নামায কোনো গুরুত্বপূর্ণ আমল নয়! হেযবুত তওহীদ। পর্ব–৬৩
নামায কোনো গুরুত্বপূর্ণ আমল নয়! হেযবুত তওহীদ। পর্ব–৬৩
ইসলামের মূল স্তম্ভের মধ্যে তাওহীদের পরেই নামাযের কথা বলেছেন খোদ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। একজন মুসলমানের জন্য প্রতিদিন ৫ বার নামায আদায় করা ফরজ। মেরাজে এই নামাযকে মহান রব্ব নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে হাদিয়াস্বরুপ ফরজ করেছেন। মাক্কী জিবনে জিহাদের আগেই নামাযকে ফরজ করা হয়েছে। পবিত্র কুরআনে অসংখ্যবার নামাযের কথা বলা হয়েছে। এমনকি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইন্তেকালের আগেও শেষ শব্দ উচ্চারণ করেন নামাযের বাপেরে যত্নবান হতে। হেযবুত তওহীদ কী বলে? তাদের দাবী হলো, নামাযকে গুরুত্ব দেওয়া বিকৃত ধর্মের কাজ। দেখুন, তারা লিখেছে– এই ধর্মের পণ্ডিতদের, আলেমদের কাছে দীনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে নামায, রোজা, দাড়ি, তারাবি, টুপি, টাখনু, মিলাদ, মেসওয়াক ইত্যাদি আর জেহাদ একেবারেই নিষ্প্রয়োজন। এজন্য তাদের এই ইসলাম একটি মৃত, আল্লাহর রসুলের ইসলামের বিপরীতমুখী ধর্ম। -সওমের উদ্দেশ্য : পৃ. ১৫ বিকৃত এসলামে নামায, রোজা, হজ্ব, যাকাত, আত্মার পরিচ্ছন্নতার জন্য নানারকম ঘষামাজা, আধ্যাত্মিক উন্নতির ওপর গুরুত্ব প্রাধান্য দেয়া হোল। কারণ এরা ঐ এবাদত, উপাসনা নিয়ে যত বেশি ব্যস্ত থাকবে ব্রিটিশরা তত নিরাপদ হবে। –এসলাম শুধু নাম থাকবে, পৃ. ১১২ তাদের এই লেখা দুটো থেকে সুস্পষ্ট ভাবে জানা গেলো যে, নামাাজকে গুরুত্বপূর্ণা আমল হিশাবে সাব্যস্ত করতে তারা একদমই নারাজ। ইসলাম কী বলে? কুরআন-সুন্নাহ'য় নামাযকে এত পরিমান গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে, যার ব্যাপারে দালিলিক আলোচনা করাটাও অপ্রয়োজনীয়। কারণ, শুধু কুরআনে কারীমেই প্রায় ১০০ বারের কাছাকাছি নামাযের কথা বলা হয়েছে। আর, হাদিস শরীফে তো অগণিতবার বলা হয়েছে। হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন রা. হতে বৰ্ণিত, তিনি বলেন, كَانَتْ بِي بَوَاسِيرُ, فَسَأَلْتُ النَّبِيَّ - صلى الله عليه وسلم - عَنِ الصَّلَاةِ؟ فَقَالَ: «صَلِّ قَائِمًا, فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَقَاعِدًا, فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَعَلَى جَنْبٍ আমার অৰ্শরোগ ছিল। তাই আল্লাহর রাসুলু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে সালাত সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম, তিনি বললেন–দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করবে, তা না পারলে বসে; যদি তাও না পার তাহলে শুয়ে আদায় করো। –সহিহ বুখারী, হাদিস নং : ১১১৭ ভাবা যায়, কতটা গুরুত্বপূর্ণ আমল হলে শুয়ে ইশারায় হলেও নামায পড়তে হবে। কোনোছাড়ার সুযোগ নেই। হযরত বুরায়দা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন– إِنَّ الْعَهْدَ الَّذِي بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمُ الصَّلاَةُ فَمَنْ تَرَكَهَا فَقَدْ كَفَرَ আমাদের এবং কাফিরদের মধ্যে পার্থক্যকারী আমল হলো, সালাত। যে সালাত ছেড়ে দিল সে কুফরী করল। –সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং : ১৪৫৪ এমনকি নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সহধর্মিনী হযরত উম্মে সালামাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقُولُ فِي مَرَضِهِ الَّذِي تُوُفِّيَ فِيهِ الصَّلَاةَ وَمَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ فَمَا زَالَ يَقُولُهَا حَتَّى مَا يَفِيضُ بِهَا لِسَانُهُ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইন্তেকালের ব্যাধিগ্রস্ত অবস্থায় বলছিলেন, নামায এবং তোমাদের অধীনস্থ দাস-দাসী (অর্থাৎ তাদের ব্যাপারে যত্নবান থেকো)। বারবার একথা বলতে বলতে শেষে তাঁর যবান মুবারক জড়িয়ে যায়। –সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং : ১৬২৫ এরপরও যারা বলে থাকে যে, নামাযকে গুরুত্ব দেওয়া বিকৃত ইসলামের কাজ তারা কী মুসলমান হতে পারে?