মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
১৮- শরীআতের দন্ড বিধি অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১১ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৩৫৭১

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৫৭১। হযরত ওয়ায়েল ইবনে হুজর (রাঃ) বলেন, নবী (ﷺ)-এর যুগে এক মহিলার সঙ্গে জোরপূর্বক যিনা করা হইয়াছিল। ফলে নবী (ﷺ) উক্ত মহিলাটি হইতে হদ্ মউকুফ করিয়াছিলেন এবং যেই পুরুষটি এই কাজ করিয়াছিল, তাহার উপর শাস্তি প্রয়োগ করিয়াছিলেন। তবে তিনি মহিলাটির জন্য মহর সাব্যস্ত করিয়াছিলেন কিনা বর্ণনাকারী তাহা উল্লেখ করেন নাই। – তিরমিযী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৫৭২

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৫৭২। হযরত ওয়ায়েল ইবনে হুজর (রাঃ) বলেন, নবী (ﷺ)-এর যমানায় এক নারী নামাযের জন্য বাহির হইল। এমন সময় এক ব্যক্তি তাহাকে কাপড় মোড়ান দিয়া জড়াইয়া ধরিল এবং তাহার উদ্দেশ্য হাসিল করিয়া ফেলিল। তখন মহিলাটি চীৎকার করিলে লোকটি চলিয়া যাইতে লাগিল। এমন সময় একদল মুহাজির সেই স্থান দিয়া যাইতেছে দেখিয়া মহিলাটি বলিল, এই লোকটি আমার সঙ্গে এই এই কাজ করিয়াছে (অর্থাৎ, যিনা করিয়াছে)। তাহারা লোকটিকে পাকড়াও করিয়া রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট লইয়া গেল। অতঃপর তিনি মহিলাটিকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেনঃ তুমি চলিয়া যাও, (তোমার অনিচ্ছা এবং এমন কাজের প্রতি ঘৃণার কারণে) আল্লাহ্ তোমাকে ক্ষমা করিয়াছেন। আর যেই লোকটি তাহার সঙ্গে কুকর্ম করিয়াছে, তাহার সম্পর্কে লোকদিগকে বলিলেন, যাও, এই লোকটিকে রজম কর এবং তিনি বলিলেনঃ অবশ্য এই লোকটি এমন তওবা করিয়াছে, যদি মদীনার সমস্ত পাপীরা এইরূপ তওবা করিত তাহা হইলে সকলের পক্ষ হইতেও উহা কবুল হইত। —তিরমিযী ও আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৫৭৩

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৫৭৩। হযরত জাবের (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, এক ব্যক্তি কোন এক নারীর সঙ্গে যিনা করিয়াছিল। নবী (ﷺ) তাহাকে দোররা মারিবার আদেশ দিলেন। অতএব, হদস্বরূপ তাহাকে দোররা লাগান হইল, অতঃপর তাঁহাকে জানান হইল যে, 'লোকটি বিবাহিত।' তখন তিনি রজমের আদেশ করিলেন, তাহাকে রজম করা হইল। —আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৫৭৪

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৫৭৪। হযরত সায়ীদ ইবনে সা'দ ইবনে ওবাদা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদা সা'দ ইবনে ওবাদা (রাঃ) নবী (ﷺ)-এর নিকট এমন এক ব্যক্তিকে পাকড়াও করিয়া নিয়া আসিলেন, যেই লোকটি বিকলাঙ্গ এবং রোগগ্রস্ত অথচ তাহাকে মহল্লার এক দাসীর সঙ্গে যিনায় লিপ্ত পাওয়া যায়। তখন নবী (ﷺ) বলিলেনঃ তাহার জন্য এমন একটি খেজুরের বড় ছড়া লইয়া আস, যাহার মধ্যে ছোট ছোট একশত শাখা রহিয়াছে এবং উহার দ্বারা লোকটিকে একবার আঘাত কর। — শরহে সুন্নাহ্ এবং অনুরূপ ইবনে মাজাহুরও একটি রেওয়ায়ত আছে।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৫৭৫

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৫৭৫। ইকরেমা হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হইতে বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ তোমরা যেই ব্যক্তিকেই হযরত লূত (আঃ)-এর কওমের ন্যায় (পুরুষে পুরুষে সঙ্গম) করিতে পাও, তখন যে করে এবং যাহার সহিত করা হয় উভয়কে হত্যা করিয়া ফেল। – তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ্

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৫৭৬

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৫৭৬। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যেই ব্যক্তি জানোয়ারের সঙ্গে কুকর্ম (সঙ্গম) করে, তাহাকে হত্যা করিয়া ফেল এবং তাহার সাথে ঐ জানেয়ারটিকেও হত্যা করিয়া ফেল। ইবনে আব্বাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করা হইল, জানোয়ারটিকে কেন হত্যা করা হইবে? (তাহার দোষ কি ?) উত্তরে তিনি বলিলেন, এই সম্পর্কে আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) হইতে কিছুই শুনি নাই। তবে আমি মনে করি, ঐ জানোয়ারের গোশত খাওয়া কিংবা উহা হইতে কোনভাবে উপকৃত হওয়াকে তিনি অপছন্দ করিয়াছেন। কেননা, জানোয়ারটির সাথে এই কুকর্মটি করা হইয়াছে। —তিরমিযী, আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ্

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৫৭৭

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৫৭৭। হযরত জাবের (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ আমি আমার উম্মতের উপর সবচাইতে বেশী যেই জিনিসের ভয় করি, তাহা হইল হযরত লূত (আঃ)-এর কওমের (ন্যায়) কুকর্ম। – তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ্

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৫৭৮

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৫৭৮। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, বকর ইবনে লাইস গোত্রের এক ব্যক্তি নবী (ﷺ)-এর নিকট আসিয়া চারিবার এই স্বীকারোক্তি করিল যে, সে (অমুক) একটি মহিলার সঙ্গে যিনা করিয়াছে। লোকটি ছিল অবিবাহিত। তাই হুযূর (ﷺ) তাহাকে একশত চাবুক মারেন। অতঃপর তিনি মহিলাটির বিরুদ্ধে তাহার কাছে প্রমাণ চাহিলেন, (কিন্তু সে উহা পেশ করিতে পারিল না।) মহিলাটি দাবী করিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আল্লাহর কসম, লোকটি মিথ্যা বলিয়াছে। সুতরাং এইবার তিনি লোকটিকে হদ্দে কযফ্ (মিথ্যা অভিযোগের শাস্তি) প্রদান করিলেন। —–আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৫৭৯

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৫৭৯। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমি নির্দোষ বলিয়া যখন আল্লাহর কালাম নাযিল হইল, তখন নবী (ﷺ) মিম্বরের উপর দাঁড়াইয়া উহা (ঐ আয়াতগুলি) তেলাওয়াত করিলেন। অতঃপর মিম্বর হইতে অবতরণ করিয়া দুইজন পুরুষ ও একজন মহিলাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য নির্দেশ করিলেন, সুতরাং লোকেরা তাহাদিগকে 'হদ্দে কযফ' মিথ্যা অভিযোগের শাস্তি প্রদান করিল। –আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৫৮০

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩৫৮০। হযরত নাফে (রাঃ) হইতে বর্ণিত যে, সাফিয়্যা বিনতে আবু ওবায়দ তাঁহাকে বর্ণনা করিয়াছেন, একদা সরকারী এক ক্রীতদাস বায়তুল মালের (গনীমতের) একটি দাসীর সাথে বলপূর্বক যিনা করিয়াছে। এমন কি তাহার কুমারিত্বও নষ্ট করিয়া দিয়াছে। ঘটনা হযরত ওমর (রাঃ)-এর নিকটে পৌঁছিলে তিনি গোলামটিকে চাবুক মারিলেন। কিন্তু দাসীটিকে শাস্তি দিলেন না। কেননা, তাহার সাথে জোরপূর্বক এই কাজ করা হইয়াছে। —বুখারী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৫৮১

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩৫৮১। ইয়াযীদ ইবনে নুআইম ইবনে হাযযাল তাঁহার পিতা হইতে বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি বলেন, মায়ের ইবনে মালেক ছিলেন ইয়াতীম। আমার পিতা তাহাকে লালন-পালন করিয়াছেন। (যুবক হইয়া) তিনি মহল্লার এক দাসীর সঙ্গে যিনায় লিপ্ত হন। তখন আমার পিতা তাহাকে পরামর্শ দিলেন, হে মায়েয। তুমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট যাইয়া তোমার ঘটনাটি বল, সম্ভবতঃ হুযূর (ﷺ) তোমার জন্য মাগফেরাতের দো'আ করিবেন। মূলতঃ তাহাকে হুযূরের খেদমতে পাঠাইবার মধ্যে আমার পিতার উদ্দেশ্য তাহার গুনাহ্ মাফের কোন উপায় উদ্ভাবন হওয়া ব্যতীত অন্য কিছু ছিল না। সুতরাং তিনি তাহার খেদমতে উপস্থিত হইয়া বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি যিনা করিয়াছি; সুতরাং আপনি আমার উপর আল্লাহর কিতাবের বিধান প্রয়োগ করুন। তাহার কথা শুনিয়া হুযূর (ﷺ) অন্য দিকে মুখ ফিরাইয়া নিলেন। মায়ের পুনরায় বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি যিনা করিয়াছি; সুতরাং আমার উপর আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী বিধান প্রয়োগ করুন। অবশেষে তিনি চারিবার পর্যন্ত তাহার কথাটি আবৃত্তি করিলেন। এইবার রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেনঃ তুমি চারিবার স্বীকারোক্তি করিয়াছ। এখন তুমি বল, কাহার সাথে তুমি যিনা করিয়াছ? মায়েয বলিলেন, অমুক মহিলার সাথে। অতঃপর তিনি (সন্দেহ দূর করার নিমিত্ত) বলিলেন, তুমি কি তাহাকে জড়াইয়া ধরিয়াছ? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। তিনি আবার জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি কি তাহার সাথে সহবাস করিয়াছ? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। তিনি আবার জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি তাহার সাথে সঙ্গম করিয়াছ? এইবারও তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। ইহার পর তিনি তাহাকে রজম করিবার জন্য আদেশ করিলেন। পরে তাহাকে 'হাররা' নামক স্থানে লইয়া যাওয়া হইল এবং যখন তাহাকে পাথর নিক্ষেপ করা হইল, তখন পাথরের (গুরুতর আঘাত সহ্য করিতে না পারিয়া তিনি অধৈর্য হইয়া পড়িলেন এবং দৌড়াইয়া পলাইতে লাগিলেন। তখন আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওনায়স মায়েযকে এমতাবস্থায় পাইলেন যে, তাহার সঙ্গীরা পাথর মারিতে মারিতে ক্লান্ত হইয়া পড়িয়াছে। এমন সময় আব্দুল্লাহ্ উটের একখানা পায়ের হাড্ডি তুলিয়া তাহাকে আঘাত করিলেন, যাহাতে তিনি মারা গেলেন। অতঃপর আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওনায়স নবী (ﷺ)-এর নিকট আসিয়া উক্ত ঘটনাটি বর্ণনা করিলেন, তখন তিনি তাহাদিগকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেনঃ তোমরা কেন তাহাকে ছাড়িয়া দিলে না ? সম্ভবতঃ সে তওবা করিয়া লইত এবং আল্লাহও তাহার তওবা কবুল করিয়া ফেলিতেন। —আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান