মা'আরিফুল হাদীস

معارف الحديث

সালাত অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ৩৭৪ টি

হাদীস নং: ৮১
সালাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কোন্ অবস্থায় জামা'আতে সালাত আদায় করা জরুরী নয়
৮১. হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: যখন তোমাদের কারো সামনে রাতের খাবার পরিবেশন করা হয়, ওদিকে (মসজিদে) সালাতের ইকামাতও শুরু হয়ে যায় তখন প্রথমে খাবার খেয়ে নেবে। খাবার শেষ না করে সালাতের জন্য তাড়াহুড়া করবে না। (বুখারী ও মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ عَبْدُاللهِ ابْنِ عُمَرَ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « إِذَا وُضِعَ عَشَاءُ أَحَدِكُمْ وَأُقِيمَتِ الصَّلاَةُ ، فَابْدَءُوا بِالعَشَاءِ وَلاَ يَعْجَلْ حَتَّى يَفْرُغَ مِنْهُ » (رواه البخارى ومسلم)
হাদীস নং: ৮২
সালাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কোন্ অবস্থায় জামা'আতে সালাত আদায় করা জরুরী নয়
৮২. হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে বলতে শুনেছি, খানা সামনে আসার পর কোন সালাত নেই এবং পেশাব পায়খানার বেগ থাকা অবস্থায়ও কোন সালাত নেই। (মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ : « لَا صَلَاةَ بِحَضْرَةِ الطَّعَامِ ، وَلَا هُوَ يُدَافِعُهُ الْأَخْبَثَانِ » (رواه مسلم)
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৮৩
সালাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কোন্ অবস্থায় জামা'আতে সালাত আদায় করা জরুরী নয়
৮৩. হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে আরকাম (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে বলতে শুনেছি: যখন সালাতের জামা'আত শুরু হয় এবং তোমাদের কারো পেশাব পায়খানার বেগ শুরু হয়, তখন তার পেশাব পায়খানা করে নেয়া উচিত।

(তিরমিযী, মুয়াত্তা ইমাম মালিক, আবূ দাউদ ও নাসায়ী কিছু শাব্দিক পার্থক্যসহ অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ الأَرْقَمِ ، قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ : إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ وَوَجَدَ أَحَدُكُمُ الخَلاَءَ فَلْيَبْدَأْ بِالخَلاَءِ. (رواه الترمذى وروى مالك وأبو داؤد والنسائى نحوه)
হাদীস নং: ৮৪
সালাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ জামা'আতে সালাত আদায়কালে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ান
সালাতের যেহেতু সামষ্টিক দিক রয়েছে তাই এতে রয়েছে জামা'আতের ব্যবস্থা। এ পর্যায়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর পথ নির্দেশ হচ্ছে এই যে, লোকেরা সালাত আদায়কালে যেন কাতার বেঁধে সোজা হয়ে দাঁড়ায়। সালাতের মত সামষ্টিক ইবাদতে সারিবদ্ধভাবে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর পদ্ধতির কোন বিকল্প নেই। তারপর রাসূলুল্লাহ ﷺ সারিগুলো পুরোপুরি সোজা করার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন, যাতে কেউ আগে-পিছে না দাঁড়ায়। প্রথমত প্রথম সারি পূরো করার পর পেছনের সারিসমূহ সোজা করে নিতে হবে।
বয়োজ্যেষ্ঠ, দায়িত্বশীল ও প্রবীণদের সামনের সারিতে ইমামের কাছাকাছি স্থানে জায়গা দিতে হবে। ছোট শিশুদের পেছনে এবং নারীদেরকে পেছনে সর্বশেষ সারিতে দাঁড় করিয়ে দিতে হবে। ইমাম সাহেব সবার সামনে মাঝামাঝি স্থানে দাঁড়াবেন। উল্লেখ্য, এসব কার্যক্রমের উদ্দেশ্য হলো, জামা'আতে মহান উদ্দেশ্য সফলতা ও পূর্ণতা বয়ে আনা এবং একে অধিক উপকারী ও প্রভাবময়ী করে তোলা। রাসূলুল্লাহ ﷺ স্বয়ং অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে এগুলো বাস্তবে করে দেখিয়েছেন, উম্মাতকে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন এবং এর সাওয়াব বাতলে দিয়ে তা কার্যে পরিণত করতে অনুপ্রাণিত করেছেন। এসব ব্যাপারে যারা বেপরোয়া ও উদাসীন তাদের তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন এবং আল্লাহর শাস্তির ভীতি প্রদর্শন করেছেন। এ ভূমিকার পর নিম্নোক্ত হাদীসসমূহ পাঠ করা যাক।

কাতার সোজা করার গুরুত্ব এবং তাকিদ
৮৪. হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: তোমাদের কাতারগুলো সোজা কর। কারণ কাতার সোজা ও সমান করা সালাতকে সুষ্ঠুভাবে আদায় করার অর্ন্তভূক্ত। (বুখারী ও মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : سَوُّوا صُفُوفَكُمْ ، فَإِنَّ تَسْوِيَةَ الصُّفُوفِ مِنْ إِقَامَةِ الصَّلاَةِ. (رواه البخارى ومسلم)
হাদীস নং: ৮৫
সালাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কাতার সোজা করার গুরুত্ব এবং তাকিদ
৮৫. হযরত নু'মান ইবনে বাশীর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাদের কাতারগুলো সোজা করতেন যেন তা দিয়ে তীর সোজা করবেন। এভাবে করতে করতে এক সময় তিনি দেখলেন, আমরা একাজটি (কিভাবে সোজা দাঁড়াতে হয়) শিখে গেছি। তারপর তিনি একদিন বেরিয়ে এসে নিজের জায়গায় দাঁড়ালেন। এমনকি তিনি তাকবীর বলতে যাচ্ছিলেন এমন সময় এক ব্যক্তিকে দেখলেন তার বুক কাতারের বাইরে বের হয়ে গেছে। তিনি বললেন: হে আল্লাহর বান্দারা কাতার সোজা করে নাও, অন্যথায় আল্লাহ্ তোমাদের চেহারার মধ্যে বিরোধীতা সৃষ্টি করে দিবেন। (মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنِ النُّعْمَانِ بْنَ بَشِيرٍ قَالَ : كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : يُسَوِّي صُفُوفَنَا حَتَّى كَأَنَّمَا يُسَوِّي بِهَا الْقِدَاحَ حَتَّى رَأَى أَنَّا قَدْ عَقَلْنَا عَنْهُ ، ثُمَّ خَرَجَ يَوْمًا فَقَامَ ، حَتَّى كَادَ يُكَبِّرُ فَرَأَى رَجُلًا بَادِيًا صَدْرُهُ مِنَ الصَّفِّ ، فَقَالَ : « عِبَادَ اللهِ لَتُسَوُّنَّ صُفُوفَكُمْ ، أَوْ لَيُخَالِفَنَّ اللهُ بَيْنَ وُجُوهِكُمْ » (رواه مسلم)
হাদীস নং: ৮৬
সালাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কাতার সোজা করার গুরুত্ব এবং তাকিদ
৮৬. হযরত আবূ মাসউদ আনসারী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ ﷺ সালাত (আদায় পূর্বক্ষণে) আমাদের কাঁধে হাত দিয়ে বলতেনঃ সোজা হয়ে দাঁড়াও, আগে-পিছে হয়ে যেও না, অন্যথায় তোমাদের মনের মধ্যে অনৈক্য দেখা দিবে। বুদ্ধিমান ও বিচক্ষণ লোকেরা যেন আমার নিকটবর্তী থাকে। তারপর তারা থাকবে যারা বুদ্ধিমত্তা ও বিচক্ষণতার দিক দিয়ে তাদের কাছাকাছি। তারপর তারা যারা তাদের কাছাকাছি। (মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ الْاَنْصَارِىِّ ، قَالَ : كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَمْسَحُ مَنَاكِبَنَا فِي الصَّلَاةِ ، وَيَقُولُ : « اسْتَوُوا ، وَلَا تَخْتَلِفُوا ، فَتَخْتَلِفَ قُلُوبُكُمْ ، لِيَلِنِي مِنْكُمْ أُولُو الْأَحْلَامِ وَالنُّهَى ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ ، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ » (رواه مسلم)
হাদীস নং: ৮৭
সালাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কাতার সোজা করার গুরুত্ব এবং তাকিদ
৮৭. হযরত নু'মান ইবনে বাশীর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন: রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন আমাদের নিয়ে সালাতে দাঁড়াতেন তখন আমাদের কাতারগুলো সোজা ও সমান করে নিতেন। এরপর আমরা সোজা হয়ে দাঁড়ালে তিনি (সালাতের) তাকবীর বলতেন। (আবূ দাউদ)
کتاب الصلوٰۃ
عَنِ النُّعْمَانِ بْنَ بَشِيرٍ ، قَالَ : « كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُسَوِّي صُفُوفَنَا إِذَا قُمْنَا لِلصَّلَاةِ فَإِذَا اسْتَوَيْنَا كَبَّرَ » (رواه ابوداؤد)
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৮৮
সালাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ সর্বাগ্রে প্রথম কাতার পুরা করা
৮৮. হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: তোমরা প্রথম কাতার পুরা কর, তারপর এর পরের সারি। যদি কোন কমতি থাকে তাহলে সেটা হবে শেষ সারিতে। (আবু দাউদ)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَنَسٍ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « أَتِمُّوا الصَّفَّ الْمُقَدَّمَ ، ثُمَّ الَّذِي يَلِيهِ ، فَمَا كَانَ مِنْ نَقْصٍ فَلْيَكُنْ فِي الصَّفِّ الْمُؤَخَّرِ » (رواه ابوداؤد)
হাদীস নং: ৮৯
সালাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ প্রথম কাতারের ফযীলত
৮৯. হযরত আবু উমামা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: প্রথম সারির ব্যক্তিদের প্রতি আল্লাহ্ তা'আলা রহমত বর্ষণ এবং ফিরিশতাকুল রহমতের দু'আ করেন। সাহাবা কিরাম বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! দ্বিতীয় সারির জন্য? তিনি বলেন: আল্লাহ্ তা'আলা প্রথম সারির ব্যক্তিদের প্রতি রহমত বর্ষণ এবং ফিরিশতাগণ রহমতের দু'আ করেন। তাঁরা আবার বললেন: হে আল্লাহর রাসূল! দ্বিতীয় সারির জন্য? তিনি বললেন: আল্লাহ্ তা'আলা প্রথম সারির ব্যক্তিদের প্রতি রহমত বর্ষণ এবং ফিরিশতাগণ রহমতের দু'আ করেন। তাঁরা আবার বললেন: হে আল্লাহর রাসূল! দ্বিতীয় সারির জন্য? তিনি বললেন: দ্বিতীয় সারির জন্যও। (আহমাদ)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَبِي أُمَامَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " إِنَّ اللهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى الصَّفِّ الْأَوَّلِ ". قَالُوا : يَا رَسُولَ اللهِ ، وَعَلَى الثَّانِي؟ قَالَ : " إِنَّ اللهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى الصَّفِّ الْأَوَّلِ ". قَالُوا : يَا رَسُولَ اللهِ ، وَعَلَى الثَّانِي؟ قَالَ : " إِنَّ اللهَ وَمَلَائِكَتِهِ يُصَلُّونَ عَلَى الصَّفِّ الْأَوَّلِ " قَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ ، وَعَلَى الثَّانِي؟ قَالَ : " وَعَلَى الثَّانِي ". (رواه احمد)
হাদীস নং: ৯০
সালাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কাতারের বিন্যাস পদ্ধতি
৯০. হযরত আবূ মালিক আশ'আরী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: আমি কি তোমাদেরকে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সালাতের বিষয়ে অবহিত করব না? এরপর তিনি বলেন, সালাত আদায়ের প্রথমে তিনি পুরুষদের, তারপর বালকদের সারি বিন্যাস করতেন। এরপর তিনি তাদের নিয়ে সালাত আদায় করতেন। তারপর তিনি বলতেন: এটাই আমার উম্মাতের সালাতের বিন্যাস পদ্ধতি।
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَبُو مَالِكٍ الْأَشْعَرِيُّ قَالَ : أَلَا أُحَدِّثُكُمْ بِصَلَاةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : « أَقَامَ الصَّلَاةَ ، وَصَفَّ الرِّجَالَ وَصَفَّ خ َلْفَهُمُ الْغِلْمَانَ ، ثُمَّ صَلَّى بِهِمْ فَذَكَرَ صَلَاتَهُ » ثُمَّ قَالَ : " هَكَذَا صَلَاةُ أُمَّتِي. (رواه ابوداؤد)
হাদীস নং: ৯১
সালাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ইমাম মাঝিমাঝি স্থানে দাঁড়াবেন
৯১. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: তোমরা ইমামকে (সারির) মাঝামাঝি স্থানে দাঁড় করাও এবং সারির মধ্যকার ফাঁকা জায়গাসমূহ বন্ধ করে নাও। (আবু দাউদ)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « تُوَسَّطُوا الْإِمَامَ وَسُدُّوا الْخَلَلَ » (رواه ابوداؤد)
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৯২
সালাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ মুক্তাদী একজন কিংবা দু'জন হলে কিভাবে দাঁড়াবে?
৯২. হযরত জাবির (রা) থেকে বর্ণিত যে, একবার রাসূলুল্লাহ ﷺ সালাতে দাঁড়ালেন। ইতোমধ্যে আমি তাঁর কাছে গেলাম এবং তাঁর বাম পাশে দাঁড়ালাম। এরপর তিনি আমার হাত ধরে নিয়ে আমাকে তাঁর পিছন দিয়ে নিয়ে এসে ডানে দাঁড় করান। তারপর জাব্বার ইবনে সাখর আসেন এবং রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর বামপাশে দাঁড়িয়ে যান। এমতাবস্থায় তিনি আমাদের উভয়ের হাত ধরে পিছনে দাঁড় করান। (মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ جَابِرٍ قَامَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِيُصَلِّىْ فَجِئْتُ حَتَّى قُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ فَأَخَذَ بِيَدِي فَأَدَارَنِي حَتَّى أَقَامَنِي عَنْ يَمِينِهِ ، ثُمَّ جَاءَ جَبَّارُ بْنُ صَخْرٍ فَقَامَ عَنْ يَسَارِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَأَخَذَ بِيَدَيْنَا جَمِيعًا ، فَدَفَعَنَا حَتَّى أَقَامَنَا خَلْفَهُ. (رواه مسلم)
হাদীস নং: ৯৩
সালাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কাতার সোজা করার গুরুত্ব এবং তাকিদ
৯৩. হযরত ওয়াবিসা ইবনে মা'বাদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ ﷺ এক ব্যক্তিকে কাতারের পেছনে একাকী সালাত আদায় করতে দেখেন। তখন তিনি তাকে পুনর্বার সালাত আদায়ের নির্দেশ দেন। (আহমাদ, তিরমিযী ও আবু দাউদ)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ وَابِصَةَ، «أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَأَى ‌رَجُلًا ‌يُصَلِّي ‌خَلْفَ ‌الصَّفِّ ‌وَحْدَهُ ‌فَأَمَرَهُ أَنْ يُعِيدَ»،- رواه الترمذي و أبوداؤد
হাদীস নং: ৯৪
সালাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ নারীদেরকে পুরুষের এমনকি বালকদের পেছনে দাঁড়াতে হবে
৯৪. হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমি এবং (আমার ভাই) ইয়াতীম আমাদের ঘরে নবী কারীম ﷺ এর পেছনে সালাত আদায় করি। আর (আমাদের মা) উম্মু সুলায়ম (রা) আমাদের পেছনে (সালাতে) দাঁড়িয়ে ছিলেন। (মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَنَسٍ قَالَ : صَلَّيْتُ اَنَا وَيَتِيْمٌ فِىْ بَيْتِنَا خَلْفَ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاُمُّ سُلَيْمٍ خَلْفَنَا (رواه مسلم)
হাদীস নং: ৯৫
সালাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ইমামত
একথা সর্বজনবিদিত যে, দীনে ইসলামে সালাত সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ শ্রেষ্ঠ আমল এবং এর মর্যাদা ঐরূপ যেমন মানবদেহে হৃৎপিণ্ডের স্থান। এজন্য সালাতের ইমামতি বিরাট মর্যাদা ও দায়িত্বশীলতার ব্যবহার এবং এটি রাসূলুল্লাহ ﷺ -এর এক প্রকার প্রতিনিধিত্বও বটে। কাজেই ইমামতির জন্য এমন লোক মনোনীত করা প্রয়োজন, যিনি অন্যান্যদের তুলনায় অপেক্ষাকৃত মর্যাদাবান ও ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন বলে বিবেচিত এবং যিনি রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর সাথে সর্বাধিক নিকট সম্পর্ক রাখেন। কারণ তিনি দীনের উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে অধিক খিদমত আঞ্জাম দিয়েছেন। যেহেতু রাসূলুল্লাহ ﷺ এর উত্তরাধিকারের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হল কুরআনুল করীম, তাই যে ব্যক্তি ঈমান আনার পর কুরআন মাজীদের সাথে গভীর সম্পর্ক স্থাপন করে, তা মুখস্থ করে অন্তরে রেখে দেয় এবং এর দাওয়াতও সমীহত বুঝে এবং নিজে তা কার্যে পরিণত করে সে-ই প্রকৃত অর্থে রাসূলুল্লাহ ﷺ -এর উত্তরাধিকারের বিরাট অংশ লাভ করেছে। সব গুণাবলীতে পিছিয়ে থাকা লোকের তুলনায় ঐ ব্যক্তি ইমামতির জন্য অধিকতর যোগ্য বিবেচিত হবেন। যদি এক্ষেত্রে সকল মুসল্লী একই মানের হন, তবে যিনি সুন্নাতের ক্ষেত্রে অধিক পারদর্শী তিনি ইমামতির জন্য অগ্রাধিকার পাবেন। যদি এক্ষেত্রেও সবাই সমান হন, তবে যিনি অধিক আল্লাহ্ ভীরু এবং উত্তম চরিত্রের অধিকারী তিনি ইমামতির জন্য অগ্রাধিকার পাবেন। যদি এ ক্ষেত্রেও সবাই সমান হন, তবে যিনি অধিক আল্লাহ্ ভীরু এবং উত্তম চরিত্রের অধিকারী তিনি ইমামতির ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবেন। এ বিষয়ে যদি সবাই একই মানের হন, হবে যিনি বয়োজ্যেষ্ঠ তিনি অগ্রাধিকার পাবেন। কারণ বয়োজ্যেষ্ঠতাও মর্যাদা নির্ণয়ের অন্যতম স্বীকৃত মাপকাঠি।
মোটকথা, ইমামতির জন্য উল্লিখিত পদ্ধতিসমূহ সুস্থ বিবেকের ও প্রজ্ঞার দাবি এবং এ-ই হচ্ছে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর শিক্ষার দিক নির্দেশ।

ইমামতির ক্ষেত্রে উপযুক্ততার বিন্যাস
৯৫. হযরত আবূ মাসউদ আনসারী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন। সেই ব্যক্তিই লোকদের ইমামতি করবে যে আল্লাহর কিতাব পাঠে সর্বাধিক জ্ঞাত। যদি কিরা'আত পাঠে সবাই সমান হয়, তবে যে আগে হিজরত করেছে সে ইমামতি করবে। যদি হিজরতের ক্ষেত্রেও সবাই সমান হয়, তবে যে বয়োজ্যেষ্ঠ সে ইমামতি করবে। তোমাদের কেউ অন্য কারো কর্তৃত্বের স্থলে ইমামতি করবে না এবং অনুমতি ছাড়া কারো ঘরে তার আসনে বসবে না। (মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ الْأَنْصَارِيِّ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « يَؤُمُّ الْقَوْمَ أَقْرَؤُهُمْ لِكِتَابِ اللهِ ، فَإِنْ كَانُوا فِي الْقِرَاءَةِ سَوَاءً ، فَأَعْلَمُهُمْ بِالسُّنَّةِ ، فَإِنْ كَانُوا فِي السُّنَّةِ سَوَاءً ، فَأَقْدَمُهُمْ هِجْرَةً ، فَإِنْ كَانُوا فِي الْهِجْرَةِ سَوَاءً ، فَأَقْدَمُهُمْ سِلْمًا ، وَلَا يَؤُمَّنَّ الرَّجُلُ الرَّجُلَ فِي سُلْطَانِهِ ، وَلَا يَقْعُدْ فِي بَيْتِهِ عَلَى تَكْرِمَتِهِ إِلَّا بِإِذْنِهِ » (رواه مسلم)
হাদীস নং: ৯৬
সালাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ নিজেদের মধ্যকার উত্তম ব্যক্তিকে ইমাম নিয়োগ করবে
৯৬. হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: তোমরা তোমাদের মধ্যকার উত্তম ব্যক্তিকে তোমাদের ইমাম নিয়োগ করবে। কারণ তিনি হবেন তোমাদের পক্ষে তোমাদের প্রতিপালকের কাছে প্রতিনিধি। (দারু কুতনী ও বায়হাকী)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ عَبْدِاللهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : اِجْعَلُوْا أَئِمَّتَكُمْ خِيَارَكُمْ فَإِنَّهُمْ وَفْدُكُمْ فِيْمَا بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ رَبِّكُمْ. (رواه الدار قطنى والبيهقى (كنز العمال)
হাদীস নং: ৯৭
সালাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ইমামের দায়িত্ব ও জবাদিহিতা
৯৭. আবদুল্লাহ্ ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: যে ব্যক্তি কোন কাওমের ইমাম নিযুক্ত হয়, সে যেন আল্লাহকে ভয় করে এবং যেন জেনে রাখে যে, সে তার দায়িত্বের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে। যদি সে তার দায়িত্ব সুচারুরূপে পালন করে, তবে তার পশ্চাদবর্তী মুসল্লীর সমপরিমাণ সাওয়াব সে লাভ করবে। কিন্তু তাদের সাওয়াব সামান্যও কম করা হবে না। তবে সালাতে যদি কোন ত্রুটি হয়, তবে তার দায় দায়িত্ব তারই। (তাবারানীর মু'জাম আওসাত গ্রন্থ সূত্র- কানযুল উম্মাল)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ عَبْدِاللهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : مَنْ أَمَّ قَوْمًا فَلْيَتَّقِ اللهَ وَلِيَعْلَمْ أَنَّهُ ضَامِنٌ مَسْؤُوْلٌ لِمَا ضَمِنَ ، وَإِنْ أَحْسَنَ كَانَ لَهُ مِنَ الْأَجْرِ مِثْلُ أَجْرِ مَنْ صَلَّى خَلْفَهُ مِنْ غَيْرِ أَنْ يَّنْقُصَ مِنْ أُجُوْرِهِمْ شَيْئًا ، وَمَا كَانَ مِنْ نَقْصٍ فَهُوَ عَلَيْهِ. (رواه الطبرانى فى الاوسط (كنز العمال)
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৯৮
সালাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ইমাম কর্তৃক মুক্তাদীর প্রতি লক্ষ্য রাখা
৯৮. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: তোমাদের কেউ যখন লোকদের সালাতের ইমামতি করে, তখন যেন সে সংক্ষেপ (বেশি দীর্ঘ না) করে। কেননা তাদের মাঝে অসুস্থ, দর্বল ও বয়োবৃদ্ধ লোক রয়েছে (যাদের জন্য দীর্ঘ সালাত কষ্টদায়ক হতে পারে)। তবে যদি কেউ একাকী সালাত আদায় করে, তখন ইচ্ছামত দীর্ঘ করতে পারে। (বুখারী ও মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « إِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ لِلنَّاسِ فَلْيُخَفِّفْ ، فَإِنَّ فِيهِمُ السَّقِيمَ وَالضَّعِيفَ ، وَالْكَبِيرَ ، وَإِذَا صَلَّى اَحَدُكُمْ فَلْيُطَوِّلْ مَا شَاءَ. (رواه البخارى ومسلم)
হাদীস নং: ৯৯
সালাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ইমাম কর্তৃক মুক্তাদীর প্রতি লক্ষ্য রাখা
৯৯. হযরত কায়স ইবনে আবু হাযিম (র) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে আবূ মাসউদ (রা) জানিয়েছেন যে, এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর শপথ! আমি অমুকের কারণে ফজরের সালাতে অনুপস্থিত থাকি (এবং বাধ্য হয়ে একাকী সালাত আদায় করি) তিনি জামা'আতে সালাতকে খুব দীর্ঘ করেন। আবূ মাসউদ (রা) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে ভাষণ দিতে যেয়ে সে দিনের ন্যায় এত বেশী ক্রুদ্ধ হতে আর কখনো দেখি নি। তিনি বললেন: তোমাদের মাঝে (ভুল পদ্ধতির কারণে আল্লাহর বান্দাদের) ঘৃণা উদ্রেককারী রয়েছে। তোমাদের মধ্যকার যে ব্যক্তি লোকদের ইমামতি করে, সে যেন সালাত সংক্ষেপ করে (অতিরিক্ত দীর্ঘ না করে)। কেননা তাদের মাঝে দুর্বল, বৃদ্ধ ও হাজতমান্দ লোকও থাকে। (বুখারী ও মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ ، عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ ، قَالَ : أَخْبَرَنِي أَبُو مَسْعُودٍ ، أَنَّ رَجُلًا ، قَالَ : وَاللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي لَأَتَأَخَّرُ عَنْ صَلاَةِ الغَدَاةِ مِنْ أَجْلِ فُلاَنٍ مِمَّا يُطِيلُ بِنَا ، فَمَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي مَوْعِظَةٍ أَشَدَّ غَضَبًا مِنْهُ يَوْمَئِذٍ ، ثُمَّ قَالَ : « إِنَّ مِنْكُمْ مُنَفِّرِينَ ، فَأَيُّكُمْ مَا صَلَّى بِالنَّاسِ فَلْيَتَجَوَّزْ ، فَإِنَّ فِيهِمُ الضَّعِيفَ وَالكَبِيرَ وَذَا الحَاجَةِ » (رواه البخارى ومسلم)
হাদীস নং: ১০০
সালাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ইমাম কর্তৃক মুক্তাদীর প্রতি লক্ষ্য রাখা
১০০. হযরত আবু কাতাদা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: আমি অনেক সময় দীর্ঘ সালাত আদায়ের ইচ্ছা নিয়ে দাঁড়াই, কিন্তু পরে শিশুর কান্না শুনে সালাত সংক্ষেপ করি। কারণ শিশু কাঁদলে মায়ের মন যে অত্যন্ত বিচলিত হয়ে পড়ে তা আমি জানি। (বুখারী)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَبِىْ قَتَادَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « إِنِّي لَأَدْخُلُ فِي الصَّلاَةِ ، فَأُرِيدُ إِطَالَتَهَا ، فَأَسْمَعُ بُكَاءَ الصَّبِيِّ ، فَأَتَجَوَّزُ مِمَّا أَعْلَمُ مِنْ شِدَّةِ وَجْدِ أُمِّهِ مِنْ بُكَائِهِ » (رواه البخارى)