আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

তাওয়াফের ফরয, ওয়াজিব, সুন্নত ও মুস্তাহাব সমূহ

প্রশ্নঃ ১০১২৩৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, তাওয়াফের ফরয, ওয়াজিব, সুন্নত ও মুস্তাহাব গুলো কিকি?

২৯ এপ্রিল, ২০২৫
ঢাকা ১২০৭

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


তাওয়াফ অবস্থায় যেকাজগুলো ফরয
১. তাওয়াফের অধিকাংশ চক্কর পুরো করা
২. বাইতুল্লাহর চতুর দিকে মসজিদের ভিতরে তাওয়াফ করা
৩. নিজেই তাওয়াফ করা। অসুস্থতার দরুন বাহনে হুইল চেয়ারে আরোহন করেও তাওয়াফ করা যায়।

তাওয়াফ অবস্থায় যেকাজগুলো ওয়াজিব
১. ছোট, বড় উভয় প্রকারের নাপাকি থেকে পবিত্র হওয়া (তথা অযু অবস্থায় থাকা)।
২. সতর ঢাকা।
৩. পায়ে হেঁটে তাওয়াফের সক্ষমতা থাকলে পায়ে হেঁটে তাওয়াফ করা।
৪. ডান দিক থেকে তাওয়াফ শুরু করা।
৫ হাতিমকে অন্তর্ভুক্ত করে তাওয়াফ করা। তথা হাতিমের বাইরে দিয়ে তাওয়াফ করা।
৬. হাজরে আসওয়াদ থেকে তাওয়াফ শুরু করা। তবে এতে মতানৈক্য রয়েছে। অধিকাংশের নিকট এটি সুন্নত।
৭. পুরো তাওয়াফ করা।
৮. তাওয়াফের পর দুই রাকাত নামায আদায় করা।

তাওয়াফ অবস্থায় যেকাজগুলো সুন্নত
১. হাজরে আসওয়াদকে চুম্বন করা।
২. ইযতিবা করা। অর্থাৎ ইহরামের চাদরের এক প্রান্তকে ডান বগলের নীচে দিয়ে বাম কাঁধের উপর রাখা।
৩. যে তাওয়াফের পর সায়ী আছে সে তাওয়াফের প্রথম তিন চক্করে রমল করা। অর্থাৎ দুই কাঁধ দুলিয়ে ছোট ছোট পদক্ষেপে একটু দ্রুত চলা। বাকি চক্করে রমল না করা,বরং স্বাভাবিকভাবে চলা।
৪. সায়ী এবং তাওয়াফের মাঝে ইস্তিলাম করা। এটা ঐ ব্যক্তির জন্য যে তাওয়াফের পর সায়ী করবে।
৫. হাজরে আসওয়াদের সামনে দাঁড়িয়ে তাকবীর পাঠের সময় এভাবে হাত উঠাবে যেমনি নামাযে তাকবীর তাহরীমার সময় উঠাতে হয়।
৬. হাজরে আসওয়াদ থেকে তাওয়াফ শুরু করা।
৭. তাওয়াফের শুরুতে হাজরে আসওয়াদের দিকে মুখ করা।
৮. একের পর এক চক্কর করা। তথা তাওয়াফের ৭ চক্করের মাঝে অহেতুক বিরতী না নেয়া।
৯. শরীর এবং কাপড় নাজাসাতে হাকীকি থেকে পবিত্র রাখা।
১০. হাজরে আসওয়াদকে চুমা দেওয়ার সময় এই দু‘আ পাঠ করা- اَللّٰهُمَّ إِيْمَانًا بِكَ، وَتَصْدِيقًا بِكِتَابِكَ، وَاتِّبَاعَ سُنَّةِ نَبِيِّكَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
১১. রুকনে ইয়ামানীতে গিয়ে এই দু‘আ পাঠ করবে- اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَافِيَةَ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ، رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً، وَّفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً، وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
১২. তাওয়াফের সময় বেশি পরিমাণে আল্লাহ তাআলার যিকির করা।
বি: দ্র: তাওয়াফের সময় যদি কোনো কথা বলার প্রয়োজন হয় অথবা অসৎ কাজে নিষেধ করতে হয়, তাহলে তা করা জায়েয আছে।
১৩. তাওয়াফের সময় যদি জামা‘আত দাঁড়িয়ে যায়, তাহলে জামা‘আতে শরীক হওয়া এবং বাকি তাওয়াফ পরে পূর্ণ করা।
১৪. সম্ভব হলে তাওয়াফের দুই রাকাত ওয়াজিব নামায মাকামে ইবরাহীমের পেছনে পড়া। ১৫. তাওয়াফের দু'রাকাত নামাযের মধ্যে সূরা কাফিরুন ও সূরা ইখলাস পাঠ করা।
১৬. তাওয়াফের দু'রাকাত নামাযের পর পেট ভরে যমযমের পানি পান করা।
১৭. তাওয়াফের শেষে মুলতাযামের সাথে শরীর (বিশেষত বুক) লাগিয়ে দু‘আ করা।

তাওয়াফ অবস্থায় যেকাজগুলো মুস্তাহাব
১. তাওয়াফ শুরু করা হজরে আসওয়াদের ডান দিক থেকে এমনভাবে, যেন তাওয়াফকারী তার পুরো শরীর হজরে আসওয়াদের সামনে দিয়ে অতিক্রম করে।
২. হজরে আসওয়াদকে চুম্বন করা।
৩. তাওয়াফের সময় (মাসনূন) দু‘আ পড়া।
৪. পুরুষদের জন্য, সম্ভব হলে কাবা শরীফের কাছাকাছি গিয়ে তাওয়াফ করা, তবে ভিড় না করা এবং অন্যদের কষ্ট না দেওয়া।
৫. নারীদের জন্য রাতের সময় তাওয়াফ করা।

হজরে আসওয়াদের ডান দিকের ব্যাখ্যা
হজরে আসওয়াদের ডান দিক বলতে এর পূর্বদিককে বোঝানো হয়েছে, যা কাবা শরীফের দরজার দিকে। পশ্চিম দিককে বোঝানো হয়নি। এটি একটি ফিকহি ব্যাখ্যা।

والله اعلم بالصواب

ইসহাক মাহমুদ মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া খতীব, নবোদয় সি ব্লক জামে মসজিদ, মোহাম্মদপুর ইমাম, বায়তুল ওয়াহহাব জামে মসজিদ, মোহাম্মদপুর

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন