মা'আরিফুল হাদীস
معارف الحديث
সলাত অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৩৫১ টি
হাদীস নং: ২৬১
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ বৃষ্টি কারণে মসজিদে ঈদের সালাত আদায় করা
২৬১. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: একদা ঈদের দিন বৃষ্টি হলে নবী কারীম ﷺ সাহাবীদের নিয়ে মসজিদে সালাত আদায় করেন। (আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، « أَنَّهُ أَصَابَهُمْ مَطَرٌ فِي يَوْمِ عِيدٍ ، فَصَلَّى بِهِمُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَاةَ الْعِيدِ فِي الْمَسْجِدِ » (رواه ابوداؤد وابن ماجه)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২৬২
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ দুই ঈদের খাবার ঈদগাহে গমনের আগে না পরে?
২৬২. হযরত বুরায়দা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: নবী কারীম ﷺ ঈদুল ফিতরের দিন কিছু না খাওয়া পর্যন্ত ঈদগাহের উদ্দেশ্যে বের হতেন না এবং ঈদুল আযহার দিন সালাত আদায় না করা পর্যন্ত কিছু খেতেন না। (তিরমিযী, ইবনে মাজাহ ও দারিমী)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ بُرَيْدَةَ قَالَ : كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لاَ يَخْرُجُ يَوْمَ الفِطْرِ حَتَّى يَطْعَمَ ، وَلاَ يَطْعَمُ يَوْمَ الأَضْحَى حَتَّى يُصَلِّيَ. (رواه الترمذى وابن ماجه والدارمى)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২৬৩
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ঈদগাহে যাতায়াতের ক্ষেত্রে রাস্তা পরিবর্তন করা
২৬৩. হযরত জাবির (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী কারীম ﷺ ঈদের দিন (বাড়ী ফেরার সময়) ভিন্ন পথ ধরে আসতেন। (বুখারী)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ جَابِرٍ قَالَ : « كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا كَانَ يَوْمُ عِيدٍ خَالَفَ الطَّرِيقَ » (رواه البخارى)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২৬৪
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ সাদাকাতুল ফিতর আদায়ের সময় এবং এর হিকমত
২৬৪. হযরত ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ প্রত্যেকের উপর রমাযানের সাদাকাতুল ফিতর ফরয করে দিয়েছেন। প্রত্যেক মুসলিম ক্রীতদাস ও স্বাধীন নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সবার উপর এক সা খেজুর অথবা এক সা যব নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আর সালাতের উদ্দেশ্যে (ঘর থেকে) বের হওয়ার পূর্বে তা আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। (বুখারী ও মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ : « فَرَضَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَكَاةَ الفِطْرِ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ ، أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ عَلَى العَبْدِ وَالحُرِّ ، وَالذَّكَرِ وَالأُنْثَى ، وَالصَّغِيرِ وَالكَبِيرِ مِنَ المُسْلِمِينَ ، وَأَمَرَ بِهَا أَنْ تُؤَدَّى قَبْلَ خُرُوجِ النَّاسِ إِلَى الصَّلاَةِ » (رواه البخارى ومسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২৬৫
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ সাদাকাতুল ফিতর আদায়ের সময় এবং এর হিকমত
২৬৫. হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ ﷺ সিয়ামকে অনর্থক কথা, অশ্লীল ব্যবহার হতে পবিত্র করার এবং দুঃস্থদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার লক্ষ্যে সাদাকাতুল ফিতর নির্ধারণ করে দিয়েছেন। (আবূ দাউদ)
کتاب الصلوٰۃ
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، قَالَ : « فَرَضَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَكَاةَ الْفِطْرِ طُهْراً لِلصَّيَامِ مِنَ اللَّغْوِ وَالرَّفَثِ ، وَطُعْمَةً لِلْمَسَاكِينِ. (رواه ابوداؤد)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২৬৬
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ঈদুল আযহার কুরবানী (পশু যবাই)
২৬৬. হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: কুরবানীর দিন বনী আদমের কাজসমূহের মধ্যে আল্লাহর নামে কুরবানী করা অপেক্ষা প্রিয় কাজ আর নেই। কিয়ামতের দিন কুরবানীর পশু, শিং, চুল এবং খুরসহ উপস্থিত হবে। আর কুরবানীর পশুর রক্ত যমীনে পড়ার পূর্বেই তা আল্লাহর কাছে গৃহীত হয়ে যায়। কাজেই তোমরা সন্তুষ্ট চিত্তে কুরবানী কর। (তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : مَا عَمِلَ ابْنُ آدَمَ مِنْ عَمَلٍ يَوْمَ النَّحْرِ أَحَبَّ إِلَى اللهِ مِنْ إِهْرَاقِ الدَّمِ ، وَإِنَّهُ لَيَأْتِي يَوْمَ القِيَامَةِ بِقُرُونِهَا وَأَشْعَارِهَا وَأَظْلاَفِهَا ، وَإِنَّ الدَّمَ لَيَقَعُ مِنَ اللهِ بِمَكَانٍ قَبْلَ أَنْ يَقَعَ مِنَ الأَرْضِ ، فَطِيبُوا بِهَا نَفْسًا. (رواه الترمذى وابن ماجه)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২৬৭
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ঈদুল আযহার কুরবানী (পশু যবাই)
২৬৭. হযরত যায়িদ ইবনে আরকাম (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করেন হে আল্লাহর রাসূল! কুরবানী কী? তিনি বললেন: এতো তোমাদের (আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয়) পিতা ইব্রাহীম (আ) এর সুন্নাত। তাঁরা বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! কুরবানী করায় আমাদের জন্য কী পুরস্কার রয়েছে? তিনি বললেন: প্রতিটি (গরু, বকরী ইত্যাদির) পশমে বিনিময়ে রয়েছে একটি করে নেকী। তাঁরা বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! পশমে? তিনি বললেন: (মেষ, দুম্বা, উট হত্যাদির) প্রতিটি পশমে রয়েছে একটি করে নেকী। (আহমাদ ও ইবনে মাজাহ)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ ، قَالَ : قَالَ أَصْحَابُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : مَا هَذِهِ الْأَضَاحِيُّ يَا رَسُولَ اللَّهِ ؟ قَالَ : « سُنَّةُ أَبِيكُمْ إِبْرَاهِيمَ » قَالُوا : فَمَا لَنَا فِيهَا يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ : « بِكُلِّ شَعَرَةٍ ، حَسَنَةٌ » قَالُوا : " فَالصُّوفُ؟ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ : « بِكُلِّ شَعَرَةٍ مِنَ الصُّوفِ ، حَسَنَةٌ » (رواه احمد وابن ماجه)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২৬৮
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ঈদুল আযহার কুরবানী (পশু যবাই)
২৬৮. হযরত ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ মদীনায় হিজরত করার পর দশ বছর অবস্থান করেন এবং প্রতি বছর কুরবানী করেন। (তিরমিযী)
کتاب الصلوٰۃ
عَنِ ابْنِ عُمَرَ ، قَالَ : أَقَامَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالمَدِينَةِ عَشْرَ سِنِينَ يُضَحِّي. (رواه الترمذى)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২৬৯
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ঈদুল আযহার কুরবানী (পশু যবাই)
২৬৯. হযরত হানাশ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: আমি হযরত আলী (রা) কে দু'টি দুম্বা কুরবানী করতে দেখে বললাম, আপনি এ কি (একটির স্থলে দু'টি কুরবানী) করছেন? তিনি বললেন: রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাকে এই মর্মে ওসীয়াত করেছেন যে, আমি যেন তাঁর নামে কুরবানী করি। সে মতে আমি তাঁর পক্ষ থেকে একটি কুরবানী করছি। (আবু দাউদ ও তিরমিযী)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ حَنَشٍ قَالَ : رَأَيْتُ عَلِيًّا يُضَحِّي بِكَبْشَيْنِ فَقُلْتُ لَهُ : مَا هَذَا؟ فَقَالَ : « إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَوْصَانِي أَنْ أُضَحِّيَ عَنْهُ فَأَنَا أُضَحِّي عَنْهُ » (رواه ابوداؤد وروى الترمذى نحوه)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২৭০
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কুরবানী করার নিয়ম
২৭০. হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ নিজ হাতে সাদা-কালো রং মিশ্রিত দুই শিং বিশিষ্ট দু'টি দুম্বা যবাই করেন এবং তাতে 'বিসমিল্লাহ্ ও আল্লাহু আকবার' পাঠ করেন। আমি দেখলাম, তিনি দুম্বা দু'টির পার্শ্বদেশে পা রেখে বলছেন: "বিসমিল্লাহি ওয়া আল্লাহু আকবার" (আল্লাহর নামে, সেই আল্লাহ্ মহান। (বুখারী ও মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَنَسٍ قَالَ : ضَحَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِكَبْشَيْنِ أَمْلَحَيْنِ أَقْرَنَيْنِ ذَبَحَهُمَا بِيَدِهِ وَسَمَّى وَكَبَّرَ ، وَوَضَعَ رِجْلَهُ عَلَى صِفَاحِهِمَا وَيَقُوْلُ بِسْمِ اللهِ اَللهُ اَكْبَر. (رواه البخارى ومسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২৭১
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কুরবানী করার নিয়ম
২৭১. হযরত জাবির (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ ﷺ কুরবানীর দিন সাদা-কালো রং মিশ্রিত, দুই শিং বিশিষ্ট দু'টি খাসি দুম্বা যবাই করেন। তারপর যখন তিনি এ দু'টিকে কিবলামুখি করেন তখন এই দু'আ পাঠ করেন-
إِنِّي وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضَ عَلَى مِلَّةِ إِبْرَاهِيمَ حَنِيفًا وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ، إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ، لَا شَرِيكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا مِنَ الْمُسْلِمِينَ، اللَّهُمَّ مِنْكَ وَلَكَ، عَنْ مُحَمَّدٍ وَأُمَّتِهِ، بِاسْمِ اللهِ وَاللهُ أَكْبَرُ، ثُمَّ ذَبَحَ.
"আমি একনিষ্ঠভাবে তাঁর দিকে মুখ করছি যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। আর আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই। (৬, সূরা আন'আম : ৭৯)।
বলুন, আমার সালাত, আমার ইবাদাত, আমার জীবন ও আমার মরণ জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহরই উদ্দেশ্যে (৬, আন'আম : ১৬২) তাঁর কোন অংশীদার নেই। আমি এ (সাক্ষ্য দানের) জন্যই আদিষ্ট হয়েছি। আর আমি মুসলমানদেরই একজন। হে আল্লাহ্! তোমার পক্ষ থেকে পাওয়া বস্তু তোমার জন্য মুহাম্মাদ ﷺ ও তাঁর উম্মাতের পক্ষ থেকে পেশ করছি। আল্লাহর নামে সেই আল্লাহ্ মহান।" তারপর তিনি যবাই করেন, (আহমাদ, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ ও দারিমী)
আহমাদ, আবু দাউদ ও তিরমিযীর অন্য বর্ণনায় আছে, তা নিজ হাতে যবাই করেন এবং বলেন, আল্লাহর নামে যে আল্লাহ্ মহান। হে আল্লাহ্! এতো আমার পক্ষ থেকে এবং আমার সে সব উম্মাতের পক্ষ থেকে যাদের কুরবানী করার সামর্থ্য নেই।
إِنِّي وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضَ عَلَى مِلَّةِ إِبْرَاهِيمَ حَنِيفًا وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ، إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ، لَا شَرِيكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا مِنَ الْمُسْلِمِينَ، اللَّهُمَّ مِنْكَ وَلَكَ، عَنْ مُحَمَّدٍ وَأُمَّتِهِ، بِاسْمِ اللهِ وَاللهُ أَكْبَرُ، ثُمَّ ذَبَحَ.
"আমি একনিষ্ঠভাবে তাঁর দিকে মুখ করছি যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। আর আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই। (৬, সূরা আন'আম : ৭৯)।
বলুন, আমার সালাত, আমার ইবাদাত, আমার জীবন ও আমার মরণ জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহরই উদ্দেশ্যে (৬, আন'আম : ১৬২) তাঁর কোন অংশীদার নেই। আমি এ (সাক্ষ্য দানের) জন্যই আদিষ্ট হয়েছি। আর আমি মুসলমানদেরই একজন। হে আল্লাহ্! তোমার পক্ষ থেকে পাওয়া বস্তু তোমার জন্য মুহাম্মাদ ﷺ ও তাঁর উম্মাতের পক্ষ থেকে পেশ করছি। আল্লাহর নামে সেই আল্লাহ্ মহান।" তারপর তিনি যবাই করেন, (আহমাদ, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ ও দারিমী)
আহমাদ, আবু দাউদ ও তিরমিযীর অন্য বর্ণনায় আছে, তা নিজ হাতে যবাই করেন এবং বলেন, আল্লাহর নামে যে আল্লাহ্ মহান। হে আল্লাহ্! এতো আমার পক্ষ থেকে এবং আমার সে সব উম্মাতের পক্ষ থেকে যাদের কুরবানী করার সামর্থ্য নেই।
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ جَابِرٍ ذَبَحَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ الذَّبْحِ كَبْشَيْنِ أَقْرَنَيْنِ أَمْلَحَيْنِ مُوجَأَيْنِ ، فَلَمَّا وَجَّهَهُمَا قَالَ : « إِنِّي وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضَ عَلَى مِلَّةِ إِبْرَاهِيمَ حَنِيفًا ، وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ ، إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ لَا شَرِيكَ لَهُ ، وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا مِنَ الْمُسْلِمِينَ ، اللَّهُمَّ مِنْكَ وَلَكَ ، وَعَنْ مُحَمَّدٍ وَأُمَّتِهِ بِاسْمِ اللَّهِ ، وَاللَّهُ أَكْبَرُ » ثُمَّ ذَبَحَ. (رواه احمد وابوداؤد وابن ماجه والدارمى)
وفى روايته لاحمد وابى داؤد والترمذى ذَبَحَ بِيَدِهِ وَقَالَ بِسْمِ اللهِ ، اللهُ أَكْبَرُ هَذَا عَنِّىْ وَعَمَّنْ لَمْ يُضَحِّ مِنْ أُمَّتِىْ.
وفى روايته لاحمد وابى داؤد والترمذى ذَبَحَ بِيَدِهِ وَقَالَ بِسْمِ اللهِ ، اللهُ أَكْبَرُ هَذَا عَنِّىْ وَعَمَّنْ لَمْ يُضَحِّ مِنْ أُمَّتِىْ.
তাহকীক:
হাদীস নং: ২৭২
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কুরবানীর পশু সম্পর্কে দিক নির্দেশনা
২৭২. হযরত বারা ইবনে আযিব (রা) থেকে বর্ণিত যে, কুরবানী করার ক্ষেত্রে কোন ধরনের পশু বাদ দেওয়া উচিত, সে বিষয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ কে জিজ্ঞেস করা হয়। তিনি নিজের হাত দ্বারা ইশারা করে বললেন: চার রকমের (ত্রুটিযুক্ত) পশু বাদ দেওয়া উচিত। তা হল, খোড়া, যার খোঁড়ানো সুস্পষ্ট, অন্ধ, যার অন্ধত্ব সুস্পষ্ট, রুগ্ন, যা রুগ্নতা সুস্পষ্ট এবং দুর্বল যার হাড়ের মজ্জা শুকিয়ে গেছে। (মালিক, আহমাদ, তিরমিযী, আবু দাউদ, নাসায়ী, ইবনে মাজাহ ও দারিমী)
کتاب الصلوٰۃ
عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُئِلَ : مَاذَا يُتَّقَى مِنَ الضَّحَايَا؟ فَاَشَارَ بِيَدِهِ فَقَالَ : "أَرْبَعٌ الْعَرْجَاءُ الْبَيِّنُ ظَلْعُهَا ، وَالْعَوْرَاءُ الْبَيِّنُ عَوَرُهَا ، وَالْمَرِيضَةُ الْبَيِّنُ مَرَضُهَا ، وَالْعَجْفَاءُ الَّتِي لَا تُنْقِي". (رواه مالك واحمد والترمذى وابوداؤد والنسائى وابن ماجة والدارمى)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২৭৩
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কুরবানীর পশু সম্পর্কে দিক নির্দেশনা
২৭৩. হযরত আলী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ ভাঙ্গা শিং ও ছেড়া কান বিশিষ্ট পশু (কুরবানীর উদ্দেশ্যে) যবাই করতে নিষেধ করেছেন। (ইবনে মাজাহ)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ عَلِيٍّ ، قَالَ « نَهَى أَنْ يُضَحَّى بِأَعْضَبِ الْقَرْنِ ، وَالْأُذُنِ » (رواه ابن ماجه)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২৭৪
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ বড় পশু কয়ভাগে কুরবানী করা যাবে?
২৭৪. হযরত জাবির (রা) থেকে বর্ণিত। নবী কারীম ﷺ বলেছেন: প্রতিটি গরু সাতজনের এবং প্রতিটি উট সাতজনের পক্ষ থেকে কুরবানী করা যায়। (মুসলিম ও আবু দাউদ শব্দমালার আবু দাউদের)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ جَابِرٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : « الْبَقَرَةُ عَنْ سَبْعَةٍ ، وَالْجَزُورُ عَنْ سَبْعَةٍ » (رواه مسلم واب و داؤد واللفظ له)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২৭৫
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ঈদের সালাতের পরেই কুরবানী করার সময়
২৭৫. হযরত বারা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী কারীম ﷺ কুরবানীর দিন আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। তিনি বলেন: আজকের এই দিনে আমরা সর্বপ্রথম যে কাজটি করব তাহল সালাত আদায়। এরপর ফিরে গিয়ে কুরবানী করব। যে ব্যক্তি এভাবে করবে সে আমাদের সুন্নাতকে অনুরসণ করল (তার কুরবানী আদায় হবে)। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি আমাদের সালাত আদায়ের পূর্বে কুরবানী করল সে তার পরিবারের জন্য অগ্রিম গোশত খাওয়ার জন্য বকরী যবাই করল। তা কিছুতেই কুরবানী নয়। (বুখারী ও মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنِ البَرَاءِ ، قَالَ : خَطَبَنَا النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ النَّحْرِ فَقَالَ : « إِنَّ أَوَّلَ مَا نَبْدَأُ بِهِ فِي يَوْمِنَا هَذَا نُصَلِّي ، ثُمَّ نَرْجِعُ فَنَنْحَرُ ، فَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ ، فَقَدْ أَصَابَ سُنَّتَنَا ، وَمَنْ ذَبَحَ ، فَإِنَّمَا هُوَ شَاةُ لَحْمٍ عَجَّلَه لِأَهْلِهِ لَيْسَ مِنَ النُّسُكِ فِي شَيْءٍ » (رواه البخارى ومسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২৭৬
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ঈদের সালাতের পরেই কুরবানী করার সময়
২৭৬. হযরত জুন্দুব ইবনে আবদুল্লাহ্ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: আমি একবার কুরবানীর দিন রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। সালাত শেষ করার সাথে সাথেই তাঁর দৃষ্টি কুরবানীর গোশতের উপর পড়ল। এই কুরবানীর পশু সালাত আদায়ের পূর্বেই যবাই করা হয়েছিল। সে মতে তিনি বললেন: যে সব লোক সালাত আদায়ের পূর্বে কুরবানী করে তাদের (সালাতের পরে) আরেকটি কুরবানী করা উচিত (কেননা সালাতের পূর্বে কুরবানী হয়না)। (বুখারী ও মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ جُنْدَبُ بْنِ عَبْدِاللهِ ، قَالَ : شَهِدْتُ الْأَضْحَى يَوْمَ النَّحْرِ مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَلَمْ يَعْدُ أَنْ صَلَّى وَفَرَغَ مِنْ صَلَاتِهِ وَسَلَّمَ ، فَإِذَا هُوَ يَرَى لَحْمَ أَضَاحِيَّ قَدْ ذُبِحَتْ قَبْلَ أَنْ يَفْرُغَ مِنْ صَلَاتِهِ ، فَقَالَ : « مَنْ كَانَ ذَبَحَ قَبْلَ أَنْ يُصَلِّيَ أَوْ نُصَلِّيَ فَلْيَذْبَحْ مَكَانَهَا أُخْرَى. (رواه البخارى ومسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২৭৭
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহ্ তা'আলা সপ্তাহের সাত দিনের মধ্যে যেমন জুমু'আর দিনকে, বছরের বার মাসের মধ্যে রমযান মাসকে, তারপর রমযানের তিন দশকের মধ্যে শেষ দশদিনকে বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত করেছেন। তেমনি ১০ই যিলহাজ্জকেও দুর্লভসম্মানে ভূষিত করেছেন। আর তাই এই দশদিনের মধ্যে হজ্জের দিনকে রাখা হয়েছে। মোটকথা এই দিনগুলোতে রয়েছে আল্লাহ্ তা'আলার বিশেষ অনুগ্রহ ও রহমত। এসব দিনের সৎকাজ আল্লাহর কাছে অতি মূল্যবান।
২৭৭. হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন: ১০ই যিলহাজ্জ তারিখের আমলের চেয়ে কোন প্রিয় আমল আল্লাহর কাছে আর নেই। (বুখারী)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « مَا مِنْ أَيَّامٍ العَمَلُ الصَّالِحُ فِيهِنَّ أَحَبُّ إِلَى اللَّهِ مِنْ هَذِهِ الأَيَّامِ العَشْرِ » (رواه البخارى)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২৭৮
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ১০ ই যিলহজ্জের ফযীলত ও সম্মান
২৭৮. হযরত উম্মু সালমা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: যখন যিলহজ্জের প্রথম দশদিন শুরু হয় এবং তোমাদের কেউ কুরবানী করতে চায় সে যেন কুরবানী না করা পর্যন্ত চুল এবং নখ না কাটে। (মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « إِذَا دَخَلَ الْعَشْرُ وَاَرَادَ بَعْضُكُمْ أَنْ يُضَحِّيَ ، فَلَا يَأْخُذَنَّ شَعْرًا ، وَلَا يَقْلِمَنَّ ظُفُرًا » (رواه مسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২৭৯
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ সূর্য গ্রহণের সালাত এবং বৃষ্টি প্রার্থনার সালাত
জুমু'আ ও দুই ঈদের যেমন সামষ্টিক সালাতের দিন তারিখ সুনির্ধারিত, এছাড়া আরো দুই সালাত সামষ্টিকভাবে আদায় করা হয়। তবে তার দিনক্ষণ তারিখ নির্ধারিত নেই। এর মধ্যে একটি সূর্য গ্রহণের সালাত এবং অপরটি হল বৃষ্টি প্রার্থনার সালাত (সালাতুল ইস্তিসকা)
সূর্য গ্রহণের সালাত
সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ মূলতঃ আল্লাহ্ তা'আলার অসীম কুদরতের নিদর্শনসমূহের অন্যতম। যখন চন্দ্র অথবা সূর্যগ্রহণ হয় তখন অত্যন্ত বিনয় ও নম্রতার সাথে মহা মহিমান্বিত আল্লাহর আসনে মাথা ঝুঁকিয়ে তাঁর দয়া ও করুণা প্রার্থনা করা উচিত। উল্লেখ্য, নবী নন্দন হযরত ইব্রাহীমের বয়স যখন দেড় বছর তখন তিনি ইন্তিকাল১ করেন' এবং ঐদিন সূর্যগ্রহণও লেগেছিল। জাহিলিয়া যুগের একটি বদ্ধমূল ধারণা ছিল যে, কোন মহান ব্যক্তির তিরোধান জনিত কারণেই মূলতঃ সূর্যগ্রহণ হয়। যেন তার মৃত্যুতে সূর্যকালো চাদর গায়ে শোকের আচ্ছন্ন হয়। হযরত ইব্রাহীমের ইন্তিকালের দিন সূর্যগ্রহণ হওয়ায় মানুষ উক্ত ভুল ধারণার শিকার হতে পারত। বরং কোন কোন বর্ণনায় আছে, কোন কোন মানুষের মুখে একথা উচ্চারিত হয় যে, তাঁর মৃত্যুতেই সূর্যগ্রহণ হয়েছে। তাই সূর্যগ্রহণের সময় রাসূলুল্লাহ ﷺ ভীষণভাবে শংকিত হয়ে পড়েন এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যে জামা'আত সহ দুই রাক'আত সালাত আদায় করেন। এ সালাত ছিল ভিন্ন ধর্মী। তিনি এতে দীর্ঘ কিরা'আত পাঠ করেন এবং কিরা'আতের মধ্যে কখনো কখনো তন্ময় হয়ে ঝুঁকে পড়তেন। আবার সোজা হয়ে কিরা'আত পাঠ করতেন। একইভাবে এ সালাতে তিনি দীর্ঘ রুকু সিজদা করেন এবং অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে সালাতে আল্লাহর দরবারে কাতর প্রার্থনা করেন। তারপর লোকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। কারো মৃত্যু জনিত কারণে চন্দ্র-সূর্যের গ্রহণ হওয়ার বদ্ধমূল ধারণা চিরতে বিদূরিত করেন। তিনি বলেন, এ হল, জাহিলিয়া যুগের চিন্তা-চেতনারই ফল যার কোন ভিত্তি নেই। এ হচ্ছে মূলতঃ মহান আল্লাহ্ তা'আলার অসীম কুদ্রতেরই বহিঃপ্রকাশ মাত্র। তাই কখনো সূর্য কিংবা চন্দ্রগ্রহণ হলে বিনয় নম্রতার সাথে আল্লাহ্ অভিমুখী হওয়া, তাঁর ইবাদাত করা এবং দু'আ করা উচিত। এই দীর্ঘ ভূমিকার পর সূর্য গ্রহণের সালাতের সাথে সংশ্লিষ্ট কতিপয় হাদীস পাঠ করা যেতে পারে।
টিকা: ১. নবীনন্দন হযরত ইব্রাহীম (রা) দশম হিজরীতে ইন্তিকাল করেন এ বিষয় বিপুল সংখ্যক হাদীস বিশারদ ঐকমত্য পোষণ করেন। কারো কারো মতে, তিনি রাবীউল আউওয়াল মাসে ইন্তিকাল করেন। বিগত শতাব্দীর খ্যাতিমান মনীষী মরহুম মাহমূদ পাশা এ বিষয়ে ফরাসী ভাষায় একটি নিবন্ধ লিখেছেন যার আরবী তরজমা ১৩০৫ হিজরীতে মিসরে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি উক্ত সূর্যগ্রহণের তারিখ দশম হিজরীর ২৯ শে শাওয়াল বলে উল্লেখ করেছেন। সম্ভবত ঐদিন সকাল সাড়ে আটটায় সূর্যগ্রহণ লেখেছিল।
জুমু'আ ও দুই ঈদের যেমন সামষ্টিক সালাতের দিন তারিখ সুনির্ধারিত, এছাড়া আরো দুই সালাত সামষ্টিকভাবে আদায় করা হয়। তবে তার দিনক্ষণ তারিখ নির্ধারিত নেই। এর মধ্যে একটি সূর্য গ্রহণের সালাত এবং অপরটি হল বৃষ্টি প্রার্থনার সালাত (সালাতুল ইস্তিসকা)
সূর্য গ্রহণের সালাত
সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ মূলতঃ আল্লাহ্ তা'আলার অসীম কুদরতের নিদর্শনসমূহের অন্যতম। যখন চন্দ্র অথবা সূর্যগ্রহণ হয় তখন অত্যন্ত বিনয় ও নম্রতার সাথে মহা মহিমান্বিত আল্লাহর আসনে মাথা ঝুঁকিয়ে তাঁর দয়া ও করুণা প্রার্থনা করা উচিত। উল্লেখ্য, নবী নন্দন হযরত ইব্রাহীমের বয়স যখন দেড় বছর তখন তিনি ইন্তিকাল১ করেন' এবং ঐদিন সূর্যগ্রহণও লেগেছিল। জাহিলিয়া যুগের একটি বদ্ধমূল ধারণা ছিল যে, কোন মহান ব্যক্তির তিরোধান জনিত কারণেই মূলতঃ সূর্যগ্রহণ হয়। যেন তার মৃত্যুতে সূর্যকালো চাদর গায়ে শোকের আচ্ছন্ন হয়। হযরত ইব্রাহীমের ইন্তিকালের দিন সূর্যগ্রহণ হওয়ায় মানুষ উক্ত ভুল ধারণার শিকার হতে পারত। বরং কোন কোন বর্ণনায় আছে, কোন কোন মানুষের মুখে একথা উচ্চারিত হয় যে, তাঁর মৃত্যুতেই সূর্যগ্রহণ হয়েছে। তাই সূর্যগ্রহণের সময় রাসূলুল্লাহ ﷺ ভীষণভাবে শংকিত হয়ে পড়েন এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যে জামা'আত সহ দুই রাক'আত সালাত আদায় করেন। এ সালাত ছিল ভিন্ন ধর্মী। তিনি এতে দীর্ঘ কিরা'আত পাঠ করেন এবং কিরা'আতের মধ্যে কখনো কখনো তন্ময় হয়ে ঝুঁকে পড়তেন। আবার সোজা হয়ে কিরা'আত পাঠ করতেন। একইভাবে এ সালাতে তিনি দীর্ঘ রুকু সিজদা করেন এবং অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে সালাতে আল্লাহর দরবারে কাতর প্রার্থনা করেন। তারপর লোকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। কারো মৃত্যু জনিত কারণে চন্দ্র-সূর্যের গ্রহণ হওয়ার বদ্ধমূল ধারণা চিরতে বিদূরিত করেন। তিনি বলেন, এ হল, জাহিলিয়া যুগের চিন্তা-চেতনারই ফল যার কোন ভিত্তি নেই। এ হচ্ছে মূলতঃ মহান আল্লাহ্ তা'আলার অসীম কুদ্রতেরই বহিঃপ্রকাশ মাত্র। তাই কখনো সূর্য কিংবা চন্দ্রগ্রহণ হলে বিনয় নম্রতার সাথে আল্লাহ্ অভিমুখী হওয়া, তাঁর ইবাদাত করা এবং দু'আ করা উচিত। এই দীর্ঘ ভূমিকার পর সূর্য গ্রহণের সালাতের সাথে সংশ্লিষ্ট কতিপয় হাদীস পাঠ করা যেতে পারে।
টিকা: ১. নবীনন্দন হযরত ইব্রাহীম (রা) দশম হিজরীতে ইন্তিকাল করেন এ বিষয় বিপুল সংখ্যক হাদীস বিশারদ ঐকমত্য পোষণ করেন। কারো কারো মতে, তিনি রাবীউল আউওয়াল মাসে ইন্তিকাল করেন। বিগত শতাব্দীর খ্যাতিমান মনীষী মরহুম মাহমূদ পাশা এ বিষয়ে ফরাসী ভাষায় একটি নিবন্ধ লিখেছেন যার আরবী তরজমা ১৩০৫ হিজরীতে মিসরে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি উক্ত সূর্যগ্রহণের তারিখ দশম হিজরীর ২৯ শে শাওয়াল বলে উল্লেখ করেছেন। সম্ভবত ঐদিন সকাল সাড়ে আটটায় সূর্যগ্রহণ লেখেছিল।
২৭৯. হযরত মুগীরা ইবনে শু'বা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ -এর যুগে তাঁর ছেলে ইব্রাহীমের ইন্তিকালের দিন সূর্যগ্রহণ হয়েছিল। তখন লোকেরা বলাবলি শুরু করল যে, ইব্রাহীমের ইন্তিকালের কারণে সূর্যগ্রহণ হয়েছে। তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন: কারো মৃত্যু জনিত কারণে চন্দ্র ও সূর্য গ্রহণ হয় না। কাজেই তোমরা গ্রহণ দেখতে পেলে সালাত আদায় করবে এবং আল্লাহর কাছে দু'আ করবে। (বুখারী ও মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنِ المُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ ، قَالَ : كَسَفَتِ الشَّمْسُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ مَاتَ إِبْرَاهِيمُ ، فَقَالَ النَّاسُ : كَسَفَتِ الشَّمْسُ لِمَوْتِ إِبْرَاهِيمَ ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « إِنَّ الشَّمْسَ وَالقَمَرَ لاَ يَنْكَسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلاَ لِحَيَاتِهِ ، فَإِذَا رَأَيْتُمْ فَصَلُّوا ، وَادْعُوا اللَّهَ » (رواه البخارى ومسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২৮০
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ সূর্য গ্রহণের সালাত এবং বৃষ্টি প্রার্থনার সালাত
২৮০. হযরত আবূ মূসা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: একবার সূর্যগ্রহণ হলো। নবী কারীম ﷺ ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং কিয়ামত হয়ে যাওয়ার আশংকা করতে থাকেন। এরপর তিনি মসজিদে আসেন এবং এর আগে আমি তাঁকে যেমন করতে দেখেছি, তার চাইতে দীর্ঘ সময় দরে কিয়াম ও রুকু-সিজদাসহ সালাত আদায় করেন। তিনি আরো বলেন, এগুলো হলো নিদর্শন যা আল্লাহ্ পাঠিয়ে থাকেন, তা কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে সতর্ক করেন। সুতরাং যখনই তোমরা এর কিছু দেখতে পাবে, তখনই আল্লাহর যিকর দু'আ এবং ইস্তিগফারের দিকে ধাবিত হবে। (বুখারী ও মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَبِي مُوسَى ، قَالَ : خَسَفَتِ الشَّمْسُ ، فَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَزِعًا ، يَخْشَى أَنْ تَكُونَ السَّاعَةُ ، فَأَتَى المَسْجِدَ ، فَصَلَّى بِأَطْوَلِ قِيَامٍ وَرُكُوعٍ وَسُجُودٍ رَأَيْتُهُ قَطُّ يَفْعَلُهُ ، وَقَالَ : « هَذِهِ الآيَاتُ الَّتِي يُرْسِلُ اللَّهُ ، لاَ تَكُونُ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلاَ لِحَيَاتِهِ ، وَلَكِنْ يُخَوِّفُ اللَّهُ بِهِ عِبَادَهُ ، فَإِذَا رَأَيْتُمْ شَيْئًا مِنْ ذَلِكَ ، فَافْزَعُوا إِلَى ذِكْرِهِ وَدُعَائِهِ وَاسْتِغْفَارِهِ » (رواه البخارى ومسلم)
তাহকীক: