প্রবন্ধ
পন্নীর চেয়ে মুহাম্মাদ সা. এর এরিয়া কম? হেযবুত তওহীদ। পর্ব–২৭
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে মহান আল্লাহ প্রেরণ করেছেন সমস্ত বিশ্বসমূহের জন্য রহমত করে। আর তাঁর আনীত দীন একদিন পুরো বিশ্বের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে বলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসেই বলে দিয়েছেন।
হেযবুত তওহীদ কী বলে?
কুফরী সংগঠণ হেযবুত তওহীদের প্রতিষ্ঠাতা বায়াজীদ খান পন্নী দাবী করে বসলো এক ভয়ঙ্কর কথা। দেখুন সে কী বলে,
নবী প্রেরিত হোয়েছেন সমস্ত দুনিয়ার জন্য। কিন্তু ভবিষ্যৎবাণী যখন করলেন তখন তিনি দুনিয়া বোললেন না যে তোমাদের দিয়ে সারা দুনিয়া বিজয় হবে, বললেন তোমাদের দিয়ে এই দুইটি সাম্রাজ্য বিজয় হবে। সীমিত কোরে দিলেন। বাস্তবেও তাই হোল। আর সেদিন (০২/০২/০৮) আল্লাহ নিজে যে মোজেজা কোরলেন, সেদিন আমাকে দিয়ে বলালেন 'দুনিয়া', এবং 'তোমাদের দিয়ে' না বলিয়ে বলালেন হেযবুত তওহীদ দিয়ে। পার্থক্যটা বুঝে নিও। রসূল বোললেন, 'তোমাদের দিয়ে' আর 'পুরো পৃথিবী' বোললেন না, সীমিত রাখলেন, আর আল্লাহ আমাকে দিয়ে 'তোমাদেরকে দিয়ে বলালেন না', বলালেন হেযবুত তাদওহীদ দিয়ে', কিন্তু কোন সীমানা রাখলেন না বোললেন 'সারা পৃথিবী'। –আল্লাহর মোজেজা হেযবুত তওহীদের বিজয় ঘোষণা, পৃ. ৫৮
সারা দুনিয়ায় সত্যদীন প্রতিষ্ঠা হওয়ার পূর্বশর্তই হচ্ছে দাজ্জালের ধ্বংস। যেহেতু মোজেজা সংগঠন করে আল্লাহ জানিয়ে দিলেন যে হেযবুত তওহীদ কে আল্লাহ সারা দুনিয়ায় সত্যদীন প্রতিষ্ঠার জন্য মনোনীত করেছেন। সুতরাং হেজবুত তাওহীদের মাধ্যমেই যে দাজ্জাল অর্থাৎ ইহুদী-খ্রিস্টান 'সভ্যতা'র পতন হবে সেটাও সুস্পষ্ট হয়ে যায়। –মহাসত্যের আহ্বান, পৃ. ২৪
অচিরেই আল্লাহর সত্যদীন এই হেযবুত তওহীদের মাধ্যমে সমগ্র পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত হবে এনশা'আল্লাহ। সুতরাং আজ যে অশান্তিময় পরিবেশে আমরা বসবাস কোরছি তার সমাপ্তি ঘোটতে যাচ্ছে। এবার আল্লাহর রসুলের প্রকৃত উম্মতে মোহাম্মদী আবার জেগে উঠবে, এই জাতির কালঘুম টুটবে। মানবজাতির সামনে আবার নতুন কোরে উদ্ভাসিত হবে নবসভ্যতার সূর্য। আল্লাহর রসুলের নাম ‘রহমাতাল্লেল আলামীন' বাস্তবে স্বার্থকতা লাভ কোরবে। –শোষণের হাতিয়ার, পৃ. ৬১
অর্থাৎ পন্নীর দাবী হলো, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর এরিয়া সীমিত আর হেযবুত তওহীদের এরিয়া পুরো পৃথিবীময় এবং পৃথিবীর সর্বত্র ইসলাম বিজয় হবে হেযবুত তওহীদের মাধ্যমেই। নাউযুবিল্লাহ। কতবড় স্পর্ধা! ভাবা যায়?
ইসলাম কী বলে?
উদ্ভট এক মিথ্যা মু'জিজা সাজিয়ে খোদ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চেয়ে বড় দায়িত্ব প্রাপ্তীর দাবী কী কোনো মুসলমানের সন্তান করতে পারে? অথচ পন্নী দাবী করেছে, রাসুলুল্লাহ সা. নাকি পুরো বিশ্বে তাঁর দ্বীন পৌঁছাবে এমন কোনো কথা বলে যাননি। কতবড় মূর্খতা! কতবড় ধৃষ্টতা! অথচ রাসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
لَا يَبْقَى عَلَى ظَهْرِ الْأَرْضِ بَيْتُ مَدَرٍ وَلَا وَبَرٍ إِلَّا أَدْخَلَهُ اللَّهُ كلمة الاسلام بعز عَزِيز أَو ذل ذليل إِمَّا يعزهم الله عز وَجل فَيَجْعَلُهُمْ مِنْ أَهْلِهَا أَوْ يُذِلُّهُمْ فَيَدِينُونَ لَهَا
এ জমিনের উপর এমন কোনও মাটির অথবা পশমের ঘর (তাঁবু) বাকী থাকবে না, যে ঘরে আল্লাহ রব্বুল আলামীন ইসলামের বাণী পৌঁছে দেবেন না। সম্মানীর ঘরে সম্মানের সাথে, আর লাঞ্ছিতের ঘরে লাঞ্ছনার সাথে তা পৌঁছাবেন। আল্লাহ তাআলা যাদেরকে সম্মানিত করবেন, তাদেরকে স্বেচ্ছায় ইসলাম কবূলের উপযুক্ত করে মর্যাদাবান ও গৌরবময় করে দিবেন। পক্ষান্তরে যারা ইসলাম গ্রহণ করবে না, তাদের আল্লাহ তাআলা লাঞ্ছিত করবেন এবং তারা এ কালিমার প্রতি অনুগত হবার জন্য বাধ্য হবে। আমি (মিক্বদাদ) বললাম, তখন তো সমগ্র বিশ্বে আল্লাহরই দীন (প্রতিষ্ঠিত) হয়ে যাবে। (অর্থাৎ- সকল দীনের উপরই ইসলাম বিজয়ী হবে)। –মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং : ২৩৮১৪
উক্ত হাদিস থেকে জানা গেলো, রাসুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আনীত ইসলামকে মহান রব্ব সারা দুনিয়ার প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবেন। কিন্তু পন্নী দাবি করলো, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নাকি পুরো দুনিয়ার কথা না বলে সীমিত করে বলেছিলেন। নিজের দলকে প্রোমোট করতে খোদ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর এতবড় ডাহা মিথ্যাচার কল্পনা করা যায়? এমন মিথ্যাবাদীদের মাধ্যমে সত্যের মূর্তপ্রতিক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপাধী 'রহমাতুল্লিল আলামিন' পূর্ণতা পাবে এমন দাবী নিতান্তই হাস্যকর।
মন্তব্য (...)
এ সম্পর্কিত আরও প্রবন্ধ
সত্য ইমাম মাহদী ও ভণ্ড ইমাম মাহদী [শেষ পর্ব]
...
খৃষ্টধর্ম না পৌলবাদ (৪র্থ পর্ব)
পাপমোচন The Atonement পাপমোচনের বিশ্বাসটি খৃস্টধর্মে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। মিস্টার ডেনিয়েল উইলসনের মতে...
খৃষ্টধর্ম না পৌলবাদ (২য় পর্ব)
আরবদেশে কেন গিয়েছিলেন দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিল, তিনি দক্ষিণ দামেস্কে আরব এলাকায় কেন গিয়েছিলেন? ইতিপূর্...
تحریک استشراق کی حقیقت اور استشراقی لٹریچر کے اثرات
تعارف: استشراق( Orientalism ) اور مستشرق کا لغوی و اصطلاحی معنی استشراق عربی زبان کے مادہ( ش۔ر۔ق) سے...
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন