আয়াতে শেফা (রোগ মুক্তির ৬ টি আয়াত)

পবিত্র কুরআনে কারীমের ৬ টি আয়াত আয়াতে শেফা বা রোগ মুক্তির আয়াত নামে পরিচিত। এগুলো পড়ার পূর্বে সূরা ফাতিহা পড়ে নেয়া উত্তম। আয়াতগুলো হচ্ছে ১. সূরা তাওবার ১৪ নং আয়াত ۞ وَيَشْفِ صُدُوْرَ قَوْمٍ مُّؤْمِنِيْنَ উচ্চারণ- ওয়া ইয়াশফি ছুদু-রা ক্বাওমিম মু’মিনি-ন। অর্থ: এবং আল্লাহ মু’মিনদের (মুসলমানদের) অন্তরসমূহ শান্ত করে দেন। ২. সূরা ইউনূসের ৫৭ নং আয়াত ۞ وَشِفَآءٌ لِّمَا فِی الصُّدُوۡرِ وَهُدًى وَّرَحۡمَۃٌ لِّلۡمُؤۡمِنِیۡنَ উচ্চারণ : ওয়া শিফাউ’ল লিমা- ফিচ্ছুদু-রি ওয়া হুদাও ওয়া রাহমাতুল লিল মু’মিনি-ন। অর্থ: এবং অন্তরের রোগের নিরাময়, হেদায়েত ও রহমত মুসলমানদের জন্য। ৩. সূরা নাহলের ৬৯ নং আয়াত ۞ یَخۡرُجُ مِنۡۢ بُطُوۡنِہَا شَرَابٌ مُّخۡتَلِفٌ اَلۡوَانُہٗ فِیۡہِ شِفَآءٌ لِّلنَّاسِ উচ্চারণ : ইয়াখরুঝু মিমবুতু-নিহা- শারা-বুম মুখতালিফুন, আলওয়ানুহু- ফি-হি শিফা-উ লিন্না-সি। অর্থ: তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙে পানীয় নির্গত হয়। তাতে মানুষের জন্যে রয়েছে রোগের প্রতিকার। ৪. সূরা বনী ইসরাঈলের ৮২ নং আয়াত ۞ وَنُنَزِّلُ مِنَ الۡقُرۡاٰنِ مَا هُوَ شِفَآءٌ وَّرَحۡمَۃٌ لِّلۡمُؤۡمِنِیۡنَ উচ্চারণ : ওয়া নুনাজ্জিলু মিনাল ক্বুরআ’নি মা হুয়া শিফাউও ওয়া রাহমাতুল লিলমু’মিনি-ন। অর্থ: আমি কুরআনে এমন বিষয় নাযিল করি যা রোগের সুচিকিৎসা এবং মুমিনের জন্য রহমত। ৫. সূরা আশ্-শুআরার ৮০ নং আয়াত ۞ وَإِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِيْنِ উচ্চারণ : ওয়া ইজা মারিদতু ফা হুয়া ইয়াশফি-নি। অর্থ: এবং যখন আমি রোগাক্রান্ত হই, তখন তিনিই আরোগ্য দান করেন ৬. সূরা হা-মীম এর ৪৪ নং আয়াত ۞ قُلْ هُوَ لِلَّذِيْنَ آمَنُوْا هُدًى وَّشِفَاءٌ উচ্চারণ: কুল হুওয়া লিল্লাযীনা আ-মানূ হুদাওঁ ওয়া শিফাউন। অর্থ: বলুন, এটা বিশ্বাসীদের জন্য হেদায়েত ও রোগের প্রতিকার
উচ্চারণঃ null
অর্থঃ null
উৎসঃ null
উপকারিতাঃ
বুজুর্গানে দ্বীনের অভিজ্ঞতা থেকে প্রাপ্তঃ কোনো একটি পানিভর্তি পাত্র হাতে নিয়ে মুখের সামনে রেখে আয়াতগুলো একবার মতান্তরে তিনবার পড়ে দম করতে হবে। এবং ওই পানি পান করতে হবে। উপরোক্ত প্রতিটি আয়াতেই কুরআনে মুমিনদের জন্য ‘শেফা’, ‘রহমত’ প্রভৃতির কথা উল্লেখিত হয়েছে। তাফসীরবিদ ইমাম বায়হাকী (রহ.) ‘শেফা’ অর্থ আত্মা এবং দেহ উভয়ের শেফা বা নিরাময় বলেছেন। অর্থাৎ পবিত্র কুরআনে যেমন আত্মার যাবতীয় রোগ এবং মন্দ প্রবণতার চিকিৎসা রয়েছে, তেমনি দেহের যাবতীয় রোগ-ব্যাধিরও চিকিৎসা রয়েছে। হযরত আবূ হুরায়রা (রাযি) থেকে বর্ণিত, হুযূর পাক বলেছেন, “আল্লাহ পাক এমন কোন রোগ সৃষ্টি করেননি যার প্রতিষেধক তিনি সৃষ্টি করেননি। ইমাম সুবকী (রাহ.) উনাকে স্বপ্নে মহান আল্লাহ পাক বলেন, “তুমি কুরআন মাজিদের শেফার আয়াতসমূহ একত্র করে তা তোমার ছেলের নিকট পাঠ কর অথবা আয়াতগুলো একটি পাত্রে একত্রে লিখে তা ছেলেকে পান করাও, যতক্ষণ না তাতে সে সুস্থ হয়। অতঃপর তিনি অনুরূপ করলে উনার ছেলেকে মহান আল্লাহ পাক সুস্থতা দান করেন।” যে ব্যক্তি কুরআনের মাধ্যমে আরোগ্য তালাশ করে না, তার কোন শেফা নেই। তাই আল কুরআন মানুষের হিদায়াতের পাশাপাশি তাদের রোগ-বালাই থেকে পরিত্রানের জন্যও কতই না কার্যকর, কতই না ফলপ্রসু। দুনিয়া ও আখিরাতের সমূহ কল্যাণ লাভের ক্ষেত্রে কতই না বাস্তব এর প্রতিটি তথ্য ও তত্ত্ব। ইমাম যারকাশী (রাহ.) তার কিতাবে আবূল কাসেম আল কুশাইরীর ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, তিনি নবীজী কে স্বপ্ন দেখেন যে, তিনি তাকে ৬টি আয়াতে শেফা পাঠ করার নির্দেশ দিচ্ছেন।
উৎসঃ আল-মাদখাল; সহীহ বুখারী, হাদীস নং: ৫৬৭৮; তাফসীরে কুরতুবী, ১০: ২৩৫; তাফসীরে রূহুল মা’আনী, ৮: ১৪৫