মা'আরিফুল হাদীস
রিকাক অধ্যায়
হাদীস নং: ৪৪
রিকাক অধ্যায়
উত্তরাধিকারীর সম্পদ কার কাছে বেশি প্রিয়
৪৪. হযরত আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: তোমাদের মধ্যে এমন কে আছে যার কাছে নিজের সম্পদের চেয়ে তার উত্তরাধিকারীর সম্পদ অধিক প্রিয়? তারা (আসহাবে রাসূল) জবাব দিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মধ্যে এমন কোন ব্যক্তি নেই যার কাছে তার নিজের সম্পদের চেয়ে তার উত্তরাধিকারীর সম্পদ অধিক প্রিয়। রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন: তার (মানুষের) সম্পদ হল যা সে অগ্রে পাঠিয়ে দিয়েছে। আর যা সে রেখে দিয়েছে, তা তার উত্তরাধিকারীর সম্পদ। (বুখারী)
کتاب الرقاق
عَنِ عَبْدِاللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « أَيُّكُمْ مَالُ وَارِثِهِ أَحَبُّ إِلَيْهِ مِنْ مَالِهِ؟ » قَالُوا : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، مَا مِنَّا أَحَدٌ إِلَّا مَالُهُ أَحَبُّ إِلَيْهِ ، قَالَ : « فَإِنَّ مَالَهُ مَا قَدَّمَ ، وَمَالُ وَارِثِهِ مَا أَخَّرَ » (رواه البخارى)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
নিজের ও পরিবার-পরিজনের ভরণ-পোষণের জন্য অর্থ ব্যয় করা কর্তব্য। গরীব আত্মীয়-স্বজন, ফকীর-মিসকীন এবং সওয়ালকারীদের বৈধ হক ও হিসসা আমাদের সম্পদের মধ্যে রয়েছে। তাই সম্পদকে কুক্ষিগত করে না রেখে নিঃস্ব ও অভাবীদের প্রয়োজনে ব্যয় করা কর্তব্য। অনুরূপভাবে আল্লাহর পয়গাম মানুষের দুয়ারে দুয়ারে পৌছানোর জন্য বা জিহাদের অস্ত্রশস্ত্র খরিদ বা তার প্রচার-প্রোপাগান্ডার জন্য অর্থ ব্যয় করা কর্তব্য। যখন বিশ্বাসীদেরকে আল্লাহ সম্পদ দান করেন তখন তারা তা ব্যয় করার ব্যাপারে কোনরূপ কৃপনতা করে না। বরং তারা তার সদ্ব্যবহার করে এবং এ কারণে তারা তাদের সম্পদের ফায়দা দুনিয়া ও আখিরাতে লাভ করে। এভাবে ব্যয়ের পর যা কিছু বেঁচে যায়, তা তাদের নিজেদের ওয়ারিসদের জন্য ছেড়ে যেতে হয়। বস্তুত এ ধরনের মানুষ সম্পদের সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে এ কথা প্রমাণ করে যে, নিজেদের সম্পদের জন্য তাদের প্রকৃত মহব্বত রয়েছে এবং ওয়ারিসদের সম্পদের জন্য অহেতুক সতর্ক ও চিন্তিত নয়।
কৃপণরা দেশ, জাতি, পরিবার-পরিজন এবং তার নিজের নফসের সঙ্গে শত্রুতা করে। তাই কৃপণদেরকে আল্লাহ পসন্দ করেন না। কৃপণ ব্যক্তি নিজে না খেয়ে এবং পরিবার-পরিজন ও হকদারদের বৈধ প্রয়োজন পূরণ না করে যে সম্পদ সঞ্চয় করে রাখে, তা দুনিয়া ও আখিরাতে তার কোন কল্যাণে আসে না। গভীরভাবে চিন্তা করলে বুঝা যায় যে, এ ধরনের মূর্খ কৃপণ ব্যক্তিদের সঞ্চিত এসব সম্পদের মধ্যে প্রকৃতপক্ষে তাদের কোন হিস্সা নেই। সে আজীবন অন্যের সম্পদ পাহারা দেয়। অন্যের সম্পদের নিরাপত্তার চিন্তায় সে দিনরাত অস্থির থাকে। অন্যের সম্পদ বৃদ্ধির জন্য যাবতীয় নিয়ম-নীতিও বিসর্জন দিতে সে একটু দ্বিধাবোধ করে না। এটা এক চূড়ান্ত পর্যায়ের জাহালত বা মূর্খতা। আসমানী কিতাবের সঙ্গে সম্পর্কহীন মানুষ এ ধরনের মূর্খ হয়ে থাকে।
কৃপণরা দেশ, জাতি, পরিবার-পরিজন এবং তার নিজের নফসের সঙ্গে শত্রুতা করে। তাই কৃপণদেরকে আল্লাহ পসন্দ করেন না। কৃপণ ব্যক্তি নিজে না খেয়ে এবং পরিবার-পরিজন ও হকদারদের বৈধ প্রয়োজন পূরণ না করে যে সম্পদ সঞ্চয় করে রাখে, তা দুনিয়া ও আখিরাতে তার কোন কল্যাণে আসে না। গভীরভাবে চিন্তা করলে বুঝা যায় যে, এ ধরনের মূর্খ কৃপণ ব্যক্তিদের সঞ্চিত এসব সম্পদের মধ্যে প্রকৃতপক্ষে তাদের কোন হিস্সা নেই। সে আজীবন অন্যের সম্পদ পাহারা দেয়। অন্যের সম্পদের নিরাপত্তার চিন্তায় সে দিনরাত অস্থির থাকে। অন্যের সম্পদ বৃদ্ধির জন্য যাবতীয় নিয়ম-নীতিও বিসর্জন দিতে সে একটু দ্বিধাবোধ করে না। এটা এক চূড়ান্ত পর্যায়ের জাহালত বা মূর্খতা। আসমানী কিতাবের সঙ্গে সম্পর্কহীন মানুষ এ ধরনের মূর্খ হয়ে থাকে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)