মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
১৮- শরীআতের দন্ড বিধি অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৯ টি
হাদীস নং: ৩৫৬২
- শরীআতের দন্ড বিধি অধ্যায়
প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৫৬২। হযরত বুরায়দা (রাঃ) বলেন, একদা হযরত মায়েয ইবনে মালেক (রাঃ) নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আসিয়া বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমাকে পবিত্র করুন। তিনি বলিলেন: আক্ষেপ তোমার প্রতি, চলিয়া যাও, আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও এবং তওবা কর। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি চলিয়া গেলেন এবং সামান্য একটু দূরে যাইয়াই পুনরায় ফিরিয়া আসিলেন এবং আবারও বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমাকে পবিত্র করুন। নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এইবারও তাঁহাকে পূর্বের ন্যায় বলিলেন। এইভাবে তিনি যখন চতুর্থবার আসিয়া বলিলেন, তখন রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করিলেন, আচ্ছা! আমি তোমাকে কোন জিনিস হইতে পবিত্র করিব? তিনি বলিলেন, যিনা হইতে। তাহার কথা শুনিয়া রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সাহাবাদিগকে) জিজ্ঞাসা করিলেন, এই লোকটি কি পাগল? লোকেরা বলিল, না তো? তিনি পাগল নহেন। তিনি আবার বলিলেন, লোকটি কি মদ পান করিয়াছে ? তৎক্ষণাৎ এক ব্যক্তি দাড়াইয়া তাহার মুখ শুঁকিয়া দেখেন; কিন্তু মদের কোন গন্ধ তাহার মুখ হইতে পাওয়া গেল না। অতঃপর তিনি তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি কি সত্যই যিনা করিয়াছ? তিনি বলিলেন, জি হ্যাঁ। ইহার পর তিনি রজমের নির্দেশ দিলেন, তখন তাহাকে রজম করা হইল। এই ঘটনার দুই তিন দিন পর রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সাহাবাদের সম্মুখে আসিয়া বলিলেন: তোমরা মায়েয ইবনে মালেকের জন্য ইস্তেগফার কর (ক্ষমা প্রার্থনা কর)। কেননা, সে এমন তওবাই করিয়াছে, যদি উহা সমস্ত উম্মতের মধ্যে বিতরণ করিয়া দেওয়া হয়, তবে উহা সকলের জন্য যথেষ্ট হইবে।
অতঃপর আদ বংশের গামেদী গোত্রীয় একটি মহিলা আসিয়া বলিল, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমাকে পবিত্র করুন। তিনি বলিলেন: তোমার প্রতি আক্ষেপ। চলিয়া যাও, আল্লাহর কাছে ইস্তেগফার কর এবং তওবা কর। তখন মহিলাটি বলিল, আপনি মায়েয ইবনে মালেককে যেইভাবে ফিরাইয়া দিয়াছেন আমাকেও কি সেইভাবে ফিরাইয়া দিতে চান? দেখুন, আমার এই গর্ভ যিনার! তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি কি (সত্যই গর্ভবতী)? মহিলাটি বলিল, জি হা । অতঃপর তিনি বলিলেন যাও, তোমার পেটের বাচ্চা প্রসব হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা কর। বর্ণনাকারী বলেন, তখন আনসারী এক লোক মহিলাটির সন্তান প্রসব হওয়ার সময় পর্যন্ত তাহাকে নিজের তত্ত্বাবধানে লইয়া গেলেন। সন্তান প্রসব হওয়ার পর ঐ লোকটি নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে আসিয়া বলিল, হুযূর গামেদিয়া মহিলাটির গর্ত খালাস হইয়া গিয়াছে। এইবার তিনি বলিলেন এই শিশু বাচ্চাটিকে রাখিয়া আমরা মহিলাটিকে রজম করিতে পারিব না। এমতাবস্থায় যে, তাহাকে দুধ পান করাইবার মত কেহই নাই। এমন সময় আর একজন আনসারী দাঁড়াইয়া বলিল, হে আল্লাহর নবী! আমিই তাহার দুধ খাওয়ানোর ব্যবস্থা করিব। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর তাহাকে রজম করিলেন।
অন্য এক রেওয়ায়তে আছে, নবী (ছাঃ) মহিলাটিকে বলিলেন তুমি চলিয়া যাও এবং সন্তান প্রসব হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা কর। অতঃপর সন্তান প্রসবের পর যখন আসিল, তখন বলিলেন, আবারও চলিয়া যাও এবং তাহাকে দুধ পান করাও এবং দুধ ছাড়ান পর্যন্ত অপেক্ষা কর। পরে যখন বাচ্চাটির দুধ খাওয়া বন্ধ হয়, তখন মহিলাটি বাচ্চার হাতে এক খণ্ড রুটির টুক্রা দিয়া তাহাকে সঙ্গে করিয়া হুযূর (ছাঃ)-এর খেদমতে উপস্থিত হইল। এইবার মহিলাটি বলিল, হে আল্লাহর নবী! এই দেখুন (বাচ্চাটির) দুধ ছোড়ান হইয়াছে, এমন কি সে নিজের হাতে খানাও খাইতে পারে। তখন হুযূর (ছাঃ) বাচ্চাটিকে একজন মুসলমানের হাতে তুলিয়া দিলেন। পরে মহিলাটির জন্য গর্ত খোঁড়ার নির্দেশ দিলেন। অতএব, তাহার জন্য বক্ষ পর্যন্ত গর্ত খনন করা হইল। তৎপর লোকদিগকে নির্দেশ করিলেন, তাহারা মহিলাটিকে রজম করিল। হযরত খালেদ ইবনে ওলীদ (রাঃ) সম্মুখে অগ্রসর হইয়া তাহার মাথায় একখণ্ড পাথর নিক্ষেপ করিতেই রক্ত ছিটিয়া আসিয়া তাঁহার মুখমণ্ডলের উপর পড়িল। তাই তিনি মহিলাটিকে ভৎসনা ও তিরস্কার করিয়া গাল-মন্দ করিলেন, (ইহা শুনিয়া) নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেনঃ হে খালেদ, থাম! সেই সত্তার কসম, যাঁহার হাতে আমার প্রাণ। অবশ্য মহিলাটি এমন (খালেছ) তওবা করিয়াছে, যদি কোন বড় যালেমও এই ধরনের তওবা করে, তাহারও মাগফেরাত হইয়া যাইবে। অতঃপর তিনি তাহার জানাযা পড়ার আদেশ করিলেন, অতঃপর তাহার জানাযা পড়া হইল এবং তাহাকে দাফনও করা হইল। মুসলিম
অতঃপর আদ বংশের গামেদী গোত্রীয় একটি মহিলা আসিয়া বলিল, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমাকে পবিত্র করুন। তিনি বলিলেন: তোমার প্রতি আক্ষেপ। চলিয়া যাও, আল্লাহর কাছে ইস্তেগফার কর এবং তওবা কর। তখন মহিলাটি বলিল, আপনি মায়েয ইবনে মালেককে যেইভাবে ফিরাইয়া দিয়াছেন আমাকেও কি সেইভাবে ফিরাইয়া দিতে চান? দেখুন, আমার এই গর্ভ যিনার! তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি কি (সত্যই গর্ভবতী)? মহিলাটি বলিল, জি হা । অতঃপর তিনি বলিলেন যাও, তোমার পেটের বাচ্চা প্রসব হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা কর। বর্ণনাকারী বলেন, তখন আনসারী এক লোক মহিলাটির সন্তান প্রসব হওয়ার সময় পর্যন্ত তাহাকে নিজের তত্ত্বাবধানে লইয়া গেলেন। সন্তান প্রসব হওয়ার পর ঐ লোকটি নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে আসিয়া বলিল, হুযূর গামেদিয়া মহিলাটির গর্ত খালাস হইয়া গিয়াছে। এইবার তিনি বলিলেন এই শিশু বাচ্চাটিকে রাখিয়া আমরা মহিলাটিকে রজম করিতে পারিব না। এমতাবস্থায় যে, তাহাকে দুধ পান করাইবার মত কেহই নাই। এমন সময় আর একজন আনসারী দাঁড়াইয়া বলিল, হে আল্লাহর নবী! আমিই তাহার দুধ খাওয়ানোর ব্যবস্থা করিব। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর তাহাকে রজম করিলেন।
অন্য এক রেওয়ায়তে আছে, নবী (ছাঃ) মহিলাটিকে বলিলেন তুমি চলিয়া যাও এবং সন্তান প্রসব হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা কর। অতঃপর সন্তান প্রসবের পর যখন আসিল, তখন বলিলেন, আবারও চলিয়া যাও এবং তাহাকে দুধ পান করাও এবং দুধ ছাড়ান পর্যন্ত অপেক্ষা কর। পরে যখন বাচ্চাটির দুধ খাওয়া বন্ধ হয়, তখন মহিলাটি বাচ্চার হাতে এক খণ্ড রুটির টুক্রা দিয়া তাহাকে সঙ্গে করিয়া হুযূর (ছাঃ)-এর খেদমতে উপস্থিত হইল। এইবার মহিলাটি বলিল, হে আল্লাহর নবী! এই দেখুন (বাচ্চাটির) দুধ ছোড়ান হইয়াছে, এমন কি সে নিজের হাতে খানাও খাইতে পারে। তখন হুযূর (ছাঃ) বাচ্চাটিকে একজন মুসলমানের হাতে তুলিয়া দিলেন। পরে মহিলাটির জন্য গর্ত খোঁড়ার নির্দেশ দিলেন। অতএব, তাহার জন্য বক্ষ পর্যন্ত গর্ত খনন করা হইল। তৎপর লোকদিগকে নির্দেশ করিলেন, তাহারা মহিলাটিকে রজম করিল। হযরত খালেদ ইবনে ওলীদ (রাঃ) সম্মুখে অগ্রসর হইয়া তাহার মাথায় একখণ্ড পাথর নিক্ষেপ করিতেই রক্ত ছিটিয়া আসিয়া তাঁহার মুখমণ্ডলের উপর পড়িল। তাই তিনি মহিলাটিকে ভৎসনা ও তিরস্কার করিয়া গাল-মন্দ করিলেন, (ইহা শুনিয়া) নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেনঃ হে খালেদ, থাম! সেই সত্তার কসম, যাঁহার হাতে আমার প্রাণ। অবশ্য মহিলাটি এমন (খালেছ) তওবা করিয়াছে, যদি কোন বড় যালেমও এই ধরনের তওবা করে, তাহারও মাগফেরাত হইয়া যাইবে। অতঃপর তিনি তাহার জানাযা পড়ার আদেশ করিলেন, অতঃপর তাহার জানাযা পড়া হইল এবং তাহাকে দাফনও করা হইল। মুসলিম
كتاب الحدود
وَعَنْ بُرَيْدَةَ قَالَ: جَاءَ مَاعِزُ بْنُ مَالِكٍ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ طَهِّرْنِي فَقَالَ: «وَيْحَكَ ارْجِعْ فَاسْتَغْفر الله وَتب إِلَيْهِ» . فَقَالَ: فَرَجَعَ غَيْرَ بَعِيدٍ ثُمَّ جَاءَ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ طَهِّرْنِي. فَقَالَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَ ذَلِكَ حَتَّى إِذَا كَانَتِ الرَّابِعَة قَالَه لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «فِيمَ أُطَهِّرُكَ؟» قَالَ: مِنَ الزِّنَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَبِهِ جُنُونٌ؟» فَأُخْبِرَ أَنَّهُ لَيْسَ بِمَجْنُونٍ فَقَالَ: «أَشَرِبَ خَمْرًا؟» فَقَامَ رَجُلٌ فَاسْتَنْكَهَهُ فَلَمْ يَجِدْ مِنْهُ رِيحَ خَمْرٍ فَقَالَ: «أَزَنَيْتَ؟» قَالَ: نَعَمْ فَأَمَرَ بِهِ فَرُجِمَ فَلَبِثُوا يَوْمَيْنِ أَوْ ثَلَاثَةً ثُمَّ جَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «اسْتَغْفِرُوا لِمَاعِزِ بْنِ مَالِكٍ لَقَدْ تَابَ تَوْبَةً لَوْ قُسِّمَتْ بَيْنَ أُمَّةٍ لَوَسِعَتْهُمْ» ثُمَّ جَاءَتْهُ امْرَأَةٌ مِنْ غَامِدٍ مِنَ الْأَزْدِ فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ طَهِّرْنِي فَقَالَ: «وَيَحَكِ ارْجِعِي فَاسْتَغْفِرِي اللَّهَ وَتُوبِي إِلَيْهِ» فَقَالَتْ: تُرِيدُ أَنْ تَرْدُدَنِي كَمَا رَدَدْتَ مَاعِزَ بْنَ مَالِكٍ: إِنَّهَا حُبْلَى مِنَ الزِّنَا فَقَالَ: «أَنْتِ؟» قَالَتْ: نَعَمْ قَالَ لَهَا: «حَتَّى تَضَعِي مَا فِي بَطْنِكِ» قَالَ: فكَفَلَها رَجُلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ حَتَّى وَضَعَتْ فَأَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: قَدْ وَضَعَتِ الغامديَّةُ فَقَالَ: «إِذاً لَا نرجُمها وندعُ وَلَدَهَا صَغِيرًا لَيْسَ لَهُ مَنْ يُرْضِعُهُ» فَقَامَ رَجُلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ فَقَالَ: إِلَيَّ رَضَاعُهُ يَا نَبِيَّ اللَّهِ قَالَ: فَرَجَمَهَا. وَفِي رِوَايَةٍ: أَنَّهُ قَالَ لَهَا: «اذْهَبِي حَتَّى تَلِدِي» فَلَمَّا وَلَدَتْ قَالَ: «اذْهَبِي فَأَرْضِعِيهِ حَتَّى تَفْطِمِيهِ» فَلَمَّا فَطَمَتْهُ أَتَتْهُ بِالصَّبِيِّ فِي يَدِهِ كِسْرَةُ خُبْزٍ فَقَالَتْ: هَذَا يَا نَبِيَّ اللَّهِ قَدْ فَطَمْتُهُ وَقَدْ أَكَلَ الطَّعَامَ فَدَفَعَ الصَّبِيَّ إِلَى رَجُلٍ مِنَ الْمُسْلِمِينَ ثُمَّ أَمَرَ بِهَا فَحُفِرَ لَهَا إِلَى صَدْرِهَا وَأَمَرَ النَّاسَ فَرَجَمُوهَا فَيُقْبِلُ خَالِدُ بْنُ الْوَلِيدِ بِحَجْرٍ فَرَمَى رَأْسَهَا فَتَنَضَّحَ الدَّمُ عَلَى وَجْهِ خَالِدٍ فَسَبَّهَا فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «مهلا يَا خَالِد فو الَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَقَدْ تَابَتْ تَوْبَةً لَوْ تَابَهَا صَاحِبُ مَكْسٍ لَغُفِرَ لَهُ» ثُمَّ أَمَرَ بِهَا فصلى عَلَيْهَا ودفنت. رَوَاهُ مُسلم
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৫৬৩
- শরীআতের দন্ড বিধি অধ্যায়
প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৫৬৩। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি শুনিয়াছি, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: যদি তোমাদের কাহারও দাসী যিনা করে আর তাহা প্রকাশ (ও প্রমাণ) হইয়া যায়, তখন তাহাকে চাবুক মার। কিন্তু তাহাকে তিরস্কার করা যাইবে না। পুনরায় আবার যদি যিনা করে, এইবারও তাহাকে দোররা লাগাও; কিন্তু তিরস্কার করা যাইবে না। কিন্তু ইহার পর যদি সে তৃতীয়বারও যিনায় লিপ্ত হয় এবং তাহা প্রমাণিত হয়, তখন চুলের একটি রশির বিনিময়ে হইলেও তাহাকে বিক্রয় করিয়া ফেল। – মোত্তাঃ
كتاب الحدود
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِذَا زَنَتْ أَمَةُ أَحَدِكُمْ فَتَبَيَّنَ زِنَاهَا فَلْيَجْلِدْهَا الحدَّ وَلَا يُثَرِّبْ عَلَيْهَا ثمَّ إِنْ زنَتْ فلْيجلدْها الحدَّ وَلَا يُثَرِّبْ ثُمَّ إِنْ زَنَتِ الثَّالِثَةَ فَتَبَيَّنَ زِنَاهَا فَلْيَبِعْهَا ولوْ بحبْلٍ منْ شعرٍ»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৫৬৪
- শরীআতের দন্ড বিধি অধ্যায়
প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৫৬৪। হযরত আলী (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদা তিনি লোকদিগকে উদ্দেশ্য করিয়া বলিয়াছেন, হে মানুষেরা! তোমরা তোমাদের দাস-দাসীদের উপর (হদ) শাস্তি প্রয়োগ কর; চাই সে বিবাহিত হউক কিংবা অবিবাহিত। কেননা, একবার রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি দাসী যিনা করিয়াছিল। তাহাকে চাবুক মারার জন্য তিনি আমাকে হুকুম দিয়াছিলেন। ঘটনাক্রমে দাসীটি ছিল সদ্য প্রসূতি। তখন আমার আশংকা হইল, যদি আমি এই অবস্থায় তাহাকে চাবুক লাগাই, তাহা হইলে আমিই তাহাকে হত্যা করিয়া ফেলিব। সুতরাং ব্যাপারটি আমি নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমীপে উল্লেখ করিলে তিনি বলিলেন: তুমি উত্তম কাজই করিয়াছ। (অর্থাৎ, এই অবস্থায় তাহাকে শাস্তি না দিয়া ভাল কাজ করিয়াছ।) —মুসলিম আর আবু দাউদের এক রেওয়ায়তে আছে, হুযুর (ছাঃ) বলিলেনঃ তাহার নেফাসের মুদ্দত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তুমি তাহাকে ছাড়িয়া দাও। ইহার পর তাহার উপর হদ্ প্রয়োগ কর।
(অতঃপর তিনি সাধারণ বিধান ঘোষণা করিয়া বলিলেন) তোমরা তোমাদের দাস-দাসীদের উপর হদ প্রয়োগ কর (যদি তাহারা সেইমত অপরাধ করে)।
(অতঃপর তিনি সাধারণ বিধান ঘোষণা করিয়া বলিলেন) তোমরা তোমাদের দাস-দাসীদের উপর হদ প্রয়োগ কর (যদি তাহারা সেইমত অপরাধ করে)।
كتاب الحدود
وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: يَا أَيُّهَا النَّاسُ أَقِيمُوا عَلَى أَرِقَّائِكُمُ الْحَدَّ مَنْ أُحْصِنَ مِنْهُمْ وَمَنْ لَمْ يُحْصَنْ فَإِنَّ أَمَةً لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَنَتْ فَأَمَرَنِي أَنْ أَجْلِدَهَا فَإِذَا هِيَ حَدِيثُ عَهْدٍ بِنِفَاسٍ فَخَشِيتُ إِنْ أَنَا جَلَدْتُهَا أَنْ أَقْتُلَهَا فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «أَحْسَنْتَ» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ. وَفِي رِوَايَةِ أَبِي دَاوُدَ: قَالَ: «دَعْهَا حَتَّى يَنْقَطِعَ دَمُهَا ثُمَّ أَقِمْ عَلَيْهَا الْحَدَّ وَأَقِيمُوا الْحُدُودَ عَلَى مَا مَلَكَتْ أَيْمَانكُم»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৫৬৫
- শরীআতের দন্ড বিধি অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৫৬৫। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, মায়েयूল আসলামী রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর কাছে আসিয়া বলিলেন, তিনি যিনা করিয়াছেন। তাহার কথা শুনিয়া হুযূর (ﷺ) অন্য দিকে মুখ ফিরাইয়া নিলেন। তিনি পুনরায় সেই দিকে যাইয়া বলিলেন, তিনি যিনা করিয়াছেন, এইবারও হুযূর (ﷺ) তাহার দিক হইতে মুখ ফিরাইয়া অন্য দিকে নিলেন। কিন্তু তিনি সেই দিকে যাইয়া আবারও বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি যিনা করিয়াছি। অবশেষে যখন তিনি চতুর্থবার ঐ একই কথা পুনরাবৃত্তি করিলেন, এইবার তিনি তাঁহাকে রজম করিবার জন্য হুকুম দিলেন। সেমতে তাঁহাকে 'হাররা' এলাকায় লইয়া যাওয়া হইল এবং সেইখানেই তাঁহাকে পাথর দ্বারা রজম করা হইল। যখন তাঁহার গায়ে পাথরের আঘাত লাগিল, তখন তিনি দৌড়াইয়া পলাইতে লাগিলেন এবং এমন এক ব্যক্তির নিকট দিয়া অতিক্রম করিলেন, যাহার হাতে ছিল উটের চোয়ালের হাড্ডি, তৎক্ষণাৎ সে উহার দ্বারা তাঁহাকে আঘাত করিল এবং সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য লোকেরাও তাঁহাকে আঘাত করিল। অবশেষে তিনি মৃত্যুবরণ করিলেন। লোকেরা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট ঘটনাটি বলিল যে, তিনি পাথরের আঘাতে মৃত্যুভয়ে পলাইতেছিলেন, তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেনঃ তোমরা তাহাকে ছাড়িয়া দিলে না কেন ? —তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ্, অন্য আরেক রেওয়ায়তে আছে, তোমরা তাহাকে ছাড়িয়া দিলে না। কেন? হয়তো সে তওবা করিত আর আল্লাহ্ তাআলাও তাহার তওবা কবুল করিতেন ।
كتاب الحدود
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: جَاءَ مَاعِزٌ الْأَسْلَمِيُّ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: إِنَّه قدْ زَنى فأعرضَ عَنهُ ثمَّ جَاءَ مِنْ شِقِّهِ الْآخَرِ فَقَالَ: إِنَّهُ قَدْ زنى فَأَعْرض عَنهُ ثمَّ جَاءَ من شقَّه الْآخَرِ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّهُ قَدْ زَنى فَأَمَرَ بِهِ فِي الرَّابِعَةِ فَأُخْرِجَ إِلَى الْحَرَّةِ فَرُجِمَ بِالْحِجَارَةِ فَلَمَّا وَجَدَ مَسَّ الْحِجَارَةِ فَرَّ يَشْتَدُّ حَتَّى مَرَّ بِرَجُلٍ مَعَهُ لَحْيُ جَمَلٍ فَضَرَبَهُ بِهِ وَضَرَبَهُ النَّاسُ حَتَّى مَاتَ. فَذَكَرُوا ذَلِكَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنه فرحين وَجَدَ مَسَّ الْحِجَارَةِ وَمَسَّ الْمَوْتِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «هَلَّا تَرَكْتُمُوهُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَفِي رِوَايَةٍ: «هَلَّا تَرَكْتُمُوهُ لَعَلَّه أَن يَتُوب الله عَلَيْهِ»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৫৬৬
- শরীআতের দন্ড বিধি অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৫৬৬। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত যে, নবী (ﷺ) মায়ের ইবনে মালেককে জিজ্ঞাসা করিলেন, তোমার সম্পর্কে আমার নিকট যেই খবর পৌঁছিয়াছে, উহা কি সত্য? মায়ের বলিলেন, আমার সম্পর্কে আপনার কাছে কি খবর পৌঁছিয়াছে? তিনি বলিলেনঃ আমার কাছে এই খবর পৌঁছিয়াছে, তুমি নাকি অমুক ব্যক্তির দাসীর সাথে যিনা করিয়াছ? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। কথাটি সত্য এবং তিনি এই কথাটি চারি বার স্বীকার করিলেন। অতঃপর হুযূর (ﷺ) নির্দেশ করিলে তাঁহাকে রজম করা হয়। —মুসলিম
كتاب الحدود
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِمَاعِزِ بْنِ مَالِكٍ: «أَحَقٌّ مَا بَلَغَنِي عَنْكَ؟» قَالَ: وَمَا بَلَغَكَ عَنِّي؟ قَالَ: «بَلَغَنِي أَنَّكَ قَدْ وَقَعْتَ عَلَى جَارِيَةِ آلِ فُلَانٍ» قَالَ: نَعَمْ فَشَهِدَ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ فَأمر بهِ فرجم. رَوَاهُ مُسلم
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৫৬৭
- শরীআতের দন্ড বিধি অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৫৬৭। হযরত ইয়াযীদ ইবনে নুআইম তাঁহার পিতা হইতে বর্ণনা করিয়াছেন যে, মায়েয নবী (ﷺ)-এর নিকট আসিয়া চারিবার স্বীকার করিলেন (যে, তিনি যিনা করিয়াছেন), অতঃপর হুযূর (ﷺ) তাঁহাকে রজম করিবার নির্দেশ করিয়াছেন। আর তিনি 'হাযযাল'কে বলিলেনঃ যদি তুমি তোমার কাপড় দ্বারা মায়েযের এই অপরাধ বা দোষকে গোপন করিয়া ফেলিতে, তবে উহা হইত তোমার জন্য সবচেয়ে উত্তম কাজ। বর্ণনাকারী ইবনে মুনকাদির বলেন, নবী (ﷺ)-এর খেদমতে আসিয়া উক্ত ঘটনাটি বর্ণনা করার জন্য এই হাযযালই মায়েযকে আদেশ (ও উদ্বুদ্ধ) করিয়াছিলেন। —আবু দাউদ
كتاب الحدود
وَعَنْ يَزِيدَ بْنِ نُعَيْمٍ عَنْ أَبِيهِ أَنَّ مَاعِزًا أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَقَرَّ عِنْدَهُ أَرْبَعَ مَرَّاتٍ فَأَمَرَ بِرَجْمِهِ وَقَالَ لِهَزَّالٍ: «لَوْ سَتَرْتَهُ بِثَوْبِكَ كَانَ خَيْرًا لَكَ» قَالَ ابْنُ الْمُنْكَدِرِ: إِنَّ هَزَّالًا أَمَرَ مَاعِزًا أَنْ يَأْتِيَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فيخبره. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৫৬৮
- শরীআতের দন্ড বিধি অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৫৬৮। হযরত আমর ইবনে শোআয়ব তাঁহার পিতার মাধ্যমে তাঁহার দাদা আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর ইবনুল আস (রাঃ) হইতে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ আমার কাছে পৌঁছিবার আগে তোমাদের সংঘটিত হৃদযোগ্য অপরাধ নিজেদের মধ্যে রফা দফা করিয়া ফেল। কেননা, যেই হদের ব্যাপার আমার কাছে পৌঁছিবে, উহা (সেই হদ্ কায়েম করা) ওয়াজিব হইয়া যাইবে। — আবু দাউদ ও নাসায়ী
كتاب الحدود
وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو بْنِ الْعَاصِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «تَعَافَوُا الْحُدُودَ فِيمَا بَيْنَكُمْ فَمَا بَلَغَنِي مِنْ حَدٍّ فَقَدْ وَجَبَ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৫৬৯
- শরীআতের দন্ড বিধি অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৫৬৯। হযরত আয়েশা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলিয়াছেনঃ সম্মানী লোকদের হদ্ ব্যতীত সাধারণ ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করিয়া দাও। (হদ্ কাহারও জন্য মার্জনীয় নহে।) — আবু দাউদ
كتاب الحدود
وَعَنْ عَائِشَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أقيلوا ذَوي الهيآت عثراتهم إِلَّا الْحُدُود» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৫৭০
- শরীআতের দন্ড বিধি অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৫৭০। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যথাসাধ্য মুসলমানদের উপর হইতে হদ মউকুফ রাখ, যদি সামান্য পরিমাণও তাহার জন্য অব্যাহতির উপায় বাহির হয়, তবে তাহাকে ছাড়িয়া দাও। কেননা, শাসকের পক্ষে ক্ষমা প্রদর্শনের ব্যাপারে ভুল করা, শাস্তি দেওয়ার ব্যাপারে ভুল করা হইতে অধিক উত্তম। —তিরমিযী, অনেকের মতে এই হাদীসটি হযরত আয়েশা (রাঃ) পর্যন্ত মউকুফ। আর ইহাই সহীহ্
كتاب الحدود
وَعَنْهَا قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «ادرؤا الْحُدُودَ عَنِ الْمُسْلِمِينَ مَا اسْتَطَعْتُمْ فَإِنْ كَانَ لَهُ مَخْرَجٌ فَخَلُّوا سَبِيلَهُ فَإِنَّ الْإِمَامَ أَنْ يُخْطِئَ فِي الْعَفْوِ خَيْرٌ مِنْ أَنْ يُخْطِئَ فِي الْعُقُوبَةِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: قَدْ رُوِيَ عَنْهَا وَلم يرفع وَهُوَ أصح
তাহকীক: