অজুর সময় কি মাথার খোঁপা খোলা জরুরী?
প্রশ্নঃ ২৮৬৪৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, মহিলাদের লম্বা চুল খুলে ওজু করা কি জরুরি? কেউ না জেনে থাকলে চুল বেধে ওজু করে যত নামাজ পড়েছে তা কি হবে না? একটা লেখা কপি করে দিই যাচাই করে জানাবেন "মহিলারা অনেক সময় মাথার চুল একত্রিত করে পুরো মাথায় বা মাথার মাঝখানে কিংবা এক পার্শ্বে খোঁপা, ঝুটি কিংবা গুচ্ছ বাঁধেন। পরপুরুষের দৃষ্টি আকর্ষণ অথবা বিজাতীয় নারীদের অনুকরণের উদ্দেশ্য না হলে এমনটি করতে অসুবিধা নেই। তবে এখানে একটি প্রশ্ন হয় যে, অযুর সময় কোনো মহিলা যদি উক্ত খোঁপা বা ঝুটি না খুলে তার উপর মাসাহ করেন তাহলে তার অযু শুদ্ধ হবে কি? এর সমাধান হলো, অযুতে মাথার কমপক্ষে এক চতুর্থাংশ মাসাহ করা ফরয। আর মাসাহর সম্পর্ক মূলত মাথার সাথে, চুলের সাথে নয়। তাই চুলের ওই অংশের উপর মাসাহ করা জরুরি, যা মাথার সীমানার মধ্যে রয়েছে। খোঁপা বা ঝুটির চুল যদি এত লম্বা হয় যে, তা খুলে দিলে চুল ঘাড় বা তারও নিচে চলে যায় তাহলে শুধু উক্ত খোঁপা বা ঝুটির উপর মাসাহ করা যথেষ্ট হবে না। বরং তা খুলে মাথার উপরে থাকা চুলের উপর মাসাহ করতে হবে। আর যদি ঝুটির চুল সর্বোচ্চ কান পর্যন্ত প্রলম্বিত হয়, তার নিচে না যায় তাহলে তা না খুলেই তার উপর মাসাহ করা সহীহ হবে। [মারাকিল ফালাহ পৃ. ৬০; কিতাবুল ফাতাওয়া ২/৪৫]
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
সম্মানিত প্রশ্নকারী!
আপনার কপি করা মাসয়ালাটি সঠিক। হাশিয়াতুত তাহতাভী গন্থে আছে فلا يصح مسح أعلى الذوائب المشدودة على الرأس: (المشدودة على الرأس أي التي أديرت ملفوفة على الرأس بحيث لو أرخاها لكانت مسترسلة أما لو كان تحته رأس، فلا شك في الجواز. قوله
যার মর্মার্থ হলো, সুতরাং মাথার ওপর বাঁধা খোঁপায় মাসাহ করা শুদ্ধ হবে না। অর্থাৎ যেই চুলগুলো পেঁচিয়ে মাথার ওপর খোঁপা বাঁধা হয়েছে যদি সেগুলো ছেড়ে দেওয়া হতো তাহলে সেগুলো মাথা উপর থেকে ঝুলে যেত। তবে যদি সেগুলো নিচের মাথার কোনো অংশ থাকে তাহলে সেগুলোর ওপর মাসাহ করার বৈধতা সম্পর্কে সন্দেহ নাই। (হাশিয়াতুত তাহতাভী-৬০)
কাজেই মাথায় খোঁপা বাঁধার পূর্বে খেয়াল রাখতে হবে যেন অজুর সময় মাথার ওপরে থাকা চুলের ওপর মাসাহ করা সম্ভব হয়।
উল্লেখ্য, খোঁপা বাঁধা অবস্থায়ও যদি মাথার এক চতুর্থাংশ পরিমাণ মাসাহ করা যায় তাহলে সেক্ষেত্রে খোঁপা খুলতে হবে না। কাজেই আগের নামাজগুলোর ব্যাপার বিধান হলো, যদি সেগুলোর অজুর সময় মাথার একচতুর্থাংশ পরিমাণ মাসাহ হয়ে থাকে তাহলে সেই নামাজগুলো সহিহ হয়ে গেছে। আর যদি একচুর্থাংশের কম মাসাহ হয়ে থাকে তাহলে সেই নামাজগুলো পুণরায় আদায় করতে হবে। এক্ষেত্রে উমুরী কজার বিধান ফলো করতে হবে।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।
রেফারেন্স উত্তর :
প্রশ্নঃ ১১৭৯০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি যেগুলো নামাজ কাজা করেছি ওগুলো আমি কিভাবে পড়বো
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
উমুরী কাযা নামায আদায় করতে হলে প্র্রথমে কোন ওয়াক্ত নামায কত রাকাত কাযা হয়েছে তা নির্ণিত করে নিতে হবে।
যদি তা জানা সম্ভব না হয়। তাহলে অনুমান করে নিবে। অনুমান করে কোন নামায কত ওয়াক্ত কাযা করেছে তা নির্ধারণ করে নিবে। তারপর একে একে তা আদায় করবে।
যেমন
ফজরের নামায ৭০ ওয়াক্তের কাযা হয়েছে। তখন কাযা নামায আদায় করার সময় এভাবে নিয়ত করবে, আমার জিম্মায় যত ফজরের নামায কাযা আছে, তার অনাদায়কৃত প্রথম ফজরের কাযা আদায় করছি” এমন নিয়তে নামায আদায় করবে।
তারপর যিম্মায় ৬৯ ওয়াক্তের ফজরের নামায বাকি থাকে। তবু এভাবেই নিয়ত করবে যে, আমার যিম্মায় যত ফজরের নামায কাযা আছে, তার প্রথম অনাদায়কৃত ফজরের নামাযের নিয়ত করছি”। এভাবে হিসেবে করে পড়তে থাকবে। প্রতিবার অনাদায়কৃত প্রথম ফজর নামায বলার দ্বারা যে নামায বাকি আছে, তার প্রথম নামাযের নিয়ত হচ্ছে, তাই নিয়তটি নির্দিষ্ট নামাযের হয়ে যায়।
ঠিক উল্টোভাবেও করা যায়। অর্থাৎ যত নামায কাযা আছে তার সর্বশেষ অনাদায়কৃত কাযার নিয়ত করছি। এভাবেও পূর্বোক্ত পদ্ধতিতে বাকি নামাযের কাযা আদায় করা যাবে।
এভাবে বাকি নামায আদায় করবে। যোহর, আছর, মাগরিব, ইশাও এভাবে আদায় করবে।
একদিনে একাধিক চারদিন পাঁচদিনের, যত দিনের ইচ্ছে কাযা আদায় করা যাবে। কোন সমস্যা নেই।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন