আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ১৯০৬৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি একজন সৌদি প্রবাসি।সৌদিতে বৈধভাবে থাকতে প্রতি বছর নিদিষ্ট পরিমান টাকা দিয়ে এক বছরের জন্য অনুমতি পত্র নবায়ন করতে হয়।অনেক সময় অনুমতি পত্র নবায়ন করতে অনেক টাকার প্রয়োজন হয়। প্রবাসির পক্ষে এতো টাকা দিয়ে নবায়ন করা সম্ভব হয় না বা সম্ভব হলেও নবায়ন করে না।নবায়ন না করার ফলে প্রবাসি অবৈধ বলে ঘোষিত হয় এবং পুলিশের হাতে ধরা পরলে তাকে দেশে পাঠানো হয়।এখন আমার প্রশ্ন হলো --পুলিশে ধরার আগ পর্যন্ত সে একজন অবৈধ প্রবাসি ছিলো কিন্তু সে বৈধ কাজের দ্বারা টাকা উপার্জন করছে।অবৈধ প্রবাসি যে বৈধভাবে টাকা উপার্জন করছে সে টাকা কি প্রবাসির জন্য হারাম হবে না হালাল???

৭ জুন, ২০২২
3658، حي الروضة، Khamis Mushait 62461

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم





প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে উপার্জন করা ধোঁকা এবং প্রতারণার শামিল। হাদিস শরীফে রাসুলুল্লাহ সা বলেছেন, যে ধোঁকা দেয় সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়। এর কারণে ওই ব্যক্তি গুনাহগার হবে। এতদ্বসত্ত্বেও যদি তার উপার্জন এবং কর্ম বৈধ হয় তাহলে তার উপার্জিত টাকা হারাম হবে না। তবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এজাতীয় কাজ করা উচিত নয়।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিস্তারিত জানতে নিচের রেফারেন্স উত্তরটি দেখুন।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেন:

মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
প্রসঙ্গসমূহ:

রেফারেন্স উত্তর :

বয়স কমিয়ে চাকুরি করলে সেই বেতন কি হালাল হবে?

প্রশ্নঃ ১২৭১৩. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমার প্রশ্নটি হলো ছোট সময় আমার জন্মনিবন্ধন এর সময় আমার মা বাবা হয়তো সঠিক বয়স বলতে পারেনি যার জন্য আমার বিদ্যালয়ের শিক্ষক অনুমান করে একটা বয়স লিখে দিছে। যাতে আমার কাছে মনে হচ্ছে বয়স ১/২ বছর কমিয়ে লেখা হয়েছে। আমি একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এখন আমার ভোটার আইডিতে এবং অন্যান্য যায়গায় হয়তো ভুলটাই লেখা হয়েছে।এখন এটা কি আমার দ্বারা প্রতারণা করা হচ্ছে? আর বয়স সব জায়গায় কমানো অনেক ককষ্টসাধ্য ব্যাপার সেইটা আপনি হয়তো বুঝবেন আর আমি সঠিক বয়স কতো তা জানি না, অনুমান করে কম লেখতে গেলে দেখা যাবে আমার চাকুরী পরিক্ষার ক্ষেত্রে সময় কমে আমার ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।

১৬ জুলাই, ২০২৪
ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


নিচের প্রবন্ধ থেকে আশা করছি আপনি আপনার উত্তর পেয়ে যাবেন।

আমাদের দেশে প্রায় মানুষের সঠিক বয়স নিয়ে কিছুটা এদিক-সেদিক অবস্থা রয়েছে। অনেক মানুষের জন্মতারিখ ও জন্মসনে তারতম্য রয়েছে। প্রায় প্রত্যেকেরই বার্থ সার্টিফিকেটে বয়স ১-২ বছর কমানো থাকে।

কিন্তু দেখা যায়, চাকরির ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ আবেদন করার জন্য বয়স নির্ধারণ করে দেয়। এখন জিজ্ঞাসা হলো- কোনো ব্যক্তির যদি আসল বয়স বেশি হয়— আর সার্টিফিকেটে কমানো থাকে, তাহলে কমানো বয়সের সার্টিফিকেট দিয়ে নেওয়া চাকরির ইনকাম কি হারাম হয়ে যাবে?

এর উত্তর হলো- শরিয়তের বিধান মোতাবেক সার্টিফিকেটে বয়স কমিয়ে লেখা জায়েয নেই। কারণ, এটা স্পষ্টত ধোঁকা ও ছলচাতুরির আশ্রয় গ্রহণ। আর ধোঁকা কিংবা ধোঁকা দেওয়া ইসলামে হারাম।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৬৪; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২২২৫; মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, হাদিস : ২৩১৪৭; সুনানে দারিমি, হাদিস : ২৫৮৩; ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৪৯০৫)

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আরেক হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘মুসলমানরা তাদের শর্তের ওপর থাকবে।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৩৫৯৪; সুনানে দারা কুতনি, হাদিস : ২৮৯০; শুয়াবুল ঈমান, হাদিস : ৪০৩৯)

সুতরাং জেনে রাখা উচিত যে, ইচ্ছাকরে সার্টিফিকেটে বয়স কম লেখা জায়েজ নেই। হারাম। তবে যদি ঘটনাক্রমে দুই-এক বছর কম লেখা হয়ে যায় এবং সেটা বদলানো সম্ভব না হয়— তাহলে এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অবশ্যই দোষী সাব্যস্ত হবে না। তবে এই ধোঁকার মাধ্যমে বা বয়স কমিয়ে কেউ যদি চাকরি নেয়, তাহলে ওই চাকরি ও চাকরির মাধ্যমে আয় হারাম হবে না (বয়স কমানোর কাজটি হারাম)। কারণ, যিনি বেতন নিয়ে থাকেন— তিনি নির্ধারিত পরিশ্রমের বিনিময়ে-ই ইনকাম করেন।
আরেকটি বিষয় জেনে রাখা জরুরি যে, চাকরি নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি বা প্রাতিষ্ঠানিক নিয়মে যদি বয়স ত্রিশের কোটায় নির্ধারিত থাকে আর বাস্তবে বয়স বত্রিশ হয় (কিন্তু সার্টিফিকেট অনুযায়ী আপনার বয়স ত্রিশ হয়)— তাহলে এক্ষেত্রে উক্ত চাকরি গ্রহণ না করাই উত্তম। কেউ উক্ত চাকুরী গ্রহণ করে নিলে— উক্ত কাজ অনুচিত ও তাকওয়ার পরিপন্থী কাজ হবে। তবে এই জাতীয় ক্ষেত্রে সার্টিফিকেটে বয়স কম থাকার কারণে আয়-উপার্জন হারাম হবে না।।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেন:

মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন