তালাকের পর ফিরিয়ে নেওয়া: স্ত্রী না জানলেও কি রুজু কার্যকর হয়?
প্রশ্নঃ ১৩১৭৬৮. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, এমন যদি হয় দুই তিন বছর আগে তালাক দেওয়ার পর ফিরিয়ে নিছিল কিনা স্ত্রীর মনে নাই কিন্তু স্বামী বলে তিনি ফিরিয়ে নিছেন এখন কোনটা ধরা হবে
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন! রুজু (তালাক দেয়ার পর পুনরায় দাম্পত্যে ফিরে আসা) বিষয়ে কুরআন ও হাদীসের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَبُعُولَتُهُنَّ أَحَقُّ بِرَدِّهِنَّ فِي ذَٰلِكَ إِنْ أَرَادُوا إِصْلَاحًا﴾
(সূরা আল-বাকারা: ২২৮)
“আর ইদ্দতের মধ্যে তাদের স্বামীরাই তাদেরকে ফিরিয়ে নেওয়ার অধিক হকদার, যদি তারা সংশোধনের ইচ্ছা রাখে।
হাদীসেও তালাকের পর রুজু করার বিষয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর পক্ষ থেকে উৎসাহ ও নির্দেশ পাওয়া যায়।
রুজু করার ক্ষেত্রে মুস্তাহাব (উত্তম) পদ্ধতি হলো,
স্বামী স্ত্রীকে রুজুর বিষয়টি জানাবে এবং দুইজন ন্যায়পরায়ণ সাক্ষী রাখবে, যাতে ভবিষ্যতে কোনো বিভ্রান্তি বা বিরোধ সৃষ্টি না হয়। তবে রুজু সংঘটিত হওয়ার জন্য স্ত্রীকে জানানো বা তার সম্মতি নেওয়া শর্ত নয়। জানানো এজন্য যে,
যাতে স্ত্রী নিজের ধারণা অনুযায়ী ইদ্দত পূর্ণ করে অন্য কোথাও বিয়ে করে না ফেলে। তবে যদি স্বামী স্ত্রীকে রুজুর বিষয়ে অবহিত না করে, তাহলে এ ক্ষেত্রে কয়েকটি অবস্থা হতে পারে
১. যদি স্বামী ইদ্দতের ভেতরেই রুজু করার দাবি করে, তাহলে তার বক্তব্য গ্রহণযোগ্য হবে, স্ত্রী রুজুর বিষয়টি স্বীকার করুক বা অস্বীকার করুক, উভয় অবস্থায়ই।
২. যদি ইদ্দত শেষ হয়ে যাওয়ার পর স্বামী রুজুর দাবি করে এবং স্ত্রী তা স্বীকার করে নেয়, তাহলে স্বামীর বক্তব্য গ্রহণযোগ্য হবে।
৩. যদি ইদ্দত অতিক্রান্ত হওয়ার পর স্বামী রুজুর দাবি করে, স্ত্রী তা অস্বীকার করে, কিন্তু স্বামী যদি রুজুর ওপর সাক্ষী পেশ করতে পারে, তাহলেও স্বামীর বক্তব্য গ্রহণযোগ্য হবে।
সুতরাং প্রশ্নোল্লিখিত অবস্থায়
যদি স্বামী প্রমাণসহ (বিশেষত সাক্ষীর মাধ্যমে) অথবা ইদ্দতের ভেতরে রুজুর দাবি করে, অথবা ইদ্দত শেষ হয়ে যাওয়ার পর স্বামী রুজুর দাবি করে এবং স্ত্রী তা স্বীকার করে নেয়, তাহলে স্ত্রীর স্মরণ না থাকা বা অজ্ঞতা সত্ত্বেও রুজু শরীয়ত অনুযায়ী সহীহ ও কার্যকর বলে গণ্য হবে।
তবে ভবিষ্যতের জটিলতা এড়ানোর জন্য রুজুর সময় স্ত্রীকে জানানো ও সাক্ষী রাখা সর্বোত্তম ও উত্তম পদ্ধতি।
শরঈ দলীল:
الدر المختار مع رد المحتار (3/ 401 )
''(وندب إعلامها بها) لئلا تنكح غيره بعد العدة، فإن نكحت فرق بينهما وإن دخل، شمني. (و ندب الإشهاد) بعدلين ولو بعد الرجعة بالفعل (و) ندب (عدم دخوله بلا إذنها عليها) لتتأهب وإن قصد رجعتها لكراهتها بالفعل، كما مر. (ادعاها بعد العدة فيها) بأن قال: كنت راجعتك في عدتك (فصدقته صح) بالمصادقة (وإلا لا) يصح إجماعاً (و) كذا (لو أقام بينة بعد العدة أنه قال في عدتها: قد راجعتها، أو) أنه (قال: قد جامعتها) وتقدم قبولها على نفس اللمس والتقبيل فليحفظ (كان رجعةً)؛ لأن الثابت بالبينة كالثابت بالمعاينة، وهذا من أعجب المسائل حيث لا يثبت إقراره بإقراره بل بالبينة (كما لو قال فيها: كنت راجعتك أمس) فإنها تصح (وإن كذبته) لملكه الإنشاء في الحال''.
كما في الهندية : وإن راجعها بالفعل مثل أن يطأها أو يقبلها بشهوة أو ينظر إلى فرجها بشهوة فإنه يصير مراجعا عندنا اھ(1 /468)
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মুফতী, ফাতাওয়া বিভাগ, মুসলিম বাংলা
লেখক ও গবেষক, হাদীস বিভাগ, মুসলিম বাংলা
খতীব, রৌশন আলী মুন্সীবাড়ী জামে মসজিদ, ফেনী
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন