রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
رياض الصالحين من كلام سيد المرسلين
ভূমিকা অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৬৭৯ টি
হাদীস নং: ২৬১
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ইয়াতীম, কন্যাসন্তান, সর্বপ্রকার দুর্বল, গরীব-মিসকীন ও দুস্থ লোকদের প্রতি সদয় আচরণ, তাদের প্রতি অনুগ্রহ ও মায়া-মমতা প্রদর্শন এবং তাদের সঙ্গে নম্র-কোমল আচরণ প্রসঙ্গ
আবু সুফয়ান রাযি.-কে নিয়ে একটি ঘটনা:
গরীব সাহাবায়ে কেরাম বনাম হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাযি.
হাদীছ নং : ২৬১
হযরত ‘আইয ইবন আমর আল-মুযানী রাযি., যিনি বাইআতুর-রিযওয়ানে অংশগ্রহণকারীদের একজন, তিনি বর্ণনা করেন যে, একদিন আবু সুফয়ান কয়েকজন লোকের সঙ্গে সালমান, সুহায়ব ও বিলালের কাছে আসলেন। (তাদেরকে দেখে) তারা বললেন, আল্লাহর তরবারিসমূহ কি আল্লাহর দুশমনকে পুরোপুরি বুঝে নেয়নি? (তাদের এ মন্তব্য শুনে) আবু বকর রাযি. বললেন, তোমরা কি কুরাইশের এ মুরব্বি ও তাদের নেতাকে এরকম কথা বলছ? এই বলে তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আসলেন এবং এ বৃত্তান্ত তাঁকে জানালেন। তিনি বললেন, হে আবু বকর! তুমি সম্ভবত তাদেরকে নাখোশ করেছ। যদি তুমি তাদেরকে নাখোশ করে থাক, তবে তুমি তোমার প্রতিপালককেই নাখোশ করলে। অমনি তিনি তাদের কাছে চলে আসলেন এবং বললেন, ওহে আমার ভাইয়েরা! আমি কি তোমাদের নারাজ করে ফেলেছি? তারা বললেন, না, আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুন হে আমাদের প্রিয় ভাই- মুসলিম।
সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৫০৪; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২০৬৪০; নাসাঈ, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ৮২১৯; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ২৮
গরীব সাহাবায়ে কেরাম বনাম হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাযি.
হাদীছ নং : ২৬১
হযরত ‘আইয ইবন আমর আল-মুযানী রাযি., যিনি বাইআতুর-রিযওয়ানে অংশগ্রহণকারীদের একজন, তিনি বর্ণনা করেন যে, একদিন আবু সুফয়ান কয়েকজন লোকের সঙ্গে সালমান, সুহায়ব ও বিলালের কাছে আসলেন। (তাদেরকে দেখে) তারা বললেন, আল্লাহর তরবারিসমূহ কি আল্লাহর দুশমনকে পুরোপুরি বুঝে নেয়নি? (তাদের এ মন্তব্য শুনে) আবু বকর রাযি. বললেন, তোমরা কি কুরাইশের এ মুরব্বি ও তাদের নেতাকে এরকম কথা বলছ? এই বলে তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আসলেন এবং এ বৃত্তান্ত তাঁকে জানালেন। তিনি বললেন, হে আবু বকর! তুমি সম্ভবত তাদেরকে নাখোশ করেছ। যদি তুমি তাদেরকে নাখোশ করে থাক, তবে তুমি তোমার প্রতিপালককেই নাখোশ করলে। অমনি তিনি তাদের কাছে চলে আসলেন এবং বললেন, ওহে আমার ভাইয়েরা! আমি কি তোমাদের নারাজ করে ফেলেছি? তারা বললেন, না, আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুন হে আমাদের প্রিয় ভাই- মুসলিম।
সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৫০৪; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২০৬৪০; নাসাঈ, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ৮২১৯; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ২৮
مقدمة الامام النووي
33 - باب ملاطفة اليتيم والبنات وسائر الضعفة والمساكين والمنكسرين والإحسان إليهم والشفقة عليهم والتواضع معهم وخفض الجناح لهم
261 - وعن أَبي هُبَيرَة عائِذ بن عمرو المزنِي وَهُوَ مِنْ أهْل بيعة الرضوان - رضي الله عنه: أنَّ أبا سُفْيَانَ أتَى (1) عَلَى سَلْمَانَ وَصُهَيْبٍ وَبلاَلٍ في نَفَرٍ، فقالوا: مَا أخَذَتْ سُيُوفُ اللهِ مِنْ عَدُوِّ الله [ص:107] مَأْخَذَهَا، فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ - رضي الله عنه: أتَقُولُون هَذَا لِشَيْخِ قُرَيْشٍ وَسَيدِهِمْ؟ فَأتَى النَّبيَّ - صلى الله عليه وسلم - فَأخْبَرهُ، فَقَالَ: «يَا أَبَا بَكْرٍ، لَعلَّكَ أغْضَبتَهُمْ؟ لَئِنْ كُنْتَ أغْضَبْتَهُمْ لَقَدْ أغْضَبتَ رَبَّكَ» فَأَتَاهُمْ فَقَالَ: يَا إخْوَتَاهُ، أغْضَبْتُكُمْ؟ قالوا: لاَ، يَغْفِرُ اللهُ لَكَ يَا أُخَيَّ. رواه مسلم. (2)
قولُهُ: «مَأْخَذَهَا» أيْ: لَمْ تَسْتَوفِ حقها مِنْهُ. وقوله: «يَا أُخَيَّ»: رُوِي بفتحِ الهمزةِ وكسرِ الخاءِ وتخفيف الياءِ، وَرُوِيَ بضم الهمزة وفتح الخاء وتشديد الياءِ.
قولُهُ: «مَأْخَذَهَا» أيْ: لَمْ تَسْتَوفِ حقها مِنْهُ. وقوله: «يَا أُخَيَّ»: رُوِي بفتحِ الهمزةِ وكسرِ الخاءِ وتخفيف الياءِ، وَرُوِيَ بضم الهمزة وفتح الخاء وتشديد الياءِ.
হাদীস নং: ২৬২
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ইয়াতীম, কন্যাসন্তান, সর্বপ্রকার দুর্বল, গরীব-মিসকীন ও দুস্থ লোকদের প্রতি সদয় আচরণ, তাদের প্রতি অনুগ্রহ ও মায়া-মমতা প্রদর্শন এবং তাদের সঙ্গে নম্র-কোমল আচরণ প্রসঙ্গ
ইয়াতীমের তত্ত্বাবধান করার ফযীলত
হাদীছ নং : ২৬২
হযরত সাহল ইবন সা'দ রাযি. থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আমি ও ইয়াতীমের লালনপালনকারী জান্নাতে এভাবে থাকব। তিনি নিজের তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করলেন এবং দুটোর মধ্যে ফাঁক করলেন-বুখারী।
সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৬০০৫; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ৫১৫০; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ১৯১৮; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২২৮২০; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৪৬০; আল আদাবুল মুফরাদ, হাদীছ নং ১৩৩; তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ৫৯০৫; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১২৬৬২; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ১০৫১৪
হাদীছ নং : ২৬২
হযরত সাহল ইবন সা'দ রাযি. থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আমি ও ইয়াতীমের লালনপালনকারী জান্নাতে এভাবে থাকব। তিনি নিজের তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করলেন এবং দুটোর মধ্যে ফাঁক করলেন-বুখারী।
সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৬০০৫; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ৫১৫০; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ১৯১৮; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২২৮২০; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৪৬০; আল আদাবুল মুফরাদ, হাদীছ নং ১৩৩; তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ৫৯০৫; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১২৬৬২; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ১০৫১৪
مقدمة الامام النووي
33 - باب ملاطفة اليتيم والبنات وسائر الضعفة والمساكين والمنكسرين والإحسان إليهم والشفقة عليهم والتواضع معهم وخفض الجناح لهم
262 - وعن سهل بن سعد - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «أَنَا وَكَافلُ اليَتِيمِ في الجَنَّةِ هَكَذا» وَأَشارَ بالسَّبَّابَةِ وَالوُسْطَى، وَفَرَّجَ بَيْنَهُمَا. رواه البخاري. (1)
و «كَافلُ اليَتيم»: القَائِمُ بِأمُوره.
و «كَافلُ اليَتيم»: القَائِمُ بِأمُوره.
হাদীস নং: ২৬৩
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ইয়াতীম, কন্যাসন্তান, সর্বপ্রকার দুর্বল, গরীব-মিসকীন ও দুস্থ লোকদের প্রতি সদয় আচরণ, তাদের প্রতি অনুগ্রহ ও মায়া-মমতা প্রদর্শন এবং তাদের সঙ্গে নম্র-কোমল আচরণ প্রসঙ্গ
ইয়াতীমের তত্ত্বাবধান করার ফযীলত
হাদীছ নং : ২৬৩
হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ইয়াতীমের তত্ত্বাবধানকারী- সে ইয়াতীম তার নিজের (আত্মীয়) হোক বা অন্য কারও, আমি এবং সে জান্নাতে এভাবে থাকব। বর্ণনাকারী মালিক ইবন আনাস তার তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করলেন - মুসলিম।
সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৯৮৩; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৮৮৮১; তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ২৫৫; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ১০৫১৯; আল খারাইতী, মাকারিমুল আখলাক, হাদীছ নং ৬৫১; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩৪৫৬
হাদীছ নং : ২৬৩
হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ইয়াতীমের তত্ত্বাবধানকারী- সে ইয়াতীম তার নিজের (আত্মীয়) হোক বা অন্য কারও, আমি এবং সে জান্নাতে এভাবে থাকব। বর্ণনাকারী মালিক ইবন আনাস তার তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করলেন - মুসলিম।
সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৯৮৩; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৮৮৮১; তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ২৫৫; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ১০৫১৯; আল খারাইতী, মাকারিমুল আখলাক, হাদীছ নং ৬৫১; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩৪৫৬
مقدمة الامام النووي
33 - باب ملاطفة اليتيم والبنات وسائر الضعفة والمساكين والمنكسرين والإحسان إليهم والشفقة عليهم والتواضع معهم وخفض الجناح لهم
263 - وعن أَبي هريرة - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «كَافلُ اليَتيِم لَهُ أَوْ لِغَيْرِهِ أَنَا وَهُوَ كَهَاتَيْنِ في الجَنَّةِ» وَأَشَارَ الرَّاوِي وَهُوَ مَالِكُ بْنُ أنَس بالسَّبَّابَةِ وَالوُسْطَى. رواه مسلم. (1)
وقوله - صلى الله عليه وسلم: «اليَتِيمُ لَهُ أَوْ لِغَيرِهِ» مَعْنَاهُ: قَريبُهُ، أَو الأجْنَبيُّ مِنْهُ، فالقَريبُ مِثلُ أَنْ تَكْفَلهُ أمُّهُ أَوْ جَدُّهُ أَوْ أخُوهُ أَوْ غَيرُهُمْ مِنْ قَرَابَتِهِ، والله أعْلَمُ.
وقوله - صلى الله عليه وسلم: «اليَتِيمُ لَهُ أَوْ لِغَيرِهِ» مَعْنَاهُ: قَريبُهُ، أَو الأجْنَبيُّ مِنْهُ، فالقَريبُ مِثلُ أَنْ تَكْفَلهُ أمُّهُ أَوْ جَدُّهُ أَوْ أخُوهُ أَوْ غَيرُهُمْ مِنْ قَرَابَتِهِ، والله أعْلَمُ.
হাদীস নং: ২৬৪
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ইয়াতীম, কন্যাসন্তান, সর্বপ্রকার দুর্বল, গরীব-মিসকীন ও দুস্থ লোকদের প্রতি সদয় আচরণ, তাদের প্রতি অনুগ্রহ ও মায়া-মমতা প্রদর্শন এবং তাদের সঙ্গে নম্র-কোমল আচরণ প্রসঙ্গ
দান-খয়রাত পাওয়ার যে বেশি হকদার, এমন প্রকৃত মিসকীন কে?
হাদীছ নং : ২৬৪
হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ওই ব্যক্তি মিসকীন নয়, যাকে একটি বা দুটি খেজুর অথবা এক-দুই লোকমা খাবার (দুয়ারে দুয়ারে) ঘোরায়। প্রকৃত মিসকীন সেই, যে (কঠিন অভাব-অনটনেও) কারও কাছে হাত পাতে না-বুখারী ও মুসলিম।২৮৯
বুখারী ও মুসলিমের অপর এক বর্ণনায় আছে, ওই ব্যক্তি মিসকীন নয়, যে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বেড়ায়, যাকে এক-দুই লোকমা খাদ্য বা এক-দু'টি খেজুর দেওয়া হয়; বরং প্রকৃত মিসকীন সেই, যার এমন সামর্থ্য নেই, যা তার প্রয়োজন মেটাবে। আবার তার সম্পর্কে জানাও যায় না যে, তাকে কিছু দান-সদাকা করা হবে এবং সে উঠে মানুষের কাছে সাওয়ালও করে না।
(২৮৯. সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৪৫৩৯; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১০৩৯; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ১৬৩১; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ২৫৭১; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৩৩৫১; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৪২৬০; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ৭৮৬৭; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৩১৬১; মুসনাদুল হুমাইদী, হাদীছ নং ১০৯০
২৯০. সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ১৪৭৯; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১০৩৯; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ২৫৭২; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৩৩৫২; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৮১৮৭; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৩১৪৭)
হাদীছ নং : ২৬৪
হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ওই ব্যক্তি মিসকীন নয়, যাকে একটি বা দুটি খেজুর অথবা এক-দুই লোকমা খাবার (দুয়ারে দুয়ারে) ঘোরায়। প্রকৃত মিসকীন সেই, যে (কঠিন অভাব-অনটনেও) কারও কাছে হাত পাতে না-বুখারী ও মুসলিম।২৮৯
বুখারী ও মুসলিমের অপর এক বর্ণনায় আছে, ওই ব্যক্তি মিসকীন নয়, যে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বেড়ায়, যাকে এক-দুই লোকমা খাদ্য বা এক-দু'টি খেজুর দেওয়া হয়; বরং প্রকৃত মিসকীন সেই, যার এমন সামর্থ্য নেই, যা তার প্রয়োজন মেটাবে। আবার তার সম্পর্কে জানাও যায় না যে, তাকে কিছু দান-সদাকা করা হবে এবং সে উঠে মানুষের কাছে সাওয়ালও করে না।
(২৮৯. সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৪৫৩৯; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১০৩৯; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ১৬৩১; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ২৫৭১; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৩৩৫১; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৪২৬০; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ৭৮৬৭; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৩১৬১; মুসনাদুল হুমাইদী, হাদীছ নং ১০৯০
২৯০. সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ১৪৭৯; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১০৩৯; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ২৫৭২; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৩৩৫২; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৮১৮৭; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৩১৪৭)
مقدمة الامام النووي
33 - باب ملاطفة اليتيم والبنات وسائر الضعفة والمساكين والمنكسرين والإحسان إليهم والشفقة عليهم والتواضع معهم وخفض الجناح لهم
264 - وعنه، قَالَ: قَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «لَيْسَ المِسْكينُ الَّذِي تَرُدُّهُ التَّمْرَةُ وَالتَّمْرَتَانِ، وَلا اللُّقْمَةُ وَاللُّقْمَتَانِ، إِنَّمَا المِسْكِينُ الَّذِي يَتَعَفَّفُ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
وفي رواية في الصحيحين: «لَيْسَ المِسكِينُ الَّذِي يَطُوفُ عَلَى النَّاسِ تَرُدُّهُ اللُّقْمَةُ واللُّقْمَتانِ، وَالتَّمْرَةُ والتَّمْرَتَانِ، وَلَكِنَّ المِسْكِينَ الَّذِي لاَ يَجِدُ غِنىً يُغْنِيه، وَلاَ يُفْطَنُ بِهِ فَيُتَصَدَّقَ عَلَيهِ، وَلاَ يَقُومُ فَيَسْأَلُ النَّاسَ».
وفي رواية في الصحيحين: «لَيْسَ المِسكِينُ الَّذِي يَطُوفُ عَلَى النَّاسِ تَرُدُّهُ اللُّقْمَةُ واللُّقْمَتانِ، وَالتَّمْرَةُ والتَّمْرَتَانِ، وَلَكِنَّ المِسْكِينَ الَّذِي لاَ يَجِدُ غِنىً يُغْنِيه، وَلاَ يُفْطَنُ بِهِ فَيُتَصَدَّقَ عَلَيهِ، وَلاَ يَقُومُ فَيَسْأَلُ النَّاسَ».
হাদীস নং: ২৬৫
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ইয়াতীম, কন্যাসন্তান, সর্বপ্রকার দুর্বল, গরীব-মিসকীন ও দুস্থ লোকদের প্রতি সদয় আচরণ, তাদের প্রতি অনুগ্রহ ও মায়া-মমতা প্রদর্শন এবং তাদের সঙ্গে নম্র-কোমল আচরণ প্রসঙ্গ
বিধবা-মিসকীনদের সাহায্যকারীর মর্যাদা
হাদীছ নং : ২৬৫
হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, বিধবা ও মিসকীনদের সহায়তাকারী আল্লাহর পথে জিহাদকারীর মত। (রাবী বলেন) আমার ধারণা তিনি আরও বলেছেন, এবং সে অবিশ্রান্ত নামায আদায়কারীর মত বা ওই রোযাদারের মত, যে কখনও রোযা ছাড়া থাকে না -বুখারী ও মুসলিম।
(সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৬০০৬; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৯৮২; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ২৫৭৭; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৩৬৯; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ২১৪০; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৮৭৩২; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৪২৪৫; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১২৬৬৪; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ১০৫৮)
হাদীছ নং : ২৬৫
হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, বিধবা ও মিসকীনদের সহায়তাকারী আল্লাহর পথে জিহাদকারীর মত। (রাবী বলেন) আমার ধারণা তিনি আরও বলেছেন, এবং সে অবিশ্রান্ত নামায আদায়কারীর মত বা ওই রোযাদারের মত, যে কখনও রোযা ছাড়া থাকে না -বুখারী ও মুসলিম।
(সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৬০০৬; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৯৮২; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ২৫৭৭; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৩৬৯; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ২১৪০; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৮৭৩২; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৪২৪৫; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১২৬৬৪; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ১০৫৮)
مقدمة الامام النووي
33 - باب ملاطفة اليتيم والبنات وسائر الضعفة والمساكين والمنكسرين والإحسان إليهم والشفقة عليهم والتواضع معهم وخفض الجناح لهم
265 - وعنه، عن النَّبيّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «السَّاعِي عَلَى الأَرْمَلَةِ وَالمِسْكِينِ، كَالمُجَاهِدِ في سَبيلِ اللهِ». وَأَحسَبُهُ قَالَ: «وَكَالقَائِمِ الَّذِي لاَ يَفْتُرُ، وَكَالصَّائِمِ الَّذِي لاَ يُفْطِرُ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
হাদীস নং: ২৬৬
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ইয়াতীম, কন্যাসন্তান, সর্বপ্রকার দুর্বল, গরীব-মিসকীন ও দুস্থ লোকদের প্রতি সদয় আচরণ, তাদের প্রতি অনুগ্রহ ও মায়া-মমতা প্রদর্শন এবং তাদের সঙ্গে নম্র-কোমল আচরণ প্রসঙ্গ
যে ওলীমার খাবার নিকৃষ্টতম
হাদীছ নং : ২৬৬
হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ওই ওলীমার খাবার সবচে' নিকৃষ্ট খাবার, যাতে আগত (গরীব)-দেরকে বাধা দেওয়া হয় এবং যারা আসতে চায় না তাদেরকে (অর্থাৎ ধনীদেরকে) দাওয়াত দেওয়া হয়। যে ব্যক্তি (শরীআতসম্মত) দাওয়াত কবুল করল না, সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানি করল -মুসলিম।২৯৩
বুখারী ও মুসলিমের এক বর্ণনায় হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে তাঁর উক্তি বর্ণিত আছে যে, ওই ওলীমার খাবার সবচে' নিকৃষ্ট খাবার, যাতে ধনীদের দাওয়াত দেওয়া হয় এবং গরীবদের পরিত্যাগ করা হয়।২৯৪
(২৯৩. সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১৪৩২; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ৩৭৪২; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ১৯১৩; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৫৩০৪; তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ২৫৮৪; মুসনাদুল হুমাইদী, হাদীছ নং ১২০৪; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ২৩১৫
২৯৪. সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৫১৭৭; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১৪৩২; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৫৩০৪; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৭২৭৯; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৪৫২০; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ২৩১৪)
হাদীছ নং : ২৬৬
হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ওই ওলীমার খাবার সবচে' নিকৃষ্ট খাবার, যাতে আগত (গরীব)-দেরকে বাধা দেওয়া হয় এবং যারা আসতে চায় না তাদেরকে (অর্থাৎ ধনীদেরকে) দাওয়াত দেওয়া হয়। যে ব্যক্তি (শরীআতসম্মত) দাওয়াত কবুল করল না, সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানি করল -মুসলিম।২৯৩
বুখারী ও মুসলিমের এক বর্ণনায় হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে তাঁর উক্তি বর্ণিত আছে যে, ওই ওলীমার খাবার সবচে' নিকৃষ্ট খাবার, যাতে ধনীদের দাওয়াত দেওয়া হয় এবং গরীবদের পরিত্যাগ করা হয়।২৯৪
(২৯৩. সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১৪৩২; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ৩৭৪২; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ১৯১৩; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৫৩০৪; তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ২৫৮৪; মুসনাদুল হুমাইদী, হাদীছ নং ১২০৪; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ২৩১৫
২৯৪. সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৫১৭৭; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১৪৩২; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৫৩০৪; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৭২৭৯; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৪৫২০; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ২৩১৪)
مقدمة الامام النووي
33 - باب ملاطفة اليتيم والبنات وسائر الضعفة والمساكين والمنكسرين والإحسان إليهم والشفقة عليهم والتواضع معهم وخفض الجناح لهم
266 - وعنه، عن النَّبيّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «شَرُّ الطَّعَامِ طَعَامُ الوَلِيمَةِ، يُمْنَعُهَا مَنْ يَأتِيهَا، وَيُدْعَى إِلَيْهَا مَنْ يَأْبَاهَا، وَمَنْ لَمْ يُجِبِ الدَّعْوَةَ فَقَدْ عَصَى اللهَ وَرَسُولَهُ». رواه مسلم. (1)
[ص:108] وفي رواية في الصحيحين، عن أَبي هريرة من قوله: «بئْسَ الطَّعَامُ طَعَامُ الوَلِيمَةِ يُدْعَى إِلَيْهَا الأغْنِيَاءُ ويُتْرَكُ الفُقَراءُ».
[ص:108] وفي رواية في الصحيحين، عن أَبي هريرة من قوله: «بئْسَ الطَّعَامُ طَعَامُ الوَلِيمَةِ يُدْعَى إِلَيْهَا الأغْنِيَاءُ ويُتْرَكُ الفُقَراءُ».
হাদীস নং: ২৬৭
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ইয়াতীম, কন্যাসন্তান, সর্বপ্রকার দুর্বল, গরীব-মিসকীন ও দুস্থ লোকদের প্রতি সদয় আচরণ, তাদের প্রতি অনুগ্রহ ও মায়া-মমতা প্রদর্শন এবং তাদের সঙ্গে নম্র-কোমল আচরণ প্রসঙ্গ
কন্যাসন্তান লালন-পালন করার ফযীলত
হাদীছ নং : ২৬৭
হযরত আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি দুটি মেয়েকে বয়ঃপ্রাপ্ত হওয়া পর্যন্ত লালন-পালন করল, সে কিয়ামতের দিন এ অবস্থায় আসবে যে, আমি ও সে এভাবে থাকব। তিনি নিজ আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে দেখালেন -মুসলিম।
সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৬৩১; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ১৯১৪; আল আদাবুল মুফরাদ, হাদীছ নং ৮৯৪; মুসান্নাফে ইবন আবী শাইবা, হাদীছ নং ২৫৪৩৯; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৩০৭; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ১৬৮২
হাদীছ নং : ২৬৭
হযরত আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি দুটি মেয়েকে বয়ঃপ্রাপ্ত হওয়া পর্যন্ত লালন-পালন করল, সে কিয়ামতের দিন এ অবস্থায় আসবে যে, আমি ও সে এভাবে থাকব। তিনি নিজ আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে দেখালেন -মুসলিম।
সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৬৩১; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ১৯১৪; আল আদাবুল মুফরাদ, হাদীছ নং ৮৯৪; মুসান্নাফে ইবন আবী শাইবা, হাদীছ নং ২৫৪৩৯; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৩০৭; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ১৬৮২
مقدمة الامام النووي
33 - باب ملاطفة اليتيم والبنات وسائر الضعفة والمساكين والمنكسرين والإحسان إليهم والشفقة عليهم والتواضع معهم وخفض الجناح لهم
267 - وعن أنس - رضي الله عنه - عن النَّبيّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «مَنْ عَالَ (1) جَارِيَتَيْن حَتَّى تَبْلُغَا جَاءَ يَوْمَ القِيَامَةِ أنَا وَهُوَ كَهَاتَيْنِ» وضَمَّ أصَابِعَهُ. رواه مسلم. (2)
«جَارِيَتَيْنِ» أيْ: بنتين.
«جَارِيَتَيْنِ» أيْ: بنتين.
হাদীস নং: ২৬৮
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ইয়াতীম, কন্যাসন্তান, সর্বপ্রকার দুর্বল, গরীব-মিসকীন ও দুস্থ লোকদের প্রতি সদয় আচরণ, তাদের প্রতি অনুগ্রহ ও মায়া-মমতা প্রদর্শন এবং তাদের সঙ্গে নম্র-কোমল আচরণ প্রসঙ্গ
কন্যাসন্তানের লালন-পালন জাহান্নাম থেকে মুক্তির উপায়
হাদীছ নং : ২৬৮
উম্মুল-মু'মিনীন হযরত আয়েশা রাযি. বলেন, আমার কাছে এক মহিলা আসল। তার সঙ্গে ছিল তার দুটি মেয়ে। সে কিছু চাচ্ছিল, কিন্তু আমার কাছে একটিমাত্র খেজুর ছাড়া আর কিছুই পেল না। আমি সেটিও তাকেই দিয়ে দিলাম। সে খেজুরটি তার দুই মেয়ের মধ্যে ভাগ করে দিল। নিজে তা থেকে কিছুই খেল না। তারপর সে উঠে চলে গেল। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের কাছে আসলে তাঁকে বিষয়টি অবহিত করলাম। তিনি বললেন, যে ব্যক্তিই এ কন্যাসন্তানদের দ্বারা কিছুটা পরীক্ষার সম্মুখীন হবে, তারপর সে তাদের প্রতি সুন্দর ব্যবহার করবে, তার জন্য তারা জাহান্নামের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধক হবে-বুখারী ও মুসলিম।
সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ১৪১৮; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৬২৯; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ১৯১৫; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ২৯৩৯; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২৫৩৩২; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৫৭৩৫; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৩০৮; আল খারাইতী, মাকারিমুল আখলাক, হাদীছ নং ৬৪৮; শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ১৬৮১
হাদীছ নং : ২৬৮
উম্মুল-মু'মিনীন হযরত আয়েশা রাযি. বলেন, আমার কাছে এক মহিলা আসল। তার সঙ্গে ছিল তার দুটি মেয়ে। সে কিছু চাচ্ছিল, কিন্তু আমার কাছে একটিমাত্র খেজুর ছাড়া আর কিছুই পেল না। আমি সেটিও তাকেই দিয়ে দিলাম। সে খেজুরটি তার দুই মেয়ের মধ্যে ভাগ করে দিল। নিজে তা থেকে কিছুই খেল না। তারপর সে উঠে চলে গেল। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের কাছে আসলে তাঁকে বিষয়টি অবহিত করলাম। তিনি বললেন, যে ব্যক্তিই এ কন্যাসন্তানদের দ্বারা কিছুটা পরীক্ষার সম্মুখীন হবে, তারপর সে তাদের প্রতি সুন্দর ব্যবহার করবে, তার জন্য তারা জাহান্নামের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধক হবে-বুখারী ও মুসলিম।
সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ১৪১৮; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৬২৯; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ১৯১৫; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ২৯৩৯; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২৫৩৩২; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৫৭৩৫; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৩০৮; আল খারাইতী, মাকারিমুল আখলাক, হাদীছ নং ৬৪৮; শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ১৬৮১
مقدمة الامام النووي
33 - باب ملاطفة اليتيم والبنات وسائر الضعفة والمساكين والمنكسرين والإحسان إليهم والشفقة عليهم والتواضع معهم وخفض الجناح لهم
268 - وعن عائشة رضي الله عنها، قَالَتْ: دَخَلَتْ عَلَيَّ امْرَأةٌ وَمَعَهَا ابنتانِ لَهَا، تَسْأَلُ فَلَمْ تَجِدْ عِنْدِي شَيئًا غَيْرَ تَمْرَةٍ وَاحدَةٍ، فَأعْطَيْتُهَا إيَّاهَا فَقَسَمَتْهَا بَيْنَ ابْنَتَيْها ولَمْ تَأكُلْ مِنْهَا، ثُمَّ قَامَتْ فَخَرجَتْ، فَدَخَلَ النَّبيُّ - صلى الله عليه وسلم - عَلَينَا، فَأخْبَرْتُهُ فَقَالَ: «مَنِ ابْتُليَ مِنْ هذِهِ البَنَاتِ بِشَيءٍ فَأحْسَنَ إلَيْهِنَّ، كُنَّ لَهُ سِترًا مِنَ النَّارِ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
হাদীস নং: ২৬৯
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ইয়াতীম, কন্যাসন্তান, সর্বপ্রকার দুর্বল, গরীব-মিসকীন ও দুস্থ লোকদের প্রতি সদয় আচরণ, তাদের প্রতি অনুগ্রহ ও মায়া-মমতা প্রদর্শন এবং তাদের সঙ্গে নম্র-কোমল আচরণ প্রসঙ্গ
প্রত্যেক মায়ের জন্য সুসংবাদ
হাদীছ নং : ২৬৯
উম্মুল-মু'মিনীন হযরত আয়েশা রাযি. বলেন, এক নিঃস্ব মহিলা তার দুটি কন্যাসন্তান সঙ্গে নিয়ে আমার কাছে আসল। আমি তাকে তিনটি খেজুর খেতে দিলাম। সে তাদের প্রত্যেককে একটি করে খেজুর দিল এবং একটি খেজুর নিজে খাওয়ার জন্য মুখের দিকে তুলল। অমনি মেয়ে দুটি তার কাছে আরও খাবার চাইল। তখন সে নিজে যেটি খেতে চেয়েছিল সেটিও দু'টুকরো করে তাদের মধ্যে ভাগ করে দিল। তার এ কাজ আমাকে অভিভূত করল। অতঃপর সে এই যা করল তা আমি রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অবহিত করলাম। তিনি বললেন, আল্লাহ তাআলা এর বিনিময়ে জান্নাত ওয়াজিব করেছেন। অথবা (বললেন) তাকে জাহন্নাম থেকে মুক্তি দিয়েছেন —মুসলিম।
সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৬৩০; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৪৪৮; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২৪৬১১; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ১০৫০৮; তাবারানী, আল মুজামুল আওসাত, হাদীছ নং ৪০৯৩
হাদীছ নং : ২৬৯
উম্মুল-মু'মিনীন হযরত আয়েশা রাযি. বলেন, এক নিঃস্ব মহিলা তার দুটি কন্যাসন্তান সঙ্গে নিয়ে আমার কাছে আসল। আমি তাকে তিনটি খেজুর খেতে দিলাম। সে তাদের প্রত্যেককে একটি করে খেজুর দিল এবং একটি খেজুর নিজে খাওয়ার জন্য মুখের দিকে তুলল। অমনি মেয়ে দুটি তার কাছে আরও খাবার চাইল। তখন সে নিজে যেটি খেতে চেয়েছিল সেটিও দু'টুকরো করে তাদের মধ্যে ভাগ করে দিল। তার এ কাজ আমাকে অভিভূত করল। অতঃপর সে এই যা করল তা আমি রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অবহিত করলাম। তিনি বললেন, আল্লাহ তাআলা এর বিনিময়ে জান্নাত ওয়াজিব করেছেন। অথবা (বললেন) তাকে জাহন্নাম থেকে মুক্তি দিয়েছেন —মুসলিম।
সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৬৩০; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৪৪৮; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২৪৬১১; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ১০৫০৮; তাবারানী, আল মুজামুল আওসাত, হাদীছ নং ৪০৯৩
مقدمة الامام النووي
33 - باب ملاطفة اليتيم والبنات وسائر الضعفة والمساكين والمنكسرين والإحسان إليهم والشفقة عليهم والتواضع معهم وخفض الجناح لهم
269 - وعن عائشة رضي الله عنها، قَالَتْ: جَاءتني مِسْكينةٌ تَحْمِلُ ابْنَتَيْنِ لَهَا، فَأطْعَمْتُها ثَلاثَ تَمرَات، فَأعْطَتْ كُلَّ وَاحِدَة مِنْهُمَا تَمْرَةً وَرَفَعتْ إِلَى فِيها تَمْرَةً لِتَأكُلها، فَاسْتَطعَمَتهَا ابْنَتَاهَا، فَشَقَّتِ التَّمْرَةَ الَّتي كَانَتْ تُريدُ أَنْ تَأكُلَهَا بَيْنَهُما، فَأعجَبَنِي شَأنُهَا، فَذَكَرْتُ الَّذِي صَنَعَتْ لرسولِ الله - صلى الله عليه وسلم - فَقَالَ: «إنَّ الله قَدْ أوْجَبَ لَهَا بها الجَنَّةَ، أَوْ أعتَقَهَا بِهَا مِنَ النَّارِ». رواه مسلم. (1)
হাদীস নং: ২৭০
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ইয়াতীম, কন্যাসন্তান, সর্বপ্রকার দুর্বল, গরীব-মিসকীন ও দুস্থ লোকদের প্রতি সদয় আচরণ, তাদের প্রতি অনুগ্রহ ও মায়া-মমতা প্রদর্শন এবং তাদের সঙ্গে নম্র-কোমল আচরণ প্রসঙ্গ
ইয়াতীম ও নারীর হক আদায়ের গুরুত্ব
হাদীছ নং : ২৭০
হযরত আবু শুরাইহ খুওয়াইলিদ ইবন আমর আল-খুযা‘ঈ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, হে আল্লাহ! ইয়াতীম ও নারী- এ দুই দুর্বলের অধিকার নষ্ট করার গুনাহ সম্পর্কে আমি মানুষকে কঠোরভাবে সতর্ক করে দিলাম-নাসাঈ।
নাসাঈ, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ৯১০৪; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ৩৬৭৮; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৯৬৬৬; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ২০৪৫২; খারাইতী, মাকারিমুল আখলাক, হাদীছ নং ৬৫৪
হাদীছ নং : ২৭০
হযরত আবু শুরাইহ খুওয়াইলিদ ইবন আমর আল-খুযা‘ঈ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, হে আল্লাহ! ইয়াতীম ও নারী- এ দুই দুর্বলের অধিকার নষ্ট করার গুনাহ সম্পর্কে আমি মানুষকে কঠোরভাবে সতর্ক করে দিলাম-নাসাঈ।
নাসাঈ, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ৯১০৪; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ৩৬৭৮; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৯৬৬৬; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ২০৪৫২; খারাইতী, মাকারিমুল আখলাক, হাদীছ নং ৬৫৪
مقدمة الامام النووي
33 - باب ملاطفة اليتيم والبنات وسائر الضعفة والمساكين والمنكسرين والإحسان إليهم والشفقة عليهم والتواضع معهم وخفض الجناح لهم
270 - وعن أَبي شُرَيحٍ خُوَيْلِدِ بن عمرو الخزاعِيِّ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ النَّبيّ - صلى الله عليه وسلم: «اللَّهُمَّ إنِّي أُحَرِّجُ حَقَّ الضَّعِيفَينِ: اليَتِيم وَالمَرْأةِ» حديث حسن رواه النسائي بإسناد جيد. (1)
ومعنى «أُحَرِّجُ»: أُلْحِقُ الحَرَجَ وَهُوَ الإثْمُ بِمَنْ ضَيَّعَ حَقَّهُمَا، وَأُحَذِّرُ مِنْ ذلِكَ تَحْذِيرًا بَليغًا، وَأزْجُرُ عَنْهُ زجرًا أكيدًا.
ومعنى «أُحَرِّجُ»: أُلْحِقُ الحَرَجَ وَهُوَ الإثْمُ بِمَنْ ضَيَّعَ حَقَّهُمَا، وَأُحَذِّرُ مِنْ ذلِكَ تَحْذِيرًا بَليغًا، وَأزْجُرُ عَنْهُ زجرًا أكيدًا.
হাদীস নং: ২৭১
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ইয়াতীম, কন্যাসন্তান, সর্বপ্রকার দুর্বল, গরীব-মিসকীন ও দুস্থ লোকদের প্রতি সদয় আচরণ, তাদের প্রতি অনুগ্রহ ও মায়া-মমতা প্রদর্শন এবং তাদের সঙ্গে নম্র-কোমল আচরণ প্রসঙ্গ
দুর্বলদের অসিলায় সাহায্য ও রিযিকলাভ
হাদীছ নং : ২৭১
হযরত সা'দ ইবন আবি ওয়াক্কাস রাযি. এর পুত্র মুসআব থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, হযরত সা'দ দেখলেন অন্যদের উপর তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে। ফলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমরা তো কেবল তোমাদের দুর্বলদের অসিলায়ই সাহায্য ও রিযিক পেয়ে থাক।৩০৬
ইমাম বুখারী রহ. মুসআব ইবন সা'দ থেকে এভাবে মুরসালরূপে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। মুসআব ইবন সাদ একজন তাবি'ঈ। হাফেজ আবু বাকর আল বারকানী তাঁর 'সহীহ' গ্রন্থে এটি মুত্তাসিলরূপে বর্ণনা করেছেন। অর্থাৎ মুসআব রহ. হাদীছটি তার পিতা থেকে শুনে বর্ণনা করেছেন।
৩০৬. সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ২৮৯৬
হাদীছ নং : ২৭১
হযরত সা'দ ইবন আবি ওয়াক্কাস রাযি. এর পুত্র মুসআব থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, হযরত সা'দ দেখলেন অন্যদের উপর তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে। ফলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমরা তো কেবল তোমাদের দুর্বলদের অসিলায়ই সাহায্য ও রিযিক পেয়ে থাক।৩০৬
ইমাম বুখারী রহ. মুসআব ইবন সা'দ থেকে এভাবে মুরসালরূপে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। মুসআব ইবন সাদ একজন তাবি'ঈ। হাফেজ আবু বাকর আল বারকানী তাঁর 'সহীহ' গ্রন্থে এটি মুত্তাসিলরূপে বর্ণনা করেছেন। অর্থাৎ মুসআব রহ. হাদীছটি তার পিতা থেকে শুনে বর্ণনা করেছেন।
৩০৬. সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ২৮৯৬
مقدمة الامام النووي
33 - باب ملاطفة اليتيم والبنات وسائر الضعفة والمساكين والمنكسرين والإحسان إليهم والشفقة عليهم والتواضع معهم وخفض الجناح لهم
271 - وعن مصعب بن سعد بن أَبي وقَّاص رضي الله عنهما، قَالَ: رَأى سعد أنَّ لَهُ فَضْلًا عَلَى مَنْ دُونَهُ، فَقَالَ النَّبيّ - صلى الله عليه وسلم: «هَلْ تُنْصرُونَ وتُرْزَقُونَ إلاَّ بِضُعَفَائِكُمْ». (1) رواه البخاري هكذا [ص:109] مُرسلًا، فإن مصعب بن سعد تابعيٌّ، ورواه الحافظ أَبُو بكر البرقاني في صحيحه متصلًا عن مصعب، عن أبيه - رضي الله عنه.
হাদীস নং: ২৭২
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ ইয়াতীম, কন্যাসন্তান, সর্বপ্রকার দুর্বল, গরীব-মিসকীন ও দুস্থ লোকদের প্রতি সদয় আচরণ, তাদের প্রতি অনুগ্রহ ও মায়া-মমতা প্রদর্শন এবং তাদের সঙ্গে নম্র-কোমল আচরণ প্রসঙ্গ
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক দুর্বলদের মূল্যায়ন
হাদীছ নং : ২৭২
হযরত আবুদ দারদা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, তোমরা আমার জন্য দুর্বলদের সন্ধান কর। তোমাদেরকে তো তোমাদের দুর্বলদের অসিলায়ই সাহায্য ও রিযিক দেওয়া হয়ে থাকে – আবু দাউদ।
সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ২৫৯৪; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ৩১৭৯; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২১৭৩১; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ৬৩৮৮; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ৪০৬২
হাদীছ নং : ২৭২
হযরত আবুদ দারদা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, তোমরা আমার জন্য দুর্বলদের সন্ধান কর। তোমাদেরকে তো তোমাদের দুর্বলদের অসিলায়ই সাহায্য ও রিযিক দেওয়া হয়ে থাকে – আবু দাউদ।
সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ২৫৯৪; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ৩১৭৯; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২১৭৩১; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ৬৩৮৮; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ৪০৬২
مقدمة الامام النووي
33 - باب ملاطفة اليتيم والبنات وسائر الضعفة والمساكين والمنكسرين والإحسان إليهم والشفقة عليهم والتواضع معهم وخفض الجناح لهم
272 - وعن أَبي الدَّرداءِ عُويمر - رضي الله عنه - قَالَ: سمعتُ رَسُولَ الله - صلى الله عليه وسلم - يقول: «ابْغُوني الضُّعَفَاء، فَإنَّمَا تُنْصَرُونَ وتُرْزَقُونَ، بِضُعَفَائِكُمْ». رواه أَبُو داود بإسناد جيد (1).
হাদীস নং: ২৭৩
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৩৪
স্ত্রীদের প্রতি সদ্ব্যবহারের নির্দেশ
النساء শব্দটি দ্বারা যদিও সাধারণভাবে নারীদের বোঝানো হয়, তবে ক্ষেত্রবিশেষে এ শব্দটি স্ত্রীদের জন্য ব্যবহৃত হয়। এ অর্থে কুরআন মাজীদে শব্দটির ব্যাপক ব্যবহার আছে। এরকম ব্যবহার আছে হাদীছেও। সুতরাং এখানে النساء শব্দ ব্যবহৃত হলেও মূলত স্ত্রীদের বোঝানো উদ্দেশ্য।
ইসলাম-পূর্বকালে স্ত্রীদের প্রতি মানবিক ব্যবহারই করা হত না। সবরকম মৌলিক অধিকার থেকে তাদেরকে বঞ্চিত করা হত। ইসলাম সে পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন ঘটায়। ইসলাম স্বামী-স্ত্রীকে পরস্পরের সম্পূরক সাব্যস্ত করেছে। দাম্পত্যসম্পর্ক পারস্পরিক শান্তি ও স্বস্তির উৎস এবং এটা মানবপ্রজন্ম সচল রাখার প্রকৃষ্ট ব্যবস্থা।
কুরআন ও হাদীছে দম্পতির জন্য মৌলিকভাবে زوج শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। زوج মানে জোড়া। স্বামী-স্ত্রী দু'জন মিলে একজোড়া জোড়ার একটি ছাড়া অন্যটি যেমন অপূর্ণ, তেমনি স্বামী-স্ত্রীর একজন ছাড়া অন্যজন অপূর্ণ। কুরআন মাজীদ ইরশাদ করছে هُنَّ لِبَاسٌ لَكُمْ وَأَنْتُمْ لِبَاسٌ لَهُنَّ “তারা তোমাদের জন্য পোশাক এবং তোমরাও তাদের জন্য পোশাক।৩১২
অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রীর একের প্রতি অন্যের প্রয়োজনটি পোশাকেরই মত। পোশাক ছাড়া যেমন কোনও মানুষ চলতে পারে না, তেমনি কোনও পুরুষ স্ত্রী ছাড়া এবং স্ত্রীও স্বামী ছাড়া যথার্থরূপে চলতে পারে না। পোশাক দ্বারা শরীরের হেফাজত হয়, লজ্জা নিবারণ হয়, দৈহিক সৌন্দর্য বর্ধন হয়, ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘটে ও সামাজিক মান-মর্যাদা রক্ষা হয়, তেমনি স্বামী-স্ত্রীর একের দ্বারা অন্যের চরিত্র হেফাজত হয়, সামাজিক লজ্জা-শরম নিবারণ হয়, স্বাস্থ্য রক্ষা পায়, পিতৃত্ব ও মাতৃত্বের বিকাশ হয় এবং তারা একে অন্যের শোভাও বটে।
দাম্পত্যজীবনের এসব কল্যাণ এবং এর মূল লক্ষ্য-উদ্দেশ্য কেবল তখনই অর্জিত হতে পারে, যখন স্বামী-স্ত্রী একে অন্যের মূল্যায়ন করবে, একে অন্যের হক সম্পর্কে সচেতন থাকবে এবং পারস্পরিক কল্যাণ অনুধাবন করে একে অন্যের প্রতি সম্মানজনক ও প্রীতিপূর্ণ আচরণ করবে।
জাহিলী যুগে স্ত্রীর হক সম্পর্কে মানুষের কোনও ধারণা ছিল না। আরব-আজম নির্বিশেষে সর্বত্র মানবিক সব অধিকার পুরুষের জন্যই সংরক্ষিত ছিল। ইসলামই প্রথম এ জুলুম-অবিচারের মূলোৎপাটন করে। কুরআন ঘোষণা করে وَلَهُنَّ مِثْلُ الَّذِي عَلَيْهِنَّ بِالْمَعْرُوفِ ‘আর স্ত্রীদেরও ন্যায়সঙ্গত অধিকার রয়েছে, যেমন তাদের প্রতি (স্বামীদের) অধিকার রয়েছে।৩১৩
স্বামী তো তার অধিকার বুঝে নিতই, কিন্তু স্ত্রী দুর্বল হওয়ায় সে সবদিক থেকে বঞ্চিত থাকত। তাই ইসলাম একদিকে পুরুষের উপর নারীরও অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছে, অন্যদিকে তার সে অধিকার আদায়ের জন্য পুরুষের উপর জোর তাগিদ করেছে। পুরুষ যাতে কোনওভাবে তার উপর জুলুম না করে এবং তার সর্বপ্রকার অধিকার আদায়ে বিশেষভাবে যত্নবান থাকে, সে ব্যাপারে ইসলামের নির্দেশনা অত্যন্ত পূর্ণাঙ্গ।ইমাম নববী রহ. এ অধ্যায়ে সেসব নির্দেশনা-সম্বলিত কিছু আয়াত ও হাদীছ উল্লেখ করেছেন। নিচে তার বঙ্গানুবাদ ও সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা পেশ করা যাচ্ছে। আল্লাহ তাআলা তাওফীক দান করুন।
৩১২. সূরা বাকারা (২), আয়াত ১৮৭
৩১৩. সূরা বাকারা (২), আয়াত ২২৮
‘স্ত্রীদের প্রতি সদ্ব্যবহারের নির্দেশ’ সম্পর্কিত দুটি আয়াত
এক নং আয়াত
وَعَاشِرُوهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ
অর্থ : 'আর তাদের সাথে সদ্ভাবে জীবন যাপন কর।"
ব্যাখ্যা
عَاشِرُو আজ্ঞাসূচক ক্রিয়াপদ। এর মূল হচ্ছে المعاشرة, যার অর্থ মেলামেশা করা, সহাবস্থান করা। এ আদেশটি পুরুষদের প্রতি। আয়াতে তাদেরকে বলা হচ্ছে, তোমরা স্ত্রীদের সাথে মিলেমিশে থাক ও সহাবস্থান কর উত্তম আচরণের সঙ্গে। ইসলাম বিভিন্ন যৌক্তিক কারণে পুরুষকে অভিভাবক বানিয়েছে। অভিভাবক হিসেবে প্রথম দায়িত্বটা স্বামীর উপরই আসে। প্রথমে তারই কর্তব্য স্ত্রীকে আপন করে নেওয়া, তাকে স্বস্তির সঙ্গে বসবাস করতে দেওয়া এবং তার প্রতি আচার-আচরণে সর্বোত্তম আখলাকের পরিচয় দেওয়া।
ইসলাম বিবাহের ব্যবস্থা দিয়েছে দৈহিক প্রশান্তি ও মানসিক স্বস্তিলাভের উদ্দেশ্যে। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-
هُوَ الَّذِي خَلَقَكُمْ مِنْ نَفْسٍ وَاحِدَةٍ وَجَعَلَ مِنْهَا زَوْجَهَا لِيَسْكُنَ إِلَيْهَا
‘আল্লাহ তিনি, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি হতে সৃষ্টি করেছেন এবং তার থেকেই তার স্ত্রীকে বানিয়েছেন, যাতে সে তার কাছে এসে শান্তি লাভ করতে পারে।৩১৫
বলাবাহুল্য, স্ত্রীর কাছে এ শান্তিলাভ কেবল তখনই সম্ভব, যখন স্বামী তার সঙ্গে প্রীতিপূর্ণ আচরণ করবে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক যেহেতু সারাটা জীবনের জন্য, তাই জীবনভরই তার প্রতি সদ্ভাব বজায় রাখা জরুরি। কখনও স্ত্রীর দিক থেকে অপসন্দনীয় কিছু প্রকাশ পেলে সে কারণে তার প্রতি বিরূপ হয়ে যাওয়া উচিত নয়। প্রত্যেকেরই আলাদা রুচি-প্রকৃতি আছে। তাই একজনের সব আচরণ অন্যজনের মনমত নাও হতে পারে। কাজেই কোনও কোনও আচরণ মনমত না হওয়ায় তার প্রতি সম্পূর্ণ বিমুখ হয়ে যাওয়া নির্বুদ্ধিতা। এর পরিণাম সারা জীবনের অশান্তি। ক্ষেত্রবিশেষে অপ্রিয় আচরণের সম্মুখীন হলে কর্তব্য সবর করা। সে সবর প্রভূত কল্যাণ বয়ে আনতে পারে । কেননা কোনও কোনও আচরণ অপ্রিয় হলেও আরও বহু আচরণ প্রীতিকর হতে পারে বৈকি। অপ্রিয় আচরণে মন্দ প্রতিক্রিয়া দেখানোর ফল কেবল সেসব প্রীতিকর আচরণ নস্যাৎ করা। তাই স্ত্রীর পক্ষ থেকে ভালোমন্দ সব আচরণের ক্ষেত্রেই নিজের পক্ষ থেকে সদ্ভাব বজায় রাখা জরুরি। সুতরাং আলোচ্য আয়াতে এর পরপরই আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
فَإِنْ كَرِهْتُمُوهُنَّ فَعَسَى أَنْ تَكْرَهُوا شَيْئًا وَيَجْعَلَ اللَّهُ فِيهِ خَيْرًا كَثِيرًا (19)
'তোমরা যদি তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে এর যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে যে, তোমরা কোনও জিনিসকে অপছন্দ করছ অথচ আল্লাহ তাতে প্রভূত কল্যাণ নিহিত রেখেছেন।'
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. বর্ণিত এক হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
لَا يَفْرَكُ مُؤْمِنٌ مُؤْمِنَةً إِنْ كَرِهَ مِنْهَا خُلُقًا رَضِيَ مِنْهَا أَخَرَ
‘কোনও মুমিন পুরুষ যেন মুমিন নারীকে (অর্থাৎ তার স্ত্রীকে) ঘৃণা না করে। তার কোনও একটি স্বভাব তার অপসন্দ হলে অন্য কোনও স্বভাবে সে খুশি হয়ে যাবে।৩১৬
দুই নং আয়াত
وَلَنْ تَسْتَطِيعُوا أَنْ تَعْدِلُوا بَيْنَ النِّسَاءِ وَلَوْ حَرَصْتُمْ فَلَا تَمِيلُوا كُلَّ الْمَيْلِ فَتَذَرُوهَا كَالْمُعَلَّقَةِ وَإِنْ تُصْلِحُوا وَتَتَّقُوا فَإِنَّ اللَّهَ كَانَ غَفُورًا رَحِيمًا (129)
অর্থ : 'তোমরা চাইলেও স্ত্রীদের মধ্যে সমান আচরণ করতে সক্ষম হবে না। তবে (কোনও একজনের প্রতি) সম্পূর্ণরূপে ঝুঁকে পড়ো না, যার ফলে অন্যজনকে মাঝখানে ঝুলন্ত বস্তুর মত ফেলে রাখবে। তোমরা যদি সংশোধন কর ও তাকওয়া অবলম্বন করে চল, তবে (জেনে রেখ) আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।৩১৭
ব্যাখ্যা
এ আয়াতে যাদের একাধিক স্ত্রী আছে তাদেরকে বলা হয়েছে যে, তাদের কর্তব্য তো সব স্ত্রীর সঙ্গেই সমান আচরণ করা। তবে সকল ব্যাপারে শতভাগ সমান আচরণ কারও পক্ষে সম্ভব নয়। তাই বলা হচ্ছে, তোমরা চাইলেও স্ত্রীদের প্রতি পরিপূর্ণ সমতাপূর্ণ আচরণ করতে পারবে না। তাই বলে ইচ্ছাকৃতভাবে পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণও করবে না। তোমাদের পক্ষে যতটুকু সমতা রক্ষা সম্ভব, ততটুকু অবশ্যই রক্ষা করবে। যা তোমাদের ক্ষমতার অতীত, সে ব্যাপারে তোমাদের কোনও জবাবদিহিতা নেই।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ স্ত্রীদের প্রতি সবসময়ই সমতাপূর্ণ আচরণ করতেন। কিন্তু মহব্বত ও ভালোবাসার বিষয়টি আলাদা। এর উপর কারও হাত নেই। এটা আল্লাহ তাআলাই মানুষের মনে সৃষ্টি করেন। এ ক্ষেত্রে কমবেশি হতেই পারে। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্ত্রীদের মধ্যে সবকিছু সমহারে বণ্টন করার পর বলতেন-
اللَّهُمَّ هَذَا فِعْلِي فِيْمَا أَمْلِكُ، فَلَا تَلُمْنِي فِيْمَا تَمْلِكُ وَلَا أَمْلِكُ
'হে আল্লাহ! আমি যা করার ক্ষমতা রাখি, সে ক্ষেত্রে আমি তো এটা করলাম। আর যে ক্ষেত্রে আমার কোনও ক্ষমতা নেই, তুমিই ক্ষমতা রাখ, সে ব্যাপারে আমাকে দোষ দিও না।৩১৮
এর দ্বারা মহব্বত ও ভালোবাসার কথাই বোঝানো হয়েছে। আল্লাহ তাআলাও এ আয়াতে জানিয়েছেন যে, মানুষ সৃষ্টিগতভাবেই এ ক্ষেত্রে অক্ষম। সে নিজ মন আপন ইচ্ছামত ঘোরাতে পারে না। তার ইচ্ছার বাইরেই কোনও এক স্ত্রীর দিকে মন বেশি আকৃষ্ট হতে পারে। এটা দোষের নয়। দোষ হচ্ছে 'হক'-এর ক্ষেত্রে কমবেশি করা। তবে হাঁ, কোনও এক স্ত্রীর দিকে মন বেশি ঝুঁকলে অন্য স্ত্রীকে উপেক্ষা করা বাঞ্ছনীয় নয়। সে কথাই আল্লাহ তাআলা আয়াতের পরের অংশে বলছেন যে-
فَلَا تَمِيلُوا كُلَّ الْمَيْلِ فَتَذَرُوهَا كَالْمُعَلَّقَةِ
‘তবে (কোনও একজনের প্রতি) সম্পূর্ণরূপে ঝুঁকে পড়ো না, যার ফলে অন্যজনকে মাঝখানে ঝুলন্ত বস্তুর মত ফেলে রাখবে। অর্থাৎ আচার-আচরণে ইচ্ছাকৃতভাবে একজনের উপর অন্যজনকে এমন অগ্রাধিকার দিও না যে, অন্যজনের খবরই রাখলে না, যদিও তা তুচ্ছ ব্যাপারে হয়। যেহেতু এটা না করার ক্ষমতা আছে, তাই এর থেকে বিরত থাকা জরুরি। অন্যজনকে ঝুলন্ত রাখার মানে তার ব্যাপারে এমন বেখবর হওয়া, যদ্দরুন তার স্বামী আছে বলেই বোঝা যাবে না, আবার বাস্তবিকপক্ষে স্বামী থাকায় তাকে বিধবাও গণ্য করা হবে না। এরূপ আচরণ সম্পূর্ণ অসঙ্গত। হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. বর্ণিত এক হাদীছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-
مَنْ كَانَتْ لَهُ امْرَأَتَانِ يَمِيْلُ لإِحْدَاهُمَا عَلَى الأَخْرى، جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَأَحَدُ شِقيْهِ مَائِلٌ
'যে ব্যক্তির দুই স্ত্রী আছে আর সে তাদের একজনকে রেখে অন্যজনের দিকে ঝুঁকে পড়ে, সে কিয়ামতের দিন এ অবস্থায় হাজির হবে যে, তার শরীরের অর্ধাংশ থাকবে ঝোঁকানো।৩১৯
আসলে যার সমতাপূর্ণ আচরণ করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাস নেই, তার একাধিক বিবাহ করাই উচিত নয়। কুরআন মাজীদে আল্লাহ তাআলা হুকুম দেন-
فَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا تَعْدِلُوْا فَوَاحِدَةً
‘অবশ্য যদি আশঙ্কা বোধ কর যে, তোমরা তাদের (স্ত্রীদের) মধ্যে সমতা রক্ষা করতে পারবে না, তবে এক স্ত্রীতে ক্ষান্ত থাক)।৩২০
তারপর আল্লাহ তাআলা বলছেন-
وَإِنْ تُصْلِحُوا وَتَتَّقُوا فَإِنَّ اللَّهَ كَانَ غَفُورًا رَحِيمًا
'তোমরা যদি সংশোধন কর ও তাকওয়া অবলম্বন করে চল, তবে (জেনে রেখ) আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু'। অর্থাৎ ইতোমধ্যে কোনও একজনের দিকে সম্পূর্ণরূপে ঝুঁকে পড়ার বা অন্যজনকে উপেক্ষা করার যে ভুল হয়ে গেছে তা যদি সংশোধন করে ফেল এবং আল্লাহ তাআলার ভয়ে ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি না কর; বরং উভয়ের প্রতি সমতাপূর্ণ আচরণ কর, তবে আল্লাহ তাআলা যেহেতু ক্ষমাশীল, সেহেতু তিনি অতীতের ভুলগুলো ক্ষমা করে দেবেন এবং তিনি দয়ালুও বটে, নিজ দয়ায় তিনি সংশোধনের তাওফীক দান করবেন আর সকলের সঙ্গে সমতাপূর্ণ আচরণে সাহায্য করবেন।
৩১৪. সূরা নিসা (৪), আয়াত ১৯
৩১৫. সূরা আ'রাফ (৭), আয়াত ১৮৯
৩১৬. সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১৪৬৯; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৮৩৬৩; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৪৭২৭; মুসনাদে আবূ ইয়া'লা, হাদীছ নং ৬৪১৮
৩১৭. সূরা নিসা (৪), আয়াত ১২৯
৩১৮. সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ৩৯৪৩; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২৫১১১; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ১৯৭১; মুসান্নাফে ইবন আবী শাইবা, হাদীছ নং ১৭৫৪১; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৪২০৫
৩১৯. সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ৩৯৪২; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৭৯৩৬; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ১৯৬৯; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ২১৩৩: সুনানুদ্ দারিমী, হাদীছ নং ২২৫২; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৪২০৭; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৬৭৩৮, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৩৪০; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ২৩২২
৩২০. সূরা নিসা (৪), আয়াত ৩
স্ত্রীদের প্রতি সদ্ব্যবহারের নির্দেশ
النساء শব্দটি দ্বারা যদিও সাধারণভাবে নারীদের বোঝানো হয়, তবে ক্ষেত্রবিশেষে এ শব্দটি স্ত্রীদের জন্য ব্যবহৃত হয়। এ অর্থে কুরআন মাজীদে শব্দটির ব্যাপক ব্যবহার আছে। এরকম ব্যবহার আছে হাদীছেও। সুতরাং এখানে النساء শব্দ ব্যবহৃত হলেও মূলত স্ত্রীদের বোঝানো উদ্দেশ্য।
ইসলাম-পূর্বকালে স্ত্রীদের প্রতি মানবিক ব্যবহারই করা হত না। সবরকম মৌলিক অধিকার থেকে তাদেরকে বঞ্চিত করা হত। ইসলাম সে পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন ঘটায়। ইসলাম স্বামী-স্ত্রীকে পরস্পরের সম্পূরক সাব্যস্ত করেছে। দাম্পত্যসম্পর্ক পারস্পরিক শান্তি ও স্বস্তির উৎস এবং এটা মানবপ্রজন্ম সচল রাখার প্রকৃষ্ট ব্যবস্থা।
কুরআন ও হাদীছে দম্পতির জন্য মৌলিকভাবে زوج শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। زوج মানে জোড়া। স্বামী-স্ত্রী দু'জন মিলে একজোড়া জোড়ার একটি ছাড়া অন্যটি যেমন অপূর্ণ, তেমনি স্বামী-স্ত্রীর একজন ছাড়া অন্যজন অপূর্ণ। কুরআন মাজীদ ইরশাদ করছে هُنَّ لِبَاسٌ لَكُمْ وَأَنْتُمْ لِبَاسٌ لَهُنَّ “তারা তোমাদের জন্য পোশাক এবং তোমরাও তাদের জন্য পোশাক।৩১২
অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রীর একের প্রতি অন্যের প্রয়োজনটি পোশাকেরই মত। পোশাক ছাড়া যেমন কোনও মানুষ চলতে পারে না, তেমনি কোনও পুরুষ স্ত্রী ছাড়া এবং স্ত্রীও স্বামী ছাড়া যথার্থরূপে চলতে পারে না। পোশাক দ্বারা শরীরের হেফাজত হয়, লজ্জা নিবারণ হয়, দৈহিক সৌন্দর্য বর্ধন হয়, ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘটে ও সামাজিক মান-মর্যাদা রক্ষা হয়, তেমনি স্বামী-স্ত্রীর একের দ্বারা অন্যের চরিত্র হেফাজত হয়, সামাজিক লজ্জা-শরম নিবারণ হয়, স্বাস্থ্য রক্ষা পায়, পিতৃত্ব ও মাতৃত্বের বিকাশ হয় এবং তারা একে অন্যের শোভাও বটে।
দাম্পত্যজীবনের এসব কল্যাণ এবং এর মূল লক্ষ্য-উদ্দেশ্য কেবল তখনই অর্জিত হতে পারে, যখন স্বামী-স্ত্রী একে অন্যের মূল্যায়ন করবে, একে অন্যের হক সম্পর্কে সচেতন থাকবে এবং পারস্পরিক কল্যাণ অনুধাবন করে একে অন্যের প্রতি সম্মানজনক ও প্রীতিপূর্ণ আচরণ করবে।
জাহিলী যুগে স্ত্রীর হক সম্পর্কে মানুষের কোনও ধারণা ছিল না। আরব-আজম নির্বিশেষে সর্বত্র মানবিক সব অধিকার পুরুষের জন্যই সংরক্ষিত ছিল। ইসলামই প্রথম এ জুলুম-অবিচারের মূলোৎপাটন করে। কুরআন ঘোষণা করে وَلَهُنَّ مِثْلُ الَّذِي عَلَيْهِنَّ بِالْمَعْرُوفِ ‘আর স্ত্রীদেরও ন্যায়সঙ্গত অধিকার রয়েছে, যেমন তাদের প্রতি (স্বামীদের) অধিকার রয়েছে।৩১৩
স্বামী তো তার অধিকার বুঝে নিতই, কিন্তু স্ত্রী দুর্বল হওয়ায় সে সবদিক থেকে বঞ্চিত থাকত। তাই ইসলাম একদিকে পুরুষের উপর নারীরও অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছে, অন্যদিকে তার সে অধিকার আদায়ের জন্য পুরুষের উপর জোর তাগিদ করেছে। পুরুষ যাতে কোনওভাবে তার উপর জুলুম না করে এবং তার সর্বপ্রকার অধিকার আদায়ে বিশেষভাবে যত্নবান থাকে, সে ব্যাপারে ইসলামের নির্দেশনা অত্যন্ত পূর্ণাঙ্গ।ইমাম নববী রহ. এ অধ্যায়ে সেসব নির্দেশনা-সম্বলিত কিছু আয়াত ও হাদীছ উল্লেখ করেছেন। নিচে তার বঙ্গানুবাদ ও সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা পেশ করা যাচ্ছে। আল্লাহ তাআলা তাওফীক দান করুন।
৩১২. সূরা বাকারা (২), আয়াত ১৮৭
৩১৩. সূরা বাকারা (২), আয়াত ২২৮
‘স্ত্রীদের প্রতি সদ্ব্যবহারের নির্দেশ’ সম্পর্কিত দুটি আয়াত
এক নং আয়াত
وَعَاشِرُوهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ
অর্থ : 'আর তাদের সাথে সদ্ভাবে জীবন যাপন কর।"
ব্যাখ্যা
عَاشِرُو আজ্ঞাসূচক ক্রিয়াপদ। এর মূল হচ্ছে المعاشرة, যার অর্থ মেলামেশা করা, সহাবস্থান করা। এ আদেশটি পুরুষদের প্রতি। আয়াতে তাদেরকে বলা হচ্ছে, তোমরা স্ত্রীদের সাথে মিলেমিশে থাক ও সহাবস্থান কর উত্তম আচরণের সঙ্গে। ইসলাম বিভিন্ন যৌক্তিক কারণে পুরুষকে অভিভাবক বানিয়েছে। অভিভাবক হিসেবে প্রথম দায়িত্বটা স্বামীর উপরই আসে। প্রথমে তারই কর্তব্য স্ত্রীকে আপন করে নেওয়া, তাকে স্বস্তির সঙ্গে বসবাস করতে দেওয়া এবং তার প্রতি আচার-আচরণে সর্বোত্তম আখলাকের পরিচয় দেওয়া।
ইসলাম বিবাহের ব্যবস্থা দিয়েছে দৈহিক প্রশান্তি ও মানসিক স্বস্তিলাভের উদ্দেশ্যে। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-
هُوَ الَّذِي خَلَقَكُمْ مِنْ نَفْسٍ وَاحِدَةٍ وَجَعَلَ مِنْهَا زَوْجَهَا لِيَسْكُنَ إِلَيْهَا
‘আল্লাহ তিনি, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি হতে সৃষ্টি করেছেন এবং তার থেকেই তার স্ত্রীকে বানিয়েছেন, যাতে সে তার কাছে এসে শান্তি লাভ করতে পারে।৩১৫
বলাবাহুল্য, স্ত্রীর কাছে এ শান্তিলাভ কেবল তখনই সম্ভব, যখন স্বামী তার সঙ্গে প্রীতিপূর্ণ আচরণ করবে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক যেহেতু সারাটা জীবনের জন্য, তাই জীবনভরই তার প্রতি সদ্ভাব বজায় রাখা জরুরি। কখনও স্ত্রীর দিক থেকে অপসন্দনীয় কিছু প্রকাশ পেলে সে কারণে তার প্রতি বিরূপ হয়ে যাওয়া উচিত নয়। প্রত্যেকেরই আলাদা রুচি-প্রকৃতি আছে। তাই একজনের সব আচরণ অন্যজনের মনমত নাও হতে পারে। কাজেই কোনও কোনও আচরণ মনমত না হওয়ায় তার প্রতি সম্পূর্ণ বিমুখ হয়ে যাওয়া নির্বুদ্ধিতা। এর পরিণাম সারা জীবনের অশান্তি। ক্ষেত্রবিশেষে অপ্রিয় আচরণের সম্মুখীন হলে কর্তব্য সবর করা। সে সবর প্রভূত কল্যাণ বয়ে আনতে পারে । কেননা কোনও কোনও আচরণ অপ্রিয় হলেও আরও বহু আচরণ প্রীতিকর হতে পারে বৈকি। অপ্রিয় আচরণে মন্দ প্রতিক্রিয়া দেখানোর ফল কেবল সেসব প্রীতিকর আচরণ নস্যাৎ করা। তাই স্ত্রীর পক্ষ থেকে ভালোমন্দ সব আচরণের ক্ষেত্রেই নিজের পক্ষ থেকে সদ্ভাব বজায় রাখা জরুরি। সুতরাং আলোচ্য আয়াতে এর পরপরই আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
فَإِنْ كَرِهْتُمُوهُنَّ فَعَسَى أَنْ تَكْرَهُوا شَيْئًا وَيَجْعَلَ اللَّهُ فِيهِ خَيْرًا كَثِيرًا (19)
'তোমরা যদি তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে এর যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে যে, তোমরা কোনও জিনিসকে অপছন্দ করছ অথচ আল্লাহ তাতে প্রভূত কল্যাণ নিহিত রেখেছেন।'
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. বর্ণিত এক হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
لَا يَفْرَكُ مُؤْمِنٌ مُؤْمِنَةً إِنْ كَرِهَ مِنْهَا خُلُقًا رَضِيَ مِنْهَا أَخَرَ
‘কোনও মুমিন পুরুষ যেন মুমিন নারীকে (অর্থাৎ তার স্ত্রীকে) ঘৃণা না করে। তার কোনও একটি স্বভাব তার অপসন্দ হলে অন্য কোনও স্বভাবে সে খুশি হয়ে যাবে।৩১৬
দুই নং আয়াত
وَلَنْ تَسْتَطِيعُوا أَنْ تَعْدِلُوا بَيْنَ النِّسَاءِ وَلَوْ حَرَصْتُمْ فَلَا تَمِيلُوا كُلَّ الْمَيْلِ فَتَذَرُوهَا كَالْمُعَلَّقَةِ وَإِنْ تُصْلِحُوا وَتَتَّقُوا فَإِنَّ اللَّهَ كَانَ غَفُورًا رَحِيمًا (129)
অর্থ : 'তোমরা চাইলেও স্ত্রীদের মধ্যে সমান আচরণ করতে সক্ষম হবে না। তবে (কোনও একজনের প্রতি) সম্পূর্ণরূপে ঝুঁকে পড়ো না, যার ফলে অন্যজনকে মাঝখানে ঝুলন্ত বস্তুর মত ফেলে রাখবে। তোমরা যদি সংশোধন কর ও তাকওয়া অবলম্বন করে চল, তবে (জেনে রেখ) আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।৩১৭
ব্যাখ্যা
এ আয়াতে যাদের একাধিক স্ত্রী আছে তাদেরকে বলা হয়েছে যে, তাদের কর্তব্য তো সব স্ত্রীর সঙ্গেই সমান আচরণ করা। তবে সকল ব্যাপারে শতভাগ সমান আচরণ কারও পক্ষে সম্ভব নয়। তাই বলা হচ্ছে, তোমরা চাইলেও স্ত্রীদের প্রতি পরিপূর্ণ সমতাপূর্ণ আচরণ করতে পারবে না। তাই বলে ইচ্ছাকৃতভাবে পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণও করবে না। তোমাদের পক্ষে যতটুকু সমতা রক্ষা সম্ভব, ততটুকু অবশ্যই রক্ষা করবে। যা তোমাদের ক্ষমতার অতীত, সে ব্যাপারে তোমাদের কোনও জবাবদিহিতা নেই।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ স্ত্রীদের প্রতি সবসময়ই সমতাপূর্ণ আচরণ করতেন। কিন্তু মহব্বত ও ভালোবাসার বিষয়টি আলাদা। এর উপর কারও হাত নেই। এটা আল্লাহ তাআলাই মানুষের মনে সৃষ্টি করেন। এ ক্ষেত্রে কমবেশি হতেই পারে। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্ত্রীদের মধ্যে সবকিছু সমহারে বণ্টন করার পর বলতেন-
اللَّهُمَّ هَذَا فِعْلِي فِيْمَا أَمْلِكُ، فَلَا تَلُمْنِي فِيْمَا تَمْلِكُ وَلَا أَمْلِكُ
'হে আল্লাহ! আমি যা করার ক্ষমতা রাখি, সে ক্ষেত্রে আমি তো এটা করলাম। আর যে ক্ষেত্রে আমার কোনও ক্ষমতা নেই, তুমিই ক্ষমতা রাখ, সে ব্যাপারে আমাকে দোষ দিও না।৩১৮
এর দ্বারা মহব্বত ও ভালোবাসার কথাই বোঝানো হয়েছে। আল্লাহ তাআলাও এ আয়াতে জানিয়েছেন যে, মানুষ সৃষ্টিগতভাবেই এ ক্ষেত্রে অক্ষম। সে নিজ মন আপন ইচ্ছামত ঘোরাতে পারে না। তার ইচ্ছার বাইরেই কোনও এক স্ত্রীর দিকে মন বেশি আকৃষ্ট হতে পারে। এটা দোষের নয়। দোষ হচ্ছে 'হক'-এর ক্ষেত্রে কমবেশি করা। তবে হাঁ, কোনও এক স্ত্রীর দিকে মন বেশি ঝুঁকলে অন্য স্ত্রীকে উপেক্ষা করা বাঞ্ছনীয় নয়। সে কথাই আল্লাহ তাআলা আয়াতের পরের অংশে বলছেন যে-
فَلَا تَمِيلُوا كُلَّ الْمَيْلِ فَتَذَرُوهَا كَالْمُعَلَّقَةِ
‘তবে (কোনও একজনের প্রতি) সম্পূর্ণরূপে ঝুঁকে পড়ো না, যার ফলে অন্যজনকে মাঝখানে ঝুলন্ত বস্তুর মত ফেলে রাখবে। অর্থাৎ আচার-আচরণে ইচ্ছাকৃতভাবে একজনের উপর অন্যজনকে এমন অগ্রাধিকার দিও না যে, অন্যজনের খবরই রাখলে না, যদিও তা তুচ্ছ ব্যাপারে হয়। যেহেতু এটা না করার ক্ষমতা আছে, তাই এর থেকে বিরত থাকা জরুরি। অন্যজনকে ঝুলন্ত রাখার মানে তার ব্যাপারে এমন বেখবর হওয়া, যদ্দরুন তার স্বামী আছে বলেই বোঝা যাবে না, আবার বাস্তবিকপক্ষে স্বামী থাকায় তাকে বিধবাও গণ্য করা হবে না। এরূপ আচরণ সম্পূর্ণ অসঙ্গত। হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. বর্ণিত এক হাদীছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-
مَنْ كَانَتْ لَهُ امْرَأَتَانِ يَمِيْلُ لإِحْدَاهُمَا عَلَى الأَخْرى، جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَأَحَدُ شِقيْهِ مَائِلٌ
'যে ব্যক্তির দুই স্ত্রী আছে আর সে তাদের একজনকে রেখে অন্যজনের দিকে ঝুঁকে পড়ে, সে কিয়ামতের দিন এ অবস্থায় হাজির হবে যে, তার শরীরের অর্ধাংশ থাকবে ঝোঁকানো।৩১৯
আসলে যার সমতাপূর্ণ আচরণ করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাস নেই, তার একাধিক বিবাহ করাই উচিত নয়। কুরআন মাজীদে আল্লাহ তাআলা হুকুম দেন-
فَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا تَعْدِلُوْا فَوَاحِدَةً
‘অবশ্য যদি আশঙ্কা বোধ কর যে, তোমরা তাদের (স্ত্রীদের) মধ্যে সমতা রক্ষা করতে পারবে না, তবে এক স্ত্রীতে ক্ষান্ত থাক)।৩২০
তারপর আল্লাহ তাআলা বলছেন-
وَإِنْ تُصْلِحُوا وَتَتَّقُوا فَإِنَّ اللَّهَ كَانَ غَفُورًا رَحِيمًا
'তোমরা যদি সংশোধন কর ও তাকওয়া অবলম্বন করে চল, তবে (জেনে রেখ) আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু'। অর্থাৎ ইতোমধ্যে কোনও একজনের দিকে সম্পূর্ণরূপে ঝুঁকে পড়ার বা অন্যজনকে উপেক্ষা করার যে ভুল হয়ে গেছে তা যদি সংশোধন করে ফেল এবং আল্লাহ তাআলার ভয়ে ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি না কর; বরং উভয়ের প্রতি সমতাপূর্ণ আচরণ কর, তবে আল্লাহ তাআলা যেহেতু ক্ষমাশীল, সেহেতু তিনি অতীতের ভুলগুলো ক্ষমা করে দেবেন এবং তিনি দয়ালুও বটে, নিজ দয়ায় তিনি সংশোধনের তাওফীক দান করবেন আর সকলের সঙ্গে সমতাপূর্ণ আচরণে সাহায্য করবেন।
৩১৪. সূরা নিসা (৪), আয়াত ১৯
৩১৫. সূরা আ'রাফ (৭), আয়াত ১৮৯
৩১৬. সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১৪৬৯; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৮৩৬৩; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৪৭২৭; মুসনাদে আবূ ইয়া'লা, হাদীছ নং ৬৪১৮
৩১৭. সূরা নিসা (৪), আয়াত ১২৯
৩১৮. সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ৩৯৪৩; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২৫১১১; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ১৯৭১; মুসান্নাফে ইবন আবী শাইবা, হাদীছ নং ১৭৫৪১; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৪২০৫
৩১৯. সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ৩৯৪২; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৭৯৩৬; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ১৯৬৯; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ২১৩৩: সুনানুদ্ দারিমী, হাদীছ নং ২২৫২; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৪২০৭; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৬৭৩৮, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৮৩৪০; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ২৩২২
৩২০. সূরা নিসা (৪), আয়াত ৩
স্ত্রীদের প্রতি সদাচরণের উপদেশ
হাদীছ নং : ২৭৩
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা আমার নিকট থেকে নারীদের প্রতি সদ্ব্যবহার করার উপদেশ গ্রহণ কর। কেননা নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছে পাঁজরের হাড় দ্বারা। পাঁজরের হাড়ের মধ্যে উপরেরটা সবচেয়ে বেশি বাঁকা। কাজেই তুমি যদি সেটি সোজা করতে যাও তবে ভেঙ্গে ফেলবে। আর যদি সেটি ছেড়ে দাও তবে সর্বদা বাঁকাই থাকবে। সুতরাং তোমরা আমার নিকট থেকে নারীদের সম্পর্কে (সদ্ব্যবহার করার) উপদেশ গ্রহণ কর -বুখারী ও মুসলিম।৩২১
বুখারী ও মুসলিমের অপর এক বর্ণনায় আছে- নারী হচ্ছে পাঁজরের হাড়ের মত। তুমি তাকে সোজা করতে চাইলে ভেঙ্গে ফেলবে আর তুমি যদি তার দ্বারা উপকৃত হতে চাও, তবে তার মধ্যে বক্রতা থাকা অবস্থায়ই তার দ্বারা উপকৃত হতে পারবে।
সহীহ মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে- নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছে পাঁজরের হাড় দ্বারা। সে কোনও উপায়েই তোমার জন্য সোজা হবে না। তুমি যদি তার দ্বারা উপকৃত হতে চাও, তার বাঁকা থাকা অবস্থায়ই উপকৃত হতে পারবে। আর যদি তাকে সোজা করতে যাও তবে ভেঙ্গে ফেলবে। তাকে ভাঙ্গার অর্থ তার তালাক।
৩২১. সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৩৩৩১; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১৪৬৮; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীছ নং ১৮৫১; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা, হাদীছ নং ১৯২৭২; বায়হাকী, আস-সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৪৭২২; নাসাঈ, আস-সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ৯০৯৫
হাদীছ নং : ২৭৩
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা আমার নিকট থেকে নারীদের প্রতি সদ্ব্যবহার করার উপদেশ গ্রহণ কর। কেননা নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছে পাঁজরের হাড় দ্বারা। পাঁজরের হাড়ের মধ্যে উপরেরটা সবচেয়ে বেশি বাঁকা। কাজেই তুমি যদি সেটি সোজা করতে যাও তবে ভেঙ্গে ফেলবে। আর যদি সেটি ছেড়ে দাও তবে সর্বদা বাঁকাই থাকবে। সুতরাং তোমরা আমার নিকট থেকে নারীদের সম্পর্কে (সদ্ব্যবহার করার) উপদেশ গ্রহণ কর -বুখারী ও মুসলিম।৩২১
বুখারী ও মুসলিমের অপর এক বর্ণনায় আছে- নারী হচ্ছে পাঁজরের হাড়ের মত। তুমি তাকে সোজা করতে চাইলে ভেঙ্গে ফেলবে আর তুমি যদি তার দ্বারা উপকৃত হতে চাও, তবে তার মধ্যে বক্রতা থাকা অবস্থায়ই তার দ্বারা উপকৃত হতে পারবে।
সহীহ মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে- নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছে পাঁজরের হাড় দ্বারা। সে কোনও উপায়েই তোমার জন্য সোজা হবে না। তুমি যদি তার দ্বারা উপকৃত হতে চাও, তার বাঁকা থাকা অবস্থায়ই উপকৃত হতে পারবে। আর যদি তাকে সোজা করতে যাও তবে ভেঙ্গে ফেলবে। তাকে ভাঙ্গার অর্থ তার তালাক।
৩২১. সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৩৩৩১; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১৪৬৮; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীছ নং ১৮৫১; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা, হাদীছ নং ১৯২৭২; বায়হাকী, আস-সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৪৭২২; নাসাঈ, আস-সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ৯০৯৫
مقدمة الامام النووي
34 - باب الوصية بالنساء
قَالَ الله تَعَالَى: {وَعَاشِرُوهُنَّ بِالْمَعْرُوف} [النساء:19]، وَقالَ تَعَالَى: {وَلَنْ تَسْتَطِيعُوا أَنْ تَعْدِلُوا بَيْنَ النِّسَاءِ وَلَوْ حَرَصْتُمْ فَلا تَمِيلُوا كُلَّ الْمَيْلِ فَتَذَرُوهَا كَالْمُعَلَّقَةِ وَإِنْ تُصْلِحُوا وَتَتَّقُوا فَإِنَّ اللهَ كَانَ غَفُورًا رَحِيمًا} [النساء: 129].
قَالَ الله تَعَالَى: {وَعَاشِرُوهُنَّ بِالْمَعْرُوف} [النساء:19]، وَقالَ تَعَالَى: {وَلَنْ تَسْتَطِيعُوا أَنْ تَعْدِلُوا بَيْنَ النِّسَاءِ وَلَوْ حَرَصْتُمْ فَلا تَمِيلُوا كُلَّ الْمَيْلِ فَتَذَرُوهَا كَالْمُعَلَّقَةِ وَإِنْ تُصْلِحُوا وَتَتَّقُوا فَإِنَّ اللهَ كَانَ غَفُورًا رَحِيمًا} [النساء: 129].
273 - وعن أَبي هريرة - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «اسْتَوْصُوا بالنِّساءِ خَيْرًا؛ فَإِنَّ المَرْأَةَ خُلِقَتْ مِنْ ضِلعٍ، وَإنَّ أعْوَجَ مَا في الضِّلَعِ أعْلاهُ، فَإنْ ذَهَبتَ تُقيمُهُ كَسَرْتَهُ، وَإنْ تَرَكْتَهُ، لَمْ يَزَلْ أعْوجَ، فَاسْتَوصُوا بالنِّساءِ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
وفي رواية في الصحيحين: «المَرأةُ كالضِّلَعِ إنْ أقَمْتَهَا كَسَرْتَهَا، وَإن اسْتَمتَعْتَ بِهَا، اسْتَمتَعْتَ وفِيهَا عوَجٌ».
وفي رواية لمسلم: «إنَّ المَرأةَ خُلِقَت مِنْ ضِلَع، لَنْ تَسْتَقِيمَ لَكَ عَلَى طَريقة، فإن اسْتَمْتَعْتَ بِهَا اسْتَمْتَعْتَ بِهَا وَفيهَا عوَجٌ، وإنْ ذَهَبْتَ تُقِيمُهَا كَسَرْتَها، وَكَسْرُهَا طَلاَقُهَا».
قوله: «عَوَجٌ» هُوَ بفتح العينِ والواوِ.
وفي رواية في الصحيحين: «المَرأةُ كالضِّلَعِ إنْ أقَمْتَهَا كَسَرْتَهَا، وَإن اسْتَمتَعْتَ بِهَا، اسْتَمتَعْتَ وفِيهَا عوَجٌ».
وفي رواية لمسلم: «إنَّ المَرأةَ خُلِقَت مِنْ ضِلَع، لَنْ تَسْتَقِيمَ لَكَ عَلَى طَريقة، فإن اسْتَمْتَعْتَ بِهَا اسْتَمْتَعْتَ بِهَا وَفيهَا عوَجٌ، وإنْ ذَهَبْتَ تُقِيمُهَا كَسَرْتَها، وَكَسْرُهَا طَلاَقُهَا».
قوله: «عَوَجٌ» هُوَ بفتح العينِ والواوِ.
হাদীস নং: ২৭৪
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ স্ত্রীদের প্রতি সদ্ব্যবহারের নির্দেশ
স্ত্রীকে মারধর করার নিষেধাজ্ঞা
হাদীছ নং : ২৭৪
হযরত আবদুল্লাহ ইবন যাম'আহ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বক্তব্য দিতে শুনেছেন। তাতে তিনি (হযরত সালিহ আলাইহিস সালামের) উটনী ও সেটির হত্যাকারীর কথা উল্লেখ করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম إِذِ انْبَعَثَ أَشْقَاهَا (যখন তাদের দূর্ভাগা লোকটি উদ্যত হল) -এর ব্যাখ্যায় বললেন, সেটিকে হত্যা করতে উদ্যত হল এক প্রভাবশালী দুরাচার ব্যক্তি, যে নিজে ছিল অত্যন্ত শক্তিমান। তারপর তিনি নারীদের প্রসঙ্গ উল্লেখ করলেন। তিনি তাদের ব্যাপারে নসীহত করলেন। বললেন, তোমাদের কেউ কেউ তার স্ত্রীকে পেটাতে উদ্যত হয়। তাকে পেটায় দাস-দাসীর মত। আবার দিন শেষে তার সঙ্গে উপগত হয়। তারপর তিনি তাদেরকে উপদেশ দিলেন বাতকর্ম সম্পর্কে। বললেন, তোমাদের প্রত্যেকে এমন কাজে কেন হাসে, যা নিজে করে?! -বুখারী ও মুসলিম।
(সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৪৯৪২; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৮৫৫; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ৩৩৪৩; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ১৬২২২; নাসাঈ, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১১৬১১; তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ৪৪২; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৫৭৯৪; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৬৩৩৬; শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ২৩৪৩)
হাদীছ নং : ২৭৪
হযরত আবদুল্লাহ ইবন যাম'আহ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বক্তব্য দিতে শুনেছেন। তাতে তিনি (হযরত সালিহ আলাইহিস সালামের) উটনী ও সেটির হত্যাকারীর কথা উল্লেখ করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম إِذِ انْبَعَثَ أَشْقَاهَا (যখন তাদের দূর্ভাগা লোকটি উদ্যত হল) -এর ব্যাখ্যায় বললেন, সেটিকে হত্যা করতে উদ্যত হল এক প্রভাবশালী দুরাচার ব্যক্তি, যে নিজে ছিল অত্যন্ত শক্তিমান। তারপর তিনি নারীদের প্রসঙ্গ উল্লেখ করলেন। তিনি তাদের ব্যাপারে নসীহত করলেন। বললেন, তোমাদের কেউ কেউ তার স্ত্রীকে পেটাতে উদ্যত হয়। তাকে পেটায় দাস-দাসীর মত। আবার দিন শেষে তার সঙ্গে উপগত হয়। তারপর তিনি তাদেরকে উপদেশ দিলেন বাতকর্ম সম্পর্কে। বললেন, তোমাদের প্রত্যেকে এমন কাজে কেন হাসে, যা নিজে করে?! -বুখারী ও মুসলিম।
(সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৪৯৪২; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৮৫৫; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ৩৩৪৩; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ১৬২২২; নাসাঈ, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১১৬১১; তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ৪৪২; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৫৭৯৪; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৬৩৩৬; শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ২৩৪৩)
مقدمة الامام النووي
34 - باب الوصية بالنساء
274 - وعن عبد الله بن زَمْعَةَ - رضي الله عنه: أنَّهُ سَمِعَ النَّبيّ - صلى الله عليه وسلم - يَخْطُبُ، وَذَكَرَ النَّاقَةَ وَالَّذِي عَقَرَهَا، فَقَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «{إِذ انْبَعَثَ أشْقَاهَا} انْبَعَثَ لَهَا رَجُلٌ عَزيزٌ، عَارِمٌ مَنيعٌ في رَهْطِهِ»، ثُمَّ ذَكَرَ النِّسَاءَ، فَوعَظَ فِيهنَّ، فَقَالَ: «يَعْمِدُ أحَدُكُمْ فَيَجْلِدُ امْرَأتَهُ جَلْدَ العَبْدِ فَلَعَلَّهُ يُضَاجِعُهَا مِنْ آخِرِ يَومِهِ» ثُمَّ وَعَظَهُمْ في ضَحِكِهمْ مِنَ الضَّرْطَةِ، وَقالَ: «لِمَ يَضْحَكُ أَحَدُكُمْ مِمَّا يَفْعَلُ؟! (1)». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (2) [ص:110]
«وَالعَارِمُ» بالعين المهملة والراء: هُوَ الشِّرِّيرُ المفسِدُ، وقوله: «انْبَعَثَ»، أيْ: قَامَ بسرعة.
«وَالعَارِمُ» بالعين المهملة والراء: هُوَ الشِّرِّيرُ المفسِدُ، وقوله: «انْبَعَثَ»، أيْ: قَامَ بسرعة.
হাদীস নং: ২৭৫
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ স্ত্রীদের প্রতি সদ্ব্যবহারের নির্দেশ
দু’-একটি অপসন্দনীয় কাজের কারণে স্ত্রীর প্রতি বিরূপ হওয়া ঠিক নয়
হাদীছ নং : ২৭৫
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, কোনও মুমিন পুরুষ যেন মুমিন নারীকে (অর্থাৎ তার স্ত্রীকে) ঘৃণা না করে। তার কোনও একটি স্বভাব তার অপসন্দ হলে অন্য কোনও স্বভাবে সে খুশি হয়ে যাবে।
সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১৪৬৯; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৮৩৬৩; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৪৭২৭; মুসনাদে আবূ ইয়া'লা, হাদীছ নং ৬৪১৮
হাদীছ নং : ২৭৫
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, কোনও মুমিন পুরুষ যেন মুমিন নারীকে (অর্থাৎ তার স্ত্রীকে) ঘৃণা না করে। তার কোনও একটি স্বভাব তার অপসন্দ হলে অন্য কোনও স্বভাবে সে খুশি হয়ে যাবে।
সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১৪৬৯; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৮৩৬৩; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৪৭২৭; মুসনাদে আবূ ইয়া'লা, হাদীছ নং ৬৪১৮
مقدمة الامام النووي
34 - باب الوصية بالنساء
275 - وعن أَبي هريرة - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «لاَ يَفْرَكْ مُؤْمِنٌ مُؤْمِنَةً إنْ كَرِهَ مِنْهَا خُلُقًا رَضِيَ مِنْهَا آخَرَ»، أَوْ قَالَ: «غَيْرَهُ». رواه مسلم. (1)
وقولُهُ: «يَفْرَكْ» هُوَ بفتح الياءِ وإسكان الفاء وفتح الراءِ معناه: يُبْغِضُ، يقالُ: فَرِكَتِ المَرأةُ زَوْجَهَا، وَفَرِكَهَا زَوْجُهَا، بكسر الراء يفْرَكُهَا بفتحها: أيْ أبْغَضَهَا، والله أعلم.
وقولُهُ: «يَفْرَكْ» هُوَ بفتح الياءِ وإسكان الفاء وفتح الراءِ معناه: يُبْغِضُ، يقالُ: فَرِكَتِ المَرأةُ زَوْجَهَا، وَفَرِكَهَا زَوْجُهَا، بكسر الراء يفْرَكُهَا بفتحها: أيْ أبْغَضَهَا، والله أعلم.
হাদীস নং: ২৭৬
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ স্ত্রীদের প্রতি সদ্ব্যবহারের নির্দেশ
স্ত্রীকে সংশোধনের পর্যায়ক্রমিক পন্থা এবং স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক হকসমূহ
হাদীছ নং : ২৭৬
হযরত আমর ইবনুল আহওয়াস আল-জুশামী রাযি. থেকে বর্ণিত। তিনি বিদায় হজ্জের ভাষণে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আল্লাহ তাআলার হাম্দ ও ছানা জ্ঞাপন করার পর উপদেশ ও নসীহতমূলক বক্তব্য দান করতে শুনেছেন। তাতে তিনি বলেন, শোন, তোমরা আমার নিকট থেকে নারীদের প্রতি সদ্ব্যবহারের উপদেশ গ্রহণ কর। তারা তো তোমাদের কাছে আবদ্ধ আছে। তোমরা তাদের কাছে এছাড়া অন্য কোনওকিছুর মালিকানা রাখ না। অবশ্য তারা প্রকাশ্য অশিষ্টকর্মে লিপ্ত হলে ভিন্ন কথা। তারা সেরকম কিছু করলে তাদেরকে তোমরা বিছানায় পরিত্যাগ করবে এবং তাদেরকে এমনভাবে মারবে, যা কঠোর-কঠিন হবে না। যদি তারা তোমাদের আনুগত্য করে, তবে তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণের চিন্তা করবে না। শোন, তোমাদের স্ত্রীদের উপর তোমাদের হক আছে এবং তোমাদের উপরও তোমাদের স্ত্রীদের হক আছে। তাদের উপর তোমাদের হক হল তারা তোমাদের অপসন্দনীয় কাউকে তোমাদের বিছানা ব্যবহার করতে দেবে না এবং তোমাদের ঘরে তোমাদের অপসন্দের কাউকে প্রবেশ করার অনুমতি দেবে না। শোন, তোমাদের উপর তাদের হক হল তোমরা তাদের পোশাক ও খাবারে তাদের প্রতি সদাচরণ করবে – ইমাম তিরমিযী রহ. এ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, এটি একটি হাসান সহীহ স্তরের হাদীছ।
জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ১১৬৩; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ১৮৫১; নাসাঈ, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ৯১২৪; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২০৬৯৫; তহাবী, শারহু মুশকিলিল আছার, হাদীছ নং ৪৮৬৫
হাদীছ নং : ২৭৬
হযরত আমর ইবনুল আহওয়াস আল-জুশামী রাযি. থেকে বর্ণিত। তিনি বিদায় হজ্জের ভাষণে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আল্লাহ তাআলার হাম্দ ও ছানা জ্ঞাপন করার পর উপদেশ ও নসীহতমূলক বক্তব্য দান করতে শুনেছেন। তাতে তিনি বলেন, শোন, তোমরা আমার নিকট থেকে নারীদের প্রতি সদ্ব্যবহারের উপদেশ গ্রহণ কর। তারা তো তোমাদের কাছে আবদ্ধ আছে। তোমরা তাদের কাছে এছাড়া অন্য কোনওকিছুর মালিকানা রাখ না। অবশ্য তারা প্রকাশ্য অশিষ্টকর্মে লিপ্ত হলে ভিন্ন কথা। তারা সেরকম কিছু করলে তাদেরকে তোমরা বিছানায় পরিত্যাগ করবে এবং তাদেরকে এমনভাবে মারবে, যা কঠোর-কঠিন হবে না। যদি তারা তোমাদের আনুগত্য করে, তবে তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণের চিন্তা করবে না। শোন, তোমাদের স্ত্রীদের উপর তোমাদের হক আছে এবং তোমাদের উপরও তোমাদের স্ত্রীদের হক আছে। তাদের উপর তোমাদের হক হল তারা তোমাদের অপসন্দনীয় কাউকে তোমাদের বিছানা ব্যবহার করতে দেবে না এবং তোমাদের ঘরে তোমাদের অপসন্দের কাউকে প্রবেশ করার অনুমতি দেবে না। শোন, তোমাদের উপর তাদের হক হল তোমরা তাদের পোশাক ও খাবারে তাদের প্রতি সদাচরণ করবে – ইমাম তিরমিযী রহ. এ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, এটি একটি হাসান সহীহ স্তরের হাদীছ।
জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ১১৬৩; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ১৮৫১; নাসাঈ, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ৯১২৪; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২০৬৯৫; তহাবী, শারহু মুশকিলিল আছার, হাদীছ নং ৪৮৬৫
مقدمة الامام النووي
34 - باب الوصية بالنساء
276 - وعن عمرو بن الأحوصِ الجُشَمي - رضي الله عنه: أنَّهُ سَمِعَ النَّبيّ - صلى الله عليه وسلم - في حَجَّةِ الوَدَاعِ يَقُولُ بَعْدَ أَنْ حَمِدَ الله تَعَالَى، وَأثْنَى عَلَيهِ وَذَكَّرَ وَوَعظَ، ثُمَّ قَالَ: «ألا وَاسْتَوصُوا بالنِّساءِ خَيْرًا، فَإِنَّمَا هُنَّ عَوَانٍ عِنْدَكُمْ لَيْسَ تَمْلِكُونَ مِنْهُنَّ شَيْئًا غَيْرَ ذلِكَ إلاَّ أَنْ يَأتِينَ بِفَاحِشَةٍ (1) مُبَيِّنَةٍ، فَإنْ فَعَلْنَ فَاهْجُرُوهُنَّ في المَضَاجِع، وَاضْرِبُوهُنَّ ضَربًا غَيْرَ مُبَرِّحٍ، فإنْ أطَعْنَكُمْ فَلا تَبْغُوا عَلَيهنَّ سَبيلًا؛ ألاَ إنَّ لَكُمْ عَلَى نِسَائِكُمْ حَقًّا، وَلِنِسَائِكُمْ عَلَيْكُمْ حَقًّا؛ فَحَقُّكُمْ عَلَيهِنَّ أَنْ لا يُوطِئْنَ فُرُشَكُمْ مَنْ تَكْرَهُونَ، وَلا يَأْذَنَّ في بُيُوتِكُمْ لِمَنْ تَكْرَهُونَ؛ ألاَ وَحَقُّهُنَّ عَلَيْكُمْ أَنْ تُحْسِنُوا إِلَيْهِنَّ في كِسْوَتِهنَّ وَطَعَامِهنَّ». رواه الترمذي، (2) وَقالَ: «حديث حسن صحيح».
قوله - صلى الله عليه وسلم: «عَوان» أيْ: أسِيرَاتٌ جَمْع عَانِيَة، بالعَيْنِ المُهْمَلَةِ، وَهِيَ الأسِيرَةُ، والعاني: الأسير. شَبَّهَ رسولُ الله - صلى الله عليه وسلم - المرأةَ في دخولِها تَحْتَ حُكْمِ الزَّوْجِ بالأَسيرِ «وَالضَّرْبُ المبَرِّحُ»: هُوَ الشَّاقُ الشَّدِيد وقوله - صلى الله عليه وسلم: «فَلاَ تَبْغُوا عَلَيهنَّ سَبِيلًا» أيْ: لاَ تَطْلُبُوا طَريقًا تَحْتَجُّونَ بِهِ عَلَيهِنَّ وَتُؤْذُونَهُنَّ بِهِ، والله أعلم.
قوله - صلى الله عليه وسلم: «عَوان» أيْ: أسِيرَاتٌ جَمْع عَانِيَة، بالعَيْنِ المُهْمَلَةِ، وَهِيَ الأسِيرَةُ، والعاني: الأسير. شَبَّهَ رسولُ الله - صلى الله عليه وسلم - المرأةَ في دخولِها تَحْتَ حُكْمِ الزَّوْجِ بالأَسيرِ «وَالضَّرْبُ المبَرِّحُ»: هُوَ الشَّاقُ الشَّدِيد وقوله - صلى الله عليه وسلم: «فَلاَ تَبْغُوا عَلَيهنَّ سَبِيلًا» أيْ: لاَ تَطْلُبُوا طَريقًا تَحْتَجُّونَ بِهِ عَلَيهِنَّ وَتُؤْذُونَهُنَّ بِهِ، والله أعلم.
হাদীস নং: ২৭৭
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ স্ত্রীদের প্রতি সদ্ব্যবহারের নির্দেশ
স্বামীর উপর স্ত্রীর অধিকারসমূহ
হাদীছ নং : ২৭৭
হযরত মুআবিয়া ইবন হায়দা রাযি. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের কারও উপর তার স্ত্রীর হক কী? তিনি বললেন, তুমি নিজে যখন খাও তখন তাকেও খাওয়াবে, তুমি যখন পরিধান কর তাকেও পরিধান করাবে, তুমি তার চেহারায় মারবে না, তাকে গালমন্দ করবে না এবং ঘরের ভেতর ছাড়া অন্যত্র তাকে ত্যাগ করবে না –আবূ দাউদ। ৩৩৫
ইমাম আবূ দাউদ রহ. বলেন, لَا تُقَبِّحْ -এর অর্থ তাকে লক্ষ্য করে ‘আল্লাহ তোমার মন্দ করুন' বলবে না।
৩৩৫. সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ২১৪২; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২০২২; তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ১০৩৪; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৪৭৭৯; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ২৩৩০
হাদীছ নং : ২৭৭
হযরত মুআবিয়া ইবন হায়দা রাযি. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের কারও উপর তার স্ত্রীর হক কী? তিনি বললেন, তুমি নিজে যখন খাও তখন তাকেও খাওয়াবে, তুমি যখন পরিধান কর তাকেও পরিধান করাবে, তুমি তার চেহারায় মারবে না, তাকে গালমন্দ করবে না এবং ঘরের ভেতর ছাড়া অন্যত্র তাকে ত্যাগ করবে না –আবূ দাউদ। ৩৩৫
ইমাম আবূ দাউদ রহ. বলেন, لَا تُقَبِّحْ -এর অর্থ তাকে লক্ষ্য করে ‘আল্লাহ তোমার মন্দ করুন' বলবে না।
৩৩৫. সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ২১৪২; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২০২২; তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ১০৩৪; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৪৭৭৯; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ২৩৩০
مقدمة الامام النووي
34 - باب الوصية بالنساء
277 - وعن معاوية بن حيدة - رضي الله عنه - قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُول الله، مَا حق زَوجَةِ أَحَدِنَا عَلَيهِ؟ قَالَ: «أنْ تُطْعِمَهَا إِذَا طعِمْتَ، وَتَكْسُوهَا إِذَا اكْتَسَيْتَ، وَلاَ تَضْرِبِ الوَجْهَ، [ص:111] وَلا تُقَبِّحْ، وَلا تَهْجُرْ إلاَّ في البَيْتِ» حديثٌ حسنٌ رواه أَبُو داود (1) وَقالَ: معنى «لا تُقَبِّحْ» أي: لا تقل: قبحكِ الله.
হাদীস নং: ২৭৮
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ স্ত্রীদের প্রতি সদ্ব্যবহারের নির্দেশ
পূর্ণাঙ্গ মুমিন ও উৎকৃষ্ট লোক কে
হাদীছ নং : ২৭৮
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ঈমানের দিক থেকে সর্বাপেক্ষা পূর্ণাঙ্গ মুমিন সেই ব্যক্তি, যার আখলাক-চরিত্র সবচেয়ে ভালো। এবং তোমাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম লোক তারা, যারা তাদের স্ত্রীদের কাছে শ্রেষ্ঠতম -তিরমিযী।
(জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ১১৬২; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৭৪০২; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৪১৭৬; মুসান্নাফে ইবন আবী শাইবা, হাদীছ নং ২৫৩১৮; তাবারানী, আল মুজামুল আওসাত, হাদীছ নং ৪৪২০; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ২৭; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ২৩৪১; তহাবী, শারহু মুশকিলিল আছার, হাদীছ নং ৪৪৩১)
হাদীছ নং : ২৭৮
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ঈমানের দিক থেকে সর্বাপেক্ষা পূর্ণাঙ্গ মুমিন সেই ব্যক্তি, যার আখলাক-চরিত্র সবচেয়ে ভালো। এবং তোমাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম লোক তারা, যারা তাদের স্ত্রীদের কাছে শ্রেষ্ঠতম -তিরমিযী।
(জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ১১৬২; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৭৪০২; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৪১৭৬; মুসান্নাফে ইবন আবী শাইবা, হাদীছ নং ২৫৩১৮; তাবারানী, আল মুজামুল আওসাত, হাদীছ নং ৪৪২০; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ২৭; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ২৩৪১; তহাবী, শারহু মুশকিলিল আছার, হাদীছ নং ৪৪৩১)
مقدمة الامام النووي
34 - باب الوصية بالنساء
278 - وعن أَبي هريرة - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «أكْمَلُ المُؤمِنِينَ إيمَانًا أحْسَنُهُمْ خُلُقًا، وخِيَارُكُمْ خياركم لِنِسَائِهِمْ». رواه الترمذي، (1) وَقالَ: «حديث حسن صحيح».
হাদীস নং: ২৭৯
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ স্ত্রীদের প্রতি সদ্ব্যবহারের নির্দেশ
স্ত্রীকে মারপিট করা যাবে কি
হাদীছ নং : ২৭৯
হযরত ইয়াস ইবন আব্দুল্লাহ ইবন আবী যুবাব রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা আল্লাহর বান্দীদেরকে মারপিট করো না। তারপর উমর রাযি. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বললেন, স্ত্রীরা তাদের স্বামীদের উপর অবাধ্য হয়ে উঠেছে। ফলে তিনি তাদেরকে মারার অনুমতি দিলেন। তারপর একের পর এক অনেক মহিলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পরিবারবর্গের কাছে তাদের স্বামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আসতে থাকল। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, বহু মহিলা তাদের স্বামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে মুহাম্মাদের পরিবারবর্গের কাছে আসা-যাওয়া করছে। এরা (অর্থাৎ এরূপ স্বামীগণ) কিছুতেই উত্তম লোক নয়–আবু দাউদ।
(সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ২১৪৬; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৪১৮৯; মুসনাদুল হুমাইদী, হাদীছ নং ৯০০; মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদীছ নং ১৭৯৪৫; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৪৭৭৫; তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ৭৮৪; সুনানুদ্ দারিমী, হাদীছ নং ২৬৬৫; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ২৩৪৬)
হাদীছ নং : ২৭৯
হযরত ইয়াস ইবন আব্দুল্লাহ ইবন আবী যুবাব রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা আল্লাহর বান্দীদেরকে মারপিট করো না। তারপর উমর রাযি. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বললেন, স্ত্রীরা তাদের স্বামীদের উপর অবাধ্য হয়ে উঠেছে। ফলে তিনি তাদেরকে মারার অনুমতি দিলেন। তারপর একের পর এক অনেক মহিলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পরিবারবর্গের কাছে তাদের স্বামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আসতে থাকল। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, বহু মহিলা তাদের স্বামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে মুহাম্মাদের পরিবারবর্গের কাছে আসা-যাওয়া করছে। এরা (অর্থাৎ এরূপ স্বামীগণ) কিছুতেই উত্তম লোক নয়–আবু দাউদ।
(সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ২১৪৬; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৪১৮৯; মুসনাদুল হুমাইদী, হাদীছ নং ৯০০; মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদীছ নং ১৭৯৪৫; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৪৭৭৫; তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ৭৮৪; সুনানুদ্ দারিমী, হাদীছ নং ২৬৬৫; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ২৩৪৬)
مقدمة الامام النووي
34 - باب الوصية بالنساء
279 - وعن إياس بن عبد الله بن أَبي ذباب - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُول الله
- صلى الله عليه وسلم: «لاَ تَضْرِبُوا إمَاء الله» فجاء عُمَرُ - رضي الله عنه - إِلَى رسولِ الله - صلى الله عليه وسلم - فَقَالَ: ذَئِرْنَ النِّسَاءُ عَلَى أزْوَاجِهِنَّ، فَرَخَّصَ في ضَرْبِهِنَّ، فَأطَافَ بآلِ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - نِسَاءٌ كَثيرٌ يَشْكُونَ أزْواجَهُنَّ، فَقَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «لَقَدْ أطَافَ بِآلِ بَيتِ مُحَمَّدٍ نِسَاءٌ كثيرٌ يَشْكُونَ أزْوَاجَهُنَّ لَيْسَ أولَئكَ بخيَارِكُمْ». رواه أَبُو داود بإسناد صحيح. (1)
قوله: «ذَئِرنَ» هُوَ بذَال مُعْجَمَة مفْتوحَة، ثُمَّ هَمْزة مَكْسُورَة، ثُمَّ راءٍ سَاكِنَة، ثُمَّ نُون، أي: اجْتَرَأْنَ، قوله: «أطَافَ» أيْ: أحَاطَ.
- صلى الله عليه وسلم: «لاَ تَضْرِبُوا إمَاء الله» فجاء عُمَرُ - رضي الله عنه - إِلَى رسولِ الله - صلى الله عليه وسلم - فَقَالَ: ذَئِرْنَ النِّسَاءُ عَلَى أزْوَاجِهِنَّ، فَرَخَّصَ في ضَرْبِهِنَّ، فَأطَافَ بآلِ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - نِسَاءٌ كَثيرٌ يَشْكُونَ أزْواجَهُنَّ، فَقَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «لَقَدْ أطَافَ بِآلِ بَيتِ مُحَمَّدٍ نِسَاءٌ كثيرٌ يَشْكُونَ أزْوَاجَهُنَّ لَيْسَ أولَئكَ بخيَارِكُمْ». رواه أَبُو داود بإسناد صحيح. (1)
قوله: «ذَئِرنَ» هُوَ بذَال مُعْجَمَة مفْتوحَة، ثُمَّ هَمْزة مَكْسُورَة، ثُمَّ راءٍ سَاكِنَة، ثُمَّ نُون، أي: اجْتَرَأْنَ، قوله: «أطَافَ» أيْ: أحَاطَ.
হাদীস নং: ২৮০
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ স্ত্রীদের প্রতি সদ্ব্যবহারের নির্দেশ
নেককার স্ত্রীর মর্যাদা
হাদীছ নং : ২৮০
হযরত আব্দুল্লাহ ইবন আমর ইবনুল আস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, দুনিয়া সবটাই সম্পদ আর দুনিয়ার শ্রেষ্ঠতম সম্পদ হল নেককার স্ত্রী – মুসলিম।
সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১৪৬৭; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ৩২৩২; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৪০৩১; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৬৫৬৭; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৩৪৬৮; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৪২৯৯; তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ৪৯; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ২২৪২
হাদীছ নং : ২৮০
হযরত আব্দুল্লাহ ইবন আমর ইবনুল আস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, দুনিয়া সবটাই সম্পদ আর দুনিয়ার শ্রেষ্ঠতম সম্পদ হল নেককার স্ত্রী – মুসলিম।
সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১৪৬৭; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ৩২৩২; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৪০৩১; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৬৫৬৭; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৩৪৬৮; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৪২৯৯; তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ৪৯; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ২২৪২
مقدمة الامام النووي
34 - باب الوصية بالنساء
280 - وعن عبد الله بن عمرو بن العاص رضي الله عنهما: أنَّ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «الدُّنْيَا مَتَاعٌ، وَخَيرُ مَتَاعِهَا المَرْأَةُ الصَّالِحَةُ». رواه مسلم. (1)