মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
২০- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১৮ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৩৮৩৯

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৮৩৯। হযরত উম্মে হারাম (রাঃ) হইতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলিয়াছেনঃ সমুদ্রে সফরকারী যেই ব্যক্তির মাথায় চক্কর আসিয়া বমিতে আক্রান্ত হয়, সে একজন শহীদের সওয়াব পাইবে। আর যেই ব্যক্তি সমুদ্রে ডুবিয়া মৃত্যুবরণ করিয়াছে, সে দুইজন শহীদের সওয়াব পাইবে। – আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮৪০

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৮৪০। হযরত আবু মালেক আশআরী (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)কে বলিতে শুনিয়াছি, তিনি বলিয়াছেনঃ যেই ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় (জেহাদে) বাহির হয়, তারপর যদি সে মরিয়া যায় কিংবা তাহাকে মারিয়া ফেলা হয় অথবা সে ঘোড়া কিংবা উটের পৃষ্ঠ হইতে পতিত হইয়া মৃত্যুবরণ করে কিংবা কোন বিষাক্ত প্রাণী তাহাকে দংশন করে অথবা সে নিজের বিছানায় মৃত্যুবরণ করে। মোটকথা, আল্লাহর রাস্তায় বাহির হওয়ার পর যে কোন অবস্থায়ই সে মৃত্যুবরণ করুক না কেন, সে শহীদ বলিয়া পরিগণিত হইবে এবং তাহার জন্য জান্নাত অবধারিত। -আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮৪১

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৮৪১। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ জেহাদ হইতে ফিরিয়া আসা জেহাদের ন্যায়ই। (অর্থাৎ, জেহাদ হইতে প্রত্যাবর্তনের সওয়াব জেহাদে যাওয়ার সমপরিমাণ।) — আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮৪২

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৮৪২। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ মুজাহিদ-গাযী তাঁহার জেহাদের পূর্ণ সওয়াব লাভ করিবে আর জেহাদের জন্য মাল-সম্পদ দানকারী মাল প্রদান ও জেহাদ উভয়টির সওয়াব লাভ করিবে। –আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮৪৩

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৮৪৩। হযরত আবু আইয়ুব (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি নবী (ﷺ)-কে বলিতে শুনিয়াছেন, তিনি বলিয়াছেনঃ অচিরেই তোমাদের (মুসলমানের) জন্য বড় বড় শহর বিজিত হইবে এবং বিরাট সেনাদল গঠন করা হইবে এবং তোমাদের উপর বাধ্যতামূলক এই নির্দেশ থাকিবে যে, তোমাদের প্রত্যেক কওম ও সম্প্রদায় হইতে উক্ত সেনাদলে লোক প্রেরণ করিতেই হইবে। কিন্তু সেই সময় এমন লোকও থাকিবে, যে-ব্যক্তি (পারিশ্রমিক ছাড়া) সেই সেনাদলে যোগদান অপছন্দ করিবে। সে উহা হইতে অব্যাহতি লাভের উদ্দেশ্যে নিজ কওমকে ত্যাগ করিয়া চলিয়া যাইবে। অতঃপর এমন গোত্রকে খুঁজিয়া বেড়াইবে, যাহাদের সম্মুখে নিজেকে পেশ করিয়া বলিবে, তোমাদের মধ্যে এমন কোন (মালদার) লোক আছে কি, (যে আমাকে কিছু মাল-সম্পদ প্রদান করিবে এবং) আমি তাহার পক্ষ হইতে জেহাদে অংশগ্রহণ করিব? হুযূর (ﷺ) বলেন, সাবধান! (এই ব্যক্তি মুজাহিদ নহে ; বরং) এই লোক হইল ভাড়াটিয়া মজদুর। তাহার রক্তের শেষ বিন্দু পর্যন্ত সে মজদুরই থাকিবে। —আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮৪৪

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৮৪৪। হযরত ইয়া'লা ইবনে উমাইয়া (রাঃ) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) লোকদিগকে জেহাদে অংশগ্রহণ করিবার জন্য ঘোষণা করিলেন। তখন আমি একদিকে ছিলাম প্রবীণ বৃদ্ধ, অপরদিকে আমার কোন খাদেমও ছিল না। সুতরাং আমি এমন একজন মজদুর খোঁজ করিলাম, যে আমার খেদমতের জন্য যথেষ্ট হয়। অতঃপর আমি এমন এক ব্যক্তিকে পাইয়া গেলাম, যাহাকে আমি তিন দীনারের (স্বর্ণ মুদ্রার) বিনিময়ে ঠিক করিয়া নিলাম। পরে যখন গনীমতের মাল আসিয়া গেল, তখন আমি ইচ্ছা করিলাম আমার খাদেমের জন্যও যুদ্ধলব্ধ মাল হইতে এক ভাগ বাহির করিয়া লইব। পরে আমি এই সম্পর্কে জানিবার উদ্দেশ্যে নবী (ﷺ)-এর নিকট গেলাম এবং তাঁহাকে ঘটনাটি জানাইলাম। তখন তিনি বলিলেনঃ আমি এই যুদ্ধে ঐ লোকটির জন্য ইহকাল ও পরকালে নির্দিষ্ট ঐ তিনটি দীনার ব্যতীত অন্য কিছু পাইতেছি না। (অর্থাৎ, সে গনীমতের মালের কোন অংশ পাইবে না।) —আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮৪৫

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৮৪৫। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদা এক ব্যক্তি আসিয়া বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। কোন এক ব্যক্তি আল্লাহর পথে জেহাদ করার সংকল্প রাখে এবং সঙ্গে সঙ্গে দুনিয়ার মাল-দৌলত পাইবারও লোভ রাখে। (এখন তাহার এই জেহাদের পরিণাম কি? উত্তরে) নবী (ﷺ) বলিলেনঃ তাহার জন্য কোন সওয়াব নাই। –আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮৪৬

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৮৪৬। হযরত মুআয (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ জেহাদ দুই প্রকারের। সুতরাং যেই ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির আকাঙ্ক্ষায় ইমামের আনুগত্যসহ নিজের জান ও মাল ব্যয় করে, সঙ্গীদের সাথে সদাচরণ ও উত্তম ব্যবহার বজায় রাখে এবং ফাসাদ ও বিশৃঙ্খলা হইতে দূরে থাকিয়া জেহাদ করে, তাহার নিদ্রা ও জাগরণ সমস্ত কিছুরই সওয়াব রহিয়াছে। আর ইহার বিপরীত, যেই লোক বংশ, অহংকার, নিজের বীরত্বের প্রকাশ ও সুখ্যাতি অর্জনের উদ্দেশ্যে জেহাদে অংশগ্রহণ করে, আর ইমামের (নেতার) আদেশ অমান্য করে এবং যমীনের মধ্যে ফাসাদ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, সেই ব্যক্তি ঐ জেহাদ হইতে কোন বিনিময় (সওয়াব) লইয়াই প্রত্যাবর্তন করিল না। অর্থাৎ, সে কোন সওয়াব পাইবে না। — মালেক, আবু দাউদ ও নাসায়ী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮৪৭

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৮৪৭। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর (রাঃ) বলেন, একদা আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমাকে জেহাদ সম্পর্কে অবহিত করুন। (অর্থাৎ, কোন্ প্রকারের জেহাদ করিলে সওয়াব পাওয়া যায়।) তিনি বলিলেনঃ হে আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর যদি তুমি ধৈর্যধারণ করিয়া আল্লাহর নিকট হইতে সওয়াব ও পুরস্কার পাওয়ার নিয়তে জেহাদ কর, আল্লাহ্ তোমাকে ধৈর্যধারণকারী ও সওয়াব অর্জনকারী হিসাবে উত্থিত করিবেন। আর যদি তুমি লোকদিগকে বীরত্ব দেখানো এবং গর্ব অহংকার প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে জেহাদ কর, তবে তোমাকে আল্লাহ্ সেই লোক দেখানো ও অহংকার প্রদর্শনের অবস্থায়ই উত্থিত করিবেন। মোটকথা, হে আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর! তুমি যে কোন অবস্থায় লড়াই কর কিংবা নিহত হও, আল্লাহ্ ঐ অবস্থায়ই তোমাকে উত্থিত করিবেন। —আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮৪৮

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৮৪৮। হযরত ওকবা ইবনে মালেক (রাঃ) হইতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলিয়াছেনঃ তোমরা কি এই কাজ করিতে অসমর্থ যে, যদি আমি কোন লোককে (তোমাদের শাসক হিসাবে) নিযুক্ত করিয়া পাঠাই আর সে আমার নির্দেশ মোতাবেক (শাসনকার্য পরিচালনা করে না, তখন তোমরা তাহাকে পদচ্যুত করিয়া তদস্থলে এমন একজন লোককে নিয়োগ করিবে, যে আমার নির্দেশ মোতাবেক কাজ পরিচালনা করে ? —আবু দাউদ। আর ফাযালার হাদীস, 'সে ব্যক্তিই প্রকৃত মুজাহিদ যে তাহার নফসের সাথে জেহাদ করে' কিতাবুল ঈমানের মধ্যে বর্ণিত হইয়াছে।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮৪৯

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩৮৪৯। হযরত আবু উমামা (রাঃ) বলেন, একদা আমরা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সঙ্গে এক যুদ্ধ অভিযানে বাহির হইলাম। এই সময় আমাদের একজন লোক এমন এক গর্তের (পানির কূপের) নিকট দিয়া পথ অতিক্রম করিল যাহার মধ্যে স্বচ্ছ পানি ও কিছু সবুজ তাজা তরিতরকারী ছিল। উক্ত স্থানটিকে দেখিয়া তাহার অন্তরে এই আকাঙ্ক্ষা জন্মিল যে, যদি আমি দুনিয়ার মোহ-মায়া ত্যাগ করিয়া এই স্থানে বসবাস করিতে পারিতাম, তাহা হইত। (মোট হইলে কতই না উত্তম হইত! (মোটকথা, সে সেখানে নির্জনবাস করিতে চাহিল।) সুতরাং সে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট এই ব্যাপারে অনুমতি চাহিল। উত্তরে হুযূর (ﷺ) বলিলেনঃ আমাকে ইহুদী কিংবা খৃষ্টান ধর্ম প্রচার ও প্রতিষ্ঠা করিবার জন্য পাঠান হয় নাই; বরং 'দ্বীনে হানীফ' সরল ও সহজ দ্বীন প্রতিষ্ঠা করিবার জন্যই পাঠান হইয়াছে। (শুনিয়া লও!) সেই মহান সত্তার কসম করিয়া বলিতেছি, যাঁহার (কুদ্রতী হাতে (আমি) মুহাম্মাদের প্রাণ! এক সকাল কিংবা এক বিকাল আল্লাহর রাস্তায় নিজেকে নিয়োজিত রাখাটা গোটা দুনিয়া ও উহার মধ্যে যাহাকিছু আছে সেই সমস্ত জিনিষ হইতে উত্তম। আর তোমাদের কাহারও যুদ্ধের ময়দানে কাতার বন্দী হওয়া ষাট বৎসরের (নফল) নামায পড়ার চেয়ে উত্তম। —আহমদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮৫০

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩৮৫০। হযরত ওবাদা ইবনে সামেত (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যেই ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ করিতে যাইয়া একখানা রশি পাওয়ারই উদ্দেশ্য রাখিয়াছে, এমতাবস্থায় সে সেইটিই পাইবে যাহা সে নিয়ত করিয়াছে। —নাসায়ী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮৫১

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩৮৫১। হযরত আবু সায়ীদ (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহকে (রাহঃ) প্রতিপালক হিসাবে, ইসলামকে দ্বীন হিসাবে এবং মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে রাসূল হিসাবে সন্তুষ্টচিত্তে মানিয়া লয়, তাহার জন্য জান্নাত অবধারিত। এই কথাগুলি শ্রবণ করিয়া আবু সায়ীদ (রাঃ) অত্যধিক আনন্দিত হইয়া বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! উপরোক্ত কথাটি আমার সম্মুখে পুনরাবৃত্তি করুন; তখন হুযূর (ﷺ) পুনরায় উহা বলিলেন। অতঃপর তিনি বলিলেন, এতদ্ভিন্ন আরও একটি বস্তু আছে, যাহার দ্বারা আল্লাহ্ তাঁহার বান্দাকে জান্নাতের মধ্যে এক শত সোপান (সিঁড়ি) বুলন্দ করিবেন এবং প্রত্যেক দুই সিঁড়ির মধ্যবর্তী ব্যবধান আসমান ও যমীনের দূরত্বের সমান। আবু সায়ীদ জানিতে চাহিলেন, ঐ বস্তুটি কি ইয়া রাসূলাল্লাহ্ ? উত্তরে তিনি (তিনবার) বলিলেন, আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ, আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ, আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮৫২

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩৮৫২। হযরত আবু মুসা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ বেহেশতের দ্বারসমূহ (মুজাহেদ্বীনের) তলোয়ারের ছায়াতলে রহিয়াছে। এই কথা শুনিয়া এক জীর্ণশীর্ণ প্রকৃতির লোক দাড়াইয়া বলিল, হে আবু মুসা! আপনি কি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে উক্ত হাদীসটি বলিতে শুনিয়াছেন? আবু মুসা উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। অতঃপর লোকটি তাহার সঙ্গীদের নিকট আসিয়া বলিল, আমি তোমাদিগকে (চিরদিনের জন্য শেষ) সালাম জানাইতেছি। এই কথা বলিয়াই সে তলোয়ারের খাপ ভাঙ্গিয়া ফেলিল এবং তলোয়ার লইয়া শত্রুদের দিকে অগ্রসর হইল। উহার দ্বারা অনেক শত্রু নিধন করিল, অবশেষে নিজেও শহীদ হইয়া গেল। – মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮৫৩

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩৮৫৩। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁহার সাহাবী (সঙ্গী)-দিগকে বলিলেন, যখন তোমাদের ভাইয়েরা ওহুদের দিন শহীদ হইয়া গিয়াছে, তখন আল্লাহ্ তা'আলা তাহাদের রূহ্ বা আত্মাসমূহকে এক একটি সবুজ রংয়ের পাখীর দেহের মধ্যে ঢুকাইয়া দিয়াছেন। এখন সেই সমস্ত পাখীরা বেহেশতের নহরসমূহে বিচরণ করে, তাহারা বেহেশতের ফল-ফলারি ভক্ষণ করে এবং স্বর্ণের ফানুসে, যাহা আরশের নীচে ঝুলন্ত রহিয়াছে উহাতে অবস্থান করে। অতঃপর সেই সমস্ত শহীদগণ যখন খানা পিনা এবং বিশ্রাম দ্বারা আনন্দ ও পরিতৃপ্তি উপভোগ করে, তখন তাহারা স্বতঃস্ফূর্ত হইয়া বলিয়া উঠে, এমন কে আছে, যে আমাদের (দুনিয়ার) ভাইদিগকে আমাদের পক্ষ হইতে এই সংবাদ পৌঁছাইয়া দিবে যে, আমরা বেহেশতের মধ্যে জীবিত। যেন তাহারাও বেহেশত লাভ করিতে অবহেলা না করে এবং লড়াই জেহাদের সময় অলসতা ও অনীহা প্রকাশ না করে। তাহাদের (শহীদদের) এই আকাঙ্ক্ষা দেখিয়া আল্লাহ্ তা'আলা বলিলেনঃ আমিই তোমাদের তরফ হইতে তোমাদের হাল অবস্থার সংবাদ তোমাদের দুনিয়ার ভাইদের কাছে পৌঁছাইয়া দিব। সুতরাং এই প্রেক্ষিতে আল্লাহ্ তা'আলা নাযিল করিলেনঃ وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ قُتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتًا بَلْ أَحْيَاءٌ الآية "এবং যাহারা আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হইয়াছে তোমরা তাহাদিগকে মৃত ধারণা করিও না; বরং তাহারা জীবিত।" আয়াতের শেষ পর্যন্ত। – আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮৫৪

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩৮৫৪। হযরত আবু সায়ীদ খুদ্রী (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ দুনিয়াতে মু'মিন লোকেরা তিন প্রকারে বিভক্ত। এক প্রকারের মু'মিন তাহারা, যাহারা আল্লাহ্ ও তাহার রাসূলের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করে। অতঃপর উহাতে সামান্য পরিমাণও সন্দেহ পোষণ করে না এবং জান ও মাল দ্বারা আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ করে। (ইহারা হইল সবচেয়ে উত্তম মু'মিন।) দ্বিতীয় প্রকারের মু'মিন হইল তাহারা, যাহাদের হাত হইতে অন্যান্য মুসলমানের জান ও মাল সার্বিকভাবে নিরাপদ ও হেফাযতে থাকে। আর তৃতীয় প্রকারের মু'মিন হইল সেই ব্যক্তি, যাহার অন্তরে দুনিয়ার লোভ ও মোহ উদিত হইলে মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ্ তা'আলার ভয় ও তাঁহার সন্তুষ্টি লাভের আশায় উহা বর্জন করে। —আহমদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮৫৫

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩৮৫৫। হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আবু আমীরাহ্ (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ কোন মুসলমানকে আল্লাহ্ তা'আলা মৃত্যু দান করার পর সে আবার তোমাদের মধ্যে ফিরিয়া আসিতে চাহিবে না, যদিও তাহাকে দুনিয়া এবং উহার যাবতীয় সামগ্রী প্রদান করা হয়, একমাত্র শহীদ ব্যতীত। (সে ফিরিয়া আসার আকাঙ্ক্ষা করিবে।) ইবনে আবু আমীরাহ্ বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ আল্লাহ্র রাস্তায় আমি শাহাদাত বরণ করি, ইহা আমার নিকট ইহার চেয়ে অধিক প্রিয় যে, সমস্ত গ্রাম ও নগরবাসী আমার অধীনস্থ হইয়া যাউক। — নাসায়ী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮৫৬

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩৮৫৬। হযরত হাসানা বিনতে মুআবিয়া (রাঃ) বলেন, আমার চাচা আমাকে বর্ণনা করিয়াছেন যে, আমি নবী (ﷺ)কে জিজ্ঞাসা করিলাম, কোন্ কোন্ লোক বেহেশতে যাইবেন ? উত্তরে তিনি বলিলেনঃ নবী জান্নাতে যাইবেন, শহীদ, নাবালেগ শিশু এবং সেই সমস্ত শিশু যাহাদিগকে (তাহাদের মাতাপিতা) জীবন্ত কবর দিয়াছে। ইহারা সকলেই বেহেশতে যাইবে। – আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান