মুসনাদে আহমদ- ইমাম আহমদ রহঃ (আল-ফাতহুর রব্বানী)

الفتح الرباني لترتيب مسند الإمام أحمد بن حنبل الشيباني

বিশ্ব-সৃষ্টি প্রসংগ অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ১০৯ টি

হাদীস নং: ৪১
বিশ্ব-সৃষ্টি প্রসংগ অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: বায়ু, বজ্র ও মেঘমালা প্রসংগ
(৪১) জাবির (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) কোন এক সফরে ছিলেন। (মদীনায় ফেরার পথে) হঠাৎ প্রচণ্ড বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে থাকে। তিনি বললেন, এই বাতাস একজন মুনাফিকের মৃত্যুর কারণে। রাবী বলেন, আমরা যখন মদীনায় প্রত্যাবর্তন করলাম, দেখা গেল বড় মুনাফিকদের একজনের মৃত্যু হয়েছে।
(মুসলিম)
كتاب خلق العالم
باب ما جاء فى السحاب والرعد والرياح
عن جابر (8) قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم فى سفر قال فهبت ريح شديدة فقال هذه لموت منافق (9) قال فلما قدمنا المدينة اذا هو قد مات منافق عظيم من عظماء المنافقين
হাদীস নং: ৪২
বিশ্ব-সৃষ্টি প্রসংগ অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: বায়ু, বজ্র ও মেঘমালা প্রসংগ
(৪২) আনাস ইবন মালিক (রা) থেকে বর্ণিত, যখন প্রচণ্ড বেগে বাতাস প্রবাহিত হতো, তখন তা (অর্থাৎ উদ্বেগ) রাসূলের (ﷺ) মুখমণ্ডলে প্রকাশ পেত।
(আহমদ ভিন্ন অন্য কেউ বর্ণনা করেননি। তবে এর সনদ নির্ভরযোগ্য।)
كتاب خلق العالم
باب ما جاء فى السحاب والرعد والرياح
عن أنس بن مالك (1) رضى الله عنه أن النبى صلى الله عليه وسلم كان إذا هبت الريح عرف ذلك في وجهه
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৪৩
বিশ্ব-সৃষ্টি প্রসংগ অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: মেঘ, বৃষ্টি, শিলা ও শীতকাল প্রসংগ
(৪৩) আয়েশা সিদ্দিকা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি সর্বদা লক্ষ্য করে দেখেছি যে, যখনই রাসূল (ﷺ) আকাশে মেঘ দেখতেন, তাঁর মুখমণ্ডলে উদ্বেগের ছাপ দেখতে পেতাম। অতঃপর যখন বৃষ্টি শুরু হতো, তখন তিনি শান্ত হতেন।
আয়েশা (রা) থেকে অন্য বর্ণনায় আছে, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) যখন মেঘ দেখতেন, তখন তাঁর মুখমণ্ডল পরিবর্তিত হয়ে যেত। তিনি ঘর থেকে বের হতেন আর প্রবেশ করতেন; সম্মুখে যেতেন আবার পশ্চাতে যেতেন। কিন্তু বৃষ্টি শুরু হলে খুশী হয়ে যেতেন। তাঁকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আল্লাহ্ তা'আলা পবিত্র কুরআনে যেরূপ বলেছেন, সেইরূপ বিপদ থেকে আমি নিরাপদবোধ করতে পারি না। আল্লাহ্ বলেন,
فَلَمَّا رَأَوْهُ عَارِضًا مُّسْتَقْبِلَ أَوْدِيَتِهِمْ قَالُوا هَٰذَا عَارِضٌ مُّمْطِرُنَا ۚ بَلْ هُوَ مَا اسْتَعْجَلْتُم بِهِ ۖ رِيحٌ فِيهَا عَذَابٌ أَلِيمٌ
[ الأحقاف: 24] .
"যখন তাদের উপত্যকার দিকে মেঘ আসতে দেখল তখন তারা বলতে লাগল, ওটা তো মেঘ, আমাদেরকে বৃষ্টি দেবে। হুদ বলল, এটাই তো তা, যা তোমরা ত্বরান্বিত করতে চেয়েছ। এতে আছে এক ঝড়-মর্মন্তুদ শাস্তি বহনকারী। (আহকাফ: ২৪)
كتاب خلق العالم
باب ما جاء فى الغيم والمطر والبرد وزمن الشتاء
عن عائشة (3) رضى الله عنها قالت ما رأيت رسول الله صلى الله عليه وسلم رأى غيما إلا رأيت فى وجهه الهيج (4) فاذا أمطرت سكن (وعنها من طريق ثان) (5) قالت كان رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا رأى مخيلة (6) تغير وجهه ودخل وخريج وأقبل وأدبر فاذا أمطرت سرى عنه فذكر ذلك له فقال ما أمنت أن يكون كما قال (فلما رأوه عارضا مستقبل أو ديتهم الى ريح فيها عذاب أليم)
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৪৪
বিশ্ব-সৃষ্টি প্রসংগ অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: মেঘ, বৃষ্টি, শিলা ও শীতকাল প্রসংগ
(৪৪) আয়েশা (রা) থেকে আরো বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যখন আকাশের দিগন্তসমূহের মধ্যে কোন দিগন্তে মেঘমালা দেখতে পেতেন, তখন তিনি তাঁর কাজ বন্ধ করে দিতেন, এমনকি সালাতরত অবস্থায় থাকলেও; এবং তিনি এই দোয়া পাঠ করতেন:
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا فِيْهِ.
"হে আল্লাহ্, আমি এর মধ্যকার অকল্যাণ থেকে তোমার আশ্রয় গ্রহণ করছি।"
যখন আল্লাহ্ মেঘ দূর করে দিতেন, তখন তিনি তাঁর প্রশংসা করতেন, আর বৃষ্টিপাত হলে বলতেন:
اللَّهُمَّ صَيِّبًا نَافِعًا
হে আল্লাহ্ বর্ষণ করুন কল্যাণময় বৃষ্টি।
(মুসলিম ও অন্যান্য)
كتاب خلق العالم
باب ما جاء فى الغيم والمطر والبرد وزمن الشتاء
وعنها أيضا (7) أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان إذا رأى ناشئا من أفق من أفاق السماء ترك عمله وأن كان فى صلاته ثم يقول اللهم انى أعوذ بك من شر ما فيه، فان كشف الله حمد الله، وان مطرت قال اللهم صيبا نافعا
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৪৫
বিশ্ব-সৃষ্টি প্রসংগ অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: মেঘ, বৃষ্টি, শিলা ও শীতকাল প্রসংগ
(৪৫) মু'আবিয়া আল-লাইছী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, মানুষ খরা ও দুর্ভিক্ষের শিকার হয়, তখন আল্লাহ্ তা'আলা দয়াপরবশ হয়ে তাদেরকে রিযক দান করেন। কিন্তু তারা মুশরিক হয়ে যায়। জিজ্ঞেস করা হলো, তা কীভাবে ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (ﷺ)! তিনি বলেন, তারা বলে, আমরা বৃষ্টি পেয়েছি অমুক নক্ষত্রের কারণে।
(এই হাদীসের সনদ উত্তম। হাদীসের শেষ বাক্যটি বুখারী ও মুসলিম কর্তৃক বর্ণিত।)
كتاب خلق العالم
باب ما جاء فى الغيم والمطر والبرد وزمن الشتاء
عن معاوية الليثى (8) قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم يكون الناس مجدبين (9) فينزل الله تبارك وتعالى عليهم رزقا من رزقه (10) فيصبحون بمشركين، فقيل له وكيف ذاك يا رسول الله؟ فقال يقولون مطرنا بنوء كذا
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৪৬
বিশ্ব-সৃষ্টি প্রসংগ অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: মেঘ, বৃষ্টি, শিলা ও শীতকাল প্রসংগ
(৪৬) আনাস ইবন মালিক (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলের (ﷺ) সময়ে আমরা বৃষ্টি লাভ করলাম। রাসূল (ﷺ) বৃষ্টিতে বের হলেন এবং তাঁর পরিধেয় কাপড় সরালেন। ফলে তার দেহে বৃষ্টি লাগল। জিজ্ঞেস করা হলো, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (ﷺ) এরূপ কেন করলেন? তিনি বললেন, এই বৃষ্টি এইমাত্র তার প্রভুর সান্নিধ্য থেকে এসেছে।
كتاب خلق العالم
باب ما جاء فى الغيم والمطر والبرد وزمن الشتاء
عن أنس بن مالك (12) قال مطرنا على عهد رسول الله صلى الله عليه وسلم قال فخرج فحسر ثوبه حتى أصابه المطر قال فقيل له يا رسول الله لم صنعت هذا قال لأنه حديث عهد ربه (قط)
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৪৭
বিশ্ব-সৃষ্টি প্রসংগ অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: মেঘ, বৃষ্টি, শিলা ও শীতকাল প্রসংগ
(৪৭) আনাস (রা) থেকে আরো বর্ণিত, একবার শিলাবৃষ্টি হলো তখন আবূ তালহা রোযাদার ছিলেন। কিন্তু তিনি সেগুলো খাওয়া শুরু করলেন। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, আপনি এইরূপ করলেন কেন? তিনি বললেন, এটা তো বরকত।
كتاب خلق العالم
باب ما جاء فى الغيم والمطر والبرد وزمن الشتاء
وعنه أيضا (13) قال مطرنا بردا وابو طلحة صائم فجعل يأكل منه قيل له أتأكل منه وأنت صائم؟ فقال انما هذا بركة
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৪৮
বিশ্ব-সৃষ্টি প্রসংগ অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: মেঘ, বৃষ্টি, শিলা ও শীতকাল প্রসংগ
(৪৮) আবূ সা'ঈদ (রা) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, শীতকাল হচ্ছে মু'মিনের বসন্তকাল।
(বায়হাকীর বর্ণনায় অতিরিক্ত এসেছে, শীতকালে দিন ছোট হয়, রাত দীর্ঘ হয়। সুতরাং দিনে রোযা এবং রাত্রে কিয়ামের সুবিধা হয় বিধায় তা সুদিনের জন্য বসন্তের রূপ পরিগ্রহ করে।)
كتاب خلق العالم
باب ما جاء فى الغيم والمطر والبرد وزمن الشتاء
عن أبى سعيد (1) عن رسول الله صلى الله عليه وسلم أنه قال الشتاء ربيع المؤمن
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৪৯
বিশ্ব-সৃষ্টি প্রসংগ অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: মেঘ, বৃষ্টি, শিলা ও শীতকাল প্রসংগ
(৪৯) আবূ হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছেন, বৃষ্টি না হওয়া কিংবা অনাবৃষ্টি দুর্ভিক্ষ নয়। দুর্ভিক্ষ হচ্ছে এই যে, আকাশ থেকে বৃষ্টিপাত হবে অথচ যমিনে শস্য উৎপন্ন হবে না।
(মুসলিম ও অন্যান্য।)
كتاب خلق العالم
باب ما جاء فى الغيم والمطر والبرد وزمن الشتاء
عن أبى هريرة (3) أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ان السنة (4) ليس بأن لا يكون فيها مطر، ولكن السنة أن تمطر السماء ولا تنبت الأرض
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫০
বিশ্ব-সৃষ্টি প্রসংগ অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: ফেরেশতা সৃষ্টি প্রসংগ
(৫০) আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ফেরেশতাগণকে সৃষ্টি করা হয়েছে 'নূর' থেকে, জিন সৃষ্টি করা হয়েছে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ থেকে আর আদমকে সৃষ্টি করা হযেছে (সেই উপাদান থেকে) যা তোমাদের কাছে বর্ণনা করা হয়েছে।
(মুসলিম।)
كتاب خلق العالم
باب ما جاء فى خلق الملائكة
عن عائشة (6) رضى الله عنها قالت قال رسول الله صلى الله عليه وسلم خلقت الملائكة من نور وخلقت الجان (7) من مارج من نار وخلق آدم عليه السلام مما وصف (8) لكم
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫১
বিশ্ব-সৃষ্টি প্রসংগ অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: ফেরেশতা সৃষ্টি প্রসংগ
(৫১) আবু যর (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, নিরন্তর আমি এমন কিছু দেখতে পাই, যা তোমরা দেখ না এবং এমন কিছু শুনতে পাই, যা তোমরা শুনতে পাও না। আকাশ (ফেরেশতাদের ভারে) কড়কড় করে উঠল এবং কড়কড় করাই তো তার উচিত। তাতে চার আঙ্গুল পরিমাণ স্থানও নেই যেখানে একজন ফেরেশতা সিজদারত নেই। আমি যা জানি, তা যদি তোমরা জানতে তাহলে তোমরা কম হাসতে, বেশী কাঁদতে, স্ত্রীদের সাথে বিছানায় কম আরাম উপভোগ করতে এবং তোমরা উঁচু টিলার উদ্দেশ্যে বের হয়ে আল্লাহর শরণাপন্ন হতে। (আবূ যর বলেন), আল্লাহর শপথ, আমার বড় ভাল লাগত, যদি আমি একটি বৃক্ষ হতাম, যাকে কেটে ফেলা হবে।
(এই হাদীসটি ১ম খণ্ডের কিতাবুত তাওহীদে উল্লেখিত হয়েছে।)
كتاب خلق العالم
باب ما جاء فى خلق الملائكة
عن أبى ذر (9) قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم إنى أرى مالا ترون وأسمع مالا تسمعون، أطت السماء وحق لها أن تنط مت فيها موضع أربع أصابع الا عليه ملك ساجد لو علمتم ما أعلم لضحكتم قليلا ولبكيتم كثيرا ولا تلذذتم بالنساء على الفرشات ولخرجتم على أو إلى الصعدات تجأرون الى الله، قال أبو ذر والله لوددت أنى شجرة تعضد
হাদীস নং: ৫২
বিশ্ব-সৃষ্টি প্রসংগ অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: ফেরেশতা সৃষ্টি প্রসংগ
(৫২) জাবির (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেন, আমার সম্মুখে আম্বিয়া কিরামকে (আ) উপস্থাপন করা হয়। মূসাকে (আ) দেখলাম শানুআ গোত্রের কোন এক পুরুষ সদৃশ। এরপর 'ঈসাকে (আ) দেখলাম তাঁকে 'উরওয়াহ ইবন মাসউদ-এর আদলের কাছাকাছি মনে হলো। ইব্রাহীমকে (আ) দেখলাম, তাঁকে আমার কাছে মনে হয়েছে তোমাদের এই সাথীর আদলের কাছাকাছি; অর্থাৎ ইব্রাহীম (আ) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)এর সাদৃশ্যের কাছাকাছি। জিব্রাইলকে (আ) দেখলাম, যিনি অনেকটা দিহইয়ার দৈহিক অবয়ব সদৃশ।
كتاب خلق العالم
باب ما جاء فى خلق الملائكة
عن جابر (10) عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال عرض على الأنبياء (11) فاذا موسى عليه السلام رجل ضرب (12) من الرجال كأنه من رجال سنوءة (13) فرأيت عيسى بن مريم عليه السلام فإذا أقرب من رأيت به شبها عروة بن مسعود، ورأيت ابراهيم عليه السلام فاذا أقرب من رأيت به شبها صاحبكم يعنى نفسه صلى الله عليه وسلم ورأيت جبريل عليه السلام فاذا أقرب من رأيت به شبها دحية
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৩
বিশ্ব-সৃষ্টি প্রসংগ অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: ফেরেশতা সৃষ্টি প্রসংগ
(৫৩) আবদুল্লাহ্ ইবন মাসউদ থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) জিব্রাইলকে (আ) এমন দেখেছেন যে, তাঁর ছয়শত পাখা রয়েছে। প্রতিটি শাখা দিগন্ত বিস্তৃত। তাঁর পাখা থেকে বিভিন্ন রংয়ের বস্তু ও মণি-মুক্তা পতিত হচ্ছে। এ সম্পর্কে আল্লাহই সর্বোত্তম জ্ঞাতা।
(ইবনে কাছীর, তাবারানী, বায়হাকী প্রমুখ)
كتاب خلق العالم
باب ما جاء فى خلق الملائكة
عن عبد الله (2) قال رأى رسول الله صلى الله عليه وسلم جبريل وله ستمائة جناح كل منها قد سد الأفق يسقط من جناحه من التهاويل (3) والدر والياقوت ما الله أعلم به
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৪
বিশ্ব-সৃষ্টি প্রসংগ অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: ফেরেশতা সৃষ্টি প্রসংগ
(৫৪) আবদুল্লাহ ইবন মাস'উদ (রা) থেকে আরো বর্ণিত, মুহাম্মদ (ﷺ) জিব্রাইলকে (আ) মাত্র দুইবার তাঁর নিজস্ব আকৃতিতে দেখেছেন। একবার রাসূল (ﷺ) নিজে তাঁকে তাঁর আসলরূপে (আকৃতিতে) দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, তখন তিনি (জিব্রাইল) তাঁর আকৃতি প্রকাশ করে প্রদর্শন করেন, এতে (সম্মুখ) দিগন্ত ঢেকে যায়। আর দ্বিতীয় বার (দেখেন), যখন তিনি তাঁর সাথে ঊর্ধ্বারোহণ করেন; এ সম্পর্কে আল্লাহর বাণী,
وَهُوَ بِالْأُفُقِ الْأَعْلَى ثُمَّ دَنَا فَتَدَلَّى فَكَانَ قَابَ قَوْسَيْنِ أَوْ أَدْنَى فَأَوْحَى إِلَى عَبْدِهِ مَا أَوْحَى.
তখন তিনি ঊর্ধ্ব দিগন্তে, অতঃপর নিকটবর্তী হলেন এবং অতি নিকটবর্তী হলেন, ফলে তাদের মধ্যে দুই ধনুকের ব্যবধান ছিল অথবা আরো কম। তখন আল্লাহ্ তাঁর বান্দার প্রতি যা প্রত্যাদেশ করবার, তা প্রত্যাদেশ করেন।"
অতপর যখন জিবরাঈল (আ) তাঁর প্রভূর কাছাকাছি গেলেন, তার পূর্বরূপে ফিরে গেলেন এবং সিজদায় মগ্ন হলেন। যেমন আল্লাহ্ তা'আলার বাণী,
وَلَقَدۡ رَاٰہُ نَزۡلَۃً اُخۡرٰی. عِنۡدَ سِدۡرَۃِ الۡمُنۡتَہٰی.عِنۡدَہَا جَنَّۃُ الۡمَاۡوٰی. اِذۡ یَغۡشَی السِّدۡرَۃَ مَا یَغۡشٰی. مَا زَاغَ الۡبَصَرُ وَمَا طَغٰی. لَقَدۡ رَاٰی مِنۡ اٰیٰتِ رَبِّہِ الۡکُبۡرٰی
বস্তুত সে তাকে (ফেরেশতাকে) আরও একবার দেখেছে। সিদরাতুল মুনতাহা (সীমান্তবর্তী কুলগাছ)-এর কাছে। তারই কাছে অবস্থিত জান্নাতুল মাওয়া। তখন সেই কুল গাছটিকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল সেই জিনিস যা তাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল। (রাসূলের) চোখ বিভ্রান্ত হয়নি এবং সীমালংঘনও করেনি। বাস্তবিকপক্ষে, সে তার প্রতিপালকের বড়-বড় নিদর্শনের মধ্য হতে বহু কিছু দেখেছে।
ইবনে মাসউদ বলেন: (বড়-বড় নিদর্শন) অর্থাৎ জিবরীল (আ)।
كتاب خلق العالم
باب ما جاء فى خلق الملائكة
وعنه أيضا (4) قال أن محمدا صلى الله عليه وسلم لم ير جبريل فى صورته إلا مرتين: أما مرة فإنه سأله أن ريه نفسه فى صورته فأراه صورته فسد الأفق (وأما الأخرى) فانه صعد معه حين صعد به وموله (وهو بالافق الأعلى ثم دنا فتدلى فكان تاب قوسين أو دنى فاوحى الى عبده ما أوحى) قال فلما أحس جبريل ربه عاد فى صورته وسجد، فقوله (ولقد رآه نزلة أخرى عند سدره المنتهى عندها جنة المأوى اذ يغشى السدرة ما يغشى ما زاغ البصر وما طغى لقد رأى من آيات ربه الكبرى) قال خلق جبريل عليه السلام
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫
বিশ্ব-সৃষ্টি প্রসংগ অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: ফেরেশতা সৃষ্টি প্রসংগ
(৫৫) ইবন 'আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কয়েকজন ইয়াহূদী রাসূলের (ﷺ)-এর কাছে আগমন করে বললো, প্রত্যেক নবীর কাছে (বিশেষ) একজন ফেরেশতা কল্যাণ নিয়ে আসতো, সুতরাং আপনি আপনার সেই সাথীর (ফেরেশতা) কথা বলুন। তিনি বললেন, জিব্রাইল (আ)। তারা বললো, সেই জিব্রাইল, যে যুদ্ধ-বিগ্রহ ও শান্তি নিয়ে আসে, সে আমাদের শত্রু? যদি আপনি মিকাইল-এর কথা বলতেন, যিনি রহমত, তরুলতা ও খাদ্য নিয়ে আসেন, তাহলে ভাল হতো। এই প্রেক্ষিতে আল্লাহ্ তা'আলা অবতীর্ণ করেন,
مَنۡ کَانَ عَدُوًّا لِّلّٰہِ وَمَلٰٓئِکَتِہٖ وَرُسُلِہٖ وَجِبۡرِیۡلَ وَمِیۡکٰىلَ فَاِنَّ اللّٰہَ عَدُوٌّ لِّلۡکٰفِرِیۡنَ
যদি কোনও ব্যক্তি আল্লাহর, তাঁর ফিরিশতাদের, তাঁর রাসূলগণের এবং জিবরাঈল ও মিকাঈলের শত্রু হয়, তবে (সে শুনে রাখুক) আল্লাহ কাফিরদের শত্রু।
—আল বাকারা - ৯৮
كتاب خلق العالم
باب ما جاء فى خلق الملائكة
عن ابن عباس (5) قال جاءت يهود إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم فقالوا انه ليس من نبى الا له ملك يأتيه بالخير فأخبرنا من صاحبك؟ قال جبريل عليه السلام، قالوا جبريل ذاك الذى ينزل بالحرب والقتال والعذاب عدونا لو قلت ميكائيل الذى ينزل بالرحمة والنبات والقطر لكان، فأنزل الله عز وجل (من كان عدوا لجبريل) الى آخر الآية
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৬
বিশ্ব-সৃষ্টি প্রসংগ অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: ফেরেশতা সৃষ্টি প্রসংগ
(৫৬) আবূ সা'ঈদ আল খুদরী (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ইস্রাফীলের (আ) উল্লেখ করে বলেন, তাঁর ডানে রয়েছেন জিব্রাইল ও তার বামে আছেন মীকাইল (আ)।
(আবু দাউদ)
كتاب خلق العالم
باب ما جاء فى خلق الملائكة
عن أبى سعيد الخدرى (6) قال ذكر رسول الله صلى الله عليه وسلم صاحب الصور (7) فقال عن يمينه جبريل وعن يساره ميكائيل عليهم السلام
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৭
বিশ্ব-সৃষ্টি প্রসংগ অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: ফেরেশতা সৃষ্টি প্রসংগ
(৫৭) আনাস ইবন মালিক (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) জিব্রাইলকে (আ) জিজ্ঞেস করেন, মীকাইলকে (আ) কখনও হাসতে দেখি না, এর কারণ কি? তিনি উত্তরে বলেন, জাহান্নাম সৃষ্টি করার পর থেকে মীকাঈল আর হাসেননি।
(আহমদ, সনদ উত্তম।)
كتاب خلق العالم
باب ما جاء فى خلق الملائكة
عن أنس بن مالك عن رسول الله صلى الله عليه وسلم أنه قال لجبريل عليه السلام مالى لم أر ميكائيل ضاحكا قط؟ قال ما ضحك ميكائيل منذ خلقت النار
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৮
বিশ্ব-সৃষ্টি প্রসংগ অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: ফেরেশতা সৃষ্টি প্রসংগ
(৫৮) উম্মু সালামা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাকে আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বললেন, বসার স্থান ঠিক-ঠাক কর। কারণ এমন এক ফিরিশিতা যমিনে আগমন করবেন, যিনি কখনও যমিনে আসেননি।
(আহমদ। এই হাদীসের সনদে একজন রাবী এমন আছেন, যাঁর নাম উল্লেখ নেই।)
كتاب خلق العالم
باب ما جاء فى خلق الملائكة
عن أم سلمة (1) رضى الله عنها قالت قال لى رسول الله صلى الله عليه وسلم أصلحى لنا المجلس فانه ينزل ملك الى الارض لم ينزل اليها قط
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৯
বিশ্ব-সৃষ্টি প্রসংগ অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: ফেরেশতা সৃষ্টি প্রসংগ
(৫৯) আবুল আলীয়াহ বলেন, আমাকে ইবন 'আব্বাস (রা) জানিয়েছেন রাসূল (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহ্ তা'আলা বলেন, কোন বান্দার এরূপ বলা সমীচীন নয় যে, আমি ইউনুস ইব্‌ন্ মাত্তা থেকে উত্তম। এভাবে তিনি তাঁর পিতৃ-পরিচয় উল্লেখ করেন। তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, তাঁকে রাতে পরিভ্রমণ করানো হয়। তিনি মুসা (আ) ও আদমকে (আ) দেখেছেন। তাঁরা ছিলেন শানুআহ গোত্রের পুরুষদের ন্যায় উচ্চতাসম্পন্ন। (তিনি আরো বলেন) তিনি ঈসাকেও (আ) দেখেছেন-সুঠাম স্বাস্থ্যের অধিকারী, সাদা ও লাল ত্বকবিশিষ্ট সুপুরুষ। (তিনি আরো উল্লেখ করেন) তিনি দাজ্জালকে দেখেছেন এবং দোযখের দারোগা ফেরেশতা মালিককেও দেখেছেন।
(মুসলিম ও অন্যান্য।)
كتاب خلق العالم
باب ما جاء فى خلق الملائكة
عن أبى العالية (2) قال حدثنى ابن عم نبيكم (3) صلى الله عليه وسلم قال الله عز وجل ما ينبغى لعبد أن يقول أنا خير من يونس بن متى ونسبه الى أبيه، قال وذكر أنه أسرى به وأنه رأى موسى عليه السلام آدم طوالا كأنه من رجا شنوءة (4) وذكر أنه رأى عيسى مربوعا (5) الى الحمرة والبياض جعدا (6) وذكر أنه رأى الدجال ومالكا خازن النار
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৬০
বিশ্ব-সৃষ্টি প্রসংগ অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: ফেরেশতা সৃষ্টি প্রসংগ
(৬০) বারা' ইবন 'আযিব (রা) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছেন, যখন মুমিন বান্দা তার দুনিয়ার জীবন পরিসমাপ্ত করে এবং আখিরাতের যিন্দেগীর সন্নিকটে উপস্থিত হয়, তখন তাঁর কাছে আকাশ থেকে কিছু ফেরেশতা অবতীর্ণ হয়, যাঁদের মুখমণ্ডল শুভ্র, সূর্যের ন্যায় উজ্জ্বল, তাঁদের সাথে নিয়ে আসেন জান্নাত থেকে একটি কাফন ও সুগন্ধি। তাঁরা তার দৃষ্টির সামনে বসে পড়েন। এরপর আসেন মালাকুল মউত (আ)। তিনি বসেন বান্দার মাথার নিকট এবং বলেন, হে পবিত্র আত্মা, তুমি বের হয়ে আস আল্লাহর সন্তুষ্টি ও মাগফিরাতের দিকে। তখন আত্মা বের হয়ে আসে এবং পানির ফোঁটার ন্যায় প্রবাহিত হতে থাকে। তখন তিনি তা তাঁর হাতে নিয়ে নেন। এই সময় মুহূর্তের মধ্যে ফেরেশতাগণ তাঁর হাত থেকে নিয়ে নেন এবং সেই জান্নাতী কাফনে ও সুগন্ধিতে রেখে দেন। ফলে পৃথিবীর সর্বোত্তম মিশকের সুগন্ধির ন্যায় সুগন্ধি বের হতে থাকে। এরপর তাঁরা সেই আত্মাকে নিয়ে ঊর্ধ্বাকাশে উঠে যান। সেখানে আরোহনকালে যেই ফেরেশতার সাথেই তাঁদের দেখা হয়, সে জিজ্ঞেস করে, এই পবিত্র আত্মা কার? তাঁরা উত্তর দেন ইনি হচ্ছেন অমুকের পুত্র অমুক, দুনিয়াতে যে সুন্দর নামে তাঁকে ডাকা হতো (সেই নাম উল্লেখ করেন)। এইভাবে তাঁরা দুনিয়ার আকাশের প্রান্তসীমায় পৌছে দরজা খোলার আবেদন জানালে দরজা খুলে দেওয়া হয়। এবং সেই আকাশের গণ্যমান্য ফেরেশতাগণ তাঁদের পেছনে সম্মানার্থে পরবর্তী আকাশ পর্যন্ত পৌছিয়ে দেন। এইভাবে তাঁরা সপ্তম আকাশ পর্যন্ত পৌছে যান। তখন আল্লাহ্ রাব্বুল 'আলামীন বলেন, আমার বান্দার কিতাব 'ইল্লীয়্যীন'-এ লিপিবদ্ধ কর এবং তাকে যমিনে ফিরিয়ে নিয়ে যাও। কারণ, আমি যমিন থেকে তাদের সৃষ্টি করেছি, সেখানেই তাদের ফিরিয়ে নেব এবং সেখান থেকেই তাদেরকে পুনর্বার বের করে আনবো। তখন তাঁর আত্মাকে (রূহ) তার শরীরে ফিরিয়ে দেওয়া হয় এবং তাঁর কাছে দু'জন ফেরেশতা আগমন করে এবং তাঁকে বসিয়ে জিজ্ঞেস করেন তোমার রব কে? তিনি বলেন, রাব্বি আল্লাহ্ (আমার রব আল্লাহ্)। তাঁরা জিজ্ঞেস করেন তোমার দীন কী? তিনি বলেন, আমার দীন ইসলাম.... আল-হাদীস।
(এই হাদীসের বিস্তারিত বিবরণ ও উদ্ধৃতি সপ্তম খণ্ডে কিতাবুল জানায়েয-এ দেখুন।)
كتاب خلق العالم
باب ما جاء فى خلق الملائكة
عن البراء بن عازب (7) أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال إن العبد اذا كان فى انقطاع من الدنيا وإقبال من الآخرة نزل اليه ملائكة من السماء بيض الوجوه وكان وجوههم الشمس، معهم كفن من اكفان الجنة وحنوط من حنوط الجنة حتى يجلسوا منه مد البصر، ثم يجئ ملك الموت عليه السلام حتى يجلس عند رأسه فيقول أيتها النفس الطيبة اخرجى الى مغفرة من الله ورضوان، قال فتخرج تسيل كما الفطرة من فى السقاء فيأخذها فاذا أخذها لم يدعوها فى يده طرفة عين حتى يأخذوها فيجعلوها فى الكفن وفى ذلك الحنوط ويخرج منها كأطيب نفخة مسك وجدت على وجه الأرض، قال فيصعدون بها فلا يمرون يعنى بها على ملأ من الملائكة إلا قالوا ما هذا الروح الطيب؟ فيقولون فلان بن فلن بأحسن أسمائه التى كانوا يسمونه بها فى الدنيا حتى ينتهوا بها الى السماء الدنيا فيستفتحون له فيفتح لهم، فيشيعه من كل سماء مقربوها الى السماء التى تليها حتى ينتهى بها الى السماء السابعة، فيقول الله عز وجل اكتبوا كتاب عبدى فى عليين وأعيدوه الى الأرض فأنى منها خلقتهم وفيها أعيدهم ومنها أخرجهم تارة أخرى، قال فتعاد روحه فى جسده فيأتيه ملكان فيجلسانه فيقولان له من ربك؟ فيقول ربى الله، فيقولان ما دينك؟ فيقول دينى الاسلام، الحديث
tahqiq

তাহকীক: