প্রবন্ধ
সিজদায়ে তিলাওয়াতের জন্য উযু লাগবে না! মওদুদী মতবাদ। পর্ব–৩
‘সিজদা’। মহান আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার সবচেয়ে বড় গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। নিজেকে পবিত্র দরবারে, মহান মনিবের সান্নিধ্যে, বিনয়ের চূড়ান্তরূপে সপে দেওয়ার নাম ‘সিজদা’। এই সিজদাগুলো পবিত্র অবস্থায় হওয়াটাই যুক্তিযুক্ত।
মওদুদী ইসলাম কী বলে?
জামায়াতে ইসলামী-এর প্রতিষ্ঠাতা জনাব মওদুদী তাফসীরের নামে একটি মনগড়া ও জালিয়াতি বই লিপিবদ্ধ করেছে। যার নাম ‘তাফহীমুল কুরআন’।
سجدہ کے لئے جمہور انہیں شرائط کے قائل ہیں جو نماز کی شرطیں ہیں، یعنی با وضو ہونا ،قبلہ رخ ہونا اور نماز کی طرح سجدہ میں زمین پر سر رکھنا لیکن جتنی بھی احادیث سجدہ تلاوت کے باب میں ہم کو ملی ہیں ان میں کہیں ان شرطوں کے لئے کوئی دلیل موجود نہیں ہے ان سے تو یہی معلوم ہوتا ہے کہ آیت سجدہ سن کر جو شخص جس حال میں بھی ہو جھک جائے خواہ باوضو ہو یا نہ، خواہ زمین پر سر رکھنے کا موقع ہو یا نہ ہو
(তিলাওয়াতের) সিজদার ব্যাপারে অধিকাংশের মত হলো, সিজদার শর্তগুলো নামাযের শর্তগুলোর মতোই, যেমন উযু অবস্থায় হওয়া, কিবলার দিকে মুখ করা এবং নামাযের মতো সিজদায় মাথা মাটিতে রাখা। তবে, তেলাওয়াতের জন্য সিজদা সম্পর্কে আমরা যত হাদিস পেয়েছি, তাতে এই শর্তগুলোর কোন প্রমাণ নেই। এ থেকে এটাই বুঝা যায়–সিজদার আয়াত শোনার পর যে অবস্থায়ই থাকুক না কেন, সে উযু করুক বা না করুক, মাটিতে মাথা রাখার সুযোগ পাক বা না পাক, সে যে অবস্থায়ই থাকুক না কেন, সে সিজদা করবে। –তাফহীমুল কুরআন, খ. ২ পৃ. ১১৬
ইসলাম কী বলে?
তিলাওয়াতের সিজদায় উযু থাকা বাধ্যতামূলক। হযরত নাফে রহি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা. বলেছেন,
لایسجد الرجل إلا و هو طاهر
পবিত্র ব্যক্তি ছাড়া কেউ সিজদা করবে না। –সুনানে কবরা, বাইহাকী, বর্ণনা নং : ৩৭৭৫
বিশিষ্ট তাবেয়ী ইমাম যুহরী রহি. বলেন,
لا يسجد الا علي الا ان يكون طاهرا
পবিত্র ব্যক্তি ব্যতীত সিজদা করা উচিত নয়। –তাফসীরে কুরতুবী, খ. ৪ পৃ. ২২৮
এছাড়াও হায়েয ও নেফাস অবস্থায় মহিলারা কারও থেকে সিজদার আয়াত শুনলে তাদের উপর সিজদা ওয়াজিব হয় না। কারণ, তারা এ অবস্থায় পবিত্র থাকে না। বিশিষ্ট তাবেয়ী ইমাম ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন—
فِي الْحَائِضِ تَسْمَعُ السّجْدَةَ، قَالَ: لاَ تَسْجُدُ، هِيَ تَدَعُ مَا هُوَ أَعْظَمُ مِنَ السّجْدَةِ، الصّلاَة الْمَكْتُوبَةَ.
হায়েয অবস্থায় সিজদার আয়াত শুনলে সিজদা করবে না। তার তো এর চেয়ে বড় বিধান ফরয নামাযই পড়তে হয় না। –মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা নং : ৪৩৪৭
সুতরাং বোঝা গেলো, পবিত্রতা ছাড়া সিজদা করা যাবে না। যদিও মওদুদীর কাছে এসব বর্ণনা পালনীয় নয়। কারণ, মে নিজেই তো দীন মানতো না।
হানাফী মাযহাবের ফাতাওয়া
বর্তমানের জামায়াতে ইসলামীর কর্মী বা সমর্থকরা নিজেদেরকে ‘হানাফী মাযহাব’ এর মুকাল্লিদ বলে পরিচয় দিয়ে থাকে। অথচ তারা জানেই না যে, হানাফী মাযহাবে ‘তিলাওয়াতের সিজদায়’ পবিত্র হওয়া জরুরী বলে ফাতাওয়া দেয়া হয়েছে। ইমাম আলাউদ্দীন আবু বকর ইবনে মাসউদ আল-কাসানী হানাফী রহি. হানাফী মাযহাবের মতামত তুলে ধরে লিখেছেন,
وأما شرائط الجواز فكل ما هو شرط جواز الصلاة من طهارة الحدث وهي الوضوء والغسل، وطهارة النجس وهي طهارة البدن والثوب، ومكان السجود والقيام والقعود فهو شرط جواز السجدة؛ لأنها جزء من أجزاء الصلاة فكانت معتبرة بسجدات الصلاة
(তিলাওয়াতের সিজদা) জায়েয হওয়ার শর্তাবলী সম্পর্কে বলতে গেলে, নামাজের জায়েয হওয়ার জন্য যা যা শর্ত সেগুলোই। যেমন, উযু ও গোসলের মাধ্যমে অপবিত্রতা থেকে পবিত্রতা অর্জন করা। এবং শরীর, পোশাক এবং সিজদার স্থান, দাঁড়ানোর স্খান এবং বসার স্থানের অপবিত্রতা থেকে পবিত্রতা। সিজদার বৈধতার জন্য এগুলো শর্ত। কারণ এই সিজদাও নামাজের অংশগুলোর একটি অংশ, তাই এটি নামাজের সিজদার সাথে বিবেচনা করা হয়। –বাদায়েউস সানায়ে, খ. ১ পৃ. ১৮৭
কারণ, হাদীসে এসেছে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
لَا يَقْبَلُ اللَّهُ صَلَاةً إِلَّا بِطُهُورٍ
পবিত্রতা ছাড়া আল্লাহ তাআলা নামাজ গ্রহণ করেন না। –সুনানে ইবনে মাজাহ : ২৭১
তাছাড়া ফিকহে হানাফীর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী’-তে এসেছে,
وشرائط هذه السجدة شرائط الصلاة إلا التحريمة
এই সিজদার শর্তগুলো নামাজের শর্তের মতোই, শুধু তাকবীরে তাহরীমা ছাড়া। –ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী, খ. ১ পৃ. ১৪৯
আরও দেখুন : তাফসীরে কুরতুবী, খ. ৭ পৃ. ৩৫৮, সহীহ বুখারী, খ. ১ পৃ.২৫; বাদায়েউস সানায়ে, খ. ১ পৃ. ১৮৬; আল-মুহীতুল বুরহানী, খ. ২ পৃ. ৩৬৩; আল-বাহরুর রায়েক, খ. ২ পৃ. ১১৮।
সুতরাং বোঝা গেলো, মওদুদীপন্থীরা না সাহাবা মানে, না মাযহাব মানে, না দীন মানে।
মন্তব্য (...)
এ সম্পর্কিত আরও প্রবন্ধ
قضية الخلق وسقوط نظرية دارون
...
প্রসঙ্গ মুয়াবিয়া রাজিআল্লাহু আনহুঃ সাহাবায়ে কেরাম সম্পর্কিত ইতিহাস পাঠের মূলনীতি
...
কুরআন-হাদীসের ভুল বা অপব্যাখ্যার ব্যাপারে শরী‘আতের নির্দেশ
হিদায়াত কাকে বলে ? আল্লাহ তা ‘ আলা দুনিয়াতে দুটি রাস্তা চালু করেছেন , একটি হিদায়াত এবং জান্নাতের রাস...
খৃষ্টধর্ম না পৌলবাদ (৩য় পর্ব)
মানুষ যাতে তাঁকে নিয়ে বাড়াবাড়ির স্বীকার না হয় সেজন্য তিনি নিজেও নিজের প্রকৃত অবস্থা স্পষ্ট করে দ...
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন