মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
২০- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ২০ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৩৭৯৩

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৭৯৩। হযরত সালমান ফারেসী (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি শুনিয়াছি, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: একদিন ও একটা রাত্রি আল্লাহর রাস্তায় পাহারা দেওয়া এক মাস রোযা ও রাতে জাগরণ তথা নামাযে দণ্ডায়মান থাকার চেয়েও অধিক উত্তম। আর এই পাহারায় নিয়োজিত থাকা অবস্থায় মারা গেলে যেই কাজে সে নিয়োজিত ছিল, উহার সওয়াব বা প্রতিদান অনবরত সে পাইতে থাকিবে। অনুরূপভাবে জান্নাত হইতে তাহার রিযক আসিতে থাকিবে এবং ফেতনা (শয়তান ও দাজ্জালের ফেতনা এবং কবরের আযাব ) হইতে নিরাপদে থাকিবে। মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৭৯৪

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৭৯৪। হযরত আবু আবস (আব্দুর রহমান ইবনে জুবায়র আনসারী [রাঃ]) বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন যে বান্দার পদদ্বয় আল্লাহর পথে ধূলি মলিন হয়, তাহাকে (দোযখের আগুন স্পর্শ করিবে না। -বুখারী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৭৯৫

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৭৯৫। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: কোন কাফের ও তাহার হত্যাকারী জাহান্নামে কখনওই একত্র হইবে না। — মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৭৯৬

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৭৯৬। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন মানুষের মধ্যে সেই ব্যক্তির জীবনই সকলের চেয়ে উত্তম, যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় (জেহাদের উদ্দেশ্যে) নিজের ঘোড়ার লাগাম ধরিয়া তাহার পিঠের উপর আরোহণ করিয়া বসিয়া আছে। যখনই সে কোন ভীতিপ্রদ শব্দ কিংবা কোন সাহায্যপ্রার্থীর ফরিয়াদ শুনিতে পায়, তৎক্ষণাৎ সেই দিকে ছুটিয়া যায় এবং কায়মনে অন্বেষণ করিতে থাকে হত্যা এবং মৃত্যুকে। (অর্থাৎ, শত্রুকে নিপাত করিবার জন্য ছুটিয়া বেড়ায় এবং নিজে শহীদ হওয়ার জন্য মৃত্যুকে তালাশ করে। ফলে এমন এমন স্থানে সে নিজেকে উপস্থিত করিয়া দেয়, তাহার ধারণামতে যেই স্থানে সেই মৃত্যু ও শাহাদাত হইতে পারে। আর সেই ব্যক্তির জীবনও উত্তম, যে পর্বতের চূড়ায় নিজের এক ক্ষুদ্র বকরীর পাল লইয়া অবস্থান করে অথবা কোন সমভূমিতে বকরী চরায় এবং শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করা পর্যন্ত যথাযথভাবে নামায কায়েম করে, যাকাত আদায় করে এবং নিজের রবের এবাদতে নিয়োজিত থাকে। এই ধরনের লোক মানুষের মধ্যে শুধু উত্তমরূপেই জীবন যাপন করে। —মুসলিম,

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৭৯৭

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৭৯৭। হযরত যায়দ ইবনে খালেদ (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন যে ব্যক্তি আল্লাহর পথের কোন মুজাহিদকে যুদ্ধ সরঞ্জাম সরবরাহ করে, তাহাকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করিয়া দেয়, সে নিজেই যেন জেহাদে অংশগ্রহণ করিল। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর পথের কোন মুজাহিদের অনুপস্থিতিতে তাহার পরিবার পরিজনকে উত্তমরূপে দেখা-শোনা করে, সেও যেন নিজেই জেহাদে অংশগ্রহণ করিল। — মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৭৯৮

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৭৯৮। হযরত বুরায়দা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন মুজাহিদদের স্ত্রীগণের মর্যাদা যাহারা জেহাদে অংশগ্রহণ করে নাই তাহাদের পক্ষে তাহাদের মায়ের মত। (অর্থাৎ, যাহারা জেহাদে যায় নাই, তাহাদের জন্য মুজাহিদদের স্ত্রীগণ তাহার মায়ের তুল্য।) আর যে ব্যক্তি জেহাদে অংশগ্রহণ না করিয়া মুজাহিদদের পরিবার পরিজনের সহিত বাড়ীতে রহিয়া গেল এবং এই অবস্থায় সে ব্যক্তি মুজাহিদদের স্ত্রীদের সাথে খেয়ানত করিল, কিয়ামতের দিন সেই লোকটিকে উক্ত মুজাহিদদের সম্মুখে দণ্ডায়মান করান হইবে, অতঃপর উক্ত মুজাহিদ সেই লোকটির নেক আমল হইতে যেই পরিমাণ লওয়ার ইচ্ছা করে সেই পরিমাণ লইয়া লইবে। (হুযূর (ছাঃ) ইহার পর লোকদিগকে সতর্কবাণীস্বরূপ বলিলেন) এ সম্পর্কে তোমাদের ধারণা কি? – মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৭৯৯

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৭৯৯। হযরত আবু মাসউদ আনসারী (রাঃ) বলেন, একদা এক ব্যক্তি লাগাম সহকারে একটি উষ্ট্রী লইয়া হুযূর (ছাঃ)-এর খেদমতে উপস্থিত হইল এবং বলিল, ইহা আল্লাহর রাস্তায় দান করিলাম। তখন রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন ইহার বিনিময়ে তুমি কিয়ামতের দিন লাগামবিশিষ্ট সাত শত উষ্ট্রী লাভ করিবে। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮০০

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৮০০। হযরত আবু সায়ীদ (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদা রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হোযায়ল গোত্রের একটি শাখা- গোত্র বনী লেহ্ইয়ানের অভিযানে একদল সৈন্য পাঠাইবার সিদ্ধান্ত নিলেন। এই সময় তিনি ঘোষণা করিলেন, প্রত্যেক গোত্রের প্রতি দুইজনের মধ্য হইতে অবশ্যই একজন অভিযানে যাইতে হইবে। (অর্থাৎ, প্রত্যেক গোত্রের অর্ধেক লোক সেনাদলে যোগদান করিবে।) কিন্তু ইহার সওয়াব প্রত্যেকেই সমানভাবে লাভ করিবে।—মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮০১

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৮০১। হযরত জাবের ইবনে সামুরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: নিশ্চয়ই এই দ্বীন (ইসলাম) সর্বদাই বহাল ও প্রতিষ্ঠিত থাকিবে এবং মুসলমানদের একদল কিয়ামত পর্যন্ত (কোথাও না কোথাও) এই দ্বীনের জন্য জেহাদে রত থাকিবে। মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮০২

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৮০২। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেনঃ কোন ব্যক্তি আল্লাহর পথে জখমী হইলে আল্লাহ্ই বেশী জানেন সত্যিকার অর্থে কে তাঁহার পথে জখমী হইয়াছে। কিয়ামতের দিন সে এমন অবস্থায় আসিবে যে, তাহার ক্ষত হইতে রক্ত নির্গত হইতে থাকিবে। উহার বর্ণ হইবে রক্তের ন্যায় আর গন্ধ হইবে মেশকের ন্যায়। মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮০৩

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৮০৩। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাহাহ ওয়াসা বলিয়াছেন : (একমাত্র শহীদ ব্যতীত) কোন ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করিবার পর পুনরায় দুনিয়াতে ফিরিয়া আসিতে চাহিবে না, যদিও পৃথিবীর যাবতীয় সম্পদ তাহাকে প্রদান করা হয়। একমাত্র শহীদই শাহাদত বরণের উচ্চমর্যাদা দেখিয়া আবার দুনিয়াতে ফিরিয়া আসিবার আকাঙ্ক্ষা করিবে, যাহাতে সে আরও দশ (অর্থাৎ, বহু বহু) বার (আল্লাহর রাস্তায়) শহীদ হইতে পারে। —মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮০৪

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৮০৪। হযরত মাসরূক (রঃ) বলেন, আমরা হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাঃ) -কে এই আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিলামঃ وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ قُتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتًا بَلْ أَحْيَاءٌ عِنْدَ ربِّهم يُرزقون অর্থ: "যাহারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত (শহীদ) হইয়াছে, তোমরা তাহাদিগকে মৃত ধারণা করিও না; বরং তাহারা জীবিত। তাহারা তাহাদের প্রভুর নিকট হইতে রিযক (খাদ্য) পাইয়া থাকেন।” উত্তরে ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলিলেন, আমরা এ বিষয়ে (রাসুলুল্লাহ্ [ছাঃ])-কে জিজ্ঞাসা করিয়া ছিলাম, তিনি বলিয়াছেন তাহাদের (অর্থাৎ, শহীদদের) রূহসমূহ সবুজ বর্ণের পাখীর প্রতিকৃতির মধ্যে রক্ষিত হয় এবং তাহাদের জন্য আল্লাহর আরশের নীচে ফানুস ঝুলাইয়া দেওয়া হয়। অতঃপর তাহারা জান্নাতে যথেচ্ছা বিচরণ করে (এবং জান্নাতের নেয়ামত উপভোগ করে)। পরে আবার ঐ সমস্ত ফানুসের দিকে ফিরিয়া আসে। অতঃপর তাহাদের রব তাহাদের দিকে বিশেষ দৃষ্টি করত তাহাদিগকে জিজ্ঞাসা করেন, তোমাদের কোন বস্তুর আকাঙ্ক্ষা আছে কি? উত্তরে তাহারা বলে, আমরা আর কি জিনিসেরই বা আকাঙ্ক্ষা করিব? অথচ আমরা জান্নাতের যথায় ইচ্ছা তথায় বিচরণ করিতেছি। আল্লাহ্ তা'আলা তাহাদিগকে এইভাবে তিনবার জিজ্ঞাসা করেন, যখন তাহারা দেখে যে, বার বার তাহাদিগকে একই কথা জিজ্ঞাসা করা হইতেছে, তখন তাহারা বলে, হে আমাদের পরওয়ারদেগার! আমরা চাহিতেছি যে, আমাদের রূহ্ (আত্মা)-গুলিকে পুনরায় আমাদের দেহের ভিতরে ফিরাইয়া দেওয়া হউক, যেন আমরা পুনরায় আপনার রাস্তায় জেহাদ করিয়া আবার শাহাদত লাভ করিতে পারি। অতঃপর আল্লাহ্ তা'আলা যখন দেখেন যে, তাহাদের কোন জিনিসের আকাঙ্ক্ষা বা প্রয়োজন নাই, তখন তাহাদের সাথে এই প্রসংগ ত্যাগ করেন। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮০৫

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৮০৫। হযরত আবু কাতাদাহ্ (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদা রাসুলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবাদের মাঝে দাঁড়াইয়া খুত্বা দিলেন। তিনি বলিলেন: সবচেয়ে উত্তম আমল হইল আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ করা এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান ও বিশ্বাস স্থাপন করা। তখন এক ব্যক্তি দাঁড়াইয়া বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! আপনার অভিমত কি? যদি আমি আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ করিতে যাইয়া নিহত হই, তখন আমার সমস্ত গুনাহগুলি কি মাফ হইয়া যাইবে? উত্তরে রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন, হা। যদি তুমি আল্লাহর রাস্তায় এই অবস্থায় নিহত হও যে, তুমি একজন ধৈর্যধারণকারী, সওয়াবের আকাঙ্ক্ষী, শত্রু সম্মুখে বুক ফুলাইয়া অগ্রগামী হও এবং যুদ্ধের ময়দান হইতে পৃষ্ঠ প্রদর্শনকারী না হও। কিছুক্ষণ পরেই রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকটিকে জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি কি কথা না জিজ্ঞাসা করিয়াছিলে? উত্তরে লোকটি বলিল, আমি জানিতে চাহিয়াছিলাম, যদি আমি আল্লাহর রাস্তায় (জেহাদে) নিহত হইয়া যাই, তাহা হইলে কি আমার সমস্ত গুনাহ্ মাফ হইয়া যাইবে? তখন রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবার বলিলেন, হা। ঋণ ব্যতীত সমস্ত অপরাধই মাফ হইয়া যাইবে। যদি তুমি একজন ধৈর্যধারণকারী, সওয়াব অন্বেষণকারী, শত্রুর সম্মুখে অগ্রসর হও এবং রণক্ষেত্র হইতে পলায়নকারী প্রমাণিত না হও। (এইমাত্র) হযরত জিবরাঈল (আঃ) এই কথা ('ঋণ ব্যতীত' কথাটি) আমাকে বলিয়া গিয়াছেন। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮০৬

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৮০৬। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর ইবনুল আস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: আল্লাহর রাস্তায় জান দেওয়া ঋণ ব্যতীত প্রত্যেক জিনিসকে (সর্বপ্রকারের গুনাহকে) মুছিয়া দেয়। মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮০৭

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৮০৭। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: দুই ব্যক্তির ব্যাপারে আল্লাহ্ তা'আলা হাসিবেন যাহারা একে অপরকে হত্যা করিবে এবং হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তি উভয়ে জান্নাতে প্রবেশ করিবে। একজন এই কারণে জান্নাতবাসী হইবে যে, সে আল্লাহর পথে জেহাদ করিতে যাইয়া শহীদ হইয়াছে। পরে হত্যাকারীকে আল্লাহ্ তওবার (অর্থাৎ, ঈমানের) তাওফীক দিয়াছেন। অতঃপর সেও শাহাদাত বরণ করিয়াছে। —মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮০৮

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৮০৮। হযরত সাহল ইবনে হোনায়ফ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: যে ব্যক্তি একান্ত নিষ্ঠার সাথে আল্লাহর কাছে শাহাদতের মৃত্যু কামনা করে, আল্লাহ্ তা'আলা তাহাকে শহীদদের মর্যাদা দান করেন, যদিও সে তাহার বিছানায় মৃত্যুবরণ করে। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮০৯

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৮০৯। হযরত আনাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, বারা'র কন্যা রুবাইয়্যে', যিনি হারেসা ইবনে সুরাকার মাতা হিসাবে পরিচিত (হযরত আনাস ইবনে মালেক [ রাঃ ]-এর ফুফী), একদা নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে আসিয়া বলিলেন, ইয়া নাবীয়াল্লাহ! আপনি আমাকে হারেসা সম্পর্কে কিছু বলুন। হারেসা বদর যুদ্ধে শহীদ হইয়াছেন। এক অদৃশ্য তাঁর আসিয়া তাহাকে বিধিয়াছিল। সুতরাং সে (হারেসা ) যদি জান্নাতবাসী হইয়া থাকে তবে আমি ধৈর্যধারণ করিব। অন্যথায় তাহার জন্য অঝোর নয়নে খুব কাদিব। উত্তরে হুযূর (ছাঃ) বলিলেন : হে হারেসার মা। জান্নাতে অসংখ্য বাগান আছে, আর তোমার পুত্র সেইখানে সর্বোচ্চ জান্নাতুল ফেরদাউস (যাহা বেহেশতের মধ্যে সর্বোত্তম উহা লাভ করিয়াছে। -বুখারী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮১০

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৮১০। হযরত আনাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি (বদর যুদ্ধের প্রাথমিক অবস্থা সম্পর্কে) বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁহার সাহাবী সঙ্গীগণ মদীনা হইতে রওয়ানা হইয়া মুশরিকদের পূর্বেই 'বদর' নামক স্থানে পৌঁছিয়া গেলেন। তারপর মুশরিকরা সেই স্থানে আসিল। অতঃপর রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুজাহেদীন মুসলমানদিগকে উদ্দেশ্য করিয়া বলিলেন: তোমরা এমন এক জান্নাতের রাস্তায় দণ্ডায়মান হইয়া যাও, যাহার প্রশস্ততা আসমান ও যমীনের ন্যায়। এমন সময় ওমায়র ইবনে হুমাম আনন্দে উৎফুল্ল হইয়া বলিলেন, বাহবাহ বাহবাহ। তখন রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন, তোমার বাহবাহ বাহবাহ বলার কারণ কি? তিনি বলিলেন, আল্লাহর শপথ করিয়া বলিতেছি, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। ইহার দ্বারা আমার অন্য কোন উদ্দেশ্য নাই; বরং আমি কেবলমাত্র এই আশায়ই বলিয়াছি যে, আমিও যেন উহার অধিবাসী হই। হুযুর (ছাঃ) বলিলেন, নিশ্চয়ই তুমি উহার অধিবাসী। বর্ণনাকারী আনাস (রাঃ) বলেন, তখন ওমায়র তাহার থলি হইতে কিছু খেজুর বাহির করিয়া খাইতে লাগিলেন। অতঃপর বলিয়া উঠিলেন, আমি যদি এই খেজুরগুলি খাইয়া শেষ করা পর্যন্ত বাঁচিয়া থাকি, তবে তাহা হইবে বড়ই দীর্ঘ জীবন। (কাজেই ততক্ষণ নাগাদ বাঁচিয়া থাকার অপেক্ষা অসহনীয়।) এই কথা বলিয়াই তিনি অবশিষ্ট সমস্ত খেজুর ফেলিয়া দিলেন এবং মুশরিকদের মোকাবেলায় ঝাপাইয়া পড়িলেন, অবশেষে শহীদ হইয়া গেলেন। মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮১১

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৮১১। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদা রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবাদিগকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেনঃ তোমরা কাহাকে তোমাদের মধ্যে শহীদ গণ্য করিয়া থাক? লোকেরা বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আমরা তাহাকেই শহীদ বলিয়া গণ্য করি, যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় প্রাণ ত্যাগ করে। হুযুর (ছাঃ) বলিলেন, এমতাবস্থায় আমার উম্মতের মধ্যে শহীদের সংখ্যা অতি নগণ্যই হইবে। (সুতরাং তোমরা জানিয়া রাখ।) যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়, সে ব্যক্তি শহীদ, যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় নিয়োজিত থাকিয়া স্বাভাবিক মৃত্যুতে মারা যায়, সেও শহীদ, যে ব্যক্তি প্লেগ রোগে মৃত্যুবরণ করে সেও শহীদ, আর যে ব্যক্তি কলেরা রোগে মারা যায়, সেও শহীদ। (আবার কেহ কেহ البطن -এর অর্থ নারীদের প্রসব সময় বলিয়াছেন। অর্থাৎ, প্রসবকালে কোন নারী মারা গেলে সেও শহীদ।) -মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৮১২

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৮১২। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন যে কোন বড় কিংবা ছোট সেনাদল যুদ্ধে (জেহাদে) লিপ্ত হয়, অতঃপর গনীমতের মাল-সম্পদ লইয়া সহীহ্-সালামতে বাড়ী ফিরিয়া আসিল, তাহারা তাহাদের পুরস্কারের দুই তৃতীয়াংশ ইহকালেই পাইয়া গেল। আর যে বড় বা ছোট সেনাদল গনীমতের মাল-সম্পদ হইতে বঞ্চিত থাকে এবং জান ও মালের ক্ষয়-ক্ষতির সম্মুখীন হয় কিংবা শহীদ হইয়া যায়, তাহাদের পুরস্কার (আখেরাতের জন্য) পুরাপুরি রহিয়া গেল। মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান