মা'আরিফুল হাদীস

معارف الحديث

সলাত অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ৩৫১ টি

হাদীস নং: ২০১
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ সালাতুল বিতরে দু'আ কুনূত পাঠ করা
২০১. হযরত উবাই ইবনে কা'ব (রা) থেকে বার্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ সালাতুল বিতরের সালাম ফিরিয়ে বলতেনঃ "সুবহানাল মালিকিল কুদ্দুস (আবূ দাউদ, নাসাঈ এবং তিনি ثلاث مرات يطيل শব্দমালা অতিরিক্ত বর্ণনা করে পাঠ করতেন এবং তা দীর্ঘ করে পাঠ করতেন। আবার অন্য বর্ণনায় আছে يرفع صوته بالثالثة তিনি তৃতীয়বারে এই বাক্যটি উচ্চস্বরে পাঠ করতেন।
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ ، ‏‏‏‏‏‏قَالَ : ‏‏‏‏ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا سَلَّمَ فِي الْوِتْرِ ، ‏‏‏‏‏‏قَالَ : ‏‏‏‏ "سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْقُدُّوسِ". (رواه ابوداؤد والنسائى وزاد “ ثلث مرات يطيل ”)
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ২০২
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ বিতরের পর দুই রাক'আত নফল সালাত
২০২. হযরত উম্মু সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত যে, নবী কারীম ﷺ বিতরের পর আরো দুই রাক'আত সালাত আদায় করতেন। (তিরমিযী)। ইবনে মাজাহর বর্ণনায় অতিরিক্ত রয়েছে তিনি বসে হালকাভাবে দুই রাক'আত সালাত আদায় করতেন।
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُصَلِّي بَعْدَ الوِتْرِ رَكْعَتَيْنِ. (رواه الترمذى وزاد ابن ماجه “ خفيفتين وهو جالس ”)
হাদীস নং: ২০৩
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়ল বা তাহাজ্জুদ সালাতের ফযীলত ও গুরুত্ব

এশা ও ফজর সালাতের মধ্যবর্তী সময়ে কোন ফরয সালাত নেই। কাজেই এশার সালাত যদি প্রথম ওয়াক্তে কিংবা অল্প দেরীতে আদায় করা হয়, তবে ফজর পর্যন্ত দীর্ঘ সময় পাওয়া যায়। গভীর রাতের নীরবতায় পরিবেশ যেরূপ প্রশান্তিময় হয় অন্য সময় তা হয় না। যদি কেউ এশার পরে কিছু সময়ের জন্য নিদ্রা যায় এবং অর্ধেক রাত অতিবাহিত হওয়ার পর (যা তাহাজ্জুদের প্রকৃত সময় উঠে যায় তবে যে একাগ্রতা ও মনোযোগের সাথে সালাত আদায় নসীব হয় তা অন্য সময়) তা সম্ভব নয়। তা ছাড়া, এ সময় শয্যা ত্যাগ করে সালাত আদায় করা প্রবৃত্তির শাসন ও প্রশিক্ষণেরও একটি মাধ্যম। কুরআন মাজীদে আছে। إِنَّ نَاشِئَةَ اللَّيْلِ هِيَ أَشَدُّ وَطْئًا وَأَقْوَمُ قِيلًا অবশ্যই রাত্রিকালের জাগরণ এমন যা কঠিনভাবে প্রবৃত্তি দলন করে এবং যা কথা বলার পক্ষে উত্তম। (৭৩, সূরা মুযযাম্মিল: ৬)
অন্যত্র বলা হয়েছে- تَتَجَافَى جُنُوبُهُمْ عَنِ الْمَضَاجِعِ يَدْعُونَ رَبَّهُمْ خَوْفًا وَطَمَعًا وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنْفِقُونَ (রাতের বেলা) তাদের পার্শ্বদেশ বিছানা থেকে পৃথক হয়ে যায় এবং তারা নিজ প্রতিপালককে ভয় ও আশার (মিশ্রিত অনুভূতির) সাথে ডাকে। আর আমি তাদেরকে যে রিযক দিয়েছি তা থেকে (সৎকাজে) ব্যয় করে। (৩২, সূরা সাজদা: ১৬) পরের আয়াতে বলা হয়েছে যে, 'এসব আমলকারীদের জন্য রয়েছে জান্নাতে সম্মানজনক পুরস্কার যাতে রয়েছে তাদের জন্য নয়নাভিয়াম বস্তু সামগ্রী। আর এবিষয়ে আল্লাহ্ ব্যতীত কেউ জ্ঞাত নয়।'

কুরআন মাজীদের একস্থানে রাসূলূল্লাহ কে তাহাজ্জুদের নির্দেশ দানের সাথে সাথে 'মাকামে মাহমুদ' দানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে وَمِنَ اللَّيْلِ فَتَهَجَّدْ بِهِ نَافِلَةً لَكَ عَسَى أَنْ يَبْعَثَكَ رَبُّكَ مَقَامًا مَحْمُودًا রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ পড়বে, যা তোমার জন্য এক অতিরিক্ত ইবাদত। আশা করা যায় তোমার প্রতিপালক তোমাকে ‘মাকামে মাহমুদ’-এ পৌঁছাবেন। (১৭, সূরা বনী ইসরাঈল: ৭৯)
'মাকামে মাহমূদ' আখিরাতে এবং জান্নাতে সর্বোচ্চ মর্যাদার অবস্থান হবে। এই আয়াত থেকে জানা গেল যে, 'মাকামে মাহমূদ' এবং তাহাজ্জাদ সালাতের মধ্যে কোন বিশেষ সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে। কাজেই কোন মুসল্লী যদি গভীরভাবে তাহাজ্জুদে অভ্যস্ত হয়, তবে আল্লাহ্ চাহেত 'মাকামে মাহমূদে' নবী কারীম ﷺ এর কোন না কোন পর্যায়ের সাহচর্য তাঁর নসীব হতে পাবে।

সহীহ্ হাদীস সমূহ থেকে জানা যায় যে, রাতের শেষ প্রহরে আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের প্রতি এক বিশেষ দয়া ও রহমত নিয়ে একান্তভাবে মনোনিবেশ করেন। কাজেই আল্লাহর যে সকল বান্দার মনে এ অনুভূতি জাগ্রত থাকে তারা ঐ বরকত পূর্ণ সময় তা বিশেষভাবে অনুভব করে থাকে। এই ভূমিকার পর কিয়ামুল লায়ল তাহাজ্জুদের সাথে সম্পৃক্ত কিছু সংখ্যক হাদীস পাঠ করা যাক।
২০৩. হযরত আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: মহামহিম আল্লাহ্ তা'আলা প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকাকালে নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করে ঘোষণা করতে থাকেন-কে আছে এমন, যে আমাকে ডাকবে? আমি তার ডাকে সাড়া দিব। কে আছে এমন, যে আমার কাছে প্রার্থনা করবে? আমি তার প্রার্থিত বস্তু তাকে দান করব। কে আছে এমন, যে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে? আমি তাকে ক্ষমা করে দিব (বুখারী ও মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ : أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : " يَنْزِلُ رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الآخِرُ يَقُولُ : مَنْ يَدْعُونِي ، فَأَسْتَجِيبَ لَهُ مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ ، مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ " (رواه البخارى ومسلم)
হাদীস নং: ২০৪
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়ল বা তাহাজ্জুদ সালাতের ফযীলত ও গুরুত্ব
২০৪. হযরত আমর ইবনে আবাসা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: আল্লাহ্ তা'আলা রাতের শেষ প্রহরে বান্দার সর্বাধিক নিকটবর্তী হন। কাজেই ঐ মুবারক সময়ে আল্লাহর যিকর করে সম্ভব হলে তখন তুমিও তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যেও। (তিরমিযী)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ عَمْرُو بْنُ عَبَسَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « أَقْرَبُ مَا يَكُونُ الرَّبُّ مِنَ العَبْدِ فِي جَوْفِ اللَّيْلِ الآخِرِ ، فَإِنْ اسْتَطَعْتَ أَنْ تَكُونَ مِمَّنْ يَذْكُرُ اللَّهَ فِي تِلْكَ السَّاعَةِ فَكُنْ » (رواه الترمذى)
হাদীস নং: ২০৫
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়ল বা তাহাজ্জুদ সালাতের ফযীলত ও গুরুত্ব
২০৫. হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: ফরয সালতের পর সর্বোৎকৃষ্ট সালাত হল মধ্যরাতের (তাহাজ্জুদের) সালাত। (মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « أَفْضَلُ الصَّلَاةِ ، بَعْدَ الصَّلَاةِ الْمَكْتُوبَةِ ، الصَّلَاةُ فِي جَوْفِ اللَّيْلِ. (رواه مسلم)
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ২০৬
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়ল বা তাহাজ্জুদ সালাতের ফযীলত ও গুরুত্ব
২০৬. হযরত আবূ উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: তোমাদের তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করা উচিত। কেননা তা তোমাদের পূর্বেকার সজ্জনদের প্রতীক এবং তোমাদের প্রতিপালকের নৈকট্য লাভের বিশেষ মাধ্যম। এ সালাত গুনাহসমূহ বিমোচনকারী। (তিরমিযী)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَبِي أُمَامَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : عَلَيْكُمْ بِقِيَامِ اللَّيْلِ فَإِنَّهُ دَأَبُ الصَّالِحِينَ قَبْلَكُمْ ، وَهُوَ قُرْبَةٌ إِلَى رَبِّكُمْ ، وَمَكْفَرَةٌ لِلسَّيِّئَاتِ ، وَمَنْهَاةٌ لِلإِثْمِ. (رواه الترمذى)
হাদীস নং: ২০৭
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়ল বা তাহাজ্জুদ সালাতের ফযীলত ও গুরুত্ব
২০৭. হযরত মুগীরা ইবনে শু'বা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী কারীম ﷺ (এত দীর্ঘ সময় তাহাজ্জুদের) সালাত আদায় করতেন যে, তাঁর পদযুগল ফুলে যেত। তাঁকে বলা হল, আপনি এত কষ্ট করছেন কেন অথচ আপনার পূর্বাপর ত্রুটিসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে (এবং কুরআন মজীদে এ সম্পর্কে আপনাকে সান্ত্বনা দেওয়া হয়েছে) তিনি বললেন: তাই বলে কি আমি (এ মহা অনুগ্রহের জন্য অধিক ইবাদত করে শোক্ত আদায়কারী বান্দা হব না? (বুখারী ও মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ قَالَ : قَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى تَوَرَّمَتْ قَدَمَاهُ ، فَقِيلَ لَهُ : لِمَ تَصْنَعُ هَذَا وَقَدْ غُفِرَ لَكَ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِكَ وَمَا تَأَخَّرَ ، قَالَ : « أَفَلاَ أَكُونُ عَبْدًا شَكُورًا » (رواه البخارى ومسلم)
হাদীস নং: ২০৮
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়ল বা তাহাজ্জুদ সালাতের ফযীলত ও গুরুত্ব
২০৮. হযরত আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: আল্লাহ্ সেই ব্যক্তির প্রতি সদয় হন যে রাতে ঘুম থেকে জেগে উঠে তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করে এবং তার স্ত্রীকেও জাগায়। তার পর সে (স্ত্রী) সালাত আদায় করে। আর যদি স্ত্রী উঠতে অস্বীকার করে তাহলে তার চেহারায় পানি ছিটিয়ে দেয়। আল্লাহ্ সেই মহিলার প্রতিও সদয় হোন যে রাতে ঘুম থেকে উঠে, তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করে এবং নিজের স্বামীকেও জাগায়। তারপর সে (স্বামী) সালাত আদায় করে। আর যদি স্বামী উঠতে অস্বীকার করে, তাহলে তার চেহারায় পানি ছিটিয়ে দেয়া (আবূ দাউদ ও নাসাঈ)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « رَحِمَ اللَّهُ رَجُلًا قَامَ مِنَ اللَّيْلِ فَصَلَّى ، وَأَيْقَظَ امْرَأَتَهُ فَصَلَّتْ ، فَإِنْ أَبَتْ نَضَحَ فِي وَجْهِهَا الْمَاءَ ، رَحِمَ اللَّهُ امْرَأَةً قَامَتْ مِنَ اللَّيْلِ فَصَلَّتْ ، وَأَيْقَظَتْ زَوْجَهَا ، فَإِنْ أَبَى نَضَحَتْ فِي وَجْهِهِ الْمَاءَ » (رواه ابوداؤد والترمذى)
হাদীস নং: ২০৯
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ তাহাজ্জুদ সালাতের কাযা ও তার প্রতি বিধান
২০৯. হযরত উমর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: যে ব্যক্তি নিজের নির্ধারিত ওয়াযীফা বা এর কোন অংশ না পড়েই ঘুমিয়ে পড়ে, তারপর তা ফজর ও যুহরের মাঝখানে পড়ে, তার জন্য এমন সাওয়াব লেখা হয় যেন সে রাতেই তা আদায় করেছে। (মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ عُمَرَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « مَنْ نَامَ عَنْ حِزْبِهِ ، أَوْ عَنْ شَيْءٍ مِنْهُ ، فَقَرَأَهُ فِيمَا بَيْنَ صَلَاةِ الْفَجْرِ ، وَصَلَاةِ الظُّهْرِ ، كُتِبَ لَهُ كَأَنَّمَا قَرَأَهُ مِنَ اللَّيْلِ » (رواه مسلم)
হাদীস নং: ২১০
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ তাহাজ্জুদ সালাতের কাযা ও তার প্রতি বিধান
২১০. হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত যে, রোগব্যাধি কিংবা অন্য কোন কারণে যদি রাসূলুল্লাহ ﷺ তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করতে না পারতেন তবে তিনি দিনের বেলায় বার রাক'আত সালাত আদায় করে নিতেন। (মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ عَائِشَةَ ، أَنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ « كَانَ إِذَا فَاتَتْهُ الصَّلَاةُ مِنَ اللَّيْلِ مِنْ وَجَعٍ ، أَوْ غَيْرِهِ ، صَلَّى مِنَ النَّهَارِ ثِنْتَيْ عَشْرَةَ رَكْعَةً » (رواه مسلم)
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ২১১
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ রাসূলুল্লাহ ﷺ কত রাক'আত তাহাজ্জুদ আদায় করতেন?
২১১. হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: নবী কারীম ﷺ -এর রাতের সালাতের সংখ্যা ছিল তের। এর মধ্যে বিতর এবং ফজরের দুই রাক'আত (সুন্নাত)ও রয়েছে। (মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ : « كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً مِنْهَا الوِتْرُ ، وَرَكْعَتَا الفَجْرِ » (رواه مسلم)
হাদীস নং: ২১২
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ রাসূলুল্লাহ ﷺ কত রাক'আত তাহাজ্জুদ আদায় করতেন?
২১২. হযরত মাসরূক (র.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি হযরত আয়েশা (রা.) কে রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর রাতের সালাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন: তিনি ফজরের দুই রাক'আত (সুন্নাত) ছাড়াও সাত বা নয় কিংবা এগার রাক'আত সালাত আদায় করতেন। (বুখারী)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ مَسْرُوقٍ ، قَالَ : سَأَلْتُ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا ، عَنْ صَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِاللَّيْلِ؟ فَقَالَتْ : « سَبْعٌ ، وَتِسْعٌ ، وَإِحْدَى عَشْرَةَ ، سِوَى رَكْعَتِي الفَجْرِ » (رواه البخارى)
হাদীস নং: ২১৩
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ রাসূলুল্লাহ ﷺ তাহাজ্জুদ সালাতের বিস্তারিত বিশ্লেষণ
২১৩. হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন রাতে সালাত আদায়ের জন্য উঠতেন তখন প্রথমে হালকাভাবে দুই রাক'আত সালাত দিয়ে শুরু করতেন। (মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : « كَانَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا قَامَ مِنَ اللَّيْلِ لِيُصَلِّيَ ، افْتَتَحَ صَلَاتَهُ بِرَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ » (رواه مسلم)
হাদীস নং: ২১৪
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ রাসূলুল্লাহ ﷺ তাহাজ্জুদ সালাতের বিস্তারিত বিশ্লেষণ
২১৪. হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত যে, তিনি এক রাতে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকট শুইলেন। তারপর (তাহাজ্জুদের সময় হলে) জাগ্রত হয়ে মিসওয়াক ও উযূ করেন। তিনি তখন পাঠ করছিলেন- إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاخْتِلَافِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ لَآيَاتٍ لِأُولِي الْأَلْبَابِ "আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর সৃষ্টিতে দিন ও রাতের পরিবর্তনে নিদর্শনাবলী রয়েছে বোধশক্তিসম্পন্ন লোকদের জন্য।" (৩, সূরা আলে ইমরান: ১৯০) এই আয়াত থেকে সূরার শেষ পর্যন্ত তিলাওয়াত করেন। তারপর দাঁড়িয়ে দুই রাক'আত সালাত আদায় করেন এবং তাতে কিয়াম, রুকূ ও সিজদা দীর্ঘায়িত করে তিনি কিছু সময়ের জন্য ঘুমিয়ে পড়েন। এমনকি তাঁর নাক ডাকার শব্দ হতে লাগল। এভাবে তিন বার করেন (অর্থাৎ তিনবার কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে উঠে মিসওয়াক ও উযূ করে দীর্ঘ কিয়াম, রুকু ও সিজদাসহ দু'রাক'আত পড়লেন)। এমনিভাবে তিনি (প্রথম দু' রাক'আত ব্যতীত) মোট ছয় রাক'আত পড়লেন। এবং প্রত্যেক বার উঠে তিনি মিস্ওয়াক করেন ও উযূ করেন এবং সূরা আলে ইমরানের ঐ আয়াতসমূহ পাঠ করেন। এরপর তিন রাক'আত বিতর নামায আদায় করেন। তারপর মু'আযযিন আযান দিলে তিনি সালাতের উদ্দেশ্যে বের হন। তখন তিনি বলছিলেন" হে আল্লাহ্! দান কর আমার হৃদয়ে নূর, আমার জিহবায় নূর, আমার কানে নূর, আমার চোখে নূর, আমার পেছনে নূর, আমার সম্মুখে নূর, আমার উপরে নূর আমার নিছে নূর। হে আল্লাহ্! আমাকে নূর দান কর।" (মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ ، أَنَّهُ رَقَدَ عِنْدَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَاسْتَيْقَظَ فَتَسَوَّكَ وَتَوَضَّأَ وَهُوَ يَقُولُ : {إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاخْتِلَافِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ لَآيَاتٍ لِأُولِي الْأَلْبَابِ} فَقَرَأَ هَؤُلَاءِ الْآيَاتِ حَتَّى خَتَمَ السُّورَةَ ، ثُمَّ قَامَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ ، فَأَطَالَ فِيهِمَا الْقِيَامَ وَالرُّكُوعَ وَالسُّجُودَ ، ثُمَّ انْصَرَفَ فَنَامَ حَتَّى نَفَخَ ، ثُمَّ فَعَلَ ذَلِكَ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ سِتَّ رَكَعَاتٍ ، كُلَّ ذَلِكَ يَسْتَاكُ وَيَتَوَضَّأُ وَيَقْرَأُ هَؤُلَاءِ الْآيَاتِ ، ثُمَّ أَوْتَرَ بِثَلَاثٍ ، فَأَذَّنَ الْمُؤَذِّنُ فَخَرَجَ إِلَى الصَّلَاةِ ، وَهُوَ يَقُولُ : « اللهُمَّ اجْعَلْ فِي قَلْبِي نُورًا ، وَفِي لِسَانِي نُورًا ، وَاجْعَلْ فِي سَمْعِي نُورًا ، وَاجْعَلْ فِي بَصَرِي نُورًا ، وَاجْعَلْ مِنْ خَلْفِي نُورًا ، وَمِنْ أَمَامِي نُورًا ، وَاجْعَلْ مِنْ فَوْقِي نُورًا ، وَمِنْ تَحْتِي نُورًا ، اللهُمَّ أَعْطِنِي نُورًا » (رواه مسلم)
হাদীস নং: ২১৫
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ রাসূলুল্লাহ ﷺ তাহাজ্জুদ সালাতের বিস্তারিত বিশ্লেষণ
২১৫. হযরত হুযায়ফা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি একবার নবী কারীম ﷺ কে তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করতে দেখেন।। তিনি সালাত শুরু করতে গিয়ে বলেন, আল্লাহু আব্বার, আল্লাহু আব্বার, আল্লাহু আকবার (আল্লাহ্ সর্বশ্রেষ্ঠ) তিনি সর্বস্বত্বের অধিকারী, প্রভাবশালী, মহোত্তম ও সম্মানিত। তারপর সালাত শুরু করেন এবং (সূরা ফাতিহার পর) সূরা বাকারা পাঠ করেন। এর পর প্রায় কিয়ামের সমপরিমাণ (দীর্ঘ) সময় রুকূ করেন এবং রুকূতে 'সুবহানা রাব্বিয়াল আযীম' পাঠ করেন। তারপর রুকু থেকে মাথা উঠান এবং প্রায় রুকুর সমপরিমাণ সময় দাঁড়িয়ে 'লি রাব্বিয়াল হামদ' (আমার প্রতিপালকের জন্যই সকল প্রশংসা), সিজদায় গিয়ে 'সুবহানা রব্বিয়াল আলা' পাঠ করেন (সিজদা ও দাড়াঁনোর মত দীর্ঘ ছিল)। তারপর সিজদা থেকে মাথা উঠান এবং দুই সিজদার মাঝখানে প্রায় সিজদা পরিমাণ সময় বসে 'রাব্বিগ ফিরলী রাব্বিগ ফিরলী' (হে আমার প্রতিপালক আমাকে ক্ষমা কর, হে আমার 'প্রতিপালক! আমাকে ক্ষমা কর) পাঠ করেন। এভাবে তিনি চার রাক'আত সালাতে সূরা বাকারা, সূরা আলে ইমরান, সূরা নিসা ও সূরা মায়িদা অথবা সূরা আন'আম পাঠ করেন। বর্ণনাকার তার উস্তাদ আমর ইবনে মুররা শেষ রাক'আতে মায়িদা না আন'আম পাঠ করার কথা বলেছিলেন সে বিষয় সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। (আবূ দাউদ)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ حُذَيْفَةَ ، أَنَّهُ رَأَى النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ ، فَكَانَ يَقُولُ : اللَّهُ أَكْبَرُ ثَلَاثًا ذُو الْمَلَكُوتِ وَالْجَبَرُوتِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْعَظَمَةِ » ، ثُمَّ اسْتَفْتَحَ فَقَرَأَ الْبَقَرَةَ ، ثُمَّ رَكَعَ فَكَانَ رُكُوعُهُ نَحْوًا مِنْ قِيَامِهِ ، فَكَانَ يَقُولُ فِي رُكُوعِهِ : « سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ » ، ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ ، فَكَانَ قِيَامُهُ نَحْوًا مِنْ رُكُوعِهِ ، يَقُولُ : لِرَبِّيَ الْحَمْدُ ، ثُمَّ سَجَدَ ، فَكَانَ سُجُودُهُ نَحْوًا مِنْ قِيَامِهِ ، فَكَانَ يَقُولُ فِي سُجُودِهِ : « سُبْحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلَى » ، ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ السُّجُودِ ، وَكَانَ يَقْعُدُ فِيمَا بَيْنَ السَّجْدَتَيْنِ نَحْوًا مِنْ سُجُودِهِ ، وَكَانَ يَقُولُ : « رَبِّ اغْفِرْ لِي ، رَبِّ اغْفِرْ لِي » ، فَصَلَّى أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ ، قَرَأَ فِيهِنَّ الْبَقَرَةَ ، وَآلَ عِمْرَانَ ، وَالنِّسَاءَ ، وَالْمَائِدَةَ ، أَوِ الْأَنْعَامَ ، شَكَّ شُعْبَةُ. (رواه ابوداؤد)
হাদীস নং: ২১৬
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ রাসূলুল্লাহ ﷺ তাহাজ্জুদ সালাতের বিস্তারিত বিশ্লেষণ
২১৬. হযরত আবূ যার (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ ﷺ রাতে সালাত আদায়ের জন্য দাঁড়ান এবং একটি মাত্র আয়াত পাঠ করতে করতে ভোর হয়ে যায়, আয়াতটি হলো- إِنْ تُعَذِّبْهُمْ فَإِنَّهُمْ عِبَادُكَ وَإِنْ تَغْفِرْ لَهُمْ فَإِنَّكَ أَنْتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ "তুমি যদি তাদের শাস্তি দাও, তবে তারা তো তোমারই বান্দা আর যদি তাদের ক্ষমা কর, তবে তুমি তো পারাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়" (৫, সূরা মায়িদা: ১১৮) (নাসায়ী ও ইবনে মাজাহ)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَبَىْ ذَرٍّ قَالَ : " قَامَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى إِذَا أَصْبَحَ بِآيَةٍ ، وَالْآيَةُ {إِنْ تُعَذِّبْهُمْ فَإِنَّهُمْ عِبَادُكَ ، وَإِنْ تَغْفِرْ لَهُمْ فَإِنَّكَ أَنْتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ} (رواه النسائى وابن ماجه)
হাদীস নং: ২১৭
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ রাসূলুল্লাহ ﷺ তাহাজ্জুদ সালাতের বিস্তারিত বিশ্লেষণ
২১৭. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন: নবী কারীম ﷺ-এর রাতের সালাতের কিরা'আত কখনো উচু স্বরে হত আবার কখনো নিচুস্বরে হত। (আবু দাউদ)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، قَالَ : « كَانَتْ قِرَاءَةُ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِاللَّيْلِ يَرْفَعُ طَوْرًا ، وَيَخْفِضُ طَوْرًا » (رواه ابوداؤد)
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ২১৮
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ রাসূলুল্লাহ ﷺ তাহাজ্জুদ সালাতের বিস্তারিত বিশ্লেষণ
২১৮. হযরত আবু কাতাদা (রা) থেকে বর্ণিত যে, এক রাতে রাসূলুল্লাহ ﷺ নিজ ঘর হতে বের হন এবং আবূ বাকর (রা) কে নিচুস্বরে সালাতে কিরা'আত পাঠ করতে দেখেন। হযরত উমর (রা) এর নিকট দিয়ে যাবার সময় তাঁকে উচুঃস্বরে সালাতে কিরা'আত পাঠ করতে শুনেন। তারপর তাঁরা উভয়ে নবী কারীম ﷺ এর খিদমতে এল, তিনি আবূ বাকর (রা) কে আমি তোমার কাছ দিয়ে যাবার সময় তোমাকে নিচুস্বর সালাতে কিরা'আত পাঠ করতে দেখেছি। তিনি (আবূ বাকর) বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমি যার কাছে আরযি পেশ করছিলাম, তিনি (আল্লাহ্) তা শুনেছেন। এরপর উমর (রা) বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমি উচুঃস্বরে কিরা'আত পাঠ করে অলস নিদ্রিতদের এবং শয়তান তাড়াবার ইচ্ছা করেছিলাম। এর পর নবী কারীম ﷺ বললেনঃ হে আবূ বাকর! তোমার স্বর কিছুটা উচু করবে আর উমরকে বললেন তোমার স্বর খানিকটা নিচু করবে। (আবূ দাউদ)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَبِي قَتَادَةَ ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ لَيْلَةً ، فَإِذَا هُوَ بِأَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ يُصَلِّي يَخْفِضُ مِنْ صَوْتِهِ ، قَالَ : وَمَرَّ بِعُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ ، وَهُوَ يُصَلِّي رَافِعًا صَوْتَهُ ، قَالَ : فَلَمَّا اجْتَمَعَا عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : « يَا أَبَا بَكْرٍ ، مَرَرْتُ بِكَ وَأَنْتَ تُصَلِّي تَخْفِضُ صَوْتَكَ » ، قَالَ : قَدْ أَسْمَعْتُ مَنْ نَاجَيْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ ، قَالَ : وَقَالَ لِعُمَرَ : « مَرَرْتُ بِكَ ، وَأَنْتَ تُصَلِّي رَافِعًا صَوْتَكَ » ، قَالَ : فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، أُوقِظُ الْوَسْنَانَ ، وَأَطْرُدُ الشَّيْطَانَ - زَادَ الْحَسَنُ فِي حَدِيثِهِ : - فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « يَا أَبَا بَكْرٍ ارْفَعْ مِنْ صَوْتِكَ شَيْئًا » ، وَقَالَ لِعُمَرَ : « اخْفِضْ مِنْ صَوْتِكَ شَيْئًا » . (رواه ابوداؤد)
হাদীস নং: ২১৯
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ চাশত অথবা ইশরাকের সালাত

এশা থেকে ফজর পর্যন্ত এই দীর্ঘ সময়ে কোন ফরয সালাত নেই। তাই নবী কারীম ﷺ এই সময়ের মধ্যে কয়েক রাক'আত তাহাজ্জুদ সালাত আদায়ের জন্য উৎসাহ দান করেছেন। একইভাবে ফজর থেকে শুরু করে যুহর পর্যন্ত এই দীর্ঘ সময়ে কোন ফরয সালাত নেই। কাজেই এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে কমপক্ষে দুই কিংবা তাতোধিক রাক'আত সালাতুদ-দুহা বা চাশতের সালাত আদায় করার ব্যাপারে অনুপ্রাণিত করা হয়েছে। যদি সূর্যোদয়ের কিছুক্ষণ পরেই এই সালাত আদায় করা হয়, তবে তাকে ইশরাক এবং সূর্যের আলো খানিকটা উপরে উঠার পর আদায় করা হলে তাকে 'চাশত' বলা হয়।

হযরত শাহ ওয়ালী উল্লাহ্ (র) এ সালাতের হিকমত বর্ণনা প্রসঙ্গে যা লিখেছেন তার সারমর্ম নিম্নরূপ "আরবদের নিকট ফজর থেকে দিনের সূচনা হয় এবং তাকে তারা চার প্রহরের প্রথম প্রহর বলে। আল্লাহর হিকমতের দাবী হচ্ছে, এই প্রহরের কোন প্রহর যেন সালাতবিহীন না কাটে এই জন্যই প্রথম প্রহরের শুরুতে ফজর সালাত ফরয করা হয়েছে এবং তৃতীয় ও চতুর্থ প্রহরে যথাক্রমে যুহর ও আসরের সালাত আদায় করা হয় এবং দ্বিতীয় প্রহরে মানুষ যেহেতু জীবিকা অন্বেষণে ব্যাপৃত থাকে তাই সে সময়কে ফরয সালাত মুক্ত রাখা হয়েছে। এসময়ের মধ্যে নফল ও মুস্তাহাবরূপে চার সালাত রাখা হয়েছে। এর ফযীলাত ও বরকত বর্ণনা করে তা আদায়ের ব্যাপারে সবিশেষ অনুপ্রাণিত করা হয়েছে। যে ব্যক্তি তার প্রচণ্ড ব্যস্ততার নিগড় থেকে বেরিয়ে এসে ঐ সময়ে কয়েক রাক'আত সালাত আদায় করবে তার জন্য সফলতা অনিবার্য।

চাশতের সালাত কমপক্ষে দুই রাক'আত আদায় করা চাই। তবে চার কিংবা আট রাক'আত আদায় করা আরো উত্তম। (হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা)
এই ভূমিকার পর চাশতের সালাত সম্পর্কীয় নিম্নোক্ত হাদীসসমূহ পাঠ করা যেতে পারে।
২১৯. হযরত আবূ যার (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: ভোর হওয়া মাত্র তোমাদের প্রত্যেকের প্রতিটি গ্রন্থির জন্য (সুস্থভাবে উঠা আল্লাহর শুকুর স্বরূপ) একটি করে সাদাকা (সাওয়াবের কাজ করা আবশ্যক। সাওয়াবের তালিকা দীর্ঘ) তোমাদের প্রত্যেক 'সুবহানাল্লাহ্' বলাই একটি সাদাকা, প্রত্যেক 'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু' বলাই একটি সাদাকা, প্রত্যেক 'আল্লাহু আকবার' বলাই একটি সাদাকা, সৎকাজের আদেশ দান একটি সাদাকা এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করাও একটি সাদাকা। তবে চাশতের সময় দুই রাক'আত সালাত আদায় করা ঐ শোকর আদায়ের জন্য যথেষ্ট। (মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « يُصْبِحُ عَلَى كُلِّ سُلَامَى مِنْ أَحَدِكُمْ صَدَقَةٌ ، فَكُلُّ تَسْبِيحَةٍ صَدَقَةٌ ، وَكُلُّ تَحْمِيدَةٍ صَدَقَةٌ ، وَكُلُّ تَهْلِيلَةٍ صَدَقَةٌ ، وَكُلُّ تَكْبِيرَةٍ صَدَقَةٌ ، وَأَمْرٌ بِالْمَعْرُوفِ صَدَقَةٌ ، وَنَهْيٌ عَنِ الْمُنْكَرِ صَدَقَةٌ ، وَيُجْزِئُ مِنْ ذَلِكَ رَكْعَتَانِ يَرْكَعُهُمَا مِنَ الضُّحَى » (رواه مسلم)
হাদীস নং: ২২০
সলাত অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ চাশত অথবা ইশরাকের সালাত
২২০. হযরত আবু দারদা ও হযরত আবূ যার (রা.) থেকে বর্ণিত। তাঁরা বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ আল্লাহর পক্ষ থেকে বলেছেন যে, আল্লাহ্ বলেনঃ হে আদম সন্তান! তুমি আমার জন্য দিনের শুরুতে চার রাক'আত সালাত আদায় কর, আমি দিনের শেষ প্রহর পর্যন্ত তোমার জন্য যথেষ্ট হবো। (তিরমিযী)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ ، وَأَبِي ذَرٍّ ، عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ اللهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى أَنَّهُ قَالَ : ابْنَ آدَمَ ارْكَعْ لِي أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ مِنْ أَوَّلِ النَّهَارِ أَكْفِكَ آخِرَهُ. (رواه الترمذى)