আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ

الترغيب والترهيب للمنذري

৬. অধ্যায়ঃ নফল - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ১৮৭ টি

হাদীস নং: ৯২৩
অধ্যায়ঃ নফল
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়লের প্রতি অনুপ্রেরণা
৯২৩. হযরত সালমান ফারসী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: কিয়ামুল-লায়ল তোমাদের উপর জরুরী। কেননা তা তোমাদের পূর্বেকার সৎলোকদের নিয়ম, তোমাদের রবের নৈকট্য লাভের মাধ্যম, গুনাহসমূহ বিমোচনকারী, গুনাহ থেকে বাধাদানকারী এবং শরীরের রোগ নিরাময়কারী।
(আবদুর রহমান ইবন সুলায়মান ইবন আবু জুন সূত্রে তাবারানী তাঁর 'কাবীর' গ্রন্থে এবং ইমাম তিরমিযী তাঁর 'জামে' গ্রন্থের দাওয়াত অধ্যায়ে বক্র ইবন খুনায়স থেকে, তিনি মুহাম্মাদ ইবন সা'ঈদ শামী থেকে, তিনি রাবী'আ ইবন ইয়াযীদ সূত্রে আবু ইদরীস খাওলানী থেকে, তিনি হযরত বিলাল (রা) ও হযরত আবদুর রহমান ইবন সুলায়মান থেকে বর্ণনা করেছেন। আবদুর রহমান ইবন সুলায়মান ইবন আবু জুন মুহাম্মদ ইবন সা'ঈদ শামী হতে উত্তম।)
كتاب النَّوَافِل
التَّرْغِيب فِي قيام اللَّيْل
923 - وَعَن سلمَان الْفَارِسِي رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم عَلَيْكُم بِقِيَام اللَّيْل فَإِنَّهُ دأب الصَّالِحين قبلكُمْ ومقربة لكم إِلَى ربكُم ومكفرة للسيئات ومنهاة عَن الْإِثْم ومطردة للداء عَن الْجَسَد

رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ فِي الْكَبِير من رِوَايَة عبد الرَّحْمَن بن سُلَيْمَان بن أبي الجون وَرَوَاهُ التِّرْمِذِيّ فِي الدَّعْوَات من جَامعه من رِوَايَة بكر بن خُنَيْس عَن مُحَمَّد بن سعيد الشَّامي عَن ربيعَة بن يزِيد عَن أبي إِدْرِيس الْخَولَانِيّ وَعَن بِلَال رَضِي الله عَنهُ وَعبد الرَّحْمَن بن سُلَيْمَان أصلح حَالا من مُحَمَّد بن سعيد
হাদীস নং: ৯২৪
অধ্যায়ঃ নফল
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়লের প্রতি অনুপ্রেরণা
৯২৪. হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: আল্লাহ তা'আলা ঐ ব্যক্তির উপর রহম করেন যে কিয়ামুল-লায়ল করে এবং তার স্ত্রীকে জাগ্রত করে এবং সে সালাত আদায় করে। যদি সে অস্বীকার করে, তবে সে তার চেহারায় পানি ছিটিয়ে দেয়। (অনুরূপভাবে) আল্লাহ তা'আলা ঐ মহিলার উপর রহম করেন যে (রাতে) কিয়ামুল-লায়ল করে এবং তার স্বামীকে জাগ্রত করে এবং সে সালাত আদায় করে। আর যদি সে অস্বীকার করে, তবে সে তার চেহারায় পানি ছিটিয়ে দেয়।
(উপরোক্ত শব্দযোগে আবূ দাউদ, নাসাঈ, ইবন মাজাহ এবং ইবন খুযায়মা ও ইবন হিব্বান উভয়ে তাঁদের 'সহীহ' গ্রন্থে এবং হাকিম হাদীসটি বর্ণনা করেন। হাকিম বলেন: এ হাদীসটি মুসলিমের শর্তানুযায়ী সহীহ। কারো কারো বর্ণনায় نضح অথবা نضحت এর স্থলে رش ও رشت শব্দ উল্লেখ আছে। উভয়ে একই অর্থবোধক।)
كتاب النَّوَافِل
التَّرْغِيب فِي قيام اللَّيْل
924 - وَعَن أبي هُرَيْرَة رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم رحم الله رجلا قَامَ من اللَّيْل فصلى وَأَيْقَظَ امْرَأَته فَإِن أَبَت نضح فِي وَجههَا المَاء ورحم الله امْرَأَة قَامَت من اللَّيْل فصلت وأيقظت زَوجهَا فَإِن أَبى نضحت فِي وَجهه المَاء

رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَهَذَا لَفظه وَالنَّسَائِيّ وَابْن مَاجَه وَابْن خُزَيْمَة وَابْن حبَان فِي صَحِيحَيْهِمَا وَالْحَاكِم وَقَالَ صَحِيح على شَرط مُسلم وَعند بَعضهم رش ورشت بدل نضح ونضحت
وَهُوَ بِمَعْنَاهُ
হাদীস নং: ৯২৫
অধ্যায়ঃ নফল
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়লের প্রতি অনুপ্রেরণা
৯২৫. তাবারানীর 'কাবীর' গ্রন্থে হযরত আবূ মালিক আশ'আরী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: কোন ব্যক্তি রাতে জাগল এবং তার স্ত্রীকে জাগাল। আর তার (স্ত্রীর) ঘুমের প্রাবল্য হওয়ায় তার চেহারায় পানি ছিটিয়ে দিল, তারপর তারা তাদের ঘরে দু'জনে দাঁড়িয়ে রাতের কিছু অংশে আল্লাহর যিকর করল। ফলে তাদের ক্ষমা করা হয়।
كتاب النَّوَافِل
التَّرْغِيب فِي قيام اللَّيْل
925 - وروى الطَّبَرَانِيّ فِي الْكَبِير عَن أبي مَالك الْأَشْعَرِيّ رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم مَا من رجل يَسْتَيْقِظ من اللَّيْل فيوقظ امْرَأَته فَإِن غلبها النّوم نضح فِي وَجههَا المَاء فيقومان فِي بيتهما فيذكران الله عز وَجل سَاعَة من اللَّيْل إِلَّا غفر لَهما
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৯২৬
অধ্যায়ঃ নফল
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়লের প্রতি অনুপ্রেরণা
৯২৬. হযরত আবু হুরায়রা (রা) ও আবু সাঈদ (রা) থেকে বর্ণিত। তাঁরা বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি যখন তার স্ত্রীকে জাগিয়ে দেয়, তারপর উভয়ে অথবা তিনি বলেছেন, সে স্ত্রীকে নিয়ে দুই রাকআত সালাত আদায় করে, তাদের দু'জনকে (সূরা আহযাবের) যাকিরীন এবং যাকিরাতদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
(আবু দাউদ হাদীসটি বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ইবন কাসীর আবু সাঈদ থেকে মাওকুফ সনদে এটি বর্ণনা করেন, তিনি আবু হুরায়রা (রা)-এর নাম উল্লেখ করেননি। নাসাঈ, ইবন মাজাহ এবং ইবন হিব্বান তাঁর 'সহীহ' গ্রন্থে ও হাকিম হাদীসটি বর্ণনা করেন। তবে তাঁদের সকলের শব্দমালা প্রায় কাছাকাছি। যে ব্যক্তি রাত জাগে এবং তার স্ত্রীকে জাগিয়ে দু'জনেই দুই রাক'আত সালাত আদায় করে। নাসাঈ তাঁর বর্ণনায় বাড়িয়ে বলেছেন। তাদের উভয়কে আল্লাহর অধিক যিকরকারী ও অধিক যিকরকারিণী লেখা হবে।) [হাফিয মুনযিরী (র) বলেনঃ] এ হাদীসটি শায়খায়নের শর্তানুযায়ী সহীহ।
كتاب النَّوَافِل
التَّرْغِيب فِي قيام اللَّيْل
926 - وَعَن أبي هُرَيْرَة وَأبي سعيد رَضِي الله عَنْهُمَا قَالَا قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم إِذا أيقظ الرجل أَهله من اللَّيْل فَصَليَا أَو صلى رَكْعَتَيْنِ جَمِيعًا كتبا فِي الذَّاكِرِينَ وَالذَّاكِرَات

رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَقَالَ رَوَاهُ ابْن كثير مَوْقُوفا على أبي سعيد وَلم يذكر أَبَا هُرَيْرَة
وَرَوَاهُ النَّسَائِيّ وَابْن مَاجَه وَابْن حبَان فِي صَحِيحه وَالْحَاكِم وَأَلْفَاظهمْ مُتَقَارِبَة من اسْتَيْقَظَ من اللَّيْل وَأَيْقَظَ أَهله فَصَليَا رَكْعَتَيْنِ
زَاد النَّسَائِيّ جَمِيعًا كتبا من الذَّاكِرِينَ الله كثيرا وَالذَّاكِرَات
قَالَ الْحَافِظ صَحِيح على شَرط الشَّيْخَيْنِ
হাদীস নং: ৯২৭
অধ্যায়ঃ নফল
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়লের প্রতি অনুপ্রেরণা
৯২৭. হযরত আবদুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: প্রকাশ্যে সদকা দানের চেয়ে গোপনে সদকা দানের যেরূপ ফযীলত রয়েছে, তদ্রুপ দিনের সালাতের উপর রাতের সালাতের রয়েছে ফযীলত (প্রাধান্য)।
(তাবারানী 'কাবীর' গ্রন্থে হাসান সনদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب النَّوَافِل
التَّرْغِيب فِي قيام اللَّيْل
927 - وَعَن عبد الله رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فضل صَلَاة اللَّيْل على صَلَاة النَّهَار كفضل صَدَقَة السِّرّ على صَدَقَة الْعَلَانِيَة

رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ فِي الْكَبِير بِإِسْنَاد حسن
হাদীস নং: ৯২৮
অধ্যায়ঃ নফল
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়লের প্রতি অনুপ্রেরণা
৯২৮. হযরত সামুরা ইবন জুন্দুব (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) আমাদের রাতে অল্প-বিস্তর সালাত আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন এবং পরিশেষে বিতর আদায় করতে বলেছেন।
(তাবারানী ও বাযযার হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب النَّوَافِل
التَّرْغِيب فِي قيام اللَّيْل
928 - وَرُوِيَ عَن سَمُرَة بن جُنْدُب رَضِي الله عَنهُ قَالَ أمرنَا رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم أَن نصلي من اللَّيْل مَا قل أَو كثر ونجعل آخر ذَلِك وترا

رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ وَالْبَزَّار
হাদীস নং: ৯২৯
অধ্যায়ঃ নফল
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়লের প্রতি অনুপ্রেরণা
৯২৯. হযরত আনাস (রা) থেকে মারফু' সনদে বর্ণিত। তিনি বলেন: আমার (নবী সা. এর) মসজিদে সালাত আদায়ে দশ হাজার গুণ বেশি (সওয়াব), মসজিদুল হারামে এক লক্ষ গুণ সওয়াব, রিবাতের (সীমান্ত প্রহরাকালীন) ভূখণ্ডে সালাত আদায়ে রয়েছে দুই হাজার গুণ সওয়াব। এ সবের চেয়ে বান্দা গভীর রাতে যে সালাত আদায় করে, তাতে রয়েছে অধিক সওয়াব, যদি তা কেবল আল্লাহর উদ্দেশ্যে হয়।
(আবু শায়খ ইবন হিব্বান তাঁর 'সওয়াব' অধ্যায়ে এ হাদীসটি বর্ণনা করেন।)
كتاب النَّوَافِل
التَّرْغِيب فِي قيام اللَّيْل
929 - وَرُوِيَ عَن أنس رَضِي الله عَنهُ يرفعهُ قَالَ صَلَاة فِي مَسْجِدي تعدل بِعشْرَة آلَاف صَلَاة وَصَلَاة فِي الْمَسْجِد الْحَرَام تعدل بِمِائَة ألف صَلَاة وَالصَّلَاة بِأَرْض الرِّبَاط تعدل بألفي ألف صَلَاة وَأكْثر من ذَلِك كُله الركعتان يُصَلِّيهمَا العَبْد فِي جَوف اللَّيْل لَا يُرِيد بهما إِلَّا مَا عِنْد الله عز وَجل

رَوَاهُ أَبُو الشَّيْخ ابْن حبَان فِي كتاب الثَّوَاب
হাদীস নং: ৯৩০
অধ্যায়ঃ নফল
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়লের প্রতি অনুপ্রেরণা
৯৩০. হযরত ইয়াস ইবন মু'আবিয়া মুযানী (রা) থেকে রাসূলুল্লাহ (সা) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেছেন: দুধ দোহনের সময়ে হলেও সালাতুল-লায়ল আদায় করবে, আর ইশার পরেই (শুরু হয়) সালাতুল-লায়ল।
(তাবারানী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক ব্যতীত এর বর্ণনাকারীদের সবাই বিশ্বস্ত।)
كتاب النَّوَافِل
التَّرْغِيب فِي قيام اللَّيْل
930 - وَعَن إِيَاس بن مُعَاوِيَة الْمُزنِيّ رَضِي الله عَنهُ أَن رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ لَا بُد من صَلَاة بلَيْل وَلَو حلب شَاة وَمَا كَانَ بعد صَلَاة الْعشَاء فَهُوَ من اللَّيْل

رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ وَرُوَاته ثِقَات إِلَّا مُحَمَّد بن إِسْحَاق
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৯৩১
অধ্যায়ঃ নফল
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়লের প্রতি অনুপ্রেরণা
৯৩১. হযরত ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি কিয়ামুল-লায়ল সম্পর্কে আলোচনা করলাম। তখন কেউ কেউ বলল, রাসূলুল্লাহ বলেছেন: কিয়ামুল-লায়ল মধ্য রাতের পর, তৃতীয়াংশের পর, চতুর্থাংশের পর, ন্যূনপক্ষে উষ্ট্রী দোহনের পর, বকরী দোহানের পর (আদায় করা যায়)।
(আবু ইয়ালা হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। বর্ণিত হাদীসের রাবীদের বর্ণনা বিশুদ্ধ বর্ণনার মতই। উক্ত হাদীসটি একটি বড় হাদীসের অংশ বিশেষ।)
كتاب النَّوَافِل
التَّرْغِيب فِي قيام اللَّيْل
931 - وَعَن ابْن عَبَّاس رَضِي الله عَنْهُمَا قَالَ فَذكرت قيام اللَّيْل فَقَالَ بَعضهم إِن رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ نصفه ثلثه ربعه فوَاق حلب نَاقَة فوَاق حلب شَاة

رَوَاهُ أَبُو يعلى وَرِجَاله مُحْتَج بهم فِي الصَّحِيح وَهُوَ بعض حَدِيث
হাদীস নং: ৯৩২
অধ্যায়ঃ নফল
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়লের প্রতি অনুপ্রেরণা
৯৩২. হযরত ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সা) আমাদের সালাতুল-লায়ল আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আমাদের এমনিভাবে অনুপ্রাণিত করেছেন যে, তোমাদের সালাতুল-লায়ল আদায় করা জরুরী, যদিও তা এক রাক'আতও হয়।
(তাবারানী 'কাবীর' ও 'আওসাত' গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب النَّوَافِل
التَّرْغِيب فِي قيام اللَّيْل
932 - وَرُوِيَ عَن ابْن عَبَّاس رَضِي الله عَنْهُمَا قَالَ أمرنَا رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم بِصَلَاة اللَّيْل وَرغب فِيهَا حَتَّى قَالَ عَلَيْكُم بِصَلَاة اللَّيْل وَلَو رَكْعَة
رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ فِي الْكَبِير والأوسط
হাদীস নং: ৯৩৩
অধ্যায়ঃ নফল
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়লের প্রতি অনুপ্রেরণা
৯৩৩. হযরত সাহল ইবন সা'দ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জিবরাঈল (আ) রাসূলুল্লাহ (সা) এর কাছে এসে বললেন: ইয়া মুহাম্মদ। আপনি ইচ্ছানুযায়ী জীবন যাপন করুন। কেননা আপনি ইনতিকাল করবেন, আপনি যথাসাধ্য আমল করুন, আপনি পুরস্কার পাবেন। আপনি যাকে ইচ্ছা ভালবাসুন, আপনি পৃথিবী থেকে বিদায় নেবেন। আপনি জেনে রাখুন, মুমিনের শারাফাত হচ্ছে কিয়ামুল-লায়ল আদায় করা, আর মানুষের প্রতি মুখাপেক্ষীহীনতা হচ্ছে সম্মানের বাহন।
(তাবারানী 'আওসাত' গ্রন্থে হাসান সনদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب النَّوَافِل
التَّرْغِيب فِي قيام اللَّيْل
933 - وَعَن سهل بن سعد رَضِي الله عَنْهُمَا قَالَ جَاءَ جِبْرِيل إِلَى النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَقَالَ يَا مُحَمَّد عش مَا شِئْت فَإنَّك ميت واعمل مَا شِئْت فَإنَّك مَجْزِي بِهِ وأحبب من شِئْت فَإنَّك مفارقه وَاعْلَم أَن شرف الْمُؤمن قيام اللَّيْل وعزه استغناؤه عَن النَّاس

رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ فِي الْأَوْسَط وَإِسْنَاده حسن
হাদীস নং: ৯৩৪
অধ্যায়ঃ নফল
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়লের প্রতি অনুপ্রেরণা
৯৩৪. হযরত ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: আমার উম্মাতের শ্রেষ্ঠ লোক তারাই, যারা কুরআনের হিফাযতকারী এবং যারা কিয়ামুল-লায়ল করে।
(ইবন আবিদ দুনিয়া ও বায়হাকী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب النَّوَافِل
التَّرْغِيب فِي قيام اللَّيْل
934 - وَرُوِيَ عَن ابْن عَبَّاس رَضِي الله عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم أَشْرَاف أمتِي حَملَة الْقُرْآن وَأَصْحَاب اللَّيْل

رَوَاهُ ابْن أبي الدُّنْيَا وَالْبَيْهَقِيّ
হাদীস নং: ৯৩৫
অধ্যায়ঃ নফল
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়লের প্রতি অনুপ্রেরণা
৯৩৫. হযরত মু'আয ইবন জাবাল (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: তোমাদের মধ্যকার যে ব্যক্তি সালাতুল-লায়ল আদায় করে, সে যেন সালাতে সশব্দ কিরাআত পাঠ করে। কেননা ফিরিশতা তার সাথে সালাত আদায় করেন এবং কিরাআত শুনেন। যে সকল মুমিন জিন্ন বায়ুমণ্ডলে বিচরণ করে এবং যারা গর্তে বাস করে, তারা তার সাথে সালাত আদায় করে এবং তার কিরাআত শুনে। সে কিরাআত পাঠ করে, তার ঘর থেকে ফাসিক জিন্ন ও অভিশপ্ত শয়তান তাড়িয়ে দেয়। যে ঘরে কুরআন তিলাওয়াত করা হয়, তার উপর হিদায়াতের নূরের পর্দা ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এরদ্বারা সমুদ্রে বিচরণকারী এবং পথহারা যমীনবাসী পথের সন্ধান পায়। যখন কুরআন তিলাওয়াতকারী ইনতিকাল করে, তখন তার উপর থেকে রেহমতের) চাঁদোয়া তুলে নেয়া হয়, আসমানবাসী ফিরিশতা তখন বিচরণ করে, সেই আলো দেখতে পান না। ফিরিশতাগণ যখন এক আসমান থেকে অন্য আসমানে যান, তখন ফিরিশতাকুল আত্মসমূহের মধ্যে সেই আত্মার প্রতি দু'আ করেন। এরপর তাদের সাথে যে সব ফিরিশতা (দুনিয়ায়) ছিলেন, তারা তাকে মুবারকবাদ জানান। এরপর পুনরুত্থানের দিন পর্যন্ত ফিরিশতাগণ তার জন্য মাগফিরাত কামানা করেন। কোন মুসলমান যখন কুরআন শিক্ষা করে, এরপর রাতের কিছু অংশে সালাত আদায় করে, সে রাতের পূর্ব রাত উপদেশ দেয়, সে যেন সালাত আদায়ের সময় তাকে জাগিয়ে দেয় এবং তার জন্য সালাত আদায় সহজতর করে দেয়। এরপর লোকটি মারা গেলে যখন তার পরিবার-পরিজন তাকে দাফন করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে, তখন কুরআন শরীফ অত্যন্ত সুন্দর সুরত নিয়ে তার শিয়রে দাঁড়িয়ে যায়। এমনকি তা তার কাফনের মধ্যে ঢুকে পড়ে এবং তার বুকের কাপড়ের মধ্যে অবস্থান করে। যখন তাকে কবরে দাফন করা হয় এবং তার কবরের মাটি সমান করে সবাই ফিরে আসে, তখন তার নিকট মুনকার-নাকীর উপস্থিত হন এবং তাকে কবরে বসান। তখন কুরআন আসে এবং মুনকার-নাকীরের মধ্যে দাঁড়িয়ে যায়। তখন দুই ফিরিশতা কুরআনকে বলেন: তুমি আমাদের মাঝ থেকে চলে যাও, আমরা তাকে প্রশ্ন করব। তখন কুরআন বলেঃ কাবার রবের শপথ! তা হতে পারে না। নিশ্চয়ই সে আমার সাথী, আমার বন্ধু। আমি কোন অবস্থাতেই তাকে লাঞ্ছিত হতে দেব না। যদি তোমরা কোন কাজের জন্য অদিষ্ট হয়ে থাক, তবে তোমরা তোমাদের আদিষ্ট কাজের দিকে চলে যাও। আমাকে আমার জায়গায় ছেড়ে দাও, যেহেতু আমি তাকে জান্নাতে না পৌঁছিয়ে ছাড়ব না। এরপর কুরআন তার পাঠকের দিকে তাকাবে এবং বলবে: আমি তোমার ঐ কুরআন, যা তুমি প্রাকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে তিলাওয়াত করতে, তুমি আমাকে ভালবাসতে এবং আমিও তোমাকে ভালবাসি। আর আমি যাকে ভালবাসি, আল্লাহ তাকে ভালবাসেন। মুনকার নাকীরের প্রশ্নের পরে তোমার জন্য কোন দুশ্চিন্তা অথবা হতাশা নেই। এরপর মুনকার-নাকীর তাকে প্রশ্ন করবেন এবং আকাশের দিকে উড়ে যাবেন। আর মৃত ব্যক্তি কুরআন নিয়ে থাকবে। এরপর কুরআন বলবেঃ তুমি আমার জন্য রাত জেগে এবং দিনে কষ্ট করে তিলাওয়াত করেছ, এর বিনিময়ে আমি তোমার জন্য মোলায়েম বিছানার ব্যবস্থা করব এবং আমি তোমার জন্য উত্তম পোশাকের ব্যবস্থা করব। তিনি বলেন: এরপর কুরআন চোখের পলকের চেয়ে দ্রুতগতিতে আসমানের দিকে উঠবে এবং সে আল্লাহর কাছে যা চাইবে, আল্লাহ তাকে তা দান করবেন। এরপর কুরআন আসবে এবং ষষ্ঠ আকাশের হাজার হাজার ফিরিশতা ঐ ব্যক্তির নিকট অবতরণ করবেন। এরপর কুরআন তাকে মুবারকবাদ জানাবে এবং বলবে: তোমাকে ছেড়ে আল্লাহর সাথে আমার কথা বলা, কেবলমাত্র তোমার জন্য বিছানা, পোশাক ও বাতির ব্যবস্থা করা ব্যতীত আর আমি দেরি করিনি। এখন আমি কাছে এলাম। তুমি দাঁড়াও যাতে ফিরিশতাকুল তোমার জন্য বিছানা করে দেন। তিনি বলেন, এরপর ফিরিশতাগণ তাকে অত্যন্ত মোলায়েমভাবে উঠাবেন এরপর তার কবর চারশ' বছরের রাস্তা সমান প্রশস্ত করে দেবেন। তার বিছানার মধ্যভাগ হবে সবুজ রংয়ের রেশমের, উপরিভাগ হবে আযফার নামক মিশকের এবং তার পায়ের দিকে থাকবে সূক্ষ্ম এবং স্কুল রেশম আর তার মাথার দিকে একটি বাতি এবং পায়ের দিকে একটি বাতি কিয়ামতের দিন পর্যন্ত প্রজ্জ্বলিত থাকবে। এরপর ফিরিশতাগণ তাকে ডান কাতে কিবলামুখী করে শোয়াবেন এবং তার কাছে জান্নাতের সুগন্ধি ফুলসমূহ উপস্থিত করবেন এবং তাঁরা চলে যাবেন। এরপর কুরআন এবং সে ব্যক্তি কবরে থাকবে। কুরআন একটি তাজা ফুল তার নাকের কাছে রাখবে এবং সে তার ঘ্রাণ নেবে, এমন কি পুনরুত্থান সংঘটিত হবে। এরপর কুরআন তার (মৃতের) পরিবার-পরিজনের দৈনন্দিন সংবাদ তার কাছে পৌঁছাতে থাকবে এবং কুরআন তাকে রক্ষণাবেক্ষণ করবে, যেমন স্নেহময় পিতা তার সন্তানের কল্যাণের সাথে দেখাশুনা করে। যদি তার সন্তানের কেউ কুরআন শিক্ষা করে, কুরআন তাকে তার সুসংবাদ পৌঁছিয়ে দেয়। আর যদি তার পরিত্যাজ্যদের কেউ অন্যায় কাজে জড়িয়ে পড়ে, কুরআন তাদের জন্য কল্যাণের ও সৌভাগ্যের দু'আ করে।
(হাদীসটি বায্যার বর্ণনা করেন এবং বলেন: খালিদ ইবন মা'দান হযরত মু'আয থেকে বর্ণনাটি শোনেননি। أَنه يَجِيء -অর্থ হলো কুরআনের সওয়াব। যেমন নবী বলেছেন: কিয়ামতের দিন এক লোক যার বিনিময়ে উহুদ পর্বতের সমান সওয়াব দেয়া হবে।)

[হাফিয মুনযিরী (র) বলেন:] সনদে একজন অজ্ঞাত রাবী রয়েছেন যার অবস্থা অজ্ঞাত এবং মতনে অনেকগুলো দুর্বোধ্য শব্দ রয়েছে এবং প্রকাশ্যত জটিলতা রয়েছে। উকায়লী এবং অন্যান্যগণ সনদের ব্যাপারে সমালোচনা করেছেন। তবে হাদীসটি ইবন আবিদ-দুনিয়া ও আন্যান্যগণ হযরত উবাদা ইবন সামিত (রা) থেকে মাওকূফ সূত্রে বর্ণনা করেছেন। সম্ভবত এটিই যথার্থ।
كتاب النَّوَافِل
التَّرْغِيب فِي قيام اللَّيْل
935 - وَرُوِيَ عَن معَاذ بن جبل رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم من صلى مِنْكُم من اللَّيْل فليجهر بقرَاءَته فَإِن الْمَلَائِكَة تصلي بِصَلَاتِهِ وتستمع لقرَاءَته وَإِن مؤمني
الْجِنّ الَّذين يكونُونَ فِي الْهَوَاء وجيرانه فِي مَسْكَنه يصلونَ بِصَلَاتِهِ ويستمعون قِرَاءَته وَإنَّهُ يطرد بقرَاءَته عَن دَاره وَعَن الدّور الَّتِي حوله فساق الْجِنّ ومردة الشَّيَاطِين وَإِن الْبَيْت الَّذِي يقْرَأ فِيهِ الْقُرْآن عَلَيْهِ خيمة من نور يَهْتَدِي بهَا أهل السَّمَاء كَمَا يهتدى بالكوكب الدُّرِّي فِي لجج الْبحار وَفِي الأَرْض القفر
فَإِذا مَاتَ صَاحب الْقُرْآن رفعت تِلْكَ الْخَيْمَة فتنظر الْمَلَائِكَة من السَّمَاء فَلَا يرَوْنَ ذَلِك النُّور فَتَلقاهُ الْمَلَائِكَة من سَمَاء إِلَى سَمَاء فَتُصَلِّي الْمَلَائِكَة على روحه فِي الْأَرْوَاح ثمَّ تسْتَقْبل الْمَلَائِكَة الحافظين الَّذين كَانُوا مَعَه ثمَّ تستغفر لَهُ الْمَلَائِكَة إِلَى يَوْم يبْعَث وَمَا من رجل تعلم كتاب الله ثمَّ صلى سَاعَة من ليل إِلَّا أوصت بِهِ تِلْكَ اللَّيْلَة الْمَاضِيَة اللَّيْلَة المستأنفة أَن تنبهه لساعته وَأَن تكون عَلَيْهِ خَفِيفَة فَإِذا مَاتَ وَكَانَ أَهله فِي جهازه جَاءَ الْقُرْآن فِي صُورَة حَسَنَة جميلَة فَوقف عِنْد رَأسه حَتَّى يدرج فِي أَكْفَانه فَيكون الْقُرْآن على صَدره دون الْكَفَن فَإِذا وضع فِي قَبره وسوي وتفرق عَنهُ أَصْحَابه أَتَاهُ مُنكر وَنَكِير عَلَيْهِمَا السَّلَام فيجلسانه فِي قَبره فَيَجِيء الْقُرْآن حَتَّى يكون بَينه وَبَينهمَا فَيَقُولَانِ لَهُ إِلَيْك حَتَّى نَسْأَلهُ فَيَقُول لَا وَرب الْكَعْبَة إِنَّه لصاحبي وخليلي وَلست أخذله على حَال فَإِن كنتما أمرتما بِشَيْء فامضيا لما أمرتما وَدَعَانِي مَكَاني فَإِنِّي لست أفارقه حَتَّى أدخلهُ الْجنَّة ثمَّ ينظر الْقُرْآن إِلَى صَاحبه فَيَقُول أَنا الْقُرْآن الَّذِي كنت تجْهر بِي وتخفيني وتحبني فَأَنا حَبِيبك وَمن أحببته أحبه الله لَيْسَ عَلَيْك بعد مَسْأَلَة مُنكر وَنَكِير هم وَلَا حزن فيسأله مُنكر وَنَكِير ويصعدان وَيبقى هُوَ وَالْقُرْآن فَيَقُول لأفرشنك فراشا لينًا ولأدثرنك دثارا حسنا جميلا بِمَا أَسهرت ليلك وأنصبت نهارك
قَالَ فيصعد الْقُرْآن إِلَى السَّمَاء أسْرع من الطّرف فَيسْأَل الله ذَلِك لَهُ فيعطيه ذَلِك فَيَجِيء الْقُرْآن فَينزل بِهِ ألف ألف ملك من مقربي السَّمَاء السَّادِسَة فَيَجِيء الْقُرْآن فيحييه فَيَقُول هَل استوحشت مَا زِدْت مُنْذُ فارقتك أَن كلمت الله تبَارك وَتَعَالَى حَتَّى أخذت لَك فراشا ودثارا ومصباحا وَقد جئْتُك بِهِ فَقُمْ حَتَّى تفرشك الْمَلَائِكَة عَلَيْهِم السَّلَام
قَالَ فتنهضه الْمَلَائِكَة إنهاضا لطيفا ثمَّ يفسح لَهُ فِي قَبره مسيرَة أَرْبَعمِائَة عَام ثمَّ يوضع لَهُ فرَاش بطانته من حَرِير أَخْضَر حشوه الْمسك الأذفر وَيُوضَع لَهُ مرافق عِنْد رجلَيْهِ وَرَأسه من السندس والإستبرق ويسرج لَهُ سراجان من نور الْجنَّة عِنْد رَأسه وَرجلَيْهِ يزهران إِلَى يَوْم الْقِيَامَة ثمَّ تضجعه الْمَلَائِكَة على شقَّه الْأَيْمن مُسْتَقْبل الْقبْلَة ثمَّ يُؤْتى بياسمين الْجنَّة وتصعد عَنهُ وَيبقى هُوَ وَالْقُرْآن فَيَأْخُذ الْقُرْآن الياسمين فيضعه على أَنفه غضا فيستنشقه حَتَّى يبْعَث وَيرجع الْقُرْآن إِلَى أَهله فيخبرهم كل
يَوْم وَلَيْلَة ويتعاهده كَمَا يتَعَاهَد الْوَالِد الشفيق وَلَده بِالْخَيرِ فَإِن تعلم أحد من وَلَده الْقُرْآن بشره بذلك وَإِن كَانَ عقبه عقب سوء دَعَا لَهُم بالصلاح والإقبال أَو كَمَا ذكر
رَوَاهُ الْبَزَّار وَقَالَ خَالِد بن معدان لم يسمع من معَاذ
وَمَعْنَاهُ أَنه يَجِيء ثَوَاب الْقُرْآن كَمَا قَالَ إِن اللُّقْمَة تَجِيء يَوْم الْقِيَامَة مثل أحد وَإِنَّمَا يَجِيء ثَوَابهَا
انْتهى

قَالَ الْحَافِظ فِي إِسْنَاده من لَا يعرف حَاله وَفِي مَتنه غرابة كَثِيرَة بل نَكَارَة ظَاهِرَة وَقد تكلم فِيهِ الْعقيلِيّ وَغَيره وَرَوَاهُ ابْن أبي الدُّنْيَا وَغَيره عَن عبَادَة بن الصَّامِت مَوْقُوفا عَلَيْهِ وَلَعَلَّه أشبه
হাদীস নং: ৯৩৬
অধ্যায়ঃ নফল
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়লের প্রতি অনুপ্রেরণা
৯৩৬. হযরত ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন। যে ব্যক্তি হালকা খানা ও পানীয় গ্রহণ করে রাত কাটায় এবং (জেগে) সালাত আদায় করে, ভোর হওয়া পর্যন্ত তার চারদিকে হূর ঘিরে থাকে।
(তাবারানীর 'কাবীর' গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।)
كتاب النَّوَافِل
التَّرْغِيب فِي قيام اللَّيْل
936 - وَرُوِيَ عَن ابْن عَبَّاس رَضِي الله عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم من بَات لَيْلَة فِي خفَّة من الطَّعَام وَالشرَاب يُصَلِّي تراكضت حوله الْحور الْعين حَتَّى يصبح

رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ فِي الْكَبِير
হাদীস নং: ৯৩৭
অধ্যায়ঃ নফল
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়লের প্রতি অনুপ্রেরণা
৯৩৭. হযরত আমর ইবন আম্বাসা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি নবী (সা) কে বলতে শুনেছেন: বান্দা শেষরাতের আমল দ্বারাই তার রবের অধিক নৈকট্য অর্জন করে। কাজেই সে সময়ে যারা আল্লাহর যিকর করে, তুমি তাদের অন্তর্ভুক্ত হও।
(তিরমিযী নিজ শব্দযোগে এবং ইবন খুযায়মা তাঁর 'সহীহ' গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণনা করেন। ইমাম তিরমিযী বলেন: এ হাদীসটি হাসান-সহীহ-গরীব।)
كتاب النَّوَافِل
التَّرْغِيب فِي قيام اللَّيْل
937 - وَعَن عَمْرو بن عَنْبَسَة رَضِي الله عَنهُ أَنه سمع النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَقُول أقرب مَا يكون الرب من العَبْد فِي جَوف اللَّيْل الآخر فَإِن اسْتَطَعْت أَن تكون مِمَّن يذكر الله فِي تِلْكَ السَّاعَة فَكُن

رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَاللَّفْظ لَهُ وَابْن خُزَيْمَة فِي صَحِيحه وَقَالَ التِّرْمِذِيّ حَدِيث حسن صَحِيح غَرِيب
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৯৩৮
অধ্যায়ঃ নফল
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়লের প্রতি অনুপ্রেরণা
৯৩৮. হযরত আবদুল্লাহ ইবন মাস'উদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: যে ব্যক্তি সূরা বাকারা ও সূরা আলে ইমরান দ্বারা কিয়ামুল-লায়ল করে, আল্লাহ তাকে কোন কল্যাণ থেকে বঞ্চিত করেন না।
(তাবারানীর 'আওসাত' গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। এই হাদীসের সনদে বাকীয়া নামে একজন বিতর্কিত রাবী রয়েছেন।)
كتاب النَّوَافِل
التَّرْغِيب فِي قيام اللَّيْل
938 - وَعَن عبد الله بن مَسْعُود رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم مَا خيب الله امْرأ قَامَ فِي جَوف اللَّيْل فَافْتتحَ سُورَة الْبَقَرَة وَآل عمرَان

رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ فِي الْأَوْسَط وَفِي إِسْنَاده بَقِيَّة
হাদীস নং: ৯৩৯
অধ্যায়ঃ নফল
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়লের প্রতি অনুপ্রেরণা
৯৩৯. হযরত আবুদ-দারদা (রা) থেকে নবী (সা) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেছেন: তিনদল লোক আল্লাহর নিকট প্রিয়। তিনি তাদের ব্যাপারে হাসেন এবং তাদেরকে সুসংবাদ দেন। তারা হলঃ ১. ঐ ব্যক্তি, যে তার দলের অগ্রভাগে থেকে খোলা তরবারি নিয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করে, পরে সে শাহাদাত বরণ করে অথবা তাকে আল্লাহ বিজয়ী করেন এবং তিনিই তার জন্য যথেষ্ট। তিনি বলেন: আমার এই বান্দার প্রতি তাকাও কীভাবে সে ধৈর্য ধারণ করেছে? ২. ঐ ব্যক্তি, যার রয়েছে অনিন্দ্য সুন্দরী স্ত্রী এবং মোলায়েম বিছানা, তবুও সে কিয়ামুল-লায়ল করে। তিনি বলেন: সে তার প্রবৃত্তি বর্জন করেছে এবং আমার যিকর করেছে, ইচ্ছে করলে সে ঘুমোতে পারত এবং ৩. ঐ মুসাফির, যে একটি বাহনের কাফেলার সাথে সফরে বের হয়, কিন্তু তারা কিছুক্ষণ রাত জাগার পর সকলে নিদ্রায় গেলে সে লোকটি শেষরাত পর্যন্ত সুখে-দুঃখে আল্লাহর দরবারে জেগেই কাটায়।
(তাবারানী 'কাবীর' গ্রন্থে হাসান সনদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب النَّوَافِل
التَّرْغِيب فِي قيام اللَّيْل
939 - وَعَن أبي الدَّرْدَاء رَضِي الله عَنهُ عَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ ثَلَاثَة يُحِبهُمْ الله ويضحك إِلَيْهِم ويستبشر بهم الَّذِي إِذا انكشفت فِئَة قَاتل وَرَاءَهَا بِنَفسِهِ لله عز وَجل فإمَّا أَن يقتل وَإِمَّا أَن ينصره الله عز وَجل ويكفيه فَيَقُول انْظُرُوا إِلَى عَبدِي هَذَا كَيفَ صَبر لي بِنَفسِهِ وَالَّذِي لَهُ امْرَأَة حَسَنَة وفراش لين حسن فَيقوم من اللَّيْل فَيَقُول يذر شَهْوَته ويذكرني وَلَو شَاءَ رقد وَالَّذِي إِذا كَانَ فِي سفر وَكَانَ مَعَه ركب فسهروا ثمَّ هجعوا فَقَامَ من السحر فِي ضراء وسراء

رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ فِي الْكَبِير بِإِسْنَاد حسن
হাদীস নং: ৯৪০
অধ্যায়ঃ নফল
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়লের প্রতি অনুপ্রেরণা
৯৪০. হযরত ইবন মাসউদ (রা) থেকে নবী (সা) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেছেন: আমাদের রব দুই ব্যক্তির প্রতি প্রসন্ন। তারা হলঃ ১. এমন এক ব্যক্তি, যে তার প্রিয়তমা স্ত্রী ও আপন মোলায়েম বিছানা ছেড়ে লাফ দিয়ে উঠে সালাত আদায় করে। আল্লাহ তা'আলা তাঁর ফিরিশতাদের এ ব্যক্তি সম্পর্কে বলেন: তোমরা আমার বান্দার প্রতি তাকাও, যে তার প্রিয়তমা স্ত্রী ও তার নরম বিছানা ছেড়ে সালাত আদায়ের জন্য লাফিয়ে উঠেছে, আমার পুরষ্কারের আশা এবং আমার শাস্তির ভয়ে। ২. আর ঐ মুজাহিদ, যে আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে এবং পরাজিত হয়ে আপন সংগীদের সাথে পালিয়েছে। এরপর সে বুঝতে পেরেছে যে, পালিয়ে যাওয়ার মধ্যে কি অকল্যাণ এবং প্রত্যাবর্তনের মধ্যে কি কল্যাণ রয়েছে। সুতরাং সে পূনঃ (জিহাদে) প্রত্যাবর্তন করেছে, এমন কি সে শাহাদাত বরণ করেছে। তার সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা তাঁর ফিরিশতাদের বলেন: আমরা বান্দার প্রতি তাকাও, যে আমার পুরস্কার প্রাপ্তির আশায় প্রত্যাবর্তন করেছে এবং আযাবের ভয়ে তার রক্ত প্রবাহিত করেছে।
(ইমাম আহমদ, আবু ইয়ালা, তাবারানী ও ইবন হিব্বান তাঁর 'সহীহ' গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তাবারানী মাওকূফ সূত্রে হাসান সনদে নিজ শব্দযোগে বর্ণনা করেন: আল্লাহ তা'আলা দুই ব্যক্তির প্রতি সন্তুষ্ট। তারা হলঃ ১. এমন এক ব্যক্তি যে শীতের রাতে তার বিছানা ও লেপ ছেড়ে উঠে এবং উযূ করে সালাত আদায় করে। আল্লাহ ফিরিশতাদের লক্ষ্য করে বলেন: এহেন কাজে আমার বান্দাকে, কি সে অনুপ্রাণিত করল? তারা বলেন ও হে আমাদের রব! সে আপনার কাছে সওয়াবের প্রত্যাশী এবং আপনার শাস্তির ব্যাপার ভীত-সন্ত্রস্ত। তিনি বলেনঃ সে যার আশা করছে, আমি তা তাকে দান করলাম এবং সে যার ভয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত, আমি তা থেকে তাকে নিরাপত্তা দান করলাম। এরপর তিনি অবশিষ্ট হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন।)
كتاب النَّوَافِل
التَّرْغِيب فِي قيام اللَّيْل
940 - وَعَن ابْن مَسْعُود رَضِي الله عَنهُ عَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ عجب رَبنَا تَعَالَى من رجلَيْنِ رجل ثار عَن وطائه ولحافه من بَين أَهله وحبه إِلَى صلَاته فَيَقُول الله جلّ وَعلا انْظُرُوا إِلَى عَبدِي ثار عَن فرَاشه ووطائه من بَين حبه وَأَهله إِلَى صلَاته رَغْبَة فِيمَا عِنْدِي وشفقة مِمَّا عِنْدِي
وَرجل غزا فِي سَبِيل الله وَانْهَزَمَ أَصْحَابه وَعلم مَا عَلَيْهِ فِي الانهزام وَمَا لَهُ فِي الرُّجُوع فَرجع حَتَّى يهريق دَمه فَيَقُول الله انْظُرُوا إِلَى عَبدِي رَجَعَ رَجَاء فِيمَا عِنْدِي وشفقة مِمَّا عِنْدِي حَتَّى يهريق دَمه

رَوَاهُ أَحْمد وَأَبُو يعلى وَالطَّبَرَانِيّ وَابْن حبَان فِي صَحِيحه وَرَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ مَوْقُوفا بِإِسْنَاد حسن وَلَفظه إِن الله ليضحك إِلَى رجلَيْنِ رجل قَامَ فِي لَيْلَة بَارِدَة من فرَاشه ولحافه ودثاره فَتَوَضَّأ ثمَّ قَامَ إِلَى الصَّلَاة فَيَقُول الله عز وَجل لملائكته مَا حمل عَبدِي هَذَا على مَا صنع فَيَقُولُونَ رَبنَا رَجَاء مَا عنْدك وشفقة مِمَّا عنْدك فَيَقُول فَإِنِّي قد أَعْطيته مَا رجا وآمنته مِمَّا يخَاف
وَذكر بَقِيَّته
হাদীস নং: ৯৪১
অধ্যায়ঃ নফল
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়লের প্রতি অনুপ্রেরণা
৯৪১. হযরত উকবা ইবন আমির (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা) কে বলতে শুনেছি: আমার উম্মাতের এক ব্যক্তি যখন উযু করে কিয়ামুল-লায়ল করে, অথচ তার উপর থাকে (শয়তানের দেওয়া) গিরা। আর যখন সে উভয় হাত ধৌত করে, তখন তার একটি গিরা ছুটে যায়, যখন সে উভয় হাত ধৌত করে, তখন তার একটা গিরা ছুটে যায়, যখন সে চেহারা ধৌত করে, তখন আর একটা গিরা ছুটে যায়, যখন সে মাথা মাসেহ করে, তখন আর একটা গিরা ছুটে যায়, যখন সে উভয় পা ধৌত করে, তখন সব গিরা ছুটে যায়। এ সময় আল্লাহ তা'আলা তাঁর নিকটে অবস্থানকারীদের বলেনঃ তোমরা আমার এই বান্দার প্রতি তাকাও, সে নিজকে আমাদের কাছে পেশ করে দিয়ে প্রার্থনা করছে। সে আমার কাছে যা চাচ্ছে, তা তার জন্য অবধারিত রয়েছে।
(আহমদ এবং ইবন হিব্বান নিজ শব্দযোগে তাঁর 'সহীহ' গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب النَّوَافِل
التَّرْغِيب فِي قيام اللَّيْل
941 - وَعَن عقبَة بن عَامر رَضِي الله عَنهُ قَالَ سَمِعت رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَقُول الرجل من أمتِي يقوم من اللَّيْل يعالج نَفسه إِلَى الطّهُور وَعَلِيهِ عقد فَإِذا وضأ يَدَيْهِ انْحَلَّت عقدَة وَإِذا وضأ وَجهه انْحَلَّت عقدَة وَإِذا مسح رَأسه انْحَلَّت عقدَة وَإِذا وضأ رجلَيْهِ انْحَلَّت عقدَة فَيَقُول الله عز وَجل للَّذين وَرَاء الْحجاب انْظُرُوا إِلَى عَبدِي هَذَا يعالج نَفسه يسألني مَا سَأَلَني عَبدِي هَذَا فَهُوَ لَهُ

رَوَاهُ أَحْمد وَابْن حبَان فِي صَحِيحه وَاللَّفْظ لَهُ
হাদীস নং: ৯৪২
অধ্যায়ঃ নফল
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামুল লায়লের প্রতি অনুপ্রেরণা
৯৪২. হযরত আবু উবায়দা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবদুল্লাহ (রা) বলেছেন: তাওরাতে আছে যে,
যারা বিছানায় পিঠ লাগায় না, আল্লাহ তা'আলা তাদের জন্য নির্ধারণ করে রেখেছেন এমন বন্ধু, যা সে চোখে দেখেনি, কানে শুনেনি, মানব অন্তর চিন্তাও করতে পারে নি, তা জানে না কোন মুকাররম ফিরিশতা এবং কোন নবী রাসূল। তিনি বলেন, আমরা তা তিলাওয়াত করিঃ
فَلَا تعلم نفس مَا أُخْفِي لَهُم من قُرَّة أعين
(হাকিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং একে সহীহ বলেছেন।)
[হাফিয মুনযিরী (র) বলেনঃ] হযরত আবু উবায়দা (রা) হযরত আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা) থেকে এ হাদীসটি শুনেননি। তবে কেউ কেউ বলেন, শুনেছেন।
كتاب النَّوَافِل
التَّرْغِيب فِي قيام اللَّيْل
942 - وَعَن أبي عُبَيْدَة رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ عبد الله إِنَّه مَكْتُوب فِي التَّوْرَاة لقد أعد الله للَّذين تَتَجَافَى جنُوبهم عَن الْمضَاجِع مَا لم تَرَ عين وَلم تسمع أذن وَلم يخْطر على قلب بشر وَلَا يُعلمهُ ملك مقرب وَلَا نَبِي مُرْسل
قَالَ وَنحن نقرؤها {فَلَا تعلم نفس مَا أُخْفِي لَهُم من قُرَّة أعين} السَّجْدَة 71 الْآيَة
رَوَاهُ الْحَاكِم وَصَححهُ

قَالَ الْحَافِظ أَبُو عُبَيْدَة لم يسمع من عبد الله بن مَسْعُود وَقيل سمع