রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
رياض الصالحين من كلام سيد المرسلين
ভূমিকা অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৬৭৯ টি
হাদীস নং: ৪০১
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর ভয়
যে কারণে বেশি কাঁদা ও কম হাসা দরকার
হাদীছ নং : ৪০১
হযরত আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সামনে ভাষণ দেন, যেরকম ভাষণ কখনও শুনিনি। তিনি বললেন, আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে, তবে অবশ্যই খুব কম হাসতে এবং খুব বেশি কাঁদতে । তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীগণ তাদের মুখমণ্ডল ঢেকে ফেলেন এবং ডুকরে কাঁদতে থাকেন -বুখারী ও মুসলিম।৩৬৫
অপর এক বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে তাঁর সাহাবীদের সম্পর্কে কিছু পৌঁছেছিল। এ কারণে তিনি একটি ভাষণ দেন। তাতে তিনি বলেন, আমার সামনে জান্নাত ও জাহান্নাম তুলে ধরা হয়। এদিনের মত ভালো ও মন্দ কখনও দেখিনি। তোমরা যদি জানতে যা আমি জানি, তবে অবশ্যই তোমরা কম হাসতে এবং বেশি কাঁদতে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীদের উপর এরচে' কঠিন কোনও দিন আর আসেনি। তারা তাদের মাথা ঢেকে ফেলেন এবং ডুকরে কাঁদতে থাকেন।
হাদীছ নং : ৪০১
হযরত আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সামনে ভাষণ দেন, যেরকম ভাষণ কখনও শুনিনি। তিনি বললেন, আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে, তবে অবশ্যই খুব কম হাসতে এবং খুব বেশি কাঁদতে । তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীগণ তাদের মুখমণ্ডল ঢেকে ফেলেন এবং ডুকরে কাঁদতে থাকেন -বুখারী ও মুসলিম।৩৬৫
অপর এক বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে তাঁর সাহাবীদের সম্পর্কে কিছু পৌঁছেছিল। এ কারণে তিনি একটি ভাষণ দেন। তাতে তিনি বলেন, আমার সামনে জান্নাত ও জাহান্নাম তুলে ধরা হয়। এদিনের মত ভালো ও মন্দ কখনও দেখিনি। তোমরা যদি জানতে যা আমি জানি, তবে অবশ্যই তোমরা কম হাসতে এবং বেশি কাঁদতে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীদের উপর এরচে' কঠিন কোনও দিন আর আসেনি। তারা তাদের মাথা ঢেকে ফেলেন এবং ডুকরে কাঁদতে থাকেন।
مقدمة الامام النووي
50 - باب الخوف
401 - وعن أنس - رضي الله عنه - قَالَ: خطبنَا رَسُولُ الله - صلى الله عليه وسلم - خطبة مَا سَمِعْتُ مِثلها قَطّ، فَقَالَ: «لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أَعْلَمُ، لَضحِكْتُمْ قَلِيلًا وَلَبَكَيتُمْ كَثِيرًا». فَغَطَّى أصْحَابُ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - وَجُوهَهُمْ، وَلَهُمْ خَنِينٌ. مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
وفي رواية: بَلَغَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - عَنْ أَصْحَابِهِ شَيْءٌ فَخَطَبَ، فَقَالَ: «عُرِضَتْ عَلَيَّ الجَنَّةُ وَالنَّارُ، فَلَمْ أرَ كَاليَومِ في الخَيرِ وَالشَّرِّ، وَلَوْ تَعْلَمونَ مَا أَعلَمُ لَضَحِكْتُمْ قَلِيلًا وَلَبَكَيْتُمْ كَثِيرًا». فَمَا أَتَى عَلَى أَصْحَابِ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - يَوْمٌ أَشَدُّ مِنْهُ، غَطَّوْا رُؤُسَهُمْ وَلَهُمْ خَنِينٌ.
«الخَنِينُ» بالخاءِ المعجمة: هُوَ البُكَاءُ مَعَ غُنَّة وانتِشَاقِ الصَّوْتِ مِنَ الأنْفِ.
وفي رواية: بَلَغَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - عَنْ أَصْحَابِهِ شَيْءٌ فَخَطَبَ، فَقَالَ: «عُرِضَتْ عَلَيَّ الجَنَّةُ وَالنَّارُ، فَلَمْ أرَ كَاليَومِ في الخَيرِ وَالشَّرِّ، وَلَوْ تَعْلَمونَ مَا أَعلَمُ لَضَحِكْتُمْ قَلِيلًا وَلَبَكَيْتُمْ كَثِيرًا». فَمَا أَتَى عَلَى أَصْحَابِ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - يَوْمٌ أَشَدُّ مِنْهُ، غَطَّوْا رُؤُسَهُمْ وَلَهُمْ خَنِينٌ.
«الخَنِينُ» بالخاءِ المعجمة: هُوَ البُكَاءُ مَعَ غُنَّة وانتِشَاقِ الصَّوْتِ مِنَ الأنْفِ.
হাদীস নং: ৪০২
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর ভয়
হাশরের ময়দানে সূর্য কাছাকাছি চলে আসা
হাদীছ নং: ৪০২
হযরত মিকদাদ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন সূর্যকে মাখলুকের এত কাছাকাছি নিয়ে আসা হবে যে, তা তাদের থেকে মাত্র এক মীলের ব্যবধানে থাকবে। হযরত মিকদাদ রাযি. থেকে বর্ণনাকারী সুলায়ম ইবন আমির বলেন, আল্লাহর কসম! আমি জানি না ‘মীল’ দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে— ভূমির দূরত্ব (মাইল), নাকি চোখে সুরমা লাগানোর শলাকা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তারপর মানুষ তাদের আমল অনুপাতে ঘামের মধ্যে থাকবে। তাদের মধ্যে কেউ থাকবে তার দু'পায়ের গোড়ালী পর্যন্ত, কেউ থাকবে হাঁটু পর্যন্ত, কেউ কোমর পর্যন্ত এবং কেউ এমন হবে যে, ঘাম তার মুখ পর্যন্ত পৌঁছে যাবে। এই বলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ মুখের দিকে ইঙ্গিত করলেন -মুসলিম।
(সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৮৬৪; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৪২১; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৭৩৩০; তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ৬০২; শুআবুল ঈমান, হাদীছ ন ২৫৫; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ৪১৬)
হাদীছ নং: ৪০২
হযরত মিকদাদ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন সূর্যকে মাখলুকের এত কাছাকাছি নিয়ে আসা হবে যে, তা তাদের থেকে মাত্র এক মীলের ব্যবধানে থাকবে। হযরত মিকদাদ রাযি. থেকে বর্ণনাকারী সুলায়ম ইবন আমির বলেন, আল্লাহর কসম! আমি জানি না ‘মীল’ দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে— ভূমির দূরত্ব (মাইল), নাকি চোখে সুরমা লাগানোর শলাকা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তারপর মানুষ তাদের আমল অনুপাতে ঘামের মধ্যে থাকবে। তাদের মধ্যে কেউ থাকবে তার দু'পায়ের গোড়ালী পর্যন্ত, কেউ থাকবে হাঁটু পর্যন্ত, কেউ কোমর পর্যন্ত এবং কেউ এমন হবে যে, ঘাম তার মুখ পর্যন্ত পৌঁছে যাবে। এই বলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ মুখের দিকে ইঙ্গিত করলেন -মুসলিম।
(সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৮৬৪; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৪২১; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৭৩৩০; তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ৬০২; শুআবুল ঈমান, হাদীছ ন ২৫৫; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ৪১৬)
مقدمة الامام النووي
50 - باب الخوف
402 - وعن المقداد - رضي الله عنه - قَالَ: سمِعْتُ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - يقول: «تُدْنَى الشَّمْسُ يَوْمَ القِيَامَةِ مِنَ الخَلْقِ حَتَّى تَكُونَ مِنْهُمْ كَمِقْدَارِ مِيلٍ». قَالَ سُلَيْم بنُ عامِر الراوي عن المقداد: فَوَاللهِ مَا أَدْرِي مَا يَعني بِالمِيلِ، أمَسَافَةَ الأرضِ أَمِ المِيلَ الَّذِي تُكْتَحَلُ بِهِ [ص:145] العَيْنُ؟ قَالَ: «فَيكُونُ النَّاسُ عَلَى قَدْرِ أَعْمَالِهِمْ في العَرَقِ، فَمِنْهُمْ مَنْ يَكُونُ إِلَى كَعْبَيْهِ، ومنهم مَن يكُون إِلَى رُكبتَيه، ومنهم مَنْ يَكُونُ إِلَى حِقْوَيْهِ (1)، وَمِنْهُمْ مَنْ يُلْجِمُهُ العَرَقُ إلْجَامًا». قَالَ: وَأَشَارَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - بيدهِ إِلَى فِيهِ. رواه مسلم. (2)
হাদীস নং: ৪০৩
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর ভয়
হাশরের ময়দানে সূর্য কাছাকাছি চলে আসা
হাদীছ নং: ৪০৩
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, কিয়ামতের দিন মানুষ ঘামতে থাকবে। এমনকি তাদের ঘাম জমিনে সত্তর হাত পর্যন্ত উঠে যাবে এবং তা তাদের মুখে লাগাম পরিয়ে দেবে, এমনকি তা তাদের কান পর্যন্ত পৌঁছে যাবে -বুখারী ও মুসলিম।
(সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৬৫৩২; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৮৬৩; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ৪২৫৪)
হাদীছ নং: ৪০৩
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, কিয়ামতের দিন মানুষ ঘামতে থাকবে। এমনকি তাদের ঘাম জমিনে সত্তর হাত পর্যন্ত উঠে যাবে এবং তা তাদের মুখে লাগাম পরিয়ে দেবে, এমনকি তা তাদের কান পর্যন্ত পৌঁছে যাবে -বুখারী ও মুসলিম।
(সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৬৫৩২; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৮৬৩; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ৪২৫৪)
مقدمة الامام النووي
50 - باب الخوف
403 - وعن أَبي هريرة - رضي الله عنه: أن رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «يَعْرَقُ النَّاسُ يَومَ القِيَامَةِ حَتَّى يَذْهَبَ عَرَقُهُمْ في الأَرضِ سَبْعِينَ ذِراعًا، وَيُلْجِمُهُمْ حَتَّى يَبْلُغَ آذَانَهُمْ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
ومعنى «يَذْهَبُ في الأَرضِ»: ينزل ويغوص.
ومعنى «يَذْهَبُ في الأَرضِ»: ينزل ويغوص.
হাদীস নং: ৪০৪
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর ভয়
জাহান্নামের গভীরতা
হাদীছ নং: ৪০৪
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে ছিলাম। তখন তিনি একটা পতন-ধ্বনি শুনতে পেলেন।তিনি বললেন, তোমরা জান এটা কিসের শব্দ? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তিনি বললেন, এটা একটা পাথর, যা সত্তর বছর আগে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয়েছিল। সেটি এ যাবৎকাল জাহান্নামে গড়াচ্ছিল। এইমাত্র সেটি তার তলদেশে গিয়ে পৌঁছেছে। তোমরা তারই পতন-ধ্বনি শুনতে পেলে- মুসলিম।
৩৭০. সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৮৪৪
হাদীছ নং: ৪০৪
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে ছিলাম। তখন তিনি একটা পতন-ধ্বনি শুনতে পেলেন।তিনি বললেন, তোমরা জান এটা কিসের শব্দ? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তিনি বললেন, এটা একটা পাথর, যা সত্তর বছর আগে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয়েছিল। সেটি এ যাবৎকাল জাহান্নামে গড়াচ্ছিল। এইমাত্র সেটি তার তলদেশে গিয়ে পৌঁছেছে। তোমরা তারই পতন-ধ্বনি শুনতে পেলে- মুসলিম।
৩৭০. সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৮৪৪
مقدمة الامام النووي
50 - باب الخوف
404 - وعنه، قَالَ: كُنَّا مَعَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - إذْ سمع وجبة (1)، فَقَالَ: «هَلْ تَدْرُونَ مَا هَذَا؟» قُلْنَا: الله وَرَسُولُهُ أعْلَمُ. قَالَ: «هذَا حَجَرٌ رُمِيَ بِهِ في النَّارِ مُنْذُ سَبْعينَ خَريفًا، فَهُوَ يَهْوِي في النَّارِ الآنَ حَتَّى انْتَهَى إِلَى قَعْرِها فَسَمِعْتُمْ وَجْبَتَهَا». رواه مسلم. (2)
হাদীস নং: ৪০৫
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর ভয়
জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষার তাগিদ
হাদীছ নং : ৪০৫
হযরত আদী ইবন হাতিম রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমাদের প্রত্যেকের সঙ্গেই তার প্রতিপালক কথা বলবেন। তার ও আল্লাহর মধ্যে কোনও দোভাষী থাকবে না। সে তার ডানদিকে তাকাবে। সেদিকে তার পূর্বে পাঠানো আমল ছাড়া কিছুই দেখতে পাবে না। সে তার বামদিকে তাকাবে। সেদিকেও তার পূর্বে পাঠানো আমল ছাড়া কিছুই দেখতে পাবে না। সে তার সম্মুখদিকে তাকাবে। সেদিকে দেখতে পাবে কেবলই জাহান্নাম। ঠিক বরাবর। সুতরাং তোমরা জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা কর খেজুরের একটি অংশ দিয়ে হলেও -বুখারী ও মুসলিম।
(সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৭৫১২; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১০১৬; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ১৮৫; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ১৮২৪৬; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৭৩৭৩; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ৯১৭; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ৭৭৪৪; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ২৫৬; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ্, হাদীছ নং ১৬৩৮)
হাদীছ নং : ৪০৫
হযরত আদী ইবন হাতিম রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমাদের প্রত্যেকের সঙ্গেই তার প্রতিপালক কথা বলবেন। তার ও আল্লাহর মধ্যে কোনও দোভাষী থাকবে না। সে তার ডানদিকে তাকাবে। সেদিকে তার পূর্বে পাঠানো আমল ছাড়া কিছুই দেখতে পাবে না। সে তার বামদিকে তাকাবে। সেদিকেও তার পূর্বে পাঠানো আমল ছাড়া কিছুই দেখতে পাবে না। সে তার সম্মুখদিকে তাকাবে। সেদিকে দেখতে পাবে কেবলই জাহান্নাম। ঠিক বরাবর। সুতরাং তোমরা জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা কর খেজুরের একটি অংশ দিয়ে হলেও -বুখারী ও মুসলিম।
(সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৭৫১২; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১০১৬; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ১৮৫; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ১৮২৪৬; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৭৩৭৩; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ৯১৭; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ৭৭৪৪; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ২৫৬; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ্, হাদীছ নং ১৬৩৮)
مقدمة الامام النووي
50 - باب الخوف
405 - وعن عدي بن حاتم - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إلاَّ سَيُكَلِّمُهُ رَبُّهُ لَيْسَ بَيْنَهُ وبَيْنَهُ تَرْجُمَانٌ، فَيَنْظُرُ أَيْمَنَ مِنْهُ فَلاَ يَرَى إلاَّ مَا قَدَّمَ، وَيَنْظُرُ أشْأَمَ مِنْهُ فَلاَ يَرَى إلاَّ مَا قَدَّمَ، وَيَنْظُرُ بَيْنَ يَدَيْهِ فَلاَ يَرَى إلاَّ النَّارَ تِلْقَاءَ وَجْهِهِ، فَاتَّقُوا النَّارَ وَلَوْ بِشِقِّ تَمْرَةٍ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
হাদীস নং: ৪০৬
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর ভয়
ফিরিশতাদের সংখ্যাধিক্য ও কিয়ামতের ভয়াবহতা
হাদীছ নং: ৪০৬
হযরত আবূ যার রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আমি দেখতে পাই যা তোমরা দেখতে পাও না। আকাশ কড়কড় শব্দ করছে। আর তার জন্য কড়কড় আওয়াজ করা যথার্থই। তাতে এমন চার আঙ্গুল পরিমাণ জায়গাও নেই, যেখানে কোনও না কোনও ফিরিশতা আল্লাহ তাআলার জন্য সিজদারত অবস্থায় কপাল ঠেকানো নেই। আল্লাহর কসম! তোমরা যদি জানতে যা আমি জানি, তবে তোমরা অবশ্যই অল্প হাসতে এবং বেশি কাঁদতে। আর তোমরা বিছানায় স্ত্রীদের সঙ্গে আনন্দ-উপভোগও করতে না। বরং তোমরা আল্লাহ তাআলার আশ্রয় চাইতে চাইতে রাস্তাঘাটে বের হয়ে পড়তে– তিরমিযী। ৩৭৩
ইমাম তিরমিযী রহ. বলেন, এটি একটি হাসান হাদীছ।
(৩৭৩. জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৩১২; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ৪১৯০; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২১৫১৬; মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদীছ নং ১৭৯৩৪; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৩৩৩৭; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৭৬৪; তহাবী, শারহু মুশকিলিল আছার হাদীছ নং ১১৩৫; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ৪১৭৩)
হাদীছ নং: ৪০৬
হযরত আবূ যার রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আমি দেখতে পাই যা তোমরা দেখতে পাও না। আকাশ কড়কড় শব্দ করছে। আর তার জন্য কড়কড় আওয়াজ করা যথার্থই। তাতে এমন চার আঙ্গুল পরিমাণ জায়গাও নেই, যেখানে কোনও না কোনও ফিরিশতা আল্লাহ তাআলার জন্য সিজদারত অবস্থায় কপাল ঠেকানো নেই। আল্লাহর কসম! তোমরা যদি জানতে যা আমি জানি, তবে তোমরা অবশ্যই অল্প হাসতে এবং বেশি কাঁদতে। আর তোমরা বিছানায় স্ত্রীদের সঙ্গে আনন্দ-উপভোগও করতে না। বরং তোমরা আল্লাহ তাআলার আশ্রয় চাইতে চাইতে রাস্তাঘাটে বের হয়ে পড়তে– তিরমিযী। ৩৭৩
ইমাম তিরমিযী রহ. বলেন, এটি একটি হাসান হাদীছ।
(৩৭৩. জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৩১২; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ৪১৯০; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২১৫১৬; মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদীছ নং ১৭৯৩৪; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৩৩৩৭; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৭৬৪; তহাবী, শারহু মুশকিলিল আছার হাদীছ নং ১১৩৫; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ৪১৭৩)
مقدمة الامام النووي
50 - باب الخوف
406 - وعن أَبي ذر - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «إنِّي أَرَى مَا لاَ تَرَوْنَ، أطَّتِ السَّمَاءُ وَحُقَّ لَهَا أَنْ تَئِطَّ، مَا فِيهَا مَوضِعُ أرْبَع أصَابعَ إلاَّ وَمَلَكٌ وَاضِعٌ جَبْهَتَهُ سَاجِدًا للهِ تَعَالَى. والله لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أَعْلَمُ، لَضَحِكْتُمْ قَلِيلًا وَلَبَكَيْتُمْ كَثِيرًا، وَمَا تَلَذَّذْتُمْ بالنِّساءِ عَلَى الفُرُشِ، وَلَخَرَجْتُمْ إِلَى الصُّعُدَاتِ تَجْأرُونَ إِلَى اللهِ تَعَالَى». رواه الترمذي (1)، وَقالَ: «حديث حسن».
وَ «أطَّت» بفتح الهمزة وتشديد الطاءِ و «تئط» بفتح التاءِ وبعدها همزة مكسورة، وَالأطيط: صوتُ الرَّحْلِ وَالقَتَبِ وَشِبْهِهِمَا، ومعناه: أنَّ كَثرَةَ مَنْ في السَّماءِ [ص:146] مِنَ المَلائِكَةِ العَابِدِينَ قَدْ أثْقَلَتْهَا حَتَّى أطّتْ. وَ «الصُّعُدات» بضم الصاد والعين: الطُّرُقات: ومعنى: «تَجأَرُون»: تَستَغيثُونَ.
وَ «أطَّت» بفتح الهمزة وتشديد الطاءِ و «تئط» بفتح التاءِ وبعدها همزة مكسورة، وَالأطيط: صوتُ الرَّحْلِ وَالقَتَبِ وَشِبْهِهِمَا، ومعناه: أنَّ كَثرَةَ مَنْ في السَّماءِ [ص:146] مِنَ المَلائِكَةِ العَابِدِينَ قَدْ أثْقَلَتْهَا حَتَّى أطّتْ. وَ «الصُّعُدات» بضم الصاد والعين: الطُّرُقات: ومعنى: «تَجأَرُون»: تَستَغيثُونَ.
হাদীস নং: ৪০৭
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর ভয়
হাশরের ময়দানে বিশেষ যে পাঁচটি বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে
হাদীছ নং : ৪০৭
হযরত আবূ বারযা আল আসলামী রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, কোনও বান্দা পা সরাতে পারবে না, যতক্ষণ না তাকে জিজ্ঞেস করা হবে (পাঁচটি বিষয় সম্পর্কে)- তার আয়ু সম্পর্কে, কী কাজে তা শেষ করেছে; তার জ্ঞান সম্পর্কে, সে অনুযায়ী কী আমল করেছে; তার সম্পদ সম্পর্কে, কোথা থেকে তা অর্জন করেছে এবং কোন্ খাতে তা ব্যয় করেছে; আর তার শরীর সম্পর্কে, কী কাজে তা জরাজীর্ণ করেছে – তিরমিযী। ৩৭৭
ইমাম তিরমিযী রহ. বলেন, এটি একটি হাসান সহীহ হাদীছ।
(৩৭৭ . জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৪১৭; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীছ নং ৩৪৬৯৪; সুনানে দারিমী, হাদীছ নং ৫৫৪; মুসনাদ আবূ ইয়া'লা, হাদীছ নং ৭৪৩৪; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ১১১৭৭; বায়হাকী, শু'আবুল ঈমান, হাদীছ নং ১৬৪৮)
হাদীছ নং : ৪০৭
হযরত আবূ বারযা আল আসলামী রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, কোনও বান্দা পা সরাতে পারবে না, যতক্ষণ না তাকে জিজ্ঞেস করা হবে (পাঁচটি বিষয় সম্পর্কে)- তার আয়ু সম্পর্কে, কী কাজে তা শেষ করেছে; তার জ্ঞান সম্পর্কে, সে অনুযায়ী কী আমল করেছে; তার সম্পদ সম্পর্কে, কোথা থেকে তা অর্জন করেছে এবং কোন্ খাতে তা ব্যয় করেছে; আর তার শরীর সম্পর্কে, কী কাজে তা জরাজীর্ণ করেছে – তিরমিযী। ৩৭৭
ইমাম তিরমিযী রহ. বলেন, এটি একটি হাসান সহীহ হাদীছ।
(৩৭৭ . জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৪১৭; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীছ নং ৩৪৬৯৪; সুনানে দারিমী, হাদীছ নং ৫৫৪; মুসনাদ আবূ ইয়া'লা, হাদীছ নং ৭৪৩৪; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ১১১৭৭; বায়হাকী, শু'আবুল ঈমান, হাদীছ নং ১৬৪৮)
مقدمة الامام النووي
50 - باب الخوف
407 - وعن أَبي برزة - براء ثُمَّ زاي - نَضْلَة بن عبيد الأسلمي - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ الله - صلى الله عليه وسلم: «لاَ تَزُولُ قَدَمَا عَبْدٍ يَومَ القِيَامَةِ حَتَّى يُسْأَلَ عَنْ عُمُرِهِ فِيمَ أفنَاهُ؟ وَعَنْ عِلمِهِ فِيمَ فَعَلَ فِيهِ؟ وَعَنْ مَالِهِ مِنْ أَيْنَ اكْتَسَبَهُ؟ وَفِيمَ أنْفَقَهُ؟ وَعَنْ جِسْمِهِ فِيمَ أَبلاهُ؟». رواه الترمذي، (1) وَقالَ: «حديث حسن صحيح».
হাদীস নং: ৪০৮
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর ভয়
আখেরাতে জমিনের সাক্ষ্যদান
হাদীছ নং: ৪০৮
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঠ করলেন- يَوْمَئِذٍ تُحَدِّثُ أَخْبَارَهَا (যেদিন তা অর্থাৎ ভূমি তার বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে)৩৭৯। তারপর বললেন, তোমরা কি জান তার বৃত্তান্ত কী? সাহাবীগণ বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ভালো জানেন। তিনি বললেন, তার বৃত্তান্ত হলো যে, সে তার পৃষ্ঠে প্রত্যেক বান্দা ও বান্দী যা-কিছু করেছে সে সম্পর্কে সাক্ষ্য দেবে। সে বলবে, অমুক অমুক দিন তুমি অমুক অমুক কাজ করেছ। এটাই হলো তার বৃত্তান্ত – তিরমিযী। ৩৮০
ইমাম তিরমিযী রহ. বলেন, এটি একটি হাসান সহীহ হাদীছ।
(৩৭৯. সূরা যিলযাল (৯৯), আয়াত ৪
৩৮০. জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৪২৯; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৮৮৬৭; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৭৩৬০; নাসাঈ, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৬২৯; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৬৯১৫; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ৪৩০৯)
হাদীছ নং: ৪০৮
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঠ করলেন- يَوْمَئِذٍ تُحَدِّثُ أَخْبَارَهَا (যেদিন তা অর্থাৎ ভূমি তার বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে)৩৭৯। তারপর বললেন, তোমরা কি জান তার বৃত্তান্ত কী? সাহাবীগণ বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ভালো জানেন। তিনি বললেন, তার বৃত্তান্ত হলো যে, সে তার পৃষ্ঠে প্রত্যেক বান্দা ও বান্দী যা-কিছু করেছে সে সম্পর্কে সাক্ষ্য দেবে। সে বলবে, অমুক অমুক দিন তুমি অমুক অমুক কাজ করেছ। এটাই হলো তার বৃত্তান্ত – তিরমিযী। ৩৮০
ইমাম তিরমিযী রহ. বলেন, এটি একটি হাসান সহীহ হাদীছ।
(৩৭৯. সূরা যিলযাল (৯৯), আয়াত ৪
৩৮০. জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৪২৯; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৮৮৬৭; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৭৩৬০; নাসাঈ, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৬২৯; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৬৯১৫; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ৪৩০৯)
مقدمة الامام النووي
50 - باب الخوف
408 - وعن أَبي هريرة - رضي الله عنه - قَالَ: قرأ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: {يَوْمَئِذٍ تُحَدِّثُ أَخْبَارَهَا} [الزلزلة: 4] ثُمَّ قَالَ: «أَتَدْرونَ مَا أخْبَارهَا»؟ قالوا: الله وَرَسُولُهُ أعْلَمُ. قَالَ: «فإنَّ أَخْبَارَهَا أَنْ تَشْهَدَ عَلَى كُلّ عَبْدٍ أَوْ أَمَةٍ بما عَمِلَ عَلَى ظَهْرِهَا، تَقُولُ: عَمِلْتَ كَذَا وكَذَا في يَومِ كَذَا وكَذَا، فَهذِهِ أَخْبَارُهَا». رواه الترمذي، (1) وَقالَ: «حديث حسن صحيح».
হাদীস নং: ৪০৯
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর ভয়
ইসরাফীল আলাইহিস সালামের প্রস্তুত হয়ে থাকা এবং নবী আলাইহিস সালামের কিয়ামতভীতি
হাদীছ নং: ৪০৯
হযরত আবূ সা'ঈদ খুদরী রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আমি কিভাবে আনন্দিত থাকতে পারি? অথচ শিঙ্গাধারী (ইসরাফীল আলাইহিস সালাম) শিঙ্গা মুখে নিয়ে কান পেতে রেখেছেন কখন তাকে ফুঁ দেওয়ার আদেশ করা হয় আর তখন ফুঁ দেবেন। এ কথাটি যেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীদের কাছে খুব ভারী মনে হলো। তিনি তাদের বললেন, তোমরা বল— حَسْبُنَا اللهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ (আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনিই উত্তম কর্মসম্পাদক) -তিরমিযী। ৩৮২
ইমাম তিরমিযী রহ. বলেন, এটি একটি হাসান সহীহ হাদীছ।
(৩৮২. জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৪৩১; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৩০০৮; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীছ নং ২৯৫৮৭; মুসনাদুল হুমায়দী, হাদীছ নং ৭৭১; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৭২৩; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ৫০৭২; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৩৪৬; তহাবী, শারহু মুশকিলিল আছার, হাদীছ নং ৫৩৪২)
হাদীছ নং: ৪০৯
হযরত আবূ সা'ঈদ খুদরী রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আমি কিভাবে আনন্দিত থাকতে পারি? অথচ শিঙ্গাধারী (ইসরাফীল আলাইহিস সালাম) শিঙ্গা মুখে নিয়ে কান পেতে রেখেছেন কখন তাকে ফুঁ দেওয়ার আদেশ করা হয় আর তখন ফুঁ দেবেন। এ কথাটি যেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীদের কাছে খুব ভারী মনে হলো। তিনি তাদের বললেন, তোমরা বল— حَسْبُنَا اللهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ (আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনিই উত্তম কর্মসম্পাদক) -তিরমিযী। ৩৮২
ইমাম তিরমিযী রহ. বলেন, এটি একটি হাসান সহীহ হাদীছ।
(৩৮২. জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৪৩১; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৩০০৮; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীছ নং ২৯৫৮৭; মুসনাদুল হুমায়দী, হাদীছ নং ৭৭১; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৭২৩; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ৫০৭২; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৩৪৬; তহাবী, শারহু মুশকিলিল আছার, হাদীছ নং ৫৩৪২)
مقدمة الامام النووي
450 - باب الخوف
409 - وعن أَبي سعيد الخدري - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «كَيْفَ أَنْعَمُ! وَصَاحِبُ القَرْنِ قَدِ التَقَمَ القَرْنَ، وَاسْتَمَعَ الإذْنَ مَتَى يُؤمَرُ بالنَّفْخِ فَيَنْفُخُ»، فَكَأنَّ ذلِكَ ثَقُلَ عَلَى أصْحَابِ رسولِ الله - صلى الله عليه وسلم - فَقَالَ لَهُمْ: «قُولُوا: حَسْبُنَا الله وَنِعْمَ الوَكِيلُ». رواه الترمذي، (1) وَقالَ: «حديث حسنٌ».
«القَرْنُ»: هُوَ الصُّورُ الَّذِي قَالَ الله تَعَالَى: {وَنُفِخَ في الصُّورِ} [الكهف: 99]، كذا فسَّره رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم.
«القَرْنُ»: هُوَ الصُّورُ الَّذِي قَالَ الله تَعَالَى: {وَنُفِخَ في الصُّورِ} [الكهف: 99]، كذا فسَّره رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم.
হাদীস নং: ৪১০
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর ভয়
পরকালীন নাজাতের পক্ষে আল্লাহভীতির কার্যকারিতা
হাদীছ নং: ৪১০
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি (রাতে শত্রুর হামলার) ভয় করে, সে সন্ধ্যারাতেই রওয়ানা হয় । আর যে ব্যক্তি সন্ধ্যারাতে রওয়ানা হয়, সে গন্তব্যস্থলে পৌঁছে যায়। জেনে রেখ, আল্লাহর পণ্য অতি মূল্যবান। জেনে রেখ, আল্লাহর পণ্য হলো জান্নাত -তিরমিযী। ৩৯০
ইমাম তিরমিযী রহ. বলেন, এটি একটি হাসান হাদীছ।
জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৪৫০; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৫৫; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ৪১৭৪
হাদীছ নং: ৪১০
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি (রাতে শত্রুর হামলার) ভয় করে, সে সন্ধ্যারাতেই রওয়ানা হয় । আর যে ব্যক্তি সন্ধ্যারাতে রওয়ানা হয়, সে গন্তব্যস্থলে পৌঁছে যায়। জেনে রেখ, আল্লাহর পণ্য অতি মূল্যবান। জেনে রেখ, আল্লাহর পণ্য হলো জান্নাত -তিরমিযী। ৩৯০
ইমাম তিরমিযী রহ. বলেন, এটি একটি হাসান হাদীছ।
জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৪৫০; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৫৫; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ৪১৭৪
مقدمة الامام النووي
50 - باب الخوف
410 - وعن أَبي هريرة - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «مَنْ خَافَ أَدْلَجَ، وَمَنْ أَدْلَجَ بَلَغَ المَنْزِلَ. ألاَ إنَّ سِلْعَةَ اللهِ غَالِيَةٌ، أَلاَ إِنَّ سِلْعَةَ الله الجَنَّةُ». رواه الترمذي، (1) وَقالَ: «حديث حسن».
وَ «أدْلَجَ»: بإسكان الدال ومعناه سَار من أول الليلِ. والمراد التشمير في الطاعة، والله أعلم.
وَ «أدْلَجَ»: بإسكان الدال ومعناه سَار من أول الليلِ. والمراد التشمير في الطاعة، والله أعلم.
হাদীস নং: ৪১১
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর ভয়
হাশর-ময়দানের ভয়াবহ পরিস্থিতি
হাদীছ নং : ৪১১
উম্মুল মু'মিনীন হযরত আয়েশা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন মানুষকে খালি পায়ে উলঙ্গ শরীরে খতনাবিহীন অবস্থায় সমবেত করা হবে। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! পুরুষ ও নারী সকলে? তারা একে অন্যকে দেখবে? তিনি বললেন, হে আয়েশা! এ বিষয়টি যে তাদেরকে ভাবাবে, পরিস্থিতি তারচে' অনেক কঠিন।
অপর এক বর্ণনায় আছে, তারা যে একে অন্যের দিকে তাকাবে, বিষয়টি তারচে' অনেক বেশি উদ্বেগজনক -বুখারী ও মুসলিম।
সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৬৫২৭; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৮৫৯; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ২০৮৪; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৪২৩; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীছ নং ৪২৭৬; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২৪২৬৫; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৭৩১৮; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীছ নং ৩৪৩৯৪; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ৪৩১৩
হাদীছ নং : ৪১১
উম্মুল মু'মিনীন হযরত আয়েশা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন মানুষকে খালি পায়ে উলঙ্গ শরীরে খতনাবিহীন অবস্থায় সমবেত করা হবে। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! পুরুষ ও নারী সকলে? তারা একে অন্যকে দেখবে? তিনি বললেন, হে আয়েশা! এ বিষয়টি যে তাদেরকে ভাবাবে, পরিস্থিতি তারচে' অনেক কঠিন।
অপর এক বর্ণনায় আছে, তারা যে একে অন্যের দিকে তাকাবে, বিষয়টি তারচে' অনেক বেশি উদ্বেগজনক -বুখারী ও মুসলিম।
সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৬৫২৭; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৮৫৯; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ২০৮৪; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৪২৩; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীছ নং ৪২৭৬; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২৪২৬৫; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৭৩১৮; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীছ নং ৩৪৩৯৪; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ৪৩১৩
مقدمة الامام النووي
50 - باب الخوف
411 - وعن عائشة رضي الله عنها، قَالَتْ: سَمِعْتُ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - يقول: «يُحْشَرُ النَّاسُ يَوْمَ القِيَامَةِ حُفَاةً عُرَاةً غُرْلًا». قُلْتُ: يَا رَسُول الله، الرِّجَالُ وَالنِّساءُ جَمِيعًا يَنْظُرُ بَعضُهُمْ إِلَى بَعْض؟! قَالَ: «يَا عائِشَةُ، الأمرُ أَشَدُّ مِنْ أَنْ يُهِمَّهُمْ ذلِكَ».
وفي رواية: «الأَمْرُ أَهمُّ مِنْ أَنْ يَنْظُرَ بَعضُهُمْ إِلَى بَعضٍ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
«غُرلًا» بِضَمِّ الغَينِ المعجمة، أيْ: غَيرَ مَختُونينَ.
وفي رواية: «الأَمْرُ أَهمُّ مِنْ أَنْ يَنْظُرَ بَعضُهُمْ إِلَى بَعضٍ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
«غُرلًا» بِضَمِّ الغَينِ المعجمة، أيْ: غَيرَ مَختُونينَ.
হাদীস নং: ৪১২
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর কাছে আশাবাদী থাকা
এখানে رجَاء অর্থ আশা। কখনও কখনও ভীতি অর্থেও শব্দটি ব্যবহৃত হয়। যেমন কুরআন মাজীদে আছেঃ
{مَا لَكُمْ لَا تَرْجُونَ لِلَّهِ وَقَارًا (13)} [نوح: 13]
"তোমাদের কী হল যে, তোমরা আল্লাহর মহিমাকে বিলকুল ভয় পাও না?”
আর-রিসালাতুল কুশায়রিয়্যাহ গ্রন্থে আছে, رجَاء হল কোনও ভবিষ্যৎ প্রিয়বস্তুর সঙ্গে হৃদয় জুড়ে রাখা। আরেক হচ্ছে تمنى (তামান্নী)। رجَاء ও تمنى এর মধ্যে পার্থক্য আছে। যেই আশা'র সঙ্গে প্রচেষ্টাও চালানো হয়, তাকে رجَاء বলে। পক্ষান্তরে যদি কেবল আশাই করা হয় কিন্তু চেষ্টা করা না হয়, বরং অলস সময় কাটানো হয়, তবে এরূপ আশাকে تمنى বলা হয়। সুতরাং رجَاء প্রশংসনীয় ও কাম্য। আর تمنى নিন্দনীয় ও বর্জনীয়। এক হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
" الكيس من دان نفسه، وعمل لما بعد الموت، والعاجز من أتبع نفسه هواها، وتمنى على الله "
“বুদ্ধিমান ওই ব্যক্তি, যে নিজের হিসাব নেয় ও মৃত্যুপরবর্তী জীবনের জন্য আমল করে। আর নির্বোধ ওই ব্যক্তি, যে নিজেকে খেয়াল-খুশির অনুগামী বানায় এবং আল্লাহর কাছে আশাবাদী থাকে।” (তিরমিযী ২৪৫৯)
কুরআন ও হাদীছে আল্লাহ তাআলার কাছে আশাবাদী থাকতে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহর কাছে আশাবাদী থাকার অর্থ হল কারও দ্বারা কোনও পাপ হয়ে গেলে সে আল্লাহ তা'আলার প্রতি এই সুধারণা রাখবে যে, খাঁটিমনে তাওবা করলে তিনি ক্ষমা করে দেবেন। এমনিভাবে কোনও সৎকর্ম করলে আশা রাখবে যে, তিনি তা কবুল করে নেবেন। আশাবাদী থাকার অর্থ এই নয় যে, কেউ বরাবর পাপকর্ম করে যাবে আর এই ধারণা রাখবে যে, আল্লাহ নিজ রহমতে তা মাফ করে দেবেন। অর্থাৎ মাফ পাওয়ার আশায় গুনাহ করতে থাকা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। এটা কুরআন-হাদীছে বর্ণিত 'আশা'র মধ্যে পড়ে না। বরং এটা ধোকা ও আত্মপ্রবঞ্চনা। আবূ উছমান জীযী রহ. বলেন, সৌভাগ্যের লক্ষণ হল তুমি ইবাদত-বন্দেগী করতে থাকবে, পাশাপাশি ভয়ও রাখবে- না জানি তা প্রত্যাখ্যান করা হয়। আর দুর্ভাগ্যের আলামত হল তুমি পাপকর্ম করে যাবে, পাশাপাশি আশা রাখবে আখিরাতে তুমি নাজাত পেয়ে যাবে।
মোটকথা, ইসলাম তার অনুসারীদেরকে সর্বদা আশাবাদী থাকতে উৎসাহ দেয়। সেইসঙ্গে চেষ্টারত থাকতেও জোর তাগিদ করে। প্রকৃতপক্ষে এটাই দীনী ও দুনিয়াবী উন্নতির সিঁড়ি।
ইমাম নববী রহ. এ অধ্যায়ে এ সম্পর্কিত কয়েকটি আয়াত ও হাদীছ উল্লেখ করেছেন। আমরা তার বঙ্গানুবাদ ও সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা পেশ করছি। আল্লাহ তাআলা তাওফীক দান করুন।
*আল্লাহর কাছে আশাবাদী থাকা' সম্পর্কিত কিছু আয়াত
• এক নং আয়াত : নিরাশ না হওয়ার হুকুম
قُلْ يَاعِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِنْ رَحْمَةِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ (53)
অর্থ : 'বলে দাও, হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজ সত্তার উপর সীমালঙ্ঘন করেছে, আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সমস্ত পাপ ক্ষমা করেন। নিশ্চয়ই তিনি অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। যুমার ৫৩
ব্যাখ্যা
এ আয়াতটি দয়াময় আল্লাহ তা'আলার অসীম ক্ষমাশীলতার জানান দিচ্ছে। এটি ঘোর পাপীর পাষাণ হৃদয় বিগলিত করার এক মহৌষধ। অতিরিক্ত পাপের ফলে মানুষের অন্তর শক্ত হয়ে যায়। একপর্যায়ে সে ক্ষমা পাওয়ার ব্যাপারে হতাশ হয়ে যায়। হতাশাগ্রস্ত মন সুপথে আসার উৎসাহ পায় না। তাই দয়াময় মাওলা মানুষের মনে আশাবাদ জাগিয়ে রাখতে চান, যাতে সে কঠিন থেকে কঠিন পাপে লিপ্ত হওয়ার পরও ক্ষমা পাওয়ার আশায় সুপথে ফিরে আসে। তাই বারবার তিনি তাওবার ডাক দিয়েছেন। মাগফিরাত ও ক্ষমার ভরসা দিয়েছেন।
আয়াতটি বলছে, কোনও ব্যক্তি যদি সারাটা জীবন কুফর, শিরক কিংবা অন্যান্য গুনাহের ভেতর কাটিয়ে দেয়, তবে এই ভেবে তার হতাশ হওয়ার কারণ নেই যে, এখন আর তার তাওবা কবুল হবে না; বরং আল্লাহ তা'আলা নিজ রহমতে তাওবার দুয়ার খুলেই রেখেছেন। তিনি হতাশ হতে নিষেধ করেছেন। কাফের, মুশরিক, ইহুদী, খৃষ্টান, বিদ'আতী, ধর্মত্যাগী যেই হোক না কেন, সকলকেই আশ্বাসবাণী শুনিয়েছেন যে, তিনি সকলের সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করতে পারেন। অসীম তাঁর ক্ষমাশীলতা, অন্তহীন তাঁর দয়ামায়া । শুধু দরকার একটু তাঁর অভিমুখী হওয়া, তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করা। তাই তিনি পরের আয়াতে ডাক দিয়েছেন-
وَأَنِيبُوا إِلَى رَبِّكُمْ وَأَسْلِمُوا لَهُ مِنْ قَبْلِ أَنْ يَأْتِيَكُمُ الْعَذَابُ ثُمَّ لَا تُنْصَرُونَ (54)
'তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের অভিমুখী হয়ে যাও এবং তাঁর সমীপে আনুগত্য প্রকাশ কর তোমাদের নিকট শাস্তি আসার আগে, যার পর আর তোমাদেরকে সাহায্য করা হবে না।
অর্থাৎ অতীত গুনাহের জন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত হও। পাপকর্ম ছেড়ে এক আল্লাহর দিকে ফিরে আস। নফস ও কুপ্রবৃত্তির তাবেদারি ছেড়ে দিয়ে আল্লাহর অনুগত হয়ে যাও। মানবরচিত আইন ও মনগড়া মতবাদ পরিহার করে শরী'আতের অনুসরণ শুরু করে দাও। আল্লাহর কাছে ঠিকই ক্ষমা পেয়ে যাবে।
• দুই নং আয়াত : সাবা সম্প্রদায়ের ধ্বংসকাহিনী
{وَهَلْ نُجَازِي إِلَّا الْكَفُورَ} [سبأ: 17]
অর্থ : 'আর আমি তো শাস্তি দিই কেবল ঘোর অকৃতজ্ঞদেরকেই।' সাবা ১৭
ব্যাখ্যা
এটি সূরা সাবা'র ১৭ নং আয়াতের অংশবিশেষ। এর আগে সাবা সম্প্রদায়ের প্রতি আল্লাহ তা'আলার বিপুল অনুগ্রহ বর্ষণ এবং বিপরীতে তাদের চরম অকৃতজ্ঞতার কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। সাবা সম্প্রদায় ইয়ামানে বাস করত। এককালে সভ্যতা-সংস্কৃতিতে এ জাতি অসাধারণ উৎকর্ষ লাভ করেছিল। কুরআন মাজীদের ভাষ্যমতে তাদের ভূমি ছিল অত্যন্ত উর্বর। প্রচুর ফসল তাতে জন্মাত। তাদের মহাসড়কের দু'পাশে ছিল সারি সারি ফলের বাগান এবং তা বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। অর্থ-সম্পদে যেমন ছিল সমৃদ্ধ, তেমনি রাজনৈতিকভাবেও ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। কিন্তু কালক্রমে তারা ভোগ-বিলাসিতায় এমনভাবে মগ্ন হয়ে পড়ল যে, তারা আল্লাহ তা'আলাকে ভুলে গেল, তাঁর বিধি-বিধান পরিত্যাগ করল এবং শিরকী কর্মকাণ্ডকে নিজেদের ধর্ম বানিয়ে নিল।
আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে সতর্ক করার জন্য তাদের কাছে কয়েকজন নবী পাঠালেন। হাফেজ ইবনে কাছীর রহ.-এর বর্ণনামতে তাদের কাছে একের পর এক তেরোজন নবীর আগমন হয়েছিল। নবীগণ তাদেরকে নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করলেন। তারা যাতে সুপথে চলে আসে সেজন্য মেহনত করতে থাকলেন, কিন্তু তারা তাঁদের কথা মানল না। পরিশেষে তাদের উপর শাস্তি আসল ।
'মাআরিব' নামক স্থানে একটি বাঁধ ছিল। সেই বাঁধের পানি দিয়ে তাদের জমি চাষাবাদ করা হতো। আল্লাহ তাআলা প্রবল জলোচ্ছ্বাস দিয়ে সেই বাঁধটি ভেঙ্গে দিলেন। ফলে গোটা জনপদ পানিতে ভেসে গেল এবং বাগান গেল ধ্বংস হয়ে (তাওযীহুল কুরআন দ্র.)। তাদের এ পরিণাম প্রসঙ্গেই আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেছেন-
{ذَلِكَ جَزَيْنَاهُمْ بِمَا كَفَرُوا وَهَلْ نُجَازِي إِلَّا الْكَفُورَ } [سبأ: 17]
‘আমি তাদেরকে এ শাস্তি দিয়েছিলাম এ কারণে যে, তারা অকৃতজ্ঞতায় লিপ্ত হয়েছিল। আর আমি তো শাস্তি দিই কেবল ঘোর অকৃতজ্ঞদেরকেই।’
বলাবাহুল্য, কুফর ও অবিশ্বাসই সর্বাপেক্ষা ঘোর অকৃতজ্ঞতা। যারা ঈমানদার, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা ঈমানের আওতার মধ্যে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের যারা অকৃতজ্ঞতামূলক কাজকর্ম হয়ে গেলেও ঘোর অকৃতজ্ঞ বলে গণ্য হবে না। ফলে আয়াতে যে শাস্তির কঠিন সতর্কবাণী শোনানো হয়েছে তারা তার আওতাভুক্ত হবে না। এটা ঈমানেরই মহিমা যে, এর কারণে মু'মিনগণ আল্লাহ তাআলার রহমত ও দয়ার পাত্র হয়ে যায়। তারা বড় বড় পাপ থেকে বিরত থাকলে আল্লাহ তা'আলা নিজ দয়ায় তাদের ছোট ছোট গুনাহগুলো এমনিই মাফ করে দেন। তাদেরকে তাওবারও সুযোগ করে দেন, যাতে করে বড় বড় গুনাহ থেকেও তারা মাফ পেয়ে যায়। মুমিনদের জন্য এটা বড়ই আশার কথা। তবে হ্যাঁ, এর পাশাপাশি অন্তরে ভয়ও রাখা চাই। রহমত ও মাগফিরাত লাভের জন্য ঈমান শর্ত। তাই সতর্ক থাকা জরুরি কোনওভাবেই যাতে ঈমান ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
• তিন নং আয়াত : কুফর ও অবাধ্যতার পরিণাম
{ إِنَّا قَدْ أُوحِيَ إِلَيْنَا أَنَّ الْعَذَابَ عَلَى مَنْ كَذَّبَ وَتَوَلَّى} [طه: 48]
অর্থ : 'আমাদের প্রতি ওহী নাযিল করা হয়েছে যে, শাস্তি হবে সেই ব্যক্তির উপর, যে (সত্যকে) অস্বীকার করে ও মুখ ফিরিয়ে নেয়।' ত্বহা ৪৮
ব্যাখ্যা
এটা হযরত মুসা আলাইহিস সালাম ও হযরত হারুন আলাইহিস সালামের উক্তি। তাঁদের দু'ভাইকে নবুওয়াত দেওয়ার পর আল্লাহ তা'আলা ফির'আউনের কাছে ঈমানের দাওয়াত দিতে পাঠিয়েছিলেন। ফির'আউনের সামনে তাঁরা যে দাওয়াতী বক্তব্য রেখেছিলেন, এটা তারই অংশবিশেষ। এর দ্বারা তাঁরা বোঝাচ্ছিলেন যে, আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে আমাদেরকে ওহী মারফত জানানো হয়েছে, যে-কেউ আমাদের ডাকে সাড়া দেবে এবং সঠিক পথে চলবে, তারা দুনিয়া ও আখিরাতে শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ করবে। পক্ষান্তরে যারা আমাদেরকে অবিশ্বাস করবে, আমাদের কথা মানবে না এবং কুফরের পথেই চলবে, তারা নিশ্চিত শাস্তি ভোগ করবে। আখিরাতে তো অবশ্যই ভোগ করতে হবে, দুনিয়ায়ও তার আশংকা রয়েছে। সুতরাং চিন্তাভাবনা করে দেখ তোমরা কুফরের পথেই থাকবে, না আমাদের প্রতি ঈমান এনে আল্লাহর অনুগত হয়ে চলবে।
যদিও এ কথাটি বলা হয়েছিল ফির'আউনকে লক্ষ্য করে, কিন্তু তা বলা হয়েছে একটি মূলনীতি আকারে। অর্থাৎ যে-কেউ অবিশ্বাসী হবে ও দীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। সুতরাং এটি আমাদের জন্যও সতর্কবাণী বটে। সেইসঙ্গে এটি পরোক্ষভাবে আমাদের মনে আশ্বাসও যোগায়। আল্লাহ তা'আলা নিজ দয়ায় আমাদেরকে ঈমানের দৌলত দান করেছেন। আমরা যদি এ মহাসম্পদের শোকর আদায় করি ও ঈমানের দাবি অনুযায়ী জীবনযাপন করতে থাকি, তবে আশা করা যায়, তিনি নিজ রহমতে আমাদেরকে নাজাতও দান করবেন। সুতরাং সে আশায় বুক বেঁধে আমাদের কর্তব্য ঈমানদাররূপে জীবনযাপন করতে থাকা।
• চার নং আয়াত : রহমতের সর্বব্যাপকতা
وَرَحْمَتِي وَسِعَتْ كُلَّ شَيْءٍ
অর্থ : "আর আমার দয়া- সে তো প্রত্যেক বস্তুতে ব্যাপ্ত।" আ'রাফঃ ১৫৬
এটি সূরা আ'রাফের ১৫৬ নং আয়াতের অংশবিশেষ। এর পরে আছে-
فَسَاكُتُبُهَا لِلَّذِينَ يَتَّقُونَ وَيُؤْتُونَ الزَّكوةَ وَ الَّذِينَ هُمْ بِأَيْتِنَا يُؤْمِنُونَ
“সুতরাং আমি এ রহমত (পরিপূর্ণভাবে) সেইসব লোকের জন্য লিখব, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে, যাকাত দেয় এবং যারা আমার আয়াতসমূহে ঈমান রাখে।”
প্রথম বাক্যে যে সর্বব্যাপী রহমতের কথা বলা হয়েছে তার সম্পর্ক পার্থিব জীবনের সঙ্গে। এ রহমত মুমিন-কাফের নির্বিশেষে সকলেই ভোগ করে থাকে। চরম কাফের ও অবাধ্যকেও আল্লাহ তা'আলা জীবিকা দিয়ে থাকেন। নিত্যদিন নাফরমানিতে লিপ্ত থাকা সত্ত্বেও তারা সূর্যের আলো দ্বারা উপকৃত হতে পারছে, মুক্ত বাতাস থেকে নিঃশাস গ্রহণ করছে, ভূমি তাদের গ্রাস করছে না, খরা দিয়ে তাদের ধ্বংস করা হচ্ছে না, সকল ভোগ- উপভোগ তাদের জন্য অবারিত করে রাখা হয়েছে। দুনিয়ায় আল্লাহ তা'আলার রহমত সকলের জন্য পরিব্যাপ্ত না থাকলে কবেই তাদের ধ্বংস করে ফেলা হতো। তবে হাঁ, এ অবারিত সুযোগ কেবল দুনিয়ার জন্যই নির্দিষ্ট। পরকালীন রহমত পাবে কেবল মু'মিনগণ, যেমনটা পরের বাক্যে বলা হয়েছে।
পরের বাক্যে জানানো হয়েছে, পরকালীন রহমত তাদের জন্যই নির্ধারিত করা হয়েছে, যারা মুত্তাকী ও পরহেযগার, যারা যাকাত দেয় এবং আল্লাহ তা'আলার যাবতীয় নিদর্শনে বিশ্বাস করে। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আবির্ভাবের পরবর্তীকালের লোকদের ক্ষেত্রে আখিরাতের রহমতপ্রাপ্তির জন্য এটাও শর্ত যে, তাঁর প্রতি ঈমান এনে ইসলামের আওতাভুক্ত হয়ে যেতে হবে। এর পরের আয়াতে তা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
আতিয়্যা আওফী রহ. বলেন, আল্লাহ তাআলার রহমত সর্ববস্তুতে ব্যাপ্ত বটে, তবে মুত্তাকী-পরহেযগার ছাড়া অন্যদের জন্য তা অবধারিত নয়। বস্তুত কাফেরগণ রিযিক পায় মুমিনদের অসিলায়। মুমিনদের অসিলায়ই তারা বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পায়। মুমিনদের জন্যই আল্লাহ তা'আলার রহমত উন্মুক্ত ও অবারিত। তাদের সেই রহমতের মধ্যেই অমুসলিমগণ জীবনযাপন করে থাকে। কিন্তু আখিরাতে তারা এর থেকেও বঞ্চিত হয়ে যাবে। সেখানে রহমত সর্বোতভাবে মুমিনদের জন্য নির্দিষ্ট হয়ে যাবে। যেমন এক ব্যক্তির আলোতে অন্য ব্যক্তি উপকৃত হতে পারে, কিন্তু আলো বহনকারী ব্যক্তি যদি তার আলো নিয়ে চলে যায়, তবে অপর ব্যক্তি অন্ধকারেই পড়ে থাকে ।
এখানে رجَاء অর্থ আশা। কখনও কখনও ভীতি অর্থেও শব্দটি ব্যবহৃত হয়। যেমন কুরআন মাজীদে আছেঃ
{مَا لَكُمْ لَا تَرْجُونَ لِلَّهِ وَقَارًا (13)} [نوح: 13]
"তোমাদের কী হল যে, তোমরা আল্লাহর মহিমাকে বিলকুল ভয় পাও না?”
আর-রিসালাতুল কুশায়রিয়্যাহ গ্রন্থে আছে, رجَاء হল কোনও ভবিষ্যৎ প্রিয়বস্তুর সঙ্গে হৃদয় জুড়ে রাখা। আরেক হচ্ছে تمنى (তামান্নী)। رجَاء ও تمنى এর মধ্যে পার্থক্য আছে। যেই আশা'র সঙ্গে প্রচেষ্টাও চালানো হয়, তাকে رجَاء বলে। পক্ষান্তরে যদি কেবল আশাই করা হয় কিন্তু চেষ্টা করা না হয়, বরং অলস সময় কাটানো হয়, তবে এরূপ আশাকে تمنى বলা হয়। সুতরাং رجَاء প্রশংসনীয় ও কাম্য। আর تمنى নিন্দনীয় ও বর্জনীয়। এক হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
" الكيس من دان نفسه، وعمل لما بعد الموت، والعاجز من أتبع نفسه هواها، وتمنى على الله "
“বুদ্ধিমান ওই ব্যক্তি, যে নিজের হিসাব নেয় ও মৃত্যুপরবর্তী জীবনের জন্য আমল করে। আর নির্বোধ ওই ব্যক্তি, যে নিজেকে খেয়াল-খুশির অনুগামী বানায় এবং আল্লাহর কাছে আশাবাদী থাকে।” (তিরমিযী ২৪৫৯)
কুরআন ও হাদীছে আল্লাহ তাআলার কাছে আশাবাদী থাকতে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহর কাছে আশাবাদী থাকার অর্থ হল কারও দ্বারা কোনও পাপ হয়ে গেলে সে আল্লাহ তা'আলার প্রতি এই সুধারণা রাখবে যে, খাঁটিমনে তাওবা করলে তিনি ক্ষমা করে দেবেন। এমনিভাবে কোনও সৎকর্ম করলে আশা রাখবে যে, তিনি তা কবুল করে নেবেন। আশাবাদী থাকার অর্থ এই নয় যে, কেউ বরাবর পাপকর্ম করে যাবে আর এই ধারণা রাখবে যে, আল্লাহ নিজ রহমতে তা মাফ করে দেবেন। অর্থাৎ মাফ পাওয়ার আশায় গুনাহ করতে থাকা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। এটা কুরআন-হাদীছে বর্ণিত 'আশা'র মধ্যে পড়ে না। বরং এটা ধোকা ও আত্মপ্রবঞ্চনা। আবূ উছমান জীযী রহ. বলেন, সৌভাগ্যের লক্ষণ হল তুমি ইবাদত-বন্দেগী করতে থাকবে, পাশাপাশি ভয়ও রাখবে- না জানি তা প্রত্যাখ্যান করা হয়। আর দুর্ভাগ্যের আলামত হল তুমি পাপকর্ম করে যাবে, পাশাপাশি আশা রাখবে আখিরাতে তুমি নাজাত পেয়ে যাবে।
মোটকথা, ইসলাম তার অনুসারীদেরকে সর্বদা আশাবাদী থাকতে উৎসাহ দেয়। সেইসঙ্গে চেষ্টারত থাকতেও জোর তাগিদ করে। প্রকৃতপক্ষে এটাই দীনী ও দুনিয়াবী উন্নতির সিঁড়ি।
ইমাম নববী রহ. এ অধ্যায়ে এ সম্পর্কিত কয়েকটি আয়াত ও হাদীছ উল্লেখ করেছেন। আমরা তার বঙ্গানুবাদ ও সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা পেশ করছি। আল্লাহ তাআলা তাওফীক দান করুন।
*আল্লাহর কাছে আশাবাদী থাকা' সম্পর্কিত কিছু আয়াত
• এক নং আয়াত : নিরাশ না হওয়ার হুকুম
قُلْ يَاعِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِنْ رَحْمَةِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ (53)
অর্থ : 'বলে দাও, হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজ সত্তার উপর সীমালঙ্ঘন করেছে, আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সমস্ত পাপ ক্ষমা করেন। নিশ্চয়ই তিনি অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। যুমার ৫৩
ব্যাখ্যা
এ আয়াতটি দয়াময় আল্লাহ তা'আলার অসীম ক্ষমাশীলতার জানান দিচ্ছে। এটি ঘোর পাপীর পাষাণ হৃদয় বিগলিত করার এক মহৌষধ। অতিরিক্ত পাপের ফলে মানুষের অন্তর শক্ত হয়ে যায়। একপর্যায়ে সে ক্ষমা পাওয়ার ব্যাপারে হতাশ হয়ে যায়। হতাশাগ্রস্ত মন সুপথে আসার উৎসাহ পায় না। তাই দয়াময় মাওলা মানুষের মনে আশাবাদ জাগিয়ে রাখতে চান, যাতে সে কঠিন থেকে কঠিন পাপে লিপ্ত হওয়ার পরও ক্ষমা পাওয়ার আশায় সুপথে ফিরে আসে। তাই বারবার তিনি তাওবার ডাক দিয়েছেন। মাগফিরাত ও ক্ষমার ভরসা দিয়েছেন।
আয়াতটি বলছে, কোনও ব্যক্তি যদি সারাটা জীবন কুফর, শিরক কিংবা অন্যান্য গুনাহের ভেতর কাটিয়ে দেয়, তবে এই ভেবে তার হতাশ হওয়ার কারণ নেই যে, এখন আর তার তাওবা কবুল হবে না; বরং আল্লাহ তা'আলা নিজ রহমতে তাওবার দুয়ার খুলেই রেখেছেন। তিনি হতাশ হতে নিষেধ করেছেন। কাফের, মুশরিক, ইহুদী, খৃষ্টান, বিদ'আতী, ধর্মত্যাগী যেই হোক না কেন, সকলকেই আশ্বাসবাণী শুনিয়েছেন যে, তিনি সকলের সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করতে পারেন। অসীম তাঁর ক্ষমাশীলতা, অন্তহীন তাঁর দয়ামায়া । শুধু দরকার একটু তাঁর অভিমুখী হওয়া, তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করা। তাই তিনি পরের আয়াতে ডাক দিয়েছেন-
وَأَنِيبُوا إِلَى رَبِّكُمْ وَأَسْلِمُوا لَهُ مِنْ قَبْلِ أَنْ يَأْتِيَكُمُ الْعَذَابُ ثُمَّ لَا تُنْصَرُونَ (54)
'তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের অভিমুখী হয়ে যাও এবং তাঁর সমীপে আনুগত্য প্রকাশ কর তোমাদের নিকট শাস্তি আসার আগে, যার পর আর তোমাদেরকে সাহায্য করা হবে না।
অর্থাৎ অতীত গুনাহের জন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত হও। পাপকর্ম ছেড়ে এক আল্লাহর দিকে ফিরে আস। নফস ও কুপ্রবৃত্তির তাবেদারি ছেড়ে দিয়ে আল্লাহর অনুগত হয়ে যাও। মানবরচিত আইন ও মনগড়া মতবাদ পরিহার করে শরী'আতের অনুসরণ শুরু করে দাও। আল্লাহর কাছে ঠিকই ক্ষমা পেয়ে যাবে।
• দুই নং আয়াত : সাবা সম্প্রদায়ের ধ্বংসকাহিনী
{وَهَلْ نُجَازِي إِلَّا الْكَفُورَ} [سبأ: 17]
অর্থ : 'আর আমি তো শাস্তি দিই কেবল ঘোর অকৃতজ্ঞদেরকেই।' সাবা ১৭
ব্যাখ্যা
এটি সূরা সাবা'র ১৭ নং আয়াতের অংশবিশেষ। এর আগে সাবা সম্প্রদায়ের প্রতি আল্লাহ তা'আলার বিপুল অনুগ্রহ বর্ষণ এবং বিপরীতে তাদের চরম অকৃতজ্ঞতার কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। সাবা সম্প্রদায় ইয়ামানে বাস করত। এককালে সভ্যতা-সংস্কৃতিতে এ জাতি অসাধারণ উৎকর্ষ লাভ করেছিল। কুরআন মাজীদের ভাষ্যমতে তাদের ভূমি ছিল অত্যন্ত উর্বর। প্রচুর ফসল তাতে জন্মাত। তাদের মহাসড়কের দু'পাশে ছিল সারি সারি ফলের বাগান এবং তা বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। অর্থ-সম্পদে যেমন ছিল সমৃদ্ধ, তেমনি রাজনৈতিকভাবেও ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। কিন্তু কালক্রমে তারা ভোগ-বিলাসিতায় এমনভাবে মগ্ন হয়ে পড়ল যে, তারা আল্লাহ তা'আলাকে ভুলে গেল, তাঁর বিধি-বিধান পরিত্যাগ করল এবং শিরকী কর্মকাণ্ডকে নিজেদের ধর্ম বানিয়ে নিল।
আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে সতর্ক করার জন্য তাদের কাছে কয়েকজন নবী পাঠালেন। হাফেজ ইবনে কাছীর রহ.-এর বর্ণনামতে তাদের কাছে একের পর এক তেরোজন নবীর আগমন হয়েছিল। নবীগণ তাদেরকে নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করলেন। তারা যাতে সুপথে চলে আসে সেজন্য মেহনত করতে থাকলেন, কিন্তু তারা তাঁদের কথা মানল না। পরিশেষে তাদের উপর শাস্তি আসল ।
'মাআরিব' নামক স্থানে একটি বাঁধ ছিল। সেই বাঁধের পানি দিয়ে তাদের জমি চাষাবাদ করা হতো। আল্লাহ তাআলা প্রবল জলোচ্ছ্বাস দিয়ে সেই বাঁধটি ভেঙ্গে দিলেন। ফলে গোটা জনপদ পানিতে ভেসে গেল এবং বাগান গেল ধ্বংস হয়ে (তাওযীহুল কুরআন দ্র.)। তাদের এ পরিণাম প্রসঙ্গেই আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেছেন-
{ذَلِكَ جَزَيْنَاهُمْ بِمَا كَفَرُوا وَهَلْ نُجَازِي إِلَّا الْكَفُورَ } [سبأ: 17]
‘আমি তাদেরকে এ শাস্তি দিয়েছিলাম এ কারণে যে, তারা অকৃতজ্ঞতায় লিপ্ত হয়েছিল। আর আমি তো শাস্তি দিই কেবল ঘোর অকৃতজ্ঞদেরকেই।’
বলাবাহুল্য, কুফর ও অবিশ্বাসই সর্বাপেক্ষা ঘোর অকৃতজ্ঞতা। যারা ঈমানদার, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা ঈমানের আওতার মধ্যে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের যারা অকৃতজ্ঞতামূলক কাজকর্ম হয়ে গেলেও ঘোর অকৃতজ্ঞ বলে গণ্য হবে না। ফলে আয়াতে যে শাস্তির কঠিন সতর্কবাণী শোনানো হয়েছে তারা তার আওতাভুক্ত হবে না। এটা ঈমানেরই মহিমা যে, এর কারণে মু'মিনগণ আল্লাহ তাআলার রহমত ও দয়ার পাত্র হয়ে যায়। তারা বড় বড় পাপ থেকে বিরত থাকলে আল্লাহ তা'আলা নিজ দয়ায় তাদের ছোট ছোট গুনাহগুলো এমনিই মাফ করে দেন। তাদেরকে তাওবারও সুযোগ করে দেন, যাতে করে বড় বড় গুনাহ থেকেও তারা মাফ পেয়ে যায়। মুমিনদের জন্য এটা বড়ই আশার কথা। তবে হ্যাঁ, এর পাশাপাশি অন্তরে ভয়ও রাখা চাই। রহমত ও মাগফিরাত লাভের জন্য ঈমান শর্ত। তাই সতর্ক থাকা জরুরি কোনওভাবেই যাতে ঈমান ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
• তিন নং আয়াত : কুফর ও অবাধ্যতার পরিণাম
{ إِنَّا قَدْ أُوحِيَ إِلَيْنَا أَنَّ الْعَذَابَ عَلَى مَنْ كَذَّبَ وَتَوَلَّى} [طه: 48]
অর্থ : 'আমাদের প্রতি ওহী নাযিল করা হয়েছে যে, শাস্তি হবে সেই ব্যক্তির উপর, যে (সত্যকে) অস্বীকার করে ও মুখ ফিরিয়ে নেয়।' ত্বহা ৪৮
ব্যাখ্যা
এটা হযরত মুসা আলাইহিস সালাম ও হযরত হারুন আলাইহিস সালামের উক্তি। তাঁদের দু'ভাইকে নবুওয়াত দেওয়ার পর আল্লাহ তা'আলা ফির'আউনের কাছে ঈমানের দাওয়াত দিতে পাঠিয়েছিলেন। ফির'আউনের সামনে তাঁরা যে দাওয়াতী বক্তব্য রেখেছিলেন, এটা তারই অংশবিশেষ। এর দ্বারা তাঁরা বোঝাচ্ছিলেন যে, আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে আমাদেরকে ওহী মারফত জানানো হয়েছে, যে-কেউ আমাদের ডাকে সাড়া দেবে এবং সঠিক পথে চলবে, তারা দুনিয়া ও আখিরাতে শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ করবে। পক্ষান্তরে যারা আমাদেরকে অবিশ্বাস করবে, আমাদের কথা মানবে না এবং কুফরের পথেই চলবে, তারা নিশ্চিত শাস্তি ভোগ করবে। আখিরাতে তো অবশ্যই ভোগ করতে হবে, দুনিয়ায়ও তার আশংকা রয়েছে। সুতরাং চিন্তাভাবনা করে দেখ তোমরা কুফরের পথেই থাকবে, না আমাদের প্রতি ঈমান এনে আল্লাহর অনুগত হয়ে চলবে।
যদিও এ কথাটি বলা হয়েছিল ফির'আউনকে লক্ষ্য করে, কিন্তু তা বলা হয়েছে একটি মূলনীতি আকারে। অর্থাৎ যে-কেউ অবিশ্বাসী হবে ও দীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। সুতরাং এটি আমাদের জন্যও সতর্কবাণী বটে। সেইসঙ্গে এটি পরোক্ষভাবে আমাদের মনে আশ্বাসও যোগায়। আল্লাহ তা'আলা নিজ দয়ায় আমাদেরকে ঈমানের দৌলত দান করেছেন। আমরা যদি এ মহাসম্পদের শোকর আদায় করি ও ঈমানের দাবি অনুযায়ী জীবনযাপন করতে থাকি, তবে আশা করা যায়, তিনি নিজ রহমতে আমাদেরকে নাজাতও দান করবেন। সুতরাং সে আশায় বুক বেঁধে আমাদের কর্তব্য ঈমানদাররূপে জীবনযাপন করতে থাকা।
• চার নং আয়াত : রহমতের সর্বব্যাপকতা
وَرَحْمَتِي وَسِعَتْ كُلَّ شَيْءٍ
অর্থ : "আর আমার দয়া- সে তো প্রত্যেক বস্তুতে ব্যাপ্ত।" আ'রাফঃ ১৫৬
এটি সূরা আ'রাফের ১৫৬ নং আয়াতের অংশবিশেষ। এর পরে আছে-
فَسَاكُتُبُهَا لِلَّذِينَ يَتَّقُونَ وَيُؤْتُونَ الزَّكوةَ وَ الَّذِينَ هُمْ بِأَيْتِنَا يُؤْمِنُونَ
“সুতরাং আমি এ রহমত (পরিপূর্ণভাবে) সেইসব লোকের জন্য লিখব, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে, যাকাত দেয় এবং যারা আমার আয়াতসমূহে ঈমান রাখে।”
প্রথম বাক্যে যে সর্বব্যাপী রহমতের কথা বলা হয়েছে তার সম্পর্ক পার্থিব জীবনের সঙ্গে। এ রহমত মুমিন-কাফের নির্বিশেষে সকলেই ভোগ করে থাকে। চরম কাফের ও অবাধ্যকেও আল্লাহ তা'আলা জীবিকা দিয়ে থাকেন। নিত্যদিন নাফরমানিতে লিপ্ত থাকা সত্ত্বেও তারা সূর্যের আলো দ্বারা উপকৃত হতে পারছে, মুক্ত বাতাস থেকে নিঃশাস গ্রহণ করছে, ভূমি তাদের গ্রাস করছে না, খরা দিয়ে তাদের ধ্বংস করা হচ্ছে না, সকল ভোগ- উপভোগ তাদের জন্য অবারিত করে রাখা হয়েছে। দুনিয়ায় আল্লাহ তা'আলার রহমত সকলের জন্য পরিব্যাপ্ত না থাকলে কবেই তাদের ধ্বংস করে ফেলা হতো। তবে হাঁ, এ অবারিত সুযোগ কেবল দুনিয়ার জন্যই নির্দিষ্ট। পরকালীন রহমত পাবে কেবল মু'মিনগণ, যেমনটা পরের বাক্যে বলা হয়েছে।
পরের বাক্যে জানানো হয়েছে, পরকালীন রহমত তাদের জন্যই নির্ধারিত করা হয়েছে, যারা মুত্তাকী ও পরহেযগার, যারা যাকাত দেয় এবং আল্লাহ তা'আলার যাবতীয় নিদর্শনে বিশ্বাস করে। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আবির্ভাবের পরবর্তীকালের লোকদের ক্ষেত্রে আখিরাতের রহমতপ্রাপ্তির জন্য এটাও শর্ত যে, তাঁর প্রতি ঈমান এনে ইসলামের আওতাভুক্ত হয়ে যেতে হবে। এর পরের আয়াতে তা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
আতিয়্যা আওফী রহ. বলেন, আল্লাহ তাআলার রহমত সর্ববস্তুতে ব্যাপ্ত বটে, তবে মুত্তাকী-পরহেযগার ছাড়া অন্যদের জন্য তা অবধারিত নয়। বস্তুত কাফেরগণ রিযিক পায় মুমিনদের অসিলায়। মুমিনদের অসিলায়ই তারা বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পায়। মুমিনদের জন্যই আল্লাহ তা'আলার রহমত উন্মুক্ত ও অবারিত। তাদের সেই রহমতের মধ্যেই অমুসলিমগণ জীবনযাপন করে থাকে। কিন্তু আখিরাতে তারা এর থেকেও বঞ্চিত হয়ে যাবে। সেখানে রহমত সর্বোতভাবে মুমিনদের জন্য নির্দিষ্ট হয়ে যাবে। যেমন এক ব্যক্তির আলোতে অন্য ব্যক্তি উপকৃত হতে পারে, কিন্তু আলো বহনকারী ব্যক্তি যদি তার আলো নিয়ে চলে যায়, তবে অপর ব্যক্তি অন্ধকারেই পড়ে থাকে ।
জান্নাতলাভের জন্য যেসব বিষয়ে বিশ্বাস রাখা জরুরি
হাদীছ নং: ৪১২
হযরত উবাদা ইবনে সামিত রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি সাক্ষ্য দেবে আল্লাহ ছাড়া কোনও মা'বূদ নেই; তিনি এক, তাঁর কোনও শরীক নেই; মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল: ঈসা আল্লাহর বান্দা, তাঁর রাসূল, তাঁর কালেমা যা তিনি মারয়ামের প্রতি পাঠিয়েছিলেন এবং তাঁরই পক্ষ থেকে দেওয়া একটি আত্মা; আর জান্নাত ও জাহান্নাম সত্য, আল্লাহ তা'আলা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন সে যে আমলের উপরই থাকুক না কেন - বুখারী ও মুসলিম।
মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে, যে ব্যক্তি সাক্ষ্য দেবে আল্লাহ ছাড়া কোনও মা'বূদ নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল, আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেবেন।
হাদীছ নং: ৪১২
হযরত উবাদা ইবনে সামিত রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি সাক্ষ্য দেবে আল্লাহ ছাড়া কোনও মা'বূদ নেই; তিনি এক, তাঁর কোনও শরীক নেই; মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল: ঈসা আল্লাহর বান্দা, তাঁর রাসূল, তাঁর কালেমা যা তিনি মারয়ামের প্রতি পাঠিয়েছিলেন এবং তাঁরই পক্ষ থেকে দেওয়া একটি আত্মা; আর জান্নাত ও জাহান্নাম সত্য, আল্লাহ তা'আলা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন সে যে আমলের উপরই থাকুক না কেন - বুখারী ও মুসলিম।
মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে, যে ব্যক্তি সাক্ষ্য দেবে আল্লাহ ছাড়া কোনও মা'বূদ নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল, আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেবেন।
مقدمة الامام النووي
51 - باب الرجاء
قَالَ الله تَعَالَى: {قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنْفُسِهِمْ لا تَقْنَطُوا مِنْ رَحْمَةِ اللهِ إِنَّ اللهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ} [الزمر: 53]، وَقالَ تَعَالَى: {وَهَلْ نُجَازِي إِلاَّ الْكَفُور} [سبأ: 17]، وَقالَ تَعَالَى: {إِنَّا قَدْ أُوحِيَ إِلَيْنَا أَنَّ الْعَذَابَ عَلَى مَنْ كَذَّبَ وَتَوَلَّى} [طه: 48]، وَقالَ تَعَالَى: {وَرَحْمَتِي وَسِعَتْ كُلَّ شَيْءٍ} [الأعراف: 156].
قَالَ الله تَعَالَى: {قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنْفُسِهِمْ لا تَقْنَطُوا مِنْ رَحْمَةِ اللهِ إِنَّ اللهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ} [الزمر: 53]، وَقالَ تَعَالَى: {وَهَلْ نُجَازِي إِلاَّ الْكَفُور} [سبأ: 17]، وَقالَ تَعَالَى: {إِنَّا قَدْ أُوحِيَ إِلَيْنَا أَنَّ الْعَذَابَ عَلَى مَنْ كَذَّبَ وَتَوَلَّى} [طه: 48]، وَقالَ تَعَالَى: {وَرَحْمَتِي وَسِعَتْ كُلَّ شَيْءٍ} [الأعراف: 156].
412 - وعن عبادة بن الصامتِ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «مَنْ شَهِدَ أنَّ لاَ إلهَ إلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ، وَأَنَّ مُحَمدًا عَبْدهُ ورَسُولُهُ، وَأنَّ عِيسى عَبْدُ اللهِ وَرَسُولُهُ وَكَلِمَتُهُ ألْقَاهَا إِلَى مَرْيَمَ ورُوحٌ مِنْهُ، وَأنَّ الجَنَّةَ حَقٌّ، وَالنَّارَ حَقٌّ، أدْخَلَهُ اللهُ الجَنَّةَ عَلَى مَا كَانَ مِنَ العَمَلِ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
وفي رواية لمسلم: «مَنْ شَهِدَ أَنْ لا إلَهَ إلاَّ اللهُ وَأنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ، حَرَّمَ اللهُ عَلَيهِ النَّارَ».
وفي رواية لمسلم: «مَنْ شَهِدَ أَنْ لا إلَهَ إلاَّ اللهُ وَأنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ، حَرَّمَ اللهُ عَلَيهِ النَّارَ».
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪১৩
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫১ আল্লাহর কাছে আশাবাদী থাকা।
আল্লাহ তাআলার রহমত ও মাগফিরাতের বিপুল বিস্তার:
হাদীস নং: ৪১৩
অর্থ : হযরত আবু যর রাযি. থেকে বর্ণিত, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, মহান আল্লাহ বলেন, যে ব্যক্তি একটি সৎকর্ম করবে, তার জন্য রয়েছে তার দশগুণ বা আরও বেশি ছাওয়াব। আর যে ব্যক্তি একটি অসৎকর্ম করবে, তার জন্য রয়েছে অনুরূপ একটি অসৎকর্মের শাস্তি অথবা আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। যে ব্যক্তি এক বিঘত পরিমাণ আমার নিকটবর্তী হবে, আমি একহাত পরিমাণ তার নিকটবর্তী হব। যে ব্যক্তি একহাত পরিমাণ আমার নিকটবর্তী হবে, আমি দুই হাতের বিস্তার পরিমাণ তার নিকটবর্তী হব। যে ব্যক্তি আমার দিকে আসবে হেঁটে হেঁটে, আমি তার দিকে দৌড়ে আসব। যে ব্যক্তি পৃথিবী পরিমাণ গুনাহ নিয়ে আমার সঙ্গে এ অবস্থায় সাক্ষাত করবে যে, আমার সঙ্গে কোনওকিছুকে শরীক করেনি, আমি অনুরূপ ক্ষমা নিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাত করব - মুসলিম।
হাদীস নং: ৪১৩
অর্থ : হযরত আবু যর রাযি. থেকে বর্ণিত, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, মহান আল্লাহ বলেন, যে ব্যক্তি একটি সৎকর্ম করবে, তার জন্য রয়েছে তার দশগুণ বা আরও বেশি ছাওয়াব। আর যে ব্যক্তি একটি অসৎকর্ম করবে, তার জন্য রয়েছে অনুরূপ একটি অসৎকর্মের শাস্তি অথবা আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। যে ব্যক্তি এক বিঘত পরিমাণ আমার নিকটবর্তী হবে, আমি একহাত পরিমাণ তার নিকটবর্তী হব। যে ব্যক্তি একহাত পরিমাণ আমার নিকটবর্তী হবে, আমি দুই হাতের বিস্তার পরিমাণ তার নিকটবর্তী হব। যে ব্যক্তি আমার দিকে আসবে হেঁটে হেঁটে, আমি তার দিকে দৌড়ে আসব। যে ব্যক্তি পৃথিবী পরিমাণ গুনাহ নিয়ে আমার সঙ্গে এ অবস্থায় সাক্ষাত করবে যে, আমার সঙ্গে কোনওকিছুকে শরীক করেনি, আমি অনুরূপ ক্ষমা নিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাত করব - মুসলিম।
مقدمة الامام النووي
51 - باب الرجاء
413 - وعن أَبي ذر - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ النَّبيّ - صلى الله عليه وسلم: «يقول الله - عز وجل: مَنْ جَاء بالحَسَنَةِ فَلَهُ عَشْرُ أمْثَالِهَا أَوْ أزْيَد، وَمَنْ جَاءَ بالسَيِّئَةِ فَجَزاءُ سَيِّئَةٍ سَيِّئَةٌ مِثْلُهَا أَوْ أغْفِرُ. وَمَنْ تَقَرَّبَ مِنِّي شِبْرًا تَقَرَّبْتُ مِنْهُ ذِرَاعًا، وَمَنْ تَقَرَّبَ مِنِّي ذِرَاعًا تَقَرَّبْتُ مِنْهُ بَاعًا، وَمَنْ أتَانِي يَمْشِي أتَيْتُهُ هَرْوَلَةً، وَمَنْ لَقِيني بِقُرَابِ الأرْض خَطِيئةً لا يُشْرِكُ بِي شَيئًا، لَقِيتُهُ بِمِثْلِهَا مَغفِرَةً». رواه مسلم. (1) [ص:148]
معنى الحديث: «مَنْ تَقَرَّبَ» إلَيَّ بطَاعَتِي «تَقَرَّبْتُ» إِلَيْهِ بِرَحْمَتِي وَإنْ زَادَ زِدْتُ «فَإنْ أتَاني يَمْشِي» وَأسرَعَ في طَاعَتي «أتَيْتُهُ هَرْوَلَةً» أيْ: صَبَبْتُ عَلَيهِ الرَّحْمَةَ وَسَبَقْتُهُ بِهَا وَلَمْ أحْوِجْهُ إِلَى المَشْيِ الكَثِيرِ في الوُصُولِ إِلَى المَقْصُودِ «وقُرَابُ الأَرضِ» بضم القافِ، ويقال: بكسرها والضم أصح وأشهر ومعناه: مَا يُقَارِبُ مِلأَهَا، والله أعلم.
معنى الحديث: «مَنْ تَقَرَّبَ» إلَيَّ بطَاعَتِي «تَقَرَّبْتُ» إِلَيْهِ بِرَحْمَتِي وَإنْ زَادَ زِدْتُ «فَإنْ أتَاني يَمْشِي» وَأسرَعَ في طَاعَتي «أتَيْتُهُ هَرْوَلَةً» أيْ: صَبَبْتُ عَلَيهِ الرَّحْمَةَ وَسَبَقْتُهُ بِهَا وَلَمْ أحْوِجْهُ إِلَى المَشْيِ الكَثِيرِ في الوُصُولِ إِلَى المَقْصُودِ «وقُرَابُ الأَرضِ» بضم القافِ، ويقال: بكسرها والضم أصح وأشهر ومعناه: مَا يُقَارِبُ مِلأَهَا، والله أعلم.
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪১৪
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫১ আল্লাহর কাছে আশাবাদী থাকা।
জান্নাত ও জাহান্নাম অবধারিতকারী বিষয়
হাদীছ নং : ৪১৪
অর্থ : হযরত জাবির রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক বেদুঈন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! অবধারিতকারী বিষয়দুটি কী কী? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কোনওকিছুকে শরীক না করা অবস্থায় মারা যায়, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে ব্যক্তি তাঁর সঙ্গে কোনওকিছুকে শরীক করা অবস্থায় মারা যায়, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে - মুসলিম।
হাদীছ নং : ৪১৪
অর্থ : হযরত জাবির রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক বেদুঈন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! অবধারিতকারী বিষয়দুটি কী কী? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কোনওকিছুকে শরীক না করা অবস্থায় মারা যায়, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে ব্যক্তি তাঁর সঙ্গে কোনওকিছুকে শরীক করা অবস্থায় মারা যায়, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে - মুসলিম।
مقدمة الامام النووي
51 - باب الرجاء
414 - وعن جابر - رضي الله عنه - قَالَ: جاء أعرابي إِلَى النَّبيّ - صلى الله عليه وسلم - فَقَالَ: يَا رَسُول الله، مَا الموجِبَتَانِ (1)؟ قَالَ: «مَنْ مَاتَ لاَ يُشْرِكُ بالله شَيئًا دَخَلَ الجَنَّةَ، وَمَنْ مَاتَ يُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا دَخَلَ النَّار». رواه مسلم. (2)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪১৫
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫১ আল্লাহর কাছে আশাবাদী থাকা।
কালেমায়ে শাহাদাতের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য
হাদীছ নং : ৪১৫
হযরত আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাহনে বসা ছিলেন আর মুআয ছিলেন তাঁর পেছনে। এ অবস্থায় তিনি বললেন, হে মু'আয! মু'আয বললেন, লাব্বাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার সৌভাগ্য যে, আমি আপনার নিকট আছি। তিনি আবার বললেন, হে মু'আয! মু'আয বললেন, লাব্বাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার সৌভাগ্য যে, আমি আপনার নিকট আছি। তিনি আবারও বললেন, হে মু'আয! মু'আয বললেন, লাব্বাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আমার সৌভাগ্য যে, আমি আপনার নিকট আছি। তিনবার এরূপ হল। তারপর তিনি বললেন, যে-কোনও বান্দা আন্তরিক বিশ্বাসের সঙ্গে সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া কোনও মা'বূদ নেই এবং মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল, আল্লাহ অবশ্যই তাকে জাহান্নামের জন্য হারাম করে দেবেন। মু'আয বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি কি এ সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করব না, যাতে তারা আনন্দিত হয়? তিনি বললেন, তাহলে তারা এর উপর নির্ভর করে বসে থাকবে। তারপর মুআয মৃত্যুকালে এ সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করেন গুনাহগার হয়ে যাওয়ার ভয়ে- বুখারী ও মুসলিম।
হাদীছ নং : ৪১৫
হযরত আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাহনে বসা ছিলেন আর মুআয ছিলেন তাঁর পেছনে। এ অবস্থায় তিনি বললেন, হে মু'আয! মু'আয বললেন, লাব্বাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার সৌভাগ্য যে, আমি আপনার নিকট আছি। তিনি আবার বললেন, হে মু'আয! মু'আয বললেন, লাব্বাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার সৌভাগ্য যে, আমি আপনার নিকট আছি। তিনি আবারও বললেন, হে মু'আয! মু'আয বললেন, লাব্বাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আমার সৌভাগ্য যে, আমি আপনার নিকট আছি। তিনবার এরূপ হল। তারপর তিনি বললেন, যে-কোনও বান্দা আন্তরিক বিশ্বাসের সঙ্গে সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া কোনও মা'বূদ নেই এবং মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল, আল্লাহ অবশ্যই তাকে জাহান্নামের জন্য হারাম করে দেবেন। মু'আয বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি কি এ সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করব না, যাতে তারা আনন্দিত হয়? তিনি বললেন, তাহলে তারা এর উপর নির্ভর করে বসে থাকবে। তারপর মুআয মৃত্যুকালে এ সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করেন গুনাহগার হয়ে যাওয়ার ভয়ে- বুখারী ও মুসলিম।
مقدمة الامام النووي
51 - باب الرجاء
415 - وعن أنس - رضي الله عنه: أن النَّبيّ - صلى الله عليه وسلم - ومعاذ رديفه عَلَى الرَّحْل، قَالَ: «يَا مُعَاذُ» قَالَ: لَبِّيْكَ يَا رَسُول الله وَسَعْدَيْكَ، قَالَ: «يَا مُعَاذُ» قَالَ: لَبَّيْكَ يَا رَسُول الله وَسَعْدَيْكَ، قَالَ: «يَا مُعَاذُ» قَالَ: لَبِّيْكَ يَا رَسُول الله وسَعْدَيْكَ، ثَلاثًا، قَالَ: «مَا مِنْ عَبْدٍ يَشْهَدُ أن لا إلهَ إلاَّ الله، وَأنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ صِدْقًا مِنْ قَلْبِهِ إلاَّ حَرَّمَهُ الله عَلَى النَّار» قَالَ: يَا رَسُول الله، أفَلاَ أخْبِرُ بِهَا النَّاس فَيَسْتَبْشِروا؟ قَالَ: «إِذًا يَتَّكِلُوا» فأخبر بِهَا مُعاذٌ عِنْدَ موتِه تَأثُّمًا. مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
وقوله: «تأثُّمًا» أي خوفًا مِنْ الإثم في كَتْم هَذَا العلم.
وقوله: «تأثُّمًا» أي خوفًا مِنْ الإثم في كَتْم هَذَا العلم.
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪১৬
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫১ আল্লাহর কাছে আশাবাদী থাকা।
একটি মু'জিযার প্রকাশ ও নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিজ নবুওয়াতের সাক্ষ্যদান
হাদীছ নং : ৪১৬
হযরত আবু হুরায়রা রাযি. অথবা হযরত আবু সা'ঈদ খুদরী রাযি. থেকে বর্ণিত, রাবীর সন্দেহ হয়েছে (যে, মূল বর্ণনাকারী এ দুই সাহাবীর কোনও একজন। তবে সাহাবী নির্ণয়ে সন্দেহ হলে তাতে কোনও ক্ষতি নেই, কেননা সাহাবীদের প্রত্যেকেই বিশ্বস্ত।) তিনি বলেন, তাবুকের যুদ্ধকালে মানুষ দুর্ভিক্ষ কবলিত হল। সাহাবীগণ বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি অনুমতি দিলে আমরা আমাদের উট যবাই করে খেতে পারি ও তার চর্বি দিয়ে তেল বানাতে পারি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তা করতে পার। তারপর উমর রাঃ এসে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এরকমটি করলে তো বাহন কমে যাবে। বরং আপনি তাদেকে তাদের অবশিষ্ট রসদ নিয়ে আসতে বলুন। তারপর তাদের জন্য সে রসদ সম্পর্কে আল্লাহর কাছে বরকতের দোয়া করুন। আশা করা যায়, আল্লাহ তাতে বরকত দান করবেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হাঁ, তাই হোক। সুতরাং তিনি একটি চামড়ার দস্তরখান আনিয়ে বিছালেন। তারপর তাদেরকে তাদের অবশিষ্ট রসদ নিয়ে আসতে বললেন। কেউ তো একমুঠো ভুট্টা নিয়ে আসছিল। অপর কেউ একমুঠো খেজুর নিয়ে আসছিল। আরেকজন এক টুকরো রুটি নিয়ে আসছিল। এভাবে তাতে করে দস্তরখানটির উপর সামান্য কিছু খাবার জমা হল। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বরকতের দু'আ করলেন। তারপর বললেন, তোমরা তোমাদের পাত্রে (এখান থেকে খাবার) তুলে নাও। তারা তাদের পাত্রে খাবার তুলে নিতে থাকল। এমনকি বাহিনীতে যত পাত্র ছিল সব তারা ভরে ফেলল, একটিও বাকি থাকল না। তারা সবাই সে খাবার তৃপ্তিভরে খেল। তারপরও কিছু অবশিষ্ট থেকে গেল। এ অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোনও মা'বূদ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসুল। কোনও বান্দার এমন হবে না যে, সে সন্দেহমুক্তরূপে এ দুই কালেমা নিয়ে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাত করবে আর তাকে জান্নাত থেকে বঞ্চিত করা হবে - মুসলিম।
হাদীছ নং : ৪১৬
হযরত আবু হুরায়রা রাযি. অথবা হযরত আবু সা'ঈদ খুদরী রাযি. থেকে বর্ণিত, রাবীর সন্দেহ হয়েছে (যে, মূল বর্ণনাকারী এ দুই সাহাবীর কোনও একজন। তবে সাহাবী নির্ণয়ে সন্দেহ হলে তাতে কোনও ক্ষতি নেই, কেননা সাহাবীদের প্রত্যেকেই বিশ্বস্ত।) তিনি বলেন, তাবুকের যুদ্ধকালে মানুষ দুর্ভিক্ষ কবলিত হল। সাহাবীগণ বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি অনুমতি দিলে আমরা আমাদের উট যবাই করে খেতে পারি ও তার চর্বি দিয়ে তেল বানাতে পারি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তা করতে পার। তারপর উমর রাঃ এসে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এরকমটি করলে তো বাহন কমে যাবে। বরং আপনি তাদেকে তাদের অবশিষ্ট রসদ নিয়ে আসতে বলুন। তারপর তাদের জন্য সে রসদ সম্পর্কে আল্লাহর কাছে বরকতের দোয়া করুন। আশা করা যায়, আল্লাহ তাতে বরকত দান করবেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হাঁ, তাই হোক। সুতরাং তিনি একটি চামড়ার দস্তরখান আনিয়ে বিছালেন। তারপর তাদেরকে তাদের অবশিষ্ট রসদ নিয়ে আসতে বললেন। কেউ তো একমুঠো ভুট্টা নিয়ে আসছিল। অপর কেউ একমুঠো খেজুর নিয়ে আসছিল। আরেকজন এক টুকরো রুটি নিয়ে আসছিল। এভাবে তাতে করে দস্তরখানটির উপর সামান্য কিছু খাবার জমা হল। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বরকতের দু'আ করলেন। তারপর বললেন, তোমরা তোমাদের পাত্রে (এখান থেকে খাবার) তুলে নাও। তারা তাদের পাত্রে খাবার তুলে নিতে থাকল। এমনকি বাহিনীতে যত পাত্র ছিল সব তারা ভরে ফেলল, একটিও বাকি থাকল না। তারা সবাই সে খাবার তৃপ্তিভরে খেল। তারপরও কিছু অবশিষ্ট থেকে গেল। এ অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোনও মা'বূদ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসুল। কোনও বান্দার এমন হবে না যে, সে সন্দেহমুক্তরূপে এ দুই কালেমা নিয়ে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাত করবে আর তাকে জান্নাত থেকে বঞ্চিত করা হবে - মুসলিম।
مقدمة الامام النووي
51 - باب الرجاء
416 - وعن أَبي هريرة - أَوْ أَبي سعيد الخدري - رضي الله عنهما - شك الراوي - ولا يَضُرُّ الشَّكُّ في عَين الصَّحَابيّ؛ لأنَّهُمْ كُلُّهُمْ عُدُولٌ - قَالَ: لَمَّا كَانَ غَزوَةُ تَبُوكَ، أصَابَ النَّاسَ مَجَاعَةٌ، فقالوا: يَا رَسُول الله، لَوْ أَذِنْتَ لَنَا فَنَحرْنَا نَواضِحَنَا (1) فَأكَلْنَا وَادَّهَنَّا (2)؟ فَقَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «افْعَلُوا» فَجاء عُمَرُ - رضي الله عنه - فَقَالَ: يَا رَسُول الله، إنْ فَعَلْتَ قَلَّ الظَّهْرُ، [ص:149] وَلَكِن ادعُهُمْ بفَضلِ أزْوَادِهِمْ، ثُمَّ ادعُ الله لَهُمْ عَلَيْهَا بِالبَرَكَةِ، لَعَلَّ الله أَنْ يَجْعَلَ في ذلِكَ البَرَكَةَ. فَقَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «نَعَمْ» فَدَعَا بِنَطْع فَبَسَطَهُ، ثُمَّ دَعَا بِفضلِ أزْوَادِهِمْ، فَجَعَلَ الرَّجُلُ يَجيءُ بكَفّ ذُرَة وَيَجيءُ بِكَفّ تمر وَيجيءُ الآخرُ بِكِسرَة حَتَّى اجْتَمَعَ عَلَى النّطعِ مِنْ ذلِكَ شَيء يَسيرٌ، فَدَعَا رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - بِالبَرَكَةِ، ثُمَّ قَالَ: «خُذُوا في أوعِيَتِكُمْ» فَأَخَذُوا في أَوْعِيَتهم حَتَّى مَا تَرَكُوا في العَسْكَرِ وِعَاء إلاَّ مَلأوهُ وَأَكَلُوا حَتَّى شَبعُوا وَفَضَلَ فَضْلَةٌ فَقَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «أشْهَدُ أَنْ لا إلهَ إلاَّ اللهُ وَأنّي رَسُولُ الله، لا يَلْقَى الله بِهِما عَبْدٌ غَيْرَ شَاكٍّ فَيُحْجَبَ عَنِ الجَنَّةِ». رواه مسلم. (3)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪১৭
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫১ আল্লাহর কাছে আশাবাদী থাকা।
ইসলামে তাবাররুকের ধারণা ও কালেমায়ে তায়্যিবার ফযীলত
হাদীছ নং : ৪১৭
হযরত ইতবান ইবনে মালিক রাযি. থেকে বর্ণিত, –তিনি বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের একজন– তিনি বলেন, আমি আমার গোত্র বনু সালিমের নামাযে ইমামত করতাম। যখন বৃষ্টি হতো, আমার ও তাদের মাঝখানে একটি উপত্যকা প্রতিবন্ধক হয়ে যেত। ফলে আমার পক্ষে তা অতিক্রম করে তাদের মসজিদে যাওয়া কঠিন হয়ে যেত। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললাম যে, আমার দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পেয়েছে। ওদিকে আমার ও আমার গোত্রের মাঝখানে যে উপত্যকাটি আছে সেটি বৃষ্টি আসলে প্লাবিত হয়ে যায়। ফলে আমার পক্ষে সেটি অতিক্রম করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই আমার একান্ত কামনা, আপনি এসে আমার ঘরের একটি জায়গায় নামায পড়বেন, যে স্থানটিকে আমি মুসল্লা (নামাযের স্থান) বানিয়ে নেব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি এটা করছি। পরদিন বেলা হবার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর রাযি. চলে আসলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। আমি তাঁকে অনুমতি দিলাম। কিন্তু তিনি বসলেন না। বললেন, আমি তোমার ঘরের কোন জায়গায় নামায পড়ব বলে তুমি পসন্দ কর? আমি ইঙ্গিতে সে জায়গাটি দেখিয়ে দিলাম, যেখানে তাঁর নামায পড়া আমার পসন্দ ছিল। সুতরাং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযে দাঁড়ালেন। তিনি তাকবীর বললেন। আমরা তাঁর পেছনে কাতারবদ্ধ হলাম। তিনি দু' রাক'আত নামায পড়লেন। তারপর সালাম ফেরালেন। তিনি যখন সালাম ফেরালেন, আমরাও সালাম ফেরালাম। তারপর আমরা তাঁর জন্য তৈরি করা খাযীরা (এক প্রকার খাদ্য)-এর জন্য তাঁকে আটকালাম। ওদিকে মহল্লার লোকেরা শুনতে পেল যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার ঘরে। অমনি তারা ছুটে আসল। ফলে আমার ঘরে প্রচুর লোক জমা হয়ে গেল। তখন এক ব্যক্তি বলল, মালিক কোথায়, তাকে যে দেখছি না? অপর এক ব্যক্তি বলল, সে তো একটা মুনাফিক। সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ভালোবাসে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এমনটা বলো না। তুমি দেখছ না সে বলে, আল্লাহ ছাড়া কোনও মা'বূদ নেই, যা দ্বারা সে আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টি কামনা করে? লোকটি বলল, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তবে আল্লাহর কসম! আমরা তো মুনাফিকদের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব ও তাদের সঙ্গেই তাকে কথাবার্তা বলতে দেখি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে ব্যক্তি বলে, আল্লাহ ছাড়া কোনও মা'বূদ নেই; যা দ্বারা সে আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টি কামনা করে, আল্লাহ তাকে জাহান্নামের জন্য হারাম করে দেন - বুখারী ও মুসলিম ।
হাদীছ নং : ৪১৭
হযরত ইতবান ইবনে মালিক রাযি. থেকে বর্ণিত, –তিনি বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের একজন– তিনি বলেন, আমি আমার গোত্র বনু সালিমের নামাযে ইমামত করতাম। যখন বৃষ্টি হতো, আমার ও তাদের মাঝখানে একটি উপত্যকা প্রতিবন্ধক হয়ে যেত। ফলে আমার পক্ষে তা অতিক্রম করে তাদের মসজিদে যাওয়া কঠিন হয়ে যেত। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললাম যে, আমার দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পেয়েছে। ওদিকে আমার ও আমার গোত্রের মাঝখানে যে উপত্যকাটি আছে সেটি বৃষ্টি আসলে প্লাবিত হয়ে যায়। ফলে আমার পক্ষে সেটি অতিক্রম করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই আমার একান্ত কামনা, আপনি এসে আমার ঘরের একটি জায়গায় নামায পড়বেন, যে স্থানটিকে আমি মুসল্লা (নামাযের স্থান) বানিয়ে নেব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি এটা করছি। পরদিন বেলা হবার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর রাযি. চলে আসলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। আমি তাঁকে অনুমতি দিলাম। কিন্তু তিনি বসলেন না। বললেন, আমি তোমার ঘরের কোন জায়গায় নামায পড়ব বলে তুমি পসন্দ কর? আমি ইঙ্গিতে সে জায়গাটি দেখিয়ে দিলাম, যেখানে তাঁর নামায পড়া আমার পসন্দ ছিল। সুতরাং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযে দাঁড়ালেন। তিনি তাকবীর বললেন। আমরা তাঁর পেছনে কাতারবদ্ধ হলাম। তিনি দু' রাক'আত নামায পড়লেন। তারপর সালাম ফেরালেন। তিনি যখন সালাম ফেরালেন, আমরাও সালাম ফেরালাম। তারপর আমরা তাঁর জন্য তৈরি করা খাযীরা (এক প্রকার খাদ্য)-এর জন্য তাঁকে আটকালাম। ওদিকে মহল্লার লোকেরা শুনতে পেল যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার ঘরে। অমনি তারা ছুটে আসল। ফলে আমার ঘরে প্রচুর লোক জমা হয়ে গেল। তখন এক ব্যক্তি বলল, মালিক কোথায়, তাকে যে দেখছি না? অপর এক ব্যক্তি বলল, সে তো একটা মুনাফিক। সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ভালোবাসে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এমনটা বলো না। তুমি দেখছ না সে বলে, আল্লাহ ছাড়া কোনও মা'বূদ নেই, যা দ্বারা সে আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টি কামনা করে? লোকটি বলল, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তবে আল্লাহর কসম! আমরা তো মুনাফিকদের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব ও তাদের সঙ্গেই তাকে কথাবার্তা বলতে দেখি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে ব্যক্তি বলে, আল্লাহ ছাড়া কোনও মা'বূদ নেই; যা দ্বারা সে আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টি কামনা করে, আল্লাহ তাকে জাহান্নামের জন্য হারাম করে দেন - বুখারী ও মুসলিম ।
مقدمة الامام النووي
51 - باب الرجاء
417 - وعن عِتْبَانَ بن مالك - رضي الله عنه - وَهُوَ مِمَّن شَهِدَ بَدرًا، قَالَ: كنت أُصَلِّي لِقَوْمِي بَني سَالِم، وَكَانَ يَحُولُ بَيْنِي وبَيْنَهُمْ وَادٍ إِذَا جَاءتِ الأَمْطَار، فَيَشُقُّ عَلَيَّ اجْتِيَازُهُ قِبَلَ مَسْجِدِهم، فَجِئتُ رسولَ الله - صلى الله عليه وسلم - فقلت لَهُ: إنّي أَنْكَرْتُ بَصَرِي وَإنَّ الوَادِي الَّذِي بَيْنِي وبَيْنَ قَومِي يَسيلُ إِذَا جَاءتِ الأمْطَارُ فَيَشُقُّ عَلَيَّ اجْتِيَازُهُ فَوَدِدْتُ أنَّكَ تَأتِي فَتُصَلِّي في بَيْتِي مَكَانًا أتَّخِذُهُ مُصَلّى، فَقَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «سَأفْعَلُ» فَغَدَا رسولُ الله - صلى الله عليه وسلم - وَأَبُو بكر - رضي الله عنه - بَعْدَ مَا اشْتَدَّ النَّهَارُ، وَاسْتَأذَنَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - فَأذِنْتُ لَهُ، فَلَمْ يَجْلِسْ حَتَّى قَالَ: «أيْنَ تُحِبُّ أَنْ أُصَلِّيَ مِنْ بَيْتِكَ؟» فَأشَرْتُ لَهُ إِلَى المَكَانِ الَّذِي أُحبُّ أَنْ يُصَلِّيَ فِيهِ، فَقَامَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - فَكَبَّرَ وَصَفَفْنَا وَرَاءَهُ فَصَلَّى رَكعَتَينِ ثُمَّ سَلَّمَ وَسَلَّمْنَا حِينَ سَلَّمَ فَحَبَسْتُهُ عَلَى خَزيرَةٍ تُصْنَعُ لَهُ، فَسَمِعَ أهلُ الدَّارِ أنَّ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - في بَيْتِي فَثَابَ رِجالٌ مِنْهُمْ حَتَّى كَثُرَ الرِّجَالُ في البَيْتِ، فَقَالَ رَجُلٌ: مَا فَعَلَ مَالِكٌ لا أرَاهُ! فَقَالَ رَجُلٌ: ذلِكَ مُنَافِقٌ لا يُحِبُّ الله ورسولَهُ، فَقَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «لا تَقُلْ ذلِكَ، ألاَ تَرَاهُ قَالَ: لا إلهَ إلاَّ الله يَبْتَغي بذَلِكَ وَجهَ الله تَعَالَى» فَقَالَ: اللهُ ورسُولُهُ أعْلَمُ أمَّا نَحْنُ فَوَاللهِ مَا نَرَى وُدَّهُ وَلاَ حَدِيثَهُ إلاَّ إِلَى المُنَافِقينَ! فَقَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «فإنَّ الله قَدْ حَرَّمَ عَلَى النَّارِ مَنْ قَالَ: لا إلهَ إلاَّ الله يَبْتَغِي بذَلِكَ وَجْهَ الله». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
وَ «عِتْبَان»: بكسر العين المهملة وإسكان التاءِ المثناةِ فَوق وبعدها باءٌ
موحدة. وَ «الخَزِيرَةُ» بالخاءِ المعجمةِ والزاي: هِيَ دَقيقٌ يُطْبَخُ بِشَحم. وقوله:
«ثَابَ رِجَالٌ» بِالثاءِ المثلثةِ: أيْ جَاؤُوا وَاجْتَمَعُوا.
وَ «عِتْبَان»: بكسر العين المهملة وإسكان التاءِ المثناةِ فَوق وبعدها باءٌ
موحدة. وَ «الخَزِيرَةُ» بالخاءِ المعجمةِ والزاي: هِيَ دَقيقٌ يُطْبَخُ بِشَحم. وقوله:
«ثَابَ رِجَالٌ» بِالثاءِ المثلثةِ: أيْ جَاؤُوا وَاجْتَمَعُوا.
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪১৮
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫১ আল্লাহর কাছে আশাবাদী থাকা।
সন্তানের প্রতি মায়ের মমতা ও বান্দার প্রতি আল্লাহ তা'আলার করুণা
হাদীছ নং : ৪১৮
হযরত উমর ইবনে খাত্তাব রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছু বন্দীসহ আগমন করলেন। হঠাৎ বন্দীদের মধ্য থেকে এক মহিলা ছোটাছুটি করতে লাগল। যখনই বন্দীদের মধ্যে কোনও শিশু পায়, তাকে তুলে নেয় এবং পেটের সঙ্গে চেপে ধরে দুধপান করায়। তা দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা কি মনে কর এ মহিলা তার সন্তানকে আগুনে নিক্ষেপ করতে পারে? আমরা বললাম, আল্লাহর কসম! কক্ষণও নয়। তিনি বললেন, নিজ সন্তানের প্রতি এই মহিলার যতটা মায়া, নিজ বান্দার প্রতি আল্লাহ তা'আলা তারচে'ও বেশি মমতাবান - বুখারী ও মুসলিম।
হাদীছ নং : ৪১৮
হযরত উমর ইবনে খাত্তাব রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছু বন্দীসহ আগমন করলেন। হঠাৎ বন্দীদের মধ্য থেকে এক মহিলা ছোটাছুটি করতে লাগল। যখনই বন্দীদের মধ্যে কোনও শিশু পায়, তাকে তুলে নেয় এবং পেটের সঙ্গে চেপে ধরে দুধপান করায়। তা দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা কি মনে কর এ মহিলা তার সন্তানকে আগুনে নিক্ষেপ করতে পারে? আমরা বললাম, আল্লাহর কসম! কক্ষণও নয়। তিনি বললেন, নিজ সন্তানের প্রতি এই মহিলার যতটা মায়া, নিজ বান্দার প্রতি আল্লাহ তা'আলা তারচে'ও বেশি মমতাবান - বুখারী ও মুসলিম।
مقدمة الامام النووي
51 - باب الرجاء
418 - وعن عمر بن الخطاب - رضي الله عنه - قَالَ: قدِم رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - بسَبْيٍ فَإِذَا امْرَأةٌ مِنَ السَّبْيِ تَسْعَى، إِذْ وَجَدَتْ صَبيًا في السَّبْيِ أخَذَتْهُ فَألْزَقَتهُ بِبَطْنِهَا فَأَرضَعَتْهُ، فَقَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «أتَرَوْنَ هذِهِ المَرْأةَ طَارِحَةً وَلَدَها في النَّارِ؟» قُلْنَا: لاَ وَاللهِ. فَقَالَ: «للهُ أرْحَمُ بِعِبَادِهِ مِنْ هذِهِ بِوَلَدِهَا». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪১৯
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫১ আল্লাহর কাছে আশাবাদী থাকা।
আল্লাহ তা'আলার আরশের উপর যা লেখা আছে
হাদীছ নং : ৪১৯
হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তা'আলা মাখলুক সৃষ্টি করার পর একটি কিতাবে লিখে দেন- নিশ্চয়ই আমার ক্রোধের উপর আমার রহমত প্রবল। সেটি আরশের উপর তাঁর নিকট রক্ষিত আছে।
অপর এক বর্ণনায় আছে, আমার ক্রোধের উপর (আমার রহমত) বিজয়ী হয়েছে। অপর এক বর্ণনায় আছে, আমার ক্রোধের উপর অগ্রগামী হয়েছে - বুখারী ও মুসলিম।
হাদীছ নং : ৪১৯
হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তা'আলা মাখলুক সৃষ্টি করার পর একটি কিতাবে লিখে দেন- নিশ্চয়ই আমার ক্রোধের উপর আমার রহমত প্রবল। সেটি আরশের উপর তাঁর নিকট রক্ষিত আছে।
অপর এক বর্ণনায় আছে, আমার ক্রোধের উপর (আমার রহমত) বিজয়ী হয়েছে। অপর এক বর্ণনায় আছে, আমার ক্রোধের উপর অগ্রগামী হয়েছে - বুখারী ও মুসলিম।
مقدمة الامام النووي
51 - باب الرجاء
419 - وعن أَبي هريرة - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «لَمَّا خَلَقَ الله الخَلْقَ كَتَبَ في كِتَابٍ، فَهُوَ عِنْدَهُ فَوقَ العَرْشِ: إنَّ رَحْمَتِي تَغْلِبُ غَضَبي».
وفي رواية: «غَلَبَتْ غَضَبي» وفي رواية: «سَبَقَتْ غَضَبي». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
وفي رواية: «غَلَبَتْ غَضَبي» وفي رواية: «سَبَقَتْ غَضَبي». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪২০
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫১ আল্লাহর কাছে আশাবাদী থাকা।
দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহ তাআলার রহমত বণ্টনের তুলনা
হাদীছ নং: ৪২০
হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি- আল্লাহ রহমতকে একশ' ভাগে ভাগ করেছেন। তারপর নিরানব্বই ভাগ নিজের কাছে রেখেছেন আর এক ভাগ পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। সেই এক ভাগের কারণেই কুল মাখলুক একে অন্যের প্রতি দয়া করে। এমনকি চতুষ্পদ জন্তু তার খুর তার বাচ্চা থেকে উঁচু করে রাখে, যেন এর দ্বারা তাকে কষ্ট না দিয়ে বসে।
অপর এক বর্ণনায় আছে, আল্লাহ তা'আলার একশ'টি রহমত আছে। তা থেকে মাত্র একটি রহমত জিন, মানুষ, জীবজন্ত ও কীটপতঙ্গের মধ্যে নাযিল করেছেন। তা দ্বারাই তারা সকলে একে অন্যের প্রতি মমতা দেখায়, তা দ্বারাই তারা একে অন্যের প্রতি দয়া করে এবং তা দ্বারাই বন্যপশু তার বাচ্চার প্রতি মমতা দেখায়। আল্লাহ তা'আলা বাকি নিরানব্বইটি রহমত নিজের কাছে সরিয়ে রেখেছেন। তা দ্বারা কিয়ামতের দিন বান্দাদের প্রতি রহমত করবেন - বুখারী ও মুসলিম।
ইমাম মুসলিম রহ. হাদীছটি সালমান ফারিসী রাযি.-এর সূত্রেও বর্ণনা করেছেন। তাতে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তা'আলার একশটি রহমত আছে। তা থেকে একটি রহমত দ্বারা কুল মাখলুকাত নিজেদের মধ্যে একে অন্যের প্রতি দয়া করে থাকে। আর নিরানব্বইটি রহমত হল কিয়ামত দিবসের জন্য।
অপর এক বর্ণনায় আছে, আল্লাহ তা'আলা যেদিন আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেন, সেদিন একশ'টি রহমতও সৃষ্টি করেছেন। প্রতিটি রহমত আসমান-যমীনের মধ্যবর্তী শূন্যমণ্ডল পরিমাণ। তিনি তা থেকে একটি রহমত পৃথিবীতে দিয়েছেন। তারই দ্বারা মা তার সন্তানের প্রতি এবং বন্যজন্তু ও পাখিরা একে অন্যের প্রতি মমত্ব প্রকাশ করে থাকে। যেদিন কিয়ামত হবে, সেদিন আল্লাহ তা এই রহমত দ্বারা পূর্ণ করবেন।
হাদীছ নং: ৪২০
হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি- আল্লাহ রহমতকে একশ' ভাগে ভাগ করেছেন। তারপর নিরানব্বই ভাগ নিজের কাছে রেখেছেন আর এক ভাগ পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। সেই এক ভাগের কারণেই কুল মাখলুক একে অন্যের প্রতি দয়া করে। এমনকি চতুষ্পদ জন্তু তার খুর তার বাচ্চা থেকে উঁচু করে রাখে, যেন এর দ্বারা তাকে কষ্ট না দিয়ে বসে।
অপর এক বর্ণনায় আছে, আল্লাহ তা'আলার একশ'টি রহমত আছে। তা থেকে মাত্র একটি রহমত জিন, মানুষ, জীবজন্ত ও কীটপতঙ্গের মধ্যে নাযিল করেছেন। তা দ্বারাই তারা সকলে একে অন্যের প্রতি মমতা দেখায়, তা দ্বারাই তারা একে অন্যের প্রতি দয়া করে এবং তা দ্বারাই বন্যপশু তার বাচ্চার প্রতি মমতা দেখায়। আল্লাহ তা'আলা বাকি নিরানব্বইটি রহমত নিজের কাছে সরিয়ে রেখেছেন। তা দ্বারা কিয়ামতের দিন বান্দাদের প্রতি রহমত করবেন - বুখারী ও মুসলিম।
ইমাম মুসলিম রহ. হাদীছটি সালমান ফারিসী রাযি.-এর সূত্রেও বর্ণনা করেছেন। তাতে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তা'আলার একশটি রহমত আছে। তা থেকে একটি রহমত দ্বারা কুল মাখলুকাত নিজেদের মধ্যে একে অন্যের প্রতি দয়া করে থাকে। আর নিরানব্বইটি রহমত হল কিয়ামত দিবসের জন্য।
অপর এক বর্ণনায় আছে, আল্লাহ তা'আলা যেদিন আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেন, সেদিন একশ'টি রহমতও সৃষ্টি করেছেন। প্রতিটি রহমত আসমান-যমীনের মধ্যবর্তী শূন্যমণ্ডল পরিমাণ। তিনি তা থেকে একটি রহমত পৃথিবীতে দিয়েছেন। তারই দ্বারা মা তার সন্তানের প্রতি এবং বন্যজন্তু ও পাখিরা একে অন্যের প্রতি মমত্ব প্রকাশ করে থাকে। যেদিন কিয়ামত হবে, সেদিন আল্লাহ তা এই রহমত দ্বারা পূর্ণ করবেন।
مقدمة الامام النووي
51 - باب الرجاء
420 - وعنه، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - يقول: «جَعَلَ الله الرَّحْمَةَ مِائَةَ جُزْءٍ، فَأمْسَكَ عِنْدَهُ تِسْعَةً وَتِسْعِينَ، وَأنْزَلَ في الأرْضِ جُزْءًا وَاحِدًا، فَمِنْ ذلِكَ الجُزءِ يَتَرَاحَمُ الخَلائِقُ، حَتَّى تَرْفَعَ الدَّابّةُ حَافِرهَا عَنْ وَلَدِهَا خَشْيَةَ أَنْ تُصِيبَهُ».
وفي رواية: «إنّ للهِ تَعَالَى مئَةَ رَحمَةٍ، أنْزَلَ مِنْهَا رَحْمَةً وَاحِدَةً بَيْنَ الجنِّ وَالإنس وَالبهائِمِ وَالهَوامّ، فبها يَتَعاطَفُونَ، وبِهَا يَتَرَاحَمُونَ، وبِهَا تَعْطِفُ الوَحْشُ عَلَى وَلَدِهَا، وَأخَّرَ اللهُ تَعَالَى تِسْعًا وَتِسْعينَ رَحْمَةً يرْحَمُ بِهَا عِبَادَهُ يَوْمَ القِيَامَة». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
ورواه مسلم أيضًا مِنْ رواية سَلْمَانَ الفارِسيِّ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «إنَّ للهِ تَعَالَى مِئَة رَحْمَةٍ فَمِنْهَا رَحْمَةٌ يَتَرَاحمُ بِهَا الخَلْقُ بَيْنَهُمْ، وَتِسْعٌ وَتِسعُونَ لِيَومِ القِيَامَةِ».
وفي رواية: «إنَّ الله تَعَالَى خَلَقَ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاواتِ وَالأَرْضَ مَئَةَ رَحْمَةٍ كُلُّ رَحْمَةٍ طِبَاقُ مَا بَيْنَ السَّماءِ إِلَى الأرْضِ، فَجَعَلَ مِنْهَا في الأرضِ رَحْمَةً فَبِهَا تَعْطفُ الوَالِدَةُ عَلَى وَلَدِهَا، وَالوَحْشُ وَالطَّيْرُ بَعْضُهَا عَلَى بَعْض، فَإذا كَانَ يَوْمُ القِيَامَةِ أكملَهَا بِهذِهِ الرَّحمَةِ».
وفي رواية: «إنّ للهِ تَعَالَى مئَةَ رَحمَةٍ، أنْزَلَ مِنْهَا رَحْمَةً وَاحِدَةً بَيْنَ الجنِّ وَالإنس وَالبهائِمِ وَالهَوامّ، فبها يَتَعاطَفُونَ، وبِهَا يَتَرَاحَمُونَ، وبِهَا تَعْطِفُ الوَحْشُ عَلَى وَلَدِهَا، وَأخَّرَ اللهُ تَعَالَى تِسْعًا وَتِسْعينَ رَحْمَةً يرْحَمُ بِهَا عِبَادَهُ يَوْمَ القِيَامَة». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
ورواه مسلم أيضًا مِنْ رواية سَلْمَانَ الفارِسيِّ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «إنَّ للهِ تَعَالَى مِئَة رَحْمَةٍ فَمِنْهَا رَحْمَةٌ يَتَرَاحمُ بِهَا الخَلْقُ بَيْنَهُمْ، وَتِسْعٌ وَتِسعُونَ لِيَومِ القِيَامَةِ».
وفي رواية: «إنَّ الله تَعَالَى خَلَقَ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاواتِ وَالأَرْضَ مَئَةَ رَحْمَةٍ كُلُّ رَحْمَةٍ طِبَاقُ مَا بَيْنَ السَّماءِ إِلَى الأرْضِ، فَجَعَلَ مِنْهَا في الأرضِ رَحْمَةً فَبِهَا تَعْطفُ الوَالِدَةُ عَلَى وَلَدِهَا، وَالوَحْشُ وَالطَّيْرُ بَعْضُهَا عَلَى بَعْض، فَإذا كَانَ يَوْمُ القِيَامَةِ أكملَهَا بِهذِهِ الرَّحمَةِ».
তাহকীক: