প্রশ্নঃ ১৩৯৬৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামুয়ালাইকা ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।
প্রত্যাশা করি আল্লহর রহমতে ভালো আছেন।
উস্তাদ, কোন বাবা-মা তার এক কন্যা সন্তানের পড়াশোনার জন্য ২০ লক্ষ টাকা খরচ করলেন। অপর কন্যা সন্তানের পড়াশোনার জন্য ৫ লক্ষ টাকা খরচ করলেন। দুই কন্যা দুই ধরনের পড়াশোনা করেছেন, দুই জনের প্রতিষ্ঠান এর খরচ দুই রকম হওয়ায় এমন ভিন্ন পরিমাণের খরচ হয়েছে।
এখন প্রশ্ন হল, বাবা মায়ের সামর্থ থাকলে যে কন্যার পড়াশোনার জন্য ৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে তাকে কি আরোও ১৫ লক্ষ টাকা দিয়ে দিতে হবে যেহেতু অন্য সন্তানের পড়াশোনার জন্য ১৫ লক্ষ টাকা আরও বেশি খরচ হয়েছিল?
জাযাক আল্লহু খয়ির।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
মোহতারাম,
যে কন্যার পড়াশোনার জন্য ৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে তাকে আরোও ১৫ লক্ষ টাকা দিয়ে দেওয়া পিতা মাতার জন্য আবশ্যক না । যদিও তারা সামর্থ্যবান হন। তবে সন্তানদের বরণ পোষণ করার ক্ষেত্রে বৈষম্য না করে সমতা বজায় রাখার চেষ্টা করা পিতা মাতার নৈতিক দায়িত্ব।
এটা মূলত পিতা মাতার পক্ষ থেকে সন্তানের প্রতি "দান"। আর দানের ক্ষেত্রে দাতার সম্পূর্ণ অধিকার থাকে যে, সে তার নিজের সম্পদ কাকে দেবে কতটুকু দেবে।
স্বাভাবিক অবস্থায় হেবাসূত্রে সন্তানকে সম্পদ দেয়ার ক্ষেত্রে বৈষম্য না করা মুস্তাহাব হলেও কেউ যদি বৈষম্য করে তবে তা মাকরুহ হবে, হারাম হবে না। তবে হ্যাঁ, কেউ যদি কোনো সন্তানের দীনী বিষয়ে অগ্রগণ্যতার কারণে অথবা মাতা-পিতার অধিক খেদমতের কারণে তাকে সামান্য সম্পদ বাড়িয়ে দেয় তবে তা মাকরুহ হবে না। তবুও ফুকাহায়ে কেরাম বলেছেন, এ ক্ষেত্রেও বৈষম্য না করাই উত্তম। উল্লেখ্য, এ ধরনের বৈষম্য যদি অন্য সন্তানরা সন্তুষ্টচিত্তে মেনে নেয় তাহলে তা সর্বাবস্থায় জায়েয। (আলবাহরুর রায়েক ৭/৪৯০; কিতাবুন নাওয়াযেল ১২/২০১৮)
আর কেউ যদি অন্য সন্তানকে বঞ্চিত করে হেবাসূত্রে এক সন্তানকে সব সম্পদ দিয়ে দেয় এবং ওই সন্তানও তা দখল (কবয) করে নেয় তাহলে বিষয়টি নাজায়েয এবং গুনাহের কাজ হলেও হেবানামা কার্যকর হয়ে যাবে। অর্থাৎ অন্য সন্তানরা আইনীভাবে পিতার সম্পদ তাদের এই ভাই অথবা বোনের কাছ থেকে নিতে পারবে না। ফুকাহায়ে কেরাম লিখেছেন ‘কিছু সন্তানকে হেবাসূত্রে সম্পদ বাড়িয়ে দেয়া মাকরুহ। তবে কোনো সন্তানের ধর্মীয় ক্ষেত্রে অগ্রগণ্যতা থাকলে ভিন্ন কথা। কেউ যদি তার সমস্ত সম্পদ একজনকে দিয়ে দেয় তাহলে তা বিচারিক দৃষ্টিকোণ থেকে বৈধ হলেও ওই ব্যক্তি গুনাহগার হবে। (আলবাহরুর রায়েক ৭/২৮৮; ফাতাওয়া আলমগীরী ৪/৩৯১; উমদাতুল কারী ৬/১৪৬)
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন