প্রবন্ধ
নামায কোনো ইবাদত নয়! হেযবুত তওহীদ। পর্ব–৬৫
নামায ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ ও ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত ও ফরজ ইবাদত। কিন্তু হেযবুত তওহীদ এ ফরজ বিধানটিকে ইবাদত হিসাবেই মানতে চায় না।
হেযবুত তাওহীদ কী বলে?
তারা তাদের বইয়ে নামায সম্পর্কে বেশ কিছু উদ্ভট আলোচনা করেছে। তার মধ্যে কয়েকটি লেখা তুলে ধরা হলো–
নামায রোজা হজ্ব পূজা প্রার্থনা তীর্থযাত্রা মানুষের মূল এবাদত নয়। মানবজাতী যেন সুখে শান্তিতে জীবন যাপন করতে পারে এ লক্ষ্যে নিজেকে উৎসর্গ করাই হচ্ছে প্রকৃত ধর্ম, প্রকৃত এবাদত। –জঙ্গিবাদ সংকট, পৃ. ৫৬
তারা তাদের ওয়াজে নসিহতে মানুষকে কেবল নামায, রোজা, হজ্ব ইত্যাদি করার জন্য উপদেশ দেন। এগুলোকে তারা এবাদত ও ধর্মকর্ম বলে মনে করেন। –শিক্ষাব্যবস্থা, পৃ. ৯
অনেক আয়াত থেকে সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে এবাদত ও সালাহ আলাদা বিষয়। –মহাসত্যের আহ্বান, পৃ. ৪৫
এখন মোসলেম দাবিদার জাতির সামনে থেকে দীনের এই উদ্দেশ্য হারিয়ে গেছে, তারা কেবল নামায, রোজা, হজ্বব করাকেই এবাদত হিসাবে ধোরে নিয়ে ভালো মানুষ সবার জন্য জোর প্রচেষ্টা কোরছে। –এসলাম শুধু নাম থাকবে, পৃ. ৮৯
এবাদত হচ্ছে আল্লাহর খেলাফত করা , কিন্তুু ভুল করে নামায , রোযা , হজ্জ , যাকাত ইত্যাদিকে এবাদত বলে মনে করা হচ্ছে । –মহা সত্যের আহ্বান, পৃ . ৯
উক্ত বক্তব্যগুলো দিয়ে তারা তাদের অবস্থান সুস্পষ্ট করেছে যে, নামায কোনো ইবাদত নয়।
ইসলাম কী বলে?
ইসলামে নামায একটি স্বতন্ত্র ইবাদত। এ কথা খোদ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বক্তব্য থেকেই পাওয়া যায়। হজরত আয়েশা রা. বলেন, এক রাতে রাসুলুল্লাহ সা. আমার ঘরে এসে আমার সঙ্গে শয়ন করলেন। কিছুক্ষণ পর আমাকে বললেন,
يا عائشةُ ذَرِيني أتعبَّدِ اللَّيلةَ لربِّي قُلْتُ واللهِ إنِّي لَأُحِبُّ قُرْبَك وأُحِبُّ ما سرَّك قالت فقام فتطهَّر ثمَّ قام يُصَلِّي
হে আয়েশা, আমি আমার রবের ইবাদত করতে চাই। আমাকে যেতে দাও।’ আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহর শপথ করে বলছি, আমি আপনার একান্ত কাছে থাকতে চাই। আবার এও চাই যে, আপনি মহান আল্লাহর ইবাদত করবেন। তিনি বিছানা থেকে উঠে পবিত্র হয়ে সালাতে দাঁড়ালেন। –সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং : ৬২০
উক্ত হাদিসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাযকে ইবাদত বলে আখ্যায়িত করেছেন। সুতরাং যিনি ইসলামের নবী তিনি নামাযকে ইবাদত বলছেন, অথচ হেযবুত তওহীদ সে নামাযকে ইবাদত বলতে নারাজ। তাহলে কী হেযবুত তওহীদ ইসলামকে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর থেকেও বেশি বোঝে? স্বয়ং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে নামাযকে ইবাদত হিসাবে আখ্যায়িত করলেন, সেখানে নামাযকে ইবাদাত থেকে পৃথক করার অধিকার হিযবুত তাওহীদেকে কে দিয়েছে? এটা কী ইসলামের নামে বিকৃতি নয়? অথচ এই মিথ্যাবদী দাজ্জালগুলো আবার নিজেদের মুসলিম বলে পরিচয় দিতে গিয়ে আরেকটা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে লিখেছে–
রসুলুল্লাহ (সা.) যা করেননি, করতে বলেননি তা কোনোদিনও হেজবুত তওহীদ করবে না। -সবার উর্ধ্বে মানবতা : পৃ. ১৪
মন্তব্য (...)
এ সম্পর্কিত আরও প্রবন্ধ
কালিমার মর্মবাণী
কালিমায়ে তাওহীদ لا إله إلا الله محمد رسول الله প্রথম অংশ-তাওহীদে ইলাহী لا إله إلا الله (লা-ইলাহা ইল...
নাজাতের জন্য শিরকমুক্ত ঈমান ও বিদ'আতমুক্ত আমল জরুরী
[প্রদত্ত বয়ান থেকে সংগৃহীত] الحمد لله وكفى وسلام على عباده الذين اصطفى، أما بعد فأعوذ بالله من الشي...
ইসলামের মানদন্ডে পহেলা বৈশাখ ও মঙ্গল শোভাযাত্রা উৎপত্তি, ক্রমবিকাশ ও বাংলাদেশের চিত্র
পহেলা বৈশাখ উদযাপন চিত্র: পহেলা বৈশাখ শুরু হয় ভোরে। সূর্যোদয়ের পর পর। মূল অনুষ্ঠান শুরু হয় অবশ্য ...
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন