ইসলাম না মানলেও জান্নাতে যাওয়া যাবে! হেযবুত তওহীদ পর্ব–৪১
ইসলাম না মানলেও জান্নাতে যাওয়া যাবে! হেযবুত তওহীদ পর্ব–৪১
আমরা সবাই জানি–রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আগমনের পর জান্নাতে যাওয়ার জন্য একমাত্র পথ হলো, ‘ইসলাম’ পালন করা। হেযবুত তওহীদ কী বলে? হেযবুত তওহীদ অসংখ্য জায়গায়, বিভিন্নভাবে একথা বুঝাতে চেয়েছে যে, ইসলাম পালন না করেও বর্তমান যুগে জান্নাতে যাওয়া যায়। তারা লিখেছে, কাজেই এই আদর্শিক লড়াইয়ে বাম আদর্শের সৈনিকদেরকেও এগিয়ে আসতে হবে। আমরা বলছি না যে, আপনাকে বিশেষ কোনো ধর্মে বিশ্বাসী হতে হবে। সেটা আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। মানুষকে বাঁচানোর জন্য জঙ্গিবাদ, ধর্মব্যবসা, স্বার্থের রাজনীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করা দরকার মোটিভেশন করা দরকার সেটা ত্যাগী মানুষদেরকে দিয়েই হবে। আমাদের ইহকালের সমস্যা তাই সমাধানটাও ইহকালের হিসেবেই করতে চাই। পবিত্র কোর'আনে আছে যার ইহকাল ভালো তার পরকালও ভালো। -আদর্শিক লড়াই, পৃ. ১৪, (pdf) পৃ. ১১ আরও স্পষ্টভাবে তারা লিখেছে, মানবসমাজে একটি ধারণা ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে যে, ‘পৃথিবীতে এতগুলো ধর্মের মধ্যে মাত্র একটি ধর্ম সত্য হতে পারে (!) অন্য সকল ধর্ম মিথ্যা এবং ঐ সত্য ধর্মই কেবল মানুষকে মুক্তি দিতে সক্ষম।’ এ ধারণা প্রচলিত থাকায় সকল ধর্মের অনুসারীরাই দাবি করে যে, কেবল তাদের ধর্মই সত্যধর্ম। এটা ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম মেনে চলে স্বর্গে যাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো- স্রষ্টা প্রদত্ত সকল ধর্মই সত্যধর্ম। এগুলোর মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। এর যে কোনোটি মানুষ মেনে চলতে পারে। তবে মানতে হবে পূর্ণাঙ্গভাবে। –দৈনিক বজ্রশক্তি, তারিখ, ২/২/২০১৬ ঈ. শিরোনাম, মানবসমাজে ধর্ম-অধর্ম ও শান্তি-অশান্তির চিরন্তন দ্বন্দ্ব'। নাজ্জাশী মুসলমান না হয়েও শেষ নবীকে আত্মা থেকে বিশ্বাস করে তাঁকে সত্য প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সাহায্য করার জন্য জান্নাতবাসী হয়েছেন। –হেযবুত তওহীদের ওয়েবসাইটে 'আল্লাহর পছন্দনীয় ধর্ম কোনটি'? শিরোনামে লেখা প্রবন্ধ। স্বর্গে যাবার জন্য আল্লাহ যে বিষয়গুলি বিশ্বাস করতে বলেছেন সেগুলি বিশ্বাস করতে হবে। এখানেই প্রশ্ন, ইসলামের শেষ সংস্করণ এসে যাওয়ার পরও ইসলাম গ্রহণ না করে, পূর্ববর্তী ধর্মবিশ্বাসে স্থির থেকে কেউ কি স্বর্গে যেতে পারবেন? এর জবাব হচ্ছে, হ্যাঁ, অবশ্যই তাদেরও জান্নাতে যাওয়ার পথ খোলা আছে। এক্ষেত্রে শর্ত হলো, তাদেরকে শেষ নবী ও শেষ গ্রন্থ কোর’আনকে সত্য বলে বিশ্বাস করতে হবে। এটি শাশ্বত সত্য যে, বিশ্বাসী হিসাবে পরিগণ্য হতে হলে ধর্মের কয়েকটি মূল বিষয়ের উপর বিশ্বাস থাকতেই হবে। সেগুলি হচ্ছে: আল্লাহর উপর, মালায়েকদের উপর, সকল ঐশীগ্রন্থের উপর, সকল নবী-রসুলগণের উপর, কেয়ামত দিবসের উপর, ভাগ্যের ভালো-মন্দের নিয়ন্ত্রক আল্লাহ এ কথার উপর এবং মৃত্যুর পর পুনরুত্থানের উপর। তাই শেষ নবী এবং শেষ কেতাবের উপর অবিশ্বাস রেখে জান্নাতে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই তেমনিভাবে পূর্ববর্তী কোনো নবী-রসুল-অবতার এবং তাঁদের আনীত কেতাবের প্রতিও অবিশ্বাস রেখে জান্নাতে যাওয়ার আশা করে লাভ নেই'। –হেযবুত তওহীদের ওয়েবসাইটে 'আল্লাহর পছন্দনীয় ধর্ম কোনটি'? শিরোনামে লেখা প্রবন্ধ। দৈনিক দেশের পত্র, সাপ্তাহিক সংকলন, সংখ্যা : ২৪ পৃ. ২৫ ইসলাম কী বলে? ইসলাম ধর্ম ব্যাতিত অন্য ধর্ম পালন করলে কি হবে, সে ব্যাপারে মহান আল্লাহ খুব স্পষ্ট করে কুরআনে কারীমে জানিয়ে দিয়েছেন। মহান রব্ব বলেন, وَمَن يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَن يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ যে ব্যক্তিই ইসলাম ছাড়া অন্য কোনও দীন অবলম্বন করতে চাবে, তার থেকে সে দীন কবুল করা হবে না এবং আখিরাতে সে মহা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। –সুরা আলে ইমরান : ৮৫ إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ وَالْمُشْرِكِينَ فِي نَارِ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا ۚ أُولَٰئِكَ هُمْ شَرُّ الْبَرِيَّةِ নিশ্চয়ই যারা কুফরী করেছে সেই কিতাবী ও মুশরিকগণ জাহান্নামের আগুনে যাবে, যেখানে তারা সর্বদা থাকবে। তারাই সৃষ্টির অধম। –সুরা বাইয়্যিনাহ : ৬ إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا لَوْ أَنَّ لَهُم مَّا فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا وَمِثْلَهُ مَعَهُ لِيَفْتَدُوا بِهِ مِنْ عَذَابِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ مَا تُقُبِّلَ مِنْهُمْ ۖ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ يُرِيدُونَ أَن يَخْرُجُوا مِنَ النَّارِ وَمَا هُم بِخَارِجِينَ مِنْهَا ۖ وَلَهُمْ عَذَابٌ مُّقِيمٌ নিশ্চয়ই যারা কুফর অবলম্বন করেছে, পৃথিবীতে যা-কিছু আছে সবই যদি তাদের থাকত এবং তার সমপরিমাণ আরও থাকত, যাতে কিয়ামতের দিন শাস্তি হতে রক্ষা পারওয়ার জন্য মুক্তিপণ হিসেবে তা পেশ করতে পারে, তবুও তাদের থেকে তা গৃহীত হত না। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাময় শাস্তি। তারা আগুন থেকে বের হতে চাইবে, অথচ তারা তা থেকে বের হতে পারবে না। তাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী শাস্তি।–সুরা মায়িদা : ৩৬-৩৭ এছাড়াও হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বেলাল রা.-কে নির্দেশ দিলেন। তাই তিনি লোকদের মাঝে ঘোষণা দিলেন, أَنَّهُ لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ إِلَّا نَفْسٌ مُسْلِمَةٌ অতঃপর জান্নাতে কেবল মুসলিম ব্যক্তিই প্রবেশ করবে। –সহিহ বুখারী, হাদিস নং : ৬৫২৮ অন্য বর্ণনায় এসেছে, হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, لَا تَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ حَتَّى تُؤْمِنُوا তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা ঈমানদার হতে পারবে না। –সহিহ মুসলিম, হাদিস নং : ৫৪ উক্ত আয়াত ও হাদিস থেকে প্রমাণিত হলো, ইসলাম ছাড়া অন্য সকল মতবাদ জাহান্নামী পথ। কিন্তু হেযবুত তওহীদ কুরআন-হাদীসের এই অকাট্য বিষয় গুলোকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে মূলত নিজেরা তো কাফের হয়েছেই, অন্যদেরকেও কুফরীর দিকে আহ্বান করে যাচ্ছে।
মন্তব্য (...)
এ সম্পর্কিত আরও প্রবন্ধ
কুরআনের চেয়ে মুমিন দামী! হেযবুত তওহীদ। পর্ব–১৬
পবিত্র কুরআন সরাসরি আল্লাহপাকের কালাম। পৃথিবীর সব কিছু মাখলুক হলেও আল্লাহ-র কালাম মাখলুক নয়। সুতরাং ...
মুফতী রিজওয়ান রফিকী
৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
১০০২