নামাযের মাঝে মাতা পিতার ডাকে সাড়া দেয়ার বিধান
প্রশ্নঃ ২৭৯৩২. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি ফেনী জেলা লালপুর হাজির বাজার উওর চাঁদপুর হযরত আব্দুল কাদির জিলানী (র:) এর মাদ্রাসায় দাখিলে পড়ি । আমার প্রশ্ন হলো ধরেন আমি নামাজ পড়তেছি এ অবস্থায় আমার মা আমাকে ডাকতেছে তখন যদি আমি আমার মায়ের ডাকে সাড়া দেই তাহলে কী আমার নামাজ আদায় হবে
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
নামায পড়া অবস্থায় মাতা পিতার ডাকে সাড়া দেয়ার বিধান
১. যদি ফরয নামায পড়া অবস্থায় মুরুব্বীরা ডাকেন, তাহলে তাদের ডাকে সাড়া দিবে না। বরং নামায পূর্ণ করবে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া নামায ভঙ্গ করা জায়েয হবে না।
২. আর যদি অধিক প্রয়োজনে বা কঠিন বিপদে পড়ে ডাকেন, তাহলে তাদের ডাকে সাড়া দিতে হবে। নামায ভঙ্গ করে তাদের কাছে এগিয়ে যেতে হবে।
৩. যদি নফল নামাযে থাকা অবস্থায় তারা ডাকেন, অথচ তাদের জানা ছিল না যে, সম্বোধিত ব্যক্তি নামাযে আছে, তাহলে তাদের ডাকে সাড়া দিবে। চাই প্রয়োজনে আহবান করুক বা অপ্রয়োজনে।
في رد المحتار
"قلت: لکن ظاهر الفتح أنه نفي للجواز وبه صرح في الإمداد بقوله: أي: لایجوز قطعها بنداء أحد أبویه من غیر استغاثة وطلب إعانة لأن قطعها لایجوز إلا لضرورة، وقال الطحطاوي: هذا في الفرض، وإن کان في نافلة إن علم أحد أبویه أنه في الصلاة وناداه لا بأس أن لایجیبه، وإن لم یعلم یجیبه.
قوله: إلا في النفل أي فیجیبه وجوبًا و إن لم یستغث لأنه لیم عابد بني إسرائیل علی ترکه الإجابة وقال ﷺ ما معناه: لو کان فقیهًا لأجاب أمّه، وهذا إن لم یعلم أنه یصلي، فإن علم لاتجب الإجابة لکنّها أولی کما یستفاد من قوله: لا باس". (رد المحتار علی الدر المختار،ج:1،ص:654،ط:ایچ ایم سعید
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
খতীব, বাইতুল মামুর জামে মসজিদ, মিরাশপাড়া গাজীপুর
রেফারেন্স উত্তর :
প্রশ্নঃ ১০৫০৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, হুজুর আমার প্রশ্ন হলো যদি আমি বাসায় একাকি ফরজ নামাজ আদায় করছি এবং নামাজের ওয়াক্ত শেষ হতে পর্যাপ্ত সময় বাকি। তখন যদি পিতা, মাতা, স্বামী বা পরিবারের অন্য কেউ সুস্থ বা অসুস্থ অবস্থায় জরুরি ভিক্তিতে ডাক দেয় অথবা কেউ তখন কলিঙং বেল বাজায়। তখন আমি ছাড়া তাদের ডাকে সাড়া দেওয়ার মতো অথবা দরজা খোলার মতো আর কেউ বাসায় উপস্থিত না থাকে, তখন কি আমি নামাজ শেষ করে সাড়া দিব নাকি নামাজ ছেড়ে দিয়ে সাড়া দিব? সুন্নাত নামাজের ক্ষেত্রেও কি করব?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
বাবা-মা যদি কোনো প্রয়োজনে ডাক দেন, তাহলে নফল সালাত ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টি হাদিস দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে। কিন্তু ফরজ সালাত ছাড়া যাবে না। নফল সালাতের চেয়ে বাবা মায়ের প্রয়োজন অপরিহার্য। কোরআনুল কারিমে আল্লাহ বাবা মায়ের হকের বিষয়টি বারবার বলেছেন। আল্লাহুতাআলা নির্দেশ দিয়েছেন, পিতা-মাতাকে অনুগ্রহ করো। তাঁদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করো। নফল সালাত আপনি যেকোনো সময় আদায় করতে পারবেন। কিন্তু মায়ের একটা প্রয়োজন দেখা দিয়েছে, সেটা আপনাকে তখনই পূরণ করতে হবে। এ অবস্থায় আপনি নফল সালাত ভেঙে মায়ের প্রয়োজনটুকু পূরণ করে পরে নফল সালাত আদায় করতে পারেন।
তবে মায়ের তেমন কোনো প্রয়োজন দেখা দেয়নি, সন্তানের খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য যদি ডাক দেন, সে ক্ষেত্রে নফল সালাত ভঙ্গ করে সাড়া দিতে হবে না। আপনি নফল সালাত শেষ করে মায়ের প্রয়োজন মেটাতে পারেন।
বাবা মা ছাড়া অন্যদের প্রয়োজনে নফল নামাজ ছেড়ে যাওয়ারও প্রয়োজন নাই। তবে সেখানেও বিষয়টি নির্ভর করবে অবস্থা এবং পারিপার্শিকতার ওপর।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন