মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
১৮- শরীআতের দন্ড বিধি অধ্যায়
হাদীস নং: ৩৫৮১
- শরীআতের দন্ড বিধি অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩৫৮১। ইয়াযীদ ইবনে নুআইম ইবনে হাযযাল তাঁহার পিতা হইতে বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি বলেন, মায়ের ইবনে মালেক ছিলেন ইয়াতীম। আমার পিতা তাহাকে লালন-পালন করিয়াছেন। (যুবক হইয়া) তিনি মহল্লার এক দাসীর সঙ্গে যিনায় লিপ্ত হন। তখন আমার পিতা তাহাকে পরামর্শ দিলেন, হে মায়েয। তুমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট যাইয়া তোমার ঘটনাটি বল, সম্ভবতঃ হুযূর (ﷺ) তোমার জন্য মাগফেরাতের দো'আ করিবেন। মূলতঃ তাহাকে হুযূরের খেদমতে পাঠাইবার মধ্যে আমার পিতার উদ্দেশ্য তাহার গুনাহ্ মাফের কোন উপায় উদ্ভাবন হওয়া ব্যতীত অন্য কিছু ছিল না। সুতরাং তিনি তাহার খেদমতে উপস্থিত হইয়া বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি যিনা করিয়াছি; সুতরাং আপনি আমার উপর আল্লাহর কিতাবের বিধান প্রয়োগ করুন। তাহার কথা শুনিয়া হুযূর (ﷺ) অন্য দিকে মুখ ফিরাইয়া নিলেন। মায়ের পুনরায় বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি যিনা করিয়াছি; সুতরাং আমার উপর আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী বিধান প্রয়োগ করুন। অবশেষে তিনি চারিবার পর্যন্ত তাহার কথাটি আবৃত্তি করিলেন। এইবার রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেনঃ তুমি চারিবার স্বীকারোক্তি করিয়াছ। এখন তুমি বল, কাহার সাথে তুমি যিনা করিয়াছ? মায়েয বলিলেন, অমুক মহিলার সাথে। অতঃপর তিনি (সন্দেহ দূর করার নিমিত্ত) বলিলেন, তুমি কি তাহাকে জড়াইয়া ধরিয়াছ? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। তিনি আবার জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি কি তাহার সাথে সহবাস করিয়াছ? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। তিনি আবার জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি তাহার সাথে সঙ্গম করিয়াছ? এইবারও তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। ইহার পর তিনি তাহাকে রজম করিবার জন্য আদেশ করিলেন। পরে তাহাকে 'হাররা' নামক স্থানে লইয়া যাওয়া হইল এবং যখন তাহাকে পাথর নিক্ষেপ করা হইল, তখন পাথরের (গুরুতর আঘাত সহ্য করিতে না পারিয়া তিনি অধৈর্য হইয়া পড়িলেন এবং দৌড়াইয়া পলাইতে লাগিলেন। তখন আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওনায়স মায়েযকে এমতাবস্থায় পাইলেন যে, তাহার সঙ্গীরা পাথর মারিতে মারিতে ক্লান্ত হইয়া পড়িয়াছে। এমন সময় আব্দুল্লাহ্ উটের একখানা পায়ের হাড্ডি তুলিয়া তাহাকে আঘাত করিলেন, যাহাতে তিনি মারা গেলেন। অতঃপর আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওনায়স নবী (ﷺ)-এর নিকট আসিয়া উক্ত ঘটনাটি বর্ণনা করিলেন, তখন তিনি তাহাদিগকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেনঃ তোমরা কেন তাহাকে ছাড়িয়া দিলে না ? সম্ভবতঃ সে তওবা করিয়া লইত এবং আল্লাহও তাহার তওবা কবুল করিয়া ফেলিতেন। —আবু দাউদ
كتاب الحدود
وَعَنْ يَزِيدَ بْنِ نُعَيْمِ بْنِ هَزَّالٍ عَنْ أَبِيهِ قَالَ: كَانَ مَاعِزُ بْنُ مَالِكٍ يَتِيمًا فِي حِجْرِ أَبِي فَأَصَابَ جَارِيَةً مِنَ الْحَيِّ فَقَالَ لَهُ أَبِي: ائْتِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرَهُ بِمَا صَنَعْتَ لَعَلَّهُ يَسْتَغْفِرُ لَكَ وَإِنَّمَا يُرِيدُ بِذَلِكَ رَجَاءَ أَنْ يَكُونَ لَهُ مَخْرَجًا فَآتَاهُ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِني زنيتُ فأقِمْ عليَّ كتابَ اللَّهِ حَتَّى قَالَهَا أَرْبَعَ مَرَّاتٍ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّكَ قَدْ قُلْتَهَا أَرْبَعَ مَرَّاتٍ فَبِمَنْ؟ قَالَ: بِفُلَانَةَ. قَالَ: «هَلْ ضَاجَعْتَهَا؟» قَالَ: نَعَمْ قَالَ: «هَلْ بَاشَرْتَهَا؟» قَالَ: نَعَمْ قَالَ: «هَلْ جَامَعْتَهَا؟» قَالَ: نَعَمْ قَالَ: فَأَمَرَ بِهِ أَنْ يُرْجَمَ فَأُخْرِجُ بِهِ إِلَى الْحَرَّةِ فَلَمَّا رُجِمَ فَوَجَدَ مَسَّ الْحِجَارَةِ فَجَزِعَ فَخَرَجَ يَشْتَدُّ فَلَقِيَهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أُنَيْسٍ وَقَدْ عَجَزَ أَصْحَابُهُ فَنَزَعَ لَهُ بِوَظِيفِ بَعِيرٍ فَرَمَاهُ بِهِ فَقَتَلَهُ ثُمَّ أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَذَكَرَ ذَلِكَ لَهُ فَقَالَ: «هَلَّا تَرَكْتُمُوهُ لَعَلَّهُ أَنْ يَتُوبَ. فَيَتُوبَ اللَّهُ عَلَيْهِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এই হাদীস হইতে বুঝা যায়, রজমের পূর্বে কমপক্ষে চারিবার স্বীকারোক্তি করিতে হইবে। ضاجعت باشرت ও جامعت শব্দ তিনটি যদিও সঙ্গম সহবাস করার অর্থে ব্যবহার হয়, তবুও সন্দেহ দূরীকরণার্থে হুযূর (ﷺ) তিন বার তিন শব্দ দ্বারা স্পষ্ট স্বীকারোক্তি করাইয়া লইয়াছেন।