكَ " (رواه الترمذى)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৯১
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ সৎকর্মের জন্যে ইনতেজার করা অনুচিত
৯১. হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি নবী ﷺ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন: তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি (সৎকর্ম করার জন্য) ইনতেজার করে, সে বস্তুত প্রাচুর্য যা মানুষকে সীমা লংঘনকারী করে, অথবা দারিদ্র্য যা সব কিছু ভুলিয়ে দেয় বা অসুস্থতা যা এক ধ্বংসকারী কিংবা বার্ধক্য যা চিন্তা-বিবেচনা লোপ করে অথবা মৃত্যু যা আকস্মিকভাবে শেষ স্পর্শ দান করে বা দাজ্জাল যা প্রতিশ্রুত এক গায়েবী অমঙ্গল এবং কিয়ামত যা এক আদিষ্ট মারাত্মক মুসীবত-তার অপেক্ষা করে। (তিরমিযী ও নাসাঈ)
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : " مَا يَنْتَظِرُ أَحَدُكُمْ إِلَّا غِنًى مُطْغِيًا ، أَوْ فَقْرًا مَنْسِيًا ، أَوْ مَرَضًا مُفْسِدًا ، أَوْ هَرَمًا مُفَنِّدًا ، أَوْ مَوْتًا مُجْهِزًا ، أَوِ الدَّجَّالَ ، وَالدَّجَّالُ شَرُّ غَائِبٍ يُنْتَظَرُ ، أَوِ السَّاعَةُ وَالسَّاعَةُ أَدْهَى وَأَمَرُّ " (رواه الترمذى والنسائى)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৯২
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পাঁচটা জিনিস জিজ্ঞাসার পূর্বে আদম সন্তানের পা সরবে না: জীবন, যৌবন, সম্পদের আয়-ব্যয় এবং জ্ঞান সম্পর্কে প্রশ্ন
৯২. হযরত ইবন মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি নবী ﷺ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন: কিয়ামতের দিন পাঁচটা জিনিস সম্পর্কে জিজ্ঞেস না করা পর্যন্ত কোন বনী আদমের পা সরতে পারবে না। সেগুলো হলো: তার জীবন কি কাজে ধ্বংস করেছে। তার যৌবন সে কি কাজে ক্ষয় করেছে। তার সম্পদ সে কোথা থেকে উপার্জন করেছে এবং কি কাজে তা ব্যয় করেছে এবং তার যে জ্ঞান ছিল সে মোতাবিক সে কি আমল করেছে। (তিরমিযী)
کتاب الرقاق
عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : لاَ تَزُولُ قَدَمُ ابْنِ آدَمَ يَوْمَ القِيَامَةِ حَتَّى يُسْأَلَ عَنْ خَمْسٍ ، عَنْ عُمُرِهِ فِيمَا أَفْنَاهُ ، وَعَنْ شَبَابِهِ فِيمَا أَبْلاَهُ ، وَعَنْ مَالِهِ مِنْ أَيْنَ اكْتَسَبَهُ وَفِيمَا أَنْفَقَهُ ، وَمَاذَا عَمِلَ فِيمَا عَلِمَ . (رواه الترمذى)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৯৩
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ গালির উত্তরে গালি দিতে ও গোড়ালীর নিচে কাপড় পরতে নিষেধ করা হয়েছে
৯৩. হযরত আবু জুরাই জাবির ইবন সুলায়ম (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি মদীনায় আসলাম। আমি এক ব্যক্তিকে দেখলাম যাঁর রায় জানার জন্য তাঁর কাছে লোকজন হাযির হয়েছে। তিনি যা বলেন তা তারা গুরুত্বসহকারে পালন করে। আমি বললাম, ইনি কে? উপস্থিত লোকজন বলল, তিনি রাসূলুল্লাহ ﷺ। বর্ণনাকারী বলেন, আমি-দু'বার বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আলাইকা সালাম। রাসূলুল্লাহ বললেন: আলাইকা সালাম বলবে না। আলাইকা সালাম মৃত ব্যক্তিদের সালাম। বল, আসসালামু আলাইকা। আমি বললাম, আপনি রাসূলুল্লাহ? তিনি বললেন : আমি এমন এক আল্লাহর রাসূল যদি বিপদ তোমার উপর পতিত হয় এবং তুমি তাঁকে আহবান কর, তাহলে তিনি তোমার উপর থেকে তা দূর করেন, যদি তোমার উপর দুর্ভিক্ষের বছর উপস্থিত হয় এবং তুমি তাঁকে আহবান কর, তাহলে তিনি যমীন থেকে তোমার জন্য খাদ্য উৎপাদন করেন। যদি কোন মরুভূমি বা জনশুন্য প্রান্তরেও তোমার সওয়ারীর জানোয়ার হারিয়ে যায় এবং তুমি দু'আ কর, তাহলে তিনি তা তোমার কাছে ফিরিয়ে দেন। আমি বললাম, আমাকে নসীহত করুন। তিনি বললেন: কখনো কাউকে গালি দিবে না। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আমি কোন আযাদ ব্যক্তি বা দাস বা উট বা বকরীকেও গালি দেইনি। রাসুলুল্লাহ ﷺ বললেন: কোন ভাল কাজকে কখনো হেয় জ্ঞান করো না, তোমার ভাইয়ের সাথে খোশ চেহারা নিয়ে আলাপ করবে। কেননা এটাও একটা (ভাল আচরণ বা নেক কাজ), তোমার তহবন্দ হাঁটু ও গোড়ালীর মধ্যস্থলে রাখ এবং তা না করলে গোড়ালীর উপরের হাড় পর্যন্ত রাখ, তহবন্দ বেশি নিচে ছেড়ে দেয়া থেকে সাবধান থাক, এটা অহঙ্কার এবং আল্লাহ অহঙ্কার পসন্দ করেন না: যদি কেউ তোমার দোষ জেনে তোমার নিন্দা করে এবং তোমাকে গালি দেয়, তাহলে তুমি তার যে দোষ জান তার জন্য তাকে নিন্দা করবে না, এরূপ হলে (মন্দ কথনের) যাবতীয় যিম্মাদারী তার উপর বর্তাবে। (আবু দাউদ)
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي جُرَيٍّ جَابِرِ بْنِ سُلَيْمٍ ، قَالَ : اَتَيْتُ الْمَدِيْنَةَ فَرَأَيْتُ رَجُلًا يَصْدُرُ النَّاسُ عَنْ رَأْيِهِ ، لَا يَقُولُ شَيْئًا إِلَّا صَدَرُوْا عَنْهُ ، قُلْتُ : مَنْ هَذَا؟ قَالُوا : هَذَا رَسُولُ اللَّهِ ، قَالَ قُلْتُ : عَلَيْكَ السَّلَامُ يَا رَسُولَ اللَّهِ ، مَرَّتَيْنِ ، قَالَ : " لَا تَقُلْ : عَلَيْكَ السَّلَامُ ، فَإِنَّ عَلَيْكَ السَّلَامُ تَحِيَّةُ الْمَيِّتِ ، قُلْ : السَّلَامُ عَلَيْكَ " قُلْتُ : أَنْتَ رَسُولُ اللَّهِ؟ قَالَ : « أَنَا رَسُولُ اللَّهِ الَّذِي إِنْ أَصَابَكَ ضُرٌّ فَدَعَوْتَهُ كَشَفَهُ عَنْكَ ، وَإِنْ أَصَابَكَ عَامُ سَنَةٍ فَدَعَوْتَهُ ، أَنْبَتَهَا لَكَ ، وَإِذَا كُنْتَ بِأَرْضٍ قَفْرٍ أَوْ فَلَاةٍ فَضَلَّتْ رَاحِلَتُكَ فَدَعَوْتَهُ ، رَدَّهَا عَلَيْكَ » ، قُلْتُ : اعْهَدْ إِلَيَّ ، قَالَ : « لَا تَسُبَّنَّ أَحَدًا » قَالَ : فَمَا سَبَبْتُ بَعْدَهُ حُرًّا ، وَلَا عَبْدًا ، وَلَا بَعِيرًا ، وَلَا شَاةً ، قَالَ : « وَلَا تُحَقِّرَنَّ شَيْئًا مِنَ الْمَعْرُوفِ ، وَأَنْ تُكَلِّمَ أَخَاكَ وَأَنْتَ مُنْبَسِطٌ إِلَيْهِ وَجْهُكَ إِنَّ ذَلِكَ مِنَ الْمَعْرُوفِ ، وَارْفَعْ إِزَارَكَ إِلَى نِصْفِ السَّاقِ ، فَإِنْ أَبَيْتَ فَإِلَى الْكَعْبَيْنِ ، وَإِيَّاكَ وَإِسْبَالَ الْإِزَارِ ، فَإِنَّهَا مِنَ المَخِيلَةِ ، وَإِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ الْمَخِيلَةَ ، وَإِنِ امْرُؤٌ شَتَمَكَ وَعَيَّرَكَ بِمَا يَعْلَمُ فِيكَ ، فَلَا تُعَيِّرْهُ بِمَا تَعْلَمُ فِيهِ ، فَإِنَّمَا وَبَالُ ذَلِكَ عَلَيْهِ » (رواه ابو داؤد)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৯৪
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অতি হাসি মানুষের কলবকে মেরে ফেলে
৯৪. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল ﷺ বলেছেন? কে আমার থেকে এ কথাগুলো শিখবে, নিজে আমল করার জন্য বা অন্য আমলকারীকে শেখানোর জন্য? বর্ণনাকারী বলেনঃ আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি। আল্লাহর নবী ﷺ আমার হাত ধরে পাঁচটি জিনিস গুণলেন। অতঃপর তিনি বললেন: আল্লাহ যা হারাম করেছেন তা ভয় কর, তাহলে তুমি শ্রেষ্ঠ আবিদ হবে; আল্লাহ যা তোমার কিসমতে রেখেছেন তাতে তুমি সন্তুষ্ট থাক, তাহলে তুমি শ্রেষ্ঠ ধনী হবে; প্রতিবেশীর সাথে সুন্দর আচরণ কর, তাহলে তুমি (কামিল) মু'মিন হবে; তুমি নিজের জন্য যা পসন্দ কর তা মানুষের জন্য পসন্দ কর, তাহলে তুমি (প্রকৃত) মুসলিম হবে এবং অধিক হাসবে না; কেননা অধিক হাসি কলবকে মেরে ফেলে। (মুসনাদে আহমদ ও তিরমিযী)
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : مَنْ يَأْخُذُ عَنِّي هَؤُلاَءِ الكَلِمَاتِ فَيَعْمَلُ بِهِنَّ أَوْ يُعَلِّمُ مَنْ يَعْمَلُ بِهِنَّ؟ قُلْتُ : أَنَا يَا رَسُولَ اللهِ ، فَأَخَذَ بِيَدِي فَعَدَّ خَمْسًا فَقَالَ : اتَّقِ الْمَحَارِمَ تَكُنْ أَعْبَدَ النَّاسِ ، وَارْضَ بِمَا قَسَمَ اللَّهُ لَكَ تَكُنْ أَغْنَى النَّاسِ ، وَأَحْسِنْ إِلَى جَارِكَ تَكُنْ مُؤْمِنًا ، وَأَحِبَّ لِلنَّاسِ مَا تُحِبُّ لِنَفْسِكَ تَكُنْ مُسْلِمًا ، وَلاَ تُكْثِرِ الضَّحِكَ ، فَإِنَّ كَثْرَةَ الضَّحِكِ تُمِيتُ القَلْبَ . (رواه احمد والترمذى)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৯৫
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আরশের নিচের খাযানা
৯৫. হযরত আবু যর গিফারী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার বন্ধু, আমাকে সাতটা আদেশ করেছেন। তিনি আমাকে গরীব-মিসকীনকে মহব্বত করতে এবং তাদের নিকটবর্তী হতে হুকুম করেছেন। আমার থেকে যে নিচে রয়েছে তার দিকে দৃষ্টিপাত করার এবং যে আমার চেয়ে উপরে রয়েছে তার দিকে দৃষ্টিপাত না করার জন্য তিনি আমাকে আদেশ করেছেন। আত্মীয়-স্বজন মুখ ফিরিয়ে নিলেও তাদের সাথে রহম ও নরম আচরণ করার জন্য তিনি আমাকে হুকুম করেছেন। কারো কাছে কোন জিনিস সওয়াল না করার জন্য তিনি আমাকে হুকুম করেছেন। তিক্ত হলেও সত্য কথা বলতে তিনি হুকুম করেছেন। আল্লাহর পথে কোন নিন্দাকারীর নিন্দাকে ভয় না করার জন্য তিনি আমাকে আদেশ করেছেন। তিনি আমাকে খুব বেশি লা হাওলা ওলা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ (আল্লাহ ছাড়া কারো শক্তি ও ক্ষমতা নেই)-কালেমা পড়তে হুকুম করেছেন। এগুলো আরশের নিচের খাযানা (সম্পদ)। (মুসনাদে আহমদ)
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي ذَرٍّ ، قَالَ : أَمَرَنِي خَلِيلِي بِسَبْعٍ : "أَمَرَنِي بِحُبِّ الْمَسَاكِينِ ، وَالدُّنُوِّ مِنْهُمْ ، وَأَمَرَنِي أَنْ أَنْظُرَ إِلَى مَنْ هُوَ دُونِي ، وَلَا أَنْظُرَ إِلَى مَنْ هُوَ فَوْقِي ، وَأَمَرَنِي أَنْ أَصِلَ الرَّحِمَ وَإِنْ أَدْبَرَتْ ، وَأَمَرَنِي أَنْ لَا أَسْأَلَ أَحَدًا شَيْئًا ، وَأَمَرَنِي أَنْ أَقُولَ بِالْحَقِّ وَإِنْ كَانَ مُرًّا ، وَأَمَرَنِي أَنْ لَا أَخَافَ فِي اللهِ لَوْمَةَ لَائِمٍ ، وَأَمَرَنِي أَنْ أُكْثِرَ مِنْ قَوْلِ : لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ ، فَإِنَّهُنَّ مِنْ كَنْزٍ تَحْتَ الْعَرْشِ " (رواه احمد)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৯৬
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ নবী করীম ﷺ-এর প্রতি আল্লাহর নয়টি নির্দেশ
৯৬. হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল ﷺ বলেছেন: আমার রব্ব আমাকে নয়টি আদেশ করেছেন। প্রকাশ্য ও গোপনে আল্লাহকে ভয় করা; ক্রোধ ও সন্তুষ্টিতে ইনসাফের কথা বলা, দারিদ্র্য ও প্রাচুর্যে মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা; যে (আত্মীয়) আমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে তার সাথে সম্পর্ক কায়েম করা; আমাকে যে বঞ্চিত করে তাকে দান করা; যে আমাকে যুলম করে তাকে মাফ করা; আমার নীরবতা হবে চিন্তা-ভাবনা; আমার কথাবার্তা হবে (আল্লাহর) যিকির এবং আমার দৃষ্টি হবে শিক্ষা গ্রহণমূলক; আর মানুষকে মারূফ বা ভাল কথা বলার হুকুম করতে আমাকে আদেশ করা হয়েছে। (রযীন)
کتاب الرقاق
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَمَرَنِىْ رَبِّىْ بِتِسْعٍ خَشْيَةِ اللهِ فِي السِّرِ وَالْإِعْلَانِيَةِ ، وَكَلِمَةَ الْعَدْلِ فِي الْغَضَبِ وَالرِّضَا ، وَالْقَصْدَ فِي الْفَقْرِ وَالْغِنَى ، وَأَنْ أَصِلَ مَنْ قَطَعَنِىْ ، وَأُعْطِىَ مَنْ حَرَمَنِىْ ، وَاَعْفُوَ عَمَّنْ ظَلَمَنِىْ وَاَنْ يَّكُوْنَ صَمْتِى فِكْرًا وَنُطْقِىْ ذِكْرًا وَنَظْرِىْ عِبْرَةً وَآمُرَ بِالْعُرْفِ وَقِيْلَ بِالْمَعْرُوْفِ . (رواه زرين)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৯৭
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ মু'আয (রা)-এর প্রতি রাসূল ﷺ-এর ১০টি উপদেশ
৯৭. মু'আয (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাকে দশটা জিনিসের উপদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন: যদি তোমাকে হত্যা করা হয় এবং পোড়ান হয়, তবুও তুমি আল্লাহর সাথে কোন কিছু শরীক করবে না। যদি তোমাকে তোমার পরিবার ও সম্পত্তি ছেড়ে বের হয়ে যেতে বলা হয়, তবু কখনো তোমার পিতামাতার অবাধ্যতা করবে না। কখনো ইচ্ছাকৃত ফরয নামায ত্যাগ করবে না, কেননা যে এক ফরয নামায ইচ্ছাকৃতভাবে ত্যাগ করে, তার জন্য আল্লাহর কোন যিম্মাদারী থাকে না। কখনো শরাব পান করবে না, কেননা শরাব সকল অশ্লীল কাজের মূল। গুনাহ থেকে সাবধান, কেননা গুনাহর কারণে আল্লাহর ক্রোধ নাযিল হয়। মানুষ তোমাকে হালাক করলেও জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করবে না। যদি তুমি কোন জনপদে থাক এবং তাদের মধ্যে মহামারী দেখা দেয়, তাহলে দৃঢ়পদে থাকবে। তোমার সামর্থ্য অনুযায়ী পরিবার-পরিজনের জন্য খরচ করবে, তাদেরকে আদব শিখানোর ব্যাপারে কোনরূপ শিথিলতা করবে না এবং আল্লাহ সম্পর্কে তাদেরকে ভয় প্রদর্শন করবে। (মুসনাদে আহমদ)
کتاب الرقاق
عَنْ مُعَاذٍ قَالَ : أَوْصَانِي رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعَشْرِ كَلِمَاتٍ قَالَ : " لَا تُشْرِكْ بِاللهِ شَيْئًا وَإِنْ قُتِلْتَ وَحُرِّقْتَ ، وَلَا تَعُقَّنَّ وَالِدَيْكَ ، وَإِنْ أَمَرَاكَ أَنْ تَخْرُجَ مِنْ أَهْلِكَ وَمَالِكَ ، وَلَا تَتْرُكَنَّ صَلَاةً مَكْتُوبَةً مُتَعَمِّدًا؛ فَإِنَّ مَنْ تَرَكَ صَلَاةً مَكْتُوبَةً مُتَعَمِّدًا فَقَدْ بَرِئَتْ مِنْهُ ذِمَّةُ اللهِ ، وَلَا تَشْرَبَنَّ خَمْرًا؛ فَإِنَّهُ رَأْسُ كُلِّ فَاحِشَةٍ ، وَإِيَّاكَ وَالْمَعْصِيَةَ؛فَإِنَّ بِالْمَعْصِيَةِ حَلَّ سَخَطُ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ ، وَإِيَّاكَ وَالْفِرَارَ مِنَ الزَّحْفِ وَإِنْ هَلَكَ النَّاسُ ، وَإِذَا أَصَابَ النَّاسَ مُوتٌ وَأَنْتَ فِيهِمْ فَاثْبُتْ ، وَأَنْفِقْ عَلَى عِيَالِكَ مِنْ طَوْلِكَ ، وَلَا تَرْفَعْ عَنْهُمْ عَصَاكَ أَدَبًا وَأَخِفْهُمْ فِي اللهِ " (رواه احمد)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৯৮
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ যে জিনিস হযরত মু'আয (রা)-কে কাঁদিয়েছে
৯৮. হযরত উমর ইবন খাত্তাব (রা) থেকে বর্ণিত, একদিন তিনি মসজিদে নববীর দিকে রওনা হলেন এবং সেখানে মু'আয (রা) ইবন জাবালকে পেলেন। তিনি নবী করীম ﷺ-এর রওযার কাছে বসে কাঁদছিলেন। উমর (রা) জিজ্ঞেস করলেন, কি জিনিস তোমাকে কাঁদাচ্ছে? তিনি বললেন, আমি আল্লাহর রাসূলের কাছ থেকে যা শুনেছিলাম তা আমাকে কাঁদাচ্ছে। তিনি বলেছেন: সামান্য রিয়া ও শিরক এবং যে আল্লাহর দোস্তের সাথে শত্রুতা করল, সে অবশ্যই আল্লাহর সাথে দ্বন্দুযুদ্ধে অবতীর্ণ হল। আল্লাহ মহব্বত করেন কর্তব্যপরায়ণ মুত্তাকী এবং গোপনে ইবাদতকারীদেরকে, যারা অদৃশ্য হলে কেউ তাদের সন্ধান করে না এবং যারা উপস্থিত থাকলে কেউ তাদের আহবান করে না এবং নিকটেও যায় না। তাদের অন্তর হিদায়াতের চেরাগ এবং তারা ফিতনার অন্ধকার থেকে বের হয়ে আসেন। (ইবনে মাজাহ ও বায়হাকী: শুয়াবুল ঈমান)
کتاب الرقاق
عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ ، أَنَّهُ خَرَجَ يَوْمًا إِلَى مَسْجِدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَوَجَدَ مُعَاذَ بْنَ جَبَلٍ قَاعِدًا عِنْدَ قَبْرِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَبْكِي؟ فَقَالَ : مَا يُبْكِيكَ؟ قَالَ : يُبْكِينِي شَيْءٌ سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، يَقُولُ : « إِنَّ يَسِيرَ الرِّيَاءِ شِرْكٌ ، وَإِنَّ مَنْ عَادَى لِلَّهِ وَلِيًّا ، فَقَدْ بَارَزَ اللَّهَ بِالْمُحَارَبَةِ ، إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْأَبْرَارَ الْأَتْقِيَاءَ الْأَخْفِيَاءَ ، الَّذِينَ إِذَا غَابُوا لَمْ يُفْتَقَدُوا ، وَإِنْ حَضَرُوا لَمْ يُدْعَوْا ، وَلَمْ يُعْرَفُوا قُلُوبُهُمْ مَصَابِيحُ الْهُدَى ، يَخْرُجُونَ مِنْ كُلِّ غَبْرَاءَ مُظْلِمَةٍ » (رواه ابن ماجه والبيهقى فى شعب الايمان)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৯৯
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধিক হাসি চেহারার নূর নষ্ট করে
৯৯. হযরত আবু যর গিফারী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর খিদমতে হাযির হলাম। অতঃপর বর্ণনাকারী দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করেন: আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে ওসীয়াত (আদেশ এবং উপদেশ অর্থে) করুন। রাসুল ﷺ বললেন: আমি তোমাকে তাকওয়ার ওসীয়াত করছি যা তোমার প্রত্যেক কাজকে সুন্দর ও সুসম্পন্ন করবে। আমি বললাম, আমাকে আরও ওসীয়াত করুন। তিনি বললেন: কুরআন তিলাওয়াত ও মহান ইযযত ও জালালের অধিকারী আল্লাহর যিকির করা তোমার কর্তব্য। কেননা তার দ্বারা আসমানে তোমার যিকির হবে এবং দুনিয়াতে তা তোমার জন্য আলো স্বরূপ হবে। আমি বললাম, আমাকে আরো ওসীয়াত করুন। তিনি বললেন: খুব বেশি চুপ থাকবে; কারণ এটা শয়তানকে বিতাড়িত করবে এবং দীনের ব্যাপারে তোমাকে সাহায্য করবে। আমি বললাম, আরো ওসীয়াত করুন। তিনি বললেন। অধিক হাসি থেকে সাবধান থাক, কারণ এটা অন্তরকে মেরে ফেলে এবং চেহারার নূর বিদূরিত করে। আমি বললাম, আরো ওসীয়াত করুন। তিনি বললেন: আল্লাহর পথে নিন্দাকারীদের নিন্দাকে ভয় করো না। আমি বললাম, আরো ওসীয়াত করুন। তিনি বললেনঃ তুমি তোমার নিজের নফস সম্পর্কে যা জান তা যেন তোমাকে মানুষের দোষ অন্বেষণ করা থেকে বিরত রাখে। (বায়হাকী: শুয়াবুল ঈমান)
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ : دَخَلْتُ عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَذَكَرَ الْحَدِيثَ بِطُولِهِ إِلَى أَنْ قَالَ : قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللهِ ، أَوْصِنِي . قَالَ : " أَوْصَيْتُكَ بِتَقْوَى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ ، فَإِنَّهُ أَزْيَنُ لِأَمْرِكَ كُلِّهِ " قُلْتُ : زِدْنِي . قَالَ : " عَلَيْكَ بِتِلَاوَةِ الْقُرْآنِ ، وَذِكْرِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ ، فَإِنَّهُ ذِكْرٌ لَكَ فِي السَّمَاءِ وَنُورٌ لَكَ فِي الْأَرْضِ " قُلْتُ : زِدْنِي ، قَالَ : " عَلَيْكَ بِطُولِ الصَّمْتِ ، فَإِنَّهُ مَطْرَدَةٌ لِلشَّيْطَانِ ، وَعَوْنٌ لَكَ عَلَى أَمْرِ دِينِكَ " قُلْتُ : زِدْنِي . قَالَ : إِيَّاكَ وَكَثْرَةَ الضَّحِكِ ، فَإِنَّهُ يُمِيتُ الْقَلْبَ ، وَيَذْهَبُ بِنُورِ الْوَجْهِ " قُلْتُ : زِدْنِي . قَالَ : " قُلِ الْحَقَّ ، وَإِنْ كَانَ مُرًّا " قُلْتُ : زِدْنِي . قَالَ : " لَا تَخَفْ فِي اللهِ لَوْمَةَ لَائِمٍ " قُلْتُ : زِدْنِي . قَالَ : " لِيَحْجِزْكَ عَنِ النَّاسِ مَا تَعْلَمُ مِنْ نَفْسِكَ " (رواه البيهقى فى شعب الايمان)
তাহকীক:
হাদীস নং: ১০০
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কাকে রাযী করতে হবে
১০০. হযরত মুয়াবিয়া (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি আয়েশা (রা)-কে লিখেছিলেন, আমাকে ওসীয়াত করে লিখুন এবং তা লম্বা করবেন না। উম্মুল মু'মিনীন লিখলেন: আপনার প্রতি সালাম। অতঃপর আমি আল্লাহর রাসূল ﷺ-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি মানুষের নারাযীর বিনিময়ে আল্লাহকে রাযী করতে চাইবে, আল্লাহ তাকে মানুষের মুখাপেক্ষী না করে প্রয়োজন পূরণ করে দিবেন। এবং যে আল্লাহকে নারায করে মানুষকে রাযী করতে চাইবে, আল্লাহ তাকে মানুষের হাওয়ালা করে দেবেন। ওয়াস সালাম। (তিরমিযী)
کتاب الرقاق
عَنْ مُعَاوِيَةَ اَنَّهُ كَتَبَ اِلَى عَائِشَةَ اَنْ اكْتُبِي إِلَيَّ كِتَابًا تُوصِينِي فِيهِ ، وَلاَ تُكْثِرِي عَلَيَّ ، فَكَتَبَتْ سَلاَمٌ عَلَيْكَ . أَمَّا بَعْدُ : فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ : مَنِ التَمَسَ رِضَاءَ اللهِ بِسَخَطِ النَّاسِ كَفَاهُ اللَّهُ مُؤْنَةَ النَّاسِ ، وَمَنِ التَمَسَ رِضَاءَ النَّاسِ بِسَخَطِ اللهِ وَكَلَهُ اللَّهُ إِلَى النَّاسِ ، وَالسَّلاَمُ عَلَيْكَ . (رواه الترمذى)
তাহকীক: