রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
رياض الصالحين من كلام سيد المرسلين
ভূমিকা অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৬৭৯ টি
হাদীস নং: ৩৬১
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ নেককার লোকদের সঙ্গে সাক্ষাত করা, তাদের মজলিসে বসা, তাদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাদেরকে ভালোবাসা, তাদের সাক্ষাত প্রার্থনা করা, তাদের কাছে দু'আ চাওয়া এবং মর্যাদাপূর্ণ স্থানসমূহের যিয়ারত করা।
মুসলিম ভাইয়ের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাত করতে যাওয়ার ফযীলত
হাদীছ নং : ৩৬১
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি অন্য এক পল্লিতে তার (মুসলিম) ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাত করতে গেল। আল্লাহ তাআলা তার যাত্রাপথে এক ফিরিশতা নিযুক্ত করলেন। লোকটি যখন সেই ফিরিশতার কাছে পৌঁছল, তখন ফিরিশতা তাকে জিজ্ঞেস করল, কোথায় যেতে চাচ্ছেন? সে বলল, আমি এই পল্লিতে আমার ভাইয়ের কাছে যেতে চাচ্ছি। ফিরিশতা বলল, তার দায়িত্বে কি আপনার কোনও সম্পদ আছে, যার দেখাশোনা করার উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন? সে বলল, না। তবে আমি আল্লাহর জন্য তাকে ভালোবাসি। ফিরিশতা বলল, আমি আপনার কাছে এই মর্মে আল্লাহর বার্তাবাহক যে, আপনি যেমন তাঁর জন্য এই ব্যক্তিকে ভালোবেসেছেন, তেমনি আল্লাহ তা'আলাও আপনাকে ভালোবাসেন-মুসলিম।
সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৫৬৭; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৯২৯১; আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদীছ নং ৩৫০; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৫৭২; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৫৯১; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩৪৬৫
হাদীছ নং : ৩৬১
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি অন্য এক পল্লিতে তার (মুসলিম) ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাত করতে গেল। আল্লাহ তাআলা তার যাত্রাপথে এক ফিরিশতা নিযুক্ত করলেন। লোকটি যখন সেই ফিরিশতার কাছে পৌঁছল, তখন ফিরিশতা তাকে জিজ্ঞেস করল, কোথায় যেতে চাচ্ছেন? সে বলল, আমি এই পল্লিতে আমার ভাইয়ের কাছে যেতে চাচ্ছি। ফিরিশতা বলল, তার দায়িত্বে কি আপনার কোনও সম্পদ আছে, যার দেখাশোনা করার উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন? সে বলল, না। তবে আমি আল্লাহর জন্য তাকে ভালোবাসি। ফিরিশতা বলল, আমি আপনার কাছে এই মর্মে আল্লাহর বার্তাবাহক যে, আপনি যেমন তাঁর জন্য এই ব্যক্তিকে ভালোবেসেছেন, তেমনি আল্লাহ তা'আলাও আপনাকে ভালোবাসেন-মুসলিম।
সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৫৬৭; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৯২৯১; আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদীছ নং ৩৫০; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৫৭২; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৫৯১; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩৪৬৫
مقدمة الامام النووي
45 - باب زيارة أهل الخير ومجالستهم وصحبتهم ومحبتهم وطلب زيارتهم والدعاء منهم وزيارة المواضع الفاضلة
361 - وعن أَبي هريرة - رضي الله عنه - عن النَّبيِّ - صلى الله عليه وسلم: «أَنَّ رَجُلًا زَارَ أَخًا لَهُ في قَريَة أُخْرَى، فَأَرْصَدَ الله تَعَالَى عَلَى مَدْرَجَتِهِ مَلَكًا، فَلَمَّا أتَى عَلَيهِ، قَالَ: أيْنَ تُريدُ؟ قَالَ: أُريدُ أخًا لي في هذِهِ القَريَةِ. قَالَ: هَلْ لَكَ عَلَيهِ مِنْ نِعْمَةٍ تَرُبُّهَا عَلَيهِ؟ قَالَ: لا، غَيْرَ أنِّي أحْبَبْتُهُ في الله تَعَالَى، قَالَ: فإنِّي رَسُول الله إلَيْكَ بِأَنَّ اللهَ قَدْ أَحَبَّكَ كَمَا أحْبَبْتَهُ فِيهِ». رواه مسلم. (1)
يقال: «أرْصَدَهُ» لِكَذَا: إِذَا وَكَّلَهُ بِحِفْظِهِ، وَ «المَدْرَجَةُ» بِفْتْحِ الميمِ والرَّاءِ: الطَّرِيقُ، ومعنى «تَرُبُّهَا»: تَقُومُ بِهَا، وَتَسْعَى في صَلاحِهَا.
يقال: «أرْصَدَهُ» لِكَذَا: إِذَا وَكَّلَهُ بِحِفْظِهِ، وَ «المَدْرَجَةُ» بِفْتْحِ الميمِ والرَّاءِ: الطَّرِيقُ، ومعنى «تَرُبُّهَا»: تَقُومُ بِهَا، وَتَسْعَى في صَلاحِهَا.
হাদীস নং: ৩৬২
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ নেককার লোকদের সঙ্গে সাক্ষাত করা, তাদের মজলিসে বসা, তাদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাদেরকে ভালোবাসা, তাদের সাক্ষাত প্রার্থনা করা, তাদের কাছে দু'আ চাওয়া এবং মর্যাদাপূর্ণ স্থানসমূহের যিয়ারত করা।
রোগী দেখতে যাওয়া ও মুসলিম ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাত করতে যাওয়ার বিনিময়ে জান্নাতের ঠিকানা
হাদীছ নং : ৩৬২
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোনও রোগী দেখতে যায় বা তার ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাত করতে যায়, এক ঘোষক তাকে ডেকে বলে, তুমি আনন্দিত হও, তোমার চলা কল্যাণকর হোক এবং তুমি জান্নাতে ঠিকানা লাভ কর– তিরমিযী।
জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২০০৮; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৮৫৩৬; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীছ নং ১৪৪৩; আল্-আদাবুল মুফরাদ, হাদীছ নং ৩৪৫; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ২৯১৬১; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৬১০; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩৪৭২
হাদীছ নং : ৩৬২
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোনও রোগী দেখতে যায় বা তার ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাত করতে যায়, এক ঘোষক তাকে ডেকে বলে, তুমি আনন্দিত হও, তোমার চলা কল্যাণকর হোক এবং তুমি জান্নাতে ঠিকানা লাভ কর– তিরমিযী।
জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২০০৮; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৮৫৩৬; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীছ নং ১৪৪৩; আল্-আদাবুল মুফরাদ, হাদীছ নং ৩৪৫; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ২৯১৬১; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৬১০; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩৪৭২
مقدمة الامام النووي
45 - باب زيارة أهل الخير ومجالستهم وصحبتهم ومحبتهم وطلب زيارتهم والدعاء منهم وزيارة المواضع الفاضلة
362 - وعنه، قَالَ: قَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «مَنْ عَادَ مَرِيضًا أَوْ زَارَ أَخًا لَهُ في الله، نَادَاهُ مُنَادٍ: بِأَنْ طِبْتَ، وَطَابَ مَمْشَاكَ، وَتَبَوَّأْتَ مِنَ الجَنَّةِ مَنْزِلًا». رواه الترمذي، (1) وَقالَ: «حديث حسن»، وفي بعض النسخ: «غريب».
হাদীস নং: ৩৬৩
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ নেককার লোকদের সঙ্গে সাক্ষাত করা, তাদের মজলিসে বসা, তাদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাদেরকে ভালোবাসা, তাদের সাক্ষাত প্রার্থনা করা, তাদের কাছে দু'আ চাওয়া এবং মর্যাদাপূর্ণ স্থানসমূহের যিয়ারত করা।
ভালো সঙ্গী ও মন্দ সঙ্গীর দৃষ্টান্ত
হাদীছ নং : ৩৬৩
হযরত আবূ মূসা আশআরী রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, উত্তম সঙ্গী ও মন্দ সঙ্গীর দৃষ্টান্ত হলো মিশক ব্যবসায়ী ও হাপর চালনাকারী (কামার) এর মত। মিশক ব্যবসায়ী হয় তোমাকে এমনি কিছুটা দেবে অথবা তুমি তার কাছ থেকে তা কিনবে কিংবা তুমি তার কাছ থেকে সুঘ্রাণ পাবে। আর হাপর চালনাকারী হয় তোমার কাপড় পুড়ে ফেলবে অথবা তুমি তার কাছ থেকে দুর্গন্ধ পাবে –বুখারী ও মুসলিম।
সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৫৫৩৪; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৬২৮; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ৪৮২৯; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ১৯৬২৪; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীছ নং ৩৪৮১৯; মুসনাদে আবূ ইয়ালা, হাদীছ নং ৭২৭০; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৫৬১; বায়হাকী, আস্সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১১১২৬
হাদীছ নং : ৩৬৩
হযরত আবূ মূসা আশআরী রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, উত্তম সঙ্গী ও মন্দ সঙ্গীর দৃষ্টান্ত হলো মিশক ব্যবসায়ী ও হাপর চালনাকারী (কামার) এর মত। মিশক ব্যবসায়ী হয় তোমাকে এমনি কিছুটা দেবে অথবা তুমি তার কাছ থেকে তা কিনবে কিংবা তুমি তার কাছ থেকে সুঘ্রাণ পাবে। আর হাপর চালনাকারী হয় তোমার কাপড় পুড়ে ফেলবে অথবা তুমি তার কাছ থেকে দুর্গন্ধ পাবে –বুখারী ও মুসলিম।
সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৫৫৩৪; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৬২৮; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ৪৮২৯; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ১৯৬২৪; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীছ নং ৩৪৮১৯; মুসনাদে আবূ ইয়ালা, হাদীছ নং ৭২৭০; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৫৬১; বায়হাকী, আস্সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১১১২৬
مقدمة الامام النووي
45 - باب زيارة أهل الخير ومجالستهم وصحبتهم ومحبتهم وطلب زيارتهم والدعاء منهم وزيارة المواضع الفاضلة
363 - وعن أَبي موسى الأشعري - رضي الله عنه - أن النبي - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «إِنَّمَا مَثلُ الجَلِيسِ الصَّالِحِ وَجَلِيسِ السُّوءِ، كَحَامِلِ المِسْكِ، وَنَافِخِ الْكِيرِ، فَحَامِلُ الْمِسْكِ: إمَّا أَنْ يُحْذِيَكَ، وَإمَّا أَنْ تَبْتَاعَ مِنْهُ، وَإمَّا أَنْ تَجِدَ مِنْهُ ريحًا طَيِّبَةً، وَنَافِخُ الكِيرِ: إمَّا أَنْ يُحْرِقَ ثِيَابَكَ، وَإمَّا أَنْ تَجِدَ مِنْهُ رِيحًا مُنْتِنَةً». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
(يُحْذِيكَ): يُعْطِيكَ.
(يُحْذِيكَ): يُعْطِيكَ.
হাদীস নং: ৩৬৪
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ নেককার লোকদের সঙ্গে সাক্ষাত করা, তাদের মজলিসে বসা, তাদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাদেরকে ভালোবাসা, তাদের সাক্ষাত প্রার্থনা করা, তাদের কাছে দু'আ চাওয়া এবং মর্যাদাপূর্ণ স্থানসমূহের যিয়ারত করা।
স্ত্রী নির্বাচনে বিবেচ্য বিষয়
হাদীছ নং : ৩৬৪
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, নারীকে বিবাহ করা হয় তার ধন-সম্পদ দেখে, তার বংশ-মর্যাদা দেখে, তার সৌন্দর্য দেখে ও তার দীনদারী দেখে। সাবাশ হে! তুমি দীনদার নারী পেয়ে সফল হও -বুখারী ও মুসলিম।২৪০
ইমাম নববী রহ. বলেন, এর অর্থ হচ্ছে, লোকে সাধারণত স্ত্রী নির্বাচনে এ চারটি বিষয় বিবেচনায় রাখে। তবে হে মুসলিম! তোমার উচিত দীনদার নারীতে আগ্রহী হওয়া। তুমি এরকম স্ত্রীতে সচেষ্ট থাক ও তার সান্নিধ্য লাভের আকাঙ্ক্ষী হও।
২৪০. সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৫০৯০; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১৪৬৬; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ২০৪৭; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ৩২৩০; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ১০৮৬; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীছ নং ১৮৫৮; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৯৫২১; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীছ নং ১৭১৪৮; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৪০৩৬
হাদীছ নং : ৩৬৪
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, নারীকে বিবাহ করা হয় তার ধন-সম্পদ দেখে, তার বংশ-মর্যাদা দেখে, তার সৌন্দর্য দেখে ও তার দীনদারী দেখে। সাবাশ হে! তুমি দীনদার নারী পেয়ে সফল হও -বুখারী ও মুসলিম।২৪০
ইমাম নববী রহ. বলেন, এর অর্থ হচ্ছে, লোকে সাধারণত স্ত্রী নির্বাচনে এ চারটি বিষয় বিবেচনায় রাখে। তবে হে মুসলিম! তোমার উচিত দীনদার নারীতে আগ্রহী হওয়া। তুমি এরকম স্ত্রীতে সচেষ্ট থাক ও তার সান্নিধ্য লাভের আকাঙ্ক্ষী হও।
২৪০. সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৫০৯০; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১৪৬৬; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ২০৪৭; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ৩২৩০; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ১০৮৬; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীছ নং ১৮৫৮; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৯৫২১; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীছ নং ১৭১৪৮; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৪০৩৬
مقدمة الامام النووي
45 - باب زيارة أهل الخير ومجالستهم وصحبتهم ومحبتهم وطلب زيارتهم والدعاء منهم وزيارة المواضع الفاضلة
364 - وعن أَبي هريرة - رضي الله عنه - عن النَّبيّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «تُنْكَحُ المَرْأَةُ لأَرْبَعٍ: لِمَالِهَا، وَلِحَسَبِهَا، وَلِجَمَالِهَا، وَلِدِينِهَا، فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدِّينِ تَرِبَتْ يَدَاك». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
ومعناه: أنَّ النَّاسَ يَقْصدونَ في العَادَة مِنَ المَرْأةِ هذِهِ الخِصَالَ الأرْبَعَ، فَاحْرَصْ أنتَ عَلَى ذَاتِ الدِّينِ، وَاظْفَرْ بِهَا، وَاحْرِصْ عَلَى صُحْبَتِها.
ومعناه: أنَّ النَّاسَ يَقْصدونَ في العَادَة مِنَ المَرْأةِ هذِهِ الخِصَالَ الأرْبَعَ، فَاحْرَصْ أنتَ عَلَى ذَاتِ الدِّينِ، وَاظْفَرْ بِهَا، وَاحْرِصْ عَلَى صُحْبَتِها.
হাদীস নং: ৩৬৫
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ নেককার লোকদের সঙ্গে সাক্ষাত করা, তাদের মজলিসে বসা, তাদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাদেরকে ভালোবাসা, তাদের সাক্ষাত প্রার্থনা করা, তাদের কাছে দু'আ চাওয়া এবং মর্যাদাপূর্ণ স্থানসমূহের যিয়ারত করা।
হযরত জিবরীল আলাইহিস সালামের অধিকতর সাক্ষাতলাভের প্রতি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগ্রহপ্রকাশ
হাদীছ নং : ৩৬৫
হযরত আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত জিবরীল আলাইহিস সালামকে বললেন, আপনি আমাদের সঙ্গে যে পরিমাণ সাক্ষাত করেন তার চেয়ে আরও বেশি সাক্ষাত করতে আপনার বাধা কিসে? এরই পরিপ্রেক্ষিতে নাযিল হয়-
وَمَا نَتَنَزَّلُ إِلَّا بِأَمْرِ رَبِّكَ لَهُ مَا بَيْنَ أَيْدِينَا وَمَا خَلْفَنَا وَمَا بَيْنَ ذَلِكَ
(এবং ফিরিশতাগণ তোমাকে বলে) আমরা আপনার প্রতিপালকের হুকুম ছাড়া অবতরণ করি না। যা-কিছু আমাদের সামনে, যা-কিছু আমাদের পেছনে এবং যা-কিছু এ দু'য়ের মাঝখানে আছে, তা সব তাঁরই মালিকানাধীন) -সূরা মারইয়াম, আয়াত ৬৪। -বুখারী।
সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৪৭৩১; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ৩১৫৮; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২০৪৩; তাবারানী, আল-মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ১২৩৮৫; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩৭৪০
হাদীছ নং : ৩৬৫
হযরত আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত জিবরীল আলাইহিস সালামকে বললেন, আপনি আমাদের সঙ্গে যে পরিমাণ সাক্ষাত করেন তার চেয়ে আরও বেশি সাক্ষাত করতে আপনার বাধা কিসে? এরই পরিপ্রেক্ষিতে নাযিল হয়-
وَمَا نَتَنَزَّلُ إِلَّا بِأَمْرِ رَبِّكَ لَهُ مَا بَيْنَ أَيْدِينَا وَمَا خَلْفَنَا وَمَا بَيْنَ ذَلِكَ
(এবং ফিরিশতাগণ তোমাকে বলে) আমরা আপনার প্রতিপালকের হুকুম ছাড়া অবতরণ করি না। যা-কিছু আমাদের সামনে, যা-কিছু আমাদের পেছনে এবং যা-কিছু এ দু'য়ের মাঝখানে আছে, তা সব তাঁরই মালিকানাধীন) -সূরা মারইয়াম, আয়াত ৬৪। -বুখারী।
সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৪৭৩১; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ৩১৫৮; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২০৪৩; তাবারানী, আল-মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ১২৩৮৫; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩৭৪০
مقدمة الامام النووي
45 - باب زيارة أهل الخير ومجالستهم وصحبتهم ومحبتهم وطلب زيارتهم والدعاء منهم وزيارة المواضع الفاضلة
365 - وعن ابن عباس رضي الله عنهما، قَالَ: قَالَ النَّبيّ - صلى الله عليه وسلم - لِجبريل: «مَا يَمْنَعُكَ أَنْ تَزُورنَا أكثَر مِمَّا تَزُورَنَا؟» فَنَزَلَتْ: {وَمَا نَتَنَزَّلُ إِلاَّ بِأَمْرِ رَبِّكَ لَهُ مَا بَيْنَ أَيْدِينَا وَمَا خَلْفَنَا وَمَا بَيْنَ ذَلِكَ} [مريم: 64]. رواه البخاري. (1)
হাদীস নং: ৩৬৬
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ নেককার লোকদের সঙ্গে সাক্ষাত করা, তাদের মজলিসে বসা, তাদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাদেরকে ভালোবাসা, তাদের সাক্ষাত প্রার্থনা করা, তাদের কাছে দু'আ চাওয়া এবং মর্যাদাপূর্ণ স্থানসমূহের যিয়ারত করা।
মুমিন ছাড়া অন্য কাউকে সঙ্গী না বানানো
হাদীছ নং : ৩৬৬
হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, মুমিন ছাড়া অন্য কারও সঙ্গী হয়ো না। আর তোমার খাবার যেন মুত্তাকী ছাড়া অন্য কেউ না খায় - আবু দাউদ ও তিরমিযী।
সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ৪৮৩২; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৩৯৫; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ১১৩৩৭; সুনানে দারিমী, হাদীছ নং ২১০১; মুসনাদে আবূ ইয়ালা, হাদীছ নং ১৩১৫; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৫৫৪; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৯৩৭; শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩৪৮৫
হাদীছ নং : ৩৬৬
হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, মুমিন ছাড়া অন্য কারও সঙ্গী হয়ো না। আর তোমার খাবার যেন মুত্তাকী ছাড়া অন্য কেউ না খায় - আবু দাউদ ও তিরমিযী।
সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ৪৮৩২; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৩৯৫; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ১১৩৩৭; সুনানে দারিমী, হাদীছ নং ২১০১; মুসনাদে আবূ ইয়ালা, হাদীছ নং ১৩১৫; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৫৫৪; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৯৩৭; শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩৪৮৫
مقدمة الامام النووي
45 - باب زيارة أهل الخير ومجالستهم وصحبتهم ومحبتهم وطلب زيارتهم والدعاء منهم وزيارة المواضع الفاضلة
366 - وعن أَبي سعيد الخدري - رضي الله عنه - عن النَّبيّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «لا تُصَاحِبْ إلاَّ مُؤْمِنًا، وَلاَ يَأْكُلْ طَعَامَكَ إلاَّ تَقِيٌّ». رواه أَبُو داود والترمذي بإسناد لا بأس بِهِ. (1)
হাদীস নং: ৩৬৭
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ নেককার লোকদের সঙ্গে সাক্ষাত করা, তাদের মজলিসে বসা, তাদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাদেরকে ভালোবাসা, তাদের সাক্ষাত প্রার্থনা করা, তাদের কাছে দু'আ চাওয়া এবং মর্যাদাপূর্ণ স্থানসমূহের যিয়ারত করা।
দীন ও ঈমানে বন্ধুর প্রভাব
হাদীছ নং : ৩৬৭
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, মানুষ তার বন্ধুর দীনের অনুসারী হয়ে থাকে। কাজেই তোমাদের প্রত্যেকে যেন লক্ষ রাখে, সে কাকে বন্ধু বানাচ্ছে – আবূ দাউদ ও তিরমিযী।
ইমাম তিরমিযী রহ. বলেন, এটি একটি হাসান হাদীছ।
সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ৪৮৩৩; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৩৭৮; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৮০২৮; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৯৯০; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩৪৮৬;
হাদীছ নং : ৩৬৭
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, মানুষ তার বন্ধুর দীনের অনুসারী হয়ে থাকে। কাজেই তোমাদের প্রত্যেকে যেন লক্ষ রাখে, সে কাকে বন্ধু বানাচ্ছে – আবূ দাউদ ও তিরমিযী।
ইমাম তিরমিযী রহ. বলেন, এটি একটি হাসান হাদীছ।
সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ৪৮৩৩; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৩৭৮; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৮০২৮; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৯৯০; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩৪৮৬;
مقدمة الامام النووي
45 - باب زيارة أهل الخير ومجالستهم وصحبتهم ومحبتهم وطلب زيارتهم والدعاء منهم وزيارة المواضع الفاضلة
367 - وعن أَبي هريرة - رضي الله عنه: أن النَّبيّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «الرَّجُلُ عَلَى دِينِ خَلِيلِهِ، فَليَنْظُرْ أَحَدُكُمْ مَنْ يُخَالِلُ». رواه أَبُو داود والترمذي بإسناد صحيح، (1) وَقالَ الترمذي: «حديث حسن».
হাদীস নং: ৩৬৮
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ নেককার লোকদের সঙ্গে সাক্ষাত করা, তাদের মজলিসে বসা, তাদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাদেরকে ভালোবাসা, তাদের সাক্ষাত প্রার্থনা করা, তাদের কাছে দু'আ চাওয়া এবং মর্যাদাপূর্ণ স্থানসমূহের যিয়ারত করা।
আখেরাতে কে কার সঙ্গে থাকবে
হাদীছ নং : ৩৬৮
হযরত আবূ মূসা আশ'আরী রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি যাকে ভালোবাসে সে তার সঙ্গে থাকবে -বুখারী ও মুসলিম।২৫৩
অপর এক বর্ণনায় আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হলো, এক ব্যক্তি একদল লোককে ভালোবাসে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত সে তাদের সঙ্গে মিলিত হয়নি (তার সম্পর্কে কী বলেন)? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি যাকে ভালোবাসে সে তার সঙ্গে থাকবে।
২৫৩. সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৬১৬৮; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৬৪০; সুনানে আবূ দাউদ, হাদী নং ৫১২৭; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৩৮৫; মুসনাদুল হুমাইদী, হাদীছ নং ৯০৫; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৩৭১৮; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীছ নং ৩৭৫৬১; আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদীছ নং ৩৫২; মুসনাদে আবূ ইয়া'লা, হাদীছ নং ২৮৮৮
হাদীছ নং : ৩৬৮
হযরত আবূ মূসা আশ'আরী রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি যাকে ভালোবাসে সে তার সঙ্গে থাকবে -বুখারী ও মুসলিম।২৫৩
অপর এক বর্ণনায় আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হলো, এক ব্যক্তি একদল লোককে ভালোবাসে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত সে তাদের সঙ্গে মিলিত হয়নি (তার সম্পর্কে কী বলেন)? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি যাকে ভালোবাসে সে তার সঙ্গে থাকবে।
২৫৩. সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৬১৬৮; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৬৪০; সুনানে আবূ দাউদ, হাদী নং ৫১২৭; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৩৮৫; মুসনাদুল হুমাইদী, হাদীছ নং ৯০৫; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৩৭১৮; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীছ নং ৩৭৫৬১; আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদীছ নং ৩৫২; মুসনাদে আবূ ইয়া'লা, হাদীছ নং ২৮৮৮
مقدمة الامام النووي
45 - باب زيارة أهل الخير ومجالستهم وصحبتهم ومحبتهم وطلب زيارتهم والدعاء منهم وزيارة المواضع الفاضلة
368 - وعن أَبي موسى الأشعري - رضي الله عنه: أن النَّبيّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «المَرْءُ مَعَ مَنْ أَحَبَّ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
وفي رواية: قيل للنبي - صلى الله عليه وسلم: الرَّجُلُ يُحبُّ القَومَ وَلَمَّا يَلْحَقْ بِهِمْ؟ قَالَ: «المَرْءُ مَعَ مَنْ أَحَبَّ».
وفي رواية: قيل للنبي - صلى الله عليه وسلم: الرَّجُلُ يُحبُّ القَومَ وَلَمَّا يَلْحَقْ بِهِمْ؟ قَالَ: «المَرْءُ مَعَ مَنْ أَحَبَّ».
হাদীস নং: ৩৬৯
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ নেককার লোকদের সঙ্গে সাক্ষাত করা, তাদের মজলিসে বসা, তাদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাদেরকে ভালোবাসা, তাদের সাক্ষাত প্রার্থনা করা, তাদের কাছে দু'আ চাওয়া এবং মর্যাদাপূর্ণ স্থানসমূহের যিয়ারত করা।
কিয়ামতের জন্য প্রস্তুতি
হাদীছ নং : ৩৬৯
হযরত আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক বেদুঈন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করল, কেয়ামত কবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তার জন্য তুমি কী প্রস্তুতি গ্রহণ করেছ? সে বলল, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ভালোবাসা। তিনি বললেন, তুমি যাকে ভালোবাস তার সঙ্গেই থাকবে-বুখারী ও মুসলিম।২৫৫
বর্ণনার এ ভাষা মুসলিমের। বুখারী ও মুসলিমের অপর এক বর্ণনায় আছে, সে বলল, আমি সেজন্য রোযা নামায ও দান-সদাকার প্রস্তুতি বেশি গ্রহণ করতে পারিনি। তবে আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ভালোবাসি।
২৫৫. সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৩৬৮৮; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৬৩৯; মুসনাদুল হুমাইদী, হাদীছ নং ১২২৪; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ১২৭৬৯; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৫৬৫; তাবারানী, আল-মু'জামুল আওসাত, হাদীছ নং ১৫২৭; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৪৯৭; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩৪৭৭
হাদীছ নং : ৩৬৯
হযরত আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক বেদুঈন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করল, কেয়ামত কবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তার জন্য তুমি কী প্রস্তুতি গ্রহণ করেছ? সে বলল, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ভালোবাসা। তিনি বললেন, তুমি যাকে ভালোবাস তার সঙ্গেই থাকবে-বুখারী ও মুসলিম।২৫৫
বর্ণনার এ ভাষা মুসলিমের। বুখারী ও মুসলিমের অপর এক বর্ণনায় আছে, সে বলল, আমি সেজন্য রোযা নামায ও দান-সদাকার প্রস্তুতি বেশি গ্রহণ করতে পারিনি। তবে আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ভালোবাসি।
২৫৫. সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৩৬৮৮; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৬৩৯; মুসনাদুল হুমাইদী, হাদীছ নং ১২২৪; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ১২৭৬৯; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৫৬৫; তাবারানী, আল-মু'জামুল আওসাত, হাদীছ নং ১৫২৭; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৪৯৭; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩৪৭৭
مقدمة الامام النووي
45 - باب زيارة أهل الخير ومجالستهم وصحبتهم ومحبتهم وطلب زيارتهم والدعاء منهم وزيارة المواضع الفاضلة
369 - وعن أنس - رضي الله عنه: أنَّ أعرابيًا قَالَ لرسول الله - صلى الله عليه وسلم: مَتَى السَّاعَةُ؟ قَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «مَا أعْدَدْتَ لَهَا؟» قَالَ: حُبَّ الله ورسولهِ، قَالَ: «أَنْتَ مَعَ مَنْ أَحْبَبْتَ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ (1)، وهذا لفظ مسلم.
وفي رواية لهما: مَا أعْدَدْتُ لَهَا مِنْ كَثيرِ صَوْمٍ، وَلاَ صَلاَةٍ، وَلاَ صَدَقَةٍ، وَلَكِنِّي أُحِبُّ الله وَرَسُولَهُ.
وفي رواية لهما: مَا أعْدَدْتُ لَهَا مِنْ كَثيرِ صَوْمٍ، وَلاَ صَلاَةٍ، وَلاَ صَدَقَةٍ، وَلَكِنِّي أُحِبُّ الله وَرَسُولَهُ.
হাদীস নং: ৩৭০
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ নেককার লোকদের সঙ্গে সাক্ষাত করা, তাদের মজলিসে বসা, তাদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাদেরকে ভালোবাসা, তাদের সাক্ষাত প্রার্থনা করা, তাদের কাছে দু'আ চাওয়া এবং মর্যাদাপূর্ণ স্থানসমূহের যিয়ারত করা।
কিয়ামতের জন্য প্রস্তুতি
হাদীছ নং : ৩৭০
হযরত আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি ওই ব্যক্তি সম্পর্কে কী বলেন, যে-কোনও দলকে ভালোবাসে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাদের সঙ্গে মিলিত হতে পারেনি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে ব্যক্তি যাকে ভালোবাসে সে তার সঙ্গে থাকবে -বুখারী ও মুসলিম।
সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৬১৬৯; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৬৪০; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ৫১২৭; মুসনাদুল হুমাইদী, হাদীছ নং ৯০৫; মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদীছ নং ৭৯৫; তবারানী, আল-মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ৭৩৫৩; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৪৯৬; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩৪৭৯
হাদীছ নং : ৩৭০
হযরত আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি ওই ব্যক্তি সম্পর্কে কী বলেন, যে-কোনও দলকে ভালোবাসে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাদের সঙ্গে মিলিত হতে পারেনি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে ব্যক্তি যাকে ভালোবাসে সে তার সঙ্গে থাকবে -বুখারী ও মুসলিম।
সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৬১৬৯; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৬৪০; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ৫১২৭; মুসনাদুল হুমাইদী, হাদীছ নং ৯০৫; মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদীছ নং ৭৯৫; তবারানী, আল-মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ৭৩৫৩; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৪৯৬; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩৪৭৯
مقدمة الامام النووي
45 - باب زيارة أهل الخير ومجالستهم وصحبتهم ومحبتهم وطلب زيارتهم والدعاء منهم وزيارة المواضع الفاضلة
370 - وعن ابن مسعود - رضي الله عنه - قَالَ: جاء رجلٌ إلى رَسُولِ الله - صلى الله عليه وسلم - فَقَالَ: يَا رَسُول الله، كَيْفَ تَقُولُ في رَجُلٍ أَحَبَّ قَوْمًا وَلَمْ يَلْحَقْ بِهِمْ؟ فَقَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «المَرْءُ مَعَ مَنْ أحَبَّ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
হাদীস নং: ৩৭১
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ নেককার লোকদের সঙ্গে সাক্ষাত করা, তাদের মজলিসে বসা, তাদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাদেরকে ভালোবাসা, তাদের সাক্ষাত প্রার্থনা করা, তাদের কাছে দু'আ চাওয়া এবং মর্যাদাপূর্ণ স্থানসমূহের যিয়ারত করা।
মানুষের মধ্যে কে শ্রেষ্ঠ এবং পারস্পরিক মিল-অমিলের রহস্য কী
হাদীছ নং : ৩৭১
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, সোনা-রুপার বিভিন্ন খনির মত মানুষও বিভিন্ন খনিস্বরূপ। জাহেলী যুগে তাদের মধ্যে যারা শ্রেষ্ঠ ছিল, ইসলামেও তারাই শ্রেষ্ঠ, যখন তারা দীনের বুঝ-জ্ঞান অর্জন করবে।২৫৮ রূহসমূহ বহুদলে বিভক্ত (ছিল)। তার মধ্যে যারা পরস্পর পরিচিত ছিল তাদের মধ্যে সম্প্রীতি দেখা দেয়। যারা পরস্পর অপরিচিত ছিল তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় -মুসলিম। ২৫৯
ইমাম বুখারী রহ. (...الارواح) অংশটুকু উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রাযি.-এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
(২৫৮. সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৩৩৫৩; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৩৭৮; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদীছ নং ৬০৭০; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৯২; তাবারানী, আল-মু'জামুল আওসাত, হাদীছ নং ৭০৪; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ১৫৭৮
২৫৯. সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৩৩৩৬; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৬৩৮; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ৪৮৩৪; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৭৯৩৫; মুসনাদে আবূ ইয়ালা, হাদীছ নং ৪৩৮১; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৬১৬৮; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৬১৯; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩৪৭১)
হাদীছ নং : ৩৭১
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, সোনা-রুপার বিভিন্ন খনির মত মানুষও বিভিন্ন খনিস্বরূপ। জাহেলী যুগে তাদের মধ্যে যারা শ্রেষ্ঠ ছিল, ইসলামেও তারাই শ্রেষ্ঠ, যখন তারা দীনের বুঝ-জ্ঞান অর্জন করবে।২৫৮ রূহসমূহ বহুদলে বিভক্ত (ছিল)। তার মধ্যে যারা পরস্পর পরিচিত ছিল তাদের মধ্যে সম্প্রীতি দেখা দেয়। যারা পরস্পর অপরিচিত ছিল তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় -মুসলিম। ২৫৯
ইমাম বুখারী রহ. (...الارواح) অংশটুকু উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রাযি.-এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
(২৫৮. সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৩৩৫৩; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৩৭৮; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদীছ নং ৬০৭০; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৯২; তাবারানী, আল-মু'জামুল আওসাত, হাদীছ নং ৭০৪; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ১৫৭৮
২৫৯. সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৩৩৩৬; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৬৩৮; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ৪৮৩৪; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৭৯৩৫; মুসনাদে আবূ ইয়ালা, হাদীছ নং ৪৩৮১; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৬১৬৮; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৬১৯; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩৪৭১)
مقدمة الامام النووي
45 - باب زيارة أهل الخير ومجالستهم وصحبتهم ومحبتهم وطلب زيارتهم والدعاء منهم وزيارة المواضع الفاضلة
371 - وعن أَبي هريرة - رضي الله عنه - عن النَّبيِّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «النَّاسُ مَعَادِنٌ كَمَعَادِنِ الذَّهَبِ وَالفِضَّةِ، خِيَارُهُمْ في الجَاهِلِيَّةِ خِيَارُهُمْ في الإسْلاَمِ إِذَا فَقهُوا، وَالأرْوَاحُ جُنُودٌ مُجَنَّدَةٌ، فَمَا تَعَارَفَ مِنْهَا ائْتَلَفَ، ومَا تَنَاكَرَ مِنْهَا اخْتَلَفَ». رواه مسلم. (1)
وروى البخاري قوله: «الأَرْوَاحُ ... » إلخ مِنْ رواية عائشة رضي الله عنها.
وروى البخاري قوله: «الأَرْوَاحُ ... » إلخ مِنْ رواية عائشة رضي الله عنها.
হাদীস নং: ৩৭২
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ নেককার লোকদের সঙ্গে সাক্ষাত করা, তাদের মজলিসে বসা, তাদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাদেরকে ভালোবাসা, তাদের সাক্ষাত প্রার্থনা করা, তাদের কাছে দু'আ চাওয়া এবং মর্যাদাপূর্ণ স্থানসমূহের যিয়ারত করা।
উয়ায়স কারনী রহ.-এর ঘটনা
হাদীছ নং : ৩৭২
উসায়র ইবন আমর রাযি. থেকে বর্ণিত তাকে উসায়র ইবন জাবিরও বলা হয়- তিনি বলেন, হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রাযি.-এর কাছে ইয়ামানের সাহায্যকারী দল আসলে তিনি তাদের জিজ্ঞেস করেছিলেন, তোমাদের মধ্যে কি উয়ায়স ইবন আমির আছে? একপর্যায়ে তিনি উয়ায়স পর্যন্ত পৌঁছলেন। বললেন, আপনি কি উয়ায়স ইবন আমির? তিনি বললেন, হাঁ। জিজ্ঞেস করলেন, মুরাদ গোত্রের শাখা কারন গোত্রের? তিনি বললেন, হাঁ। তারপর জিজ্ঞেস করলেন, আপনার কি শ্বেতরোগ হয়েছিল, যা থেকে আপনি মুক্তিলাভ করেছেন, তবে এক দিরহাম পরিমাণ অবশিষ্ট আছে? তিনি বললেন, হাঁ। জিজ্ঞেস করলেন, আপনার মা কি জীবিত আছেন? তিনি বললেন, হাঁ। এবার তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ইয়ামানবাসীদের সাহায্যকারী দলের সঙ্গে উয়ায়স ইবন আমির তোমাদের কাছে আসবে। সে মুরাদ গোত্রের শাখা কারন গোত্রের লোক। তার শ্বেতরোগ ছিল, যা থেকে সে মুক্তিলাভ করেছে। তবে এক দিরহাম পরিমাণ অবশিষ্ট আছে। তার মা আছেন। সে তার অনুগত। সে যদি আল্লাহর নামে কোনও বিষয়ে কসম করে তবে আল্লাহ তার সে কসম রক্ষা করেন। তুমি যদি তোমার জন্য তার দ্বারা মাগফিরাতের দু'আ করানোর সুযোগ পাও তবে তা অবশ্যই করবে। সুতরাং আপনি আমার জন্য মাগফিরাতের দু'আ করুন। তিনি তাঁর জন্য মাগফিরাতের দু'আ করলেন। তারপর উমর রাযি. তাকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কোথায় যেতে চান? বললেন, কূফায়। তিনি বললেন, আমি কি সেখানকার গভর্নরের কাছে আপনার পক্ষে কিছু লিখে দেব? তিনি বললেন, আমি গরীব ও অখ্যাত লোকদের একজন হয়ে থাকাই বেশি পসন্দ করি। এরপরের বছর সেখানকার গণ্যমান্য লোকদের একজন হচ্ছে এসে হযরত উমর ফারূক রাযি.-এর সঙ্গে সাক্ষাত করলে তিনি তাকে উয়ায়স সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। সে বলল, আমি তাকে এ অবস্থায় রেখে এসেছি যে, তার ঘর অত্যন্ত জরাজীর্ণ। আসবাবপত্র নিতান্তই কম। তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ইয়ামানবাসীদের সাহায্যকারী দলের সঙ্গে উয়ায়স ইবন আমির তোমাদের কাছে আসবে। সে মুরাদ গোত্রের শাখা কারন গোত্রের লোক। তার শ্বেতরোগ ছিল, যা থেকে সে মুক্তিলাভ করেছে। তবে এক দিরহাম পরিমাণ অবশিষ্ট আছে। তার মা আছেন। সে তার অনুগত। সে যদি আল্লাহর নামে কোনও বিষয়ে কসম করে তবে আল্লাহ সে কসম রক্ষা করেন। তুমি যদি তোমার জন্য তার দ্বারা মাগফিরাতের দু'আ করানোর সুযোগ পাও তবে তা অবশ্যই করবে। সুতরাং সে ব্যক্তি উয়ায়সের কাছে এসে বলল, আমার জন্য মাগফিরাতের দু'আ করুন। উয়ায়স বললেন, আপনি সদ্য একটি নেক সফর থেকে ফিরেছেন। কাজেই আপনি আমার জন্য মাগফিরাতের দু'আ করুন। তারপর বললেন, আপনি কি উমরের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন? সে বলল, হাঁ। তারপর তিনি তার জন্য মাগফিরাতের দুআ করলেন। অনন্তর লোকজন তার সম্পর্কে সজাগ হয়ে উঠল। ফলে তিনি নিরুদ্দেশ হয়ে গেলেন -মুসলিম।২৬০
মুসলিমের অপর এক বর্ণনায় আছে, উসায়র ইবন জাবির রাযি. থেকে বর্ণিত, কূফাবাসীগণ উমর রাযি.-এর কাছে প্রতিনিধি হয়ে আসল। তাদের মধ্যে এমন এক ব্যক্তি ছিল যে উয়ায়সকে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করত। উমর রাযি. তাদেরকে বললেন, এখানে কারন গোত্রীয় কেউ আছে? তখন সেই ব্যক্তি আসল। উমর রাযি. বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ইয়ামান থেকে উয়ায়স নামে কথিত এক ব্যক্তি তোমাদের কাছে আসবে। সে ইয়ামানে একমাত্র তার মা ছাড়া আর কাউকে রেখে আসবে না। তার শ্বেতরোগ ছিল। সে আল্লাহ তাআলার কাছে দুআ করলে তিনি তা দূর করে দিলেন, তবে এক দিনার বা এক দিরহাম পরিমাণ অবশিষ্ট আছে। তোমাদের মধ্যে কেউ তার সাক্ষাত পেলে তাকে দিয়ে তোমাদের জন্য মাগফিরাতের দু'আ করাবে।
মুসলিমের অপর এক বর্ণনায় আছে, উমর রাযি. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তাবি'ঈদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এমন এক ব্যক্তি, যাকে উয়ায়স বলা হয়ে থাকে, তার মা জীবিত আছেন। আর তার শ্বেতরোগ ছিল। তোমরা তাকে বলবে যেন তোমাদের জন্য মাগফিরাতের দু'আ করে।
ইমাম নববী রহ. বলেন, غبراء الناس এর অর্থ গরীব ও নিঃস্ব লোক এবং এমন সাধারণ পর্যায়ের লোক যাকে কেউ চেনে না।
الامداد শব্দটি مدد এর বহুবচন। এর দ্বারা এমন সাহার্যকারী দলকে বোঝানো হয়, যারা জিহাদে মুসলিম বাহিনীর সাহায্যার্থে প্রেরিত হয়ে থাকে।
সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৫৪২; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২৬৬; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ, হাদীছ নং ৩২৩৪৪; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ৩৮৮; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ৪০০৬
হাদীছ নং : ৩৭২
উসায়র ইবন আমর রাযি. থেকে বর্ণিত তাকে উসায়র ইবন জাবিরও বলা হয়- তিনি বলেন, হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রাযি.-এর কাছে ইয়ামানের সাহায্যকারী দল আসলে তিনি তাদের জিজ্ঞেস করেছিলেন, তোমাদের মধ্যে কি উয়ায়স ইবন আমির আছে? একপর্যায়ে তিনি উয়ায়স পর্যন্ত পৌঁছলেন। বললেন, আপনি কি উয়ায়স ইবন আমির? তিনি বললেন, হাঁ। জিজ্ঞেস করলেন, মুরাদ গোত্রের শাখা কারন গোত্রের? তিনি বললেন, হাঁ। তারপর জিজ্ঞেস করলেন, আপনার কি শ্বেতরোগ হয়েছিল, যা থেকে আপনি মুক্তিলাভ করেছেন, তবে এক দিরহাম পরিমাণ অবশিষ্ট আছে? তিনি বললেন, হাঁ। জিজ্ঞেস করলেন, আপনার মা কি জীবিত আছেন? তিনি বললেন, হাঁ। এবার তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ইয়ামানবাসীদের সাহায্যকারী দলের সঙ্গে উয়ায়স ইবন আমির তোমাদের কাছে আসবে। সে মুরাদ গোত্রের শাখা কারন গোত্রের লোক। তার শ্বেতরোগ ছিল, যা থেকে সে মুক্তিলাভ করেছে। তবে এক দিরহাম পরিমাণ অবশিষ্ট আছে। তার মা আছেন। সে তার অনুগত। সে যদি আল্লাহর নামে কোনও বিষয়ে কসম করে তবে আল্লাহ তার সে কসম রক্ষা করেন। তুমি যদি তোমার জন্য তার দ্বারা মাগফিরাতের দু'আ করানোর সুযোগ পাও তবে তা অবশ্যই করবে। সুতরাং আপনি আমার জন্য মাগফিরাতের দু'আ করুন। তিনি তাঁর জন্য মাগফিরাতের দু'আ করলেন। তারপর উমর রাযি. তাকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কোথায় যেতে চান? বললেন, কূফায়। তিনি বললেন, আমি কি সেখানকার গভর্নরের কাছে আপনার পক্ষে কিছু লিখে দেব? তিনি বললেন, আমি গরীব ও অখ্যাত লোকদের একজন হয়ে থাকাই বেশি পসন্দ করি। এরপরের বছর সেখানকার গণ্যমান্য লোকদের একজন হচ্ছে এসে হযরত উমর ফারূক রাযি.-এর সঙ্গে সাক্ষাত করলে তিনি তাকে উয়ায়স সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। সে বলল, আমি তাকে এ অবস্থায় রেখে এসেছি যে, তার ঘর অত্যন্ত জরাজীর্ণ। আসবাবপত্র নিতান্তই কম। তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ইয়ামানবাসীদের সাহায্যকারী দলের সঙ্গে উয়ায়স ইবন আমির তোমাদের কাছে আসবে। সে মুরাদ গোত্রের শাখা কারন গোত্রের লোক। তার শ্বেতরোগ ছিল, যা থেকে সে মুক্তিলাভ করেছে। তবে এক দিরহাম পরিমাণ অবশিষ্ট আছে। তার মা আছেন। সে তার অনুগত। সে যদি আল্লাহর নামে কোনও বিষয়ে কসম করে তবে আল্লাহ সে কসম রক্ষা করেন। তুমি যদি তোমার জন্য তার দ্বারা মাগফিরাতের দু'আ করানোর সুযোগ পাও তবে তা অবশ্যই করবে। সুতরাং সে ব্যক্তি উয়ায়সের কাছে এসে বলল, আমার জন্য মাগফিরাতের দু'আ করুন। উয়ায়স বললেন, আপনি সদ্য একটি নেক সফর থেকে ফিরেছেন। কাজেই আপনি আমার জন্য মাগফিরাতের দু'আ করুন। তারপর বললেন, আপনি কি উমরের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন? সে বলল, হাঁ। তারপর তিনি তার জন্য মাগফিরাতের দুআ করলেন। অনন্তর লোকজন তার সম্পর্কে সজাগ হয়ে উঠল। ফলে তিনি নিরুদ্দেশ হয়ে গেলেন -মুসলিম।২৬০
মুসলিমের অপর এক বর্ণনায় আছে, উসায়র ইবন জাবির রাযি. থেকে বর্ণিত, কূফাবাসীগণ উমর রাযি.-এর কাছে প্রতিনিধি হয়ে আসল। তাদের মধ্যে এমন এক ব্যক্তি ছিল যে উয়ায়সকে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করত। উমর রাযি. তাদেরকে বললেন, এখানে কারন গোত্রীয় কেউ আছে? তখন সেই ব্যক্তি আসল। উমর রাযি. বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ইয়ামান থেকে উয়ায়স নামে কথিত এক ব্যক্তি তোমাদের কাছে আসবে। সে ইয়ামানে একমাত্র তার মা ছাড়া আর কাউকে রেখে আসবে না। তার শ্বেতরোগ ছিল। সে আল্লাহ তাআলার কাছে দুআ করলে তিনি তা দূর করে দিলেন, তবে এক দিনার বা এক দিরহাম পরিমাণ অবশিষ্ট আছে। তোমাদের মধ্যে কেউ তার সাক্ষাত পেলে তাকে দিয়ে তোমাদের জন্য মাগফিরাতের দু'আ করাবে।
মুসলিমের অপর এক বর্ণনায় আছে, উমর রাযি. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তাবি'ঈদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এমন এক ব্যক্তি, যাকে উয়ায়স বলা হয়ে থাকে, তার মা জীবিত আছেন। আর তার শ্বেতরোগ ছিল। তোমরা তাকে বলবে যেন তোমাদের জন্য মাগফিরাতের দু'আ করে।
ইমাম নববী রহ. বলেন, غبراء الناس এর অর্থ গরীব ও নিঃস্ব লোক এবং এমন সাধারণ পর্যায়ের লোক যাকে কেউ চেনে না।
الامداد শব্দটি مدد এর বহুবচন। এর দ্বারা এমন সাহার্যকারী দলকে বোঝানো হয়, যারা জিহাদে মুসলিম বাহিনীর সাহায্যার্থে প্রেরিত হয়ে থাকে।
সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৫৪২; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২৬৬; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ, হাদীছ নং ৩২৩৪৪; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ৩৮৮; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ৪০০৬
مقدمة الامام النووي
45 - باب زيارة أهل الخير ومجالستهم وصحبتهم ومحبتهم وطلب زيارتهم والدعاء منهم وزيارة المواضع الفاضلة
372 - وعن أُسَيْر بن عمرو، ويقال: ابن جابر وَهُوَ - بضم الهمزة وفتح السين المهملة - قَالَ: كَانَ عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ - رضي الله عنه - إِذَا أتَى عَلَيهِ أَمْدَادُ أهْلِ اليَمَنِ سَألَهُمْ: [ص:135] أفِيكُمْ أُوَيْسُ بْنُ عَامِرٍ؟ حَتَّى أتَى عَلَى أُوَيْسٍ - رضي الله عنه - فَقَالَ لَهُ: أَنْتَ أُوَيْسُ ابْنُ عَامِر؟ قَالَ: نَعَمْ، قَالَ: مِنْ مُرَادٍ ثُمَّ مِنْ قَرَنٍ؟ قَالَ: نَعَمْ. قَالَ: فَكَانَ بِكَ بَرَصٌ، فَبَرَأْتَ مِنْهُ إلاَّ مَوْضِعَ دِرْهَمٍ؟ قَالَ: نَعَمْ. قَالَ: لَكَ وَالِدةٌ؟ قَالَ: نَعَمْ. قَالَ: سَمِعْتُ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - يقول: «يَأتِي عَلَيْكُمْ أُويْسُ بْنُ عَامِرٍ مَعَ أَمْدَادِ أَهْلِ اليَمَنِ مِنْ مُرَادٍ، ثُمَّ مِنْ قَرَنٍ كَانَ بِهِ بَرَصٌ، فَبَرَأَ مِنْهُ إلاَّ مَوْضِعَ دِرْهَمٍ، لَهُ وَالدةٌ هُوَ بِهَا بَرٌّ، لَوْ أَقْسَمَ عَلَى الله لأَبَرَّهُ، فإنِ اسْتَطَعْتَ أَنْ يَسْتَغْفِرَ لَكَ فَافْعَل» فَاسْتَغْفِرْ لي فَاسْتَغْفَرَ لَهُ، فَقَالَ لَهُ عُمَرُ: أَيْنَ تُريدُ؟ قَالَ: الكُوفَةَ، قَالَ: ألاَ أَكْتُبُ لَكَ إِلَى عَامِلِهَا؟ قَالَ: أكُونُ في غَبْرَاءِ النَّاسِ أَحَبُّ إِلَيَّ، فَلَمَّا كَانَ مِنَ العَامِ المُقْبِلِ حَجَّ رَجُلٌ مِنْ أَشْرَافِهِمْ، فَوافَقَ عُمَرَ، فَسَألَهُ عَنْ أُوَيْسٍ، فَقَالَ: تَرَكْتُهُ رَثَّ (1) البَيْتِ قَليلَ المَتَاع، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - يقولُ: «يَأتِي عَلَيْكُمْ أُوَيْسُ بْنُ عَامِرٍ مَعَ أمْدَادٍ مِنْ أَهْلِ اليَمَنِ مِنْ مُرَادٍ، ثُمَّ مِنْ قَرَنٍ، كَانَ بِهِ بَرَصٌ فَبَرَأَ مِنْهُ إلاَّ مَوضِعَ دِرْهَمٍ، لَهُ وَالِدَةٌ هُوَ بِهَا بَرٌّ لَوْ أقْسَمَ عَلَى اللهِ لأَبَرَّهُ، فَإنِ اسْتَطْعتَ أَنْ يَسْتَغْفِرَ لَكَ، فَافْعَلْ» فَأتَى أُوَيْسًا، فَقَالَ: اسْتَغْفِرْ لِي. قَالَ: أَنْتَ أحْدَثُ عَهْدًا بسَفَرٍ صَالِحٍ، فَاسْتَغْفِرْ لي. قَالَ: لَقِيتَ عُمَرَ؟ قَالَ: نَعَمْ، فاسْتَغْفَرَ لَهُ، فَفَطِنَ لَهُ النَّاسُ، فَانْطَلَقَ عَلَى وَجْهِهِ. رواه مسلم. (2)
وفي رواية لمسلم أيضًا عن أُسَيْر بن جابر - رضي الله عنه: أنَّ أهْلَ الكُوفَةِ وَفَدُوا عَلَى عُمَرَ - رضي الله عنه - وَفِيهمْ رَجُلٌ مِمَّنْ كَانَ يَسْخَرُ بِأُوَيْسٍ، فَقَالَ عُمَرُ: هَلْ هاهُنَا أَحَدٌ مِنَ القَرَنِيِّينَ؟ فَجَاءَ ذلِكَ الرَّجُلُ، فَقَالَ عمرُ: إنَّ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - قَدْ قَالَ: «إنَّ رَجُلًا يَأتِيكُمْ مِنَ اليَمَنِ يُقَالُ لَهُ: أُوَيْسٌ، لاَ يَدَعُ باليَمَنِ غَيْرَ أُمٍّ لَهُ، قَدْ كَانَ بِهِ بَيَاضٌ فَدَعَا الله تَعَالَى، فَأذْهَبَهُ إلاَّ مَوضِعَ الدِّينَارِ أَو الدِّرْهَمِ، فَمَنْ لَقِيَهُ مِنْكُمْ، فَلْيَسْتَغْفِرْ لَكُمْ».
وفي رواية لَهُ: عن عمر - رضي الله عنه - قَالَ: إنِّي سَمِعْتُ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - يقول: «إنَّ خَيْرَ التَّابِعِينَ رَجُلٌ يُقَالُ لَهُ: أُوَيْسٌ، وَلَهُ وَالِدَةٌ وَكَانَ بِهِ بَيَاضٌ، فَمُرُوهُ، فَلْيَسْتَغْفِرْ لَكُمْ».
قوله: «غَبْرَاءِ النَّاسِ» بفتح الغين المعجمة، وإسكان الباءِ وبالمد: وهم فُقَرَاؤُهُمْ وَصَعَالِيكُهُمْ وَمَنْ لا يُعْرَفُ عَيْنُهُ مِنْ أخلاطِهِمْ «وَالأَمْدَادُ» جَمْعُ مَدَدٍ: وَهُمُ الأَعْوَانُ وَالنَّاصِرُونَ الَّذِينَ كَانُوا يُمدُّونَ المُسْلِمِينَ في الجهَاد.
وفي رواية لمسلم أيضًا عن أُسَيْر بن جابر - رضي الله عنه: أنَّ أهْلَ الكُوفَةِ وَفَدُوا عَلَى عُمَرَ - رضي الله عنه - وَفِيهمْ رَجُلٌ مِمَّنْ كَانَ يَسْخَرُ بِأُوَيْسٍ، فَقَالَ عُمَرُ: هَلْ هاهُنَا أَحَدٌ مِنَ القَرَنِيِّينَ؟ فَجَاءَ ذلِكَ الرَّجُلُ، فَقَالَ عمرُ: إنَّ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - قَدْ قَالَ: «إنَّ رَجُلًا يَأتِيكُمْ مِنَ اليَمَنِ يُقَالُ لَهُ: أُوَيْسٌ، لاَ يَدَعُ باليَمَنِ غَيْرَ أُمٍّ لَهُ، قَدْ كَانَ بِهِ بَيَاضٌ فَدَعَا الله تَعَالَى، فَأذْهَبَهُ إلاَّ مَوضِعَ الدِّينَارِ أَو الدِّرْهَمِ، فَمَنْ لَقِيَهُ مِنْكُمْ، فَلْيَسْتَغْفِرْ لَكُمْ».
وفي رواية لَهُ: عن عمر - رضي الله عنه - قَالَ: إنِّي سَمِعْتُ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - يقول: «إنَّ خَيْرَ التَّابِعِينَ رَجُلٌ يُقَالُ لَهُ: أُوَيْسٌ، وَلَهُ وَالِدَةٌ وَكَانَ بِهِ بَيَاضٌ، فَمُرُوهُ، فَلْيَسْتَغْفِرْ لَكُمْ».
قوله: «غَبْرَاءِ النَّاسِ» بفتح الغين المعجمة، وإسكان الباءِ وبالمد: وهم فُقَرَاؤُهُمْ وَصَعَالِيكُهُمْ وَمَنْ لا يُعْرَفُ عَيْنُهُ مِنْ أخلاطِهِمْ «وَالأَمْدَادُ» جَمْعُ مَدَدٍ: وَهُمُ الأَعْوَانُ وَالنَّاصِرُونَ الَّذِينَ كَانُوا يُمدُّونَ المُسْلِمِينَ في الجهَاد.
হাদীস নং: ৩৭৩
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ নেককার লোকদের সঙ্গে সাক্ষাত করা, তাদের মজলিসে বসা, তাদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাদেরকে ভালোবাসা, তাদের সাক্ষাত প্রার্থনা করা, তাদের কাছে দু'আ চাওয়া এবং মর্যাদাপূর্ণ স্থানসমূহের যিয়ারত করা।
হজ্জ ও উমরাযাত্রীর কাছে দুআ চাওয়া
হাদীছ নং : ৩৭৩
হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উমরার অনুমতি চাইলাম। তিনি আমাকে অনুমতি দিলেন এবং বললেন, ওহে প্রিয় ভাই! তোমার দুআয় আমাদের ভুলে যেও না। তিনি এমন একটি কথা বললেন, যার পরিবর্তে সমগ্র দুনিয়াটাও যদি আমার হয়ে যায় তাতেও আমি খুশি হব না ।
অপর এক বর্ণনায় আছে, তিনি বললেন, ওহে আমার প্রিয় ভাই! তোমার দুআয় আমাদের শরীক রেখো।
ইমাম নববী রহ. বলেন, এটি একটি সহীহ হাদীছ। ইমাম আবূ দাউদ ও তিরমিযী এটি বর্ণনা করেছেন। ইমাম তিরমিযী রহ. বলেন, এটি একটি হাসান সহীহ হাদীছ।
সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ১৪৯৮; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ৩৫৬২; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীছ নং ২৮৯৪; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ১৯৫; মুসনাদে আবু ইয়া'লা, হাদীছ নং ৫৫৫০; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১০৩১৫; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৬৪১; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ১৩৯৭
হাদীছ নং : ৩৭৩
হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উমরার অনুমতি চাইলাম। তিনি আমাকে অনুমতি দিলেন এবং বললেন, ওহে প্রিয় ভাই! তোমার দুআয় আমাদের ভুলে যেও না। তিনি এমন একটি কথা বললেন, যার পরিবর্তে সমগ্র দুনিয়াটাও যদি আমার হয়ে যায় তাতেও আমি খুশি হব না ।
অপর এক বর্ণনায় আছে, তিনি বললেন, ওহে আমার প্রিয় ভাই! তোমার দুআয় আমাদের শরীক রেখো।
ইমাম নববী রহ. বলেন, এটি একটি সহীহ হাদীছ। ইমাম আবূ দাউদ ও তিরমিযী এটি বর্ণনা করেছেন। ইমাম তিরমিযী রহ. বলেন, এটি একটি হাসান সহীহ হাদীছ।
সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ১৪৯৮; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ৩৫৬২; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীছ নং ২৮৯৪; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ১৯৫; মুসনাদে আবু ইয়া'লা, হাদীছ নং ৫৫৫০; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১০৩১৫; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৬৪১; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ১৩৯৭
مقدمة الامام النووي
45 - باب زيارة أهل الخير ومجالستهم وصحبتهم ومحبتهم وطلب زيارتهم والدعاء منهم وزيارة المواضع الفاضلة
373 - وعن عمر بن الخطاب - رضي الله عنه - قَالَ: اسْتَأذَنْتُ النَّبيَّ - صلى الله عليه وسلم - في العُمْرَةِ، فَأذِنَ لِي، وَقالَ: «لاَ تَنْسَنا يَا أُخَيَّ مِنْ دُعَائِكَ» فَقَالَ كَلِمَةً مَا يَسُرُّنِي أنَّ لِي بِهَا الدُّنْيَا.
وفي رواية: وَقالَ: «أشْرِكْنَا يَا أُخَيَّ في دُعَائِكَ».
حديث صحيح رواه أَبُو داود والترمذي، وَقالَ: «حديث حسن صحيح». (1)
وفي رواية: وَقالَ: «أشْرِكْنَا يَا أُخَيَّ في دُعَائِكَ».
حديث صحيح رواه أَبُو داود والترمذي، وَقالَ: «حديث حسن صحيح». (1)
হাদীস নং: ৩৭৪
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ নেককার লোকদের সঙ্গে সাক্ষাত করা, তাদের মজলিসে বসা, তাদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাদেরকে ভালোবাসা, তাদের সাক্ষাত প্রার্থনা করা, তাদের কাছে দু'আ চাওয়া এবং মর্যাদাপূর্ণ স্থানসমূহের যিয়ারত করা।
হজ্জ ও উমরাকারীর কুবায় গমন
হাদীছ নং : ৩৭৪
হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সওয়ার হয়ে এবং পায়ে হেঁটে কুবায় যেতেন এবং সেখানে দু'রাকাত নামায পড়তেন।
অপর এক বর্ণনায় আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি শনিবার সওয়ার হয়ে এবং পায়ে হেঁটে কুবার মসজিদে আসতেন। হযরত ইবন উমরও তাই করতেন -বুখারী ও মুসলিম।
সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ১১৯১; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১৩৯৯; মুসনাদুল হুমাইদী, হাদীছ নং ৬৭৩; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ১৬৩২; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১০৯২; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ৪৫৭
হাদীছ নং : ৩৭৪
হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সওয়ার হয়ে এবং পায়ে হেঁটে কুবায় যেতেন এবং সেখানে দু'রাকাত নামায পড়তেন।
অপর এক বর্ণনায় আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি শনিবার সওয়ার হয়ে এবং পায়ে হেঁটে কুবার মসজিদে আসতেন। হযরত ইবন উমরও তাই করতেন -বুখারী ও মুসলিম।
সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ১১৯১; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১৩৯৯; মুসনাদুল হুমাইদী, হাদীছ নং ৬৭৩; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ১৬৩২; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১০৯২; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ৪৫৭
مقدمة الامام النووي
45 - باب زيارة أهل الخير ومجالستهم وصحبتهم ومحبتهم وطلب زيارتهم والدعاء منهم وزيارة المواضع الفاضلة
374 - وعن ابن عمر رضي الله عنهما، قَالَ: كَانَ النَّبيُّ - صلى الله عليه وسلم - يزور قُبَاءَ رَاكِبًا وَمَاشِيًا، فَيُصَلِّي فِيهِ رَكْعَتَيْنِ. مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
وفي رواية: كَانَ النَّبيُّ - صلى الله عليه وسلم - يَأتي مَسْجِد قُبَاءَ كُلَّ سَبْتٍ رَاكبًا، وَمَاشِيًا وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ يَفْعَلُهُ.
وفي رواية: كَانَ النَّبيُّ - صلى الله عليه وسلم - يَأتي مَسْجِد قُبَاءَ كُلَّ سَبْتٍ رَاكبًا، وَمَاشِيًا وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ يَفْعَلُهُ.
হাদীস নং: ৩৭৫
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৪৬
আল্লাহর জন্য ভালোবাসার ফযীলত, এর প্রতি উৎসাহদান এবং কেউ কাউকে ভালোবাসলে তাকে সে সম্পর্কে অবহিত করা আর তাকে তা অবহতি করা হলে জবাবে সে যা বলবে।
মানবস্বভাবে নিহিত গুণাবলীর মধ্যে একটি বিশেষ গুণ হলো প্রেম-ভালোবাসা। মানুষ মাত্রই কাউকে না কাউকে অবশ্যই ভালোবাসে। ইসলাম মানবস্বভাবের কোনও বিশেষত্বকেই উপেক্ষা করে না; বরং তাকে গুরুত্ব দেয় এবং তার যথাযথ ব্যবহারের নির্দেশনাও দান করে। মহব্বত ও ভালোবাসার বিষয়টিও তার ব্যতিক্রম নয়। এ বিষয়ে ইসলামের মূল কথা হলো, তুমি যে-কাউকেই ভালোবাসবে, সে ভালোবাসা যেন কেবল আল্লাহ তাআলার জন্যই হয়, কোনও পার্থিব উদ্দেশ্যে নয়।
প্রকৃতপক্ষে পার্থিব উদ্দেশ্যে ভালোবাসা তো পরের কথা, মৌলিকভাবে পার্থিব কোনওকিছুকেই ভালোবাসা যায় না। পার্থিব সবকিছুই নশ্বর। সবকিছু ত্রুটিপূর্ণও বটে। দুনিয়ার কোনওকিছুই পুরোপুরি নিখুঁত নয়। কাজেই কাউকে বা কোনও বস্তুকে ভালোবাসলে এক তো তা স্থায়ী হয় না, দ্বিতীয়ত তার ত্রুটি ও বিভিন্ন খুঁত দ্বারা শারীরিক, মানসিক, আর্থিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ারও আশঙ্কা থাকে। আল্লাহ তাআলা অবিনশ্বর সত্তা। তিনি সকল দোষত্রুটির ঊর্ধ্বে। বরং তিনি সর্বপ্রকার মহান গুণের আধার। সকল সদ্গুণ তাঁর মধ্যে অসীম ও অফুরন্তরূপে বিদ্যমান। তাই প্রকৃত ভালোবাসা তাঁকেই নিবেদন করা সাজে।
দুনিয়ার সাধারণ রীতি হলো, কেউ কাউকে ভালোবাসলে সে তার সঙ্গে সম্পৃক্ত সবকিছুকেই ভালোবাসতে থাকে। বন্ধুর বন্ধুজনও বন্ধু হয়ে যায়। সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলাকে ভালোবাসবে, আর ভালো তো কেবল তাঁকেই বাসতে হবে, তার কর্তব্য আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পৃক্ত সবকিছুকে ভালোবাসা। সে হিসেবে তার ভালোবাসার আওতায় এসে যাবে কুল মাখলুকাত। মহাবিশ্বের সমস্ত সৃষ্টি আল্লাহ তাআলার কুদরতের প্রকাশ। সৃষ্টির বৈচিত্র্য তাঁর অফুরন্ত ক্ষমতার নিদর্শন। প্রতিটি সৃষ্টিতেই আছে সর্বশক্তিমান আল্লাহর অসীম কুদরত ও হিকমতের স্পর্শ। সুতরাং প্রকৃত মুমিন প্রতিটি সৃষ্টিকেই ভালোবাসবে। এমনকি সে কাফের-মুশরিকেরও কল্যাণকামী হয়ে যাবে। সে তাদের দোজাহানের মুক্তি কামনা করবে। সেই লক্ষ্যে তাদেরকে ঈমানের দাওয়াত দেবে। এমনকি শক্তি দিয়ে হলেও তাদেরকে ঈমানের পথে আনতে চাইবে, যাতে তারা আখেরাতের অনন্ত আযাব থেকে বেঁচে যায়।
মোটকথা, মুমিন-মুসলিম মৌলিকভাবে আল্লাহ তাআলাকে ভালোবাসবে, তারপর অন্য যাকে বা যা-কিছুকেই ভালোবাসবে, সে ভালোবাসা হবে কেবল আল্লাহ তাআলার জন্যই। সে ভালোবাসার অনেক ফযীলত। আল্লাহ তাআলার কাছে তার অনেক মর্যাদা।
এরূপ ভালোবাসার ক্ষেত্রে মুমিন-মুসলিম ব্যক্তির কী করণীয়, সে সম্পর্কে কুরআন হাদীছে সুস্পষ্ট নির্দেশনা আছে। ইমাম নববী রহ. এ অধ্যায়ে সে সম্পর্কে আয়াত ও হাদীছ উদ্ধৃত করেছেন। আমরা এবার তার বঙ্গানুবাদ ও সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা পেশ করছি। আল্লাহ তাআলা তাওফীক দান করুন।
আল্লাহর জন্য ভালোবাসার ফযীলত -সম্পর্কিত দু'টি আয়াত
এক নং আয়াত
مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ وَالَّذِينَ مَعَهُ أَشِدَّاءُ عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَاءُ بَيْنَهُمْ تَرَاهُمْ رُكَّعًا سُجَّدًا يَبْتَغُونَ فَضْلًا مِنَ اللَّهِ وَرِضْوَانًا سِيمَاهُمْ فِي وُجُوهِهِمْ مِنْ أَثَرِ السُّجُودِ ذَلِكَ مَثَلُهُمْ فِي التَّوْرَاةِ وَمَثَلُهُمْ فِي الْإِنْجِيلِ كَزَرْعٍ أَخْرَجَ شَطْأَهُ فَآزَرَهُ فَاسْتَغْلَظَ فَاسْتَوَى عَلَى سُوقِهِ يُعْجِبُ الزُّرَّاعَ لِيَغِيظَ بِهِمُ الْكُفَّارَ وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ مِنْهُمْ مَغْفِرَةً وَأَجْرًا عَظِيمًا
অর্থ : মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসূল। তাঁর সঙ্গে যারা আছে, তারা কাফেরদের বিরুদ্ধে কঠোর এবং আপসের মধ্যে একে অন্যের প্রতি দয়ার্দ্র। তুমি তাদেরকে দেখবে (কখনও) রুকুতে, (কখনও) সিজদায়, আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি সন্ধানে রত। তাদের আলামত তাদের চেহারায় পরিস্ফুট, সিজদার ফলে। এই হলো তাদের সেই গুণাবলী, যা তাওরাতে বর্ণিত আছে। আর ইনজীলে তাদের দৃষ্টান্ত এই, যেন এক শস্যক্ষেত্র, যা তার কুঁড়ি বের করল, তারপর তাকে শক্ত করল। তারপর তা পৃষ্ট হলো। তারপর তা নিজ কাণ্ডের উপর এভাবে সোজা দাঁড়িয়ে গেল যে, তা কৃষকদেরকে মুগ্ধ করে ফেলে। এটা এইজন্য যে, আল্লাহ তাদের (উন্নতি) দ্বারা কাফেরদের অন্তর্দাহ সৃষ্টি করেন। যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, আল্লাহ তাদেরকে মাগফিরাত ও মহা পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।২৬৭
ব্যাখ্যা
এ আয়াতে মহানবী হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সঙ্গের মুমিন তথা সাহাবায়ে কেরামের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হয়েছে। তার মধ্যে প্রথম বৈশিষ্ট্য হলো অমুসলিম কাফেরদের বিরুদ্ধে কঠোর-কঠিন থাকা এবং মুমিন- মুসলিমদের সঙ্গে নম্র-কোমল ও সদয় থাকা।
অমুসলিমদের সঙ্গে আচার-আচরণের নীতি
সাধারণভাবে সমস্ত মানুষের সঙ্গে মানবিক ও সৌজন্যমূলক আচরণ করা চাই। এটাই ইসলামের শিক্ষা। কাজেই মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে দুর্যোগকবলিত সমস্ত মানুষেরই সাহায্য করা উচিত। তৃষ্ণার্ত ব্যক্তি অমুসলিম হলেও তাকে পানি পান করানো একটি পুণ্যের কাজ। অমুসলিম ব্যক্তিও ক্ষুধার্ত হলে তার ক্ষুধা নিবারণের চেষ্টা ছাওয়াবের কাজরূপে গণ্য। শিশু ও বৃদ্ধ যেই হোক না কেন, তার প্রতি মমত্বপূর্ণ আচরণ করাই ইসলামের শিক্ষা। এমনিভাবে ইসলাম মানুষমাত্রের প্রতি ভদ্রতাপূর্ণ আচরণে উৎসাহ দেয়। তবে দীন ও ঈমানসম্পর্কিত বিষয়ে কোনওরূপ আপোষকামিতার সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে কঠোর নীতি অবলম্বনই কাম্য।
যুদ্ধক্ষেত্র ছাড়াও সাধারণ অবস্থায়ও একজন মুমিনের কর্তব্য অমুসলিমদের বিপরীতে দৃঢ়চেতা কঠোর-কঠিন অবস্থান অবলম্বন করা, যাতে তাদের উপর তার ঈমানী প্রভাব-প্রতিপত্তির বিস্তার ঘটে এবং শিরক ও কুফরের বিরুদ্ধে তীব্র ঘৃণা প্রকাশ পায়। কুরআন মাজীদের বহু আয়াতে মুমিনদেরকে এরূপ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেমন এক আয়াতে ইরশাদ-
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَنْ يَرْتَدَّ مِنْكُمْ عَنْ دِينِهِ فَسَوْفَ يَأْتِي اللَّهُ بِقَوْمٍ يُحِبُّهُمْ وَيُحِبُّونَهُ أَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ أَعِزَّةٍ عَلَى الْكَافِرِينَ يُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا يَخَافُونَ لَوْمَةَ لَائِمٍ
‘হে মুমিনগণ! তোমাদের মধ্য হতে কেউ যদি নিজ দীন থেকে ফিরে যায়, তবে আল্লাহ এমন লোক সৃষ্টি করবেন, যাদেরকে তিনি ভালোবাসবেন এবং তারাও তাকে ভালোবাসবে। তারা মুমিনদের প্রতি কোমল এবং কাফেরদের প্রতি কঠোর হবে। তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে এবং কোনও নিন্দুকের নিন্দাকে ভয় করবে না।২৬৮
অন্যত্র ইরশাদ-
وَلْيَجِدُوا فِيكُمْ غِلْظَةً وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ
‘তারা (অর্থাৎ কাফেরগণ) যেন তোমাদের মধ্যে কঠোরতা দেখতে পায়। জেনে রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ মুত্তাকীদের সঙ্গে আছেন।২৬৯
আরও ইরশাদ-
يَاأَيُّهَا النَّبِيُّ جَاهِدِ الْكُفَّارَ وَالْمُنَافِقِينَ وَاغْلُظْ عَلَيْهِمْ
‘হে নবী! কাফের ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ কর এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হয়ে যাও।২৭০
অমুসলিমদের সম্পর্কে কুরআন মাজীদের এ শিক্ষা সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে পরিপূর্ণরূপে প্রতিফলিত হয়েছিল। অপরদিকে কুরআন মাজীদেরই শিক্ষা অনুযায়ী তাঁরা পরস্পরে একে অন্যের প্রতি ছিলেন অত্যন্ত বিনয়ী ও সম্প্রীতিপূর্ণ। তারা পরস্পর ছিলেন ভাই-ভাইয়ের মত। এক মন ও এক দেহতুল্য। নিজ স্বার্থ ত্যাগ করে অন্যের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতেন।
তারপর তাদের দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য বলা হয়েছে যে, তারা আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি ও অনুগ্রহ কামনায় রুকু-সিজদায় রত থাকে এবং ফরয নামায় ছাড়াও বিভিন্ন নফল নামায বিশেষত তাহাজ্জুদের নামায আদায়ে যত্নবান থাকে। ফলে তাদের ইখলাস ও আল্লাহভীতির আছর ও দীপ্তি অন্তর ছাপিয়ে চেহারা থেকেও বিচ্ছুরিত হয়।
কুরআন ও বাইবেলে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের দৃষ্টান্ত
এ আয়াতে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের একটি কৌতূহলোদ্দীপক দৃষ্টান্ত বয়ান করা হয়েছে। দৃষ্টান্তটি শস্যক্ষেত্রের। তাতে পর্যায়ক্রমে কুঁড়ি বের হওয়া, সে কুঁড়ি শক্ত ও পুষ্ট হওয়া, তারপর তা নিজ কাণ্ডের উপর সোজা দাঁড়িয়ে যাওয়া ও কৃষকদেরকে মুগ্ধ করে ফেলার যে বিবরণ দেওয়া হয়েছে, তা মূলত ইসলামের সূচনা, ক্রমবিস্তার, শক্তিসঞ্চার ও প্রতিষ্ঠালাভেরই চিত্রাঙ্কন। প্রথমে এ দীনের উপর ছিলেন মাত্র একা এক ব্যক্তি। তারপর দু'জন হলেন। তারপর পর্যায়ক্রমে অনুসারীর সংখ্যা বাড়তে থাকে এবং একপর্যায়ে অমিত শক্তির অধিকারী হয়ে দুর্বার বেগে বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ে। এভাবে বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়া ফলে-ফুলে পরিপূর্ণ ইসলামের নয়নাভিরাম শস্যক্ষেত্র কাফের-মুশরিকদের কাছে প্রীতিকর বোধ হওয়ার কথা নয় । তাই তো আল্লাহ তাআলা বলেন, এটা এজন্য যে, আল্লাহ তাদের (উন্নতি) দ্বারা কাফেরদের অন্তর্দাহ সৃষ্টি করেন। সেই যে অন্তর্দাহ আজ থেকে চৌদ্দশ' বছর আগে তাদের সৃষ্টি হয়েছিল, তার জ্বালা ও বেদনা থেকে আজও তারা মুক্ত হতে পারেনি। তাই নানা ছলে নানা অজুহাতে একের পর এক সে জ্বালা প্রকাশ করে যাচ্ছে। বলাবাহুল্য, তাদের নিরবচ্ছিন্ন ইসলামবিরোধী প্রয়াস ও বহুবিচিত্র তৎপরতা সে অন্তর্জালারই বহিঃপ্রকাশ।
কুরআন মাজীদে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের এই যে দৃষ্টান্ত ও বৈশিষ্ট্যপূর্ণ অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে, তাওরাত ও ইনজীল গ্রন্থেও তা বর্ণিত আছে।
তাওরাতে প্রচুর পরিবর্তন-পরিবর্ধন ঘটা সত্ত্বেও তাতে এখনও পর্যন্ত মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের এসব গুণের উল্লেখ পাওয়া যায়। বাইবেলের যেসব পুস্তককে ইহুদী ও খ্রীষ্টান উভয় সম্প্রদায় 'তাওরাত' বলে স্বীকার করে, তার মধ্যে একখানি পুস্তকের নাম 'দ্বিতীয় বিবরণ'। এ পুস্তকের (৩৩ : ২-৩) একটি স্তবক সম্পর্কে জোর দিয়েই বলা যায়, কুরআন মাজীদের ইশারা সেদিকেই। তাতে আছে-
‘প্রভু সিনাই থেকে আসলেন সেয়ীর থেকে তাদের উপর আলো দিলেন এবং পারন পাহাড় থেকে তাঁর আলো ছড়িয়ে পড়ল। তিনি দশ হাজার ভক্ত পরিবৃত হয়ে আসলেন। তার ডান হাতে তাদের জন্য রয়েছে আগুন ভরা আইন। তিনি নিঃসন্দেহে জাতিসমূহকে ভালোবাসেন। তার পবিত্র লোকসমূহ তার অধীন এবং তারা সবাই তাঁর পায়ে নত হয়ে আছে। তারই কাছে তারা হুকুম পায়।' (দ্বিতীয় বিবরণ ৩৩ : ২-৩)
প্রকাশ থাকে যে, এটা হযরত মূসা আলাইহিস সালামের শেষ বক্তৃতা। এতে বলা হয়েছে, আল্লাহ তাআলার ওহী সর্বপ্রথম অবতীর্ণ হয়েছে সিনাই পাহাড়ে। এ ওহী দ্বারা তাওরাত বোঝানো হয়েছে। তারপর অবতীর্ণ হবে সেয়ীর পাহাড়ে। এটা ইনজীলের প্রতি ইঙ্গিত। কেননা সেয়ীর ছিল হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের প্রচার কেন্দ্র। বর্তমানে এর নাম 'জাবাল আল-খালীল'। তারপর বলা হয়েছে, তৃতীয় ওহী অবতীর্ণ হবে পারন পর্বতে। এর দ্বারা কুরআন মাজীদ বোঝানো হয়েছে। কেননা পারন বলে হেরা পাহাড়কে। এর গুহায়ই মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর সর্বপ্রথম ওহী নাযিল হয়েছিল। মক্কা বিজয়কালে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবী সংখ্যা ছিল বারো হাজার। সুতরাং 'তিনি দশ হাজার ভক্ত-পরিবৃত্ত হয়ে আসলেন'-এর দ্বারা সাহাবায়ে কেরামের দিকেই ইশারা করা হয়েছে। (উল্লেখ্য, তাওরাতের প্রাচীন মুদ্রণসমূহে সংখ্যা বলা হয়েছে দশ হাজার, কিন্তু বর্তমানে কোনও কোনও মুদ্রণে তা পরিবর্তন করে 'লাখ-লাখ' শব্দ লেখা হয়েছে।)
কুরআন মাজীদে বলা হয়েছে, ‘সাহাবীগণ কাফেরদের বিরুদ্ধে কঠোর'। দ্বিতীয় বিবরণে বলা হয়েছে, 'তার হাতে তাদের জন্য রয়েছে আগুন ভরা আইন'। কুরআন মাজীদে আছে, “তারা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের প্রতি দয়ার্দ্র'। আর দ্বিতীয় বিবরণে বলা হয়েছে, 'তিনি নিঃসন্দেহে জাতিসমূহকে ভালোবাসেন। সুতরাং এ ধারণা মোটেই অবান্তর নয় যে, কুরআন মাজীদের ইশারা তাওরাতের উপরিউক্ত স্তবকটিরই দিকে, যা পরিবর্তন হতে হতে 'দ্বিতীয় বিবরণ'-এর বর্তমান রূপে পৌঁছেছে।
মার্কের ইনজীলে এই একই উপমা এভাবে প্রদত্ত হয়েছে যে, প্রভুর রাজত্ব এরকম- একজন লোক জমিতে বীজ বপন করল। তারপর সে রাতে ঘুমিয়ে ও দিনে জেগে থেকে সময় কাটাল। ইতোমধ্যে সেই বীজ হতে চারা গজিয়ে বড় হলো। কিন্তু কিভাবে হলো তা সে জানল না। জমি নিজে নিজেই ফল জন্মাল। প্রথমে চারা, পরে শীষ এবং শীষের মাথায় পরিপূর্ণ শস্যের দানা। দানা পাকলে পর সে কাস্তে লাগাল। কারণ ফসল কাটার সময় হয়েছে (মার্ক ৪ : ২৬-২৯)। অনুরূপ উপমা লুক (১৩-১৮, ১৯) ও মার্ক (১৩-৩১)-এর ইনজীলেও আছে। (তাওযীহুল কুরআন, সংক্ষেপিত)
দুই নং আয়াত
وَالَّذِينَ تَبَوَّءُوا الدَّارَ وَالْإِيمَانَ مِنْ قَبْلِهِمْ يُحِبُّونَ مَنْ هَاجَرَ إِلَيْهِمْ
অর্থ : (এবং ‘ফায়’-এর সম্পদ) তাদেরও প্রাপ্য, যারা পূর্ব থেকেই এ নগরে (অর্থাৎ মদীনায়) ঈমানের সাথে অবস্থানরত আছে। যে-কেউ হিজরত করে তাদের কাছে আসে, তাদেরকে তারা ভালোবাসে।২৭১
ব্যাখ্যা
এ আয়াতটি আনসারদের সম্পর্কে। তারা ছিলেন মদীনার স্থানীয় বাসিন্দা। তারা ঈমান ও ইসলামকেও নিজেদের স্থায়ী ঠিকানা বানিয়ে নিয়েছিলেন। মক্কার যেসকল মুসলিম হিজরত করে তাদের কাছে চলে এসেছিলেন, তারা তাদেরকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসতেন। তাদেরকে নিজেদের জন্য মোটেই বোঝা মনে করতেন না। তাদের প্রতি কোনও কারণে ঈর্ষান্বিতও হতেন না। বরং নিজেদের যা-কিছু ছিল তা অকাতরে তাদের পেছনে ব্যয় করতেন।
এ আয়াতের পরবর্তী অংশে তাদের সে অকৃপণ ব্যয়ের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে এভাবে যে-
وَلَا يَجِدُونَ فِي صُدُورِهِمْ حَاجَةً مِمَّا أُوتُوا وَيُؤْثِرُونَ عَلَى أَنْفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ وَمَنْ يُوقَ شُحَّ نَفْسِهِ فَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
‘এবং যা-কিছু তাদেরকে (অর্থাৎ মুহাজিরদেরকে) দেওয়া হয়, তার জন্য নিজেদের অন্তরে কোনও চাহিদা বোধ করে না এবং তাদেরকে তারা নিজেদের উপর প্রাধান্য দেয়, যদিও তাদের অভাব-অনটন থাকে। যারা স্বভাবগত কার্পণ্য হতে মুক্তি লাভ করে, তারাই তো সফলকাম।'
অর্থাৎ মুহাজিরদেরকে আল্লাহ তাআলা যে ইজ্জত-সম্মান দিয়েছেন অথবা 'ফায়’- এর সম্পদ থেকে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে যা দিতেন, তা দেখে তাদের অন্তরে বিন্দুমাত্র ঈর্ষা জাগত না; বরং তাতে তারা খুশি থাকতেন। এমনকি নিজেদের সম্পদেও তারা নিজেদের স্বার্থ দাবিয়ে রেখে মুহাজিরদেরকেই অগ্রাধিকার দিতেন। নিজেরা না খেয়ে তাদেরকে খাওয়াতেন। তাদের সে ত্যাগের এমন এমন বিস্ময়কর ঘটনা আছে, দুনিয়ার অন্য কোনও জাতিতে তার নজির পাওয়া যাবে না।
বস্তুত এরূপ ত্যাগ ও কুরবানী স্বীকার করা কেবল আল্লাহ তাআলার তাওফীকেই সম্ভব। আল্লাহ তাআলা যার অন্তর থেকে লোভ-লালসা, কৃপণতা ও হিংসা-বিদ্বেষ মিটিয়ে দেন, তাদের পক্ষেই ত্যাগের এরূপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করা সম্ভব। দোজাহানের মুক্তি ও সফলতা তাদেরই পদচুম্বন করে।
২৬৭. সূরা ফাতহ (৪৮), আয়াত ২৯
২৬৮. সূরা মায়িদা (৫), আয়াত ৫৪
২৬৯. সূরা তাওবা (৯), আয়াত ১২৩
২৭০. সূরা তাহরীম (৬৬), আয়াত ৯
২৭১. সূরা হাশর (৫৯), আয়াত ৯
আল্লাহর জন্য ভালোবাসার ফযীলত, এর প্রতি উৎসাহদান এবং কেউ কাউকে ভালোবাসলে তাকে সে সম্পর্কে অবহিত করা আর তাকে তা অবহতি করা হলে জবাবে সে যা বলবে।
মানবস্বভাবে নিহিত গুণাবলীর মধ্যে একটি বিশেষ গুণ হলো প্রেম-ভালোবাসা। মানুষ মাত্রই কাউকে না কাউকে অবশ্যই ভালোবাসে। ইসলাম মানবস্বভাবের কোনও বিশেষত্বকেই উপেক্ষা করে না; বরং তাকে গুরুত্ব দেয় এবং তার যথাযথ ব্যবহারের নির্দেশনাও দান করে। মহব্বত ও ভালোবাসার বিষয়টিও তার ব্যতিক্রম নয়। এ বিষয়ে ইসলামের মূল কথা হলো, তুমি যে-কাউকেই ভালোবাসবে, সে ভালোবাসা যেন কেবল আল্লাহ তাআলার জন্যই হয়, কোনও পার্থিব উদ্দেশ্যে নয়।
প্রকৃতপক্ষে পার্থিব উদ্দেশ্যে ভালোবাসা তো পরের কথা, মৌলিকভাবে পার্থিব কোনওকিছুকেই ভালোবাসা যায় না। পার্থিব সবকিছুই নশ্বর। সবকিছু ত্রুটিপূর্ণও বটে। দুনিয়ার কোনওকিছুই পুরোপুরি নিখুঁত নয়। কাজেই কাউকে বা কোনও বস্তুকে ভালোবাসলে এক তো তা স্থায়ী হয় না, দ্বিতীয়ত তার ত্রুটি ও বিভিন্ন খুঁত দ্বারা শারীরিক, মানসিক, আর্থিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ারও আশঙ্কা থাকে। আল্লাহ তাআলা অবিনশ্বর সত্তা। তিনি সকল দোষত্রুটির ঊর্ধ্বে। বরং তিনি সর্বপ্রকার মহান গুণের আধার। সকল সদ্গুণ তাঁর মধ্যে অসীম ও অফুরন্তরূপে বিদ্যমান। তাই প্রকৃত ভালোবাসা তাঁকেই নিবেদন করা সাজে।
দুনিয়ার সাধারণ রীতি হলো, কেউ কাউকে ভালোবাসলে সে তার সঙ্গে সম্পৃক্ত সবকিছুকেই ভালোবাসতে থাকে। বন্ধুর বন্ধুজনও বন্ধু হয়ে যায়। সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলাকে ভালোবাসবে, আর ভালো তো কেবল তাঁকেই বাসতে হবে, তার কর্তব্য আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পৃক্ত সবকিছুকে ভালোবাসা। সে হিসেবে তার ভালোবাসার আওতায় এসে যাবে কুল মাখলুকাত। মহাবিশ্বের সমস্ত সৃষ্টি আল্লাহ তাআলার কুদরতের প্রকাশ। সৃষ্টির বৈচিত্র্য তাঁর অফুরন্ত ক্ষমতার নিদর্শন। প্রতিটি সৃষ্টিতেই আছে সর্বশক্তিমান আল্লাহর অসীম কুদরত ও হিকমতের স্পর্শ। সুতরাং প্রকৃত মুমিন প্রতিটি সৃষ্টিকেই ভালোবাসবে। এমনকি সে কাফের-মুশরিকেরও কল্যাণকামী হয়ে যাবে। সে তাদের দোজাহানের মুক্তি কামনা করবে। সেই লক্ষ্যে তাদেরকে ঈমানের দাওয়াত দেবে। এমনকি শক্তি দিয়ে হলেও তাদেরকে ঈমানের পথে আনতে চাইবে, যাতে তারা আখেরাতের অনন্ত আযাব থেকে বেঁচে যায়।
মোটকথা, মুমিন-মুসলিম মৌলিকভাবে আল্লাহ তাআলাকে ভালোবাসবে, তারপর অন্য যাকে বা যা-কিছুকেই ভালোবাসবে, সে ভালোবাসা হবে কেবল আল্লাহ তাআলার জন্যই। সে ভালোবাসার অনেক ফযীলত। আল্লাহ তাআলার কাছে তার অনেক মর্যাদা।
এরূপ ভালোবাসার ক্ষেত্রে মুমিন-মুসলিম ব্যক্তির কী করণীয়, সে সম্পর্কে কুরআন হাদীছে সুস্পষ্ট নির্দেশনা আছে। ইমাম নববী রহ. এ অধ্যায়ে সে সম্পর্কে আয়াত ও হাদীছ উদ্ধৃত করেছেন। আমরা এবার তার বঙ্গানুবাদ ও সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা পেশ করছি। আল্লাহ তাআলা তাওফীক দান করুন।
আল্লাহর জন্য ভালোবাসার ফযীলত -সম্পর্কিত দু'টি আয়াত
এক নং আয়াত
مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ وَالَّذِينَ مَعَهُ أَشِدَّاءُ عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَاءُ بَيْنَهُمْ تَرَاهُمْ رُكَّعًا سُجَّدًا يَبْتَغُونَ فَضْلًا مِنَ اللَّهِ وَرِضْوَانًا سِيمَاهُمْ فِي وُجُوهِهِمْ مِنْ أَثَرِ السُّجُودِ ذَلِكَ مَثَلُهُمْ فِي التَّوْرَاةِ وَمَثَلُهُمْ فِي الْإِنْجِيلِ كَزَرْعٍ أَخْرَجَ شَطْأَهُ فَآزَرَهُ فَاسْتَغْلَظَ فَاسْتَوَى عَلَى سُوقِهِ يُعْجِبُ الزُّرَّاعَ لِيَغِيظَ بِهِمُ الْكُفَّارَ وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ مِنْهُمْ مَغْفِرَةً وَأَجْرًا عَظِيمًا
অর্থ : মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসূল। তাঁর সঙ্গে যারা আছে, তারা কাফেরদের বিরুদ্ধে কঠোর এবং আপসের মধ্যে একে অন্যের প্রতি দয়ার্দ্র। তুমি তাদেরকে দেখবে (কখনও) রুকুতে, (কখনও) সিজদায়, আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি সন্ধানে রত। তাদের আলামত তাদের চেহারায় পরিস্ফুট, সিজদার ফলে। এই হলো তাদের সেই গুণাবলী, যা তাওরাতে বর্ণিত আছে। আর ইনজীলে তাদের দৃষ্টান্ত এই, যেন এক শস্যক্ষেত্র, যা তার কুঁড়ি বের করল, তারপর তাকে শক্ত করল। তারপর তা পৃষ্ট হলো। তারপর তা নিজ কাণ্ডের উপর এভাবে সোজা দাঁড়িয়ে গেল যে, তা কৃষকদেরকে মুগ্ধ করে ফেলে। এটা এইজন্য যে, আল্লাহ তাদের (উন্নতি) দ্বারা কাফেরদের অন্তর্দাহ সৃষ্টি করেন। যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, আল্লাহ তাদেরকে মাগফিরাত ও মহা পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।২৬৭
ব্যাখ্যা
এ আয়াতে মহানবী হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সঙ্গের মুমিন তথা সাহাবায়ে কেরামের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হয়েছে। তার মধ্যে প্রথম বৈশিষ্ট্য হলো অমুসলিম কাফেরদের বিরুদ্ধে কঠোর-কঠিন থাকা এবং মুমিন- মুসলিমদের সঙ্গে নম্র-কোমল ও সদয় থাকা।
অমুসলিমদের সঙ্গে আচার-আচরণের নীতি
সাধারণভাবে সমস্ত মানুষের সঙ্গে মানবিক ও সৌজন্যমূলক আচরণ করা চাই। এটাই ইসলামের শিক্ষা। কাজেই মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে দুর্যোগকবলিত সমস্ত মানুষেরই সাহায্য করা উচিত। তৃষ্ণার্ত ব্যক্তি অমুসলিম হলেও তাকে পানি পান করানো একটি পুণ্যের কাজ। অমুসলিম ব্যক্তিও ক্ষুধার্ত হলে তার ক্ষুধা নিবারণের চেষ্টা ছাওয়াবের কাজরূপে গণ্য। শিশু ও বৃদ্ধ যেই হোক না কেন, তার প্রতি মমত্বপূর্ণ আচরণ করাই ইসলামের শিক্ষা। এমনিভাবে ইসলাম মানুষমাত্রের প্রতি ভদ্রতাপূর্ণ আচরণে উৎসাহ দেয়। তবে দীন ও ঈমানসম্পর্কিত বিষয়ে কোনওরূপ আপোষকামিতার সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে কঠোর নীতি অবলম্বনই কাম্য।
যুদ্ধক্ষেত্র ছাড়াও সাধারণ অবস্থায়ও একজন মুমিনের কর্তব্য অমুসলিমদের বিপরীতে দৃঢ়চেতা কঠোর-কঠিন অবস্থান অবলম্বন করা, যাতে তাদের উপর তার ঈমানী প্রভাব-প্রতিপত্তির বিস্তার ঘটে এবং শিরক ও কুফরের বিরুদ্ধে তীব্র ঘৃণা প্রকাশ পায়। কুরআন মাজীদের বহু আয়াতে মুমিনদেরকে এরূপ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেমন এক আয়াতে ইরশাদ-
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَنْ يَرْتَدَّ مِنْكُمْ عَنْ دِينِهِ فَسَوْفَ يَأْتِي اللَّهُ بِقَوْمٍ يُحِبُّهُمْ وَيُحِبُّونَهُ أَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ أَعِزَّةٍ عَلَى الْكَافِرِينَ يُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا يَخَافُونَ لَوْمَةَ لَائِمٍ
‘হে মুমিনগণ! তোমাদের মধ্য হতে কেউ যদি নিজ দীন থেকে ফিরে যায়, তবে আল্লাহ এমন লোক সৃষ্টি করবেন, যাদেরকে তিনি ভালোবাসবেন এবং তারাও তাকে ভালোবাসবে। তারা মুমিনদের প্রতি কোমল এবং কাফেরদের প্রতি কঠোর হবে। তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে এবং কোনও নিন্দুকের নিন্দাকে ভয় করবে না।২৬৮
অন্যত্র ইরশাদ-
وَلْيَجِدُوا فِيكُمْ غِلْظَةً وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ
‘তারা (অর্থাৎ কাফেরগণ) যেন তোমাদের মধ্যে কঠোরতা দেখতে পায়। জেনে রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ মুত্তাকীদের সঙ্গে আছেন।২৬৯
আরও ইরশাদ-
يَاأَيُّهَا النَّبِيُّ جَاهِدِ الْكُفَّارَ وَالْمُنَافِقِينَ وَاغْلُظْ عَلَيْهِمْ
‘হে নবী! কাফের ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ কর এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হয়ে যাও।২৭০
অমুসলিমদের সম্পর্কে কুরআন মাজীদের এ শিক্ষা সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে পরিপূর্ণরূপে প্রতিফলিত হয়েছিল। অপরদিকে কুরআন মাজীদেরই শিক্ষা অনুযায়ী তাঁরা পরস্পরে একে অন্যের প্রতি ছিলেন অত্যন্ত বিনয়ী ও সম্প্রীতিপূর্ণ। তারা পরস্পর ছিলেন ভাই-ভাইয়ের মত। এক মন ও এক দেহতুল্য। নিজ স্বার্থ ত্যাগ করে অন্যের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতেন।
তারপর তাদের দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য বলা হয়েছে যে, তারা আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি ও অনুগ্রহ কামনায় রুকু-সিজদায় রত থাকে এবং ফরয নামায় ছাড়াও বিভিন্ন নফল নামায বিশেষত তাহাজ্জুদের নামায আদায়ে যত্নবান থাকে। ফলে তাদের ইখলাস ও আল্লাহভীতির আছর ও দীপ্তি অন্তর ছাপিয়ে চেহারা থেকেও বিচ্ছুরিত হয়।
কুরআন ও বাইবেলে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের দৃষ্টান্ত
এ আয়াতে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের একটি কৌতূহলোদ্দীপক দৃষ্টান্ত বয়ান করা হয়েছে। দৃষ্টান্তটি শস্যক্ষেত্রের। তাতে পর্যায়ক্রমে কুঁড়ি বের হওয়া, সে কুঁড়ি শক্ত ও পুষ্ট হওয়া, তারপর তা নিজ কাণ্ডের উপর সোজা দাঁড়িয়ে যাওয়া ও কৃষকদেরকে মুগ্ধ করে ফেলার যে বিবরণ দেওয়া হয়েছে, তা মূলত ইসলামের সূচনা, ক্রমবিস্তার, শক্তিসঞ্চার ও প্রতিষ্ঠালাভেরই চিত্রাঙ্কন। প্রথমে এ দীনের উপর ছিলেন মাত্র একা এক ব্যক্তি। তারপর দু'জন হলেন। তারপর পর্যায়ক্রমে অনুসারীর সংখ্যা বাড়তে থাকে এবং একপর্যায়ে অমিত শক্তির অধিকারী হয়ে দুর্বার বেগে বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ে। এভাবে বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়া ফলে-ফুলে পরিপূর্ণ ইসলামের নয়নাভিরাম শস্যক্ষেত্র কাফের-মুশরিকদের কাছে প্রীতিকর বোধ হওয়ার কথা নয় । তাই তো আল্লাহ তাআলা বলেন, এটা এজন্য যে, আল্লাহ তাদের (উন্নতি) দ্বারা কাফেরদের অন্তর্দাহ সৃষ্টি করেন। সেই যে অন্তর্দাহ আজ থেকে চৌদ্দশ' বছর আগে তাদের সৃষ্টি হয়েছিল, তার জ্বালা ও বেদনা থেকে আজও তারা মুক্ত হতে পারেনি। তাই নানা ছলে নানা অজুহাতে একের পর এক সে জ্বালা প্রকাশ করে যাচ্ছে। বলাবাহুল্য, তাদের নিরবচ্ছিন্ন ইসলামবিরোধী প্রয়াস ও বহুবিচিত্র তৎপরতা সে অন্তর্জালারই বহিঃপ্রকাশ।
কুরআন মাজীদে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের এই যে দৃষ্টান্ত ও বৈশিষ্ট্যপূর্ণ অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে, তাওরাত ও ইনজীল গ্রন্থেও তা বর্ণিত আছে।
তাওরাতে প্রচুর পরিবর্তন-পরিবর্ধন ঘটা সত্ত্বেও তাতে এখনও পর্যন্ত মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের এসব গুণের উল্লেখ পাওয়া যায়। বাইবেলের যেসব পুস্তককে ইহুদী ও খ্রীষ্টান উভয় সম্প্রদায় 'তাওরাত' বলে স্বীকার করে, তার মধ্যে একখানি পুস্তকের নাম 'দ্বিতীয় বিবরণ'। এ পুস্তকের (৩৩ : ২-৩) একটি স্তবক সম্পর্কে জোর দিয়েই বলা যায়, কুরআন মাজীদের ইশারা সেদিকেই। তাতে আছে-
‘প্রভু সিনাই থেকে আসলেন সেয়ীর থেকে তাদের উপর আলো দিলেন এবং পারন পাহাড় থেকে তাঁর আলো ছড়িয়ে পড়ল। তিনি দশ হাজার ভক্ত পরিবৃত হয়ে আসলেন। তার ডান হাতে তাদের জন্য রয়েছে আগুন ভরা আইন। তিনি নিঃসন্দেহে জাতিসমূহকে ভালোবাসেন। তার পবিত্র লোকসমূহ তার অধীন এবং তারা সবাই তাঁর পায়ে নত হয়ে আছে। তারই কাছে তারা হুকুম পায়।' (দ্বিতীয় বিবরণ ৩৩ : ২-৩)
প্রকাশ থাকে যে, এটা হযরত মূসা আলাইহিস সালামের শেষ বক্তৃতা। এতে বলা হয়েছে, আল্লাহ তাআলার ওহী সর্বপ্রথম অবতীর্ণ হয়েছে সিনাই পাহাড়ে। এ ওহী দ্বারা তাওরাত বোঝানো হয়েছে। তারপর অবতীর্ণ হবে সেয়ীর পাহাড়ে। এটা ইনজীলের প্রতি ইঙ্গিত। কেননা সেয়ীর ছিল হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের প্রচার কেন্দ্র। বর্তমানে এর নাম 'জাবাল আল-খালীল'। তারপর বলা হয়েছে, তৃতীয় ওহী অবতীর্ণ হবে পারন পর্বতে। এর দ্বারা কুরআন মাজীদ বোঝানো হয়েছে। কেননা পারন বলে হেরা পাহাড়কে। এর গুহায়ই মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর সর্বপ্রথম ওহী নাযিল হয়েছিল। মক্কা বিজয়কালে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবী সংখ্যা ছিল বারো হাজার। সুতরাং 'তিনি দশ হাজার ভক্ত-পরিবৃত্ত হয়ে আসলেন'-এর দ্বারা সাহাবায়ে কেরামের দিকেই ইশারা করা হয়েছে। (উল্লেখ্য, তাওরাতের প্রাচীন মুদ্রণসমূহে সংখ্যা বলা হয়েছে দশ হাজার, কিন্তু বর্তমানে কোনও কোনও মুদ্রণে তা পরিবর্তন করে 'লাখ-লাখ' শব্দ লেখা হয়েছে।)
কুরআন মাজীদে বলা হয়েছে, ‘সাহাবীগণ কাফেরদের বিরুদ্ধে কঠোর'। দ্বিতীয় বিবরণে বলা হয়েছে, 'তার হাতে তাদের জন্য রয়েছে আগুন ভরা আইন'। কুরআন মাজীদে আছে, “তারা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের প্রতি দয়ার্দ্র'। আর দ্বিতীয় বিবরণে বলা হয়েছে, 'তিনি নিঃসন্দেহে জাতিসমূহকে ভালোবাসেন। সুতরাং এ ধারণা মোটেই অবান্তর নয় যে, কুরআন মাজীদের ইশারা তাওরাতের উপরিউক্ত স্তবকটিরই দিকে, যা পরিবর্তন হতে হতে 'দ্বিতীয় বিবরণ'-এর বর্তমান রূপে পৌঁছেছে।
মার্কের ইনজীলে এই একই উপমা এভাবে প্রদত্ত হয়েছে যে, প্রভুর রাজত্ব এরকম- একজন লোক জমিতে বীজ বপন করল। তারপর সে রাতে ঘুমিয়ে ও দিনে জেগে থেকে সময় কাটাল। ইতোমধ্যে সেই বীজ হতে চারা গজিয়ে বড় হলো। কিন্তু কিভাবে হলো তা সে জানল না। জমি নিজে নিজেই ফল জন্মাল। প্রথমে চারা, পরে শীষ এবং শীষের মাথায় পরিপূর্ণ শস্যের দানা। দানা পাকলে পর সে কাস্তে লাগাল। কারণ ফসল কাটার সময় হয়েছে (মার্ক ৪ : ২৬-২৯)। অনুরূপ উপমা লুক (১৩-১৮, ১৯) ও মার্ক (১৩-৩১)-এর ইনজীলেও আছে। (তাওযীহুল কুরআন, সংক্ষেপিত)
দুই নং আয়াত
وَالَّذِينَ تَبَوَّءُوا الدَّارَ وَالْإِيمَانَ مِنْ قَبْلِهِمْ يُحِبُّونَ مَنْ هَاجَرَ إِلَيْهِمْ
অর্থ : (এবং ‘ফায়’-এর সম্পদ) তাদেরও প্রাপ্য, যারা পূর্ব থেকেই এ নগরে (অর্থাৎ মদীনায়) ঈমানের সাথে অবস্থানরত আছে। যে-কেউ হিজরত করে তাদের কাছে আসে, তাদেরকে তারা ভালোবাসে।২৭১
ব্যাখ্যা
এ আয়াতটি আনসারদের সম্পর্কে। তারা ছিলেন মদীনার স্থানীয় বাসিন্দা। তারা ঈমান ও ইসলামকেও নিজেদের স্থায়ী ঠিকানা বানিয়ে নিয়েছিলেন। মক্কার যেসকল মুসলিম হিজরত করে তাদের কাছে চলে এসেছিলেন, তারা তাদেরকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসতেন। তাদেরকে নিজেদের জন্য মোটেই বোঝা মনে করতেন না। তাদের প্রতি কোনও কারণে ঈর্ষান্বিতও হতেন না। বরং নিজেদের যা-কিছু ছিল তা অকাতরে তাদের পেছনে ব্যয় করতেন।
এ আয়াতের পরবর্তী অংশে তাদের সে অকৃপণ ব্যয়ের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে এভাবে যে-
وَلَا يَجِدُونَ فِي صُدُورِهِمْ حَاجَةً مِمَّا أُوتُوا وَيُؤْثِرُونَ عَلَى أَنْفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ وَمَنْ يُوقَ شُحَّ نَفْسِهِ فَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
‘এবং যা-কিছু তাদেরকে (অর্থাৎ মুহাজিরদেরকে) দেওয়া হয়, তার জন্য নিজেদের অন্তরে কোনও চাহিদা বোধ করে না এবং তাদেরকে তারা নিজেদের উপর প্রাধান্য দেয়, যদিও তাদের অভাব-অনটন থাকে। যারা স্বভাবগত কার্পণ্য হতে মুক্তি লাভ করে, তারাই তো সফলকাম।'
অর্থাৎ মুহাজিরদেরকে আল্লাহ তাআলা যে ইজ্জত-সম্মান দিয়েছেন অথবা 'ফায়’- এর সম্পদ থেকে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে যা দিতেন, তা দেখে তাদের অন্তরে বিন্দুমাত্র ঈর্ষা জাগত না; বরং তাতে তারা খুশি থাকতেন। এমনকি নিজেদের সম্পদেও তারা নিজেদের স্বার্থ দাবিয়ে রেখে মুহাজিরদেরকেই অগ্রাধিকার দিতেন। নিজেরা না খেয়ে তাদেরকে খাওয়াতেন। তাদের সে ত্যাগের এমন এমন বিস্ময়কর ঘটনা আছে, দুনিয়ার অন্য কোনও জাতিতে তার নজির পাওয়া যাবে না।
বস্তুত এরূপ ত্যাগ ও কুরবানী স্বীকার করা কেবল আল্লাহ তাআলার তাওফীকেই সম্ভব। আল্লাহ তাআলা যার অন্তর থেকে লোভ-লালসা, কৃপণতা ও হিংসা-বিদ্বেষ মিটিয়ে দেন, তাদের পক্ষেই ত্যাগের এরূপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করা সম্ভব। দোজাহানের মুক্তি ও সফলতা তাদেরই পদচুম্বন করে।
২৬৭. সূরা ফাতহ (৪৮), আয়াত ২৯
২৬৮. সূরা মায়িদা (৫), আয়াত ৫৪
২৬৯. সূরা তাওবা (৯), আয়াত ১২৩
২৭০. সূরা তাহরীম (৬৬), আয়াত ৯
২৭১. সূরা হাশর (৫৯), আয়াত ৯
ঈমানের আস্বাদ পেতে হলে
হাদীছ নং : ৩৭৫
হযরত আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তিনটি বিষয় যার মধ্যে থাকে সে ঈমানের স্বাদ পায়। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল বেশি প্রিয় হওয়া তাঁদের ছাড়া আর সবকিছু অপেক্ষা, কোনও ব্যক্তিকে কেবল আল্লাহ তা'আলার জন্যই ভালোবাসা, আল্লাহ তা'আলা কাউকে কুফর থেকে মুক্তিদানের পর তার সেদিকে ফিরে যাওয়াটা এমন অপসন্দ করা যেমনটা আগুনে নিক্ষপ্ত হওয়াকে অপসন্দ করে -বুখারী ও মুসলিম।
সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ১৬; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ৪৩; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ৪৯৮৭; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৬২৪; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীছ নং ৪০৩৩; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ১২০০২; মুসনাদে আবূ ইয়া'লা, হাদীছ নং ২৮১৩; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ২৩৭; তাবারানী, আল-মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ৮০১৯
হাদীছ নং : ৩৭৫
হযরত আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তিনটি বিষয় যার মধ্যে থাকে সে ঈমানের স্বাদ পায়। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল বেশি প্রিয় হওয়া তাঁদের ছাড়া আর সবকিছু অপেক্ষা, কোনও ব্যক্তিকে কেবল আল্লাহ তা'আলার জন্যই ভালোবাসা, আল্লাহ তা'আলা কাউকে কুফর থেকে মুক্তিদানের পর তার সেদিকে ফিরে যাওয়াটা এমন অপসন্দ করা যেমনটা আগুনে নিক্ষপ্ত হওয়াকে অপসন্দ করে -বুখারী ও মুসলিম।
সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ১৬; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ৪৩; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ৪৯৮৭; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৬২৪; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীছ নং ৪০৩৩; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ১২০০২; মুসনাদে আবূ ইয়া'লা, হাদীছ নং ২৮১৩; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ২৩৭; তাবারানী, আল-মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ৮০১৯
مقدمة الامام النووي
46 - باب فضل الحب في الله والحث عَلَيهِ وإعلام الرجل من يحبه، أنه يحبه، وماذا يقول لَهُ إِذَا أعلمه
قَالَ الله تَعَالَى: {مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللهِ وَالَّذِينَ مَعَهُ أَشِدَّاءُ عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَاءُ بَيْنَهُمْ} [الفتح: 29] إِلَى آخر السورة، وَقالَ تَعَالَى: {وَالَّذِينَ تَبَوَّأُوا الدَّارَ وَالإِيمَانَ مِنْ قَبْلِهِمْ يُحِبُّونَ مَنْ هَاجَرَ إِلَيْهِمْ} [الحشر: 9].
قَالَ الله تَعَالَى: {مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللهِ وَالَّذِينَ مَعَهُ أَشِدَّاءُ عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَاءُ بَيْنَهُمْ} [الفتح: 29] إِلَى آخر السورة، وَقالَ تَعَالَى: {وَالَّذِينَ تَبَوَّأُوا الدَّارَ وَالإِيمَانَ مِنْ قَبْلِهِمْ يُحِبُّونَ مَنْ هَاجَرَ إِلَيْهِمْ} [الحشر: 9].
375 - وعن أنسٍ - رضي الله عنه - عن النَّبيّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «ثَلاثٌ مَنْ كُنَّ فِيهِ وَجَدَ بِهِنَّ حَلاوَةَ الإيمانِ: أَنْ يَكُونَ اللهُ وَرَسُولُهُ أحَبَّ إِلَيْهِ مِمَّا سَوَاهُمَا، وَأنْ يُحِبَّ المَرْءَ لاَ يُحِبُّهُ إلاَّ للهِ، وَأَنْ يَكْرَهَ أَنْ يَعُودَ في الكُفْرِ بَعْدَ أَنْ أَنْقَذَهُ الله مِنْهُ، كَمَا يَكْرَهُ أَنْ يُقْذَفَ في النَّارِ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
হাদীস নং: ৩৭৬
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর জন্য ভালোবাসার ফযীলত, এর প্রতি উৎসাহদান এবং কেউ কাউকে ভালোবাসলে তাকে সে সম্পর্কে অবহিত করা আর তাকে তা অবহিত করা হলে জবাবে সে যা বলবে।
আরশের ছায়ায় আশ্রয় পাবে যারা
হাদীছ নং : ৩৭৬
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, সাত ব্যক্তি এমন যাদেরকে আল্লাহ সেই দিন নিজ (আরশের) ছায়ায় স্থান দেবেন, যেদিন তাঁর ছায়া ছাড়া অন্য কোনও ছায়া থাকবে না। তারা হলো- ন্যায়পরায়ণ শাসক; ওই যুবক যে মহান আল্লাহর ইবাদতের ভেতর বেড়ে উঠে; ওই ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদের সঙ্গে ঝুলন্ত; ওই দুই ব্যক্তি যারা আল্লাহর উদ্দেশ্যে একে অন্যকে ভালোবাসে, তাঁরই জন্য একত্র হয় এবং তাঁরই জন্য পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়; ওই ব্যক্তি যাকে কোনও খান্দানী ও সুন্দরী নারী ডাকে আর উত্তরে সে বলে, আমি আল্লাহকে ভয় করি; ওই ব্যক্তি যে-কোনও দান-সদাকা করে, আর সে তা এমনভাবে গোপন করে যে, তার বাম হাত জানে না ডান হাত কী ব্যয় করে; এবং ওই ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে আর তার দুই চোখ অশ্রুপ্লাবিত হয় -বুখারী ও মুসলিম।
সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৬৬০; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১০৩১; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ৫৩৮০; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৩৯১; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৯৬৬৫; সহীহ ইবনে খুজায়মা, হাদীছ নং ৩৫৮; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৪৪৮৬; তাবারানী, আল-মুজামুল আওসাত, হাদীছ নং ৬৩২৪; বায়হাকী, আস্সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ৪৯৮৭
হাদীছ নং : ৩৭৬
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, সাত ব্যক্তি এমন যাদেরকে আল্লাহ সেই দিন নিজ (আরশের) ছায়ায় স্থান দেবেন, যেদিন তাঁর ছায়া ছাড়া অন্য কোনও ছায়া থাকবে না। তারা হলো- ন্যায়পরায়ণ শাসক; ওই যুবক যে মহান আল্লাহর ইবাদতের ভেতর বেড়ে উঠে; ওই ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদের সঙ্গে ঝুলন্ত; ওই দুই ব্যক্তি যারা আল্লাহর উদ্দেশ্যে একে অন্যকে ভালোবাসে, তাঁরই জন্য একত্র হয় এবং তাঁরই জন্য পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়; ওই ব্যক্তি যাকে কোনও খান্দানী ও সুন্দরী নারী ডাকে আর উত্তরে সে বলে, আমি আল্লাহকে ভয় করি; ওই ব্যক্তি যে-কোনও দান-সদাকা করে, আর সে তা এমনভাবে গোপন করে যে, তার বাম হাত জানে না ডান হাত কী ব্যয় করে; এবং ওই ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে আর তার দুই চোখ অশ্রুপ্লাবিত হয় -বুখারী ও মুসলিম।
সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৬৬০; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১০৩১; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ৫৩৮০; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৩৯১; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৯৬৬৫; সহীহ ইবনে খুজায়মা, হাদীছ নং ৩৫৮; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৪৪৮৬; তাবারানী, আল-মুজামুল আওসাত, হাদীছ নং ৬৩২৪; বায়হাকী, আস্সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ৪৯৮৭
مقدمة الامام النووي
46 - باب فضل الحب في الله والحث عَلَيهِ وإعلام الرجل من يحبه، أنه يحبه، وماذا يقول لَهُ إِذَا أعلمه
376 - وعن أَبي هريرة - رضي الله عنه - عن النَّبيّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «سَبْعَةٌ يُظِلُّهُمُ اللهُ في ظِلِّهِ يَوْمَ لاَ ظِلَّ إلاَّ ظِلُّهُ: إمَامٌ عَادِلٌ، وَشَابٌّ نَشَأ في عِبَادَةِ الله - عز وجل - وَرَجُلٌ قَلْبُهُ مُعَلَّقٌ بِالمَسَاجِدِ، وَرَجُلاَنِ تَحَابّا في اللهِ اجْتَمَعَا عَلَيهِ وتَفَرَّقَا عَلَيهِ، وَرَجُلٌ دَعَتْهُ امْرَأةٌ ذَاتُ حُسْنٍ وَجَمَالٍ، [ص:137] فَقَالَ: إنِّي أخَافُ الله، وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ بِصَدَقَةٍ، فَأخْفَاهَا حَتَّى لاَ تَعْلَمَ شِمَالُهُ مَا تُنْفِقُ يَمِينُهُ، وَرَجُلٌ ذَكَرَ الله خَالِيًا فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
হাদীস নং: ৩৭৭
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর জন্য ভালোবাসার ফযীলত, এর প্রতি উৎসাহদান এবং কেউ কাউকে ভালোবাসলে তাকে সে সম্পর্কে অবহিত করা আর তাকে তা অবহিত করা হলে জবাবে সে যা বলবে।
আল্লাহর জন্য পারস্পরিক ভালোবাসার ফযীলত
হাদীছ নং: ৩৭৭
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন বলবেন, কোথায় সেইসকল লোক, যারা আমার গৌরব-মহিমার কারণে একে অন্যকে ভালোবাসত? আজ আমি তাদেরকে আমার ছায়ায় স্থান দেব, যেদিন আমার ছায়া ছাড়া আর কোনও ছায়া নেই –মুসলিম।
সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং২৫৬৬; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৭২৩১; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৫৭৪; তবারানী, আল-মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ৬৪৪; বায়হাকী, আসসুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ২১০৬৭; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৫৭৭
হাদীছ নং: ৩৭৭
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন বলবেন, কোথায় সেইসকল লোক, যারা আমার গৌরব-মহিমার কারণে একে অন্যকে ভালোবাসত? আজ আমি তাদেরকে আমার ছায়ায় স্থান দেব, যেদিন আমার ছায়া ছাড়া আর কোনও ছায়া নেই –মুসলিম।
সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং২৫৬৬; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৭২৩১; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৫৭৪; তবারানী, আল-মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ৬৪৪; বায়হাকী, আসসুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ২১০৬৭; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৫৭৭
مقدمة الامام النووي
46 - باب فضل الحب في الله والحث عَلَيهِ وإعلام الرجل من يحبه، أنه يحبه، وماذا يقول لَهُ إِذَا أعلمه
377 - وعنه، قَالَ: قَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «إنّ الله تَعَالَى يَقُول يَوْمَ القِيَامَةِ: أيْنَ المُتَحَابُّونَ بِجَلالِي؟ اليَوْمَ أُظِلُّهُمْ فِي ظِلِّي يَوْمَ لاَ ظِلَّ إلاَّ ظِلِّي». رواه مسلم. (1)
হাদীস নং: ৩৭৮
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর জন্য ভালোবাসার ফযীলত, এর প্রতি উৎসাহদান এবং কেউ কাউকে ভালোবাসলে তাকে সে সম্পর্কে অবহিত করা আর তাকে তা অবহিত করা হলে জবাবে সে যা বলবে।
জান্নাতলাভের আশায় পারস্পরিক মহব্বতের প্রয়োজনীয়তা
হাদীছ নং : ৩৭৮
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যাঁর হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ! তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, যতক্ষণ না মুমিন হবে। আর তোমরা মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না একে অন্যকে ভালোবাস। আমি কি তোমাদেরকে এমন একটা বিষয়ের কথা বলে দেব না, যা করলে তোমরা একে অন্যকে ভালোবাসতে পারবে? তোমরা নিজেদের মধ্যে সালামের প্রসার ঘটাও -মুসলিম।
সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ৫৪; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ৫১৯৩; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৬৮৮; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীছ নং ৬৮; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ, হাদীছ নং ২৫৭৪১; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ১৪১২; বায়হাকী, আসসুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ২১০৬৪; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৩৭১;
হাদীছ নং : ৩৭৮
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যাঁর হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ! তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, যতক্ষণ না মুমিন হবে। আর তোমরা মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না একে অন্যকে ভালোবাস। আমি কি তোমাদেরকে এমন একটা বিষয়ের কথা বলে দেব না, যা করলে তোমরা একে অন্যকে ভালোবাসতে পারবে? তোমরা নিজেদের মধ্যে সালামের প্রসার ঘটাও -মুসলিম।
সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ৫৪; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ৫১৯৩; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৬৮৮; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীছ নং ৬৮; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ, হাদীছ নং ২৫৭৪১; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ১৪১২; বায়হাকী, আসসুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ২১০৬৪; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৩৭১;
مقدمة الامام النووي
46 - باب فضل الحب في الله والحث عَلَيهِ وإعلام الرجل من يحبه، أنه يحبه، وماذا يقول لَهُ إِذَا أعلمه
378 - وعنه، قَالَ: قَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «والَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، لا تَدْخُلُوا الجَنَّةَ حَتَّى تُؤْمِنُوا، وَلا تُؤْمِنُوا حَتَّى تَحَابُّوا، أوَلاَ أدُلُّكُمْ عَلَى شَيْءٍ إِذَا فَعَلْتُمُوهُ تَحَابَبْتُمْ؟ أَفْشُوا السَّلامَ بينكم». رواه مسلم. (1)
হাদীস নং: ৩৭৯
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর জন্য ভালোবাসার ফযীলত, এর প্রতি উৎসাহদান এবং কেউ কাউকে ভালোবাসলে তাকে সে সম্পর্কে অবহিত করা আর তাকে তা অবহিত করা হলে জবাবে সে যা বলবে।
আল্লাহ তাআলার ভালোবাসা লাভের একটি উপায়
হাদীছ নং : ৩৭৯
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি অন্য এক পল্লিতে তার (মুসলিম) ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাত করতে গেল। আল্লাহ তা'আলা তার যাত্রাপথে এক ফিরিশতা নিযুক্ত করলেন। লোকটি যখন সেই ফিরিশতার কাছে পৌঁছল, তখন ফিরিশতা তাকে জিজ্ঞেস করল, কোথায় যেতে চাচ্ছেন? সে বলল, আমি এই পল্লিতে আমার ভাইয়ের কাছে যেতে চাচ্ছি। ফিরিশতা বলল, তার দায়িত্বে কি আপনার কোনও সম্পদ আছে, যার দেখাশোনা করার উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন? সে বলল, না। তবে আমি আল্লাহর জন্য তাকে ভালোবাসি। ফিরিশতা বলল, আমি আপনার কাছে এই মর্মে আল্লাহর বার্তাবাহক যে, আপনি যেমন তাঁর জন্য এই ব্যক্তিকে ভালোবেসেছেন, তেমনি আল্লাহ তা'আলাও আপনাকে ভালোবাসেন -মুসলিম।
সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৫৬৭; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৯২৯১; আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদীছ নং ৩৫০; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৫৭২; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৫৯১; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩৪৬৫
হাদীছ নং : ৩৭৯
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি অন্য এক পল্লিতে তার (মুসলিম) ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাত করতে গেল। আল্লাহ তা'আলা তার যাত্রাপথে এক ফিরিশতা নিযুক্ত করলেন। লোকটি যখন সেই ফিরিশতার কাছে পৌঁছল, তখন ফিরিশতা তাকে জিজ্ঞেস করল, কোথায় যেতে চাচ্ছেন? সে বলল, আমি এই পল্লিতে আমার ভাইয়ের কাছে যেতে চাচ্ছি। ফিরিশতা বলল, তার দায়িত্বে কি আপনার কোনও সম্পদ আছে, যার দেখাশোনা করার উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন? সে বলল, না। তবে আমি আল্লাহর জন্য তাকে ভালোবাসি। ফিরিশতা বলল, আমি আপনার কাছে এই মর্মে আল্লাহর বার্তাবাহক যে, আপনি যেমন তাঁর জন্য এই ব্যক্তিকে ভালোবেসেছেন, তেমনি আল্লাহ তা'আলাও আপনাকে ভালোবাসেন -মুসলিম।
সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৫৬৭; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৯২৯১; আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদীছ নং ৩৫০; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৫৭২; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৫৯১; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩৪৬৫
مقدمة الامام النووي
46 - باب فضل الحب في الله والحث عَلَيهِ وإعلام الرجل من يحبه، أنه يحبه، وماذا يقول لَهُ إِذَا أعلمه
379 - وعنه، عن النَّبيّ - صلى الله عليه وسلم: «أنَّ رَجُلًا زَارَ أخًا لَهُ في قَرْيَةٍ أخْرَى، فَأرصَدَ اللهُ لَهُ عَلَى مَدْرَجَتِهِ مَلَكًا ... » وذكر الحديث إِلَى قوله: «إنَّ الله قَدْ أحبَّكَ كَمَا أحْبَبْتَهُ فِيهِ». رواه مسلم، وقد سبق بالباب قبله. (1)
হাদীস নং: ৩৮০
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর জন্য ভালোবাসার ফযীলত, এর প্রতি উৎসাহদান এবং কেউ কাউকে ভালোবাসলে তাকে সে সম্পর্কে অবহিত করা আর তাকে তা অবহিত করা হলে জবাবে সে যা বলবে।
আনসারদের মহব্বত করা ঈমানের অঙ্গ
হাদীছ নং : ৩৮০
হযরত বারা’ ইবন ‘আযিব রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের সম্পর্কে ইরশাদ করেন, তাদেরকে ভালোবাসে কেবল মুমিনগণই। আর তাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে কেবল মুনাফিকরাই। যে ব্যক্তি তাদেরকে ভালোবাসে, আল্লাহও তাকে ভালোবাসেন। আর যে ব্যক্তি তাদেরকে ঘৃণা করে, আল্লাহও তাকে ঘৃণা করেন -বুখারী ও মুসলিম।
সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৩৭৮৩; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ৭৫; নাসাঈ, আস সুনানুল কুবরা, হাদীস নং ৮২৭৬; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ৩৯০০; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ, হাদীছ নং ৩২৩৫৩; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ১৮৫০০; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৭২৭২; তবারানী, আল-মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ৫৭১০
হাদীছ নং : ৩৮০
হযরত বারা’ ইবন ‘আযিব রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের সম্পর্কে ইরশাদ করেন, তাদেরকে ভালোবাসে কেবল মুমিনগণই। আর তাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে কেবল মুনাফিকরাই। যে ব্যক্তি তাদেরকে ভালোবাসে, আল্লাহও তাকে ভালোবাসেন। আর যে ব্যক্তি তাদেরকে ঘৃণা করে, আল্লাহও তাকে ঘৃণা করেন -বুখারী ও মুসলিম।
সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৩৭৮৩; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ৭৫; নাসাঈ, আস সুনানুল কুবরা, হাদীস নং ৮২৭৬; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ৩৯০০; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ, হাদীছ নং ৩২৩৫৩; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ১৮৫০০; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৭২৭২; তবারানী, আল-মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ৫৭১০
مقدمة الامام النووي
46 - باب فضل الحب في الله والحث عَلَيهِ وإعلام الرجل من يحبه، أنه يحبه، وماذا يقول لَهُ إِذَا أعلمه
380 - وعن البرَاءِ بن عازب رضي الله عنهما، عن النَّبيّ - صلى الله عليه وسلم - أنَّهُ قَالَ في الأنصار: «لاَ يُحِبُّهُمْ إلاَّ مُؤمِنٌ، وَلاَ يُبْغِضُهُمْ إلاَّ مُنَافِقٌ، مَنْ أَحَبَّهُمْ أَحَبَّهُ اللهُ، وَمَنْ أَبْغَضَهُمْ أَبْغَضَهُ الله». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)