ইসলাম পালন করা জরুরি নয়! হেযবুত তওহীদ। পর্ব–৪২
ইসলাম পালন করা জরুরি নয়! হেযবুত তওহীদ। পর্ব–৪২
বর্তমানে প্রত্যেক মানুষের জন্য ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করা ফরজ। ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম চাই তা আসমানি ধর্ম হোক বা মানবরচিত কোনটাই পালন করে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জন করা বা জান্নাতে যাওয়া সম্ভব নয়। হেযবুত তওহীদ কী বলে? তাদের দাবি হলো, পৃথিবিতে প্রচলিত সকল ধর্মের যেকোনো একটা ধর্ম পালন করা যাবে। শুধু ইসলাম পালন করলে জান্নাতে যাওয়া যাবে এমন কথা ভুল। দেখুন তাদের মন্তব্যগুলো, মানুষের ব্যক্তিগত ধর্ম পরিবর্তন করা এসলামের উদ্দেশ্য নয়, এসলামের মূল উদ্দেশ্য সামষ্টিক জীবনে ন্যায়-সুবিচার শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। -আসুন সিস্টেমটাকেই পাল্টাই, পৃ. ১৮ আজকে হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিম, ইহুদী, খ্রিস্টান কেউই তাদের ধর্মগ্রন্থের অনুসরণ করছে না। সকলেই স্ব ধর্মের বিধান থেকে সরে গেছে এবং দাজ্জালের (জড়বাদী বস্তুতান্ত্রিক সভ্যতা) অনুসরণ করছে। -সবার উর্ধ্বে মানবতা : পৃ. ১১ আমরা সকল সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে এক স্রষ্টার বান্দা হিসাবে তাঁর বিধানের দিকে ফিরে যাওয়ার কথা বলছি। -মহাসত্যের আহ্বান : পৃ. ৭৫ আমরা কাউকে ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান বা ইহুদি ইত্যাদি কোন বিশেষ ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট করছি না। আমাদের কথা হচ্ছে, যার যার ধর্ম বিশ্বাস তার তার কাছে। আমরা যদি শান্তিতে জীবনযাপন করতে চাই, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি শান্তিময় জীবন উপহার দিতে চাই তার জন্য আমাদেরকে সকল প্রকার কলহ বিবাদ ও সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, আমাদের বিশ্বাস এই কথায় আপনারাও আমাদের সাথে এক মত হবেন। -মহাসত্যের আহ্বান : পৃ. ১০৫ মানবজাতির বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা কাউকে কোন বিশেষ ধর্মের দিকে আকৃষ্ট করাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছি না। -সবার উর্ধ্বে মানবতা : পৃ. ১০ অর্থাৎ তারা বলতে চায়, ইসলাম পালন করা জরুরী নয়। ইসলাম কী বলে? বর্তমানে প্রচলিত সকল ধর্মের ভেতরে একমাত্র ইসলাম ধর্মটিই সঠিক ও নির্ভেজাল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আগমণ করেছেন, শেষ নবী হিশাবে, তাঁর আনীত ধর্মটিও শেষ ধর্ম। এই ধর্ম ব্যাতিত অন্য কোনো ধর্মগ্রহণ জায়েয নেই। কারণ আল্লাহ তাআলা সকলের জন্য একমাত্র ইসলাম ধর্মকেই পরিপূর্ণ ও মনোনীত করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي ورَضِيتُ لَكُمُ الإسْلَامَ دِينًا আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের উপর আমার নিয়ামত পরিপূর্ণ করলাম এবং তোমাদের জন্য দীন হিসেবে ইসলামকে (চির দিনের জন্য) পছন্দ করে নিলাম। –সুরা মায়িদা : ৩ যেহেতু একমাত্র ইসলামই পালন করা ফরজ, সেজন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে মহান আল্লাহ অন্য সকল দ্বীনের উপর ইসলামকে বিজয়ী করার জন্য দায়িত্ব অর্পন করে বলেছেন, هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَىٰ وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُشْرِكُونَ আল্লাহই তো হিদায়াত ও সত্য দ্বীনসহ নিজ রাসুলকে প্রেরণ করেছেন, যাতে তিনি অন্য সব দ্বীনের উপর তাকে জয়যুক্ত করেন, তাতে মুশরিকগণ এটাকে যতই অপ্রীতিকর মনে করুক। –সুরা তাওবা : ৩৩ এ প্রসঙ্গে আয়াত ও হাদিস পেশ করলে আলাদা একটা কিতাব রচনা করা যাবে। কিন্তু এ ব্যাপারে আমাদের লম্বা জবাব দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা নেই। কারণ হেযবুত তওহীদ নিজেরাও তাদের বইয়ের যখন অন্য জায়গায় আমাদের স্বপক্ষে অনেক বক্তব্য লিখেছে। নিন্মে কয়েকটা প্রমাণ পেশ করছি– সকল ধর্মের মানুষের উচিৎ নিজেদের ধর্মের অবতারদের নির্দেশ মোতাবেক শেষ রসুলের (দ:) আনীত সিস্টেম গ্রহণ কোরে নেওয়া। আমরা জানি, আপনাদের ধর্মগুলিতে জাতীয় জীবন পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজনীয় আইন-কানুন নেই, যে বিধানগুলি আপনাদের ধর্মে আছে সেগুলিও কালপরিক্রমায় বিকৃত হোয়ে গেছে। সুতরাং ইচ্ছা কোরলেও আপনাদের ধর্মগুলি দিয়ে জাতীয় জীবন চালাতে পারবেন না। -শোষণের হাতিয়ার, পৃ. ৭৪ ১. নিঃসন্দেহে মানুষের জীবনবিধান হিসেবে আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য একমাত্র দীন বা ধর্ম হচ্ছে ‘ইসলাম’ (সুরা ইমরান-১৯)। ২. কেউ ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দীন গ্রহণ করতে চাইলে তা কখনো কবুল করা হবে না (সুরা ইমরান ৮৫)। ৩. আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পরিপূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নেয়ামতকে সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দীনরূপে মনোনীত করলাম (সুরা মায়েদা ৩)। -সম্মানিত আলেমদের প্রতি, পৃষ্ঠা ৯ নবী করিম (সা.) তো বহু পথে দীন প্রতিষ্ঠা করেন নি, তিনি নির্দিষ্ট একটি পথে করেছেন। আমাদেরকেও সেই পথটি অবলম্বন করতে হবে। তা হলো সবাইকে এক কলেমা তওহীদে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। ইসলামের অনেক কিছু নিয়ে মতভেদ থাকলেও ১৬০ কোটি মুসলিম আজও এক কলেমার উপরে বিশ্বাসী। এই কলেমার ভিত্তিতেই জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে, অন্যান্য মাজহাবগত মতভেদপূর্ণ বিষয়গুলোকে বৃহত্তর স্বার্থে আপাতত দূরে সরিয়ে রাখতে হবে। তারপর সত্যদীন প্রতিষ্ঠা করি I -সম্মানিত আলেমদের প্রতি, পৃ. ১৫ এই বক্তব্যগুলো থেকে বোঝা যায়, তারা নিজেরাও জানে যে, বর্তমানে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম পালন করার কোনো সুযোগ নেই। তারপরও তারা ‘ইসলাম ছাড়াও অন্য সকল ধর্ম পালন করা যাবে’ বলে যে দাবি করে, সেটা করে থাকে মূলত মানুষকে মুরতাদ বানানোর মানসে৷ কারণ হেযবুত তওহীদ তো মুসলমান নয়। মিথ্যার লিমিট ক্রস : একদিকে হেযবুত তওহীদ দাবি করলো, রসুলুল্লাহ (সা.) যা করেননি, করতে বলেননি তা কোনোদিনও হেজবুত তওহীদ করবে না। –সবার উর্ধ্বে মানবতা : পৃ. ১৪ হেজবুত তাওহীদ প্রকাশ্যভাবে চায় আল্লাহর দেওয়া জীবন ব্যবস্থা (দীন) পৃথিবীময় প্রতিষ্ঠিত হোক। –যামানার এমামের পত্রাবলী, পৃ. ৫১ আবার অন্য দিকে দাবি করছে, আমরা কাউকে ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান বা ইহুদি ইত্যাদি কোন বিশেষ ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট করছি না। আমাদের কথা হচ্ছে, যার যার ধর্ম বিশ্বাস তার তার কাছে। -মহাসত্যের আহ্বান : পৃ. ১০৫ আসলে হেযবুত তওহীদ লানতপ্রাপ্ত। যেকারণে তারা কখন সত্য বলে আর কখন মিথ্যা বলে নিজেরাই ঠাহর করে পারে না।
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন