প্রবন্ধ
সাহাবারা মুর্খ ছিলেন! হেযবুত তওহীদ। পর্ব–৪৮
সাহাবায়ে কেরাম রা. ছিলেন ইসলামী ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষিত। যাঁরা সরাসরি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-থেকে শিক্ষা লাভ করেছিলেন। যাঁদের শিক্ষার মূল সাবজেক্ট ছিলো ‘উলুমে ইলাহী’। যে শিক্ষায় না কোনও মিথ্যা ছিলো, না কোনও সংশয়।
হেযবুত তওহীদ কী বলে?
তাদের চরম ধৃষ্টতা হলো, ‘সাহাবায়ে কেরাম রা.-কে মূর্খ প্রমাণ করার ব্যার্থ প্রচেষ্টা। তারা সাহাবাদের রা. শানে লিখেছে,
মহানবীর লেখাপড়া না জানা প্রায় নিরক্ষর একটি জাতীয় তো দুনিয়া দখল করে আল্লাহ রাসুলের শ্রেষ্ঠত্ব কায়েম করল। –বিকৃত সুফিবাদ, পৃ. ৩১
ঐ পাঁচ লাখের জাতির (সাহাবীদের) মধ্যে মাত্র ৪০ জন লোক লেখাপড়া জানতেন। – ইসলামের প্রকৃত রূপরেখা, পৃ. ১৩
উক্ত বক্তব্য দিয়ে তারা জাতিকে সাহাবায়ে কেরাম রা.-এন সম্পর্কে একটা নেতিবাচক ধারণা দিতে চেয়েছে যে, তারা অশিক্ষিত ছিলেন।
ইসলাম কী বলে?
এক. আজ আমরা যাঁরা নিজেদের শিক্ষিত বলে প্রোমোট করছি, তারা এসকল শিক্ষা লাভ করেছি সাহাবায়ে কেরাম রা.-এর মাধ্যমে। তাঁরা যদি এ দীন না পৌঁছে দিতেন, তবে আমরা আজ অশিক্ষার রোষানলে গড়াগড়ি খেতাম।
দুই. সাহাবায়ে কেরাম রা. সর্বশ্রেষ্ট শিক্ষিত ছিলেন। তাদের শিক্ষার পরিধি নিয়ে আমাদের নতুন করে আলোচনার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। তাছাড়া আল্লাহ তাআলা সাহাবাদের রা. ওপর এমনভাবে রহম করেছেন যে, খোদ হেযবুত তওহীদের জবান থেকেই সাহাবাদের শিক্ষা ও যোগ্যতার প্রমাণ বের করে ছেড়েছেন। নিন্মে দেখুন, তারা লিখেছে,
প্রকৃত ইসলাম কি তা ঐ আসহাবদের চেয়ে বেশি কেউ জানতে বুঝতে পারতে পারে না, তা অসম্ভব। কারণ তারা আল্লাহর রসূলের সঙ্গে সর্বদা থেকে তার সঙ্গে অবিরত সংগ্রাম করে তার প্রতি সুখ-দুঃখের অংশীদার হয়ে যে প্রকৃত শিক্ষা তার কাছ থেকে লাভ করেছেন, সে শিক্ষা পরবর্তীতে কারো পক্ষে সম্ভব নয়। –শ্রেণীহীন সমাজ সাম্যবাদ প্রকৃত ইসলাম পৃ. ১১৭-১১৮
এ ব্যাপারে অগুনতি হাদিস উল্লেখ করা যায় যাতে সংশয়ের কোন অবকাশ থাকে না যে মহানবী জানতেন যে তিনি তার আসহাবদের প্রকৃত দীন শিক্ষা দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। –শ্রেণীহীন সমাজ সাম্যবাদ প্রকৃত ইসলাম, পৃ. ১১৮
সেই আসহাব যারা আল্লাহর রাসূলের পদতলে বসে ইসলাম কী, এর উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য কী, এর সামরিক নীতি কী– এসব শিক্ষা করেছিলেন তারাই ঠিক, নাকি কয়েকশ’ বছর পর যখন ইসলাম বিকৃত, বিপরীত হয়ে পরিণামে শত্রুর গোলামে পরিণত, তখনকার মানুষের অভিমত ঠিক? –শ্রেণীহীন সমাজ সাম্যবাদ প্রকৃত ইসলাম, পৃ. ১২৮
সাহাবীদের পবিত্র জীবনী পড়েই আজকে বহু মানুষ আল্লামা, মুফতি, মুফাসসির, মুহাদ্দিস, শায়েখ, বুজুর্গানে দীন হচ্ছেন, নামের আগে রেলগাড়ির মতো দীর্ঘ টাইটেল ব্যবহার করছেন কিন্তু সেই সাহাবীরা কেউই নামের আগে আলেম, আল্লামা, মাওলানা, মুফতি জাতীয় খেতাব ব্যবহার করেন নি। যে ব্যক্তি নিজেই নিজেকে ‘আলেম বা জ্ঞানী' বলে পরিচয় দেয় তার চেয়ে মূর্খ, অজ্ঞ, নির্বোধ বোধহয় আর কেউ হতে পারে না। –ধর্মব্যবসার ফাঁদে, পৃ. ১৬৯ (পিডিএফ)
প্রিয় পাঠক, সাহাবাদের রা. যোগ্যতা কেমন ছিলো, তা খোদ হেযবুত তওহীদের বক্তব্য থেকেই প্রমাণিত হলো। সুতরাং অভিযোগের জবাব যেহেতু তাদের বই থেকেই প্রমাণিত হলো, সেহেতু নতুন করে আমার আর কোনও প্রমাণ পেশ করতে হবে বলে প্রয়োজন মনে করলাম না। সুতরাং বোঝা গেলো, ‘মাত্র ৪০ জন্য সাহাবা রা. শিক্ষিত ছিলেন, আর সবাই মুর্খ ছিলেন’ বিষয়টি নিতান্তই হেযবুত তওহীদের মূর্খতাসূলভ দাবী। মিথ্যুকদের ওপর আল্লাহর লা’নত।নউপরন্তু যাঁদের বর্ণিত হাদিস ও যাঁদের বর্ণিত আমল পড়ে আমরা আলেম হই, এমনকি হেযবুত তওহীদও দুকলম লিখতে পারে যাঁদের অবদানে, সেই সাহাবাদেরকে অশিক্ষিত প্রমাণ করার হীন প্রচেষ্টা নিতান্তই হাস্যকর ব্যাপার।
মন্তব্য (...)
এ সম্পর্কিত আরও প্রবন্ধ
کمیونزم نہیں، اسلام
نام نہاد کمیونزم میں جس قدر مسکین نوازی ہے اس سے کہیں زیادہ امام ولی اللہ رحمہ اللہ تعالٰی کے فلسفے ...
খৃষ্টধর্ম না পৌলবাদ (৫ম পর্ব)
শূলবি দ্ধ হওয়ার বিশ্বাস হযরত ঈসা (আ)-এর সম্পর্কে খ্রিষ্টধর্মের বিশ্বাস হল, ইহুদীরা তাঁকে পন্থীয় পী...
সত্য ইমাম মাহদী ও ভণ্ড ইমাম মাহদী [১ম পর্ব]
...
বেরলভী মতবাদ : ভিত্তিহীন আকীদা ও ভ্রান্ত ধ্যানধারণা
বেরলভী [1] জামাত যাদেরকে রেজাখানী বা রেজভীও বলা হয় , যারা নিজেদেরকে সুন্নী বা আহলে সুন্নাত বলে পরিচ...
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন