প্রথম রাকাতে সূরা নাস পড়ে ফেললে করণীয়
প্রশ্নঃ ৬৬৬২৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, চার রাকাত সুন্নাত নামাযে আমি যদি ভুলবশত প্রথম রাকাতে সূরা নাস পড়ে ফেলি তাহলে করণীয় কি
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
নামাযের মধ্যে কেরাতের তারতীব রক্ষা করতে হবে। অর্থাৎ প্রথম রাকাতে যেই সূরা পড়া হবে, পরের রাকাতে পরবর্তী কোনো সূরা পড়তে হবে। প্রথম রাকাতে পঠিত সূরার আগের কোনো সূরা পড়া যাবে না। যদি কেউ ফরয নামাযে ইচ্ছে করে তারতীবের খেলাফ কেরাত পাঠ করে, তাহলে তা মাকরুহ হবে। আর অনিচছায় পড়লে কোনো গুনাহ হবে না। সুতরাং কেউ ভুলে প্রথম রাকাতে সূরা নাস পড়ে ফেললে পরের রাকাতে সূরা নাসই পুনরায় পড়তে হবে। যদিও একই সূরা পরপর দুই রাকাতে পড়া অনুত্তম কাজ, কিন্তু বাধ্য হওয়ার কারণে এই কাজই করতে হবে। এতে করে সিজদায় সাহু ওয়াজিব হবে না। তবে যদি ধারাবাহিকভাবে নামাযে কুরআন খতম করে, তাহলে প্রথম রাকাতে সুরা নাস পড়ে খতম করলে পরের রাকাতে সূরা বাকারা থেকে কিছু অংশ তেলাওয়াত করতে হবে। এমনটা খতমে তারাবীহতে করা হয়ে থাকে।
নিচে এই মাসআলার দলীল উল্লেখ করা হলো,
الجوهرة النيرة على مختصر القدوري (1/ 58):
"وإذا قرأ في الأولى ﴿قل أعوذ برب الناس﴾ يقرأ في الثانية ﴿قل أعوذ برب الناس﴾ أيضاً".
في رد المحتار على الدر المختار
ھذا إذا لم یضطر بأن قرأ في الأولی ﴿قل أعوز برب الناس﴾ أعادھا في الثانیة إن لم یختم، نھر۔ لأن التکرار أھون من القراء ة منکوساً۔ بزازیة۔ وأما لو ختم القرآن في رکعة فیأتي قریباً أنہ یقرأ من البقرة
الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (1/ 457):
"وكذا كل صلاة أديت مع كراهة التحريم تجب إعادتها.
قالوا: يجب الترتيب في سور القرآن، فلو قرأ منكوساً أثم، لكن لا يلزمه سجود السهو؛ لأن ذلك من واجبات القراءة لا من واجبات الصلاة، كما ذكره في البحر في باب السهو".
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
খতীব, বাইতুল মামুর জামে মসজিদ, মিরাশপাড়া গাজীপুর
রেফারেন্স উত্তর :
প্রশ্নঃ ২৫৩৮৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, নামাজের মধ্যে ঈমাম যদি প্রথম রাকাতে সূরা নাস পড়ে ফেলেন,এর পরের রাকাতে সূরা কাওছার পড়ে সহীহ সেজদা না দেন নামাজ হবে কিনা?আর যদি হয় তা কিভাবে হবে বিস্তারিত জানতে চাই।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
নামাযে সুরার তারতীব ঠিক রাখার ব্যাপারে একটি বিস্তারিত প্রশ্নোত্তর যুক্ত করে দেওয়া হলো। আশা করি এ সংক্রান্ত আপনার সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
নামাযের রাকাতসমূহে সূরা পড়ার ক্ষেত্রে মৌলিক কয়েকটি কথা স্বরণ রাখলে আপনার কাছে পুরো বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যাবে। যেমন-
১
সূরা মিলানোর সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন কমপক্ষে তিন আয়াত পরিমাণ তিলাওয়াত করা হয়। তিন আয়াতের সীমা হল, কমপক্ষে ত্রিশ হরফ হতে হবে।
(تنبيه) لم ار من قدر ادنى ما يكفى بحد مقدر من الآية الطويلة…….. وَقَدْرُهَا مِنْ حَيْثُ الْكَلِمَاتُ عَشْرٌ، وَمِنْ حَيْثُ الْحُرُوفُ ثَلَاثُونَ، فَلَوْ قَرَأَ – {اللَّهُ لا إِلَهَ إِلا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلا نَوْمٌ} [البقرة: 255]- يَبْلُغُ مِقْدَارَ هَذِهِ الْآيَاتِ الثَّلَاثِ، فَعَلَى مَا قُلْنَاهُ لَوْ اقْتَصَرَ عَلَى هَذَا الْقَدْرِ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ كَفَى عَنْ الْوَاجِبِ، وَلَمْ أَرَ مَنْ تَعَرَّضَ لِشَيْءٍ مِنْ ذَلِكَ فَلْيُتَأَمَّلْ. (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب صفة الصلاة، فصل فى القراءة قبيل مطلب فى الفرق بين فرض العين وفرض الكفاية-)
২
এক সূরা পড়ার পর মাঝখানে এক সূরা বাদ দিয়ে পরের সূরা পড়া মাকরূহ্ তবে দুই সূরা বাদ দিয়ে পড়াতে কোন সমস্যা নেই।
যেমন, প্রথম রাকাতে সূরা ফীল পড়ার পর, দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কুরাইশ বাদ দিয়ে সূরা মা’ঊন পড়া মাকরূহ। কিন্তু সূরা কাউসার বা কাফিরূন বা এর পরের সূরাগুলো পড়াতে কোন সমস্যা নেই।
তবে ভুলে এমন হলে সমস্যা নেই।
ويكره فصله بسورة بين سورتين قرأهما فى ركعتين لما فيه من شبهة التفضيل والهجر، (مراقى الفلاح على هامش الطحطاوى، فصل فى المكروهات-287، الدر المختار مع الشامى- 2/269)
৩
প্রথম রাকাতে যে সূরা পড়বে, পরের রাকাতে তার পরবর্তী সূরা পড়বে। কিন্তু প্রথম রাকাতে এক সূরা পড়ে, পরের রাকাতে উক্ত সূরা আগের কোন সূরা পড়া মাকরূহ। তাই প্রথম সূরা শুরু করবে, যেন উক্ত সূরার পর পরের রাকাতে পড়ার মত কোন সূরা থাকে।
যেমন প্রথম রাকাতে সূরা সূরা ফীল পড়া আর দ্বিতীয় রাকাতে সূরা হুমাজাহ পড়া মাকরূহ। কারণ এতে কুরআনের তারতীব পাল্টে দেয়া হচ্ছে।
তবে যদি ভুলে এমনটি করে তাহলে সমস্যা নেই।
কখনো ভুলে যদি সূরা নাস পড়ে ফেলে। তাহলে পরবর্তী সকল রাকাতে সূরা নাসই পড়বে। পূর্বের অন্য কোন সূরা পড়বে না। ভুলে অন্য সূরা পড়লে কোন সমস্যা নেই।
وَيُكْرَهُ الْفَصْلُ بِسُورَةٍ قَصِيرَةٍ وَأَنْ يَقْرَأَ مَنْكُوسًا إلَّا إذَا خَتَمَ فَيَقْرَأُ مِنْ الْبَقَرَةِ. وَفِي الْقُنْيَةِ قَرَأَ فِي الْأُولَى الْكَافِرُونَ وَفِي الثَّانِيَةِ – أَلَمْ تَرَ – أَوْ – تَبَّتْ – ثُمَّ ذَكَرَ يُتِمُّ وَقِيلَ يَقْطَعُ وَيَبْدَأُ،
وقال ابن عابدين الشامى رح: (قَوْلُهُ ثُمَّ ذَكَرَ يُتِمُّ) أَفَادَ أَنَّ التَّنْكِيسَ أَوْ الْفَصْلَ بِالْقَصِيرَةِ إنَّمَا يُكْرَهُ إذَا كَانَ عَنْ قَصْدٍ، فَلَوْ سَهْوًا فَلَا كَمَا فِي شَرْحِ الْمُنْيَةِ. (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب صفة الصلاة، فروع يجب الاستماع القراءت مطلقا-2/269)
قَرَأَ فِي الْأُولَى – {قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ} [الناس: 1]- أَعَادَهَا فِي الثَّانِيَةِ إنْ لَمْ يَخْتِمْ نَهْرٌ لِأَنَّ التَّكْرَارَ أَهْوَنُ مِنْ الْقِرَاءَةِ مَنْكُوسًا بَزَّازِيَّةٌ، (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب صفة الصلاة-2/268)
৪
বড় সূরা মাঝখান থেকে কিছু অংশ পড়া, আর পরের রাকাতে আরেক সূরার মাঝখান থেকে পড়া অনুত্তম। বরং তারতীব ঠিক রেখে পড়তে হবে।
এক্ষেত্রে ভুলক্রমে তারতীব উল্টাপাল্টা হয়ে গেলে সমস্যা নেই। তবে ইচ্ছেকৃত এমন করা যাবে না।
لَوْ قَرَأَ فِي الْأُولَى مِنْ وَسَطِ سُورَةٍ أَوْ مِنْ سُورَةٍ أَوَّلَهَا ثُمَّ قَرَأَ فِي الثَّانِيَةِ مِنْ وَسَطِ سُورَةِ أُخْرَى أَوْ مِنْ أَوَّلِهَا أَوْ سُورَةً قَصِيرَةً الْأَصَحُّ أَنَّهُ لَا يُكْرَهُ، لَكِنْ الْأَوْلَى أَنْ لَا يَفْعَلَ مِنْ غَيْرِ ضَرُورَةٍ (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب صفة الصلاة، فروع يجب الاستماع للقراءت مطلقا-2/268-269)
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মদিনা মুনাওয়ারা ৷
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন