সেজদায় গিয়ে নিজ ভাষায় দোয়া করা
প্রশ্নঃ ১৯৭২৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি নামাযের সেজদায় বাংলা দোয়া করা নিয়ে ইউটিউবে বিভিন্ন আলেমগনের বক্তব্য শুনলাম,কেউ বলে ফরজ সালাত ব্যতিত করা যাবে,অনেকে বলেছেন করা যাবেনা।আমার প্রশ্ন হলো ১/ফরজ ব্যতীত নফল নামাযের সেজদায় বাংলায় দোয়া করা যাবে কিনা। ২/ আর না গেলে নামায ব্যতিত এমনি সেজদা করে সেখানে বাংলায় দোয়া করা যাবে কিনা?আমি শুনেছি নামায ব্যতিত কুরআন তেলাওয়াতের সেজদা ও শুকরিয়ার সেজদা ছাড়া অন্য সেজদা করা যায়না। এটা ঠিক কিনা(আসলে বাংলায় দোয়া করলে আমার আবেগটা বেশি কাজ করে,মনের ভাব কান্না,ব্যাকুলতা নিয়ে মনের মতো প্রকাশ করতে পারি)
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
ইতিমধ্যে এ বিষয়ে উত্তর দেয়া হয়েছে, নিচে সংযুক্ত করা হল।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
শাইখ আবু সাঈদ ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, মোহাম্মাদপুর।
রেফারেন্স উত্তর :
প্রশ্নঃ ৩৯৬৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ফরজ, সুন্নাত ও নফল এই সব নামাজে কি সিজদায় গিয়ে বাংলায় দোয়া করা যায়?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
ফরজ নামাজের সাজদায় গিয়ে তাসবীহ পড়া ছাড়া দীর্ঘ দোয়া প্রমাণিত নয়।
নফল নামাযে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাজদায় গিয়ে দীর্ঘ দোয়া করেছেন। হাদীসে সেই দোয়াগুলো বর্ণিত হয়েছে।
আমাদের জন্য উচিত সেসব দোয়া মুখস্থ করে সাজদায় গিয়ে দোয়া করা।
নামাজ নামাজ হিসেবে তার কিছু বৈশিষ্ট্য ও ভিন্নতা আছে। নামাজের বাইরে যা কিছু জায়েজ, নামাজের মধ্যে তার অনেক কিছুই নাজায়েজ। দোয়ার মধ্যে এমন কিছু বিষয় এসে যেতে পারে যেটা নামাজের সঙ্গে মুনাসাব নয়। বিধায় নামাজের সাজদায় গিয়ে বাংলাতে দোয়া করার তুলনায় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর শেখানো আরবী দোয়া করা নিরাপদ।
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، ح وَحَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، - الْمَعْنَى - عَنْ حَجَّاجٍ الصَّوَّافِ، حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ هِلاَلِ بْنِ أَبِي مَيْمُونَةَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ الْحَكَمِ السُّلَمِيِّ، قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَعَطَسَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ فَقُلْتُ يَرْحَمُكَ اللَّهُ فَرَمَانِي الْقَوْمُ بِأَبْصَارِهِمْ فَقُلْتُ وَاثُكْلَ أُمِّيَاهُ مَا شَأْنُكُمْ تَنْظُرُونَ إِلَىَّ فَجَعَلُوا يَضْرِبُونَ بِأَيْدِيهِمْ عَلَى أَفْخَاذِهِمْ فَعَرَفْتُ أَنَّهُمْ يُصَمِّتُونِي - فَقَالَ عُثْمَانُ - فَلَمَّا رَأَيْتُهُمْ يُسَكِّتُونِي لَكِنِّي سَكَتُّ قَالَ فَلَمَّا صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم - بِأَبِي وَأُمِّي - مَا ضَرَبَنِي وَلاَ كَهَرَنِي وَلاَ سَبَّنِي ثُمَّ قَالَ " إِنَّ هَذِهِ الصَّلاَةَ لاَ يَحِلُّ فِيهَا شَىْءٌ مِنْ كَلاَمِ النَّاسِ هَذَا إِنَّمَا هُوَ التَّسْبِيحُ وَالتَّكْبِيرُ وَقِرَاءَةُ الْقُرْآنِ " . أَوْ كَمَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا قَوْمٌ حَدِيثُ عَهْدٍ بِجَاهِلِيَّةٍ وَقَدْ جَاءَنَا اللَّهُ بِالإِسْلاَمِ وَمِنَّا رِجَالٌ يَأْتُونَ الْكُهَّانَ . قَالَ " فَلاَ تَأْتِهِمْ " . قَالَ قُلْتُ وَمِنَّا رِجَالٌ يَتَطَيَّرُونَ . قَالَ " ذَاكَ شَىْءٌ يَجِدُونَهُ فِي صُدُورِهِمْ فَلاَ يَصُدُّهُمْ " . قُلْتُ وَمِنَّا رِجَالٌ يَخُطُّونَ . قَالَ " كَانَ نَبِيٌّ مِنَ الأَنْبِيَاءِ يَخُطُّ فَمَنْ وَافَقَ خَطَّهُ فَذَاكَ " . قَالَ قُلْتُ جَارِيَةٌ لِي كَانَتْ تَرْعَى غُنَيْمَاتٍ قِبَلَ أُحُدٍ وَالْجَوَّانِيَّةِ إِذِ اطَّلَعْتُ عَلَيْهَا إِطْلاَعَةً فَإِذَا الذِّئْبُ قَدْ ذَهَبَ بِشَاةٍ مِنْهَا وَأَنَا مِنْ بَنِي آدَمَ آسَفُ كَمَا يَأْسَفُونَ لَكِنِّي صَكَكْتُهَا صَكَّةً فَعَظَّمَ ذَاكَ عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ أَفَلاَ أُعْتِقُهَا قَالَ " ائْتِنِي بِهَا " . قَالَ فَجِئْتُهُ بِهَا فَقَالَ " أَيْنَ اللَّهُ " . قَالَتْ فِي السَّمَاءِ . قَالَ " مَنْ أَنَا " . قَالَتْ أَنْتَ رَسُولُ اللَّهِ . قَالَ " أَعْتِقْهَا فَإِنَّهَا مُؤْمِنَةٌ " .
মু‘আবিয়াহ ইবনুল হাকাম আস-সুলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, একদা আমি রসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাথে সালাত আদায় করি। সালাতের অবস্থায় লোকজনের মধ্যকার এক ব্যক্তি হাঁচি দিলে জবাবে আমি ইয়ারহামুকাল্লাহ বলায় সকলেই আমার প্রতি (রাগের) দৃষ্টিতে তাকালো। তখন আমি মনে মনে বললাম, তোমাদের মাতা তোমাদেরকে হারাক। তোমরা আমার দিকে এভাবে দৃষ্টি নিক্ষেপ করছো কেন? মু’আবিয়াহ বলেন, সকলেই রানের উপর সজোরে হাত মেরে শব্দ করতে থাকলে আমি বুঝতে পারি যে, তারা আমাকে চুপ করাতে চাইছে। বর্ণনাকারী ‘উসমানের বর্ণনায় রয়েছেঃ আমি যখন দেখলাম যে, তারা আমাকে চুপ করাতে চাচ্ছিলো, তখন (অনিচ্ছা সত্ত্বেও) আমি চুপ হলাম। অতঃপর রসূলুল্ললাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত শেষ করলেন। আমার পিতা-মাতা তাঁর জন্য কুরবান হোক ! তিনি আমাকে প্রহার করলেন না, রাগ করলেন না এবং গালিও দিলেন না। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সালাতের অবস্থায় তাসবীহ, তাকবীর ও কুরআন তিলাওয়াত ব্যতীত কোন কথা বলা মানুষের জন্য বৈধ নয়। অথবা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেরূপ বলার বললেন। অতঃপর আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল ! আমি সদ্য জাহিলিয়্যাত ছেড়ে আসা একটি সম্প্রদায়। আল্লাহ্ আমাদেরকে ইসলাম গ্রহণের তওফিক দিয়েছেন। আমাদের মধ্যেকার কতিপয় ব্যক্তি গণকের নিকট যায়। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা তাদের নিকট যাবে না। বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, আমাদের মধ্যেকার কতিপয় লোক পাখি উড়িয়ে ভাগ্য নির্ণয় করে। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এটা তাদের মনগড়া কাজ, এরূপ (কুসংস্কার) যেন তাদেরকে তাদের কাজ থেকে বিরত না রাখে। বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, আমাদের মধ্যেকার এমনও কিছু লোক আছে যারা রেখা টেনে ভাগ্য নির্ণয় করে। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ নাবীগণের মধ্যেকার একজন নবী রেখা টানতেন। সুতরাং কারো রেখা তাঁর (নাবীর) মত হলে সঠিক হতে পারে। বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, আমার এক দাসী উহুদ ও জাওয়ানিয়ার আশেপাশে বকরী চরাচ্ছিলো। আমি দেখলাম, বাঘ এসে সেখান থেকে একটি বকরী নিয়ে গেছে। আমিও তো আদম সন্তান। কাজেই আমিও তাদের মত দুঃখ পাই। কিন্তু আমি তাকে জোরে একটি থাপ্পড় দিলাম। এ কথাটি রসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাছে গুরুত্ববহ মনে হওয়ায় আমি তাঁকে বললাম, আমি কি তাকে মুক্ত করে দিবো? তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাকে আমার কাছে নিয়ে আসো। আমি তাকে নিয়ে আসলে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ আল্লাহ্ কোথায়? সে জবাবে বলল, আকাশে। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ আমি কে? সে জবাবে বলল, আপনি আল্লাহ্র রসূল! তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- বললেন, তাকে আযাদ করে দাও। কারণ সে ঈমানদার মহিলা।
সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৯৩০
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন