ঈমান না থাকলেও জান্নাতে যাওয়া যাবে! হেযবুত তওহীদ। পর্ব–৬১
ঈমান না থাকলেও জান্নাতে যাওয়া যাবে! হেযবুত তওহীদ। পর্ব–৬১
জান্নাতে যাওয়ার প্রথম ও পূর্বতম শর্ত হলো, ঈমান আনয়ন করা। কিন্তু হেযবুত তওহীদ বেঈমানদেরও জান্নাতের টিকেট ধরিয়ে দিচ্ছে। হেযবুত তওহীদ কী বলে? হেযবুত তওহীদ মূলত তওহীদের স্লোগানে মানুষকে তওহীদ থেকেই আলাদা করতে চায়। তারা ঘুরিয়ে পেচিয়ে ঠিক এ মতবাদটাই প্রতিষ্ঠিত করতে চায় যে, জান্নাতে যাওয়ার জন্য তাওহীদ, ঈমান বা ইসলামের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। যদিও তারা প্রকাশ্যভাবে এ দাবীটা করে না। তবে তাদের নিন্মোক্ত বক্তব্যগুলো পড়লেই বুঝবেন, তারা কী বলতে চায়। চলুন, তাদের মতবাদটা বুঝে নেওয়া যাক। তারা বলে– এক. ধর্ম পরিবর্তন করানো ইসলামের কাজ না মানুষের ব্যক্তিগত ধর্ম পরিবর্তন করা এসলামের উদ্দেশ্য নয়, এসলামের মূল উদ্দেশ্য সামষ্টিক জীবনে ন্যায়-সুবিচার শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। -আসুন সিস্টেমটাকেই পাল্টাই, পৃ. ১৮ দুই. ঈমান ও ইসলাম হেযবুত তওহীদের মিশন নয় আমরা কাউকে ইসলাম হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান বা ইহুদী ইত্যাদি কোন বিশেষ ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট করছি না। আমাদের কথা হচ্ছে যার যার ধর্ম বিশ্বাস তার তার কাছে। আমরা যদি শান্তিতে জীবন যাপন করতে চাই, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি শান্তিময় জীবন উপহার দিতে চাই তার জন্য আমাদেরকে সকল প্রকার কলহ-বিবাদ ও সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে'। –মহাসত্যের আহ্বান, পৃ. ১০৫ মানবজাতির বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা কাউকে কোন বিশেষ ধর্মের দিকে আকৃষ্ট করাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছি না। -সবার উর্ধ্বে মানবতা, পৃ. ১০ তিন. ঈমান আনানো হেযবুত তওহীদের কাজ নয় ডান-বাম যা-ই হোন না কেন, মানুষের অশ্রুতে যার হৃদয় সিক্ত হয়, ঘুঁনে ধরা সমাজটিকে যারা পুননির্মাণ করতে চান, সর্বপ্রকার অবিচার অত্যাচার ও শোষণের প্রতিবাদে যার হাত মুষ্টিবদ্ধ হয়ে ওঠে, সেই মানবধর্মের অনুসারীদের প্রতি আমাদের আহ্বান- আসুন, পথ পাওয়া গেছে। -শ্রেণীহীন সমাজ সাম্যবাদ প্রকৃত ইসলাম, পৃ. ১২ আমরা বলি না যে, আপনারা আল্লাহ বিশ্বাসী হয়ে যান, মো’মেন হয়ে যান, পরকালে বিশ্বাসী হয়ে যান, আল্লাহর প্রতি কে ঈমান আনবে না আনবে সেটা তারা আল্লাহ সঙ্গে বুঝবে। সুতরাং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করানো আমাদের কাজ নয়। -শ্রেণীহীন সমাজ সাম্যবাদ প্রকৃত ইসলাম, পৃ. ৫২ প্রিয় পাঠক, হেযবুত তওহীদের উপরোক্ত তিনটা দাবী থেকে বুঝা গেলো, হেযবুত তওহীদের মূল দাবী হলো– ক. ধর্ম পরিবর্তন করানো ইসলামের কাজ না। খ. ঈমান ও ইসলাম হেযবুত তওহীদের মিশন নয়। গ. ঈমান আনানো হেযবুত তওহীদের কাজ নয়। অথচ তারাই আবার বলছে– হেযবুত তওহীদে যারা সত্যিকার ভাবে এসেছ তাদের জন্য জান্নাত তো নিশ্চিত।এইখানেও যেন কারো মনে কোন সন্দেহ না থাকে যে জান্নাত নিশ্চিত। –আল্লাহর মো’জেজা হেযবুত তওহীদের বিজয় ঘোষণা, পৃ. ৬৩ এনশা'আল্লাহ সমস্ত মানবজাতিকে এই আসন্ন মহা বিপর্যয়ের হাত থেকে উদ্ধার কোরতে পারবে একমাত্র হেযবুত তওহীদ। এটাই আমাদের মূল কথা। সুতরাং যতই অপপ্রচার করা হোক আল্লাহই সমস্ত মানবজাতির উদ্ধারকর্তা হিসেবে হেযবুত তাওহীদকে মনোনীত করেছেন, মানবজাতিকে এই অবস্থা থেকে উদ্ধার করার সমাধান আল্লাহ হেযবুত তওহীদর কাছেই দিয়েছেন। তাই এই মহাসত্যকে যারা গ্রহন করবে না, তাদের মুক্তির উপায় নাই। –এ জাতির পায়ে লুটিয়ে পড়বে বিশ্ব, পৃ. ৫১ এখন এ জাতির সামনে একটি মাত্র পথ খোলা আছে, তা হলো এ যামানার এমাম (The Leader of the Time) জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীর এই ডাক গ্রহণ করে বর্তমানের প্রচলিত বিকৃত ও বিপরীতমুখী ইসলাম ত্যাগ করে প্রকৃত ইসলাম গ্রহণ করতে হবে। –মহাসত্যের আহ্বান, পৃ. ১৫ অর্থাৎ তারা বুঝাতে চায়, হেযবুত তওহীদ গ্রহণ করলেই জান্নাত, আর না করলে তার মুক্তি নেই, মানে জাহান্নামী। তাহলে ফলাফল কী দাঁড়ালো? তারা আগে বললো, ১. ইসলাম হেযবুত তওহীদের মিশন নয়। ২. ঈমান আনানো হেযবুত তওহীদের কাজ নয়। আবার পরে বললেন, ১. হেযবুত তওহীদে থাকলে নিশ্চিত জান্নাত। ২. হেযবুত তওহীদে না আসলে জান্নাত নেই। তার মানে দাঁড়ালো, ইসলাম ও ঈমান না থাকলেও শুধু হেযবুত তওহীদের মতবাদ গ্রহণ করলেই জান্নাতে যাওয়া যাবে। জি হ্যাঁ, এটাই তাদের মতবাদ। তবে তারা একটা শর্ত করেছে জান্নাতে যাওয়ার। সেটা হলো, মানুষের কষ্ট অনুভব করা তথা মানবসেবায় নিজেকে নিয়োজিত করা। এজন্য তারা আরও লিখেছে, কাজেই এই আদর্শিক লড়াইয়ে বাম আদর্শের সৈনিকদেরকেও এগিয়ে আসতে হবে। আমরা বলছি না যে, আপনাকে বিশেষ কোনো ধর্মে বিশ্বাসী হতে হবে। সেটা আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। মানুষকে বাঁচানোর জন্য জঙ্গিবাদ, ধর্মব্যবসা, স্বার্থের রাজনীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করা দরকার মোটিভেশন করা দরকার সেটা ত্যাগী মানুষদেরকে দিয়েই হবে। আমাদের ইহকালের সমস্যা তাই সমাধানটাও ইহকালের হিসেবেই করতে চাই। পবিত্র কোর'আনে আছে যার ইহকাল ভালো তার পরকালও ভালো। -আদর্শিক লড়াই, পৃ. ১৪, (pdf) পৃ. ১১ আজকে সমস্ত দুনিয়াময় ওহে কথিত ধার্মিকরা, ওহে মোসলমান ভাইয়েরা, ওহে হিন্দু ভাইয়েরা, ওহে বৌদ্ধ ভাইয়েরা, ওহে খ্রিষ্টান ভাইয়েরা, আপনারা কেউ আরবীয় লেবাস ধরে, গেরুয়া বসন পরে, মসজিদে গিয়ে, মন্দিরে গিয়ে, গীর্জায় গিয়ে ভাবছেন আপনারা আল্লাহকে-ভগবান-ঈশ্বরকে পেয়ে গেছেন? জান্নাতে যাবেন, স্বর্গে যাবেন, হ্যাভেনে যাবেন? আমি বিনীতভাবে বলতে চাই, আমাকে ভুল বুঝবেন না । মানবতা যখন বিপর্যস্থ, মানুষ যখন ত্রাহী সুরে চিৎকার করে, তখন মানুষকে শান্তি না দিয়ে, মানুষকে মুক্তি না দিয়ে কারো কোনো ধর্ম পরিচয় থাকবে না। এই ধর্ম পরিচয় অর্থহীন। কাজেই ধর্মের প্রকৃত শিক্ষাই হচ্ছে মানুষের শান্তি। মানুষের মুক্তি। এইজন্যই সমস্ত নবী-রসুলগণ, সমস্ত অবতারগণ, মহামানবগণ এই লক্ষ্যে সংগ্রাম করে গেছেন । সুতরাং আজ সারা দুনিয়াময় মানবতা বিপর্যস্থ। এই মানুষকে রক্ষার জন্য আপনারা এগিয়ে আসুন। তাহলে আপনারা হবেন ধার্মিক, আপনারা হবেন মো'মেন। আপনারা হবেন আল্লাহর প্রিয় বান্দা। আপনাদের জন্য জান্নাত-স্বর্গ রয়েছে। –সূত্রাপুরে এমামের ভাষণ, পৃ. ২১ ডান-বাম যা-ই হোন না কেন, মানুষের অশ্রুতে যার হৃদয় সিক্ত হয়, ঘুঁনে ধরা সমাজটিকে যারা পুননির্মাণ করতে চান, সর্বপ্রকার অবিচার অত্যাচার ও শোষণের প্রতিবাদে যার হাত মুষ্টিবদ্ধ হয়ে ওঠে, সেই মানবধর্মের অনুসারীদের প্রতি আমাদের আহ্বান- আসুন, পথ পাওয়া গেছে। –শ্রেণীহীন সমাজ সাম্যবাদ প্রকৃত ইসলাম, পৃ. ১২ আর এ ধর্ম পালন করা অর্থাৎ মানুষের শান্তির লক্ষ্যে কাজ করাই মানুষের প্রকৃত এবাদত। মানুষ যেন দরজা খুলে ঘুমাতে পারে; আতঙ্কহীন, ভয়ভীতিহীন একটি নিরাপদ সমাজে জীবনধারণ করতে পারে এমন পরিবেশ তৈরি করাই তার এবাদত। নবী-রসূল-অবতারগণ এ লক্ষ্যেই সংগ্রাম করে গেছেন। এ কাজ যারা করবে তারাই স্রষ্টার সান্নিধ্য ও সন্তুষ্টি পাবে, তারাই প্রকৃত মোমেন বা বিশ্বাসী'। -মহাসত্যের আহ্বান, পৃ. ৮৩ এক কথায় মানুষকে সুখ-শান্তি নিরপত্তার মধ্যে রাখার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোই মানুষের প্রকৃত এবাদত। এই এবাদত করলে সে পরকালে জান্নাত পাবে। –মহাসত্যের আহ্বান, পৃ. ৫১ মানুষের ধর্ম কি? মানুষের ধর্ম হচ্ছে মানবতা। অর্থাৎ যে ব্যক্তি অন্যের দুঃখ কষ্ট হৃদয়ে অনুভব করে এবং সেটা দূর করার জন্য আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালায় সে-ই ধার্মিক। অথচ প্রচলিত ধারণা হচ্ছে যে ব্যক্তি নির্দিষ্ট লেবাস ধারণ করে সুরা কালাম, শাস্ত্র মুখস্থ বলতে পারে, নামাজ-রোযা,পূজা, প্রার্থনা করে সে-ই ধার্মিক'। -মহাসত্যের আহ্বান, পৃ. ৪৫ অর্থাৎ উপরিউক্ত তাদের সকল দাবীগুলো একত্রিত করলে যে ফলাফল বের হবে তা হলো, হেযবুত তওহীদ গ্রহণ করে মানবসেবা করলেই জান্নাত সুনিশ্চিত। এ ক্ষেত্রে ইসলাম ও ঈমান গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক নয়। একটি অভিযোগ হয়তো অনেকে বলতে পারেন যে, তারা তো তাওহীদের কথা বলে, তাহলে এটা কিভাবে মানতে পারি যে তারা ঈমানের শর্ত দেয় না? জবাব এক. উপরে বরা হয়েছে যে, তাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য হলো, আমরা বলি না যে, আপনারা আল্লাহ বিশ্বাসী হয়ে যান, মো’মেন হয়ে যান, পরকালে বিশ্বাসী হয়ে যান, আল্লাহর প্রতি কে ঈমান আনবে না আনবে সেটা তারা আল্লাহ সঙ্গে বুঝবে। সুতরাং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করানো আমাদের কাজ নয়। -শ্রেণীহীন সমাজ সাম্যবাদ প্রকৃত ইসলাম, পৃ. ৫২ তারা নিজেরাই বলেছে, ঈমান তাদের কাজ নয়। তাহলে ঈমান যাদের মিশনই নয়, তাদের তাওহীদ প্রচারের অর্থ কী? দুই. 'কালেমার অর্থ তাওহীদ বা ঈমান আনয়ণ করা' এটা তো তারা মানেই না। দেখুন, তারা কালেমার অর্থ বিকৃত করে কী অর্থ লিখেছে, ঈমান কি? লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলাল্লাহ আল্লাহর হুকুম ছাড়া কারো হুকুম মানবো না। এর অর্থ কি? এর অর্থ হচ্ছে, যাবতীয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হবো, অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের পক্ষে যারা ঐক্যবদ্ধ হবেন, তারা হবেন মোমেন। এই মোমেনের নামায-রোযা হজ্ব-যাকাত আল্লাহর কাছে কবুল হবে। -সূত্রাপুরে এমামের ভাষণ, পৃ. ৯ তার মানে কালেমার মধ্যেও তারা আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি ঈমানের বিষয়টি উঠিয়ে দিয়েছে। এক কথায় তাদের কাছে জান্নাতে যাওয়ার জন্য ঈমান ও ইসলাম শর্ত নয়। ইসলাম কী বলে? ঈমান হলো একজন মানুষের সবচে বড় অর্জন। কিয়ামতের দিন কোনো বেঈমানের জন্য জান্নাতে প্রবেশ করা সম্ভব নয়। মহান রব্ব বলেন, اللّهُ وَلِيُّ الَّذِينَ آمَنُواْ يُخْرِجُهُم مِّنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّوُرِ وَالَّذِينَ كَفَرُواْ أَوْلِيَآؤُهُمُ الطَّاغُوتُ يُخْرِجُونَهُم مِّنَ النُّورِ إِلَى الظُّلُمَاتِ أُوْلَـئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ আল্লাহ মুমিনদের অভিভাবক। তিনি তাদেরকে অন্ধকার থেকে বের করে আলোতে নিয়ে আসেন। আর যারা কুফর অবলম্বন করেছে তাদের অভিভাবক শয়তান, যারা তাদেরকে আলো থেকে বের করে অন্ধকারে নিয়ে যায়। তারা সকলে অগ্নিবাসী। তারা সর্বদা তাতেই থাকবে। –সুরা বাকারা : ২৫৭ إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُواْ لَن تُغْنِيَ عَنْهُمْ أَمْوَالُهُمْ وَلاَ أَوْلاَدُهُم مِّنَ اللّهِ شَيْئًا وَأُولَـئِكَ هُمْ وَقُودُ النَّارِ নিশ্চয়ই যারা কুফর অবলম্বন করেছে, আল্লাহর বিপরীতে তাদের সম্পদও তাদের কোন কাজে আসবে না এবং তাদের সন্তান-সন্ততিও নয়। আর তারাই জাহান্নামের ইন্ধন। –সুরা আলে ইমরান : ১০ إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا وَمَاتُوا وَهُمْ كُفَّارٌ أُولَئِكَ عَلَيْهِمْ لَعْنَةُ اللّهِ وَالْمَلآئِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ নিশ্চয়ই যারা কুফর অবলম্বন করেছে এবং কাফির অবস্থায়ই মারা গেছে, তাদের প্রতি আল্লাহর, ফিরিশতাদের এবং সমস্ত মানুষের লানত। –সুরা বাকারা : ১৬১ وَالَّذِينَ كَفَرواْ وَكَذَّبُواْ بِآيَاتِنَا أُولَـئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ আর যারা কুফরীতে লিপ্ত হবে এবং আমার আয়াতসমূহ প্রত্যাখ্যান করবে, তারা জাহান্নামবাসী। তারা সেখানে সর্বদা থাকবে। –সুরা বাকারা : ৩৯ وَمَن يَرْتَدِدْ مِنكُمْ عَن دِينِهِ فَيَمُتْ وَهُوَ كَافِرٌ فَأُوْلَـئِكَ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ وَأُوْلَـئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ যদি তোমাদের মধ্যে কেউ নিজ দীন পরিত্যাগ করে, তারপর কাফির অবস্থায় মারা যায়, তবে এরূপ লোকের কর্ম দুনিয়া ও আখিরাতে বৃথা যাবে। তারাই জাহান্নামী। তারা সেখানেই সর্বদা থাকবে। –সুরা বাকারা : ২১৭ উপরন্তু হযরত আবূ হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, কিয়ামতের দিন হযরত ইবরাহীম আ. কে তাঁর বাবার সুপারিশকালে জানিয়ে দেবেন, فَيَقُوْلُ اللهُ إِنِّيْ حَرَّمْتُ الْجَنَّةَ عَلَى الْكَافِرِيْنَ. আল্লাহ্ তা’আলা বলবেন, আমি কাফিরদের উপর জান্নাত হারাম করে দিয়েছি। –সহিহ বুখারী, হাদিস নং : ৪৭৬৯ উপরিউক্ত আয়াত এবং হাদিসহুলো থেকে জানতে পারলাম, কিয়ামতের দিন অস্বীকারকারী কোনো বেঈমান কাফেরকে জান্নাতে যাওয়া সুদূর পরাহত। যদিও সে শ্রেষ্ট মানবতাবাদীও হোক না কেন। অবশ্য যারা মানবতার সেবা বা কোনো ভালো কাজ করবে, তাদের প্রতিদান দুনিয়াতেই মিটিয়ে দেওয়া হবে। শরীফে এসেছে, হযরত আনাস বিন মালেক রা. থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ বলেন, إنَّ الكافِرَ إذا عَمِلَ حَسَنَةً أُطْعِمَ بها طُعْمَةً مِنَ الدُّنْيا وأَمّا المُؤْمِنُ فإنَّ اللَّهَ يَدَّخِرُ له حَسَناتِهِ في الآخِرَةِ ويُعْقِبُهُ رِزْقًا في الدُّنْيا على طاعَتِهِ যে কাফের যদি দুনিয়াতে কোন নেক আমল করে, তবে এর প্রতিদান স্বরূপ দুনিয়াতেই তাকে জীবনোপকরণ প্রদান করা হয়ে থাকে। আর মুমিনদের নেকী আল্লাহ তাআলা আখিরাতের জন্য জমা করে রেখে দেন এবং আনুগত্যের প্রতিফল স্বরূপ আল্লাহ তাআলা তাদেরকে পৃথিবীতেও জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। –সহিহ মুসলিম, হাদিস নং : ২৮০৮ সুতরাং বুঝা গেলো,কাফেরদের জন্য কস্মিনকালেও জান্নাতে প্রবেশ করা সম্ভব হবে না। এটা কুরআন-সুন্নাহ'র দাবী। কিন্তু হেযবুত তওহীদ এ বিষয়টি চরমভাবে অস্বীকার করে দাবী করে যাচ্ছে যে, যদি কেউ হেযবুত তওহীদ গ্রহণ করে মানবতার পক্ষে কাজ করে সে বেঈমান হলেও জান্নাতে যাবে। এরচে বড় মিথ্যাচার আর কুফরী মন্তব্য কী হতে পারে?
মন্তব্য (...)
এ সম্পর্কিত আরও প্রবন্ধ
কুরআনের তাফসীর পড়া যাবে না! হেযবুত তওহীদ পর্ব–১৭
যদি কেউ বড় শিক্ষিত হয়, তবে তার বক্তব্য বুঝতে হলে নিশ্চয় জ্ঞানী হতে হয়, অথবা জ্ঞানীদের থেকে বুঝে নিতে...
মুফতী রিজওয়ান রফিকী
৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
১৯৩০