তাওবার মৌলিক চারটি শর্ত
প্রশ্নঃ ১১০৫৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ধরেন একজন সুদ ঘুস খাইতেছে, সুদ ঘুষ দিয়ে বাড়ি গাড়ি, সম্পদ বৃদ্ধি করলো, তারপর শেষে সে বলে না আর সুদ ঘুষ খাবো না, আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইব, আল্লাহ তো বলেছেই যতই পাপ করুক না কেনো আল্লাহর কাছে তওবা করে ক্ষমা চাইলে ক্ষমা চেয়ে ঐ কাজ আর না করলে তাকে ক্ষমা করে দিবে, সে ক্ষমা চেয়ে সুদ ঘুষ খাওয়া বন্ধ করে দিলো, কিন্তু তার আগের সুদ ঘুষের টাকায় কেনা বাড়ি গাড়ি ব্যবহার করতে থাকলো, এই ক্ষেত্রে কি তার ক্ষমা কবুল হবে.?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
তাওবা কবুল হওয়ার চারটি শর্ত।
গুনাহ বা অন্যায় কাজ থেকে তাওবা করা আবশ্যক। ওলামায়ে কেরাম তাওবা করাকে ওয়াজিব বলেছেন। গুনাহ যদি আল্লাহ এবং বান্দার মধ্যকার বিষয় হয় এবং তাতে বান্দার হকের কোনো সম্পৃক্ততা না থাকে, তবে তাওবা কবুল হওয়ার জন্য তিনটি শর্ত পালন করা আবশ্যক।
প্রথম শর্ত : কৃত গোনাহের জন্যে আল্লাহর নিকট অনুতপ্ত হতে হবে।
দ্বিতীয় শর্ত : যেই গুনাহ থেকে তাওবাহ করছে সেই গুনাহ সম্পূর্ণরূপে ছেড়ে দিতে হবে।
তৃতীয় শর্ত : সেই গুনাহের পুণরাবৃত্তি না ঘটানোর ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হতে হবে। এই তিনটি শর্তের মধ্যে যদি একটি শর্তও লঙ্ঘিত হয় তাহলে তাওবা শুদ্ধ হবে না। সেই তাওবার মাধ্যমে গুনাহ মাফের আশাও করা যাবে না।
চতুর্থ শর্ত : গোনাহের কাজটি যদি বান্দার হক সংশ্লিষ্ট হয় তাহলে উপরিউক্ত তিন শর্তের সাথে সাথে হকদার ব্যক্তির হক আদায় করে দিতে হবে অথবা তার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে দাবি ছাড়িয়ে নিতে হবে। যেমন, অন্যায়ভাবে যদি অপরের ধনসম্পদ, মালালাম, জমিজমা বা অন্য যেকোনো বস্তু জোর-জবরদস্তিমূলক দখল করে নেয়, তবে তা ফেরত দিতে হবে। কারো প্রতি মিথ্যা অপবাদ দিলে আপবাদ আরোপকারীকে শরীয়ত নির্ধারিত হদ বা শাস্তি ভোগ করতে হবে। অথবা (অন্যায়ের শিকার) সংশ্লিষ্ট (মজলুম) ব্যক্তি থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। এমনকি কারো অনুপস্থিতিতে গীবত-শেকায়াত করলে সে ব্যাপারেও ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। এই চার শর্ত পালন না করলে গুনাহ থেকে ক্ষমা পাওয়া যাবে না। আল্লাহ তায়ালা আমাদের প্রকৃতপক্ষে তাওবা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন