মা'আরিফুল হাদীস
معارف الحديث
আখলাক অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১৬২ টি
হাদীস নং: ২০১
আখলাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ভাইয়ের সাথে মিথ্যা বলা সবচেয়ে নিকৃষ্ট খিয়ানত
২০১. হযরত সুফিয়ান ইবন আসিদ হাযরামী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে বলতে শুনেছি, সবচেয়ে নিকৃষ্ট খিয়ানত হল তুমি ভাইয়ের সাথে মিথ্যা কথা বল এবং সে তোমাকে সত্যবাদী মনে করে। (আবু দাউদ)
کتاب الاخلاق
عَنْ سُفْيَانَ بْنِ أَسِيدٍ الْحَضْرَمِيِّ ، قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، يَقُولُ : « كَبُرَتْ خِيَانَةً أَنْ تُحَدِّثَ أَخَاكَ حَدِيثًا هُوَ لَكَ بِهِ مُصَدِّقٌ ، وَأَنْتَ لَهُ بِهِ كَاذِبٌ » (رواه ابو داؤد)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২০২
আখলাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ মিথ্যা সাক্ষ্য দান এবং শিরক সমপর্যায়ের কাজ
২০২. হযরত খুরায়ম ইবন ফাতিক (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ ফজরের নামায পড়ালেন এবং নামায শেষ হওয়ার পর দাঁড়িয়ে বললেন: মিথ্যা সাক্ষ্য দান ও আল্লাহর সাথে শিরক করা সমপর্যায়ের করা হয়েছে। তিনি তিনবার তা বললেন। অতঃপর তিনি কুরআনের আয়াত তিলাওয়াত করলেন: "একমাত্র আল্লাহর জন্য নিবেদিত হয়ে এবং তাঁর সাথে শিরক না করে মূর্তি পুজার আবর্জনা থেকে বেঁচে থাক এবং মিথ্যা উক্তি থেকে বেঁচে থাক।" (আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ)
کتاب الاخلاق
عَنْ خُرَيْمِ بْنِ فَاتِكٍ ، قَالَ : صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَاةَ الصُّبْحِ ، فَلَمَّا انْصَرَفَ قَامَ قَائِمًا ، فَقَالَ : « عُدِلَتْ شَهَادَةُ الزُّورِ بِالْإِشْرَاكِ بِاللَّهِ » ثَلَاثَ مِرَارٍ ، ثُمَّ قَرَأَ {فَاجْتَنِبُوا الرِّجْسَ مِنَ الأَوْثَانِ وَاجْتَنِبُوا قَوْلَ الزُّورِ حُنَفَاءَ لِلَّهِ غَيْرَ مُشْرِكِينَ بِهِ} (رواه ابو داؤد وابن ماجه)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২০৩
আখলাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ মিথ্যা শপথ করে সম্পদ আত্মসাৎকারীর উপর আল্লাহর ক্রোধ
২০৩. হযরত ইবন মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর নামে মিথ্যা হলফ করে কোন মুসলমানের সম্পদ আত্মসাৎ করে, সে কিয়ামতের দিন আল্লাহর সাথে এমন অবস্থায় মুলাকাত করবে যে, তিনি তার উপর ভয়ানকভাবে রাগান্বিত থাকবেন। (বুখারী ও মুসলিম)
کتاب الاخلاق
عَنْ عَبْدُ اللَّهِ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « لاَ يَحْلِفُ عَلَى يَمِينِ صَبْرٍ يَقْتَطِعُ مَالًا وَهُوَ فِيهَا فَاجِرٌ ، إِلَّا لَقِيَ اللَّهَ وَهُوَ عَلَيْهِ غَضْبَانُ » (رواه البخارى ومسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২০৪
আখলাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ হলফের দ্বারা অন্যের সামান্য হক নষ্টকারী দোযখী
২০৪. হযরত আবু উমামা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: যে ব্যক্তি হলফের দ্বারা কোন মুসলমানের হক আত্মসাৎ করে, আল্লাহ তার জন্য দোযখ ওয়াজিব এবং জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন। এক ব্যক্তি তাঁকে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল! নগণ্য জিনিস হলেও কি? তিনি বললেন: আরাকের (জঙ্গলী গাছের) ডাল হলেও। (মুসলিম)
کتاب الاخلاق
عَنْ أَبِي أُمَامَةَ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « مَنِ اقْتَطَعَ حَقَّ امْرِئٍ مُسْلِمٍ بِيَمِينِهِ ، فَقَدْ أَوْجَبَ اللهُ لَهُ النَّارَ ، وَحَرَّمَ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ » فَقَالَ لَهُ رَجُلٌ : وَإِنْ كَانَ شَيْئًا يَسِيرًا يَا رَسُولَ اللهِ؟ قَالَ : « وَإِنْ قَضِيبًا مِنْ أَرَاكٍ » (رواه مسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২০৫
আখলাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ হলফের দ্বারা অন্যের সামান্য হক নষ্টকারী দোযখী
২০৫. হযরত আশআছ ইবনে কায়েস (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: যে ব্যক্তি মিথ্যা কসম খেয়ে কারো সম্পদ মেরে দেয়, সে কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত অবস্থায় আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করবে। -আবূ দাউদ
کتاب الاخلاق
عَنِ الْأَشْعَثِ بْنِ قَيْسٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « لَا يَقْتَطِعُ أَحَدٌ مَالًا بِيَمِينٍ ، إِلَّا لَقِيَ اللَّهَ وَهُوَ أَجْذَمُ » (رواه ابو داؤد)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২০৬
আখলাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ তিন ব্যক্তির সাথে আল্লাহ কিয়ামতে কথা বলবেন না
২০৬. হযরত আবূ যর গিফারী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী ﷺ বলেছেন: তিন ব্যক্তির সাথে আল্লাহ কিয়ামতের দিন কথা বলবেন না, তাদের দিকে দৃষ্টিপাত করবেন না, তাদেরকে পাক-সাফ করবেন না এবং তাদের জন্য কঠিন আযাব রয়েছে। আবু যর (রা) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এসব ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত কারা? তিনি বললেন: তহবন্দ ঝুলিয়ে পরিধানকারী, দান করে প্রচারক এবং মিথ্যা হলফ সহকারে পণ্য বিক্রেতা। (মুসলিম)
کتاب الاخلاق
عَنْ أَبِي ذَرٍّ ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : « ثَلَاثَةٌ لَا يُكَلِّمُهُمُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ، وَلَا يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ وَلَا يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ » قَالَ ابوذر : خَابُوا وَخَسِرُوا ، مَنْ هُمْ يَا رَسُولَ اللهِ؟ قَالَ : « الْمُسْبِلُ ، وَالْمَنَّانُ ، وَالْمُنَفِّقُ سِلْعَتَهُ بِالْحَلِفِ الْكَاذِبِ » (رواه مسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২০৭
আখলাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ মিথ্যার কয়েকটি সূক্ষ্ম প্রকার
মিথ্যার কয়েকটি জঘন্য প্রকারের উল্লেখ তো উপরে করা হয়েছে। কিন্তু কোন কোন মিথ্যা এমনও হয়ে থাকে, যেগুলোকে অনেক মানুষ মিথ্যাই মনে করে না, অথচ এগুলোও মিথ্যারই অন্তর্ভুক্ত এবং রাসূলুল্লাহ ﷺ এগুলো থেকেও বেঁচে থাকার জোর নির্দেশ দিয়েছেন। নিম্নের হাদীসগুলোতে মিথ্যার এ প্রকারের কিছুটা আলোচনা রয়েছে-
সব মিথ্যাই আমলনামায় উঠে
মিথ্যার কয়েকটি জঘন্য প্রকারের উল্লেখ তো উপরে করা হয়েছে। কিন্তু কোন কোন মিথ্যা এমনও হয়ে থাকে, যেগুলোকে অনেক মানুষ মিথ্যাই মনে করে না, অথচ এগুলোও মিথ্যারই অন্তর্ভুক্ত এবং রাসূলুল্লাহ ﷺ এগুলো থেকেও বেঁচে থাকার জোর নির্দেশ দিয়েছেন। নিম্নের হাদীসগুলোতে মিথ্যার এ প্রকারের কিছুটা আলোচনা রয়েছে-
সব মিথ্যাই আমলনামায় উঠে
২০৭. হযরত আবদুল্লাহ ইবন আমের (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন নবী ﷺ আমাদের ঘরে বসেছিলেন, আমার মা আমাকে ডাকলেন এবং বললেন, আস তোমাকে কিছু দিব। নবী ﷺ তাকে বললেন: তাকে তুমি কি দিতে চেয়েছ? আমার মা বললেন, আমি তাকে খেজুর দিতে ইচ্ছা করেছি। নবী ﷺ তাকে বললেন: সাবধান, যদি তুমি তাকে কিছু না দিতে, তাহলে তোমার আমলনামায় একটা মিথ্যা লিখা হতো। (আবু দাউদ ও বায়হাকীঃ শুয়াবুল ঈমান)
کتاب الاخلاق
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَامِرٍ قَالَ : دَعَتْنِي أُمِّي يَوْمًا وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَاعِدٌ فِي بَيْتِنَا ، فَقَالَتْ : هَا تَعَالَ أُعْطِيكَ ، فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « مَا أَرَدْتِ أَنْ تُعْطِيهِ؟ » قَالَتْ : أَرَدْتُّ اَنْ أُعْطِيَهُ تَمَرًا ، فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « أَمَا إِنَّكِ لَوْ لَمْ تُعْطِهِ شَيْئًا كُتِبَتْ عَلَيْكِ كِذْبَةٌ » (رواه ابو داؤد والبيهقى فى شعب الايمان)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২০৮
আখলাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ হাসানোর জন্য মিথ্যা বলা ক্ষতিকর
২০৮. হযরত বাহয ইবন হাকিম (র) তাঁর পিতা মুয়াবিয়া (রা) এবং তাঁর দাদা হিন্দা (রা) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: যে ব্যক্তি মানুষকে হাসানোর জন্য মিথ্যা বলে, তার জন্য দুঃখ, তার জন্য দুঃখ। (মুসনাদে আহমদ, তিরমিযী, আবু দাউদ ও দারেমী)
کتاب الاخلاق
عَنْ بَهْزِ بْنِ حَكِيمٍ عَنْ أَبِيهِ عن جده ، قَالَ : قَالَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ : « وَيْلٌ لِمَنْ يُحَدِّثُ فَيَكْذِبُ لِيُضْحِكَ بِهِ الْقَوْمَ ، وَيْلٌ لَهُ وَيْلٌ لَهُ » (رواه احمد والترمذى وابو داؤد والدارمى)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২০৯
আখলাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ যা শোনা হয় তা বলা মিথ্যা বলার জন্য যথেষ্ট
২০৯. হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: কোন মানুষের মিথ্যা বলার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শোনে তাই বলে। (মুসলিম)
کتاب الاخلاق
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « كَفَى بِالْمَرْءِ كَذِبًا أَنْ يُحَدِّثَ بِكُلِّ مَا سَمِعَ » (رواه مسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২১০
আখলাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতার কয়েকটি সূক্ষ্ম প্রকার
যেভাবে মিথ্যার কোন কোন প্রকার এমন রয়েছে যে, মানুষ এগুলোকে মিথ্যাই মনে করে না, তেমনিভাবে খেয়ানতেরও এমন কিছু ধরন রয়েছে যেগুলোকে অনেক মানুষ খেয়ানত বলে গণ্য করে না। এ জন্য রাসূলুল্লাহ ﷺ এগুলো সম্পর্কেও উম্মতকে স্পষ্টভাবে সতর্ক করেছেন। নিম্নে এ ধরনের কিছু হাদীস পাঠ করুন:
পরামর্শদাতার কাছে আমানত রাখা হয়
যেভাবে মিথ্যার কোন কোন প্রকার এমন রয়েছে যে, মানুষ এগুলোকে মিথ্যাই মনে করে না, তেমনিভাবে খেয়ানতেরও এমন কিছু ধরন রয়েছে যেগুলোকে অনেক মানুষ খেয়ানত বলে গণ্য করে না। এ জন্য রাসূলুল্লাহ ﷺ এগুলো সম্পর্কেও উম্মতকে স্পষ্টভাবে সতর্ক করেছেন। নিম্নে এ ধরনের কিছু হাদীস পাঠ করুন:
পরামর্শদাতার কাছে আমানত রাখা হয়
২১০. হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ আবুল হায়সাম ইবন আত-তায়হান (রা)-কে বলেছেন: যার কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ করা হয়, তার কাছে আমানত সোপর্দ করা হয়। (তিরমিযী)
کتاب الاخلاق
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : لِاَبِى الْهَيْثَمِ بْنِ الْتَيْهَانِ إِنَّ المُسْتَشَارَ مُؤْتَمَنٌ . (رواه الترمذى)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২১১
আখলাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ এদিক-ওদিক লক্ষ্যকারী বক্তার বক্তব্য আমানত
২১১. হযরত জাবির ইবন আবদুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি নবী ﷺ থেকে বর্ণনা করেন, নবী ﷺ বলেছেনঃ যদি কোন ব্যক্তি কোন কথা বলার পর এদিক-ওদিক লক্ষ্য করে, তাহলে (বুঝতে হবে) তার বক্তব্য আমানত। (তিরমিযী ও আবূ দাউদ)
کتاب الاخلاق
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ ، عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « إِذَا حَدَّثَ الرَّجُلُ الْحَدِيثَ ثُمَّ الْتَفَتَ فَهِيَ أَمَانَةٌ » (رواه الترمذى وابو داؤد)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২১২
আখলাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ সৎকর্মের পরামর্শ সভা আমানতবিশেষ
২১২. হযরত জাবির (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: মজলিসসমূহ আমানতবিশেষ। অবশ্য তিন ধরনের মজলিস-না-হক খুন প্রবাহিতকরণ, অবৈধ যৌন আচরণ ও অবৈধ সম্পদ আত্মসাৎ (সম্পর্কিত পরামর্শ সভা) তার ব্যতিক্রম। (আবূ দাউদ)
کتاب الاخلاق
عَنْ جَابِرٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " الْمَجَالِسُ بِالْأَمَانَةِ إِلَّا ثَلَاثَةَ مَجَالِسَ : سَفْكُ دَمٍ حَرَامٍ ، أَوْ فَرْجٌ حَرَامٌ ، أَوْ اقْتِطَاعُ مَالٍ بِغَيْرِ حَقٍّ " (رواه ابو داؤد)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২১৩
আখলাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ বিরোধ নিষ্পত্তিতে উভয়কে ভাল কথা বলা মিথ্যা বলা নয়
২১৩. হযরত উম্মে কুলসূম বিনতে উব্বা ইবনে আবী মুআইত (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ যে মানুষের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য (উভয়কে উভয় সম্পর্কে) ভাল কথা বলে এবং কোন পক্ষের প্রতি ভাল কথা আরোপ করে, সে মিথ্যাবাদী নয়। (বুখারী ও মুসলিম)
کتاب الاخلاق
عَنْ أُمَّ كُلْثُومٍ ، قَالَتْ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « لَيْسَ الكَذَّابُ الَّذِي يُصْلِحُ بَيْنَ النَّاسِ ، وَيَقُولُ خَيْرًا ، أَوْ وَيَنْمِي خَيْرًا » (رواه البخارى ومسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২১৪
আখলাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ওয়াদা পূরণ ও ওয়াদা ভঙ্গ করা
প্রতিজ্ঞা ও ওয়াদা করে তা পূরণ করা আসলে সত্যবাদিতারই একটি ব্যবহারিক রূপ, আর ওয়াদা ভঙ্গ করা মিথ্যার একটি বাস্তব প্রতিফলন। এ জন্য রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর নৈতিক শিক্ষায় ওয়াদাভঙ্গ থেকে বেঁচে থাকার এবং সর্বদা ওয়াদা পূরণ করার ব্যাপারেও কঠোর তাকীদ দিয়েছেন।
মাত্র কয়েক পৃষ্ঠা পূর্বে ঐ হাদীস অতিক্রান্ত হয়েছে, যেখানে রাসূলুল্লাহ ﷺ কয়েকটি উত্তম চরিত্র-বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করে বলেছেন: "যে ব্যক্তি এ বিষয়গুলোর সঠিক অনুসরণের দায়িত্ব গ্রহণ করবে, আমি তার জন্য জান্নাতের দায়িত্ব নিচ্ছি।" এগুলোর মধ্যে তিনি ওয়াদা পূরণের বিষয়টিও উল্লেখ করেছিলেন।
কিতাবুল ঈমানে বায়হাকীর বরাতে হযরত আনাস (রাঃ)-এর ঐ হাদীস উল্লিখিত হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি প্রতিজ্ঞা পালন করে না, দ্বীনের মধ্যে তার কোন অংশ নেই।
এখানে এ ধারার আরো কিছু হাদীস উল্লেখ করা হচ্ছে:
মুনাফিকের পরিচয়
প্রতিজ্ঞা ও ওয়াদা করে তা পূরণ করা আসলে সত্যবাদিতারই একটি ব্যবহারিক রূপ, আর ওয়াদা ভঙ্গ করা মিথ্যার একটি বাস্তব প্রতিফলন। এ জন্য রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর নৈতিক শিক্ষায় ওয়াদাভঙ্গ থেকে বেঁচে থাকার এবং সর্বদা ওয়াদা পূরণ করার ব্যাপারেও কঠোর তাকীদ দিয়েছেন।
মাত্র কয়েক পৃষ্ঠা পূর্বে ঐ হাদীস অতিক্রান্ত হয়েছে, যেখানে রাসূলুল্লাহ ﷺ কয়েকটি উত্তম চরিত্র-বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করে বলেছেন: "যে ব্যক্তি এ বিষয়গুলোর সঠিক অনুসরণের দায়িত্ব গ্রহণ করবে, আমি তার জন্য জান্নাতের দায়িত্ব নিচ্ছি।" এগুলোর মধ্যে তিনি ওয়াদা পূরণের বিষয়টিও উল্লেখ করেছিলেন।
কিতাবুল ঈমানে বায়হাকীর বরাতে হযরত আনাস (রাঃ)-এর ঐ হাদীস উল্লিখিত হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি প্রতিজ্ঞা পালন করে না, দ্বীনের মধ্যে তার কোন অংশ নেই।
এখানে এ ধারার আরো কিছু হাদীস উল্লেখ করা হচ্ছে:
মুনাফিকের পরিচয়
২১৪. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: মুনাফিকের চিহ্ন তিনটি কথা বললে মিথ্যা বলে, ওয়াদা করলে ভঙ্গ করে এবং আমানত রাখলে তার খিয়ানত করে। (বুখারী ও মুসলিম)
کتاب الاخلاق
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " آيَةُ الْمُنَافِقِ ثَلَاثٌ : إِذَا حَدَّثَ كَذَبَ ، وَإِذَا وَعَدَ أَخْلَفَ ، وَإِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ " (رواه البخارى ومسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২১৫
আখলাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ওয়াদা ঋণবিশেষ
২১৫. হযরত আলী (রা) এবং আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত, তাঁরা বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ ওয়াদা ঋণবিশেষ। (তাবারানী: আওসাত)
کتاب الاخلاق
عَنْ عَلِىٍّ وَعَبْدِاللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : اَلْعِدَةُ دَيْنٌ . (رواه الطبرانى فى الاوسط)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২১৬
আখলাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ওয়াদা ঋণবিশেষ
২১৬. আব্দুল্লাহ ইবনে আবুল হামসা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নবুওয়তপ্রাপ্তির আগে আমি একবার তাঁর সাথে বেচা-কেনার একটি কারবার করেছিলাম। (তারপর আমার যা কিছু দেয়ার ছিল, এর একটা অংশ তো তখনই পরিশোধ করে দিয়েছিলাম।) আর কিছু পরিশোধ করা বাকী ছিল। আমি কথা দিয়েছিলাম যে, তিনি যেখানে আছেন সেখানেই তা নিয়ে আসছি। কিন্তু আমি এ ওয়াদার কথা ভুলে গেলাম। তিন দিন পর আমার স্মরণ হল। (আমি তৎক্ষণাৎ তা নিয়ে এসে দেখি,) তিনি সেখানেই আছেন। তিনি (তখন কেবল এতটুকু) বললেন: তুমি আমাকে বড় সমস্যায় ফেলে দিলে, আমি এখানে তিন দিন যাবত তোমার অপেক্ষায় আছি। -আবু দাউদ
کتاب الاخلاق
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي الْحَمْسَاءِ ، قَالَ : بَايَعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِبَيْعٍ قَبْلَ أَنْ يُبْعَثَ وَبَقِيَتْ لَهُ بَقِيَّةٌ فَوَعَدْتُهُ أَنْ آتِيَهُ بِهَا فِي مَكَانِهِ ، فَنَسِيتُ ، فَذَكَرْتُ بَعْدَ ثَلَاثٍ ، فَإِذَا هُوَ فِي مَكَانِهِ ، فَقَالَ : « لَقَدْ شَقَقْتَ عَلَيَّ ، أَنَا هَاهُنَا مُنْذُ ثَلَاثٍ أَنْتَظِرُكَ » (رواه ابو داؤد)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২১৭
আখলাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ নামাযের সময় ওয়াদাকৃত ব্যক্তির কর্তব্য
২১৭. হযরত যায়দ ইবন আরকাম (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: যদি এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তির সাথে মুলাকাত করার ওয়াদা করে এবং তাদের একজন নামায পর্যন্ত (নির্ধারিত স্থানে) না আসে, তাহলে যে আগে এসেছে সে নামাযের জন্য চলে গেলে কোন গুনাহ হবে না। (রযীন)
کتاب الاخلاق
عَنْ زَيْدِ بْنِ اَرْقَمَ اَنَّ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : مَنْ وَعَدَ رَجُلًا فَلَمْ يَاتِ اَحَدُهُمَا اِلَى وَقْتِ الصَّلوٰةِ وَذَهَبَ الَّذِىْ جَاءَ لِيُصَلِّىْ فَلَا إِثْمَ عَلَيْهِ . (رواه رزين)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২১৮
আখলাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ নিয়্যত থাকা সত্ত্বেও ওয়াদা পূরণে ব্যর্থ হলে গুনাহ নেই
২১৮. হযরত যায়দ ইবন আরকাম (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী ﷺ বলেছেন: যদি কোন ব্যক্তি তার ভাইয়ের সাথে ওয়াদা করে এবং তা পূরণ করার নিয়্যত করে; কিন্তু (কোন কারণবশত) যদি না আসতে পারে, তাহলে তার গুনাহ হবে না। (আবূ দাউদ ও তিরমিযী)
کتاب الاخلاق
عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : « إِذَا وَعَدَ الرَّجُلُ أَخَاهُ ، وَمِنْ نِيَّتِهِ أَنْ يَفِيَ لَهُ فَلَمْ يَفِ وَلَمْ يَجِئْ لِلْمِيعَادِ فَلَا إِثْمَ عَلَيْهِ » (رواه ابو داؤد والترمذى)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২১৯
আখলাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ বিনয়-নম্রতা ও গর্ব-অহংকার
বিনয় ও নম্রতা ঐসব সদগুণের অন্যতম, কুরআন ও হাদীসে যেগুলোর প্রতি সবিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে এবং এসবের প্রতি খুবই উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। এর কারণ এই যে, মানুষ হচ্ছে বান্দা। আর বান্দার সৌন্দর্য ও কৃতিত্ব এটাই যে, তার প্রতিটি কর্মে দাসত্ব ও বিনয় ফুটে উঠবে। বস্তুতঃ বিনয় ও নম্রতা দাসত্বেরই পরিচায়ক। পক্ষান্তরে অহংকার ও গর্ব হচ্ছে বড়ত্ব ও প্রভুত্বের দাবী। এ জন্যই এটা বান্দাসুলভ আচরণের সম্পূর্ণ পরিপন্থী এবং একমাত্র আল্লাহ্ জন্যই শোভনীয়।
আল্লাহ নবী ﷺ-কে বিনয়ী হওয়ার হুকুম করেছেন
বিনয় ও নম্রতা ঐসব সদগুণের অন্যতম, কুরআন ও হাদীসে যেগুলোর প্রতি সবিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে এবং এসবের প্রতি খুবই উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। এর কারণ এই যে, মানুষ হচ্ছে বান্দা। আর বান্দার সৌন্দর্য ও কৃতিত্ব এটাই যে, তার প্রতিটি কর্মে দাসত্ব ও বিনয় ফুটে উঠবে। বস্তুতঃ বিনয় ও নম্রতা দাসত্বেরই পরিচায়ক। পক্ষান্তরে অহংকার ও গর্ব হচ্ছে বড়ত্ব ও প্রভুত্বের দাবী। এ জন্যই এটা বান্দাসুলভ আচরণের সম্পূর্ণ পরিপন্থী এবং একমাত্র আল্লাহ্ জন্যই শোভনীয়।
আল্লাহ নবী ﷺ-কে বিনয়ী হওয়ার হুকুম করেছেন
২১৯. হযরত আয়ায ইবন হিমার (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: আল্লাহ আমাকে ওহীর মাধ্যমে বিনয়ী হওয়ার জন্য হুকুম করেছেন যাতে এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে যুলম না করে এবং একজন অপরজনের বিরুদ্ধে অহঙ্কার না করে। (আবূ দাউদ)
کتاب الاخلاق
عَنْ عَيَاضِ بْنِ حِمَارٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : إِنَّ اللَّهَ أَوْحَى إِلَيَّ ، أَنْ تَوَاضَعُوا حَتَّى لَا يَبْغِي أَحَدٌ عَلَى أَحَدٍ وَلَا يَفْخَرَ أَحَدٌ عَلَى أَحَدٍ.
তাহকীক:
হাদীস নং: ২২০
আখলাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অহংকার: অহঙ্কারী ব্যক্তি কুকুর ও শূকরের চেয়ে অধম
২২০. হযরত উমর (রা) থেকে বর্ণিত, একদিন তিনি মিম্বর থেকে ভাষণ দানকালে বললেনঃ হে জনগণ! তোমরা বিনম্রতা অবলম্বন কর। আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য বিনম্রতা অবলম্বন করে, আল্লাহ তাকে উন্নত করেন। সে নিজের কাছে ছোট এবং মানুষের দৃষ্টিতে মহান হয়। যে অহঙ্কার করে, আল্লাহ তাকে নীচু করেন। সে মানুষের দৃষ্টিতে নগণ্য এবং নিজের কাছে বিরাট হয়। এমনকি সে মানুষের দৃষ্টিতে কুকুর এবং শূকরের চেয়ে অধম বিবেচিত হয়। (বায়হাকীঃ শুয়াবুল ঈমান)
کتاب الاخلاق
عَنْ عُمَرَ قَالَ : وَهُوَ عَلَى الْمِنْبَرِ " يَأَيُّهَا النَّاسُ ، تَوَاضَعُوا فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ : " مَنْ تَوَاضَعَ لِلَّهِ رَفَعَهُ اللهُ ، فَهُوَ فِي نَفْسِهِ صَغِيرٌ ، وَفِي أَعْيُنِ النَّاسِ عَظِيمٌ ، وَمَنْ تَكَبَّرَ وَضَعَهُ اللهُ ، فَهُوَ فِي أَعْيُنِ النَّاسِ صَغِيرٌ ، وَفِي نَفْسِهِ كَبِيرٌ ، حَتَّى لَهُوَ أَهْوَنُ عَلَيْهِمْ مِنْ كَلْبٍ أَوْ خِنْزِيرٍ " (رواه البيهقى فى شعب الايمان)
তাহকীক: