আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ

الترغيب والترهيب للمنذري

৮. অধ্যায়ঃ সদকা - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ৩৪০ টি

হাদীস নং: ১৩২৭
অধ্যায়ঃ সদকা
পরিচ্ছেদঃ স্বামী ও নিকটাত্মীয়দেরকে সাদকা করার অনুপ্রেরণা এবং অন্যদের উপর তাদেরকে অগ্রাধিকার প্রদান প্রসঙ্গ
১৩২৭. আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন মাসউদ (রা)-এর স্ত্রী যয়নাব সাকাফিয়্যা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ একদিন বললেনঃ হে মহিলা সম্প্রদায়! তোমরা সাদ্কা কর, যদি তোমাদের অলংকার থেকেও হয়। যয়নাব বলেন, আমি আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন মাসউদের নিকট ফিরে গেলাম এবং বললাম: আপনি তো স্বল্প আয়ের মানুষ, এদিকে রাসূলুল্লাহ্ (সা) আমাদেরকে সাদ্কা করার আদেশ দিয়েছেন। তাই আপনি তাঁর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করুন, যদি আপনাকে সাদকা দিলেই যথেষ্ট হয় তো ভাল। অন্যথায় আমি অন্যদের খাতে তা খরচ করে ফেলব। আবদুল্লাহ্ তখন বললেন, তুমিই বরং গিয়ে জিজ্ঞেস করো। আমি তখন গেলাম। গিয়ে দেখলাম এক আনসারী মহিলা রাসূলুল্লাহ্ (সা) এর দ্বারে অপেক্ষমান। তারও ঐ একই গরয। রাসূলুল্লাহ্ (সা) এর উপর তখন গুরু গম্ভীর অবস্থা বিরাজ করছিল। একটু পরে বিলাল (রা) আমাদের কাছে বেরিয়ে আসলেন। আমরা তাঁকে বললাম, আপনি রাসূলুল্লাহ্ (সা) এর কাছে গিয়ে বলুন যে, দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে দু'জন মহিলা আপনাকে প্রশ্ন করছে যে, তাদের নিজের স্বামী ও কোলের ইয়াতীমদেরকে সাদ্কা প্রদান করলে তাদের জন্য যথেষ্ট হবে কি না? তবে সাবধান! আমরা কে, একথাটি বলবেন না। বিলাল রাসূলুল্লাহ্ (সা) এর কাছে গিয়ে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলেন। রাসূলুল্লাহ্ (সা) তাকে প্রশ্ন করলেন, মহিলা দু'টি কে কে? বিলাল বললেন, এক আনসারী মহিলা ও যয়নাব। রাসূলুল্লাহ্ বললেন, কোন যয়নাব? বিলাল বললেন, আবদুল্লাহ ইব্‌ন মাসউদের স্ত্রী। রাসূলুল্লাহ্ (সা) বললেন, তাদের দ্বিগুণ সওয়াব লাভ হবে।
একটি আত্মীয়তার হক আদায়ের, অপরটি সাদ্কার।
(হাদীসটি বুখারী ও মুসলিম রিওয়ায়াত করেছেন, বর্ণিত পাঠ মুসলিমের।)
كتاب الصَّدقَات
التَّرْغِيب فِي الصَّدَقَة على الزَّوْج والأقارب وتقديمهم على غَيرهم
1327 - عَن زَيْنَب الثقفية امْرَأَة عبد الله بن مَسْعُود رَضِي الله عَنْهُمَا قَالَت قَالَ رَسُول
الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم تصدقن يَا معشر النِّسَاء وَلَو من حليكن قَالَت فَرَجَعت إِلَى عبد الله بن مَسْعُود فَقلت إِنَّك رجل خَفِيف ذَات الْيَد وَإِن رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قد أمرنَا بِالصَّدَقَةِ فائته فَاسْأَلْهُ فَإِن كَانَ ذَلِك يجزىء عني وَإِلَّا صرفتها إِلَى غَيْركُمْ فَقَالَ عبد الله بل ائته أَنْت فَانْطَلَقت فَإِذا امْرَأَة من الْأَنْصَار بِبَاب رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم مثل حَاجَتهَا حَاجَتي وَكَانَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قد ألقيت عَلَيْهِ المهابة فَخرج علينا بِلَال رَضِي الله عَنهُ فَقُلْنَا لَهُ ائْتِ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَأخْبرهُ أَن امْرَأتَيْنِ بِالْبَابِ يسألانك أتجزىء الصَّدَقَة عَنْهُمَا على أزواجهما وعَلى أَيْتَام فِي حجورهما وَلَا تخبره من نَحن
قَالَت فَدخل بِلَال على رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَسَأَلَهُ فَقَالَ لَهُ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم من هما فَقَالَ امْرَأَة من الْأَنْصَار وَزَيْنَب فَقَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم أَي الزيانب قَالَ امْرَأَة عبد الله بن مَسْعُود فَقَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم لَهما أَجْرَانِ أجر الْقَرَابَة وَأجر الصَّدَقَة

رَوَاهُ البُخَارِيّ وَمُسلم وَاللَّفْظ لَهُ
হাদীস নং: ১৩২৮
অধ্যায়ঃ সদকা
পরিচ্ছেদঃ স্বামী ও নিকটাত্মীয়দেরকে সাদকা করার অনুপ্রেরণা এবং অন্যদের উপর তাদেরকে অগ্রাধিকার প্রদান প্রসঙ্গ
১৩২৮. হযরত সালমান ইব্‌ন আমির (রা) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ (সা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মিসকীনের উপর সাদ্কা শুধু সাদকাই। আর নিকটাত্মীয়কে সাদ্কাহ করাতে দু'টি পুণ্য। সাদ্কার পুণ্য ও আত্মীয়তার হক আদায়ের পুণ্য।
(হাদীসটি নাসাঈ ও তিরমিযী বর্ণনা করেছেন এবং তিরমিযী হাদীসটিকে হাসান বলে মন্তব্য করেছেন। ইব্‌ন্ খুযায়মা ও ইব্‌ন্ হিব্বানও তাঁদের 'সহীহ' গ্রন্থে এটি বর্ণনা করেছেন। হাকিমও এটি রিওয়ায়াত করে বলেছেন, হাদীসটির সনদ সহীহ। ইবন খুযায়মার বর্ণিত শব্দসমূহ নিম্নরূপঃ 'মিসকীনের উপর সাদ্কাহ শুধু সাদ্কাহ। আর নিকটাত্মীয়কে সাদ্কাহ দান করা দু'টি সাদ্কাহ। একটি দান অপরটি আত্মীয়তার হক আদায়।
كتاب الصَّدقَات
التَّرْغِيب فِي الصَّدَقَة على الزَّوْج والأقارب وتقديمهم على غَيرهم
1328 - وَعَن سلمَان بن عَامر رَضِي الله عَنهُ عَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ الصَّدَقَة على الْمِسْكِين صَدَقَة وعَلى ذَوي الرَّحِم ثِنْتَانِ صَدَقَة وصلَة

رَوَاهُ النَّسَائِيّ وَالتِّرْمِذِيّ وَحسنه وَابْن خُزَيْمَة وَابْن حبَان فِي صَحِيحَيْهِمَا وَالْحَاكِم وَقَالَ صَحِيح الْإِسْنَاد وَلَفظ ابْن خُزَيْمَة قَالَ الصَّدَقَة على الْمِسْكِين صَدَقَة وعَلى الْقَرِيب صدقتان صَدَقَة وصلَة
হাদীস নং: ১৩২৯
অধ্যায়ঃ সদকা
পরিচ্ছেদঃ স্বামী ও নিকটাত্মীয়দেরকে সাদকা করার অনুপ্রেরণা এবং অন্যদের উপর তাদেরকে অগ্রাধিকার প্রদান প্রসঙ্গ
১৩২৯. হযরত হাকীম ইব্‌ন হিযাম (রা) থেকে বর্ণিত যে, জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ (সা) কে জিজ্ঞেস করলো, উত্তম দান কোনটি? তিনি বললেন, বিদ্বেষ পোষণকারী নিকটাত্মীয়কে দান করা।
(হাদীসটি আহমদ ও তাবারানী বর্ণনা করেছেন। আহমদের সনদটি হাসান।)
[الْكَاشِح] শব্দটির অর্থ অন্তরে বিদ্বেষ ও শত্রুতা পোষণকারী। অর্থাৎ নিশ্চয়ই উত্তম সাদ্কা হলো আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা ও গোপনে শত্রুতাকারীকে দান করা।
كتاب الصَّدقَات
التَّرْغِيب فِي الصَّدَقَة على الزَّوْج والأقارب وتقديمهم على غَيرهم
1329 - وَعَن حَكِيم بن حزَام رَضِي الله عَنهُ أَن رجلا سَأَلَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم عَن الصَّدقَات أَيهَا أفضل قَالَ على ذِي الرَّحِم الْكَاشِح

رَوَاهُ أَحْمد وَالطَّبَرَانِيّ وَإسْنَاد أَحْمد حسن
الْكَاشِح بالشين الْمُعْجَمَة هُوَ الَّذِي يضمر عداوته فِي كشحه وَهُوَ خصره يَعْنِي أَن أفضل الصَّدَقَة
على ذِي الرَّحِم الْقَاطِع الْمُضمر الْعَدَاوَة فِي بَاطِنه
হাদীস নং: ১৩৩০
অধ্যায়ঃ সদকা
পরিচ্ছেদঃ স্বামী ও নিকটাত্মীয়দেরকে সাদকা করার অনুপ্রেরণা এবং অন্যদের উপর তাদেরকে অগ্রাধিকার প্রদান প্রসঙ্গ
১৩৩০. হযরত উম্মে কুলসুম বিনতে উকবা (রা) সূত্রে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন, সর্বোত্তম দান হচ্ছে বিদ্বেষ পোষণকারী নিকটাত্মীয়কে দান করা।
(হাদীসটি তাবারানী 'কবীর' নামক গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, সনদের রাবীগণ সহীহ হাদীসের রাবী তুল্য। ইবন খুযায়মাও তাঁর 'সহীহ' গ্রন্থে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। হাকিমও এ হাদীসটি রিওয়ায়াত করে বলেছেন, মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী এ হাদীসটি সহীহ্।)
كتاب الصَّدقَات
التَّرْغِيب فِي الصَّدَقَة على الزَّوْج والأقارب وتقديمهم على غَيرهم
1330 - وَعَن أم كُلْثُوم بنت عقبَة رَضِي الله عَنْهَا أَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ أفضل الصَّدَقَة الصَّدَقَة على ذِي الرَّحِم الْكَاشِح

رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ فِي الْكَبِير وَرِجَاله رجال الصَّحِيح وَابْن خُزَيْمَة فِي صَحِيحه وَالْحَاكِم وَقَالَ صَحِيح على شَرط مُسلم
হাদীস নং: ১৩৩১
অধ্যায়ঃ সদকা
পরিচ্ছেদঃ স্বামী ও নিকটাত্মীয়দেরকে সাদকা করার অনুপ্রেরণা এবং অন্যদের উপর তাদেরকে অগ্রাধিকার প্রদান প্রসঙ্গ
১৩৩১. হযরত আবূ উমামা (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: নিকটাত্মীয়দেরকে দান করাতে দ্বিগুণ সওয়াব।
(তাবারানী এ হাদীসটি 'কবীর' নামক গ্রন্থে আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন্ যার সূত্রে বর্ণনা করেছেন।)
كتاب الصَّدقَات
التَّرْغِيب فِي الصَّدَقَة على الزَّوْج والأقارب وتقديمهم على غَيرهم
1331 - وَعَن أبي أُمَامَة رَضِي الله عَنهُ أَن رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ إِن الصَّدَقَة على ذِي قرَابَة يضعف أجرهَا مرَّتَيْنِ

رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ فِي الْكَبِير من طَرِيق عبد الله بن زحر
হাদীস নং: ১৩৩২
অধ্যায়ঃ সদকা
পরিচ্ছেদঃ কোন ব্যক্তি আপন বন্ধুজন অথবা নিকটাত্মীয়ের কাছে তাদের অতিরিক্ত সম্পদ থেকে কিছু চাইলে সে ক্ষেত্রে কৃপণতা প্রদর্শন অথবা নিকটাত্মীয়গণ সাহায্যের বেশি হকদার হওয়া সত্ত্বেও অন্যত্র ব্যয় করার ব্যাপারে সতর্কবাণী
১৩৩২. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) এ বলেছেনঃ ঐ সত্তার শপথ! যিনি আমাকে সত্য দীন দিয়ে প্রেরণ করেছেন, আল্লাহ্ এমন ব্যক্তিকে কিয়ামতের দিন শাস্তি দিবেন না যে ইয়াতীমকে দয়া করে এবং তার সাথে নম্রভাবে কথা বলে, ইয়াতীম ও অসহায় হওয়ার কারণে যে তার প্রতি
দয়াপরবশ হয় এবং আল্লাহর দান ও করুণাপ্রাপ্ত হয়ে যে আপন প্রতিবেশির প্রতি গর্বিত আচরণ করে না। তিনি আরও বলেছেনঃ হে মুহাম্মদের উম্মতগণ! ঐ সত্তার শপথ, যিনি আমাকে সত্য দীন দিয়ে পাঠিয়েছেন, আল্লাহ্ এমন ব্যক্তির দান গ্রহণ করবেন না, যার মুখাপেক্ষী আত্মীয়-স্বজন রয়েছে। অথচ সে তার দানের অর্থ অন্যত্র ব্যয় করে। ঐ সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, আল্লাহ্ কিয়ামতের দিন তার প্রতি (দয়ার দৃষ্টিতে) তাকাবেন না।
(হাদীসটি তাবারানী বর্ণনা করেছেন। হাদীসের সকল রাবীই নির্ভরযোগ্য। রাবী আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন আমির আসলামী সম্পর্কে আবু হাতিম বলেন, লোকটি পরিত্যজ্য পর্যায়ের নয়।)
كتاب الصَّدقَات
التَّرْهِيب من أَن يسْأَل الْإِنْسَان مَوْلَاهُ أَو قَرِيبه من فضل مَاله فيبخل عَلَيْهِ أَو يصرف صدقته إِلَى الْأَجَانِب وأقرباؤه محتاجون
1332 - عَن أبي هُرَيْرَة رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم وَالَّذِي بَعَثَنِي بِالْحَقِّ لَا يعذب الله يَوْم الْقِيَامَة من رحم الْيَتِيم ولان لَهُ فِي الْكَلَام ورحم يتمه وَضَعفه وَلم يَتَطَاوَل على جَاره بِفضل مَا آتَاهُ الله
وَقَالَ يَا أمة مُحَمَّد وَالَّذِي بَعَثَنِي بِالْحَقِّ لَا يقبل الله صَدَقَة من رجل وَله قرَابَة محتاجون إِلَى صلته
ويصرفها إِلَى غَيرهم وَالَّذِي نَفسِي بِيَدِهِ لَا ينظر الله إِلَيْهِ يَوْم الْقِيَامَة

رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ وَرُوَاته ثِقَات وَعبد الله بن عَامر الْأَسْلَمِيّ قَالَ أَبُو حَاتِم لَيْسَ بالمتروك
হাদীস নং: ১৩৩৩
অধ্যায়ঃ সদকা
পরিচ্ছেদঃ কোন ব্যক্তি আপন বন্ধুজন অথবা নিকটাত্মীয়ের কাছে তাদের অতিরিক্ত সম্পদ থেকে কিছু চাইলে সে ক্ষেত্রে কৃপণতা প্রদর্শন অথবা নিকটাত্মীয়গণ সাহায্যের বেশি হকদার হওয়া সত্ত্বেও অন্যত্র ব্যয় করার ব্যাপারে সতর্কবাণী
১৩৩৩. হযরত বাহয ইব্‌ন হাকীম থেকে তাঁর পিতার বরাতে ও তাঁর পিতা থেকে তাঁর দাদার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমার সদয় আচরণের সবচাইতে বেশি হকদার কে? তিনি বললেন, তোমার মা, তোমার মা, তোমার মা। তারপর তোমার বাবা, তারপর আত্মীয়তার সম্পর্কে যে তোমার বেশি ঘনিষ্ট এই ক্রমধারা অনুযায়ী। রাসূলুল্লাহ্ (সা) আরও বলেছেন, কোন ব্যক্তি আপন মনিবের নিকট তার অতিরিক্ত সম্পদ থেকে কিছু যাঞ্চা করলে সে যদি তা দিতে অস্বীকার করে, তবে কিয়ামতের দিন তার ঐ অতিরিক্ত সম্পদটিকে বিষধর (أَقرع) সাপের আকৃতিতে উপস্থিত করা হবে।
(হাদীসটি আবূ দাউদ বর্ণনা করেছেন; বর্ণিত শব্দসমূহ তাঁরই; নাসাঈ ও তিরমিযীও এটি রিওয়ায়াত করেন। তিরমিযী বলেন, হাদীসটি হাসান। আবু দাউদ বলেন, (أَقرع) ঐ সাপকে বলা হয়, বিষাক্ততার কারণে যার মাথার চুল খসে পড়েছে।)
كتاب الصَّدقَات
التَّرْهِيب من أَن يسْأَل الْإِنْسَان مَوْلَاهُ أَو قَرِيبه من فضل مَاله فيبخل عَلَيْهِ أَو يصرف صدقته إِلَى الْأَجَانِب وأقرباؤه محتاجون
1333 - وَعَن بهز بن حَكِيم عَن أَبِيه عَن جده رَضِي الله عَنهُ قَالَ قلت يَا رَسُول الله من أبر قَالَ أمك ثمَّ أمك ثمَّ أمك ثمَّ أَبَاك ثمَّ الْأَقْرَب فَالْأَقْرَب
وَقَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم لَا يسْأَل رجل مَوْلَاهُ من فضل هُوَ عِنْده فيمنعه إِيَّاه إِلَّا دعِي لَهُ يَوْم الْقِيَامَة فَضله الَّذِي مَنعه شجاعا أَقرع

رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَاللَّفْظ لَهُ وَالنَّسَائِيّ وَالتِّرْمِذِيّ وَقَالَ حَدِيث حسن
قَالَ أَبُو دَاوُد الْأَقْرَع الَّذِي ذهب شعر رَأسه من السم
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ১৩৩৪
অধ্যায়ঃ সদকা
পরিচ্ছেদঃ কোন ব্যক্তি আপন বন্ধুজন অথবা নিকটাত্মীয়ের কাছে তাদের অতিরিক্ত সম্পদ থেকে কিছু চাইলে সে ক্ষেত্রে কৃপণতা প্রদর্শন অথবা নিকটাত্মীয়গণ সাহায্যের বেশি হকদার হওয়া সত্ত্বেও অন্যত্র ব্যয় করার ব্যাপারে সতর্কবাণী
১৩৩৪. হযরত জাবীর ইব্‌ন আবদুল্লাহ্ বাজালী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন: কারো কাছে তার কোন নিকটাত্মীয় এসে তার অতিরিক্ত সম্পদ থেকে কোন কিছু চাইলে সে যদি কার্পণ্য করে, তবে আল্লাহ্ তার জন্য জাহান্নাম থেকে একটি বিষধর সাপ বের করে আনবেন যে সাপটি তার দেহ চাটতে থাকবে (সারা শরীরে দংশন করবে), তারপর এটি তার গলায় পেঁচিয়ে দেয়া হবে।
(হাদীসটি তাবারানী 'আওসাত' ও 'কবীর' নামক গ্রন্থে উত্তম সনদে বর্ণনা করেছেন।)
[تلمظ] শব্দটির অর্থ হচ্ছে মুখের মধ্যে খাদ্যের যে ছিটেফোটা অংশ লেগে থাকে, তা চেটে খাওয়া।
كتاب الصَّدقَات
التَّرْهِيب من أَن يسْأَل الْإِنْسَان مَوْلَاهُ أَو قَرِيبه من فضل مَاله فيبخل عَلَيْهِ أَو يصرف صدقته إِلَى الْأَجَانِب وأقرباؤه محتاجون
1334 - وَعَن جرير بن عبد الله البَجلِيّ رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم مَا من ذِي رحم يَأْتِي ذَا رَحمَه فيسأله فضلا أعطَاهُ الله إِيَّاه فيبخل عَلَيْهِ إِلَّا أخرج الله لَهُ من جَهَنَّم حَيَّة يُقَال لَهَا شُجَاع يتلمظ فيطوق بِهِ

رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ فِي الْأَوْسَط وَالْكَبِير بِإِسْنَاد جيد

التلمظ تطعم مَا يبْقى فِي الْفَم من آثَار الطَّعَام
হাদীস নং: ১৩৩৫
অধ্যায়ঃ সদকা
পরিচ্ছেদঃ কোন ব্যক্তি আপন বন্ধুজন অথবা নিকটাত্মীয়ের কাছে তাদের অতিরিক্ত সম্পদ থেকে কিছু চাইলে সে ক্ষেত্রে কৃপণতা প্রদর্শন অথবা নিকটাত্মীয়গণ সাহায্যের বেশি হকদার হওয়া সত্ত্বেও অন্যত্র ব্যয় করার ব্যাপারে সতর্কবাণী
১৩৩৫. হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন উমর (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ (সা) বলেছেনঃ যে ব্যক্তির নিকট তার কোন চাচাতো ভাই (নিকটাত্মীয়) এসে তার অতিরিক্ত সম্পদ থেকে কিছু চাইল, আর সে তাকে ফিরিয়ে দিল, কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তাকে আপন কৃপা থেকে বঞ্চিত রাখবেন।
(হাদীসটি তাবারানী তাঁর 'সগীর' ও 'আওসাত' নামক গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসটি 'গরীব'।)
كتاب الصَّدقَات
التَّرْهِيب من أَن يسْأَل الْإِنْسَان مَوْلَاهُ أَو قَرِيبه من فضل مَاله فيبخل عَلَيْهِ أَو يصرف صدقته إِلَى الْأَجَانِب وأقرباؤه محتاجون
1335 - وَعَن عبد الله بن عمر رَضِي الله عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم أَيّمَا رجل أَتَاهُ
ابْن عَمه يسْأَله من فَضله فَمَنعه مَنعه الله فَضله يَوْم الْقِيَامَة

رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ فِي الصَّغِير والأوسط وَهُوَ غَرِيب
হাদীস নং: ১৩৩৬
অধ্যায়ঃ সদকা
পরিচ্ছেদঃ কর্জদানের প্রতি উৎসাহ দান ও এর ফযীলত
১৩৩৬. হযরত বারা ইব্‌ন আযিব (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ্ (সা) কে একথা বলতে শুনেছি যে, যে ব্যক্তি কাউকে দুগ্ধদানের উদ্দেশ্যে কোন পশু দান করে অথবা নগদ অর্থ দান করে অথবা কোন গলি পথের সন্ধান দেয়, তার জন্য একটি দাস মুক্তির সমতুল্য পুণ্য রয়েছে।
(হাদীসটি আহমদ ও তিরমিযীতে এবং ইব্‌ন হিব্বান তাঁর 'সহীহ' গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। বর্ণিত পাঠ তিরমিযীর। তিরমিযী বলেন: হাদীসটি হাসান-সহীহ। তিনি আরও বলেন : منح منيحة لبن أَو ورق-এর অর্থ হচ্ছে দিরহাম ইত্যাদি কর্জ দেওয়া। আর هدى زقاقا -এর অর্থ হচ্ছে পথের সন্ধান দেয়া অর্থাৎ পথিককে রাস্তা বলে দেয়া।)
كتاب الصَّدقَات
التَّرْغِيب فِي الْقَرْض وَمَا جَاءَ فِي فَضله
1336 - عَن الْبَراء بن عَازِب رَضِي الله عَنْهُمَا قَالَ سَمِعت رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَقُول من منح منيحة لبن أَو ورق أَو هدى زقاقا كَانَ لَهُ مثل عتق رَقَبَة

رَوَاهُ أَحْمد وَالتِّرْمِذِيّ وَاللَّفْظ لَهُ وَابْن حبَان فِي صَحِيحه وَقَالَ التِّرْمِذِيّ حَدِيث حسن صَحِيح وَمعنى قَوْله منح منيحة ورق
إِنَّمَا يَعْنِي بِهِ قرض الدِّرْهَم وَقَوله أَو هدى زقاقا إِنَّمَا يَعْنِي بِهِ هِدَايَة الطَّرِيق وَهُوَ إرشاد السَّبِيل انْتهى
হাদীস নং: ১৩৩৭
অধ্যায়ঃ সদকা
পরিচ্ছেদঃ কর্জদানের প্রতি উৎসাহ দান ও এর ফযীলত
১৩৩৭. হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন মাসউদ (রা) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ (সা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন: প্রতিটি কর্জ সাদ্কা স্বরূপ ।
(হাদীসটি তাবারানী হাসান সনদে বর্ণনা করেছেন; বায়হাকীও এটি রিওয়ায়াত করেন।)
كتاب الصَّدقَات
التَّرْغِيب فِي الْقَرْض وَمَا جَاءَ فِي فَضله
1337 - وَعَن عبد الله بن مَسْعُود رَضِي الله عَنهُ أَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ كل قرض صَدَقَة

رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ بِإِسْنَاد حسن وَالْبَيْهَقِيّ
হাদীস নং: ১৩৩৮
অধ্যায়ঃ সদকা
পরিচ্ছেদঃ কর্জদানের প্রতি উৎসাহ দান ও এর ফযীলত
১৩৩৮. হযরত আবু উমামা (রা) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ (সা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: জনৈক ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করে এর দরজায় এ কথাটি লিখা দেখতে পেল: দানে দশগুণ ও করযদানে আঠার গুণ পুণ্য রয়েছে।
(হাদীসটি তাবারানী ও বায়হাকী উভয়েই উতবা ইব্‌ন হুমায়দ বর্ণনা করেছেন। ইব্‌ন মাজাহ এবং বায়হাকীও এটি খালিদ ইব্‌ন ইয়াযীদ ইব্‌ন আবূ মালিক সূত্রে হযরত আনাস (রা) থেকে রিওয়ায়াত করেছেন। আনাস বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন: মিরাজ রজনীতে আমি জান্নাতের দরজায় এ কথাটি লিখা দেখেছিঃ দানের পুণ্য দশ গুণ আর করযের পুণ্য আঠার গুণ।
(রাবী হিসেবে) উতবা ইব্‌ন হুমায়দ-এর অবস্থা আমার দৃষ্টিতে খালিদ ইব্‌ন ইয়াযীদের তুলনায় অনেক ভাল।)
كتاب الصَّدقَات
التَّرْغِيب فِي الْقَرْض وَمَا جَاءَ فِي فَضله
1338 - وَعَن أبي أُمَامَة رَضِي الله عَنهُ عَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ دخل رجل الْجنَّة فَرَأى مَكْتُوبًا على بَابهَا الصَّدَقَة بِعشر أَمْثَالهَا وَالْقَرْض بِثمَانِيَة عشر

رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ وَالْبَيْهَقِيّ كِلَاهُمَا من رِوَايَة عتبَة بن حميد

وَرَوَاهُ ابْن مَاجَه وَالْبَيْهَقِيّ أَيْضا كِلَاهُمَا عَن خَالِد بن يزِيد بن أبي مَالك عَن أنس قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم رَأَيْت لَيْلَة أسرِي بِي على بَاب الْجنَّة مَكْتُوبًا الصَّدَقَة بِعشر أَمْثَالهَا وَالْقَرْض بِثمَانِيَة عشر
الحَدِيث وَعتبَة بن حميد عِنْدِي أصلح حَالا من خَالِد
হাদীস নং: ১৩৩৯
অধ্যায়ঃ সদকা
পরিচ্ছেদঃ কর্জদানের প্রতি উৎসাহ দান ও এর ফযীলত
১৩৩৯. হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন: কোন মুসলমান অপর মুসলমানকে একবার কোন কিছু করয দান করলে তা দু'বার দান করার সমতুল্য হবে।
(হাদীসটি ইব্‌ন্ মাজাহ ও ইব্‌ন্ হিব্বান তাঁর 'সহীহ' গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। বায়হাকীও এটি মারফু ও মাওকূফ উভয় সূত্রে বর্ণনা করেন।)
كتاب الصَّدقَات
التَّرْغِيب فِي الْقَرْض وَمَا جَاءَ فِي فَضله
1339 - وَعَن عبد الله بن مَسْعُود رَضِي الله عَنهُ أَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ مَا من مُسلم يقْرض مُسلما قرضا مرّة إِلَّا كَانَ كصدقتها مرَّتَيْنِ

رَوَاهُ ابْن مَاجَه وَابْن حبَان فِي صَحِيحه وَالْبَيْهَقِيّ مَرْفُوعا وموقوفا
হাদীস নং: ১৩৪০
অধ্যায়ঃ সদকা
পরিচ্ছেদঃ কর্জদানের প্রতি উৎসাহ দান ও এর ফযীলত
১৩৪০. হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন: যে ব্যক্তি কোন সংকটাপন্ন মানুষের সংকট লাঘব করে দেবে, আল্লাহ্ দুনিয়া ও আখিরাতে তার সংকট লাঘব করে দেবেন।
(হাদীসটি ইব্‌ন হিব্বান তাঁর 'সহীহ' গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। মুসলিম, তিরমিযী, আবু দাউদ ও নাসাঈও এটি রিওয়ায়াত করেন। আল্লাহ্ চাইলে ইব্‌ন্ মাজাহর একটি হাদীসের বর্ণনায়ও এ অংশটি আসবে।)
كتاب الصَّدقَات
التَّرْغِيب فِي الْقَرْض وَمَا جَاءَ فِي فَضله
1340 - وَعَن أبي هُرَيْرَة رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم من يسر على مُعسر
يسر الله عَلَيْهِ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَة

رَوَاهُ ابْن حبَان فِي صَحِيحه وَرَوَاهُ مُسلم وَالتِّرْمِذِيّ وَأَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ وَابْن مَاجَه فِي حَدِيث يَأْتِي إِن شَاءَ الله تَعَالَى
হাদীস নং: ১৩৪১
অধ্যায়ঃ সদকা
পরিচ্ছেদঃ অসচ্ছল ব্যক্তির সাথে কঠোরতা না করা, তাকে অবকাশ দান ও দায়মুক্ত করে দেয়ার প্রতি উৎসাহ প্রদান প্রসঙ্গ
১৩৪১. হযরত আবূ কাতাদা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি একবার তাঁর এক ঋণ গ্রহীতাকে তার পাওনা আদায়ের জন্য তলব করলেন; কিন্তু সে আত্মগোপন করে রইল। অতঃপর তিনি তাকে পেয়ে গেলেন। সে বলল, আমি বড় সংকটে আছি। আবু কাতাদা বললেন, আল্লাহর নামে শপথ করে বলতে পার? সে বলল, আল্লাহর শপথ! তখন আবু কাতাদা বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সা) কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি পসন্দ করে যে, আল্লাহ তাকে কিয়ামত দিবসের বিপদ থেকে মুক্তি দিন, সে যেন অসচ্ছল ব্যক্তিকে (ঋণ পরিশোধের ব্যাপারে) অবকাশ দান করে অথবা তাকে দায়মুক্ত করে দেয়।
(হাদীসটি মুসলিম প্রমুখ ইমামগণ বর্ণনা করেছেন। তাবারানীও সহীহ্ সনদে এ হাদীসটি 'আল-আওসাতে' উল্লেখ করেছেন। তাবারানীর বর্ণনাটি এরূপ: যে ব্যক্তি পসন্দ করে যে, আল্লাহ্ তাকে কিয়ামত দিবসের সংকটসমূহ থেকে মুক্তি দিন ও তাঁর আরশের ছায়ায় স্থান দিন, সে যেন অসচ্ছল ব্যক্তিকে (ঋণ পরিশোধের ব্যাপারে) অবকাশ দান করে।)
كتاب الصَّدقَات
التَّرْغِيب فِي التَّيْسِير على الْمُعسر وإنظاره والوضع عَنهُ
1341 - عَن أبي قَتَادَة رَضِي الله عَنهُ أَنه طلب غريما لَهُ فتوارى عَنهُ ثمَّ وجده فَقَالَ إِنِّي مُعسر قَالَ آللَّهُ قَالَ آللَّهُ
قَالَ فَإِنِّي سَمِعت رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَقُول من سره أَن ينجيه الله من كرب يَوْم الْقِيَامَة فلينفس عَن مُعسر أَو يضع عَنهُ

رَوَاهُ مُسلم وَغَيره وَرَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ فِي الْأَوْسَط بِإِسْنَاد صَحِيح وَقَالَ فِيهِ من سره أَن ينجيه الله من كرب يَوْم الْقِيَامَة وَأَن يظله تَحت عَرْشه فَلْينْظر مُعسرا
হাদীস নং: ১৩৪২
অধ্যায়ঃ সদকা
পরিচ্ছেদঃ অসচ্ছল ব্যক্তির সাথে কঠোরতা না করা, তাকে অবকাশ দান ও দায়মুক্ত করে দেয়ার প্রতি উৎসাহ প্রদান প্রসঙ্গ
১৩৪২. হযরত হুযায়ফা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন: ফিরিশতাগণ তোমাদের পূর্ববর্তী জনৈক ব্যক্তির রূহ উঠিয়ে নিয়ে গেলেন এবং তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি কোন উত্তম কাজ করেছিলে হে? সে বলল জ্বী, না। তারা বললেন, তুমি স্মরণ করে দেখ। তখন সে বলল, আমি মানুষের সাথে লেনদেন করতাম। তখন আমার কর্মচারীদেরকে নির্দেশ দিতাম যে, তারা যেন অসচ্ছল ব্যক্তিকে (ঋণ পরিশোধে) অবকাশ দেয়। আর স্বচ্ছল ব্যক্তিদেরকেও ছাড় দেয়। রাসূলুল্লাহ বলেন, আল্লাহ্ ফিরিশতাদেরকে বললেন, তোমরাও তাকে ছাড় দাও।
(হাদীসটি বুখারী ও মুসলিম বর্ণিত, পাঠ মুসলিমের।)
كتاب الصَّدقَات
التَّرْغِيب فِي التَّيْسِير على الْمُعسر وإنظاره والوضع عَنهُ
1342 - وَعَن حُذَيْفَة رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم تلقت الْمَلَائِكَة روح رجل مِمَّن كَانَ قبلكُمْ فَقَالُوا عملت من الْخَيْر شَيْئا قَالَ لَا
قَالُوا تذكر
قَالَ كنت أداين النَّاس فآمر فتياني أَن ينْظرُوا الْمُعسر ويتجوزوا عَن الْمُوسر قَالَ قَالَ الله تجاوزوا عَنهُ

رَوَاهُ البُخَارِيّ وَمُسلم وَاللَّفْظ لَهُ
হাদীস নং: ১৩৪৩
অধ্যায়ঃ সদকা
পরিচ্ছেদঃ অসচ্ছল ব্যক্তির সাথে কঠোরতা না করা, তাকে অবকাশ দান ও দায়মুক্ত করে দেয়ার প্রতি উৎসাহ প্রদান প্রসঙ্গ
১৩৪৩. মুসলিমের অপর একটি বর্ণনাও ইব্‌ন মাজাহ শরীফে হযরত হুযায়ফা (রা) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ (সা) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, এক ব্যক্তি মৃত্যুমুখে পতিত হল এবং জান্নাতে প্রবেশ করল। তাকে জিজ্ঞেস করা হল, তুমি কি (নেক) আমল করতে হে? তখন সে নিজেই স্মরণ করল অথবা তাকে স্মরণ করিয়ে দেয়া হলো, তখন সে বলল, আমি মানুষের সাথে ক্রয়-বিক্রয় করতাম এবং অসচ্ছল ব্যক্তিকে অবকাশ দিতাম ও মুদ্রা অথবা অর্থ আদায়ের ব্যাপারে ছাড় দিতাম। তখন তাকে ক্ষমা করে দেয়া হল
كتاب الصَّدقَات
التَّرْغِيب فِي التَّيْسِير على الْمُعسر وإنظاره والوضع عَنهُ
1343 - وَفِي رِوَايَة لمُسلم وَابْن مَاجَه عَن حُذَيْفَة أَيْضا عَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم أَن رجلا مَاتَ فَدخل الْجنَّة فَقيل لَهُ مَا كنت تعْمل قَالَ فإمَّا ذكر وَإِمَّا ذكر فَقَالَ كنت أبايع النَّاس فَكنت أنظر الْمُعسر وأتجوز فِي السِّكَّة أَو فِي النَّقْد فغفر لَهُ
হাদীস নং: ১৩৪৪
অধ্যায়ঃ সদকা
পরিচ্ছেদঃ অসচ্ছল ব্যক্তির সাথে কঠোরতা না করা, তাকে অবকাশ দান ও দায়মুক্ত করে দেয়ার প্রতি উৎসাহ প্রদান প্রসঙ্গ
১৩৪৪. বুখারী ও মুসলিমের এক বর্ণনায় হযরত হুযায়ফা (রা) থেকেই বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সা) কে বলতে শুনেছি যে, তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের জনৈক ব্যক্তির কাছে (মৃত্যুর) ফিরিশতা তার রূহ কবয করার জন্য আসলেন এবং তাকে বললেন, তুমি কি কোন উত্তম কাজ করেছিলে হে? জবাবে সে বলল, আমি জানি না। তাকে বলা হল, তুমি একটু চিন্তা করে দেখ তো! সে বলল, আমি তেমন কিছুই জানি না, তবে দুনিয়াতে আমি মানুষের সাথে লেনদেন করতাম এবং সচ্ছল ব্যক্তিদেরকেও অবকাশ দিতাম আর অসচ্ছলদেরকে ক্ষমাই করে দিতাম। তখন আল্লাহ্ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করতে দিলেন। হাদীসটি শুনে আবু মাসউদ বলেন উঠলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সা) কে এ হাদীসটি বলতে শুনেছি।
كتاب الصَّدقَات
التَّرْغِيب فِي التَّيْسِير على الْمُعسر وإنظاره والوضع عَنهُ
1344 - وَفِي رِوَايَة للْبُخَارِيّ وَمُسلم عَنهُ أَيْضا قَالَ سَمِعت رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَقُول إِن رجلا مِمَّن كَانَ قبلكُمْ أَتَاهُ الْملك ليقْبض روحه فَقَالَ هَل عملت من خير قَالَ مَا أعلم
قيل لَهُ انْظُر قَالَ مَا أعلم شَيْئا غير أَنِّي كنت أبايع النَّاس فِي الدُّنْيَا فَأنْظر الْمُوسر
وأتجاوز عَن الْمُعسر فَأدْخلهُ الله الْجنَّة فَقَالَ أَبُو مَسْعُود وَأَنا سمعته يَقُول ذَلِك
হাদীস নং: ১৩৪৫
অধ্যায়ঃ সদকা
পরিচ্ছেদঃ অসচ্ছল ব্যক্তির সাথে কঠোরতা না করা, তাকে অবকাশ দান ও দায়মুক্ত করে দেয়ার প্রতি উৎসাহ প্রদান প্রসঙ্গ
১৩৪৫. হযরত হুযায়ফা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর দরবারে এমন এক ব্যক্তিকে উপস্থিত করা হল যাকে তিনি অনেক ধন-সম্পদ দান করেছিলেন। আল্লাহ্ তাকে বললেন, দুনিয়ায় তুমি কি করেছিলে হে? হুযায়ফা বলেন, মানুষ তো আল্লাহর নিকট কোন কিছু গোপন করতে পারবে না। সে বলল, হে আমার রব! আপনি আমাকে ধন-সম্পদ দান করেছিলেন। আমি মানুষের সাথে ক্রয়-বিক্রয় করতাম। আর মানুষকে ছাড় দিয়ে যাওয়া ছিল আমার মজ্জাগত অভ্যাস। তাই আমি সক্ষম ব্যক্তির সাথেও কোমল আচরণ করতাম আর অসচ্ছলকে অবকাশ দিতাম। আল্লাহ তা'আলা বললেন, আমি তো তোমার চেয়ে এ আচরণের অধিকর্তর যোগ্য। (হে ফিরিশতাগণ) তোমরা আমার বান্দাকে ছাড় দাও।
উকবা ইব্‌ন আমির ও আবু মাসউদ আনসারী হাদীসটি শুনে বললেন, আমরাও রাসূলুল্লাহ্ (সা) এর মুখ থেকে এরূপই শুনেছি।
(হাদীসটি মুসলিম হুযায়ফা থেকে এভাবে মওকুফ পদ্ধতিতে এবং উকবা ও আবূ মাসউদ থেকে মারফু' পদ্ধতিতে বর্ণনা করেছেন।
كتاب الصَّدقَات
التَّرْغِيب فِي التَّيْسِير على الْمُعسر وإنظاره والوضع عَنهُ
1345 - وَعنهُ رَضِي الله عَنهُ قَالَ أُتِي الله بِعَبْد من عباده آتَاهُ الله مَالا فَقَالَ لَهُ مَاذَا عملت فِي الدُّنْيَا قَالَ {وَلَا يكتمون الله حَدِيثا} النِّسَاء 24 قَالَ يَا رب آتيتني مَالا فَكنت أبايع النَّاس وَكَانَ من خلقي الْجَوَاز فَكنت أيسر على الْمُوسر وَأنْظر الْمُعسر فَقَالَ الله تَعَالَى أَنا أَحَق بذلك مِنْك تجاوزوا عَن عَبدِي

فَقَالَ عقبَة بن عَامر وَأَبُو مَسْعُود الْأنْصَارِيّ هَكَذَا سمعناه من فِي رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم رَوَاهُ مُسلم هَكَذَا مَوْقُوفا على حُذَيْفَة وَمَرْفُوعًا عَن عقبَة وَأبي مَسْعُود
হাদীস নং: ১৩৪৬
অধ্যায়ঃ সদকা
পরিচ্ছেদঃ অসচ্ছল ব্যক্তির সাথে কঠোরতা না করা, তাকে অবকাশ দান ও দায়মুক্ত করে দেয়ার প্রতি উৎসাহ প্রদান প্রসঙ্গ
১৩৪৬. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন: জনৈক ব্যক্তি মানুষের সাথে লেনদেন করত। সে তার কর্মচারীকে বলে রেখেছিল যে, যখন তোমার কোন অসচ্ছল ব্যক্তির সাথে পালা পড়বে, তখন তুমি তাকে ছাড় দেবে, হয়তো আল্লাহ্ তা'আলা আমাদেরকেও ছাড় দেবেন। তারপর সে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করল এবং তিনি তাকে ক্ষমা করে দিলেন।
(হাদীসটি বুখারী, মুসলিম ও নাসাঈ বর্ণনা করেছেন। নাসাঈর বর্ণনাটি এরূপ: রাসূলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন: জনৈক ব্যক্তি এমন ছিল যে, কোনদিন সে কোন নেক আমল করেনি। সে মানুষের সাথে লেন-দেন করত এবং তার প্রতিনিধিকে বলে দিয়েছিল যে, যা সহজে আদায় করা যায়, তা নিয়ে আসবে আর যা আদায় করা কষ্টকর হয়, তা ছেড়ে দেবে ও তাতে ছাড় দেবে। হয়তো এ ওসীলায় আল্লাহ্ আমাদেরকেও ছাড় দেবেন। তারপর সে যখন মৃত্যুমুখে পতিত হলো, তখন আল্লাহ্ তাকে জিজ্ঞেস করলেন, জীবনে কি কখনও কোন নেককাজ করেছ হে? সে বলল, 'জ্বী না'। তবে আমার একটি ছোকড়া ছিল আর আমি মানুষের সাথে লেনদেন করতাম। তাকে যখন পাওনা আদায়ের তাগাদায় পাঠাতাম, তখন বলে দিতাম যে, যা সহজে মিলে তা নিয়ে আসবে আর যা আদায় করা কষ্টকর হয়, তা ছেড়ে দেবে ও তাতে ছাড় দেবে। হয়তো এ ওসীলায় আল্লাহ্ আমাদেরকেও ছাড় দেবেন। আল্লাহ্ তা'আলা বললেন: যাও, আমিও তোমাকে মাফ করে দিলাম।
كتاب الصَّدقَات
التَّرْغِيب فِي التَّيْسِير على الْمُعسر وإنظاره والوضع عَنهُ
1346 - وَعَن أبي هُرَيْرَة رَضِي الله عَنهُ أَن رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ كَانَ رجل يداين النَّاس وَكَانَ يَقُول لفتاه إِذا أتيت مُعسرا فَتَجَاوز عَنهُ لَعَلَّ الله عز وَجل يتَجَاوَز عَنَّا فلقي الله فَتَجَاوز عَنهُ

رَوَاهُ البُخَارِيّ وَمُسلم وَالنَّسَائِيّ وَلَفظه إِن رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ إِن رجلا لم يعْمل خيرا قطّ وَكَانَ يداين النَّاس فَيَقُول لرَسُوله خُذ مَا تيَسّر واترك مَا عسر وَتجَاوز لَعَلَّ الله يتَجَاوَز عَنَّا فَلَمَّا هلك
قَالَ الله لَهُ هَل عملت خيرا قطّ قَالَ لَا إِلَّا أَنه كَانَ لي غُلَام وَكنت أداين النَّاس فَإِذا بعثته يتقاضى
قلت لَهُ خُذ مَا تيَسّر واترك مَا عسر وَتجَاوز لَعَلَّ الله يتَجَاوَز عَنَّا
قَالَ الله تَعَالَى قد تجاوزت عَنْك