মা'আরিফুল হাদীস
রিকাক অধ্যায়
হাদীস নং: ৫
রিকাক অধ্যায়
ভীত বুদ্ধিমান ব্যক্তিরা রাতের প্রথম প্রহরে রওনা দেয়: আল্লাহর পণ্য জান্নাত
৫. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ- বলেছেনঃ যে ভয় পায় সে রাতের শুরুতে যাত্রা করে এবং যে রাতের শুরুতে যাত্রা করে, সে (নিরাপদে) মনযিলে পৌঁছে। স্মরণ রাখ, আল্লাহর পণ্য খুবই মূল্যবান, স্মরণ রাখ, আল্লাহর পণ্য জান্নাত। (তিরমিযী)
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : مَنْ خَافَ أَدْلَجَ ، وَمَنْ أَدْلَجَ بَلَغَ الْمَنْزِلَ ، أَلاَ إِنَّ سِلْعَةَ اللهِ غَالِيَةٌ ، أَلاَ إِنَّ سِلْعَةَ اللهِ الجَنَّةُ . (رواه الترمذى)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
আরব দেশের একটা সাধারণ রীতি ছিল, সওদাগর ও মুসাফিরদের কাফেলা শেষরাতে যাত্রা করত। মরুদস্যু ও ছিনতাইকারীরা শেষরাতেই সাধারণত এসব কাফেলা আক্রমণ করতো। এ জন্য বুদ্ধিমান ও হুঁশিয়ার মুসাফিররা শেষরাতের পরিবর্তে প্রথম রাতেই রওনা দিত। এই কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে তারা দস্যুদের দৃষ্টি এড়িয়ে নিরাপদে মনযিলে মাকসুদে পৌঁছে যেত। নবী করীম ﷺ এই দৃষ্টান্ত দ্বারা বুঝিয়েছেন, দস্যুদের আক্রমণের ভয়ে ভীত কাফেলা যেমন রাতের আরাম ও ঘুম ত্যাগ করে প্রথম প্রহরেই রওনা দেয় এবং কঠোর পরিশ্রম করে নিরাপদে মনযিলে মাকসুদে পৌঁছতে সক্ষম হয়, ঠিক তেমনি যে ব্যক্তি আখিরাতের জীবনে দোযখের ভয় করে, পরিণতি সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করে, তার জন্য কঠোর পরিশ্রম করে, নিজের লোভ-লালসা সংযত করে এবং আরাম-আয়েশ পরিহার করে, সে আখিরাতের জীবনে আল্লাহর মেহেরবানীতে কামিয়াবীর মনযিলে পৌছতে সক্ষম হবে।
আল্লাহ তাঁর বিশ্বাসী বান্দাদের জন্য যে পণ্যের ওয়াদা করেছেন তা কোন নগণ্য জিনিস নয় যে, বিনা পরিশ্রমে তা লাভ করা যাবে। আল্লাহ যে জান্নাতের ওয়াদা করেছেন তা পণ্য হিসেবে খুবই মূল্যবান এবং তা লাভের জন্য ইহজীবনের সকল সুযোগ-সুবিধা, আরাম-আয়েশ, লোভ-লালসা এবং বাসনা কুরবান করে দেয়া উচিত এবং যারা দোযখকে ভয় করে, তাদের জন্য এটা কোন কঠিন কাজ নয়।
কালেমা 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্' পাঠ করে আমরা আমাদের প্রাণ ও সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় খরচের যে ওয়াদা করেছি, তা যদি বাস্তব জীবনে কার্যকর করি এবং ওয়াদা খেলাফীর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত না হই, তাহলে আশা করতে পারি যে, আখিরাতে আল্লাহ তা'আলা তাঁর ওয়াদা পালন করবেন এবং মূল্যবান জান্নাত আমাদেরকে দান করবেন। অবশ্য এ জন্য কঠোর ত্যাগ ও সাধনা করতে হবে। আল্লাহ তা'আলা বলেন:
إِنَّ اللَّهَ اشْتَرَى مِنَ الْمُؤْمِنِينَ أَنْفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَيَقْتُلُونَ وَيُقْتَلُونَ وَعْدًا عَلَيْهِ حَقًّا فِي التَّوْرَاةِ وَالْإِنْجِيلِ وَالْقُرْآنِ وَمَنْ أَوْفَى بِعَهْدِهِ مِنَ اللَّهِ فَاسْتَبْشِرُوا بِبَيْعِكُمُ الَّذِي بَايَعْتُمْ بِهِ وَذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
"নিশ্চয়ই আল্লাহ জান্নাতের বিনিময়ে মু'মিনদের নফস এবং মাল খরিদ করে নিয়েছেন। তারা আল্লাহর পথে লড়ে, তারা হত্যা করে ও নিজেরা নিহত হয়। তওরাত, ইঞ্জিল ও কুরআনে এ সম্পর্কে ওয়াদা করা হয়েছে এবং কে আল্লাহর চেয়ে বেশি ওয়াদা পূরণকারী। তাই তোমরা যে সওদা করেছ সে সওদার জন্য সুসংবাদ দাও এবং ইহাই সবচেয়ে বিরাট কামিয়াবী।"
আল্লাহ তাঁর বিশ্বাসী বান্দাদের জন্য যে পণ্যের ওয়াদা করেছেন তা কোন নগণ্য জিনিস নয় যে, বিনা পরিশ্রমে তা লাভ করা যাবে। আল্লাহ যে জান্নাতের ওয়াদা করেছেন তা পণ্য হিসেবে খুবই মূল্যবান এবং তা লাভের জন্য ইহজীবনের সকল সুযোগ-সুবিধা, আরাম-আয়েশ, লোভ-লালসা এবং বাসনা কুরবান করে দেয়া উচিত এবং যারা দোযখকে ভয় করে, তাদের জন্য এটা কোন কঠিন কাজ নয়।
কালেমা 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্' পাঠ করে আমরা আমাদের প্রাণ ও সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় খরচের যে ওয়াদা করেছি, তা যদি বাস্তব জীবনে কার্যকর করি এবং ওয়াদা খেলাফীর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত না হই, তাহলে আশা করতে পারি যে, আখিরাতে আল্লাহ তা'আলা তাঁর ওয়াদা পালন করবেন এবং মূল্যবান জান্নাত আমাদেরকে দান করবেন। অবশ্য এ জন্য কঠোর ত্যাগ ও সাধনা করতে হবে। আল্লাহ তা'আলা বলেন:
إِنَّ اللَّهَ اشْتَرَى مِنَ الْمُؤْمِنِينَ أَنْفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَيَقْتُلُونَ وَيُقْتَلُونَ وَعْدًا عَلَيْهِ حَقًّا فِي التَّوْرَاةِ وَالْإِنْجِيلِ وَالْقُرْآنِ وَمَنْ أَوْفَى بِعَهْدِهِ مِنَ اللَّهِ فَاسْتَبْشِرُوا بِبَيْعِكُمُ الَّذِي بَايَعْتُمْ بِهِ وَذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
"নিশ্চয়ই আল্লাহ জান্নাতের বিনিময়ে মু'মিনদের নফস এবং মাল খরিদ করে নিয়েছেন। তারা আল্লাহর পথে লড়ে, তারা হত্যা করে ও নিজেরা নিহত হয়। তওরাত, ইঞ্জিল ও কুরআনে এ সম্পর্কে ওয়াদা করা হয়েছে এবং কে আল্লাহর চেয়ে বেশি ওয়াদা পূরণকারী। তাই তোমরা যে সওদা করেছ সে সওদার জন্য সুসংবাদ দাও এবং ইহাই সবচেয়ে বিরাট কামিয়াবী।"
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)