চন্দ্রনাথ পাহাড়ে সফর করার দ্বারা ঈমান চলে যায়?
প্রশ্নঃ ১২৫৫২৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, সিতাকুন্ড চন্দ্রনাথ পাহাড়ের কি ঘুরার জন্য যাও যাবে ওই খানেতো মন্দির আছে মন্দিরের ভিতরে না গিয়ে বাহিরে থেকে কি পাহাড়ে ঘুরা যাবে ওই খানেতো মন্দির আছে ওই খানে গেলে কি ইমান চলে যাবে? মেহেরবানী করে উত্তর দিবেন।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই! আপনার মনে এই প্রশ্ন উদয় হয়েছে সম্ভবত নিম্নোক্ত হাদীস/ আসারের কারণে,
عَن ابْن عمر رَضِي الله عَنْهُمَا أَن رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ لأَصْحَابه يَعْنِي لما وصلوا الْحجر ديار ثَمُود لَا تدْخلُوا على هَؤُلَاءِ الْمُعَذَّبين إِلَّا أَن تَكُونُوا بَاكِينَ فَإِن لم تَكُونُوا بَاكِينَ فَلَا تدْخلُوا عَلَيْهِم لَا يُصِيبكُم مَا أَصَابَهُم
https://muslimbangla.com/hadith/1621250
قالَ عمرُ رضي اللَّهُ عنهُ : لا تَعلَّموا رطانةَ الأعاجمِ، ولا تدخُلوا على المشركينَ في كنائسِهم يومَ عيدِهم فإنَّ السُّخطةَ تنزلُ عليهم
أخرجه عبدالرزاق في ((المصنف)) (1609)، وابن أبي شيبة في ((الأدب)) (52)، والبيهقي (19333)
মৌলিকভাবে কোন মুসলমান এসকল স্থানে মন্দির দেখার নিয়তে সফর করে না।
চন্দ্রনাথ পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্যই মানুষ সেখানে সফর করে।
যেমন,
১. পাহাড়–জঙ্গলের মনোরম দৃশ্য
পাহাড়ে ওঠার পুরো পথজুড়ে ছোট ছোট গাছপালা, বাঁশঝাড়, পাখির ডাক—সব মিলিয়ে অসাধারণ প্রাকৃতিক অনুভূতি পাওয়া যায়।
২. সমুদ্র ও উপকূলীয় দৃশ্য
চন্দ্রনাথ পাহাড় চট্টগ্রাম সমুদ্রতীরের খুব কাছেই।
শীর্ষ থেকে বঙ্গোপসাগরের জলরাশি ও উপকূলরেখা চোখে পড়ে—যা ভ্রমণকারীদের জন্য অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
৩. সীতাকুণ্ডের নিচের সবুজ গ্রামাঞ্চল
পাহাড়ের উপরের দিক থেকে নিচের দিকে তাকালে ধানক্ষেত, গ্রাম, ছোট ছোট টিলা—সব একসাথে এত সুন্দর লাগে যে দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে থাকা যায়।
৪. সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত
চন্দ্রনাথ পাহাড়ের সানরাইজ ও সানসেট খুবই বিখ্যাত।
পরিষ্কার আকাশে সূর্যোদয় দেখলে মনে হয় সমুদ্রের কোণ থেকে সূর্য উঠছে।
সুতরাং এসকল সুন্দর দৃশ্য উপভোগের মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তার স্মরণ করার দ্বারা ঈমান চলে যাওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না।
তবে কোন মুসলমান যদি মন্দির দেখার নিয়তেই সেখানে সফর করে / অথবা সেখানে গিয়ে মন্দিরকে লক্ষ্য বানায় তাহলে তার জন্য সেখানে সফর করা বৈধ নয়।
পরামর্শ: সেখানে সফর করা হলেও মন্দিরের আশপাশ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করা। কেননা, এসকল স্থানে সৃষ্টিকর্তার সাথে শিরকের মাধ্যমে নাফরমানী করা হয়, যা গজব নাযিল হওয়ার অন্যতম কারণ।
(قَوْلُهُ: وَلَايَحْلِفُونَ فِي بُيُوتِ عِبَادَتِهِمْ)؛ لِأَنَّ الْقَاضِيَ لَايَحْضُرُهَا بَلْ هُوَ مَمْنُوعٌ عَنْ ذَلِكَ، كَذَا فِي الْهِدَايَةِ، وَلَوْ قَالَ: الْمُسْلِمُ لَايَحْضُرُهَا لَكَانَ أَوْلَى؛ لِمَا فِي التَّتَارْخَانِيَّة: يُكْرَهُ لِلْمُسْلِمِ الدُّخُولُ فِي الْبِيعَةِ وَالْكَنِيسَةِ، وَإِنَّمَا يُكْرَهُ مِنْ حَيْثُ إنَّهُ مَجْمَعُ الشَّيَاطِينِ، لَا مِنْ حَيْثُ إنَّهُ لَيْسَ لَهُ حَقُّ الدُّخُولِ، وَالظَّاهِرُ أَنَّهَا تَحْرِيمِيَّةٌ؛ لِأَنَّهَا الْمُرَادَةُ عِنْدَ إطْلَاقِهِمْ، وَقَدْ أَفْتَيْت بِتَعْزِيرِ مُسْلِمٍ لَازَمَ الْكَنِيسَةَ مَعَ الْيَهُودِ ( البحر الرائق، دار الكتاب الاسلامي-7
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মুফতী, ফাতাওয়া বিভাগ, মুসলিম বাংলা
লেখক ও গবেষক, হাদীস বিভাগ, মুসলিম বাংলা
খতীব, রৌশন আলী মুন্সীবাড়ী জামে মসজিদ, ফেনী
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন