একাধিক স্থায়ী আবাস থাকলে তার হুকুম
প্রশ্নঃ ২৪৩৫১. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,
কোন কোন ব্যক্তির একাধিক অতন আছে,প্রত্যেক টার মধ্যে আসা-যাওয়া করে এবং প্রত্যেকটার মাঝে সফর পরিমা দূরত্ব উক্ত ব্যক্তির নামাজের ব্যাপারে কসরের কি হুকুম? দলিল সহ বলে দিলে উপকৃত হবো,,,,,,,,???
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
সম্মানিত প্রশ্নকারী!
কারো যদি একাধিক ওয়াতান (স্থায়ী আবাস) থাকে তাহলে তিনি সবগুলোতে মুকিম থাকবেন। তবে পথিমধ্যে সফরের দূরত্ব হলো পথে কসর করবেন।
سوال
میں پچھلے بیس سال سے پشاور میں رہتا ہوں اپنا گھر ہے، جب کہ کرک میں اپنا گھر اور جائیداد ہے جہاں میں کبھی کبھار جایا کرتا ہوں، سوال یہ ہے کہ اگر میں کرک اپنے گھر یا بھائی کے گھر دو تین دن قیام کروں تو مجھے سفر کی نماز پڑھنی ہوگی یا پوری نماز?
جواب
واضح رہے کہ جو وطن انسان کا وطنِ اصلی ہو وہ محض دوسری جگہ رہائش اختیار کرنے سے باطل نہیں ہوتا، بلکہ اگر کوئی شخص اپنے وطنِ اصلی کے علاوہ کسی اور علاقے کو وطن بنالیتاہے اور پہلے وطن سے اہل وعیال اور جائیداد وغیرہ ختم نہیں کرتا تو ایسے شخص کے لیے دونوں وطن ہی اس کے وطنِ اصلی کہلائیں گے اور ایسا آدمی دونوں جگہ نماز مکمل پڑھے گا۔
لہذا صورتِ مسئولہ میں چوں کہ آپ نے اب تک کرک سے اپنا گھر ختم نہیں کیا ہے ؛ اس لیے کرک بھی آپ کا وطنِ اصلی شمار ہو گا اور جب بھی آپ وہاں جائیں گے تو اگرچہ پندرہ دن سے کم مدت کے لیے جائیں وہاں مکمل نماز پڑھیں گے۔
الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (2/ 132):
"(قوله: والأصل أن الشيء يبطل بمثله) كما يبطل الوطن الأصلي بالوطن الأصلي، و وطن الإقامة بوطن الإقامة، و وطن السكنى بوطن السكنى". فقط واللہ اعلم
فتوی نمبر : 144105200979
دارالافتاء : جامعہ علوم اسلامیہ علامہ محمد یوسف بنوری ٹاؤن
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।
রেফারেন্স উত্তর :
প্রশ্নঃ ৩৯০৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, কসর নামাজ কি?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
মুসাফির অবস্থায় চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয নামায তথা যোহর, আসর ও ইশার ফরয নামায দুই রাকাত পড়াকে কসর নামায বলে। কসর সংক্রান্ত আরো কিছু মাসআলা নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
—————
কোনো ব্যক্তি তার অবস্থানস্থল থেকে ৪৮ মাইল তথা ৭৮ কিলোমিটার দূরে সফরের নিয়তে বের হয়ে তার এলাকা পেরিয়ে গেলেই শরিয়তের দৃষ্টিতে সে মুসাফির হয়ে যায়-
(জাওয়াহিরুল ফিক্বহ ১/৪৩৬, আহসানুল ফাতাওয়া ৪/১০৫)।
সফরের নিয়তে বের হয়ে নিজ এলাকা পেরুলে সফরের বিধান শুরু হয়। শহরের ক্ষেত্রে ওই শহরের করপোরেশনের নির্ধারিত সীমানা থেকে সফরের সীমা নির্ধারিত হবে। অনুরূপ সফর থেকে ফিরে আসার ক্ষেত্রেও নিজ এলাকার সীমানায় প্রবেশের সঙ্গেই তার সফরের বিধান শেষ হয়ে যাবে-
(রদ্দুল মুহতার ২/১২৮)।
আকাশ পথে সফরের ক্ষেত্রেও দূরত্বের হিসাব স্থলভাগে সফরের দূরত্বের পরিমাপে হবে, অর্থাৎ স্থলভাগের ৭৮ কিলোমিটার পরিমাণ দূরত্বের সফর হলে আকাশপথে মুসাফির হবে-
(রদ্দুল মুহতার ১/৭৩৫)।
অনুরূপ পার্বত্য এলাকায় সফরের ক্ষেত্রেও সমতলে চলার হিসেবেই হবে, অর্থাৎ পাহাড়ের উঁচু-নীচু ঢালুসহ দূরত্বের হিসাব হবে-
(ফাতহুল ক্বাদীর ২/৩১, আল বাহরুর রায়েক ২/২২৯)।
মুসাফিরের বিধান
সফরকারীর জন্য শরিয়তের বিধি-বিধানে কিছু শিথিলতা রয়েছে, যথা চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজগুলো দুই রাকাত আদায় করবে, সফরে রোজা না রেখে পরবর্তী সময়ে কাজা করলেও চলবে। অনুরূপ মোজায় মাসাহ করা ইত্যাদি বিধানে সাধারণ অবস্থা থেকে ভিন্নতা রয়েছে।
মুসাফির ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত সফর অবস্থায় চার রাকাত নামাজ পূর্ণ করলে গুনাহ হবে। এ ক্ষেত্রে নামাজ পুনরায় পড়া ওয়াজিব। আর যদি ভুলক্রমে চার রাকাত পূর্ণ করে নেয়, তাহলে যদি সে প্রথম বৈঠক করে থাকে, তাহলে সেজদা সাহু করে নিলে ফরজ নামাজ আদায় হয়ে যাবে, আর যদি প্রথম বৈঠক না করে থাকে তাহলে ফরজ আদায় হবে না, আবারও পড়তে হবে-
(বাদায়েউস সানায়ে ১/৯১)।
মুসাফির ব্যক্তি মুকিম ইমামের পেছনে ইকতিদা করলে সে ইমামের অনুসরণে পূর্ণ নামাজই আদায় করবে-
(আল মাবসূত, সারাখসী ১/২৪৩)।
মুকিম ব্যক্তি মুসাফির ইমামের পেছনে ইকতিদা করলে চার রাকাতবিশিষ্ট নামাজগুলোতে মুসাফির ইমাম সাহেব দুই রাকাত পড়ে সালাম ফিরানোর পর মুকিম মুক্তাদি দাঁড়িয়ে সুরা পড়া ছাড়া বাকি দুই রাকাত নামাজ পড়ে নিবে।
সফর অবস্থায় ছুটে যাওয়া নামাজ মুকিম অবস্থায় কাজা করলে 'কসর'ই আদায় করবে, আর মুকিম অবস্থার ছুটে যাওয়া নামাজ সফরে কাজা করলে তা পূর্ণ আদায় করবে- (হেদায়া ১/৮১)
স্থায়ী ও অস্থায়ী আবাসের বিধান
স্থায়ী আবাসস্থল পরিবর্তন করে অন্যস্থানে মূল আবাস গড়লে স্থায়ী বসবাসের জন্য সেখানে না যাওয়ার ইচ্ছা থাকলে আগের অবস্থানস্থল মৌলিক আবাসন হিসেবে গণ্য হবে না, এমনকি সেখানে তার মালিকানা জায়গা-জমিন থাকলেও নয়, বরং সেখানেও সফরের সীমানা অতিক্রম করে গেলে মুসাফিরই থাকবে- (আল মাবসূত, সারাখসী ১/২৫২)
কোনো জায়গায় ১৫ দিন বা ততধিক অবস্থানের নিয়ত করলে সে সেখানে মুকিম হয়ে যাবে। সেখান থেকে সামানা-পত্রসহ প্রস্থানের আগ পর্যন্ত সেখানে পূর্ণ নামাজ পড়বে এবং মুকিমের বিধান জারি থাকবে- (বাদায়েউস সানায়ে ১/১০৪)।
মহিলারা বিবাহের আগ পর্যন্ত তার বাবার বাড়িতে স্থায়ী আবাস হিসেবে মুকিম থাকবে।
তবে বিবাহের পর যদি স্বামীর বাড়িতে মৌলিকভাবে থাকে এবং বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসে, তাহলে স্বামীর বাড়ি তার মৌলিক আবাসন হিসেবে ধর্তব্য হবে এবং বাবার বাড়িতে মুসাফির থাকবে, আর যদি বাবার বাড়িতে মৌলিকভাবে থাকে, তাহলে তা তার মূল অবস্থানস্থল হিসেবেই বাকি থাকবে-
(আল বাহরুর রায়েক ২/১২৮, রদ্দুল মুহতার ২/১৩১)।
আর পুরুষগণ তার শ্বশুরবাড়িতে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করলে মুসাফিরই থাকবে। হ্যাঁ, কেউ যদি সেখানে স্থায়ী আবাস করে নেয়, তাহলে তা ভিন্ন কথা।
মুসাফিরের সুন্নত পড়ার বিধান
মুসাফির ব্যক্তির জন্য তার চলন্ত অবস্থায় বা তাড়াহুড়া থাকলে ফজরের সুন্নাত ছাড়া অন্যান্য সুন্নাতে মুয়াক্কাদা না পড়ার সুযোগ রয়েছে। তবে স্বাভাবিক ও স্থির অবস্থায় সুন্নাতে মুয়াক্কাদা পড়তে হবে-
(এ'লাউস্ সুনান ৭/১৯১, রদ্দুল মুহতার ১/৭৪২)।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন