প্রশ্নঃ ১৭৪৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ঢাকা এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন লাইব্রেরির মাঝে এভাবে চুক্তি হয়ে থাকে যে, ঢাকার লাইব্রেরি মালিক চট্টগ্রামের লাইব্রেরি মালিককে বলে, প্রেস থেকে বই ছেপে আসলে আপনাকে ৪০% কমিশনে বই দিব। এখন আমাকে বইয়ের অগ্রিম মূল্য দিয়ে দেন। তখন চট্টগ্রামের লাইব্রেরির মালিকগণ বইয়ের অগ্রিম মূল্য দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে আরো একটি লেনদেন হয়ে থাকে। তা এই যে, চট্টগ্রামের লাইব্রেরি মালিকগণ বিভিন্ন ব্যক্তি থেকে এই বলে টাকা নিয়ে থাকে যে, ঢাকায় অমুক লাইব্রেরি থেকে ৪০% কমিশনে বই কিনতে চাচ্ছি। এখন আমাকে বইয়ের অগ্রিম মূল্য দিতে হচ্ছে। আপনি আমাকে টাকা দেন যেন আমি বইয়ের অগ্রিম মূল্য পরিশোধ করতে পারি। বই কেনার পর আপনার টাকার সাথে ১০% কমিশন পরিমাণ অতিরিক্ত টাকা আপনাকে দিব। এখন আমার প্রশ্ন হল, উল্লেখিত লেনদেন দুটি শরীয়তসম্মত কি না? যদি শরীয়তসম্মত না হয় তাহলে কিভাবে শরীয়তসম্মত হবে?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
ঢাকার লাইব্রেরির সাথে চট্টগ্রামের লাইব্রেরি মালিকের উক্ত চুক্তিটি বাই সালাম অর্থাৎ আগাম ক্রয় লেনদেনের অন্তর্ভুক্ত। তাই চুক্তিটি সহীহভাবে করার জন্য বইয়ের পুরো মূল্য চুক্তির সময়ই দিয়ে দিতে হবে এবং বইয়ের মান, পরিমাণ ও ধরন এবং বই হস্তান্তরের তারিখ চুক্তির সময় নির্ধারণ করে নিতে হবে। তাহলে এ লেনদেন জায়েয হবে। মোটকথা বাই সালামের যাবতীয় শর্ত এক্ষেত্রে পাওয়া যেতে হবে। কিন্তু এ চুক্তির ক্ষেত্রে ক্রেতার জন্য কারো থেকে এ ভিত্তিতে টাকা নেওয়া জায়েয হবে না যে, তাকে এর বিনিময়ে প্রাপ্ত বইয়ের ১০% বা কিছু কমিশন দেওয়া হবে। কেননা কমিশন দেওয়ার শর্তে কারো থেকে টাকা নেওয়া সুদী লোনের অন্তর্ভুক্ত, যা সম্পূর্ণ হারাম।
উপরোক্ত পদ্ধতির বিকল্প হিসেবে ক্রেতা কারো থেকে বিনিয়োগ নিতে চাইলে তাকে বই ক্রয়ে শরিক করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে উভয়ে নিজ নিজ মূলধন অনুযায়ী বইয়ের মালিক হবে। বই হস্তগত হওয়ার পর তা বিক্রি করে অর্জিত লাভ তারা চুক্তি অনুযায়ী ভাগ করে নিবেন। আর লোকসান হলে তা মূলধনের অনুপাতে ভাগ হবে।
উল্লেখ্য যে, এক্ষেত্রে শরিক নিজের অংশ অপর শরিককে বিক্রি করে দিতে পারবে। তবে এই ক্রয়-বিক্রয় অবশ্যই বই হস্তগত করার পর হতে হবে।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন