সাহাবারা রা. সমালোচনা করা বৈধ : মওদুদী। পর্ব–২
সাহাবারা রা. সমালোচনা করা বৈধ : মওদুদী। পর্ব–২
সাহাবায়ে কেরাম রা. ছিলেন উম্মতে মুহাম্মাদীর সর্বশ্রেষ্ট ও আলোকিত মানুষ। কারণ, তাঁরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাহচর্য লাভ করেছেন। জান-মাল দিয়ে তাঁরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে সাহায্য করেছেন। তাঁদের সমালোচনা একমাত্র দূর্ভাগা ও অভিশপ্ত ছাড়া কেউ করতে পারে না। মওদুদী কী বলে? জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা জনাব মওদুদী সাহাবায়ে কেরাম রা.-এর সমালোচনা করাকে নিজের অভ্যাসে পরিনত করেছিলো। শুধু তাই নয়, বরং সাহাবাদের সমালোচনা করার বৈধতার ফাতাওয়াও প্রসব করেছিলো। তার লেখা ‘খেলাফত ও মুলুকিয়্যাত’ বইটা পড়লে যে-কেউ সাহাবা দুশমন হতে বাধ্য। কারণ, প্রতিটা পাতায় পাতায় শিয়াদের বানানো জাল বর্ণনা দিয়ে সাহাবাদের নগ্ন সমালোচনা করেছে মিস্টার মওদুদী। নিন্মে মওদুদীর কয়েকটা নিকৃষ্ট বক্তব্য তুলে ধরছি– اگر کوئی شخص یہ کہتا ہے کہ صحابہ کرام سے کبھی کوئی غلطی نہیں ہوتی تو وہ قرآن وحدیت کے خلاف ایک بات کہتا ہے سوال یہ ہے کہ جب قرآن و احادیث میں مختلف مثالوں کا ذکر کیا گیا ہے تو ایک مسلمان ان کے برعکس موقف کسی طرح اختیار کر سکتا ہے اور کس طرح سے کوئی شخص یہ کہ سکتا ہے کہ اگر اُن سے غلطی ہوئی تو اسکا بیان کرنا گناہ ہے ؟ যদি কেউ বলে যে, সাহাবারা কখনও কোনও ভুল করেননি, তাহলে তারা কুরআন ও হাদিস বিরোধী কথা বললো। প্রশ্ন হলো, যখন কুরআন ও হাদিসে (সাহাবীদের ভুলের) বিভিন্ন উদাহরণ উল্লেখ্য করা হয়েছে, তখন কীভাবে একজন মুসলিম তাদের বিপরীত অবস্থান নিতে পারে এবং কীভাবে কেউ বলতে পারে যে, তারা যদি ভুল করে থাকে, তাহলে তা বর্ণনা করা পাপ? –তাফহীমাত, খ. ৪ পৃ. ১৯৫ کوئی غلط کام محض شرف صحابیت کی وجہ سے مشرف نہیں ہو جاتا بلکہ صحابی کے مرتبہ بلند کی وجہ سے وہ غلطی اور زیادہ نمایاں ہو جاتی ہے কেবল সাহাবী হওয়ার সম্মানের কারণেই কোনও ভুল কাজ ন্যায্য হয় না, বরং সাহাবীর উচ্চ মর্যাদার কারণেই সেই ভুল আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। –খেলাফত ও মুলুকিয়্যাত, পৃ. ১৪৩ خود قرآن مجید میں صحابہ کرام کی بعض غلطیوں کا ذکر کیا گیا ہے “খোদ কুরআনেই তো সাহাবাদের কিছু ভুলের কথা উল্লেখ্য করা হয়েছে।” মওদুদী এ বাক্য লেখার পর সাহবাদের কয়েকটি ভুলের উদহরণ পেশ করে লিখেছে, اگر اس چیز کا نام صحابہ کرام پر نکتہ چینی ہے تو اس سے کون بچا ہے؟ سب سے پہلے تو اللہ تعالی نے ابتداء کی যদি এই বিষয়টি (সাহাবাদের ভুলের পর্যালোচনা করাকে) সাহাবাদের সমালোচনা বলা হয়, তাহলে এর থেকে কে নিরাপদ? সর্বপ্রথম, মহান আল্লাহ তাআলা এটি শুরু করেছিলেন। –তাফহীমাত, খ. ৪ পৃ. ১৬৪ এছাড়াও হযরত উসমান রা.-এর সমালোচনা করতে গিয়ে এক পর্যায়ে লিখেছে, اور غلط کام بہر حال غلط ہے خواہ وہ کسی نے کیا ہو،اس کو خواہ مخواہ کی سخن سازیوں سے صحیح ثابت کرنے کی کوشش کرنا نہ عقل و انصاف کا تقاضہ ہے اور نہ دین کا یہ مطالبہ ہے کہ کسی صحابی کی غلطی کو غلطی نہ مانا جائے আর ভুল কাজ সর্বাবস্থায় ভুলই, তা যেই করুক না কেন। অযথা বাকবিতণ্ডার মাধ্যমে তা ন্যায্য প্রমাণ করার চেষ্টা যুক্তি বা ন্যায়বিচারের দাবী নয়। আর ধর্মের দাবীও এটা নয় যে, একজন সাহাবীর ভুলকে ভুল হিসেবে বিবেচনা করা হবে না। –খিলাফত ও মুলুকিয়াত, পৃ. ১১৬ এজন্য মওদুদী তার প্রতিষ্ঠিত সংগঠন ‘জামায়াতে ইসলামী’-এর সংবিধানে এই আইন লিখেছে, رسول خدا کے سوا کسی انسان کو معیار حق نہ بنائے کسی کو تنقید سے بالاتر نہ سمجھے আল্লাহর রাসুল ছাড়া অন্য কাউকে সত্যের মাপকাঠি বানাবে না এবং সমালোচনার ঊর্ধ্বে মনে করবে না। –দস্তুরে জামাতে ইসলামী, পৃ. ৭ উপরিউক্ত বক্তব্যগুলো থেকে প্রমাণ হলো, মওদুদীর কাছে সাহাবাদের সমালোচনা করা বৈধ। ইসলাম কী বলে? পবিত্র হাদিস শরীফে সাহাবায়ে কেরাম রা.-এর সমালোচনা না করার ব্যাপারে অসংখ্য হাদিস এসেছে। কয়েকটি এখানে তুলে ধরলাম– এক. হযরত সাওবান রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, إِذَا ذُكِرَ أَصْحَابِي فَأَمْسِكُوا যখন আমার সাহাবীদের আলোচনা আসে, তখন (তাদের ব্যাপারে সমালোচনা করা থেকে) নিজেকে বিরত রাখো। –আল মুজামুল কাবীর (তাবরানী) হাদীস নং : ১৪২৭ ; জামে সগীর, হাদিস নং : ৬১৩ দুই. হযরত আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, لا تسبوا أصحابي فوالذي نفسي بيده لو أن أحدكم أنفق مثل أحد ذهباً ما أدرك مد أحدهم ولا نصيفه তোমরা আমার কোন সাহাবীকে মন্দ বলো না (সমালোচনা করো না)। তোমাদের কেউ যদি উহুদ পর্বততূল্য স্বর্ণও দান করে, তবুও তাঁদের সোয়া সের যব সাদাকা করার সমানও হতে পারে না, বরং এর অর্ধেকেরও বরাবর হতে পারে না। –সহিহ বুখারী, হাদিস নং : ৩৬৭৩ তিন. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা, বলেন, لا تسبُّوا أصحابَ محمَّدٍ صلّى اللَّهُ عليهِ وسلَّمَ فلَمُقامُ أحدِهِم ساعةً خيرٌ مِن عمَلِ أحدِكُم عُمرَهُ তোমরা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাহাবাগণের মন্দ বলো না, তাদের এক মুহুর্তের সৎকাজ তোমাদের সারা জীবনের সৎকাজের চেয়ে উত্তম। –সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং : ১৩৩ চার. সাহাবা সমালোচকদের বেত্রাঘাতের নির্দেশ : উপরন্তু সাহাবাদের সমালোচনা করলে বেত্রাঘাতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হযরত আলী রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন- مَن سَبَّ نبيًّا قُتِل ومَن سَبَّ أصحابَه جُلِد যে ব্যক্তি নবীকে সমালোচনা বা মন্দ বলে,তাকে হত্যা করা হবে। আর যে সাহাবীকে সমালোচনা বা মন্দ বলে তাকে প্রহার করা হবে। –মু’জামে সগীর (তবরানী) হাদিস নং : ৬৫৯ পাঁচ. সাহাবা সমালোচনা মানেই আল্লাহর সাথে যুদ্ধ করা : সাহাবায়ে কেরাম রা.-এর সাথে দুশমনি রাখা আল্লাহর সাথে যু্দ্ধ ঘোষণা করার শামিল। কারণ সকল সাাহাবায়ে কেরাম রা. উম্মতের মধ্যে সবচে বড় ওলী ছিলেন। কারন তারা সবাই জান্নাতী, তাদের সব গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। আর ওলীদের সাথে দুশমনি করা মানেই আল্লাহর সাথে যুদ্ধ করা। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, إِنَّ اللَّهَ قَالَ مَنْ عَادَى لِي وَلِيًّا فَقَدْ آذَنْتُهُ بِالْحَرْب আল্লাহ বলেন, যে ব্যক্তি আমার কোনো ওলির সঙ্গে দুশমনি রাখবে, আমি তার সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করি। –সহিহ বুখারী, হাদিস নং : ৬৫০২ ছয়. সাহাবায়ে কেরাম রা.-এন সমালোচনা অভিসাপের কারণ : হযরত ইবনে আব্বাস রা. হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, من سبَّ أصحابِي فعليه لعنةُ اللهِ والملائكةِ والناسِ أجمعين যারা আমার সাহাবীদেরকে মন্দ বলে, তাদের প্রতি আল্লাহর, ফেরেস্তাদের এবং জগতবাসীর অভিশাপ বর্ষিত হোক। –জামে সগীর, হাদিস নং : ৮৭১৫ সাত. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, إذا رأيتم الذين يسبون أصحابي فقولوا لعنة الله على شركم যখন তোমরা এ ধরনের লোক দেখবে, যারা আমার সাহাবীকে মন্দ বলে, তখন তাদের উদ্দেশে বলে দাও, তোমাদের অনিষ্টের উপর আল্লাহর অভিশাপ হোক। –সুনানে তিরমিযি, হাদিস নং : ৩৮৬৬ আট. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মুগাফফাল রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, اللَّهَ اللَّهَ فِي أَصْحَابِي اللَّهَ اللَّهَ فِي أَصْحَابِي لاَ تَتَّخِذُوهُمْ غَرَضًا بَعْدِي فَمَنْ أَحَبَّهُمْ فَبِحُبِّي أَحَبَّهُمْ وَمَنْ أَبْغَضَهُمْ فَبِبُغْضِي أَبْغَضَهُمْ وَمَنْ آذَاهُمْ فَقَدْ آذَانِي وَمَنْ آذَانِي فَقَدْ آذَى اللَّهَ وَمَنْ آذَى اللَّهَ فَيُوشِكُ أَنْ يَأْخُذَهُ হুঁশিয়ার! আমার সাহাবীদের বিষয়ে আল্লাহ্ তাআলাকে ভয় করো। আমার পরে তোমরা তাদেরকে (গালি ও বিদ্রুপের) লক্ষ্যবস্তু বানিও না। যেহেতু যে ব্যক্তি তাদের প্রতি ভালোবাসা পোষণ করলো, সে আমার প্রতি ভালোবাসার খাতিরেই তাদেরকে ভালোবাসলো। আর যে ব্যক্তি তাদের প্রতি শত্রুতা ও হিংসা পোষণ করলো, সে আমার প্রতি শত্রুতা ও হিংসাবশেই তাদের প্রতি শক্ৰতা ও হিংসা পোষণ করলো। যে ব্যক্তি তাদেরকে কষ্ট দিলো, সে আমাকেই কষ্ট দিলো। যে আমাকে কষ্ট দিলো, সে আল্লাহ তাআলাকেই কষ্ট দিলো। আর যে আল্লাহ তাআলাকে কষ্ট দিলো, শীঘ্রই আল্লাহ তাআলা তাকে পাকড়াও করবেন। –জামে তিরমিযী, হাদিস নং : ৩৮৬২ নয়. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মুগাফফল রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, فمن أحبهم فبحبي أحبهم ومن أبغضهم فببغضي أبغضهم ومن آذاهم فقد آذاني ومن آذاني فقد آذى الله ومن آذى الله يوشك أن يأخذه যে তাঁদেরকে (সাহাবাদেরকে) ভালোবাসে, সে আমার প্রতি ভালবাসার কারণেই তাদেরকে ভালবাসে এবং যে তাঁদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে, সে আমার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করার কারণেই তাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করলো। যে তাদেরকে কষ্ট দিলো, সে আমাকেই কষ্ট দিলো। আর যে আমাকে কষ্ট দিলো, সে আল্লহ তাআলাকেই কষ্ট দিলো, আর যে আল্লাহকে কষ্ট দিলো, আল্লাহ তাআলা অচিরেই তাকে পাকড়াও করবেন। –সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং : ৭২৫৬ প্রিয় পাঠক, উপরিউক্ত হাদিসগুলো থেকে জানা গেলো, যারা সাহাবাদের সমালোচনা করে, তারা অভিশপ্ত ও আল্লাহর দুশমন। এতো এতো সুস্পষ্ট হাদিস থাকা সত্ত্বেও মওদুদী কিভাবে সাহাবারা ‘সমালোচনার উর্ধ্বে নন’ এমন জঘন্য দাবী করলো! সাহাবা বিদ্বেষ দীন ধ্বংসের ষড়যন্ত্র : মূলত সাহাবীদের সাধে দুশমনি করার পেছনে এদের একটা গভীর ষড়যন্ত্র লুকিয়ে আছে। যা ইমাম মুসলিম রহি.-এর উস্তায ইমাম আবু যুরআহ রহি. বলেছেন, اذا رأيت الرجل ينتقص أحدا من أصحاب رسول الله صلى الله عليه وآله وسلم فاعلم أنه زنديق وذلك أن الرسول حق والقرآن حق وما جاء به حق وانما أدى الينا ذلك كله الصحابة وهؤلاء (وهم) يريدون أن يجرحوا شهودنا ليبطلوا الكتاب والسنة যদি তুমি কোনও ব্যক্তিকে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাহাবীদের একজনের সমালোচনা করতে দেখো, তাহলে জেনে রাখো, যে সে একজন যিন্দিক। কারণ রাসুল সত্য, কুরআন সত্য এবং তিনি যা নিয়ে এসেছেন তা সত্য। এই সবকিছুই সাহাবীরা আমাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন, কিন্তু এই লোকেরা (সমালোচকরা) কিতাব এবং সুন্নাহকে বাতিল করার জন্যেই আমাদের সাক্ষীদের (সাহাবীদেরকে) বিতর্কিত করতে চায়। –আল-ইসাবাহ, খ. ১ পৃ. ৭ চলুন, সাহাবায়ে কেরাম রা.-কে ভালোবাসতে শিখি, তাঁদের সমালোচনা করে নিজেকে মওদুদীর মতো অভিশপ্ত না বানাই। আল্লাহপাক আমাদের ঈমানকে শিয়াদের প্রভাব মুক্ত করেন। আমীন!
মন্তব্য (...)
এ সম্পর্কিত আরও প্রবন্ধ
জেনারেল শিক্ষিতরা কীভাবে দীনের খেদমত করবেন?
দীনের খিদমত কী জিনিস? ধরেন, আমি ডাক্তার। এক হচ্ছে, আমি হালালভাবে ইনকাম করছি, যথাসাধ্য রোগীদের ফ্রী-ড...
ডাঃ শামসুল আরেফীন শক্তি
৬ নভেম্বর, ২০২৪
২৯৮০
কুরআনের তাফসীর পড়া যাবে না! হেযবুত তওহীদ পর্ব–১৭
যদি কেউ বড় শিক্ষিত হয়, তবে তার বক্তব্য বুঝতে হলে নিশ্চয় জ্ঞানী হতে হয়, অথবা জ্ঞানীদের থেকে বুঝে নিতে...
মুফতী রিজওয়ান রফিকী
৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
১৪৫১