মা'আরিফুল হাদীস
معارف الحديث
রিকাক অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১০০ টি
হাদীস নং: ১
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর ভয় ও আখিরাতের চিন্তা
ঈমানের পর মানুষের জীবনকে সৌন্দর্যমন্ডিত করতে ও একে সাফল্যের স্তরে পৌঁছাতে যেহেতু সবচেয়ে বড় ভূমিকা আল্লাহ্ তা'আলার ভয় ও পরকাল-ভাবনার থাকে, তাই রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের উম্মতের মধ্যে এ দু'টি গুণ সৃষ্টি করার জন্য বিশেষভাবে প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। তিনি কখনো এ ভয় ও চিন্তার উপকারিতা ও ফযীলত বর্ণনা করতেন, আবার কখনো আল্লাহ্ তা'আলার ক্রোধ ও শক্তিমত্তা এবং আখেরাতের ঐ কঠিন ও ভয়াবহ অবস্থার কথা স্মরণ করিয়ে দিতেন, যেগুলোর স্মরণ দ্বারা মানুষের অন্তরে এ দু'টি অবস্থার সৃষ্টি হত।
হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিখ্যাত সাহাবী হযরত হানযালা (রাঃ)-এর একটি হাদীস- যা কয়েক পৃষ্ঠা পরেই আপনি দেখতে পাবেন- এর দ্বারাও জানা যায় যে, হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মজলিসের বিশেষ আলোচ্য বিষয় যেন এটাই ছিল। সাহাবায়ে কেরাম যখন তাঁর দরবারে হাজির হতেন এবং আখেরাত ও জান্নাত-জাহান্নাম সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য শুনতেন, তখন তাদের অবস্থা এই হত যে, জান্নাত ও জাহান্নাম যেন তাদের চোখের সামনে।
হাদীসের কেবল বর্তমান ভান্ডার থেকেও যদি এ ধরনের সব হাদীস একত্রিত করা হয়, যেগুলোর উদ্দেশ্য আল্লাহর ভয় ও পরকাল-ভাবনা সৃষ্টি করা, তাহলে নিঃসন্দেহে এ ধরনের হাদীস দিয়েই একটি পূর্ণাঙ্গ কিতাব তৈরী হয়ে যেতে পারে। এখানে এ বিষয়ের উপর সামান্য কয়েকটি হাদীসের উল্লেখ করা হল:
নবী করীম ﷺ যা জানতেন তা মানুষ জানলে খুব বেশি কাঁদত এবং অল্প হাসত
ঈমানের পর মানুষের জীবনকে সৌন্দর্যমন্ডিত করতে ও একে সাফল্যের স্তরে পৌঁছাতে যেহেতু সবচেয়ে বড় ভূমিকা আল্লাহ্ তা'আলার ভয় ও পরকাল-ভাবনার থাকে, তাই রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের উম্মতের মধ্যে এ দু'টি গুণ সৃষ্টি করার জন্য বিশেষভাবে প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। তিনি কখনো এ ভয় ও চিন্তার উপকারিতা ও ফযীলত বর্ণনা করতেন, আবার কখনো আল্লাহ্ তা'আলার ক্রোধ ও শক্তিমত্তা এবং আখেরাতের ঐ কঠিন ও ভয়াবহ অবস্থার কথা স্মরণ করিয়ে দিতেন, যেগুলোর স্মরণ দ্বারা মানুষের অন্তরে এ দু'টি অবস্থার সৃষ্টি হত।
হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিখ্যাত সাহাবী হযরত হানযালা (রাঃ)-এর একটি হাদীস- যা কয়েক পৃষ্ঠা পরেই আপনি দেখতে পাবেন- এর দ্বারাও জানা যায় যে, হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মজলিসের বিশেষ আলোচ্য বিষয় যেন এটাই ছিল। সাহাবায়ে কেরাম যখন তাঁর দরবারে হাজির হতেন এবং আখেরাত ও জান্নাত-জাহান্নাম সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য শুনতেন, তখন তাদের অবস্থা এই হত যে, জান্নাত ও জাহান্নাম যেন তাদের চোখের সামনে।
হাদীসের কেবল বর্তমান ভান্ডার থেকেও যদি এ ধরনের সব হাদীস একত্রিত করা হয়, যেগুলোর উদ্দেশ্য আল্লাহর ভয় ও পরকাল-ভাবনা সৃষ্টি করা, তাহলে নিঃসন্দেহে এ ধরনের হাদীস দিয়েই একটি পূর্ণাঙ্গ কিতাব তৈরী হয়ে যেতে পারে। এখানে এ বিষয়ের উপর সামান্য কয়েকটি হাদীসের উল্লেখ করা হল:
নবী করীম ﷺ যা জানতেন তা মানুষ জানলে খুব বেশি কাঁদত এবং অল্প হাসত
১. হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, আবুল কাসিম ﷺ বলেছেনঃ যাঁর হাতে প্রাণ রয়েছে তাঁর কসম! আমি যা জানি তা যদি তোমরা জানতে তাহলে তোমরা খুব বেশি কাঁদতে এবং অল্প হাসতে। (বুখারী)
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، قَالَ : قَالَ أَبُو القَاسِمِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ ، لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أَعْلَمُ ، لَبَكَيْتُمْ كَثِيرًا وَلَضَحِكْتُمْ قَلِيلًا » (رواه البخارى)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আসমানের প্রতি ইঞ্চিতে ফেরেশতারা সিজদারত
২. হযরত আবু যর গিফারী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ আমি যা দেখি তা তোমরা দেখ না এবং যা শুনি তোমরা তা শোন না। আসমান তীব্র আওয়ায করছে এবং এরূপ আওয়ায করার অধিকার তার রয়েছে। তাঁর কসম যাঁর হাতে আমার জীবন। আসমানে চার অঙ্গুলি পরিমাণ স্থানও নেই যেখানে কোন ফেরেশতা কপাল পেতে আল্লাহর নিকট সিজদারত না আছেন। আল্লাহর কসম! আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে তাহলে তোমরা খুব অল্প হাসতে এবং খুব বেশি কাঁদতে। বিছানায় তোমরা স্ত্রীদের উপভোগ করতে পারতে না, বরং তোমরা আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করতে কিংবা (আল্লাহর নৈকট লাভের উদ্দেশ্যে) জনশূন্য প্রান্তরে চলে যেতে। রাবী আবু যর (রা) বলেন, আফসোস, আমি যদি গাছ হতাম! যা কাটা হয়ে থাকে। (মুসনাদে আহমদ, তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ)
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي ذَرٍّ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « إِنِّي أَرَى مَا لَا تَرَوْنَ ، وَأَسْمَعُ مَا لَا تَسْمَعُونَ ، إِنَّ السَّمَاءَ أَطَّتْ ، وَحَقَّ لَهَا أَنْ تَئِطَّ ، مَا فِيهَا مَوْضِعُ أَرْبَعِ أَصَابِعَ إِلَّا وَمَلَكٌ وَاضِعٌ جَبْهَتَهُ سَاجِدًا لِلَّهِ ، وَاللَّهِ لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أَعْلَمُ لَضَحِكْتُمْ قَلِيلًا ، وَلَبَكَيْتُمْ كَثِيرًا ، وَمَا تَلَذَّذْتُمْ بِالنِّسَاءِ عَلَى الْفُرُشَاتِ ، وَلَخَرَجْتُمْ إِلَى الصُّعُدَاتِ ، تَجْأَرُونَ إِلَى اللَّهِ ، وَاللَّهِ لَوَدِدْتُ أَنِّي كُنْتُ شَجَرَةً تُعْضَدُ » (رواه احمد والترمذى وابن ماجه)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কবর জান্নাতের বাগান কিংবা দোযখের গর্ত
৩. হযরত আবূ সাঈদ খুদরী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী ﷺ নামাযের জন্য (ঘর থেকে) বের হলেন এবং লোকজনকে হাসি-ঠাট্টা করতে দেখে বললেন, আমি তোমাদেরকে বলছি, যদি তোমরা স্বাদ বিনষ্টকারী মৃত্যুকে অধিক স্মরণ করতে, তাহলে আমি যা দেখেছি তা তোমাদেরকে (এই গাফলতিতে) মশগুল করত না।
তাই তোমরা স্বাদ বিনষ্টকারী (উপভোগস্পৃহা অপহরণকারী) মৃত্যুকে অধিক স্মরণ কর। এমন কোন দিন নেই যখন কবর এ কথা না বলে যে, আমি মুসাফিরের গৃহ, আমি নিঃসঙ্গ থাকার গৃহ, আমি মাটির গৃহ, আমি কীটের গৃহ। যখন কোন মু'মিন বান্দাকে দাফন করা হয়, তখন কবর তাকে বলে 'আহলান ওয়া সাহলান' বা স্বাগতম। জেনে রেখো, যারা আমার পিঠে বিচরণ করত, তদের মধ্যে তুমিই আমার কাছে বেশি প্রিয় ছিলে। তোমাকে আমার কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। তুমি আমার কাছে এসেছ, তাই দেখবে তোমার সাথে আমি কি আচরণ করি। নবী ﷺ বলেনঃ অতঃপর কবর তার জন্য তার দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত প্রসারিত হয় এবং তার জন্য জান্নাতের দিকে এক দরজা খোলা হয়। যখন বদকার এবং কাফির ব্যক্তিকে দাফন করা হয়, তখন কবর তাকে স্বাগত জানায় না, বরং তাকে বলে জেনে রেখো, যারা আমার পিঠে বিচরণ করত, তাদের মধ্যে তুমি আমার কাছে বেশি ঘৃণ্য ছিলে। তোমাকে আমার কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। তুমি আমার কাছে চলে এসেছ। তুমি এখন দেখবে তোমার সাথে আমি কি আচরণ করি। নবী ﷺ বলেন: অতঃপর কবর তার জন্যে এমনভাবে সংকীর্ণ হয়ে যাবে যে, তার একদিকের পাঁজর অপরদিকে চলে যাবে। বর্ণনাকারী বলেন, রাসূল ﷺ তাঁর এক হাতের আংগুলের ফাঁকের মধ্যে অন্য হাতের আংগুল প্রবেশ করিয়ে তা বললেন। নবী ﷺ আরো বললেনঃ তার উপর '৭০'টি 'তিন্নীন'১ নিয়োজিত করা হবে, যদি তার একটিও দুনিয়ায় শ্বাস ফেলতো, তা হলে দুনিয়া যত দিন থাকবে ততদিন তাতে কোন উদ্ভিদ জন্মাত না। হাশরের দিন হিসেবের জন্য আহূত না করা পর্যন্ত এসব সাপ তাকে কাটবে এবং ক্ষত-বিক্ষত করতে থাকবে। আবু সাঈদ খুদরী (রা) বলেন, নবী ﷺ আরো বলেন: নিশ্চয়ই কবর জান্নাতের বাগানগুলোর একটি বাগান কিংবা দোযখের গর্তসমূহের একটি গর্ত। (তিরমিযী)
টিকা ১. ইলিয়াস এন্টনী ইলিয়াস তাঁর আরবী-ইংরেজী অভিধানে তিন্নীনের তরজমা-ড্রাগন করেছেন। অনলবর্ষী পাখাযুক্ত এক প্রকার প্রাণী।
তাই তোমরা স্বাদ বিনষ্টকারী (উপভোগস্পৃহা অপহরণকারী) মৃত্যুকে অধিক স্মরণ কর। এমন কোন দিন নেই যখন কবর এ কথা না বলে যে, আমি মুসাফিরের গৃহ, আমি নিঃসঙ্গ থাকার গৃহ, আমি মাটির গৃহ, আমি কীটের গৃহ। যখন কোন মু'মিন বান্দাকে দাফন করা হয়, তখন কবর তাকে বলে 'আহলান ওয়া সাহলান' বা স্বাগতম। জেনে রেখো, যারা আমার পিঠে বিচরণ করত, তদের মধ্যে তুমিই আমার কাছে বেশি প্রিয় ছিলে। তোমাকে আমার কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। তুমি আমার কাছে এসেছ, তাই দেখবে তোমার সাথে আমি কি আচরণ করি। নবী ﷺ বলেনঃ অতঃপর কবর তার জন্য তার দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত প্রসারিত হয় এবং তার জন্য জান্নাতের দিকে এক দরজা খোলা হয়। যখন বদকার এবং কাফির ব্যক্তিকে দাফন করা হয়, তখন কবর তাকে স্বাগত জানায় না, বরং তাকে বলে জেনে রেখো, যারা আমার পিঠে বিচরণ করত, তাদের মধ্যে তুমি আমার কাছে বেশি ঘৃণ্য ছিলে। তোমাকে আমার কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। তুমি আমার কাছে চলে এসেছ। তুমি এখন দেখবে তোমার সাথে আমি কি আচরণ করি। নবী ﷺ বলেন: অতঃপর কবর তার জন্যে এমনভাবে সংকীর্ণ হয়ে যাবে যে, তার একদিকের পাঁজর অপরদিকে চলে যাবে। বর্ণনাকারী বলেন, রাসূল ﷺ তাঁর এক হাতের আংগুলের ফাঁকের মধ্যে অন্য হাতের আংগুল প্রবেশ করিয়ে তা বললেন। নবী ﷺ আরো বললেনঃ তার উপর '৭০'টি 'তিন্নীন'১ নিয়োজিত করা হবে, যদি তার একটিও দুনিয়ায় শ্বাস ফেলতো, তা হলে দুনিয়া যত দিন থাকবে ততদিন তাতে কোন উদ্ভিদ জন্মাত না। হাশরের দিন হিসেবের জন্য আহূত না করা পর্যন্ত এসব সাপ তাকে কাটবে এবং ক্ষত-বিক্ষত করতে থাকবে। আবু সাঈদ খুদরী (রা) বলেন, নবী ﷺ আরো বলেন: নিশ্চয়ই কবর জান্নাতের বাগানগুলোর একটি বাগান কিংবা দোযখের গর্তসমূহের একটি গর্ত। (তিরমিযী)
টিকা ১. ইলিয়াস এন্টনী ইলিয়াস তাঁর আরবী-ইংরেজী অভিধানে তিন্নীনের তরজমা-ড্রাগন করেছেন। অনলবর্ষী পাখাযুক্ত এক প্রকার প্রাণী।
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ ، قَالَ : دَخَلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُصَلاَّهُ فَرَأَى نَاسًا كَأَنَّهُمْ يَكْتَشِرُونَ قَالَ : أَمَا إِنَّكُمْ لَوْ أَكْثَرْتُمْ ذِكْرَ هَاذِمِ اللَّذَّاتِ لَشَغَلَكُمْ عَمَّا أَرَى ، فَأَكْثِرُوا مِنْ ذِكْرِ هَاذِمِ اللَّذَّاتِ الْمَوْتِ ، فَإِنَّهُ لَمْ يَأْتِ عَلَى القَبْرِ يَوْمٌ إِلاَّ تَكَلَّمَ فِيهِ فَيَقُولُ : أَنَا بَيْتُ الغُرْبَةِ وَأَنَا بَيْتُ الوَحْدَةِ ، وَأَنَا بَيْتُ التُّرَابِ ، وَأَنَا بَيْتُ الدُّودِ ، فَإِذَا دُفِنَ العَبْدُ الْمُؤْمِنُ قَالَ لَهُ القَبْرُ : مَرْحَبًا وَأَهْلاً أَمَا إِنْ كُنْتَ لأَحَبَّ مَنْ يَمْشِي عَلَى ظَهْرِي إِلَيَّ ، فَإِذْ وُلِّيتُكَ اليَوْمَ وَصِرْتَ إِلَيَّ فَسَتَرَى صَنِيعِيَ بِكَ قَالَ : فَيَتَّسِعُ لَهُ مَدَّ بَصَرِهِ وَيُفْتَحُ لَهُ بَابٌ إِلَى الجَنَّةِ . وَإِذَا دُفِنَ العَبْدُ الفَاجِرُ أَوِ الكَافِرُ قَالَ لَهُ القَبْرُ : لاَ مَرْحَبًا وَلاَ أَهْلاً أَمَا إِنْ كُنْتَ لأَبْغَضَ مَنْ يَمْشِي عَلَى ظَهْرِي إِلَيَّ ، فَإِذْ وُلِّيتُكَ اليَوْمَ وَصِرْتَ إِلَيَّ فَسَتَرَى صَنِيعِيَ بِكَ قَالَ : فَيَلْتَئِمُ عَلَيْهِ حَتَّى تَلْتَقِيَ عَلَيْهِ وَتَخْتَلِفَ أَضْلاَعُهُ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : بِأَصَابِعِهِ ، فَأَدْخَلَ بَعْضَهَا فِي جَوْفِ بَعْضٍ قَالَ : وَيُقَيِّضُ اللَّهُ لَهُ سَبْعِينَ تِنِّينًا لَوْ أَنْ وَاحِدًا مِنْهَا نَفَخَ فِي الأَرْضِ مَا أَنْبَتَتْ شَيْئًا مَا بَقِيَتِ الدُّنْيَا فَيَنْهَشْنَهُ وَيَخْدِشْنَهُ حَتَّى يُفْضَى بِهِ إِلَى الْحِسَابِ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : إِنَّمَا القَبْرُ رَوْضَةٌ مِنْ رِيَاضِ الجَنَّةِ أَوْ حُفْرَةٌ مِنْ حُفَرِ النَّارِ . (رواه الترمذى)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ নবী করীম ﷺ তাহাজ্জুদে বলতেন, প্রথম শিংগা-ধ্বনি আসন্ন, দ্বিতীয় শিংগা-ধ্বনি তাকে অনুসরণ করছে
৪. হযরত উবাই ইবন কা'আব (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাতের দুই-তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হওয়ার পর নবী ﷺ উঠতেন এবং বলতেন। হে মানুষ! আল্লাহকে স্মরণ কর। হে মানুষ! আল্লাহকে স্মরণ কর। রাজিফাত বা প্রথম শিংগা-ধ্বনি আসন্ন এবং রাদিফাত বা দ্বিতীয় শিংগা-ধ্বনি তা অনুসরণ করছে। এসব কিছু নিয়ে মৃত্যু হাযির। এসব কিছু নিয়ে মৃত্যু হাযির। (তিরমিযী)
کتاب الرقاق
عَنِ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ ، قَالَ : كَانَ النَّبِىُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا ذَهَبَ ثُلُثَا اللَّيْلِ قَامَ فَقَالَ : يَا أَيُّهَا النَّاسُ اذْكُرُوا اللَّهَ اذْكُرُوا اللَّهَ جَاءَتِ الرَّاجِفَةُ تَتْبَعُهَا الرَّادِفَةُ جَاءَ الْمَوْتُ بِمَا فِيهِ جَاءَ الْمَوْتُ بِمَا فِيهِ . (رواه الترمذى)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ভীত বুদ্ধিমান ব্যক্তিরা রাতের প্রথম প্রহরে রওনা দেয়: আল্লাহর পণ্য জান্নাত
৫. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ- বলেছেনঃ যে ভয় পায় সে রাতের শুরুতে যাত্রা করে এবং যে রাতের শুরুতে যাত্রা করে, সে (নিরাপদে) মনযিলে পৌঁছে। স্মরণ রাখ, আল্লাহর পণ্য খুবই মূল্যবান, স্মরণ রাখ, আল্লাহর পণ্য জান্নাত। (তিরমিযী)
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : مَنْ خَافَ أَدْلَجَ ، وَمَنْ أَدْلَجَ بَلَغَ الْمَنْزِلَ ، أَلاَ إِنَّ سِلْعَةَ اللهِ غَالِيَةٌ ، أَلاَ إِنَّ سِلْعَةَ اللهِ الجَنَّةُ . (رواه الترمذى)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৬
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ মৃত্যুকে অধিক স্মরণকারী ও অধিক প্রস্তুতি গ্রহণকারী ব্যক্তি সবচেয়ে জ্ঞানী
৬. হযরত আবদুল্লাহ ইবন উমর (রা) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল! মানুষের মধ্যে কে সবচেয়ে বেশি জ্ঞানী এবং বিচক্ষণ? নবী ﷺ বললেন: যারা মৃত্যুকে বেশি স্মরণ করে এবং মৃত্যুর জন্য বেশি প্রস্তুতি গ্রহণ করে, তারাই সবচেয়ে বেশি জ্ঞানী। তারা দুনিয়ার শরাফত ও ইযযত এবং আখিরাতের শ্রেষ্ঠত্ব ও কারামত লাভ করেছে। (তাবারানী)
کتاب الرقاق
عَنِ عَبْدُاللهِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ : رَجُلٌ يَا نَبِيَّ اللَّهِ , مَنْ أَكْيَسُ النَّاسِ وَأَحْزَمُ النَّاسِ؟ قَالَ : « أَكْثَرَهُمْ ذِكْرًا لِلْمَوْتِ , وَأَشَدُّهُمُ اسْتِعْدَادًا لِلْمَوْتِ قَبْلَ نُزُولِ الْمَوْتِ , أُولَئِكَ هُمُ الْأَكْيَاسُ ذَهَبُوا بِشَرَفِ الدُّنْيَا وَكَرَامَةِ الْآخِرَةِ » (رواه الطبرانى فى معجم الصغير)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৭
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ বুদ্ধিমান নফসকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং মৃত্যু-পরবর্তী জীবনের জন্য আমল করে
৭. হযরত শাদ্দাদ ইবন আওস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, বুদ্ধিমান ব্যক্তি নিজের নফসকে নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং মৃত্যু-পরবর্তী জীবনের জন্য আমল করে। পক্ষান্তরে দুর্বল ব্যক্তি নিজের নফসের আনুগত্য করে আল্লাহর উপর ভরসা স্থাপন করে। (তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ)
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي يَعْلَى شَدَّادِ بْنِ أَوْسٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « الْكَيِّسُ مَنْ دَانَ نَفْسَهُ ، وَعَمِلَ لِمَا بَعْدَ الْمَوْتِ ، وَالْعَاجِزُ ، مَنْ أَتْبَعَ نَفْسَهُ هَوَاهَا ، وَتَمَنَّى عَلَى اللَّهِ » (رواه الترمذى وابن ماجه)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৮
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ দান-খয়রাত ও ইবাদত-বন্দেগী করেও যারা সর্বদা ভীত-সন্ত্রস্ত
৮. হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে কুরআনের আয়াত "এবং যাদের অবস্থা এরূপ যে, তারা যা দান করার, তা দান করে এবং অন্তর তাদের কাঁপতে থাকে"-সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম, তারা কি ঐসব লোক যারা শরাব পান করে এবং চুরি করে? রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, হে সিদ্দীক তনয়া! তা নয়, বরং যারা রোযা রাখে, নামায পড়ে, যাকাত দান করে অথচ এ ভয় করে যে, তাদের এসব ইবাদত কবুল হবে কি না। (বস্তুত) এসব লোকই মঙ্গল কাজের দিকে দ্রুত অগ্রসর হয়ে থাকে। (তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমদ, হাকিম ও ইবনে জরীর)
کتاب الرقاق
عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : سَأَلْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ هَذِهِ الآيَةِ : {وَالَّذِينَ يُؤْتُونَ مَا آتَوْا وَقُلُوبُهُمْ وَجِلَةٌ} قَالَتْ عَائِشَةُ : أَهُمُ الَّذِينَ يَشْرَبُونَ الخَمْرَ وَيَسْرِقُونَ؟ قَالَ : لاَ يَا بِنْتَ الصِّدِّيقِ ، وَلَكِنَّهُمُ الَّذِينَ يَصُومُونَ وَيُصَلُّونَ وَيَتَصَدَّقُونَ ، وَهُمْ يَخَافُونَ أَنْ لاَ تُقْبَلَ مِنْهُمْ {أُولَئِكَ يُسَارِعُونَ فِي الْخَيْرَاتِ . (رواه الترمذى وابن ماجه)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৯
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আজন্ম সিজদারত থাকলেও কিয়ামতের দিন তা নগণ্য মনে হবে
৯. হযরত উতবা ইবন উবায়দ (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ যদি কোন লোক তার জন্মের দিন থেকে শুরু করে মৃত্যুর দিন পর্যন্ত আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সিজদায় পড়ে থাকে, তাহলেও কিয়ামতের দিন সে তার ইবাদতকে খুব নগণ্য মনে করবে। (মুসনাদে আহমদ)
کتاب الرقاق
عَنْ عُتْبَةَ بْنِ عُبَيْدٍ ، رَفَعَهُ « لَوْ أَنَّ رَجُلًا يَخِرُّ عَلَى وَجْهِهِ ، مِنْ يَوْمِ وُلِدَ إِلَى يَوْمِ يَمُوتُ ، فِي مَرْضَاةِ اللَّهِ ، لَحَقَّرَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ » (رواه احمد)
তাহকীক:
হাদীস নং: ১০
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামতের দিন ছোট গুনাহ সম্পর্কেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে
১০. হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ তাঁকে বললেনঃ হে আয়েশা। সগীরা বা ছোট গুনাহ থেকে বাঁচবার চেষ্টা কর। কেননা আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে এগুলো সম্পর্কেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। (ইবনে মাজাহ, দারেমী ও বায়হাকী)
کتاب الرقاق
عَنْ عَائِشَةَ اَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يَاعَائِشَةُ إِيَّاكِ وَمُحَقَّرَاتِ الذُّنُوبِ فَإِنَّ لها من الله طالبا . (رواه ابن ماجه والدارمى والبيهقى فى شعب الايمان)
তাহকীক:
হাদীস নং: ১১
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ যে গুনাহর পরিণতির ভয় এবং আল্লাহর রহমতের আশা করে, সে নিরাপদ থাকবে
১১: আনাস (রা) থেকে বর্ণিত, নবী ﷺ মৃত্যুশয্যায় শায়িত এক যুবকের নিকট গেলেন। তিনি তাকে বললেনঃ তোমার কেমন লাগছে? সে জবাব দিল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আল্লাহর রহমতের প্রত্যাশী এবং আমার গুনাহ সম্বন্ধে ভীত। তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন: এ ধরনের পরিস্থিতিতে দুটো জিনিস (আল্লাহর রহমতের আশা এবং গুনাহর শাস্তির ভয়) যার হৃদয়ে একত্র হয়েছে আল্লাহ তাকে তা দান করবেন যা সে তাঁর কাছে (আল্লাহর কাছে) আশা করে এবং তাকে তা থেকে নিরাপদ রাখবেন যা থেকে সে ভয় করে। (তিরমিযী)
کتاب الرقاق
عَنْ أَنَسٍ ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ عَلَى شَابٍّ وَهُوَ فِي الْمَوْتِ ، فَقَالَ : كَيْفَ تَجِدُكَ؟ ، قَالَ : أَرْجُو اللَّهَ يَا رَسُولَ اللهِ ، وَإِنِّي أَخَافُ ذُنُوبِي ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : لاَ يَجْتَمِعَانِ فِي قَلْبٍ فِي مِثْلِ هَذَا الْمَوْطِنِ إِلاَّ أَعْطَاهُ اللَّهُ مَا يَرْجُو مِنْهُ وَآمَنَهُ مِمَّا يَخَافُ . (رواه الترمذى)
তাহকীক:
হাদীস নং: ১২
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ যে আল্লাহকে ভয় করেছে তাকে দোযখ থেকে বের করা হবে
১২: হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি নবী করীম ﷺ থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন আল্লাহ (কিয়ামতের দিন) বলবেন, যে আমাকে কোনদিন স্মরণ করেছে অথবা কোন স্থানে আমাকে ভয় করেছে, তাকে দোযখ থেকে বের কর। (তিরমিযী ও বায়হাকী, কিতাবুল বা'স ওয়ান নুশুর)
کتاب الرقاق
عَنْ أَنَسٍ ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : يَقُولُ اللَّهُ جَلَّ ذِكْرُهُ أَخْرِجُوا مِنَ النَّارِ مَنْ ذَكَرَنِي يَوْمًا أَوْ خَافَنِي فِي مَقَامٍ . (رواه الترمذى والبيهقى فى كتاب البعث والنشور)
তাহকীক:
হাদীস নং: ১৩
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর ভয়ে বের হওয়া চোখের পানির বরকত
১৩. হযরত আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ মু'মিন বান্দার চোখ থেকে আল্লাহর ভয়ে মাছির মাথা পরিমাণ (এক ফোঁটা) পানি বের হয়ে তার চেহারার মধ্যে গড়িয়ে পড়লেও আল্লাহ অবশ্যই সে চেহারাকে দোযখের আগুনের জন্য হারাম করবেন। (ইবনে মাজাহ)
کتاب الرقاق
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « مَا مِنْ عَبْدٍ مُؤْمِنٍ يَخْرُجُ مِنْ عَيْنَيْهِ دُمُوعٌ ، وَإِنْ كَانَ مِثْلَ رَأْسِ الذُّبَابِ ، مِنْ خَشْيَةِ اللَّهِ ، ثُمَّ تُصِيبُ شَيْئًا مِنْ حُرِّ وَجْهِهِ ، إِلَّا حَرَّمَهُ اللَّهُ عَلَى النَّارِ » (رواه ابن ماجه)
তাহকীক:
হাদীস নং: ১৪
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর ভয়ে শরীরের লোম শিউরে ওঠার সৌভাগ্য: এতে গুনাহ ঝরে পড়ে
১৪. হযরত আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, এক মরফু হাদীস বলা হয়েছে: আল্লাহর ভয়ে বান্দার শরীরের লোম শিউরে উঠলে তার গুনাহ মরাগাছের পাতা ঝরার মত ঝরে পড়ে।
(আল-বাযযার)
(আল-বাযযার)
کتاب الرقاق
عَنْ الْعَبَّاسِ رَفَعَهُ « إِذَا اقْشَعَرَّ جِلْدُ [ص : 149] الْعَبْدِ مِنْ خَشْيَةِ اللَّهِ ، تَحَاتَّتْ عَنْهُ خَطَايَاهُ كَمَا تَحَاتُّ عَنِ الشَّجَرَةِ الْبَالِيَةِ وَرَقُهَا » (رواه البزار)
তাহকীক:
হাদীস নং: ১৫
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর ভয়ে নিজের মৃত দেহ পোড়ানোর ওসীয়তকারীকে তিনি মাফ করে দিয়েছেন
১৫. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: এক ব্যক্তি তার নিজের নফসের উপর যুলম করে। তার মৃত্যু উপস্থিত হলে সে তার ছেলেদেরকে ওসীয়ত করল, সে মারা গেলে তারা যেন তাকে আগুনে জ্বালিয়ে দেয়। তার অর্ধেক যেন স্থলে ছিটিয়ে দেয় এবং বাকি অর্ধেক সাগরে ভাসিয়ে দেয়। সে বলল, আল্লাহর শপথ, যদি আল্লাহ তাকে পাকড়াও করতে সক্ষম হন তাহলে তাকে এমন ভয়ানক শাস্তি দিবেন যা তিনি দুনিয়া জাহানে কাউকেও দিবেন না। তার মৃত্যু হলে সন্তানগণ তার ওসীয়ত মুতাবিক কাজ করল। অতঃপর আল্লাহ সাগরকে হুকুম করলেন এবং তাতে যা ছিল একত্র হল। স্থলকেও হুকুম করলেন এবং তাতে যা ছিল তাও একত্র হল। অতঃপর আল্লাহ তাকে বললেন, কেন তুমি এরূপ করলে? সে জবাব দিল, হে আল্লাহ! তুমি জান আমি তোমার ভয়ে এরূপ করেছিলাম। অতঃপর আল্লাহ তাকে মাফ করে দিলেন। (বুখারী ও মুসলিম)
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، : " اَسْرَفَ رَجُلٌ عَلَى نَفْسِهِ فَلَمَّا حَضَرَهُ الْمَوْتُ اَوْصَى بَيْنَهُ إِذَا مَاتَ فَحَرِّقُوهُ ، ثُمَّ اذْرُوا نِصْفَهُ فِي الْبَرِّ وَنِصْفَهُ فِي الْبَحْرِ ، فَوَاللهِ لَئِنْ قَدَرَ اللهُ عَلَيْهِ لَيُعَذِّبَنَّهُ عَذَابًا لَا يُعَذِّبُهُ أَحَدًا مِنَ الْعَالَمِينَ ، فَلَمَّا مَاتَ الرَّجُلُ فَعَلُوا مَا أَمَرَهُمْ ، فَأَمَرَ اللهُ الْبَرَّ فَجَمَعَ مَا فِيهِ ، وَأَمَرَ الْبَحْرَ فَجَمَعَ مَا فِيهِ ، ثُمَّ قَالَ : لِمَ فَعَلْتَ هَذَا؟ قَالَ : مِنْ خَشْيَتِكَ ، يَا رَبِّ وَأَنْتَ أَعْلَمُ ، فَغَفَرَ اللهُ لَهُ " (رواه البخارى ومسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ১৬
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ তাকওয়া ছাড়া এক মানুষের উপর অপর মানুষের কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই
১৬. আবু যর (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁকে বলেছেন, একমাত্র তাকওয়া ছাড়া কোন লাল ও কোন কালো ব্যক্তির উপর তোমার কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই। (আহমদ)
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي ذَرٍّ ، أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَهُ : « إِنَّكَ لَسْتَ بِخَيْرٍ مِنْ أَحْمَرَ وَلَا أَسْوَدَ إِلَّا أَنْ تَفْضُلَهُ بِتَقْوَى » (رواه احمد)
তাহকীক:
হাদীস নং: ১৭
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরহেযগার লোক যে কোন স্থানে থাকুক না কেন, আমার সবচেয়ে সন্নিকটবর্তী
১৭. মু'আয ইবন জাবাল (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁকে ইয়েমেনে প্রেরণ করেন তখন তিনি ও [নবী ﷺ তাঁর সাথে বের হোন। মু'আয (রা) (ঘোড়া বা উটের পিঠে) সওয়ার ছিলেন এবং রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর সওয়ারীর সাথে পায়ে হেঁটে চলছিলেন এবং তাঁকে উপদেশ দিচ্ছিলেন। উপদেশ প্রদানের পর তিনি বললেনঃ হে মু'আয। সম্ভবত এ বছরের পর আমার সাথে তোমার সাক্ষাত হবে না। এবং (তার পরিবর্তে) সম্ভবত তুমি আমার এ মসজিদ ও আমার কবর দর্শন করবে। (এ কথা শুনে) রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর বিচ্ছেদের জন্য মু'আয (রা) খুব কাঁদলেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর মুখ ফিরিয়ে নিলেন এবং মদীনার দিকে চেহারা করে বললেন: মুত্তাকি বা পরহেযগার যে কোন লোক হোক এবং যে কোন স্থানে থাকুক না কেন, তারা আমার নিকটবর্তী মানুষ।
کتاب الرقاق
عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ قَالَ : لَمَّا بَعَثَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى الْيَمَنِ خَرَجَ مَعَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُوصِيهِ وَمُعَاذٌ رَاكِبٌ وَرَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَمْشِي تَحْتَ رَاحِلَتِهِ ، فَلَمَّا فَرَغَ قَالَ : " يَا مُعَاذُ إِنَّكَ عَسَى أَنْ لَا تَلْقَانِي بَعْدَ عَامِي هَذَا وَلَعَلَّكَ أنَ تَمُرَّ بِمَسْجِدِي هَذَا ، وَقَبْرِي " . فَبَكَى مُعَاذٌ جَشَعًا لِفِرَاقِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، ثُمَّ الْتَفَتَ فَأَقْبَلَ بِوَجْهِهِ نَحْوَ الْمَدِينَةِ فَقَالَ : " إِنَّ أَوْلَى النَّاسِ بِي الْمُتَّقُونَ مَنْ كَانُوا وَحَيْثُ كَانُوا " (رواه احمد)
তাহকীক:
হাদীস নং: ১৮
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ জান্নাতে যাওয়া ও দোযখ থেকে রক্ষা আল্লাহর রহমতের উপর নির্ভরশীল
১৮. হযরত জাবির (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: আল্লাহর রহম-করম ব্যতীত তোমাদের কোন ব্যক্তির আমল তাকে জান্নাতে নিয়ে যেতে পারবে না এবং তাকে দোযখ থেকেও রক্ষা করতে পারবে না। এমনকি আমিও আল্লাহর রহম ছাড়া দোযখ থেকে রক্ষা পাব না এবং বেহেশতে প্রবেশ করতে পারব না। (মুসলিম)
کتاب الرقاق
عَنْ جَابِرٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « لَا يُدْخِلُ أَحَدًا مِنْكُمْ عَمَلُهُ الْجَنَّةَ ، وَلَا يُجِيرُهُ مِنَ النَّارِ ، وَلَا أَنَا ، إِلَّا بِرَحْمَةٍ مِنَ اللهِ » (رواه مسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ১৯
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ বাতাস প্রবলবেগে প্রবাহিত হলে নবী করীম ﷺ যা করতেন ও বলতেন
১৯. হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বাতাস প্রবলবেগে প্রবাহিত হলে নবী ﷺ বলতেন:
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا، وَخَيْرَ مَا فِيهَا، وَخَيْرَ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا، وَشَرِّ مَا فِيهَا، وَشَرِّ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ
"হে আমার আল্লাহ! আমি তোমার কাছে সওয়াল করছি এর মঙ্গলের, এতে যে মঙ্গল রয়েছে তার এবং যে মঙ্গল পাঠান হয়েছে তার। আর তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি এর (বাতাসের) অমঙ্গলের, এতে যে অমঙ্গল রয়েছে এবং এতে যে অমঙ্গল পাঠানো হয়েছে।" আকাশে মেঘ দেখা দিলে তাঁর [নবী ﷺ-এর] রঙ বদলে যেত। তিনি বের হতেন, ঘরে ঢুকতেন, সামনে অগ্রসর হতেন এবং কখনোও পিছনে সরে যেতেন। বৃষ্টি হওয়ার পর তাঁর চিন্তা দূর হতো। আয়েশা (রা) নবী ﷺ-এর এ অবস্থা দেখার পর তাঁকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে, নবী ﷺ বলেছেনঃ হে আয়েশা! যেরূপ আদ জাতি বলেছিল, সেরূপ হতে পারে (আদ জাতির কাছে প্রেরিত বাতাসের ন্যায় হতে পারে এবং সে সম্পর্কে আল্লাহ বলেন:) “তারা যখন দেখল যে, মেঘ তাদের উপত্যকাসমূহের দিকে আসছে, তখন তারা বলল, এ মেঘ আমাদের জন্য বৃষ্টি বহনকারী।” (বুখারী ও মুসলিম)
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا، وَخَيْرَ مَا فِيهَا، وَخَيْرَ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا، وَشَرِّ مَا فِيهَا، وَشَرِّ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ
"হে আমার আল্লাহ! আমি তোমার কাছে সওয়াল করছি এর মঙ্গলের, এতে যে মঙ্গল রয়েছে তার এবং যে মঙ্গল পাঠান হয়েছে তার। আর তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি এর (বাতাসের) অমঙ্গলের, এতে যে অমঙ্গল রয়েছে এবং এতে যে অমঙ্গল পাঠানো হয়েছে।" আকাশে মেঘ দেখা দিলে তাঁর [নবী ﷺ-এর] রঙ বদলে যেত। তিনি বের হতেন, ঘরে ঢুকতেন, সামনে অগ্রসর হতেন এবং কখনোও পিছনে সরে যেতেন। বৃষ্টি হওয়ার পর তাঁর চিন্তা দূর হতো। আয়েশা (রা) নবী ﷺ-এর এ অবস্থা দেখার পর তাঁকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে, নবী ﷺ বলেছেনঃ হে আয়েশা! যেরূপ আদ জাতি বলেছিল, সেরূপ হতে পারে (আদ জাতির কাছে প্রেরিত বাতাসের ন্যায় হতে পারে এবং সে সম্পর্কে আল্লাহ বলেন:) “তারা যখন দেখল যে, মেঘ তাদের উপত্যকাসমূহের দিকে আসছে, তখন তারা বলল, এ মেঘ আমাদের জন্য বৃষ্টি বহনকারী।” (বুখারী ও মুসলিম)
کتاب الرقاق
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ : كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا عَصَفَتِ الرِّيحُ ، قَالَ : « اللهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا ، وَخَيْرَ مَا فِيهَا ، وَخَيْرَ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا ، وَشَرِّ مَا فِيهَا ، وَشَرِّ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ » ، قَالَتْ : وَإِذَا تَخَيَّلَتِ السَّمَاءُ ، تَغَيَّرَ لَوْنُهُ ، وَخَرَجَ وَدَخَلَ ، وَأَقْبَلَ وَأَدْبَرَ ، فَإِذَا مَطَرَتْ ، سُرِّيَ عَنْهُ ، فَعَرَفْتُ ذَلِكَ فِي وَجْهِهِ ، قَالَتْ عَائِشَةُ : فَسَأَلْتُهُ ، فَقَالَ : " لَعَلَّهُ ، يَا عَائِشَةُ كَمَا قَالَ قَوْمُ عَادٍ : {فَلَمَّا رَأَوْهُ عَارِضًا مُسْتَقْبِلَ أَوْدِيَتِهِمْ قَالُوا هَذَا عَارِضٌ مُمْطِرُنَا} (رواه البخارى ومسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২০
রিকাক অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ নবীজীকে কুরআনের যে সব সূরা বৃদ্ধ করে দিয়েছিল
২০. হযরত আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবু বকর (রা) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি বৃদ্ধ হয়ে গেছেন। তিনি বলেন: হূদ, ওয়াকিয়া, মুরসালাত, 'আম্মা ইয়াতাসাআলুন ও সূরা তাকবীর (ইযাশ-শামসু কুওয়িরাত) আমাকে বৃদ্ধ করে দিয়েছে। (তিরমিযী)
کتاب الرقاق
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ ، قَالَ : قَالَ أَبُو بَكْرٍ : يَا رَسُولَ اللَّهِ قَدْ شِبْتَ ، قَالَ : « شَيَّبَتْنِي هُودٌ ، وَالوَاقِعَةُ ، وَالمُرْسَلَاتُ ، وَعَمَّ يَتَسَاءَلُونَ ، وَإِذَا الشَّمْسُ كُوِّرَتْ » (رواه الترمذى)
তাহকীক: