মা'আরিফুল হাদীস
معارف الحديث
ঈমান অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১৪০ টি
হাদীস নং: ১
ঈমান অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর জন্য যা করা হয় একমাত্র তাই গ্রহণযোগ্য এবং নিয়তের উপর আমল
১. হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, নিয়তের উপরই আমল। নিয়ত অনুসারেই মানুষ ফল পেয়ে থাকে। তাই আল্লাহ এবং রাসূলের জন্য যে হিজরত করল তার হিজরত আল্লাহ ও রাসূলের জন্যই এবং যে দুনিয়া লাভ বা কোন মহিলাকে বিয়ে করার জন্য হিজরত করল, বস্তুতঃ তার হিজরত সে জন্যই হল। -বুখারী, মুসলিম
کتاب الایمان
عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يَقُوْلُ «إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ، وَإِنَّمَا لِامْرِئٍ مَا نَوَى، فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ فَهِجْرَتُهُ إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ، وَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إِلَى دُنْيَا يُصِيبُهَا، أَوِ امْرَأَةٍ يَتَزَوَّجُهَا، فَهِجْرَتُهُ إِلَى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ ۔
তাহকীক:
হাদীস নং: ২
ঈমান অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ইসলাম, ঈমান ও ইহসান (উম্মুল আহাদীস বা হাদীসে জিবরাঈল)
২. হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রা) বলেনঃ একদিন আমরা রাসূল (ﷺ)-এর খেদমতে হাযির ছিলাম। হঠাৎ এক ব্যক্তি আমাদের সামনে হাযির হলেন, তাঁর পোশাক ধবধবে সাদা ও মাথার চুল খুব কালো। তার শরীরের কোথাও সফরের চিহ্নমাত্র ছিল না, অথচ আমরা কেউ তাকে চিনতে পারছিলাম না। এমন কি তিনি নবী (ﷺ)-এর পাশে বসে গেলেন এবং তাঁর হাঁটু নবী (ﷺ)-এর হাঁটুর সাথে লাগিয়ে দিলেন ও তাঁর হাত তাঁর নিজের উরুর উপর রেখে বললেনঃ হে মুহাম্মদ (ﷺ), আমাকে ইসলাম সম্পর্কে কিছু বলুন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, ইসলাম হল, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ (ﷺ) তাঁর রাসূল বলে সাক্ষ্য দান করা, নামায কায়েম করা, যাকাত আদায় করা, রমযানের রোযা রাখা এবং সামর্থ্য থাকলে আল্লাহর ঘরের হজ্জ করা। তিনি (প্রশ্নকারী) বললেন, আপনি সত্য বলেছেন। ওমর (রা) বলেন, আমরা অবাক হলাম যে, আগন্তুক তাঁকে প্রশ্নও করছেন আবার তাঁর (জবাবের) সত্যায়নও করছেন।
অতঃপর তিনি বললেন, আমাকে ঈমান সম্পর্কে কিছু বলুন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, ঈমান হল আল্লাহ ও তাঁর সমস্ত ফিরিশতা, কিতাব, রাসূল, আখিরাত এবং তাকদীরের ভাল-মন্দের উপর বিশ্বাস স্থাপন করা। তিনি (প্রশ্নকারী) বললেন, আপনি সত্য বলেছেন। অতঃপর বললেন, ইহসান সম্পর্কে আমাকে কিছু বলুন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ আল্লাহর ইবাদাত এমনভাবে করা যেন তুমি তাঁকে দেখছ। তুমি তাঁকে না দেখতে পেলেও তিনি তোমাকে দেখছেন। তিনি (প্রশ্নকারী) বললেন, আমাকে শেষ সময় (কিয়ামত) সম্পর্কে কিছু বলুন। রাসূল (ﷺ) বললেনঃ জবাব দানকারী প্রশ্নকারীর চেয়ে বেশী কিছু জানেন না। তিনি (প্রশ্নকারী) বললেনঃ আমাকে তার কিছু নিদর্শন বলুন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ (নিদর্শন হল) দাসী তাঁর মুনিবকে জন্ম দান করবে এবং তুমি দেখবে যে জামা জুতা শূন্য রিক্ত হস্ত রাখালেরা প্রতিযোগিতামূলকভাবে বিরাট বিরাট ইমারত তৈরী করবে।
ওমর (রা) বলেনঃ তিনি (প্রশ্নকারী) চলে গেলেন। আমি কিছুক্ষণ বসে থাকলাম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ হে ওমর! তুমি কি বুঝতে পেরেছ প্রশ্নকারী কে? আমি বললাম : আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। নবী (ﷺ) বললেন, তিনি জিবরাঈল। তোমাদেরকে তোমাদের দীন সম্পর্কে শিক্ষা দানের জন্য এসেছিলেন।মুসলিম
অতঃপর তিনি বললেন, আমাকে ঈমান সম্পর্কে কিছু বলুন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, ঈমান হল আল্লাহ ও তাঁর সমস্ত ফিরিশতা, কিতাব, রাসূল, আখিরাত এবং তাকদীরের ভাল-মন্দের উপর বিশ্বাস স্থাপন করা। তিনি (প্রশ্নকারী) বললেন, আপনি সত্য বলেছেন। অতঃপর বললেন, ইহসান সম্পর্কে আমাকে কিছু বলুন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ আল্লাহর ইবাদাত এমনভাবে করা যেন তুমি তাঁকে দেখছ। তুমি তাঁকে না দেখতে পেলেও তিনি তোমাকে দেখছেন। তিনি (প্রশ্নকারী) বললেন, আমাকে শেষ সময় (কিয়ামত) সম্পর্কে কিছু বলুন। রাসূল (ﷺ) বললেনঃ জবাব দানকারী প্রশ্নকারীর চেয়ে বেশী কিছু জানেন না। তিনি (প্রশ্নকারী) বললেনঃ আমাকে তার কিছু নিদর্শন বলুন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ (নিদর্শন হল) দাসী তাঁর মুনিবকে জন্ম দান করবে এবং তুমি দেখবে যে জামা জুতা শূন্য রিক্ত হস্ত রাখালেরা প্রতিযোগিতামূলকভাবে বিরাট বিরাট ইমারত তৈরী করবে।
ওমর (রা) বলেনঃ তিনি (প্রশ্নকারী) চলে গেলেন। আমি কিছুক্ষণ বসে থাকলাম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ হে ওমর! তুমি কি বুঝতে পেরেছ প্রশ্নকারী কে? আমি বললাম : আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। নবী (ﷺ) বললেন, তিনি জিবরাঈল। তোমাদেরকে তোমাদের দীন সম্পর্কে শিক্ষা দানের জন্য এসেছিলেন।মুসলিম
کتاب الایمان
أَبِي عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ قَالَ: بَيْنَمَا نَحْنُ عِنْدَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ يَوْمٍ، إِذْ طَلَعَ عَلَيْنَا رَجُلٌ شَدِيدُ بَيَاضِ الثِّيَابِ، شَدِيدُ سَوَادِ الشَّعَرِ، لَا يُرَى عَلَيْهِ أَثَرُ السَّفَرِ، وَلَا يَعْرِفُهُ مِنَّا أَحَدٌ، حَتَّى جَلَسَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَسْنَدَ رُكْبَتَيْهِ إِلَى رُكْبَتَيْهِ، وَوَضَعَ كَفَّيْهِ عَلَى فَخِذَيْهِ، وَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ أَخْبِرْنِي عَنِ الْإِسْلَامِ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْإِسْلَامُ أَنْ تَشْهَدَ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَتُقِيمَ الصَّلَاةَ، وَتُؤْتِيَ الزَّكَاةَ، وَتَصُومَ رَمَضَانَ، وَتَحُجَّ الْبَيْتَ إِنِ اسْتَطَعْتَ إِلَيْهِ سَبِيلًا»، قَالَ: صَدَقْتَ، قَالَ: فَعَجِبْنَا لَهُ يَسْأَلُهُ، وَيُصَدِّقُهُ، قَالَ: فَأَخْبِرْنِي عَنِ الْإِيمَانِ، قَالَ: «أَنْ تُؤْمِنَ بِاللهِ، وَمَلَائِكَتِهِ، وَكُتُبِهِ، وَرُسُلِهِ، وَالْيَوْمِ الْآخِرِ، وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ»، قَالَ: صَدَقْتَ، قَالَ: فَأَخْبِرْنِي عَنِ الْإِحْسَانِ، قَالَ: «أَنْ تَعْبُدَ اللهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ، فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاكَ»، قَالَ: فَأَخْبِرْنِي عَنِ السَّاعَةِ، قَالَ: «مَا الْمَسْئُولُ عَنْهَا بِأَعْلَمَ مِنَ السَّائِلِ» قَالَ: فَأَخْبِرْنِي عَنْ أَمَارَتِهَا، قَالَ: «أَنْ تَلِدَ الْأَمَةُ رَبَّتَهَا، وَأَنْ تَرَى الْحُفَاةَ الْعُرَاةَ الْعَالَةَ رِعَاءَ الشَّاءِ يَتَطَاوَلُونَ فِي الْبُنْيَانِ»، قَالَ: ثُمَّ انْطَلَقَ فَلَبِثْتُ مَلِيًّا، ثُمَّ قَالَ لِي: «يَا عُمَرُ أَتَدْرِي مَنِ السَّائِلُ؟» قُلْتُ: اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ، قَالَ: «فَإِنَّهُ جِبْرِيلُ أَتَاكُمْ يُعَلِّمُكُمْ دِينَكُمْ»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩
ঈমান অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ইসলামের বুনিয়াদ
৩. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূল (ﷺ) বলেনঃ ইসলামের বুনিয়াদ পাঁচটি- শাহাদত বা সাক্ষ্যের উপর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। (১) আল্লাহ্ ব্যতিত কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ (ﷺ) তাঁর বান্দাহ ও রাসূল এই সাক্ষ্য দান করা, (২) নামায কায়েম করা, (৩) যাকাত দান করা, (৪) হজ্জ করা ও (৫) রমযানের রোযা রাখা। বুখারী ও মুসলিম
کتاب الایمان
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " بُنِيَ الإِسْلاَمُ عَلَى خَمْسٍ: شَهَادَةِ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عبده ورَسُولُهُ ، وَإِقَامِ الصَّلاَةِ، وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ، وَالحَجِّ، وَصَوْمِ رَمَضَانَ (رواه البخارى و مسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪
ঈমান অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আরকানে ইসলাম ও জান্নাতের সুসংবাদ
৪. হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূল (ﷺ)-কে অপ্রয়োজনীয় প্রশ্ন করতে আমাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে। তাই আমরা এতে আনন্দিত হতাম যে, কোন বুদ্ধিমান মরুচারী বেদুঈন রাসূল (ﷺ)-এর দরবারে এসে তাকে প্রশ্ন করুক এবং আমরা তা শুনতে পাই। অতঃপর একদিন এক মরুচারী বেদুঈন এসে রাসূল ﷺ-কে বলল, হে মুহাম্মদ (ﷺ) আমাদের কাছে আপনার দূত গিয়েছিলেন, এবং বর্ণনা করেছেন যে, আপনি ঘোষণা করেছেন, আল্লাহ্ আপনাকে নবী হিসাবে প্রেরণ করেছেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, সে তোমাকে সত্য বলেছে। বেদুঈন জিজ্ঞাসা করল, কে আসমান তৈরী করেছে? রাসূল (ﷺ) বললেনঃ আল্লাহ্। অতঃপর সে বললঃ কে দুনিয়া সৃষ্টি করেছে? নবী করীম (ﷺ) বললেনঃ আল্লাহ্। অতঃপর সে বলল, পাহাড়কে কে দাঁড় করিয়েছে ও তার যাবতীয় জিনিস সৃষ্টি করেছে? রাসূল (ﷺ) বললেন: আল্লাহ্। অতঃপর বেদুঈন বলল: যিনি আসমান বানিয়েছেন, পৃথিবী বানিয়েছেন এবং পাহাড় দাঁড় করিয়েছেন তাঁর শপথ, আল্লাহই কি আপনাকে নবী হিসেবে প্রেরণ করেছেন? তিনি (ﷺ) বললেনঃ হাঁ। বেদুঈন বললঃ আপনার দূত বলেছে, দিন রাত্রে আমাদের জন্য পাঁচটি নামায ফরয করা হয়েছে। হুযুর (ﷺ) বললেনঃ সে সত্য বলেছে। বেদুঈন বলল, যিনি আপনাকে পাঠিয়েছেন, তাঁর শপথ আল্লাহই কি আপনাকে এরূপ (নামায সম্পর্কিত) আদেশ দান করেছেন? রাসূল (ﷺ) বললেন, হাঁ। সে বলল, আপনার দূত আরো বলেছে যে, আমাদের সম্পদের উপর আমাদের জন্য যাকাত ফরয করা হয়েছে। রাসূল (ﷺ) বললেন, সে সত্য বলেছে। বেদুঈন বলল: যিনি আপনাকে নবী হিসেবে প্রেরণ করেছেন, তাঁর শপথ, আল্লাহই কি আপনাকে এইরূপ (যাকাতের) আদেশ দিয়েছেন? নবী করীম (ﷺ) বললেনঃ হাঁ। বেদুঈন বলল: আপনার দূত আরো বলেছে, প্রতি বছর রমযান মাসে আমাদের উপর রোযা ফরয করা হয়েছে। রাসূল (ﷺ) বললেন: সে সত্য বলেছে। বেদুঈন বলল: যিনি আপনাকে এরূপ রোযার আদেশ দিয়েছেন, তাঁর শপথ, আল্লাহই কি আপনাকে এরূপ (রোযার) আদেশ দিয়েছেন? তিনি বললেন : হাঁ। সে বললো: আপনার দূত আরো ঘোষণা করেছে যে, আমাদের মধ্যে যাদের মক্কা গমনের সামর্থ্য রয়েছে তাদের উপর কাবা ঘরের হজ্জ করা ফরয করা হয়েছে। রাসূল (ﷺ) বললেনঃ সে সত্য বলেছে। বর্ণনাকারী বলেন: অতঃপর সে একথা বলতে বলতে চলে গেল: যে আপনাকে সত্যের সঙ্গে প্রেরণ করেছেন, তাঁর শপথ আমি এর সঙ্গে (উপরোক্ত হুকুম সমূহের সঙ্গে) কিছু সংযোগ করব না এবং এর থেকে কিছু বিয়োগও করব না। রাসূল (ﷺ) বললেনঃ সে যদি সত্যবাদী হয়, তাহলে অবশ্যই সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। বুখারী, মুসলিম
کتاب الایمان
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: نُهِينَا أَنْ نَسْأَلَ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ شَيْءٍ، فَكَانَ يُعْجِبُنَا أَنْ يَجِيءَ الرَّجُلُ مِنْ أَهْلِ الْبَادِيَةِ الْعَاقِلُ، فَيَسْأَلَهُ، وَنَحْنُ نَسْمَعُ، فَجَاءَ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْبَادِيَةِ، فَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ، أَتَانَا رَسُولُكَ فَزَعَمَ لَنَا أَنَّكَ تَزْعُمُ أَنَّ اللهَ أَرْسَلَكَ، قَالَ: «صَدَقَ»، قَالَ: فَمَنْ خَلَقَ السَّمَاءَ؟ قَالَ: «اللهُ»، قَالَ: فَمَنْ خَلَقَ الْأَرْضَ؟ قَالَ: «اللهُ»، قَالَ: فَمَنْ نَصَبَ هَذِهِ الْجِبَالَ، وَجَعَلَ فِيهَا مَا جَعَلَ؟ قَالَ: «اللهُ»، قَالَ: فَبِالَّذِي خَلَقَ السَّمَاءَ، وَخَلَقَ الْأَرْضَ، وَنَصَبَ هَذِهِ الْجِبَالَ، آللَّهُ أَرْسَلَكَ؟ قَالَ: «نَعَمْ»، قَالَ: وَزَعَمَ رَسُولُكَ أَنَّ عَلَيْنَا خَمْسَ صَلَوَاتٍ فِي يَوْمِنَا، وَلَيْلَتِنَا، قَالَ: «صَدَقَ»، قَالَ: فَبِالَّذِي أَرْسَلَكَ، آللَّهُ أَمَرَكَ بِهَذَا؟ قَالَ: «نَعَمْ»، قَالَ: وَزَعَمَ رَسُولُكَ أَنَّ عَلَيْنَا زَكَاةً فِي أَمْوَالِنَا، قَالَ: «صَدَقَ»، قَالَ: فَبِالَّذِي أَرْسَلَكَ، آللَّهُ أَمَرَكَ بِهَذَا؟ قَالَ: «نَعَمْ»، قَالَ: وَزَعَمَ رَسُولُكَ أَنَّ عَلَيْنَا صَوْمَ شَهْرِ رَمَضَانَ فِي سَنَتِنَا، قَالَ: «صَدَقَ»، قَالَ: فَبِالَّذِي أَرْسَلَكَ، آللَّهُ أَمَرَكَ بِهَذَا؟ قَالَ: «نَعَمْ»، قَالَ: وَزَعَمَ رَسُولُكَ أَنَّ عَلَيْنَا حَجَّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلًا، قَالَ: «صَدَقَ»، قَالَ: ثُمَّ وَلَّى، قَالَ: وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ، لَا أَزِيدُ عَلَيْهِنَّ، وَلَا أَنْقُصُ مِنْهُنَّ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَئِنْ صَدَقَ لَيَدْخُلَنَّ الْجَنَّةَ»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫
ঈমান অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আরকানে ইসলাম ও জান্নাতের সুসংবাদ
৫. হযরত আবু আইয়ূব (রা) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সফরে ছিলেন, তখন এক বেদুঈন তার সামনে হাযির হল। সে রাসূল (ﷺ)-এর উটনীর নাকের রশী ধরল এবং বলল: হে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)! (অথবা হে মুহাম্মদ! এমন কথা বলুন যা আমাকে জান্নাতের নিকটবর্তী করবে এবং দোযখ থেকে দূরে রাখবে। বর্ণনাকারী বলেন। নবী করীম (ﷺ) থেমে গেলেন। অতঃপর তিনি তাঁর সাহাবাদের দিকে দৃষ্টিপাত করে বললেন: সে কৃতকার্য হয়েছে, সে হেদায়াত লাভ করেছে। অতঃপর তিনি বললেনঃ তুমি কিভাবে বলেছিলে? সে পুনরাবৃত্তি করল। নবী (ﷺ) বললেন: আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাঁর সাথে কোন শরীক করোনা নামায কায়েম কর, যাকাত আদায় কর, আত্মীয়-স্বজনদের সাথে ভাল ব্যবহার কর ও তাদের হক আদায় কর। কথা শেষ করে নবী করীম (ﷺ) তাকে বললেন: আমার উটনীর নাকের রশি ছেড়ে দাও। মুসলিম
کتاب الایمان
عَنْ أَبِىْ أَيُّوبَ أَنَّ أَعْرَابِيًّا عَرَضَ لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ فِي سَفَرٍ، فَأَخَذَ بِخِطَامِ نَاقَتِهِ - أَوْ بِزِمَامِهَا ثُمَّ قَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ - أَوْ يَا مُحَمَّدُ - أَخْبِرْنِي بِمَا يُقَرِّبُنِي مِنَ الْجَنَّةِ، وَمَا يُبَاعِدُنِي مِنَ النَّارِ، قَالَ: فَكَفَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ نَظَرَ فِي أَصْحَابِهِ، ثُمَّ قَالَ: «لَقَدْ وُفِّقَ، أَوْ لَقَدْ هُدِيَ»، قَالَ: كَيْفَ قُلْتَ؟ قَالَ: فَأَعَادَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «تَعْبُدُ اللهَ لَا تُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا، وَتُقِيمُ الصَّلَاةَ، وَتُؤْتِي الزَّكَاةَ، وَتَصِلُ الرَّحِمَ، دَعِ النَّاقَةَ» (رواه مسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৬
ঈমান অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আরকানে ইসলাম ও জান্নাতের সুসংবাদ
৬. হযরত তালহা ইবনে উবায়দিল্লাহ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নজদের এক ব্যক্তি রাসূল (ﷺ)-এর কাছে এল, তার চুল এলোমেলো ছিল। আমরা তার আওয়াযের ধ্বনি শুনছিলাম; কিন্তু কি বলছিল তা বুঝতে পারছিলাম না। অতঃপর নবী করীম (ﷺ)-এর নিকটবর্তী হয়ে ইসলাম সম্পর্কে সওয়াল করল। নবী করীম (ﷺ) বললেন: দিনরাত পাঁচ ওয়াক্ত নামায। সে বলল: এছাড়া কি আমার উপর অন্য কোন নামায রয়েছে? তিনি বললেন, না। তবে স্বেচ্ছায় আরো নামায পড়তে পার। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেন: রমযান মাসের রোযা ফরয। সে বলল, এছাড়া কি আমার উপর অন্য কোন রোযা রয়েছে? রাসূল (ﷺ) বললেন: না, তবে স্বেচ্ছায় আরো রোযা রাখতে পার। বর্ণনাকারী বলেন, রাসূল (ﷺ) উক্ত ব্যক্তিকে যাকাত সম্পর্কেও বলেছিলেন এবং সে বলেছিল: এছারাও কি আমার উপর অন্য কোন সদকা রয়েছে? রাসূল (ﷺ) বললেন: না, তবে স্বেচ্ছায় আরো দান করতে পার। বর্ণনাকারী বলেন: প্রশ্নকারী ফিরে গেল এবং (যাওয়ার সময়) বলল: আল্লাহর শপথ আমি এতে কোন কিছু সংযোজন করবো না এবং এ থেকে কোন কিছু কমও করব না। রাসূল (ﷺ) বললেন: লোকটি সত্যবাদী হলে কৃতকার্য হয়েছে। বুখারী, মুসলিম
کتاب الایمان
عَنْ طَلْحَةَ بْنَ عُبَيْدِ اللَّهِ يَقُولُ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ أَهْلِ نَجْدٍ ثَائِرَ الرَّأْسِ يُسْمَعُ دَوِيُّ صَوْتِهِ وَلَا يُفْقَهُ مَا يَقُولُ: حَتَّى دَنَا، فَإِذَا هُوَ يَسْأَلُ عَنِ الْإِسْلَامِ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «خَمْسُ صَلَوَاتٍ فِي الْيَوْمِ وَاللَّيْلَةِ». قَالَ: هَلْ عَلَيَّ غَيْرُهُنَّ؟ قَالَ: «لَا إِلَّا أَنْ تَطَّوَّعَ». قَالَ: وَذَكَرَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «صِيَامَ شَهْرِ رَمَضَانَ». قَالَ: هَلْ عَلَيَّ غَيْرُهُ؟ قَالَ: «لَا إِلَّا أَنْ تَطَّوَّعَ». قَالَ: وَذَكَرَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الصَّدَقَةَ. قَالَ: فَهَلْ عَلَيَّ غَيْرُهَا؟ قَالَ: «لَا إِلَّا أَنْ تَطَّوَّعَ». فَأَدْبَرَ الرَّجُلُ وَهُوَ يَقُولُ: وَاللَّهِ لَا أَزِيدُ عَلَى هَذَا وَلَا أَنْقُصُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَفْلَحَ إِنْ صَدَقَ» (رواه البخارى و مسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৭
ঈমান অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আরকানে ইসলামের দাওয়াতের বিভিন্ন পর্যায়
৭. হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) যখন মা'আয ইবনে জাবালকে ইয়েমেন প্রেরণ করেন, তখন তাকে বলেন: তুমি শীঘ্রই আসমানী কিতাবে বিশ্বাসী এক কওমের নিকট পৌছবে। যখন তুমি তাদের কাছে যাবে তখন তাদেরকে দাওয়াত দেবে এ সাক্ষ্য দান করার জন্য যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ (ﷺ) তাঁর রাসূল। যদি তারা এ ব্যাপারে তোমার প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে তবে তাদেরকে বলবে যে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তোমাদের উপর দিন রাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরয করেছেন। যদি তারা এ ব্যাপারেও তোমার আনুগত্য করে, তবে তাদেরকে বলবে যে, আল্লাহ্ তোমাদের উপর যাকাত ফরয করেছেন। তা জাতির ধনি ব্যক্তিদের নিকট থেকে আদায় করা হবে এবং ফকির মিসকিনদের মধ্যে বণ্টন করা হবে। অতঃপর যদি তারা এই ব্যাপারেও তোমার আনুগত্য করে তাহলে (যাকাতের জন্য) তাদের উৎকৃষ্ট মাল গ্রহণ করবে না এবং মযলুমের বদদু‘আর ভয় করতে হবে। কেননা তার এবং আল্লাহর মাঝে কোন পর্দা নেই। বুখারী, মুসলিম
کتاب الایمان
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِمُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ حِينَ بَعَثَهُ إِلَى اليَمَنِ: «إِنَّكَ سَتَأْتِي قَوْمًا مِنْ أَهْلِ الكِتَابِ، فَإِذَا جِئْتَهُمْ فَادْعُهُمْ إِلَى أَنْ يَشْهَدُوا أَنْ لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ ، فَإِنْ هُمْ طَاعُوا لَكَ بِذَلِكَ، فَأَخْبِرْهُمْ أَنَّ اللَّهَ قَدْ فَرَضَ عَلَيْهِمْ خَمْسَ صَلَوَاتٍ فِي كُلِّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ، فَإِنْ هُمْ طَاعُوا لَكَ بِذَلِكَ فَأَخْبِرْهُمْ أَنَّ اللَّهَ قَدْ فَرَضَ عَلَيْهِمْ صَدَقَةً، تُؤْخَذُ مِنْ أَغْنِيَائِهِمْ فَتُرَدُّ عَلَى فُقَرَائِهِمْ، فَإِنْ هُمْ طَاعُوا لَكَ بِذَلِكَ فَإِيَّاكَ وَكَرَائِمَ أَمْوَالِهِمْ، وَاتَّقِ دَعْوَةَ المَظْلُومِ، فَإِنَّهُ لَيْسَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ اللَّهِ حِجَابٌ» (رواه البخارى ومسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৮
ঈমান অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর রাসূলের প্রতি ঈমান আনবে না এবং তাঁর আনীত দ্বীনকে নিজের দ্বীন বানিয়ে নেবে না, সে নাজাত ও মুক্তি লাভ করতে পারবে না
৮. হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেছেন। নবী করীম (ﷺ) বলেছেন: যার হাতে মুহাম্মদের জীবন তার শপথ! এ যুগের যে ইয়াহুদী ও খৃস্টান আমার খবর পেয়েছে এবং আমার উপর বিশ্বাস স্থাপন না করেই মৃত্যুবরণ করেছে সে অবশ্যই দোজখবাসীদের অন্তর্গত হবে। সহীহ মুসলিম
کتاب الایمان
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: «وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ، لَا يَسْمَعُ بِي أَحَدٌ مِنْ هَذِهِ الْأُمَّةِ يَهُودِيٌّ، وَلَا نَصْرَانِيٌّ، ثُمَّ يَمُوتُ وَلَمْ يُؤْمِنْ بِالَّذِي أُرْسِلْتُ بِهِ، إِلَّا كَانَ مِنْ أَصْحَابِ النَّارِ (رواه مسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৯
ঈমান অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ রাসূলের খবরপ্রাপ্ত অবিশ্বাসী ইয়াহুদী-খৃস্টান দোযখে যাবে
৯. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূল (ﷺ)-এর খেদমতে হাযির হল এবং বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার কি রায়, একজন খস্টান ইঞ্জিলের উপর আমল করে এবং একজন ইয়াহুদী তাওরাতের উপর আমল করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর বিশ্বাস রাখে। শুধু আপনার প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে না। রাসূল (ﷺ) বললেন: যে ইয়াহুদী ও খৃস্টান আমার খবর পেয়েছে অথচ আমার আনুগত্য হয়নি, সে দোযখে যাবে। -দারকুতনী
کتاب الایمان
عَن عبد الله بن مَسْعُود رَضِي الله عَنهُ قَالَ جَاءَ رجل إِلَى النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَقَالَ يَا رَسُول الله أَرَأَيْت رَجُلًا من النَّصَارَى متمسكا بِالْإِنْجِيْلِ وَرَجُلًا مِنَ الْيَهُودِ مُتَمَسِّكًا بِالتَّوْرَاةِ يُؤمِنُ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ثمَّ لَمْ يَتَّبِعْكَ قَالَ رَسُولُ الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم مَنْ سَمِعَ بِِيْ مِنْ يَهُودِيّ أَو نَصْرَانِيّ ثمَّ لم يَتَّبِعْنِيْ فَهُوَ فِي النَّارِ (أخرجه (۱) الدَّارَقُطْنِيّ فِي الْأَفْرَاد)
তাহকীক:
হাদীস নং: ১০
ঈমান অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ সাচ্চা ঈমান ও ইসলাম নাজাতের যামানত
১০. আ'মাশ তাবেয়ী তাঁর উস্তাদ আবু সালেহ থেকে বর্ণনা করেন, আবু হুরায়রা (রা) বা আবু সাঈদ খুদরী (রা) বর্ণনা করেছেন যে, তাবুকের যুদ্ধের সময় মানুষ খাদ্য সংকটের শিকার হয়। তারা বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আপনি অনুমতি দিলে আমরা আমাদের উট যবেহ করে খাব এবং তার চর্বিও সংগ্রহ করবো। রাসূল ﷺ বললেন, করো। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর ওমর (রা) এলেন এবং বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আপনি এ রকম করলে সওয়ারী কম হয়ে যাবে। বরং আপনি তাদের অবশিষ্ট খাদ্য সামগ্রী নিয়ে আসতে আহ্বান করুন। অতঃপর তাদের জন্য আল্লাহর কাছে দু‘আ করুন যাতে তাদের খাদ্যে বরকত হয়। আশা করা যায়, আল্লাহ তাতে বরকত দান করবেন। রাসূল (ﷺ) বললেনঃ হাঁ। অতঃপর তিনি চামড়ার মাদুর (দস্তরখান) চাইলেন এবং তা বিছানো হলো। পরে তিনি তাদের অবশিষ্ট খাদ্য তলব করলেন। বর্ণনাকারী বলেন, কেউ একমুষ্টি ভুট্টা নিয়ে এলো, কেউ নিয়ে এলেন একমুষ্টি খেজুর, আবার কেউ ছোট এক টুকরো রুটি নিয়ে এলেন। এভাবে মাদুরে সামান্য জিনিসই জমা হল। বর্ণনাকারী বলেন। অতঃপর রাসূল (ﷺ) বরকতের দু‘আ করলেন এবং বললেনঃ তোমাদের পাত্র ভর্তি কর। তারা তাদের পাত্রসমূহ পূর্ণ করলেন। এমনকি ছাউনির লোকেরা একটা পাত্রও অপূর্ণ রাখলেন না। অতঃপর বর্ণনাকারী বলেন। সবাই প্রাণ ভরে খেলেন এবং কিছু বেঁচে গেল। অতঃপর রাসূল (ﷺ) বললেনঃ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং আমি তাঁর রাসূল। যে বান্দা এ দুটি বিষয়ে (উপরোল্লিখিত) কোনরূপ সন্দেহ ছাড়া আল্লাহর সাথে মুলাকাত করবে তাকে বেহেশত থেকে ফিরিয়ে রাখা যাবে না।-মুসলিম
کتاب الایمان
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَوْ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ - شَكَّ الْأَعْمَشُ - قَالَ: لَمَّا كَانَ غَزْوَةُ تَبُوكَ أَصَابَ النَّاسَ مَجَاعَةٌ، قَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ، لَوْ أَذِنْتَ لَنَا فَنَحَرْنَا نَوَاضِحَنَا، فَأَكَلْنَا وَادَّهَنَّا، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «افْعَلُوا»، قَالَ: فَجَاءَ عُمَرُ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ، إِنْ فَعَلْتَ قَلَّ الظَّهْرُ، وَلَكِنْ ادْعُهُمْ بِفَضْلِ أَزْوَادِهِمْ، ثُمَّ ادْعُ اللهَ لَهُمْ عَلَيْهَا بِالْبَرَكَةِ، لَعَلَّ اللهَ أَنْ يَجْعَلَ فِي ذَلِكَ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «نَعَمْ»، قَالَ: فَدَعَا بِنِطَعٍ، فَبَسَطَهُ، ثُمَّ دَعَا بِفَضْلِ أَزْوَادِهِمْ، قَالَ: فَجَعَلَ الرَّجُلُ يَجِيءُ بِكَفِّ ذُرَةٍ، قَالَ: وَيَجِيءُ الْآخَرُ بِكَفِّ تَمْرٍ، قَالَ: وَيَجِيءُ الْآخَرُ بِكَسْرَةٍ حَتَّى اجْتَمَعَ عَلَى النِّطَعِ مِنْ ذَلِكَ شَيْءٌ يَسِيرٌ، قَالَ: فَدَعَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَيْهِ بِالْبَرَكَةِ، ثُمَّ قَالَ: «خُذُوا فِي أَوْعِيَتِكُمْ»، قَالَ: فَأَخَذُوا فِي أَوْعِيَتِهِمْ، حَتَّى مَا تَرَكُوا فِي الْعَسْكَرِ وِعَاءً إِلَّا مَلَئُوهُ، قَالَ: فَأَكَلُوا حَتَّى شَبِعُوا، وَفَضَلَتْ فَضْلَةٌ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، وَأَنِّي رَسُولُ اللهِ، لَا يَلْقَى اللهَ بِهِمَا عَبْدٌ غَيْرَ شَاكٍّ، فَيُحْجَبَ عَنِ الْجَنَّةِ» (رواه مسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ১১
ঈমান অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কালেমা উচ্চারণকারীর উপর দোযখের আগুন হারাম
১১. হযরত উবাদা ইবনুস সামিত (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি। যে ব্যক্তি সাক্ষ্য দান করে যে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ (ﷺ) আল্লাহর রাসূল, আল্লাহ তাঁর উপর দোযখের আগুন হারাম করে দিয়েছেন।-মুসলিম
کتاب الایمان
عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: «مَنْ شَهِدَ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ، حَرَّمَ اللهُ عَلَيْهِ النَّارَ»
তাহকীক:
হাদীস নং: ১২
ঈমান অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ বান্দার উপর আল্লাহর হক ও আল্লাহর উপর বান্দার হক
১২. হযরত মা'আয ইবনে জাবাল (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমি রাসূল (ﷺ)-এর পেছনে একই উটে সওয়ার ছিলাম। তার এবং আমার মধ্যে উটের জীন ছাড়া কোন ব্যবধান ছিল না। তিনি বললেনঃ হে মা'আয ইবনে জাবাল! আমি বললাম, 'লাব্বাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ্ ওয়া সাদা'ইকা'- হে আল্লাহর রাসূল! আমি হাযির, আমাকে আদেশ করুন। কিছুক্ষণ পর তিনি আবার বললেনঃ হে মাআয ইবনে জাবাল! আমি বললাম, 'লাব্বাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ ওয়া সাদা'ইকা'। অতঃপর কিছুক্ষণ চলার পর তিনি বললেনঃ হে মাআয ইবনে জাবাল! আমি বললাম 'লাব্বাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ ওয়া সাদা'ইকা'। তিনি বললেন: তুমি কি জান বান্দার উপর মহান সম্মানের অধিকারী আল্লাহর কি হক রয়েছে? বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ﷺ) অধিক জানেন। তিনি বললেন, বান্দাহর উপর আল্লাহর হক হল তাঁর ইবাদত করা এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক না করা। অতঃপর কিছুক্ষণ চলার পর তিনি বললেন, হে মা'আয ইবনে জাবাল! আমি বললাম লাব্বাইক ইয়া রাসূলাল্লাহ্ ওয়া সাদা'ইকা, তিনি বললেন, তুমি কি জান বান্দাহ যখন আল্লাহর এ হক আদায় করে তখন আল্লাহর উপর বান্দাহর কি হক বা অধিকার জন্মায়? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেন, তাদেরকে আযাব না দেয়া। -সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম
کتاب الایمان
عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، قَالَ: كُنْتُ رِدْفَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْسَ بَيْنِي وَبَيْنَهُ إِلَّا مُؤْخِرَةُ الرَّحْلِ، فَقَالَ: «يَا مُعَاذُ بْنَ جَبَلٍ»، قُلْتُ: لَبَّيْكَ رَسُولَ اللهِ، وَسَعْدَيْكَ، ثُمَّ سَارَ سَاعَةً، ثُمَّ قَالَ: «يَا مُعَاذُ بْنَ جَبَلٍ» قُلْتُ: لَبَّيْكَ رَسُولَ اللهِ وَسَعْدَيْكَ، ثُمَّ سَارَ سَاعَةً، ثُمَّ قَالَ: «يَا مُعَاذُ بْنَ جَبَلٍ» قُلْتُ: لَبَّيْكَ رَسُولَ اللهِ وَسَعْدَيْكَ، قَالَ: «هَلْ تَدْرِي مَا حَقُّ اللهِ عَلَى الْعِبَادِ؟» قَالَ: قُلْتُ: اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ، قَالَ: «فَإِنَّ حَقُّ اللهِ عَلَى الْعِبَادِ أَنْ يَعْبُدُوهُ، وَلَا يُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا»، ثُمَّ سَارَ سَاعَةً، ثُمَّ قَالَ: «يَا مُعَاذَ بْنَ جَبَلٍ» قُلْتُ: لَبَّيْكَ رَسُولَ اللهِ، وَسَعْدَيْكَ، قَالَ: «هَلْ تَدْرِي مَا حَقُّ الْعِبَادِ عَلَى اللهِ إِذَا فَعَلُوا ذَلِكَ؟» قَالَ: قُلْتُ: اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ، قَالَ: «أَنْ لَا يُعَذِّبَهُمْ» (رواه البخارى ومسلم واللفظ له)
তাহকীক:
হাদীস নং: ১৩
ঈমান অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কালেমার সাক্ষ্যদানকারীর জন্য দোযখ হারাম
১৩. হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সাথে মা'আয (রা) যখন একই উটের উপর সওয়ার ছিলেন, তখন তিনি বললেনঃ হে মা'আয! তিনি বললেনঃ লাব্বাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ্ ওয়া সা'আদাইক। রাসূল (ﷺ) বললেনঃ হে মা'আয। তিনি বললেন, লাব্বাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ ওয়া সা'আদাইক (তিনবার), অতঃপর রাসূল (ﷺ) বললেনঃ যে ব্যক্তি আন্তরিকতার সাথে সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ (ﷺ) তার বান্দাহ ও রাসূল। আল্লাহ্ তাআলা দোযখের জন্য তাকে হারাম করে দিয়েছেন। তিনি বললেন হে আল্লাহর রাসূল! আমি কি এ খবর লোকদের নিকট পৌঁছাব যাতে তারা খুশী হয়? রাসূল (ﷺ) বললেন: তাহলে তারা ভরসা করে বসে থাকবে। অতঃপর মা'আয (রা) ইলম বা জ্ঞান লুকানোর গুনাহের ভয়ে মৃত্যুর পূর্বে এ খবর প্রকাশ করেন। -বুখারী, মুসলিম
کتاب الایمان
عَنْ أَنَس أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَمُعاذٌ رَدِيفُهُ عَلَى الرَّحْلِ، قَالَ: «يَا مُعَاذَ بْنَ جَبَلٍ»، قَالَ: لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَسَعْدَيْكَ، قَالَ: «يَا مُعَاذُ»، قَالَ: لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَسَعْدَيْكَ ثَلاَثًا، قَالَ: «مَا مِنْ أَحَدٍ يَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ [ص:38] مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، صِدْقًا مِنْ قَلْبِهِ، إِلَّا حَرَّمَهُ اللَّهُ عَلَى النَّارِ»، قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ: أَفَلاَ أُخْبِرُ بِهِ النَّاسَ فَيَسْتَبْشِرُوا؟ قَالَ: «إِذًا يَتَّكِلُوا» وَأَخْبَرَ بِهَا مُعَاذٌ عِنْدَ مَوْتِهِ تَأَثُّمًا (رواه البخارى ومسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ১৪
ঈমান অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ জান্নাতের চাবি
১৪. মা'আয ইবনে জাবাল (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমাকে বলেছেন, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই, এ সাক্ষ্য দান করা জান্নাতের চাবি। -মুসনাদে আহমাদ
کتاب الایمان
عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ قَالَ: قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَفَاتِيحُ الْجَنَّةِ شَهَادَةُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ» (رواه احمد)
তাহকীক:
হাদীস নং: ১৫
ঈমান অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কালেমার বিশ্বাসসহ মৃত্যু হলে জান্নাত লাভ করা যাবে
১৫. হযরত আবু যার গিফারী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি একদিন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর কাছে হাযির হলাম। তখন তিনি সাদা কাপড়ে আবৃত হয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। কিছুক্ষণ পর পুনরায় আমি তাঁর দরবারে এলাম। তিনি তখন জেগে ছিলেন। এসময় তিনি বললেন: যে বান্দা 'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ' বলে এবং এই বিশ্বাসের সাথে যদি তার মৃত্যু হয় তবে সে অবশ্যই জান্নাতে যাবে। বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, সে যদি ব্যভিচার করে, চুরি করে থাকে? রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, হাঁ সে ব্যভিচার করলেও এবং চুরি করে থাকলেও? আমি বললাম, সে যদি ব্যভিচার ও চবি করে থাকে। তিনি বললেন, সে ব্যভিচার ও চরি করে থাকলেও। আমি বললাম, সে যদি ব্যভিচার ও চরি করে থাকে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন: সে ব্যভিচার ও চুরি করলেও। তিনি বললেন, (হা) আবু যার না চাইলেও১ (সে বেহেশতে যাবে)।
১. টিকা: আরবী বাগধারা বা বিশেষ বাচনভংগী যার অর্থ হল তুমি এটা অপছন্দ করলেও বা তুমি না চাইলেও তা সংঘটিত হবে।
১. টিকা: আরবী বাগধারা বা বিশেষ বাচনভংগী যার অর্থ হল তুমি এটা অপছন্দ করলেও বা তুমি না চাইলেও তা সংঘটিত হবে।
کتاب الایمان
عَنْ أَبىْ ذَرٍّ قَالَ: أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَلَيْهِ ثَوْبٌ أَبْيَضُ، وَهُوَ نَائِمٌ، ثُمَّ أَتَيْتُهُ وَقَدِ اسْتَيْقَظَ، فَقَالَ: " مَا مِنْ عَبْدٍ قَالَ: لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، ثُمَّ مَاتَ عَلَى ذَلِكَ إِلَّا دَخَلَ الجَنَّةَ " قُلْتُ: وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ؟ قَالَ: «وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ» قُلْتُ: وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ؟ قَالَ: «وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ» قُلْتُ: وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ؟ قَالَ: «وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ عَلَى رَغْمِ أَنْفِ أَبِي ذَرٍّ» (رواه البخارى ومسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ১৬
ঈমান অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কালেমায় বিশ্বাসী জান্নাতে প্রবেশ করবে
১৬. হযরত উসমান ইবনে আফফান (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন: আল্লাহ্ ছাড়া ইলাহ নেই: এই বিশ্বাসের সাথে যে মৃত্যু বরণ করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। মুসলিম
کتاب الایمان
عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّان ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ مَاتَ وَهُوَ يَعْلَمُ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، دَخَلَ الْجَنَّةَ» (رواه مسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ১৭
ঈমান অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কালেমার সাক্ষ্য দানকারীকে মুনাফিক বলা নিষেধ
১৭. হযরত উতবান ইবনে মালেক (রা) থেকে বর্ণিত, বদরের যুদ্ধে যে সব আনসার সাহাবী যোগদান করেছিলেন, তিনি তাদের অন্যতম। তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর দরবারে হাযির হয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমার দৃষ্টি-শক্তি হ্রাস পেয়েছে। আমি আমার কাওমের নামায পড়াই; বৃষ্টি হলে আমার এবং আমার কাওমের মধ্যে অবস্থিত নালাটি প্লাবিত হয়। আমি তাদের মসজিদে উপস্থিত হয়ে নামায পড়াতে পারি না। হে আল্লাহর রাসূল! আমার ইচ্ছা হয় আপনি আমার এখানে আসবেন এবং আমার ঘরে নামায পড়বেন। অতঃপর আমি এটাকে নামাযের স্থান বানিয়ে নেব। বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ ইনশা আল্লাহ্ আমি তাই করব। উতবান (রা) বলেন, পরবর্তী দিন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এবং আবু বকর (রা) একটু বেলা হলে আমার এখানে এসে পৌঁছলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) অনুমতি চাইলেন (প্রবেশ করার)। আমি তাঁকে অনুমতি দিলাম। তিনি ঘরে প্রবেশ করলেন এবং না বসেই বললেনঃ তোমার ঘরের কোন স্থানটিতে আমার নামায পড়া তুমি পছন্দ কর? আমি ঘরের এক প্রান্তের দিকে ইশারা করলাম। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) দঁড়িয়ে তাকবীর বললেন, আমরাও (তাঁর পেছনে) সারি বেধে দাঁড়ালাম। তিনি দুই রাকাআত নামায পড়ালেন এবং সালাম ফিরালেন। রাবী বলেন, আমরা তাঁর জন্য 'খাযীরা' (এক প্রকার খাদ্য, পানিতে গোশত সিদ্ধ করে তাতে আটা ঢেলে পুনরায় একত্রে পাকানো হয়) তৈরী করেছিলাম, (তা খাওয়ানোর জন্য) তাঁকে বসালাম। রাবী বলেন, মহল্লার কিছু লোকও এসে উপস্থিত হল। তাদের মধ্যে একজন বললেন, মালিক ইবনুদ দুখাইশিন বা ইবনুদ-দুখশান কোথায়? তাদের কেউ বলল, সে মুনাফিক, সে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (ﷺ)-কে ভালোবাসে না। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, এরূপ বলনা, তোমরা কি দেখনি সে 'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ'-এর সাক্ষ্য দান করেছে এবং তা সে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করেছে? এ ব্যক্তি বলল, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল অধিক অবগত। আমরা তাকে মুনাফিকদের প্রতি অনুরক্ত এবং তাদের শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে পেয়েছি। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, মহামহিম আল্লাহ সেই ব্যক্তিকে আগুনের জন্য হারাম করেছেন যে আল্লাহর সন্তষ্টি লাভের জন্য আন্তরিকতা সহকারে 'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ' বলেছে। -সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম
کتاب الایمان
أَنَّ عِتْبَانَ بْنَ مَالِكٍ، وَكَانَ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِمَّنْ شَهِدَ بَدْرًا مِنَ الأَنْصَارِ: أَنَّهُ أَتَى رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنِّي أَنْكَرْتُ بَصَرِي، وَأَنَا أُصَلِّي لِقَوْمِي، فَإِذَا كَانَتِ الأَمْطَارُ سَالَ الوَادِي الَّذِي بَيْنِي وَبَيْنَهُمْ، لَمْ أَسْتَطِعْ أَنْ آتِيَ مَسْجِدَهُمْ فَأُصَلِّيَ لَهُمْ، فَوَدِدْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَنَّكَ تَأْتِي فَتُصَلِّي فِي بَيْتِي فَأَتَّخِذُهُ مُصَلًّى، فَقَالَ: «سَأَفْعَلُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ» قَالَ عِتْبَانُ: فَغَدَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَبُو بَكْرٍ حِينَ ارْتَفَعَ النَّهَارُ، فَاسْتَأْذَنَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَذِنْتُ لَهُ، فَلَمْ يَجْلِسْ حَتَّى دَخَلَ البَيْتَ، ثُمَّ قَالَ لِي: «أَيْنَ تُحِبُّ أَنْ أُصَلِّيَ مِنْ بَيْتِكَ؟» فَأَشَرْتُ إِلَى نَاحِيَةٍ مِنَ البَيْتِ، فَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَكَبَّرَ فَصَفَفْنَا، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ [ص:73] سَلَّمَ، وَحَبَسْنَاهُ عَلَى خَزِيرٍ صَنَعْنَاهُ، فَثَابَ فِي البَيْتِ رِجَالٌ مِنْ أَهْلِ الدَّارِ ذَوُو عَدَدٍ فَاجْتَمَعُوا، فَقَالَ قَائِلٌ مِنْهُمْ: أَيْنَ مَالِكُ بْنُ الدُّخْشُنِ؟ فَقَالَ بَعْضُهُمْ: ذَلِكَ مُنَافِقٌ، لاَ يُحِبُّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ، قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " لاَ تَقُلْ، أَلاَ تَرَاهُ قَالَ: لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، يُرِيدُ بِذَلِكَ وَجْهَ اللَّهِ؟ " قَالَ: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ، قَالَ: قُلْنَا: فَإِنَّا نَرَى وَجْهَهُ وَنَصِيحَتَهُ إِلَى المُنَافِقِينَ، فَقَالَ: " فَإِنَّ اللَّهَ قَدْ حَرَّمَ عَلَى النَّارِ مَنْ قَالَ: لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، يَبْتَغِي بِذَلِكَ وَجْهَ اللَّهِ (رواه البخارى و مسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ১৮
ঈমান অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পূর্ণ বিশ্বাসের সাথে কালেমার সাক্ষ্য দানকারীর জন্য বেহেশতের সুসংবাদ
১৮. হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে উপস্থিত ছিলাম এবং তাঁর চারপাশে বসাছিলাম। হযরত আবু বকর এবং ওমর (রা)-ও আমাদের সাথে ছিলেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মধ্য থেকে উঠে দাড়ালেন (এবং কোথাও চলে গেলেন)। তাঁর ফিরে আসতে বিলম্ব হওয়ায় আমরা শংকিত হলাম যে, না জানি তিনি আমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কোথাও বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন (অর্থাৎ না জানি আমাদের অনুপস্থিতিতে তিনি শত্রুর দ্বারা কোন উৎপীড়নের শিকার হয়েছেন)। এই চিন্তা করে আমরা শংকিত হলাম এবং ব্যতিব্যস্ত হয়ে তাঁর খুঁজে বের হলাম। সকলের আগে আমিই আশংকা বোধ করে তাঁর খোজে বের হলাম। এমন কি তালাশ করতে করতে আমি নাজ্জার গোত্রের এক আনসার ব্যক্তির প্রাচীর বেষ্টিত বাগানের নিকটে পৌঁছলাম। আমি বাগানের চার দিকে ঘুরে দেখলাম ভেতরে প্রবেশের কোন পথ পাওয়া যায় কিনা, কিন্তু তা পেলাম না। হঠাৎ দেখি বাইরের একটি রূপ থেকে একটি ছোট্ট নালা এসে বাগানের ভেতরে প্রবেশ করেছে। আমি জড়সড় হয়ে নালার ভেতর দিয়ে বাগানে ঢুকলাম এবং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকটে গিয়ে পৌঁছলাম। তিনি বললেন: আবু হুরায়রা? আমি বললাম, হাঁ আমি হে আল্লাহর রাসূল! তিনি জিজ্ঞেস করলেন। কি ব্যাপার, তুমি কিভাবে এলে? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আমাদের মাঝে ছিলেন এবং সেখান থেকে উঠে চলে এলেন। আপনার ফিরতে বিলম্ব দেখে আমরা আতংকিত হলাম, না জানি আপনি আমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কোথাও বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। এই আশংকায় আমরা সকলে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে আপনার খুঁজে বেরিয়েছি। আমিই সর্বপ্রথম শংকিত হয়ে বেরিয়ে পড়েছি, অবশেষে এই বাগানে এসে পৌছলাম এবং (ভেতরে প্রবেশের কোন দরজা না পেয়ে) খেকশিয়ালের মত জড়সড় হয়ে (ঐ নালার মধ্য দিয়ে কোন রকমে) বাগানে ঢুকেছি। অন্যরা আমার পেছনে আসছে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে তাঁর জুতা জোড়া দিয়ে বললেনঃ আমার জুতা জোড়া নিয়ে যাও এবং বাগান থেকে বের হয়ে আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই-এই বাক্যের পূর্ণ বিশ্বাসের সাথে সাক্ষ্যদানকারী যে কোন লোকের সাথে তোমার মোলাকাত হবে, তাকে বেহেশতের সুসংবাদ দাও। অতঃপর ওমর (রা)-এর সাথে আমার প্রথম দেখা হল। তিনি বললেন: হে আবু হুরায়রা। তোমার হাতে এ জুতা কেন? আমি বললাম, আল্লাহর রাসূল (ﷺ)-এর জুতা। তিনি আমাকে তা দিয়ে বলেছেন: যে ব্যক্তির সাথেই মোলাকাত হবে তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দান করার জন্য, যিনি পূর্ণ বিশ্বাসের সাথে এ সাক্ষ্য দান করেন যে, 'আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই'। ওমর (রা) আমার বুকে সজোরে আঘাত করলেন এবং আমি পেছনের দিকে পড়ে গেলাম। ওমর আমাকে বললেন, ফিরে যাও। আমি কাঁদতে কাঁদতে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর কাছে ফিরে এলাম এবং ওমর (রা)-ও আমার অনুসরণ করলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ হে আবু হুরায়রা। তোমার কি হয়েছে? আমি বললাম, ওমরের সাথে আমার দেখা হলে আপনার দেয়া পয়গাম আমি তাকে দিয়েছিলাম। তিনি আমার বুকে সজোরে আঘাত করলে আমি পেছন দিকে পড়ে যাই। তিনি বললেন, ফিরে যাও। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ হে ওমর! কিসে তোমাকে এরূপ করতে উত্তেজিত করেছে? ওমর (রা) বললেনঃ হে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)! আমার মা-বাপ আপনার জন্য কুরবান হোক, আপনি কি আপনার জুতা জোড়াসহ আবু হুরায়রাকে এমন লোকের সাথে দেখা হলে বেহেশতের সুসংবাদ দান করতে পাঠিয়েছিলেন, যিনি পরিপূর্ণ বিশ্বাসের সাথে সাক্ষ্য দান করেন যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নেই? রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, হাঁ। ওমর (রা) আরয করলেন, এরূপ করবেন না। আমার ভয় হয় মানুষ এর উপরই ভরসা করে বসে থাকবে তাদেরকে আমল করতে দিন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তবে তাদের তা-ই করতে দাও।- সহীহ মুসলিম
کتاب الایمان
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ، قَالَ: كُنَّا قُعُودًا حَوْلَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، مَعَنَا أَبُو بَكْرٍ، وَعُمَرُ فِي نَفَرٍ، فَقَامَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ بَيْنِ أَظْهُرِنَا، فَأَبْطَأَ عَلَيْنَا، وَخَشِينَا أَنْ يُقْتَطَعَ دُونَنَا، وَفَزِعْنَا، فَقُمْنَا، فَكُنْتُ أَوَّلَ مَنْ فَزِعَ، فَخَرَجْتُ أَبْتَغِي رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى أَتَيْتُ حَائِطًا لِلْأَنْصَارِ لِبَنِي النَّجَّارِ، فَدُرْتُ بِهِ هَلْ أَجِدُ لَهُ بَابًا؟ فَلَمْ أَجِدْ، فَإِذَا رَبِيعٌ يَدْخُلُ فِي جَوْفِ حَائِطٍ مِنْ بِئْرٍ خَارِجَةٍ - وَالرَّبِيعُ الْجَدْوَلُ - فَاحْتَفَزْتُ، فَدَخَلْتُ عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: «أَبُو هُرَيْرَةَ» فَقُلْتُ: نَعَمْ يَا رَسُولَ اللهِ، قَالَ: «مَا شَأْنُكَ؟» قُلْتُ: كُنْتَ بَيْنَ أَظْهُرِنَا، فَقُمْتَ فَأَبْطَأْتَ عَلَيْنَا، فَخَشِينَا أَنْ تُقْتَطَعَ دُونَنَا، فَفَزِعْنَا، فَكُنْتُ أَوَّلَ مَنْ فَزِعَ، فَأَتَيْتُ هَذَا الْحَائِطَ، فَاحْتَفَزْتُ كَمَا يَحْتَفِزُ الثَّعْلَبُ، وَهَؤُلَاءِ النَّاسُ وَرَائِي، فَقَالَ: «يَا أَبَا هُرَيْرَةَ» وَأَعْطَانِي نَعْلَيْهِ، قَالَ: «اذْهَبْ بِنَعْلَيَّ هَاتَيْنِ، فَمَنْ لَقِيتَ مِنْ وَرَاءِ هَذَا الْحَائِطَ يَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ مُسْتَيْقِنًا بِهَا قَلْبُهُ، فَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ»، فَكَانَ أَوَّلَ مَنْ لَقِيتُ عُمَرُ، فَقَالَ: مَا هَاتَانِ النَّعْلَانِ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ؟ فَقُلْتُ: هَاتَانِ نَعْلَا رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، بَعَثَنِي بِهِمَا مَنْ لَقِيتُ يَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ مُسْتَيْقِنًا بِهَا قَلْبُهُ، بَشَّرْتُهُ بِالْجَنَّةِ، فَضَرَبَ عُمَرُ بِيَدِهِ بَيْنَ ثَدْيَيَّ فَخَرَرْتُ لِاسْتِي، فَقَالَ: ارْجِعْ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ، فَرَجَعْتُ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَجْهَشْتُ بُكَاءً، وَرَكِبَنِي عُمَرُ، فَإِذَا هُوَ عَلَى أَثَرِي، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا لَكَ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ؟» قُلْتُ: لَقِيتُ عُمَرَ، فَأَخْبَرْتُهُ بِالَّذِي بَعَثْتَنِي بِهِ، فَضَرَبَ بَيْنَ ثَدْيَيَّ ضَرْبَةً خَرَرْتُ لِاسْتِي، قَالَ: ارْجِعْ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا عُمَرُ، مَا حَمَلَكَ عَلَى مَا فَعَلْتَ؟» قَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ، بِأَبِي أَنْتَ، وَأُمِّي، أَبَعَثْتَ أَبَا هُرَيْرَةَ بِنَعْلَيْكَ، مَنْ لَقِيَ يَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ مُسْتَيْقِنًا بِهَا قَلْبُهُ بَشَّرَهُ بِالْجَنَّةِ؟ قَالَ: «نَعَمْ»، قَالَ: فَلَا تَفْعَلْ، فَإِنِّي أَخْشَى أَنْ يَتَّكِلَ النَّاسُ عَلَيْهَا، فَخَلِّهِمْ يَعْمَلُونَ، قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «فَخَلِّهِمْ» (رواه مسلم)
তাহকীক:
হাদীস নং: ১৯
ঈমান অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অণুপরিমাণ মঙ্গলের অধিকারীকে দোযখ থেকে বের করা হবে
১৯. হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন: ঐ ব্যক্তিকে আগুন থেকে বের করা হবে, যে 'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ' বলেছে এবং তার দিলে একটা বালির দানা পরিমাণ 'ভাল' ছিল। অতঃপর তাকে দোযখ থেকে বের করা হবে, যে 'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ' বলেছে এবং তার দিলে গমের দানা পরিমাণ 'ভাল' ছিল। অতঃপর তাকেও দোযখ থেকে বের করা হবে যে 'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলেছে এবং তার দিলে অনু পরিমাণও 'ভাল' ছিল। -বুখারী, মুসলিম
کتاب الایمان
عَنْ أَنَسٍ ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: " يَخْرُجُ مِنَ النَّارِ مَنْ قَالَ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَكَانَ فِي قَلْبِهِ مِنَ الْخَيْرِ مَا يَزِنُ شَعِيرَةً، ثُمَّ يَخْرُجُ مِنَ النَّارِ مِنْ قَالَ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَكَانَ فِي قَلْبِهِ مِنَ الْخَيْرِ مَا يَزِنُ بُرَّةً، ثُمَّ يَخْرُجُ مِنَ النَّارِ مِنْ قَالَ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَكَانَ فِي قَلْبِهِ مِنَ الْخَيْرِ مَا يَزِنُ ذَرَّةً (رواه البخارى ومسلم واللفظ له)
তাহকীক:
হাদীস নং: ২০
ঈমান অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ইসলাম গ্রহণকারীর পূর্ববর্তী গুনাহ্ মাফ হয়ে যায়
২০. হযরত আমর ইবনুল আস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ্ তা'আলা ইসলাম (গ্রহণের চিন্তা) আমার অন্তরে ঢেলে দিলেন, আমি নবী করীম (ﷺ)-এর কাছে গেলাম এবং বললাম, আপনার ডান হাত প্রসারিত করুন, আমি বায়আত হতে চাই। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁর ডান হাত বাড়িয়ে দিলেন। আমি আমার হাত সংকুচিত করলাম। তিনি বললেন: হে আমর! তোমার কি হয়েছে? আমি বললাম, আমি শর্ত যোগ করতে চাই। তিনি বললেন: তুমি শর্ত যোগ করতে চাও। আমি বললাম, আমার গুনাহ মাফ করা হোক। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন: তুমি কি অবগত নও যে, ইসলাম গ্রহণ তার পূর্বের সব গুনাহ মিটিয়ে দেয়, হিজরতও পূর্ববর্তী সব গুনাহ মিটিয়ে দেয় এবং হজ্জও পূর্ববর্তী সব গুনাহ মিটিয়ে দেয়। -মুসলিম
کتاب الایمان
عَنْ عَمْرِو بْنَ الْعَاصِ قَالَ لَمَّا جَعَلَ اللهُ الْإِسْلَامَ فِي قَلْبِي أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقُلْتُ: ابْسُطْ يَمِينَكَ فَلْأُبَايِعْكَ، فَبَسَطَ يَمِينَهُ، قَالَ: فَقَبَضْتُ يَدِي، قَالَ: «مَا لَكَ يَا عَمْرُو؟» قَالَ: قُلْتُ: أَرَدْتُ أَنْ أَشْتَرِطَ، قَالَ: «تَشْتَرِطُ بِمَاذَا؟» قُلْتُ: أَنْ يُغْفَرَ لِي، قَالَ: «أَمَا عَلِمْتَ أَنَّ الْإِسْلَامَ يَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلَهُ؟ وَأَنَّ الْهِجْرَةَ تَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلَهَا؟ وَأَنَّ الْحَجَّ يَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلَهُ؟» (رواه مسلم)
তাহকীক: