ইসলাম নারকীয় সিস্টেম! এটা দিতে ব্যার্থ! হেযবুত তওহীদ পর্ব–৩৭
ইসলাম নারকীয় সিস্টেম! এটা দিতে ব্যার্থ! হেযবুত তওহীদ পর্ব–৩৭
প্রিয় পাঠক! আমরা জানি বর্তমান পৃথিবীকে শান্তিময় করার জন্য ইসলামের বিকল্প নেই। ইসলামতন্ত্র ব্যতিরেকে মানবরচিত কোনো তন্ত্রমন্ত্র দিয়ে অশান্ত এ পৃথিবীকে শান্তিময় করা সম্ভব নয়। জাহিলি যুগের বর্বরতা ও অন্ধকার ঘুচিয়ে সোনালী সমাজ গঠণে ইসলামের ভুমিকাই ছিল প্রধান। সেই অবিকৃত দ্বীন ইসলাম সর্বত্র পালন করলে আজও শান্তি আসতে বাধ্য। হেযবুত তওহীদ কী বলে? বর্তমানে তওহীদবিহীন যে ইসলাম দুনিয়াতে চোলছে আমরা সেই বিকৃত বিপরীতমুখী এসলামের কথা বোলছি না। এই এসলাম মানবজাতিকে শান্তি দিতে পারে নাই। –মহাসত্যের আহ্বান (প্রচারপত্র) পৃ. ১৯ (পিডিএফ) ধর্মের বাণী, ইসলামের বাণী আর এখন মানবজাতির সামনে উপস্থাপন করে লাভ নেই। গণতন্ত্র সমাজতন্ত্রের ব্যর্থতা প্রমাণিত হওয়ার পর এখন এসব মতবাদের চেয়ে উৎকৃষ্ট আরেকটি আদর্শ লাগবে যেটার সন্ধান ১৪০০ বছরের বিকৃত ইসলাম দিতে পারবে না। সেটার সন্ধান ইসলামের বড় বড় চিন্তানায়কদের লেখা হাজার হাজার বইয়ের মধ্যেও নেই। –ইসলাম কেন আবেদন হারাচ্ছে, পৃ. ১৫ এখানেই ঘটল বিপত্তি। তানা জানল না তাদের সামনে যে ইসলামটি আছে সেটা আর প্রকৃত রুপে নেই, সেটা বহু আগেই বিকৃত ও বিপরীতমুখী হয়ে গেছে, সেটা দিয়ে আর শান্তি আসবে না। -চলমান সংকট নিরসনে আদর্শিক লড়াই : পৃ. ৬ মানুষ এখন জীবন রক্ষার আশায় ধর্মের দিকেই যেতে চাইবে। কেননা, তাদের বস্তুত শান্তি দরকার। কিন্তু মরীচিকা যেমন তৃষ্ঞার্তকে তৃপ্ত করতে পারে না, আরও ক্লিষ্ট করে, তেমনি ১৩০০ বছর ধরে বহুভাবে বিকৃত হওয়া ইসলাম ও অন্যান্য ধর্মগুলোও মানুষকে কেবল সুখস্বপ্নে বিভোর করে প্রতারিত করে এবং করবে। সেগুলো আর মানুষের ধর্ম নয়, কল্যানের ধর্ম নয়, সেগুলো পুরোহিত, আলেম, পীর, রাজনীনিক স্বার্থান্বেষী, ডানপন্থী, রক্ষণশীল আর উগ্রপন্থী জঙ্গীদের ধর্ম। -চলমান সংকট নিরসনে আদর্শিক লড়াই : পৃ. ৫ তাদের কাছে যে এসলাম আছে সেটা দিয়ে অমন শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠা করার চিন্তাও হাস্যকর। -আসুন সিস্টেমটাকেই পাল্টাই : পৃ. ১৮ আসুন, আমরা সবাই মিলে এই নারকীয় সিস্টেমটাকে পাল্টাই। হেযবুত তওহীদ এর প্রতিষ্ঠাতা এমাম, এমামুযযামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী আল্লাহ-রসুলের হারিয়ে যাওয়া যে প্রকৃত, সত্য জীবনব্যবস্থা মানবজাতির সামনে তুলে ধোরেছেন তা গ্রহণ কোরি। –আসুন সিস্টেমটাকেই পাল্টাই, পৃ. ২০ অর্থাৎ তাদের দাবি হলো, ইসলাম একটি অশান্তির ধর্ম, নারকীয় সিস্টেম। যা থেকে আর শান্তির প্রত্যাশা করা বোকামী। ইসলাম কী বলে? এক. আমি ইতিপূর্বেই আপনাদের সামনে হেযবুুুত তওহীদের বই থেকেই প্রমাণ করেছি যে, এ ইসলাম আজও বিকৃত হয়নি। সুতরাং ইসলাম যেহেতু বিকৃত হয়নি, সেহেতু এ ইসলাম যদি পূর্ণাঙ্গভাবে মানা হয়, তাহলে অবশ্যই শান্তি আসবে। এ কথার অস্বীকার করা কুুুুফরী। মহান আল্লাহ বলেন, يَا أَهْلَ الْكِتَابِ قَدْ جَاءَكُمْ رَسُولُنَا يُبَيِّنُ لَكُمْ كَثِيرًا مِّمَّا كُنتُمْ تُخْفُونَ مِنَ الْكِتَابِ وَيَعْفُو عَن كَثِيرٍ ۚ قَدْ جَاءَكُم مِّنَ اللَّهِ نُورٌ وَكِتَابٌ مُّبِينٌ يَهْدِي بِهِ اللَّهُ مَنِ اتَّبَعَ رِضْوَانَهُ سُبُلَ السَّلَامِ وَيُخْرِجُهُم مِّنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ بِإِذْنِهِ وَيَهْدِيهِمْ إِلَىٰ صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ হে কিতাবীগণ! তোমাদের নিকট আমার (এই) রাসূল এসে পড়েছে, যে (তাওরাত ও ইনজীল) গ্রন্থের এমন বহু কথা তোমাদের কাছে প্রকাশ করে, যা তোমরা গোপন কর এবং অনেক বিষয় এড়িয়ে যায়। আল্লাহর পক্ষ হতে তোমাদের কাছে এক জ্যোতি এবং এমন এক কিতাব এসেছে, যা (সত্যকে) সুস্পষ্ট করে। যার মাধ্যমে আল্লাহ যারা তাঁর সন্তুষ্টি অনুসন্ধান করে, তাদেরকে শান্তির পথ দেখান এবং নিজ ইচ্ছায় তাদেরকে অন্ধকার থেকে বের করে আলোর দিকে নিয়ে আসেন এবং তাদেরকে সরল পথের দিশা দেন। –সুরা মায়িদা : ১৫-১৬ উপরন্তু আল্লাহ তাআলা আরও বলেন, الَّذِينَ آمَنُوا وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ اللَّهِ ۗ أَلَا بِذِكْرِ اللَّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ طُوبَىٰ لَهُمْ وَحُسْنُ مَآبٍ এরা সেই সব লোক, যার ঈমান এনেছে এবং যাদের অন্তর আল্লাহর যিকিরে প্রশান্তি লাভ করে। স্মরণ রেখ, কেবল আল্লাহর যিকিরেই অন্তরে প্রশান্তি লাভ হয়। (মোটকথা) যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে তাদের জন্য রয়েছে মঙ্গলময়তা এবং উৎকৃষ্ট পরিণাম। –সুরা রা'দ : ২৮-২৯ উক্ত আয়াতে দু'টিতে ইসলামের সংবিধান কুরআনকে শান্তির মাধ্যম হিসাবে উল্লেখ্য করা হয়েছে। কিন্তু যারা ইসলামের বিধান মানবে না, তাদের ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন, وَمَنْ أَعْرَضَ عَن ذِكْرِي فَإِنَّ لَهُ مَعِيشَةً ضَنكًا আর যে আমার উপদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবন হবে বড় সংকটময়। –সুরা ত্বহা : ১২৪ অপর আয়াতে মহান রব বলেন, فَمَن يُرِدِ اللَّهُ أَن يَهْدِيَهُ يَشْرَحْ صَدْرَهُ لِلْإِسْلَامِ ۖ وَمَن يُرِدْ أَن يُضِلَّهُ يَجْعَلْ صَدْرَهُ ضَيِّقًا حَرَجًا كَأَنَّمَا يَصَّعَّدُ فِي السَّمَاءِ ۚ كَذَٰلِكَ يَجْعَلُ اللَّهُ الرِّجْسَ عَلَى الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ আল্লাহ যাকে হিদায়াত দানের ইচ্ছা করেন, তার বক্ষ ইসলামের জন্য খুলে দেন; আর যাকে (তার হঠকারিতার কারণে) পথভ্রষ্ট করার ইচ্ছা করেন, তার বক্ষ অতিশয় সংকীর্ণ করে দেন (ফলে ঈমান আনয়ন তার পক্ষে এমন কঠিন হয়ে যায়), যেন তাকে জবরদস্তিমূলকভাবে আকাশে চড়তে হচ্ছে। যারা ঈমান আনে না, আল্লাহ এভাবেই তাদের উপর (কুফরের) কালিমা লেপন করেন। –সুরা আনআম : ১২৫ এ আয়াত দু'টিতে কাফেরদের জন্য অশান্ত জিবনের কথা বলা হয়েছে। আর আগের আয়াত দু'টিতে ইসলাম পালন করলে শান্তি দেওয়ার ওয়াদা করা হয়েছে। সুতরাং ইসলামকে অশান্তি সৃষ্টিকারী বা নারকীয় সিস্টেম বলা নিঃসন্দেহে কুফরী মন্তব্য। দুই. প্রচলিত ইসলাম ধর্ম যে আজও শান্তি দিতে সক্ষম, এ কথা শুধু আমার নয়, বরং খোদ হেযবুত তওহীদেরই দাবি। তারা বিভিন্ন সময় ভিন্নমতাবলম্বীদের দালালি করতে গিয়ে একটি কথা বলে থাকে, আত্মার উন্নতির প্রক্রিয়া পূর্ববর্তি সমস্ত দীনেই ছিল, বিকৃত অবস্থায় আজও আছে এবং ওই পূর্ববর্তী ধর্মগুলোর প্রক্রিয়ায় সাধনা করলে আজও ফল পাওয়া যায়। আজও অন্যান্য ধর্মে অতি শক্তিশালী মহাসাধকরা আছেন যাদের কেরামত অলৌকিক ক্ষমতা মুসলিম অলি-আউলিয়াদের চেয়ে কম নয়। যে কেউ নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় সাধনা করলে তার ফল পাবে, তার আত্মার শক্তি বৃদ্ধি পাবে, অদৃশ্যের গায়েবের অনেক খবর তার কাছে আসবে, সাধারণ মানুষ যা পারে না তেমন কাজ করার ক্ষমতা জন্মাবে এককথায় তাসাউফের বই-কেতাবে যেসব উন্নতির কথা লেখা আছে সবই হবে। –বিকৃত সুফিবাদ, পৃ. ২৫ আল্লাহর নাজেলকৃত ধর্মগ্রন্থগুলো এখনো মানুষের কাছে আছে যেগুলো স্রষ্টার অস্তিত্বের স্বাক্ষর বহন করছে। মানুষ সেগুলো ভক্তির সঙ্গে পড়ছে, জানছে, বিচার-বিশ্লেষণ করছে। সেগুলোর মধ্যে সত্য খুঁজে পাচ্ছে, যা তাদের হৃদয়কে প্রশান্তিতে ভরে তুলছে তাদের আত্মার গভীরে প্রভাব ফেলছে। –আক্রান্ত দেশ আক্রান্ত ইসলাম, পৃ. ১৯ উক্ত বইয়ে তারা সুস্পষ্টভাবে দাবি করলো যে, আল্লাহর নাযিলকৃত ধর্মগ্রন্থ গুলো আজও অনুসরণকারীদের অন্তর শান্তিতে ভরে তুলছে। তারা সব ধর্মকে যদিও এখানে টেনে এনেছেন, কিন্তু অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ বিকৃত হয়েছে বলে তারাই দাবি করে লিখেছে, পূর্ববর্তী কেতাবগুলো ধর্মব্যবসায়ীদের দ্বারা বিকৃত হয়ে গিয়েছিল। –ইসলাম কেন আবেদন হারাচ্ছে, পৃ. ৬ কিন্তু ইসলাম ধর্মের মূলগ্রন্থ কুরআন সম্পর্কে তারা লিখেছে, সেই মহাগ্রন্থ আজও অবিকৃত অবস্থায় আমাদের মধ্যে রোয়েছে। –এ জাতির পায়ে লুটিয়ে পড়বে বিশ্ব : পৃ. ৫৬ সুতরাং আল্লাহর নাযিলকৃত কিতাবসমূহের মধ্যে একমাত্র কুরআনই যেহেতু অবিকৃত রয়েছে। সুতরাং এ কুরআনের অনুসরণকারী মুসলিমদেরকে ইসলাম অবশ্যই শান্তি দিতে পারছে ও পারবে। এটা তাদের দাবিতেই প্রমাণ হলো। এরপরও যদি কেউ অস্বীকার করে তাহলে তাদের সম্পর্কে মহান রবের ঘোষণা, أَفَمَن شَرَحَ اللَّهُ صَدْرَهُ لِلْإِسْلَامِ فَهُوَ عَلَىٰ نُورٍ مِّن رَّبِّهِ ۚ فَوَيْلٌ لِّلْقَاسِيَةِ قُلُوبُهُم مِّن ذِكْرِ اللَّهِ ۚ أُولَٰئِكَ فِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ আল্লাহ ইসলামের জন্য যার বক্ষ খুলে দিয়েছেন, ফলে সে তার প্রতিপালকের দেওয়া আলোতে এসে গেছে (সে কি কঠোর হৃদয় ব্যক্তিদের সমতুল্য হতে পারে?) সুতরাং ধ্বংস সেই কঠোরপ্রাণদের জন্য, যারা আল্লাহর যিকির থেকে বিমুখ। তারা সুস্পষ্ট বিভ্রান্তিতে নিপতিত। –সুরা যুমার : ২২ কিন্তু জানার বিষয় হলো, 'সকল বিকৃত ধর্মগ্রন্থ শান্তি দিতে পারছে' বলে যারা দাবি করে, সেই তারাই অবিকৃত গ্রন্থ কুরআনের ধর্ম ইসলাম শান্তি দিতে পারছে না এবং পারবে না বলে দাবি করছে। কারণটা কী? আশা করি সুস্থমস্তিকের কারও বুঝতে বাকি থাকার কথা নয়।
মন্তব্য (...)
এ সম্পর্কিত আরও প্রবন্ধ
কুরআনের চেয়ে মুমিন দামী! হেযবুত তওহীদ। পর্ব–১৬
পবিত্র কুরআন সরাসরি আল্লাহপাকের কালাম। পৃথিবীর সব কিছু মাখলুক হলেও আল্লাহ-র কালাম মাখলুক নয়। সুতরাং ...
মুফতী রিজওয়ান রফিকী
৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
১০০২
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন