আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ

الترغيب والترهيب للمنذري

৫. অধ্যায়ঃ নামাজ - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ৪৮২ টি

হাদীস নং: ৮৪১
অধ্যায়ঃ নামাজ
পরিচ্ছেদঃ স্বেচ্ছায় সালাত বর্জন এবং অবহেলা করে ওয়াক্ত সরে যাওয়ার পর সালাত আদায়ের প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৮৪১. হযরত সামুরা ইবন জুনদুব (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) অধিকাংশ সময়ে তাঁর
সাহাবীদের জিজ্ঞেস করতেন: তোমাদের কেউ কোন স্বপ্ন দেখেছ কি? কেউ কোন স্বপ্ন দেখে থাকলে, তারা তা তাঁর কাছে বর্ণনা করতেন, যা আল্লাহ চাইতেন। একদিন সকালে তিনি আমাদের বললেন: রাতে আমার
কাছে দু'জন আগন্তুক এলো, তারা আমাকে উঠাল, তারপর আমাকে বলল: চলুন। আমি তাদের সাথে চললাম। আমরা শায়িত এক ব্যক্তির নিকট এসে পৌঁছলাম। অপর এক ব্যক্তি তার নিকট পাথর হাতে দাঁড়ান ছিল। দেখলাম, সে তার মাথা লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করছে। এতে তার মাথা ফেটে যাচ্ছে। আর পাথর অনেক নীচে গিয়ে পতিত হচ্ছে। সে আবার পাথরের পেছনে পেছনে গিয়ে পাথরটি নিয়ে ফিরে আসতে না আসতেই তার মাথা পূর্বের ন্যায় ভাল হয়ে যাচ্ছে। সে ফিরে এসে প্রথম যেরূপ করেছিল আবার অনুরূপ আচরণ করে। আমি তাদের জিজ্ঞেস করলাম। সুবহানাল্লাহ! বল, এরা কারা? তারা বললঃ সামনে চলুন। আমরা সামনে অগ্রসর হয়ে এক ব্যক্তিকে দেখতে পেলাম, যে চিৎ হয়ে শুয়েছিল। আরেকজন লোহার সাঁড়াশী হাতে দাঁড়ান ছিল। সে ওটা দ্বারা একের পর এক তার মুখমণ্ডলের একাংশ চিরে (গলার) পেছনে পর্যন্ত নিয়ে যেত অনুরূপ তার নাসারন্ধ্র ও চোখ চিরে পেছন পর্যন্ত নিয়ে যেত। তিনি বলেনঃ আবু রাজা বেশির ভাগ সময় এরূপ বলতেন, সে একদিকে কেটে অপরদিকে কাটত। অপরদিকে কাটা শেষ না হতেই প্রথমদিক পূর্বের ন্যায় ভাল হয়ে যেত। এভাবে বারবার ঐরূপই করত, যেমন প্রথম করেছিল। তিনি বলেন, আমি বললাম: সুবহানাল্লাহ! বল, এরা দু'জন কারা? তারা উভয়ে আমাকে বলল: সামনে চলুন। সামনে আমরা একটি চুলার নিকট গিয়ে পৌঁছলাম। তিনি বললেন, আমার মনে হয়, তিনি বলছিলেন, আমি সেখানে শোরগোলের শব্দ শুনতে পেলাম। আমরা তাতে উকি মেরে বেশ কিছু উলঙ্গ নারী-পুরুষ দেখতে পেলাম। যাদের নীচে থেকে আগুনের লেলিহান শিখা স্পর্শ করছিল। আগুনের আওতায় আসলেই তারা উচ্চস্বরে চিৎকার দিয়ে উঠত। আমি জিজ্ঞেস করলামঃ এরা কারা? তার বলল: সামনে চলুন। সামনে অগ্রসর হয়ে আমরা একটি নহরের নিকট পৌঁছলাম। আমার যতদূর মনে পড়ে তিনি বলেছিলেনঃ সেটি ছিল লাল রক্তের ন্যায়। নহরে এক ব্যক্তিকে সাঁতরাতে দেখলাম। আর তখন নহরের পাড়ে একজন লোক দাঁড়িয়ে ছিল। যার নিকট ছিল অসংখ্য পাথরের স্তূপ। সাঁতারকারী লোকটি সাঁতরানো শেষ করে যার নিকট পাথরের স্তূপ ছিল, তার নিকট এসে মুখ খুলে দিত। আর সে তার মুখে একটি পাথর নিক্ষেপ করত। তারপর সে সাঁতরাতে চলে যেত। সাঁতরিয়ে ফিরে এসে বারবার অনুরূপ মুখ খুলে দিত। আর ঐ লোকটি তার মুখে একটি পাথর নিক্ষেপ করত। আমি জিজ্ঞেস করলামঃ এরা কারা? তারা বললঃ সামনে চলুন। আমরা সামনে অগ্রসর হয়ে একজন বীভৎস চেহারার লোক দেখতে পেলাম। তার নিকট ছিল আগুন। সে আগুন জ্বালাচ্ছিল ও তার চতুর্দিকে দৌড়াচ্ছিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম। এ লোক কে? তারা বললঃ সামনে চলুন। সামনে আমরা এক ঘন সন্নিবিষ্ট বাগানে উপনীত হলাম। বাগানটি বসন্তের হরেক রকম ফুলে সুশোভিত ছিল। বাগানের মাঝে ছিলেন একজন লোক। যার আকৃতি এতখানি দীর্ঘকায় ছিল, যেরূপ আর কখনো আমি দেখিনি। আমি জিজ্ঞেস করলাম: এ ব্যক্তিটি কে? আর এরাই বা কারা? তারা বললঃ সামনে চলুন, সামনে চলুন। অবশেষে আমরা এক বিরাট বাগানে গিয়ে উপনীত হলাম। এরূপ বড় ও সুন্দর বাগান আমি আর কখনো দেখিনি। তারা আমাকে বললঃ এর উপর আরোহণ করুন। আমরা তাতে আরোহণ করলে এক শহর আমাদের নজরে পড়ল। সেটি ছিল সোনা ও রূপার ইট দিয়ে তৈরি। আমরা ঐ শহরের দরজায় পৌঁছলাম। দরজা খুলতে বললে আমাদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া হলো। ভেতরে প্রবেশ করে আমরা কিছু লোকের সাক্ষাত পেলাম। যাদের শরীরের অর্ধেক খুবই সৌন্দর্যমণ্ডিত ছিল। যেরূপ তোমরা খুব সুন্দর কাউকে দেখে থাক। তারা উভয়ে ঐ লোকদের উদ্দেশ্যে বলল: যাও, তোমরা ঐ ঝর্ণায় নেমে পড়। দেখা গেল প্রন্থের দিকে লম্বা প্রবহমান একট ঝর্ণা রয়েছে। তার পানি ছিল সম্পূর্ণ স্বচ্ছ। তারা গেল এবং তাতে নেমে পড়ল। তারপর আমাদের নিকট ফিরে এলো। দেখা গেল তাদের কদাকৃতি দূর হয়ে গেছে। এখনে তারা খুব সুন্দর আকৃতিবিশিষ্ট হয়ে গেছে। তারা আমাকে জানাল। এটাই আদন নামক জান্নাত। এটাই আপনার বাসস্থান। আমি উপরের দিকে তাকালাম। দেখলাম, ধবধবে সাদা মেঘের ন্যায় এক অট্টালিকা। তারা আমাকে জানাল এটাই আপনার প্রাসাদ। আমি বললাম: আল্লাহ তোমাদের উভয়ের কল্যাণ করুন। আমাকে ছেড়ে দাও। আমি এতে প্রবেশ করব। তারা বলল: এখন নয়। তবে এতে আপনি অবশ্যই প্রবেশ করবেন। আমি তাদের বললামঃ সারারাত ধরে আমি অনেক অনেক আশ্চর্য জিনিস প্রত্যক্ষ করলাম। এগুলোর তাৎপর্য কি? তারা উভয়ে বললঃ এক্ষণে আমরা তা আপনাকে জানাব।
প্রথম আপনি যে ব্যক্তির নিকট গিয়েছেন, যার মাথা পাথর মেরে চৌচির করা হচ্ছিল, সে কুরআন মুখস্থ করে (তার উপর আমল) ছেড়ে দিত আর ঘুমিয়ে ফরয সালাত বর্জন করত। আর অপর যে ব্যক্তির নিকট আপনি গেলেন, যার গলদেশের পেছন পর্যন্ত চেরা হচ্ছিল, আর নাসারন্ধ্র ও চোখ পিঠ পর্যন্ত চেরা হচ্ছিল, সে সকালবেলা আপন ঘর থেকে বেরিয়ে যেত, আর চতুর্দিকে মিথ্যার বেসাতি করে বেড়াত। আর ঐ উলঙ্গ নারী-পুরুষ যাদের প্রজ্জ্বলিত চুলায় দেখতে পেয়েছেন, তারা ছিল ব্যভিচারী পুরুষ ও ব্যভিচারী নারী। আর যে লোক ঝর্ণায় সাঁতরাচ্ছিল, যার নিকট দিয়ে আপনি গিয়েছিলেন যে পাথরের লোকমা খাচ্ছিল, সে ছিল সুদখোর। আর ঐ কদাকার ব্যক্তি যাকে আপনি আগুনের নিকট দেখতে পেয়েছিলেন, আর যে আগুন জ্বালিয়ে তার চারদিকে দৌড়াচ্ছিল, সে জাহান্নামের দারোগা মালিক ফিরিশতা। বাগানে যে দীর্ঘাকৃতির লোককে দেখেছিলেন, তিনি ছিলেন ইবরাহীম (আ) আর তাঁর চারপাশের যে বালকদের আপনি দেখেছেন, তারা ছিল ঐ সব শিশু যারা স্বভাব ধর্মের (ইসলাম) উপর ইনতিকাল করেছে। বর্ণনাকারী বলেনঃ মুসলমানদের কেউ কেউ জিজ্ঞেস করেছিলঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ। মুশরিকদের সন্তানরা কোথায়? রাসূলুল্লাহ (সা) বললেনঃ তারাও সেখানে ছিল। আর যাদের অধিকাংশ সুন্দর ছিল, কিন্তু কিছু অংশ ছিল অত্যন্ত কদাকার, তারা ছিল ঐ সব লোক, যারা ভাল-মন্দ উভয় প্রকার কাজ করেছিল। আল্লাহ তা'আলা তাদের ত্রুটিসমূহ ক্ষমা করে দিয়েছেন।
(বুখারী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমি হাদীসটি অবিকল উল্লেখ করেছি। ইনশা আল্লাহ সামনের অধ্যায়ে আমি পূর্ণ হাদীসটি উল্লেখ করব।)
كتاب الصَّلَاة
التَّرْهِيب من ترك الصَّلَاة تعمدا وإخراجها عَن وَقتهَا تهاونا
841 - وَعَن سَمُرَة بن جُنْدُب رَضِي الله عَنهُ قَالَ كَانَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم مِمَّا يكثر أَن يَقُول لاصحابه هَل رأى أحد مِنْكُم من رُؤْيا فيقص عَلَيْهِ مَا شَاءَ الله أَن يقص وَإنَّهُ قَالَ لنا ذَات غَدَاة إِنَّه أَتَانِي اللَّيْلَة آتيان وإنهما ابتعثاني وإنهما قَالَا لي انْطلق وَإِنِّي انْطَلَقت مَعَهُمَا وَإِنَّا أَتَيْنَا على رجل مُضْطَجع وَإِذا آخر قَائِم عَلَيْهِ بصخرة وَإِذا هُوَ يهوي بالصخرة لرأسه فيثلغ رَأسه فيتدهده الْحجر فَيَأْخذهُ فَلَا يرجع إِلَيْهِ حَتَّى يَصح رَأسه كَمَا كَانَ
ثمَّ يعود عَلَيْهِ فيفعل بِهِ مثل مَا فعل الْمرة الأولى
قَالَ قلت لَهما سُبْحَانَ الله مَا هَذَا قَالَا لي انْطلق انْطلق فأتينا على رجل مستلق على قَفاهُ وَإِذا آخر قَائِم عَلَيْهِ بكلوب من حَدِيد وَإِذا هُوَ يَأْتِي أحد شقي وَجهه فيشرشر شدقه إِلَى قَفاهُ ومنخره إِلَى قَفاهُ وعينه إِلَى قَفاهُ
قَالَ وَرُبمَا قَالَ أَبُو رَجَاء فَيشق
قَالَ ثمَّ يتَحَوَّل إِلَى الْجَانِب الآخر فيفعل بِهِ مثل مَا فعل بالجانب الأول
قَالَ فَمَا يفرغ من ذَلِك الْجَانِب حَتَّى يَصح ذَلِك الْجَانِب كَمَا كَانَ ثمَّ يعود عَلَيْهِ فيفعل مثل مَا فعل فِي الْمرة الأولى
قَالَ قلت سُبْحَانَ الله مَا هَذَا قَالَا لي انْطلق
فَانْطَلَقْنَا فأتينا على مثل التَّنور قَالَ فأحسب أَنه كَانَ يَقُول فَإِذا فِيهِ لغط وأصوات
قَالَ فاطلعنا فِيهِ فَإِذا فِيهِ رجال وَنسَاء عُرَاة وَإِذا هم يَأْتِيهم لَهب من أَسْفَل مِنْهُم فَإِذا أَتَاهُم ذَلِك اللهب ضوضوا قَالَ قلت مَا هَؤُلَاءِ قَالَا لي انْطلق انْطلق قَالَ فَانْطَلَقْنَا فأتينا على نهر حسبت أَنه كَانَ يَقُول أَحْمَر مثل الدَّم وَإِذا فِي النَّهر رجل سابح يسبح وَإِذا على شط النَّهر رجل عِنْده قد جمع حِجَارَة كَثِيرَة وَإِذا ذَلِك السابح يسبح مَا سبح ثمَّ يَأْتِي ذَلِك الَّذِي قد جمع عِنْده الْحِجَارَة فيفغر فَاه فيلقمه حجرا فَينْطَلق فيسبح ثمَّ يرجع إِلَيْهِ كلما رَجَعَ إِلَيْهِ فغر فَاه فألقمه حجرا قلت لَهما مَا هَذَانِ قَالَا لي انْطلق انْطلق فَانْطَلَقْنَا فأتينا على رجل كريه الْمرْآة كأكره مَا أَنْت رَاء رجلا مرْآة وَإِذا عِنْده نَار يحشها وَيسْعَى حولهَا
قَالَ قلت لَهما مَا هَذَا قَالَ قَالَا لي انْطلق انْطلق فَانْطَلَقْنَا فأتينا على رَوْضَة معتمة فِيهَا من كل نور الرّبيع وَإِذا بَين ظَهْري الرَّوْضَة رجل طَوِيل لَا أكاد أرى رَأسه طولا فِي السَّمَاء وَإِذا حول الرجل من أَكثر ولدان رَأَيْتهمْ
قَالَ قلت مَا هَذَا مَا هَؤُلَاءِ قَالَا لي انْطلق انْطلق فَانْطَلَقْنَا فأتينا على دوحة عَظِيمَة لم أر دوحة قطّ أعظم وَلَا أحسن مِنْهَا
قَالَ قَالَا لي ارق فِيهَا فارتقينا فِيهَا إِلَى مَدِينَة مَبْنِيَّة بِلَبن ذهب وَلبن فضَّة
فأتينا بَاب الْمَدِينَة فاستفتحنا فَفتح لنا فدخلناها فتلقانا رجال شطر من خلقهمْ كأحسن مَا أَنْت رَاء وَشطر مِنْهُم كأقبح مَا أَنْت رَاء
قَالَ قَالَا لي اذْهَبُوا فقعوا فِي ذَلِك النَّهر
قَالَ وَإِذا نهر معترض يجْرِي كَأَن مَاءَهُ الْمَحْض فِي الْبيَاض فَذَهَبُوا فوقعوا فِيهِ ثمَّ رجعُوا إِلَيْنَا قد ذهب ذَلِك السوء عَنْهُم فصاروا فِي أحسن صُورَة
قَالَ قَالَا لي هَذِه جنَّة عدن وَهَذَا مَنْزِلك
قَالَ فسما بَصرِي صعدا فَإِذا قصر مثل الربابة الْبَيْضَاء
قَالَ قَالَا لي هَذَا مَنْزِلك
قَالَ قلت لَهما بَارك الله فيكما فذراني فَأدْخلهُ قَالَا أما الْآن فَلَا وَأَنت دَاخله
قَالَ قلت لَهما فَإِنِّي رَأَيْت مُنْذُ اللَّيْلَة عجبا فَمَا هَذَا الَّذِي رَأَيْت قَالَ قَالَا لي إِنَّا سنخبرك أما الرجل الأول الَّذِي أتيت عَلَيْهِ يثلغ رَأسه بِالْحجرِ فَإِنَّهُ الرجل يَأْخُذ الْقُرْآن فيرفضه وينام عَن الصَّلَاة الْمَكْتُوبَة وَأما الرجل الَّذِي أتيت عَلَيْهِ يشرشر شدقه إِلَى قَفاهُ ومنخره إِلَى قَفاهُ وعينه إِلَى قَفاهُ فَإِنَّهُ الرجل يَغْدُو من بَيته فيكذب الكذبة تبلغ الْآفَاق وَأما الرِّجَال وَالنِّسَاء العراة الَّذين هم فِي مثل بِنَاء التَّنور فَإِنَّهُم الزناة والزواني وَأما الرجل الَّذِي أتيت عَلَيْهِ يسبح فِي النَّهر ويلقم الْحجر فَإِنَّهُ آكل الرِّبَا وَأما الرجل الكريه الْمرْآة الَّذِي عِنْد النَّار يحشها وَيسْعَى حولهَا فَإِنَّهُ مَالك خَازِن جَهَنَّم وَأما الرجل الطَّوِيل الَّذِي فِي الرَّوْضَة فَإِنَّهُ
إِبْرَاهِيم وَأما الْولدَان الَّذين حوله فَكل مَوْلُود مَاتَ على الْفطْرَة
قَالَ فَقَالَ بعض الْمُسلمين يَا رَسُول الله وَأَوْلَاد الْمُشْركين فَقَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم وَأَوْلَاد الْمُشْركين وَأما الْقَوْم الَّذين كَانُوا شطر مِنْهُم حسن وَشطر مِنْهُم قَبِيح فَإِنَّهُم قوم خلطوا عملا صَالحا وَآخر سَيِّئًا تجَاوز الله عَنْهُم
رَوَاهُ البُخَارِيّ وذكرته بِتَمَامِهِ لأحيل عَلَيْهِ فِيمَا يَأْتِي إِن شَاءَ الله تَعَالَى
হাদীস নং: ৮৪২
অধ্যায়ঃ নামাজ
পরিচ্ছেদঃ স্বেচ্ছায় সালাত বর্জন এবং অবহেলা করে ওয়াক্ত সরে যাওয়ার পর সালাত আদায়ের প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৮৪২. বাযযার রবী ইবন আনাস থেকে তিনি আবুল আলীয়া থেকে অথবা অন্যের থেকে হযরত আবূ হুরায়রা (রা) সূত্রে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেনঃ এরপর তাঁকে অর্থাৎ নবী (সা) কে এমন এক কওমের কাছে আনা হল, যাদের মাথা পাথর মেরে চূর্ণ বিচূর্ণ করা হচ্ছিল, আবার তা পূর্বানুরূপ হচ্ছিল। আবার তাদের মাথা পাথর দ্বারা চূর্ণ বিচূর্ণ করা হচ্ছিল। এভাবে চলতে থাকে এবং তাদের অবকাশ দেওয়া হয় না। তিনি বললেনঃ হে জিবরীল! এরা কারা? তিনি বললেন: এরা ঐ সব লোক, যারা ফরয সালাত আদায় করা বোঝা মনে করত। তিনি মিরাজের বর্ণনায় এবং সালাত ফরয হওয়া অধ্যায়ে এ হাদীস উল্লেখ করেছেন।
[আবূ মুহাম্মদ ইবন হাযম বলেন:] হযরত উমর, আবদুর রহমান ইবন আওফ, মু'আয ইবন জাবাল, আবু হুরায়রা (রা) এবং অপরাপর সাহাবীগণ এই হাদীসটি বর্ণনা করেন। হাদীসটি হলঃ যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় এক ওয়াক্ত ফরয সালাত পরিত্যাগ করবে, এমনকি ওয়াক্ত চলে গেল, সে কাফির, মুরতাদ। এ সম্পর্কে সাহাবায়ে কিরামের মতানৈক্য সম্পর্কে আমি জানি না।
[হাফিয আবদুল আযীম মুনযিরী (র) বলেনঃ] একদল সাহাবা এবং তাঁদের পরবর্তী উম্মতগণের মতে, যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় সালাত পরিত্যাগ করে, এমন কি সালাতের সময় চলে যায়, তার কাফির হওয়ার ব্যাপারে হযরত উমর ইবন খাত্তাব, আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ, আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস, মু'আয ইবন জাবাল, জাবির ইবন আবদুল্লাহ ও আবুদ-দারদা (রা) এবং সাহাবা ব্যতীত ইমাম আহমদ ইবন হাম্বল, ইসহাক ইবন রাহওয়াই, আবদুল্লাহ ইবন মুবারক, নাখ'ঈ, হাকাম ইবন উতায়বা, আয়্যুব সাখতিয়ানী, আবু দাউদ তায়ালিসী, আবু বকর ইবন আবু শায়বা, যুহায়র ইবন হারব (র) এবং অপরাপর মনীষীগণ অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
كتاب الصَّلَاة
التَّرْهِيب من ترك الصَّلَاة تعمدا وإخراجها عَن وَقتهَا تهاونا
842 - وَقد روى الْبَزَّار من حَدِيث الرّبيع بن أنس عَن أبي الْعَالِيَة أَو غَيره عَن أبي هُرَيْرَة رَضِي الله عَنهُ قَالَ ثمَّ أَتَى يَعْنِي النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم على قوم ترضخ رؤوسهم بالصخرة كلما رضخت عَادَتْ كَمَا كَانَت وَلَا يفتر عَنْهُم من ذَلِك شَيْء
قَالَ يَا جِبْرِيل من هَؤُلَاءِ قَالَ هَؤُلَاءِ الَّذين تثاقلت رؤوسهم عَن الصَّلَاة الْمَكْتُوبَة
فَذكر الحَدِيث فِي قصَّة الْإِسْرَاء وَفرض الصَّلَاة
قَوْله يثلغ رَأسه أَي يشدخ
قَوْله فيتدهده أَي فيتدحرج
والكلوب بِفَتْح الْكَاف وَضمّهَا وَتَشْديد اللَّام هُوَ حَدِيدَة معوجة الرَّأْس
وَقَوله يشرشر شدقه هُوَ بشينين معجمتين الأولى مِنْهُمَا مَفْتُوحَة وَالثَّانيَِة مَكْسُورَة وراءين الأولى مِنْهُمَا سَاكِنة وَمَعْنَاهُ يقطعهُ ويشقه وَاللَّفْظ محركا هُوَ الصخب والجلبة والصياح
وَقَوله ضوضوا بِفَتْح الضاضين المعجمتين وَسُكُون الواوين وَهُوَ الصياح مَعَ الانضمام والفزع
وَقَوله فغر فَاه بِفَتْح الْفَاء والغين الْمُعْجَمَة مَعًا بعدهمَا رَاء أَي فَتحه
وَقَوله يحشها هُوَ بِالْحَاء الْمُهْملَة المضمومة والشين الْمُعْجَمَة أَي يوقدها
وَقَوله معتمة أَي طَوِيلَة النَّبَات
يُقَال أعتم النبت إِذا طَال
والنور بِفَتْح النُّون هُوَ الزهر
والمحض بِفَتْح الْمِيم وَسُكُون الْحَاء الْمُهْملَة هُوَ الْخَالِص من كل شَيْء
وَقَوله فسما بَصرِي صعدا بِضَم الصَّاد وَالْعين الْمُهْمَلَتَيْنِ أَي ارْتَفع بَصرِي إِلَى فَوق
والربابة هُنَا هِيَ السحابة الْبَيْضَاء
قَالَ أَبُو مُحَمَّد بن حزم وَقد جَاءَ عَن عمر وَعبد الرَّحْمَن بن عَوْف ومعاذ بن جبل وَأبي هُرَيْرَة وَغَيرهم من الصَّحَابَة رَضِي الله عَنْهُم أَن من ترك صَلَاة فرض وَاحِدَة مُتَعَمدا حَتَّى يخرج وَقتهَا فَهُوَ كَافِر مُرْتَد وَلَا نعلم لهَؤُلَاء من الصَّحَابَة مُخَالفا
قَالَ الْحَافِظ عبد الْعَظِيم قد ذهب جمَاعَة من الصَّحَابَة وَمن بعدهمْ إِلَى تَكْفِير من ترك الصَّلَاة مُتَعَمدا لتركها حَتَّى يخرج جَمِيع وَقتهَا مِنْهُم عمر بن الْخطاب وَعبد الله بن مَسْعُود وَعبد الله بن عَبَّاس ومعاذ بن جبل وَجَابِر بن عبد الله وَأَبُو الدَّرْدَاء رَضِي الله عَنْهُم وَمن غير الصَّحَابَة أَحْمد بن حَنْبَل وَإِسْحَاق بن رَاهَوَيْه وَعبد الله بن الْمُبَارك وَالنَّخَعِيّ وَالْحكم بن عتيبة وَأَيوب السّخْتِيَانِيّ وَأَبُو دَاوُد الطَّيَالِسِيّ وَأَبُو بكر بن أبي شيبَة وَزُهَيْر بن حَرْب وَغَيرهم رَحِمهم الله تَعَالَى