অনাকাঙ্খিত রাগের কাফফারা
প্রশ্নঃ ২৬৬০০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, একদম অপরিচিত কারও সাথে বাজার বা রাস্তায় কোন বিষয়ে একেবারেই অনাকাঙ্খিত ভাবে ঘটে যাওয়া ঘটনা থেকে তর্কাতর্কি,ধমক দেয়া বা দূর্ব্যবহার করে ফেললে তার সাথে যদি দেখা সাক্ষাৎ করার কোন সম্ভাবনাই জীবনে না থাকে তখন এই কৃত গুনাহ থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় জানালে উপকৃত হতাম। এবং ভবিষৎ এ যাতে এরকম অনাকাঙ্খিত অপমান হবার ঘটনায় যেন মাথা ঠান্ডা রাখতে পারি সেক্ষেত্রে নিজেকে শোধরানো বদলানোর জন্য করণীয় কি কি জানালে কৃতজ্ঞ থাকবো। ধন্যবাদ।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রথমত করণীয় হলো এজাতীয় ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ইনসাফের উপর থাকা। তারপরও যদি আনাকাঙ্খিত কিছু ঘটে যায় এবং তার সাথে জীবনে আর কখনো সাক্ষাত না হয় (সাক্ষাত না হওয়াটাই স্বাভাবিক) তাহলে এই কাজের জন্য আল্লাহ তায়ালা কাছে তাওবা করা এবং তার জন্য দোয়া করা। হাদিস শরীফে নিম্মোক্ত দোয়াটি পাওয়া যায়।
اللهم إنما أنا بشر فأى المسلمين لعنته أو سببته فاجعله له زكاة وأجرا
হে আল্লাহ! আমি তো একজন মানুষ! সুতরাং আমি কোনো মুসলিমকে গালি বা অভিশাপ দিয়ে থাকলে সেটাকে তুমি তার জন্য (গোনাহ থেকে) পবিত্র করার মাধ্যম বানিয়ে দাও এবং তাকে তার (উত্তম) বিনিময় দান করুন।’ (হাদিস নং- ৬৩৭৭)
সম্ভব হলো সদকা করে তার জন্য দুনিয়া আখেরাতের কল্যাণের দোয়া করা।
দ্বিতীয়ত: ভবিষ্যতে যাতে এজাতীয় বিষয়ের সম্মুখীন হতে না হয় তার জন্য ইনসাফের সাথে সাথে সর্বদা নিজের ক্রোধ দমনের চেষ্টা করা। কেননা হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে,
عن أبي هريرة، أن النبي صلى الله عليه وسلم قال " إياكم والحسد فإن الحسد يأكل الحسنات كما تأكل النار الحطب " . أو قال " العشب " .
আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নবী করীম (ﷺ) বলেছেনঃ তোমরা হিংসা পরিহার কর। কেননা, হিংসা ভাল কাজকে সেরূপ খেয়ে ফেলে, যেরূপ আগুন কাঠকে খায় (অর্থাৎ জ্বালিয়ে ভস্মীভূত করে দেয়।) হাদিসের রেফারেন্স দেখতে নিচের লিংকে প্রবেশ করুন।
https://muslimbangla.com/hadith/36929
আরো মাসয়ালা ও পরামর্শ জানতে নিচের রেফারেন্স উত্তরটি দেখুন।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।
রেফারেন্স উত্তর :
প্রশ্নঃ ২৪২৯৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমাকে একটু সাহায্য করেন। নানা ধরনের চিন্তা মাথায় ঘুরছে। কোনো কাজে মনেযোগ দিতে পারছি না। শুধু মাথায় আসছে চিন্তা কর। চিন্তা না করলে উত্তর কিভাবে পাবে।ঘুম থেকে উঠে চিন্তা, পড়ালেখার সময় চিন্তা। চিন্তা গুলো হচ্ছে কেউ আমাকে গালি দিয়েছে, মেয়েদের নাম ধরে ডেকেছে। চিন্তা হচ্ছে কেন ডেকেছে, কেন গালি দিয়েছে, ও কে কিছু না করি সাহস বেরে যাবে ইত্যাদি চিন্তা। এসব চিন্তা করব নাকি করব না
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
মাত্রাতিরিক্ত ক্রোধ মানুষকে ধংস করে। তাই অহেতুক রাগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আর এর জন্য প্রথমে আপন গতিতে নিজের কাজ করে যান। অন্যের সামালোচনা কিংবা কটুবাক্যে নিজের টার্গেট থেকে পিছপা হবেন না। এটা কর্মমূখী মানুষের পরিচয় নয়। অন্যের অমূলক সমালোচনার প্রতিবাদ-প্রতিশোধ করতে গিয়ে নিজের মূল্যবান সময় নষ্ট করবেন না। মনযোগের সাথে পড়াশোন-পরীক্ষা ইত্যাদী চালিয়ে যান। সর্বপ্রকার গুনাহ পরিহার করুন। অনলাইন-অফলাইন সর্বদা আল্লাহ তায়ালার ধ্যান ও খেয়াল নিজের দ্বিলে জাগ্রত রাখুন। বেশি বেশি আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করুন এবং নিম্নোক্ত আয়াত পড়ুন। وَالۡکٰظِمِیۡنَ الۡغَیۡظَ وَالۡعَافِیۡنَ عَنِ النَّاسِ ؕ وَاللّٰہُ یُحِبُّ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ۚ আর যারা ক্রোধ সংবরণকারী এবং মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল; আল্লাহ্ সৎকর্মপরায়ণদেরকে ভালবাসেন ; —আল ইমরান - ১৩৪
এছাড়া শায়খ আব্দুল মতিন বিন হুসাইন সাহেব হাফিজ. পীর সাহেব ঢালকানগর অনূদিত "ক্রোধ দমন নূর অর্জন" বইটি অধ্যয়ন করুন। ইনশাআল্লাহ উপকৃত হবেন।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন